(প্রথম পর্বের পর)
চার
বাতি জ্বলছে শেরিফের অফিসে। চেয়ারে বসে ডেপুটির সাথে কথা বলছে ক্রিসমাস। (প্রথম পর্বের পর)
‘ড্যানি, কাল একটা কথা জিজ্ঞেস করেছিলে। এই নাও তার উত্তর।’ বলে টেবিলের ড্রয়ার থেকে এম.টি. খোদাই করা ছুরিটা টেবিলের উপরে রাখল ও।
খুব সাবধানে ছুরিটা তুলে নিল ড্যানি, বাতির সামনে ধরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল। ‘এই জন্যই কাল আপনি আমাকে মার্কের পুরো নাম জিজ্ঞেস করেছিলেন,’ স্বগতোক্তি করল ও।
‘হ্যাঁ। খুনের প্রায় দুইদিন পার হতে চলল, এই ছুরিটা ছাড়া আমাদের হাতে আর কোনো সূত্র নেই। এসো, আমরা প্রথম থেকে একবার ঝালাই শুরু করি।’
মাথা ঝাঁকালো ড্যানি।
‘কার্ল বসম্যান এবং তার পরিবারকে যে খুন করেছে, সে অনেক লম্বা ও শক্তিশালী। অন্তত ট্র্যাক সেরকমটাই বলছে। সেই সাথে একটা ছুরি পেয়েছি আমরা, যাতে খোদাই করা আছে এম.টি. অক্ষরদুটো। এই ছুরিটা আততায়ীর হতেও পারে, আবার না-ও পারে। না হলে তো হয়েই গেল, কিন্তু যদি হয়, তবে ধরে নেয়া যায় যে, আততায়ীর নামের আদ্যাক্ষর এ দুটি। এই তথ্যগুলো থেকে তোমার কী মনে হয়, আমাকে বলো।’
কেশে গলা পরিষ্কার করে নিল ড্যানি। তারপর বলল, ‘শেরিফ, সবচেয়ে প্রথমে যে কথাটা আমার মাথায় এসেছে, সেটা হলো, এই খুনের কারণ, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত প্রতিশোধ।’
‘কেন এরকমটা মনে হচ্ছে তোমার?’
‘ওয়েল শেরিফ, আপনি মি. বসম্যানের খুনের ধরনটা দেখুন একবার। কোনো স্বাভাবিক গানফাইট বা ডুয়েলের ঘটনা এটা নয়। শটগান মুখে ভরে খুন! ভাবা যায়? একটা সম্ভাবনা হতে পারত, মি. বসম্যান আর আততায়ীর ধ্বস্তাধস্তির এক পর্যায়ে শটগান থেকে গুলি বের হয়ে গেছে। কিন্তু সেরকমটা যে হয়নি, তা আমরা জানি। মি. বসম্যানকে বেঁধে তারপর ট্রিগার টেনেছে খুনী।’
‘বলে যাও।’
‘আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, বাড়িঘর সব পুড়িয়ে দেয়া। মি. এবং মিসেস বসম্যান, সাথে টমিকে খুন করলেই স্বাভাবিক হতো, তাই না? কিন্তু আততায়ী তাদের র্যাঞ্চও পুড়িয়ে দিল। কেন? কারণটা কী? যেন মি. বসম্যানের সম্পত্তির ওপরে আততায়ীর প্রচণ্ড রাগ; জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিতে চাইছে সবকিছু।’
চমৎকার! মনে মনে ড্যানির প্রশংসা করলো ক্রিসমাস, তবে মুখে তার ছাপ পড়তে দিল না। ছোকরার মাথায় ঘিলু ভালোই আছে দেখা যাচ্ছে। ও নিজে যেভাবে ভেবেছে, ড্যানিও সেভাবেই ভেবেছে। নাহ, ভালোই তালিম নিচ্ছে। ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
‘আততায়ীকে কীভাবে খুঁজে বের করবো আমরা?’
‘লোকটাকে খুঁজে পাওয়ার কোনো উপায় আমার চোখে পড়ছে না। তবে, আপনার কথানুযায়ী, ছুরিটা যদি আততায়ীর বলে ধরে নেয়া যায়, তবে এ কথা বলা যেতে পারে যে, এমন কেউ মি. বসম্যানকে খুন করেছে, যার নাম এম.টি. দিয়ে।’
এবার বলো, এম.টি. দিয়ে আমরা কয়জন লোককে চিনি?’
‘শহরটা তো নেহাত ছোট নয় শেরিফ, খুঁজলে অনেককেই এরকম পাওয়া যাবে হয়তো। এখানে তো সবাই-ই প্রথম নাম দিয়ে পরিচিত হয়, খুব নামকরা কেউ না হলে তার পদবী কী, তা নিয়ে কেউ চিন্তাও করে না। যেমন ধরুন, মিগুয়েল। ওর পদবী কী, তা আমরা কেউ জানি?’
ভালো কথা বলেছে তো ড্যানি। মিগুয়েলের পুরো নাম কী, জানা লাগবে।
‘তবে,’ কথা চালিয়ে গেল ডেপুটি। ‘এম.টি. দিয়ে এই মুহূর্তে একজনের কথাই মনে পড়ছে, সে মার্ক টেলর। আর কেউ? ভ্রূ কুঁচকে চিন্তা করতে লাগল ড্যানি, বাতির আলোয় কপালের ভাঁজগুলো দেখা যেতে লাগল পরিষ্কার।
হুট করে ফ্যাকাসে হয়ে গেল ওর মুখ। ‘শেরিফ, এম.টি. দিয়ে আরেকজনকে আমরা চিনি।’
ড্যানির এই পরিবর্তন চোখ এড়ালো না ক্রিসমাসের। মুখ এরকম সাদা হয়ে গেল কেন ছোকরার? ‘কে?’ অবাক গলায় জানতে চাইলো ও।
‘জাজ মাইক টাইলার। সুজানার বাবা।’
চমকে উঠলো ক্রিসমাস। জাজকে ও জাজ টাইলার হিসেবেই চেনে, তার প্রথম নাম কী, তা জানার দরকার পড়েনি কখনো। কিন্তু জাজ টাইলার খুনের সন্দেহভাজন? একজন আইনের লোক হয়ে . . .।
কিন্তু যতই ভাবতে লাগলো ক্রিসমাস, ততই মনে হতে লাগলো, ব্যাপারটা খুবই সম্ভব। জাজের বয়স হয়েছে বটে, কিন্তু এখনও শরীরে যথেষ্ট শক্তি ধরেন। আর তার উচ্চতাও ছয় ফুটের উপরে। সব মিলিয়ে খুবই সম্ভব।
‘এখন আমরা কী করব, শেরিফ?’ ফ্যাঁসফ্যাঁসে গলায় জিজ্ঞেস করল ড্যানি।
‘অপেক্ষা করব, আর নজর রাখব জাজের ওপরে।’
আরও বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা করলো ওরা। নিজের হবু শ্বশুর খুনী হতে পারেন ভেবে মুষড়ে পড়েছে ড্যানি। ওকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করল ক্রিসমাস, সেই সাথে আরও কিছু তথ্য উদ্ধার করল। আসলেই অনেকটা কাজ এগিয়ে নিয়েছে ডেপুটি, ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছে বক্স বি’র কুক বার্ট সন্ডার্স আর কাউহ্যান্ড হেনরি লঙের সাথে।
বক্স বি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর থেকে হোটেলেই থাকছে মিগুয়েল, বার্ট, মার্ক আর হেনরি। ওদের জন্য হোটেলের দুটো ঘর ছেড়ে দিয়েছে জোসেফ।
‘বার্ট আর হেনরিকে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’ বলল ড্যানি। ‘ওরা সেই সন্ধ্যায় সেলুনেই ছিল, অন্তত পাঁচ থেকে ছয়জন লোক সাক্ষী আছে। বাকি থাকলো মিগুয়েল আর মার্ক। মার্কের ব্যাপারেও সন্দেহের অবকাশ নেই কোনো, সে বক্স বি’র সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোকদের একজন। এটা শুধু কথার কথা নয়, অনেকবার প্রমাণও করেছে সে। আর মার্কের যা উচ্চতা, সেটাও খুনীর সাথে মেলে না। বাকি থাকলো মিগুয়েল। মার্কের কথানুযায়ী, মিগুয়েল ওর সাথেই ছিল সবসময়, বাকি গরুগুলোর দেখাশোনা করছিল।’
‘মার্ক আর মিগুয়েলের সাথে আমি নিজে একবার কথা বলব।’ বলল ক্রিসমাস। ‘তবে আজ নয়, আগামীকাল।’
গভীর রাত।
হোটেল ঘরে মিগুয়েলের সাথে আছে মার্ক। ছাড়াছাড়াভাবে ঘুমাচ্ছিল ও, ভালো ঘুম হচ্ছিল না। অথচ ওর ঘুম খুব গাঢ়, এক ঘুমে রাত কাবার করে দিতে পারে। ঘুমের মধ্যেও হানা দিচ্ছিল বক্স বি’র ধ্বংসযজ্ঞ আর মনিবের লাশ। দুঃসহ সেই দৃশ্যগুলো বারবার ভেসে উঠছিল ওর মানসপটে।
এ কারণেই দরজা লাগানোর শব্দে ঘুমটা ছুটে গেল ওর। এত রাতে কে এলো, ভাবল ও। বাতিটা কমানো ছিল, বিছানায় উঠে বসে জোর বাড়ালো বাতির। কাউকে দেখতে পেল না। পাশের বিছানার দিকে তাকাল। তাকাতেই হৃদপিণ্ড লাফ দিল একটা।
বিছানাটা ফাঁকা!
বিছানা ফাঁকা কেন? মিগুয়েল কোথায়? ওরও কিছু হলো না তো? অজানা আশঙ্কায় বুকটা কেঁপে উঠল মার্কের।
ঘোড়ার খুরের শব্দ কানে এল রাতের নিস্তব্ধতায়। এত রাতে বাইরে কে? জানালার পাশে এসে দাঁড়াল ও।
নিজের ঘোড়াকে খুব আস্তে আস্তে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কেউ। পেছন থেকেও তাকে চিনতে অসুবিধে হলো না ওর।
এত রাতে কোথায় যাচ্ছে মিগুয়েল?
নিজের ঘরে ঘুমাচ্ছিল ক্রিসমাস, গভীর রাতে বাড়ির সদর দরজায় ধাক্কা পড়তে জেগে উঠল।
‘কে?’ ঘুমজড়ানো গলায় জিজ্ঞেস করলো ও, চট করে একবার বেডসাইড টেবিলে রাখা পকেটঘড়িটা দেখে নিল। দুটো বেজে দশ। করাঘাতের শব্দে জেগে উঠেছে মেরিও। মেরি, ক্রিসমাসের স্ত্রী। খুব একটা অবাক হলো না সে, স্বামীর কাজের কারণে প্রায়ই এরকম পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়।
উঠে দরজার কাছে গেল ক্রিসমাস, পর্দা সরিয়ে বাইরে উঁকি দিল। মার্ক! এত রাতে ও কী চায়?
দরজা খুললো শেরিফ। মার্ক দাঁড়িয়ে আছে, পরনে জিন্স আর শার্ট। পায়ে রাইডিং বুট। যাচ্ছে কোথাও।
‘কী ব্যাপার, মার্ক? এত রাতে? কোনো সমস্যা? কোথাও যাচ্ছ?’
‘শেরিফ, একটু আগে মিগুয়েল কোথায় যেন গেল।’
মাথা পরিষ্কার হতে শুরু করলো ক্রিসমাসের। ‘মিগুয়েল বাইরে গেছে? এত রাতে? কোথায়?’
‘সেটা জানি না শেরিফ। তবে আমি ওর পিছু নিতে যাচ্ছি। যাওয়ার আগে জানিয়ে গেলাম আপনাকে।’
‘তুমি কি মিগুয়েলকে সন্দেহ করছ?’
‘সন্দেহ চলেই আসছে। এত রাতে ও বাইরে কোথায় গেল? ব্যাপারটা আমার ভালো লাগছে না। আর হাঁটছিলও কেমন চোরের মতো। শেরিফ, আমি এখন আসছি। যদি দেখেন . . .।’
‘মি. বসম্যান যে রাতে খুন হন, সে রাতে মিগুয়েল তো তোমার সাথেই ছিল। তুমিই ড্যানিকে বলেছ। তাহলে এখন মিগুয়েলের প্রতি তোমার সন্দেহটা কেন আসছে?’ মার্ককে বাজিয়ে দেখতে চাইলো ক্রিসমাস।
‘হ্যাঁ, মিগুয়েল আমার সাথেই ছিল সবসময়। কাজটা যে ও করেনি, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। তবে খুন করতে হলে যে সবসময় নিজ হাতেই করতে হবে, এমন তো কোনো কথা নেই, না? হয়তো ওর সঙ্গী আছে কেউ, যে কিনা . . .’ কথা শেষ করল না মার্ক।
যুক্তি আছে মার্কের কথায়, ভাবলো ক্রিসমাস। ‘মিগুয়েল যদি খুনের সহযোগী হয়, তবে তুমি কী করবে?’ জিজ্ঞেস করলও।
‘খুনীকে কী করবো, জানি না। তবে মিগুয়েলের ছাল আমি নিজের হাতে ছাড়াব।’
ঠিকই বলেছিল ড্যানি। মি. বসম্যানের মৃত্যুর পরেও ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রেখেছে মার্ক।
‘মার্ক,’ নরম গলায় বলল ক্রিসমাস। ‘এখন কোথাও যেও না।’ মার্ক প্রতিবাদ করতে যাচ্ছে দেখে তাড়াতাড়ি বলল, ‘ভুল বুঝো না আমাকে। মিগুয়েল কোথায় গেছে, সেটা আমি বের করবো, কথা দিচ্ছি। এখন ঘরে ফিরে যাও। তবে একটা কথা। মিগুয়েল কখন ফেরে, সেটা আমাকে জানাবে।’
অনিচ্ছুক ভঙ্গীতে শেরিফের কথা মেনে নিল মার্ক।
‘আরেকটা কথা মার্ক। মিগুয়েলের পদবী কি জানা আছে তোমার?’
‘টরেস। ওর পুরো নাম মিগুয়েল টরেস।’
মিগুয়েল টরেস! অর্থাৎ আবার সেই এম.টি.? কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল ক্রিসমাসের।
বিদায় নিয়ে ফিরে গেল মার্ক। মিগুয়েল কখন ফেরে, তা দেখার জন্য ঘাপটি মেরে শুয়ে থাকল।
কিন্তু সে রাতে আর ফিরল না মিগুয়েল।
পাঁচ
পরদিন সকালে নাস্তা করেই মিগুয়েলের ট্র্যাক ধরতে চেয়েছিল ক্রিসমাস। কিন্তু কিছু জরুরী কাজ সারতে গিয়ে সময় লেগে গেল কয়েক ঘণ্টা। সব সেরে বেরোচ্ছে, এমন সময় হাঁপাতে হাঁপাতে এলো চার্লি। ওদের বাড়ির ওপরে হামলা করেছে গানম্যানের দল!
ঠিক এই ভয়টাই করছিল ক্রিসমাস। গানম্যানদের পছন্দ করে না ও। ওর মতে, সভ্য সমাজ আর গানম্যান হচ্ছে আগুন আর বারুদের মতো, দুটোকে কাছাকাছি রাখলে বিস্ফোরণ ঘটবেই। এখানেও তা-ই ঘটেছে। শহরে আসার একদিনের মধ্যেই গণ্ডগোল বাধিয়ে দিয়েছে হারামজাদারা।
সিক্সগান আর রাইফেলে দক্ষ হলেও নিজেকে কখনো গানফাইটার মনে করেনি ক্রিসমাস। নিজেকে ও আইনের একজন সেবক বলে মনে করে, অস্ত্র যার কাছে সেই আইনরক্ষার হাতিয়ার।
ড্যানিকে শহরে রেখে চার্লির সাথে রওনা দিল ও। চার্লির পুরো নাম চার্লস উড, বাপের নাম সাইমন উড। হোমস্টেডার পরিবার, জ্যাক মরমন্টের র্যাঞ্চ জে ডট এম-এর শেষ সীমানায় তাদের আবাস।
এখানে বসত করা নিয়ে কম ঝামেলা হয়নি, মনে আছে ক্রিসমাসের। তবে জ্যাকের চেয়ে গলা উঁচু বেশি ছিল জোসেফেরই। তার যুক্তি ছিল, একজনকে থাকতে দিলে তার দেখাদেখি আরও অনেকে আসবে। কথা যে খুব ভুল ছিল, তা-ও না। আমেরিকা একটা বিশাল দেশ। এখানে যে যেভাবে পারে, জমি দখলে রাখে। ক্লেইম ফাইল করে ঝামেলা শেষ করতে কেউই উৎসাহী না। ক্লেইম ফাইল করা মানেই বছর বছর ট্যাক্স দাও, কী দরকার!
শেষ পর্যন্ত জ্যাক অনুমতি দিলে ব্যাপারটার সুরাহা হয়। শান্তিতে বাস করতে থাকে উড পরিবার। তাদের দেখাদেখি আরও কয়েকটা পরিবার এসেছিল বটে, কিন্তু তাদেরকে এলাকা থেকে হাঁকিয়ে দেয় জে.এম. এর কাউহ্যান্ডরা।
উড পরিবারের খামারে পৌঁছাল ক্রিসমাস। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে সকল জিনিসপত্র, সবজির ক্ষেতটা নষ্ট হয়ে গেছে ঘোড়ার খুরের আঘাতে। একজোড়া দুধেল গাইয়ের একটা মারা গেছে গুলিতে। বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছিল, তাড়াতাড়ি পানির কারণে ছড়াতে পারেনি সে আগুন। একটা পাশ পুড়ে গেছে শুধু।
গানম্যানদেরকে দেখা গেল না কোথাও, ফুর্তি করা শেষে চলে গেছে। কপাল ভালো বলতে হবে, কেউই হতাহত হয়নি। মেয়েদের গায়েও হাত দেয়নি কেউ।
ঘোড়া থেকে নেমে সবকিছু দেখলো ক্রিসমাস, তারপর সাইমনকে চার্লির ঘোড়ায় উঠতে বলে রওনা দিল জে.এম. এর দিকে।
জ্যাক মরমন্টের র্যাঞ্চ থেকে ক্রিসমাস যখন বেরোল, তখন শেষ বিকেল। হাতেমুখে কালশিটে পড়েছে ওর, জেফ লোগান নামের এক গানম্যানকে খালি হাতে পেটানোর ফল।
জে.এম. এ পৌঁছে দেখে হইহুল্লোড়ে মেতে আছে চারজন গানম্যান। অন্যের ক্ষতি করে কীভাবে এতটা উল্লাসে থাকা যায়, সেটা কখনোই বুঝতে পারেনি ও। ওদেরকে দেখে কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায় বন্দুকবাজের দল, তারপর টিটকারি দেয়া শুরু করে ক্রিসমাসকে। জোসেফ ব্রাউনের অফিসে যা তর্কাতর্কি হয়েছিল, তারই ফল, বুঝতে বাকি থাকে না ওর।
চোখের ইশারায় একজনকে দেখিয়ে দেয় সাইমন, এই লোকের নেতৃত্বেই তার খামারে হামলা চালিয়েছিল বাকিরা। নাম, জেফ লোগান। ঘোড়া থেকে নামে ক্রিসমাস, ওকে নামতে দেখে টানটান হয়ে যায় চারজনের শরীর। কিন্তু এরপরেই অবাক হয়ে যায় তারা, কারণ কোমর থেকে পিস্তলের বেল্ট খুলে মাটিতে ফেলে দেয় ক্রিসমাস!
হকচকিয়ে যায় গানম্যানরা। কী করতে চাইছে শেরিফ?
অলসভাবে এগিয়ে যায় ক্রিসমাস, হাত শরীরের দুই পাশে ঝুলছে, হাঁটার তালে দুলছে অল্প অল্প। হেঁটে জেফের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, তারপরে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঠাশ করে চড় মারে তার গালে!
চিৎকার করে এক হাতে গাল চেপে ধরে জেফ, আরেক হাত বাড়ায় কোমরের অস্ত্রের দিকে। ঠিক তখনই বাধা দেয় তার একজন সঙ্গী। ‘খবরদার জেফ! শেরিফ নিরস্ত্র।’
নিজের সঙ্গীর কাছ থেকে বাধা পেয়ে থমকে যায় জেফ, তারপরেই কুৎসিত হাসি হেসে গানবেল্ট ফেলে দেয়। এগিয়ে আসে ক্রিসমাসের দিকে, ঘুষি চালায় মুখ লক্ষ্য করে। আগে থেকে প্রস্তুত থাকায় ঘুষিটা এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয় ক্রিসমাস, বদলে জেফের পাঁজরে ধাম করে ঘুষি বসিয়ে দেয়।
তারপরে যা হয় আরকী! মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে ওরা দুজন। বেশিরভাগ মার শেরিফই দেয় বটে, তবে হজমও করতে হয় বেশ কিছু। মারামারি শেষ হয় জেফ লোগানের অজ্ঞান হওয়ার মাধ্যমে, ওকে কাঁধের উপর তুলে মাটিতে আছড়ে ফেলে ক্রিসমাস।
মাটিতে বসে হাঁপাতে থাকে ও, আর তখনই দুজন গানম্যান সাথে নিয়ে র্যাঞ্চে ফেরে জ্যাক মরমন্ট। কী হয়েছে, জানতে পেরে হতবাক হয়ে যায় সে, উড পরিবারকে ক্ষতিপূরণও দিতে রাজি হয় ক্রিসমাসের কথায়। তার লোকেদের কাজের জন্য ক্ষমাও চায় সাইমনের কাছে।
ঘোড়ার পিঠে চেপে এগোচ্ছে ক্রিসমাস। ভালোই ব্যথা পেয়েছে ও, মারামারির সময়ে বোঝা যায়নি। সাইমন আর চার্লি চলে গেছে নিজেদের বাড়ির পথে। কিন্তু এসব নিয়ে ভাবছে না। গত রাতে মার্ককে ও কথা দিয়েছিল, মিগুয়েলের ট্র্যাক অনুসরণ করবে। কিন্তু আজ সকাল থেকে একটার পর একটা ঘটনা ঘটতেই আছে, ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তার সময়ই পায়নি। এখন কি যাবে?
সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে, পুরোপুরি অন্ধকার হতে এখনও বাকি আছে যদিও। কিন্তু রেডউডে ফিরে আবার ট্র্যাক ধরে এগোতে হবে, ফিরতে ফিরতে রাত তো হবেই, গভীর রাত হওয়াও বিচিত্র কিছু নয়। কিন্তু মার্ককে যে ও কথা দিয়েছে! কথার বরখেলাপ করা ভীষণ অপছন্দ করে ক্রিসমাস।
ঠিক আছে। যাওয়া যাক তবে।
ক্রিসমাসের চলে যাওয়া দেখল খুনী। দেখেছে উড পরিবারের কর্তার কাছে জ্যাকের ক্ষমা চাওয়াও। বেশ অনেকটা দূরে গাছপালার আড়ালে লুকিয়ে আছে সে, নজর রাখছে জে.এম. র্যাঞ্চের দিকে। কারো কথা শুনতে না পেলেও কী ঘটছে, তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না।
ক্রিসমাস চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে ঘোড়ায় চেপে হাওয়া খেতে বের হলো জ্যাকের মেয়ে ডায়ানা মরমন্ট, সেটাও চোখে পড়লো তার।
‘ঘুরে নাও, ডার্লিং।’ খুশি খুশি গলায় বলল খুনী। ‘কারণ আজকেই তোমার জীবনের শেষ ঘোরা।’
শহরে আছে ড্যানি। হাতের কাজ সারছে, শহরবাসীর অভিযোগ শুনছে মন দিয়ে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও জাজ টাইলারের বাড়ির দিকে নজর রাখতে ভুল করছে না। সেই সাথে কাজে লাগিয়েছে এক ভবঘুরেকে। শর্ত একটাই, বিনে পয়সায় মদ খাওয়াতে হবে তাকে।
দুপুরের দিকে দৌড়াতে দৌড়াতে সেই ভবঘুরে এলো। ‘তাড়াতাড়ি আসুন। এইমাত্র জাজ কোথায় যেন বেরিয়ে গেলেন।’
খবর পেয়ে দেরি করল না ড্যানি, সাথে সাথে বেরিয়ে পড়ল। জাজের ঘোড়াটা কালোরঙের, বিশাল একটা বে। মাটিতে তার পায়ের ছাপ ফুটে আছে পরিষ্কার।
কিন্তু একটা জায়গায় এসে থেমে গেল ড্যানি, রাস্তা এখানে দুই ভাগ হয়ে গেছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, দুই রাস্তার কোনোটাতেই জাজ কিংবা তার ঘোড়ার পায়ের ছাপ নেই। যেন এখানে পাখা গজিয়েছে ঘোড়া আর তার আরোহীর।
ট্র্যাক পড়তে খুব একটা দক্ষ নয় ডেপুটি। দক্ষ হলে বুঝত, রাস্তা এখানে দুটো নয়, তিনটে। তৃতীয়টা সরু একটা পায়ে চলা পথ, জানা না থাকলে চোখে পড়ে না।
সেই পথেই অদৃশ্য হয়েছেন জাজ টাইলার।
গভীর রাতে শহরে ফিরলো ক্রিসমাস। ক্লান্তিতে ভেঙে আসছে শরীর। যে উদ্দেশ্যে গিয়েছিল, ব্যর্থ হয়েছে তা। ট্র্যাক মুছেই গেছে প্রায়, যেটুকু আছে তা আর রাতে অনুসরণ করা সম্ভব নয়। আর পরদিন সকাল হতে হতে মুছে যাবে অবশিষ্টটুকুও।
শহরে ফিরতেই সেলুনের সামনে জটলা দেখতে পেলো। সাথে সাথে বুঝে গেল, গণ্ডগোল হয়েছে কোনো। নয়তো এত রাতে সেলুনের সামনে জটলা থাকার কোনোই কারণ নেই। জটলার মধ্যে মার্ক, ড্যানি, জোসেফ, জাজ সবাই-ই আছে। উত্তেজিতভাবে নিজেদের মধ্যে কথা বলছে তারা।
‘কী হয়েছে? ভিড় কেন এখানে?’ জিজ্ঞেস করলো ক্রিসমাস।
‘এই যে এতক্ষণে শেরিফ সাহেবের আসার সময় হয়েছে।’ বিদ্রুপ ঝরল জোসেফের কন্ঠে। ‘কী অবস্থা, শেরিফ? খুব তো বলেছিলেন আইন আমাদের সুরক্ষা দেবে। দিল?’
জোসেফের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো ক্রিসমাস। এভাবে কথা বলছে কেন লোকটা?
‘কী হয়েছে, ড্যানি?’ ডেপুটিকে জিজ্ঞেস করল ও।
ড্যানি কিছু বলার আগেই মুখ খুললো মার্ক। ‘মি. মরমন্ট মারা গেছেন। সপরিবারে খুন করা হয়েছে তাকে।’
নিজের স্বভাবের সম্পূর্ণ বাইরে গিয়ে কুৎসিত একটা গালি দিল ক্রিসমাস। কাকে যে দিল, তা ও নিজেও বলতে পারবে না।
ছয়
জ্যাক মরমন্টের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে সবাই।
সেই একই দৃশ্য, একই তরিকায় খুন। বাড়ির সামনে হাত-পাবাঁধা অবস্থায় পড়ে আছেন মি. মরমন্ট, মাথার পেছন দিকটা উড়ে গেছে শটগানের গুলিতে। পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে গোটা বাড়িটা। ভেতরে যে ডায়ানা মরমন্টের পোড়া লাশ পড়ে আছে, সে ব্যাপারে ক্রিসমাসের মনে কোনো সন্দেহ নেই। স্ত্রী ছিল না মি. মরমন্টের।
জীবনে অনেক ঘাগু অপরাধীর মোকাবেলা করেছে ক্রিসমাস, কিন্তু এই খুনীর মতো কারো মুখোমুখি ও হয়নি। ওকে রীতিমতো ঘোল খাইয়ে দিচ্ছে লোকটা। লোকটা কে আসলে? মিগুয়েল? জাজ? মার্ক? নাকি অন্য কেউ? জোসেফ নিজে?
আরও একটা ব্যাপার হচ্ছে, মেয়েদের খুন করাতেও অরুচি নেই খুনীর। এই পশ্চিমে মেয়েদের ক্ষতি করার কথা যেখানে খোদ শয়তানও চিন্তা করে না, সেখানে অবলীলায় দুজনকে খুন করে ফেলল লোকটা?
আশেপাশে গানম্যানদের লাশ দেখতে পেল ও। নিরাপত্তা দিতে এসে নিজেরাই লাশ হয়ে গেল এরা। এদের সাথে গতকাল দুপুরেই দেখা হলো, তখনও জীবিত ছিল মানুষগুলো। এটাও এক আশ্চর্য ব্যাপার। এরা সবাই-ই বন্দুকের দক্ষতা বিক্রি করে জীবন ধারণ করত, এদের একজনের সাথে লাগতে যাওয়াও ছিল বিশাল সাহসের ব্যাপার।
আততায়ীর যে সাহসের কমতি নেই, সে ব্যাপারে নিশ্চিত ও। কিন্তু তা-ই বলে ছয়জন গানম্যানকে মোকাবেলা করা? শুধু তা-ই নয়, মারা গেছে ছয়জনই! এককথায় অকল্পনীয় যাকে বলে। লোকটা আসলে কে?
চিন্তার সুতা ছিঁড়ল জোসেফের গলার আওয়াজে। রাগে মুখবিকৃত হয়ে গেছে লোকটার, খিস্তি করছে সমানে। খিস্তি করা শেষ হলে ক্রিসমাসের দিকে ফিরল সে।
‘দুই-দুইটা খুন হয়ে গেল আপনার সামনে, করতে পারলেন কিছু? এই আপনার নিরাপত্তার নমুনা, শেরিফ?’
ক্রিসমাসের ধৈর্যের বাঁধও ভেঙে গেল এবার। কাঁহাতক আর সহ্য করা যায়? প্রথম থেকে ঝামেলা পাকাচ্ছে লোকটা, নিজেই গানম্যান ডেকে এনে এখন ক্রিসমাসকে দায়ী করছে।
‘নিরাপত্তা কি আমি দিয়েছি? এই বন্দুকবাজের দল কি আমার আনা?’ পাল্টা জবাব দিল ক্রিসমাসও। ‘আমার কথা শুনেছেন আপনি?’
‘কারো কথা শোনার দরকার নেই আমার।’ বলল জোসেফ। ‘আমি সেটাই করব, যেটা আমার ইচ্ছা। আমিই এই এলাকার আইন।’
‘আর আমি এই এলাকার লোকেদের ভোটে নির্বাচিত শেরিফ।’ চিৎকার করল ক্রিসমাসও।
এরকম কতক্ষণ চলত, বলা যায় না। ওদের মাঝে এসে দাঁড়ালো ড্যানি।
‘শেরিফ এবং মি. ব্রাউন, এই কথাগুলো তো পরেও বলতে পারি আমরা, তাই না?’
ভোরে বাড়ির দরজায় টোকা দিলো ক্রিসমাস। করাঘাতের শব্দে দরজা খুললো মেরি, নিজের স্বামীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল। একদিনেই বিধ্বস্ত অবস্থা হয়েছে ক্রিসমাসের, টানা প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা জেগে আছে। চোখ টকটকে লাল। ঘরে ঢুকেই বিছানায় লুটিয়ে পড়ল ও।
ভেবেছিল শোয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে যাবে, কিন্তু ঘুম এলো না। নানান প্রশ্নে মাথাটা ভারী হয়ে আছে, এত কিছুর মধ্যেও মাথা জোড়া খুন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কার্ল বসম্যান হত্যাকাণ্ডের পরে অনেকটাই অন্ধকারে ছিল ও, জ্যাক মরমন্টের হত্যাকাণ্ড বেশকিছু ব্যাপার পরিষ্কার করে দিয়েছে।
কার্ল বসম্যানের পরে খুন হলো জ্যাক মরমন্ট। কার্ল খুন হওয়ার পরে যে জ্যাকের ওপরে যে ক্রিসমাসের সন্দেহ হয়নি, তা নয়। তবে, তিনবন্ধুর মধ্যে জ্যাকই ছিল সবচেয়ে ভীতু, আর সবচেয়ে ডাকাবুকো জোসেফ। ক্রিসমাস এখন নিশ্চিত, এই দুই হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কোনো আক্রোশ থেকে করা। পয়েন্ট নাম্বার এক।
পয়েন্ট নাম্বার দুই। কার্ল আর জ্যাক খুন হওয়ার পরে এবার কার পালা? অন্যকারো, নাকি তিন বন্ধুর শেষজন জোসেফ ব্রাউনের? নাকি, জোসেফ ব্রাউনই সবকিছুর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে?
পয়েন্ট নাম্বার তিন। যদি, খুনীর লক্ষ্য এবার জোসেফ ব্রাউন হয়, তবে ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যায় প্রায়। কার্ল, জ্যাক এবং জোসেফ এমন কিছু করেছিল, অথবা করেছে, যার ফল এখন তাদের ভুগতে হচ্ছে। সেই ‘কিছু’ টা কী?
পয়েন্ট নাম্বার চার। মিগুয়েল কোথায়? সে কি ফিরেছে? ফিরলে ড্যানি জানাতো। তার মানে, ফেরেনি।
শেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
খুনী কে?
চিন্তার এই পর্যায়ে এসে ঘুমিয়ে পড়ল ক্রিসমাস। ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছে ও।
স্বপ্নে দেখল, মিগুয়েলের সাথে ও কোথায় যেন যাচ্ছে। মিগুয়েলের সাথে ও কোথায় যাচ্ছে, এই প্রশ্নটা তখন মনে এল না, বরং যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক বলে মনে হলো। এক পর্যায়ে ঘোড়া ছুটিয়ে দিলো মিগুয়েল, পিছিয়ে পড়লো ক্রিসমাস। ও যতই এগোতে যায়, মিগুয়েলও ততই এগিয়ে যায়।
‘ড্যানি, ড্যানি।’ পিছন থেকে ডাকলো ও। আরে! মিগুয়েলকে ও ড্যানি বলে ডাকছে কেন? মিগুয়েল মুখ ফেরালো এই সময়। অদ্ভুত ব্যাপার! মিগুয়েল কীভাবে যেন ড্যানি হয়ে গেছে! ক্রিসমাসের কাছে ফিরে এলো সে, ফিরে এসে ওকে ঝাঁকাতে শুরু করলো। আজবতো! ড্যানি ওকে এভাবে ঝাঁকাচ্ছে কেন?
‘ড্যানি গুলি খেয়েছে। ওঠো, ওঠো।’ ড্যানি নিজেকে নাম ধরে ডাকছে কেন? ওকে তুমি করেই বা কেন বলছে? আর গুলি খেয়েছে মানে কী?
ঘুম ভেঙে গেল ক্রিসমাসের। ড্যানি না, ওকে ঝাঁকাচ্ছে মেরি। রক্তলাল চোখে স্ত্রী’র দিকে তাকালো ক্রিসমাস।
‘তাড়াতাড়ি ওঠো। ব্যাংক ডাকাতি আটকাতে গিয়ে গুলি খেয়েছে ড্যানি।’
(পড়ুন তৃতীয় অর্থাৎ শেষ পর্ব)