Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আবদুস সালাম: প্রথম নোবেলজয়ী মুসলিম ও ‘অ’-মুসলিম বিজ্ঞানী

“নোবেলবিজয়ী প্রথম মুসলিম বিজ্ঞানী প্রফেসর আবদুস সালাম”- এই বাক্যটি নিয়ে অহরহই তর্ক হয়ে থাকে। নোবেল জেতার পর যেমন আইনস্টাইনের ‘ইহুদি’ পরিচয় ভুলে গিয়ে তাকে নাগরিকত্ব দেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়, ঠিক তেমনি নোবেল জয়ের পর প্রফেসর সালামকেও সম্মাননা দেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয় পাকিস্তানে। অথচ আহমাদিয়া বলে একসময় তাকে ‘মুসলিম’ মানতে নারাজ ছিলেন অনেকে! ব্যক্তিগত আক্রমণের ভয়ে দেশ ছেড়ে পরিবার নিয়ে বাধ্য হয়ে তাকে বিদেশেও পাড়ি জমাতে হয়েছে। কিন্তু প্রফেসর সালাম সর্বদাই এসব বিষয় হেলায় উড়িয়ে দিয়ে এসেছেন। নিজেকে একজন গর্বিত মুসলমান বলেই দাবি করতেন এই বিজ্ঞানী, যিনি বিজ্ঞানের ইতিহাসে দ্বিতীয় ঐক্যবদ্ধ তত্ত্বের পেছনের অন্যতম একজন কারিগর।

আবদুস সালাম (১৯২৬-১৯৯৬ সাল); source: eacpe.org

ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে ১৯২৬ সালের ২৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেছিলেন আবদুস সালাম। পাঞ্জাবের শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ হুসেইন এবং হাজিরা বেগমের ৮ সন্তানের জ্যেষ্ঠতম ছিলেন সালাম। আর জ্যেষ্ঠতম বলেই কিনা অন্যদের চেয়ে অধিক সুযোগ সুবিধা পেয়েছিলেন তিনি! সালাম ছাড়া আর কারোর লেখাপড়া নিয়েই তেমন মাথাব্যথা ছিল না মোহাম্মদ হুসেইনের। ৩ বছর বয়স থেকেই তিনি সালামকে নিজে বাড়িতে পড়াতে লাগলেন। আর মামার কাছে সম্পন্ন হলো তার কুরআন শিক্ষা। উল্লেখ্য, তার মামা আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের একজন ধর্ম প্রচারক ছিলেন।

ঝাং স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষালাভ করেন সালাম। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ। মাথায় পাগড়ি আর ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি পরেই স্কুলে যেতেন। সর্বদা সাদাসিধে বেশে ঘুরে বেড়ানো ছেলেটি পড়ালেখায় ছিলেন সকলের চেয়ে উজ্জ্বল। সে উজ্জ্বলতার দ্যুতি মাধ্যমিকে আরো প্রজ্বলিত করতে তার বাবা তাকে নিয়ে যান নামকরা মডার্ন হাই স্কুলে। কিন্তু অদ্ভুত এক কারণে তাকে সেখানে ভর্তি করা হলো না। কারণটি হচ্ছে এই যে, ‘মডার্ন’ স্কুলে এরকম ‘অ-মডার্ন’ গেয়ো দেখতে ছেলেকে ভর্তি করানো যাবে না! ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নিশ্চয়ই পরবর্তীকালে পস্তাতে হয়েছিল এমন মেধাবী ছাত্রকে হাতছাড়া করার জন্য। অগত্যা ঝাংয়েই ফিরে আসেন সালাম।

ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি আবদুস সালামের আকর্ষণটা আমৃত্যু টিকে ছিল। ভালোবাসতেন উর্দু আর ফারসি সাহিত্যও। স্কুলে পড়াকালীনই গণিত আর পদার্থবিজ্ঞানের প্রেমে পড়েন। পড়ালেখার প্রতি আন্তরিকতার পাশাপাশি ভালোবাসা তাকে সকলের চেয়ে আলোকবর্ষ এগিয়ে দিয়েছিল। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পুরো লাহোরের মধ্যে প্রথম হয়ে রাতারাতি এলাকার মানুষের চোখের মধ্যমণি হয়ে উঠলেন। পরীক্ষার রেজাল্টের দিন রেজাল্ট জেনে সাইকেল চালিয়ে স্কুল থেকে যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখন এলাকাসুদ্ধ মানুষ তাকে অভিবাদন জানিয়েছিল।

কিশোর সালামের এই ছবিটিই পত্রিকায় এসেছিল; source: thefamousbirthdays.com

তবে আবদুস সালামের পরবর্তী জীবনের সাফল্যের তুলনায় এটা খুবই সামান্য। কলেজেও তিনি একইভাবে পাঞ্জাবের মধ্যে প্রথম হলেন। এতে করে মাসিক ৩০ টাকা সরকারি বৃত্তি এবং ৪৫ টাকা করে আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের বৃত্তি মঞ্জুর হলো তার জন্য। সে সময় মাসে ৭৫ টাকা বৃত্তি ছিল বিশাল ব্যাপার। কলেজের পাট চুকিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন বিজ্ঞানের দিকেই এগোবেন। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বসলেন এবং অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিলেন। ডাকযোগে সালামের বাড়িতে এই খবর পৌঁছুলে আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। কিন্তু আসল আনন্দটা হলো পরদিন, যখন তার ছবি এলো পত্রিকায়। পুরো ঝাংয়ের মানুষ নিজেদের এলাকার ছেলের এমন সাফল্য উদযাপন করলো উৎসবের মতো করে।

পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতকোত্তর শেষ করলেন ২০ বছর বয়সে। বলা বাহুল্য, অসাধারণ মেধার কল্যাণে শিক্ষাজীবনে তার পেছনে আর খরচ করতে হয়নি তার পরিবারের। বরং তার বৃত্তির টাকা কাজে লেগেছে পারিবারিক কাজে! উচ্চশিক্ষায়ও সাফল্যের গ্রাফটা উর্ধ্বমুখী রাখতে পেরেছিলেন। সেই সুবাদে ক্যামব্রিজের সেন্ট জন কলেজে স্কলারশিপ লাভ করেন। ক্যামব্রিজ থেকে তিনি গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর পিএইচডি ডিগ্রির জন্য গবেষণা শুরু করেন। তার পিএইচডি গবেষণার বিষয় ছিল ‘ডেভলপমেন্টস ইন কোয়ান্টাম থিওরি অব ফিল্ডস’। এই গবেষণা করাকালীন এবং করা শেষে তিনি যথাক্রমে ‘স্মিথ’স প্রাইজ’ এবং ‘অ্যাডাম’স প্রাইজ’ লাভ করেন। সম্মানজনক এই পুরস্কার দুটি তাকে পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে সূচনাটা এনে দেয় ভালোভাবেই।

আবদুস সালামের দ্বিতীয় স্ত্রী লুইস জনসন; source: Siasat.pk

প্রফেসর সালাম ছিলেন একজন খাটি দেশপ্রেমিক। পিএইচডি শেষ করে ইচ্ছা করলেই তিনি ইংল্যান্ডে থেকে যেতে পারতেন। কিন্তু উচ্চশিক্ষায় পা দেয়ার পর থেকেই তিনি দেশের জন্য কাজ করা স্বপ্ন দেখতেন। পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট করার বাসনা মনে লালন করতেন তিনি। তাই ক্যামব্রিজ থেকে সরাসরি সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত পাকিস্তানে ফিরে এসেছিলেন। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেছিলেন আনন্দের সহিত। কিন্তু আনন্দটা ছিল ক্ষণস্থায়ী।

১৯৫৩ সালের দিকে “আহমাদিয়ারা মুসলিম নাকি অমুসলিম” এ ধরনের বিতর্ককে কেন্দ্র করে দাঙ্গা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সে দাঙ্গায় শতাধিক আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ নিহত হয়। পরিচিত মুখ হিসেবে আবদুস সালামের প্রাণনাশের আশংকা দেখা দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে পরিবারের সাথে এক বুক হতাশা নিয়ে ক্যামব্রিজে চলে যান। ইম্পেরিয়াল কলেজের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হবার পূর্বে ৪ বছরের মতো অধ্যাপনা করেছেন ক্যামব্রিজেও। পরবর্তীতে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হবার সম্মানও অর্জন করেছিলেন তিনি। অবশ্য নিজের বিজ্ঞান বিষয়ক আবিষ্কার দিয়ে যখন ইউরোপ মাত করতে শুরু করেন সালাম, পাকিস্তান তখন যথাযথ সম্মান দিয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনে।

পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মগুলো কণিকা এবং প্রতিকণিকার ক্ষেত্রে অপরিবর্তিত থাকে। একে প্যারিটি বলে। কিন্তু দুর্বল নিউক্লিয় বলের ক্ষেত্রে এই তত্ত্বটি বহাল থাকে না। সেখানে প্যারিটি ভঙ্গ হয়। সিয়াটলে চীনা বিজ্ঞানী চেন নিং ইয়াংয়ের এ সংক্রান্ত একটি লেকচারে উপস্থিত ছিলেন আবদুস সালাম। তিনি দুর্বল নিউক্লিয় বলের ক্ষেত্রে প্যারিটি ভঙ্গ নিয়ে বেশ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তার উত্তেজিত হবার মূল কারণ ছিল এই যে, কাইরাল প্রতিসাম্য দুর্বল মিথস্ক্রিয়ার ক্ষেত্রে ভঙ্গ হলেও তড়িৎচুম্বক মিথস্ক্রিয়ায় বজায় থাকে। তিনি এই সমস্যা নিয়ে নিজের পিএইচডি শিক্ষার্থী রোনাল্ড শ এর সাথে কাজ করতে শুরু করেন।

বিটা ক্ষয়ের কণিকাগুলো; source: famousscientists.org

এখানে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক (তড়িৎচুম্বক) এবং ইলেকট্রোউইক বল নিয়ে কিছুটা বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন আছে। উপরে যে সমস্যার কথা বলা হয়েছে, তার সমাধানকল্পে বিজ্ঞানীরা প্রস্তাব করলেন যে, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বল উৎপন্ন হয় ভরহীন ফোটন কণা থেকে তাই প্যারিটি বজায় থাকে। কিন্তু ইলেকট্রোউইক বলের ক্ষেত্রে যেহেতু প্যারিটি ভঙ্গ হয়, সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই কোনো ভরযুক্ত কণা এর সাথে যুক্ত আছে। এই চিন্তা থেকেই W এবং  Z বোসনের উৎপত্তি। এই নতুন প্রস্তাবিত কণাদ্বয়ই হবে সমস্যা সমাধানকারী সে ভরযুক্ত কণা।

ইলেকট্রোউইক বল; source: universe-review.ca

W বোসন কণা এখানে একটি মধ্যবর্তী কণা। বিটা ক্ষয়ের ক্ষেত্রে একটি নিউট্রন প্রথমে W বোসন কণায় রূপান্তরিত হয় এবং এর চার্জ থাকে ঋণাত্মক। তবে W বোসন হিসেবে এর স্থায়িত্ব অস্বাভাবিকভাবে কম। ৩×১০^-২৫ সেকেন্ডের মধ্যেই এই W বোসন কণা ভেঙে যায় এবং একটি উচ্চশক্তির ইলেকট্রন, একটি প্রোটন এবং একটি ইলেকট্রন অ্যান্টিনিউট্রিনোতে রূপান্তরিত হয়। এক্ষেত্রে Z বোসন চার্জহীন থাকে। কিন্তু এখানেও একটি বড় সমস্যা ছিল। গজ তত্ত্বের ফ্রেমওয়ার্কে বোসন কণার কোনো ভর থাকার কথা নয়। এই সমস্যার জন্য সালামের কাজ আটকে থাকলে থাকতেও পারতো যদি না পিটার হিগস তার বিখ্যাত হিগস বোসন কণা তত্ত্ব নিয়ে হাজির না হতেন।

পিটার হিগসের তত্ত্ব চলে আসায় সালাম, ওয়েনবার্গ আর গ্লাশোর গবেষণার পথ সহজ করে দেয়। হিগস মেকানিজম, গজ তত্ত্ব আর ইলেকট্রোম্যাগনেটিক মিথস্ক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করে তারা সফলভাবে পদার্থবিজ্ঞানের দ্বিতীয় ঐক্যবদ্ধ তত্ত্ব দাঁড় করাতে সক্ষম হলেন। ইলেকট্রোম্যাগনেটিক এবং দুর্বল (উইক) নিউক্লিয় বলকে ঐক্যবদ্ধ করে তারা ইলেকট্রোউইক বলের পরিচয় করিয়ে দেন। এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য ১৯৭৯ সালে এই ত্রয়ী পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এটিই ছিল সালামের জীবনের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার।

নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করতে গিয়েছিলেন স্বদেশী পোশাকে; source: flickr.com

নোবেল গ্রহণের অনুষ্ঠানে গিয়েও আবদুস সালাম তার স্বপ্নের কথা বারবার উল্লেখ করেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন, মুসলিমরা আবারো একদিন জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে যাবে। নিজের বক্তব্যে তিনি ইসলামের স্বর্ণযুগের কথা উল্লেখ করেন এবং শত শত বছর ধরে মুসলিমরা যে পৃথিবীর জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা নিয়ন্ত্রণ করেছে সেসব গৌরবের ইতিহাস মনে করিয়ে দেন। সে সময়কার মুসলিম বিজ্ঞানীদের থেকে অনুপ্রেরণা খোঁজার তাগিদ দেন তিনি। শুধু কথায় নয়, তার কাজেও তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের তাগিদ প্রকাশ পেয়েছে। তার আপ্রাণ প্রচেষ্টাতেই প্রতিষ্ঠিত হয় ‘থার্ড ওয়ার্ল্ড একাডেমি অব সায়েন্স’। নিজের নোবেল পুরস্কারের পুরো অর্থ দিয়ে তিনি পাকিস্তানে একটি ফান্ড গঠন করেন যা বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে কাজ করবে। অন্যদিকে ‘পাকিস্তান অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন’ প্রতিষ্ঠায়ও ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

তার জীবনের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক সাফল্যগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক এবার।

  • সালাম ‘টু কম্পোনেন্ট নিউট্রিনো’ তত্ত্ব প্রদান করেন এবং দুর্বল বলের ক্ষেত্রে অনিবার্য প্যারিটি ভঙ্গের কথা উল্লেখ করেন।
  • ইলেকট্রোউইক বলের নামকরণ করেন।
  • মেসন তত্ত্বগুলো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন।
  • মৌলিক কণাগুলোর প্রতিসাম্য ধর্ম নিয়ে কাজ করেন।
  • কণা বিজ্ঞানে মহাকর্ষের ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন।
  • সুপারসিমেট্রি তত্ত্ব প্রদান করেন।

ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক টম কিবির সাথে আবদুস সালাম; source: sps.ch

২৩ বছর বয়সে সালাম বিয়ে করেছিলেন তার চাচাতো বোন আমতুল হাফিজ হুসেইনকে। এই দম্পতির ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়। আমতুলের সাথে তার বিবাহবিচ্ছেদ না হলেও তিনি পরবর্তীতে বায়োফিজিসিস্ট লুইস জনসনকে বিয়ে করেন। একবার বাধ্য হয়ে পাকিস্তান ত্যাগ করে পুনরায় সসম্মানেই ফিরে এসেছিলেন সেখানে। যদিও কাজের খাতিরে তার পরিবারের বেশিরভাগ সময় কাটতো ইংল্যান্ডেই। কিন্তু চরমপন্থিদের ক্রমাগত উগ্রতার মুখে ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান সরকার এক আদেশবলে আহমাদিয়াদেরকে ‘অমুসলিম’ ঘোষণা করে। এতে ব্যথিত হন সালাম। তারপর নোবেল জয়ের পর কায়েদে আজম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু চরমপন্থিদের হুমকির জন্য সে অনুষ্ঠানে আর আসা হয়নি সালামের।

৮০’র দশকের মাঝামাঝি সময়ে ‘ডিজেনারেটিভ নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার’এ ভোগা শুরু করেন সালাম। শীঘ্রই চলনশক্তি হারিয়ে নিজেকে খুঁজে পান হুইলচেয়ারে। এর কিছুকাল পরেই ইম্পেরিয়াল কলেজে ৩৭ বছরের অধ্যাপনার পাট চুকিয়ে ঘরোয়া জীবনে প্রবেশ করেন। ১৯৯৬ সালের ২১ নভেম্বর অক্সফোর্ডে স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন এই মহান বিজ্ঞানী। তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী তাকে পাকিস্তানের আসমাদি শহরে দাফন করা হয়।

ফিচার ছবি: new-pakistan.com

Related Articles