আশেপাশে কোথাও জেনারেটর চালু হওয়ার মতো একটা বিদঘুটে আওয়াজ হলো। এরিসের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় তাকে জানান দিচ্ছে বিপদ অবশ্যম্ভাবী। সম্ভবত বিজ্ঞানী মৃত্যুর আগে কোনো সেলফ ডেস্ট্রাকটিভ প্রোগ্রাম চালু করে দিয়েছে, হয়তো গোটা ভবনটি এখন ধ্বংস হয়ে যাবে। দ্রুত পালানোর পথ খুঁজল এরিস এক্স। তবে পালাতে চাইলেই পালানো সম্ভব নয়, এখানে ওখানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে অদৃশ্য সব ফাঁদ! এরিস করিডরের দিকে পা বাড়াতেই ল্যাবের ভেতর বিজ্ঞানী অ্যালেক্সের কণ্ঠস্বর গম গম করে উঠল। “দাঁড়াও এরিস, যেও না! তোমার কাজ এখনও শেষ হয়নি।” থমকে দাঁড়াল এরিস এক্স। ঘুরে দাঁড়াতেই দেখল একটা প্রজেক্টর চালু হয়েছে, ল্যাবের দক্ষিণ দিকের সফেদ দেয়ালে বিজ্ঞানী অ্যালেক্সের বিশাল বড় একটা প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠেছে। তার মানে বিজ্ঞানী অ্যালেক্স কোনো ফাঁদ চালু করেননি, এক্ষুনি গুলি খাবেন বুঝতে পেরে প্রজেক্টর চালু হওয়ার বোতামটি টিপে গেছেন!
বিজ্ঞানী বলছেন, “এরিস! যদি এই প্রজেক্টর চালু হয়ে থাকে তবে ধরে নিচ্ছি কিছুক্ষণ আগে আমি তোমার হাতে খুন হয়েছি। তুমি হয়তো অবাক হয়েছ এই ভেবে যে নিজের মৃত্যু তোমার হাতে হবে, তা কীভাবে আমি আগে থেকে টের পেলাম...”
কথাটা মিথ্যা না। এই মুহূর্তে এরিসের মাথায় সেই প্রশ্নই ক্রমাগত ঘুরছে।
“... কারণ আমি জানি পৃথিবীতে কেবল একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব এই ভবনের নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেদ করে এসে আমাকে খুন করা। সে হচ্ছে তুমি—এরিস এক্স! আমার নিজ হাতে গড়া কিলিং মেশিন”।
এরিস এক্সের চেহারায় কোনো ভাবান্তর নেই।
বিজ্ঞানী হাসলেন, “কিলিং মেশিন বলাতে রাগ করেছ নাকি এরিস এক্স? অবশ্য রাগ-অভিমান, ব্যথা-বেদনা এইসব মানবিক অনুভূতিগুলো তোমার মধ্যে কাজ করার কথা নয়! সরকারের সামান্যতম নির্দেশে কোনোরকম বিচার ছাড়াই যেকোনো ব্যক্তিকে খুন করার জন্য তোমাকে তৈরি করা হয়েছে!”
এক মুহূর্ত বিরতি দিয়ে আবার বললেন ড. অ্যালেক্স, “এরিস এক্স! জানি আমার কথাগুলো তোমার বিরক্তির উদ্রেক করছে। তবুও আমি চাইব আমার কথাগুলো তুমি মন দিয়ে শোন। হাজার হোক আমি তোমার স্রষ্টাদের একজন। তোমাকে কঠিন পাথরের মতো বিকারহীন মানুষরূপে গড়ে তুলেছি সত্যি কিন্তু একজন মৃতব্যক্তির শেষ শব্দগুলো শুনতে অপারগ হতে নিশ্চয়ই শেখাইনি।”
এরিস এক্স বিরক্ত হয়েছে ঠিকই, কাজ সেরে যতদ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যাওয়ার ট্রেনিং তাকে দেয়া হয়েছে। তবুও সে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল। তার মধ্যে এক ধরনের কৌতূহল কাজ করছে ড. অ্যালেক্সের পরবর্তী কথাগুলো শোনার জন্য।
“তুমি জান জাতিগত ভেদাভেদের সুযোগে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পৃথিবীর ক্ষমতা দখল করে নেয় রেড আর্মি। জনগণ প্রাথমিক অবস্থায় রেড আর্মির শাসন মেনে নিলেও এখন আর তারা এই স্বৈরাচারী সরকারের শাসনব্যবস্থা মেনে নিতে চায় না। জনগণ চায় গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা। সরকার গঠনের একমাত্র উপায় হতে হবে গণতান্ত্রিক নির্বাচন পদ্ধতি। স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী রেড আর্মি ক্ষমতা হাতে তুলে নেয়ার পর থেকে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে জনগণকে আশ্বাস দিলেও প্রতিনিয়ত তারা প্ল্যান করছে কীভাবে অনন্তকালের জন্য ক্ষমতা আঁকড়ে বসে থাকা যায়! এভাবে কেটে গেছে প্রায় ৫ বছর। সরকার নানা অজুহাতে নির্বাচন বিষয়টিকে অপ্রাসঙ্গিক আখ্যা দিয়ে চলেছে। তারা জনগণকে বোঝাতে চাইছে দেশে নির্বাচন করার মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু হায়দার মালিক জানে জনগণ যদি একদিন সত্যি সত্যি মাঠে নেমে আসে, তাহলে তাদের পতন অবশ্যম্ভাবী। তাই সরকার নিজেদের পতন ঠেকাতে তিনটি অত্যন্ত গোপনীয় প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। সেই প্রজেক্টগুলো হলো প্রজেক্ট এরিস, প্রজেক্ট হেডিস এবং প্রজেক্ট হেলিওস। এরিস এক্স, তুমি নিজেও এই প্ল্যানের অংশ। তুমি নিশ্চয়ই জানতে চাও কেন তোমাকে এভাবে গড়ে তোলা হলো, তাই না?”
আবার এক মুহূর্তের জন্য থেমেছেন অ্যালেক্স আরভিন। এবার এরিস এক্সের কৌতূহলের মাত্রা খানিকটা বাড়ল। নিজের সৃষ্টির রহস্য জানতে চায় না এমন কেউ নেই।
“... প্রথমেই বলি প্রজেক্ট হেডিসের কথা। সরকার খুব গোপনে একটা ভাইরাস সৃষ্টির চেষ্টা করছে। একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে দূরপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সার্স নামে একধরনের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই মানুষের মৃত্যু হতো। ঠিক তেমন একটা ভাইরাস হচ্ছে হেডিস। তবে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে বায়ু, পানি, মাটি, শব্দ এমনকি আলোর মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে লক্ষাধিক মানুষ মুহূর্তের মধ্যেই মেরে ফেলতে পারে! এটি তৈরির পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা যায়, ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিয়ে জনগণের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। আমি যতদূর জানি, এই ভাইরাস তৈরির প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে।
এবার আসি প্রজেক্ট হেলিওস প্রসঙ্গে। প্রজেক্ট হেলিওস হচ্ছে এক ধরনের মেমোরি রি-জেনারেটর থেরাপি। এর সাহায্যে যেকোনো ব্যক্তির মেমোরি বদলে দেয়া যাবে। আমি সন্দেহ করছি সরকার হেডিস ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিয়ে গণহারে সাধারণ মানুষ মারার প্ল্যান করেছে। মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর সরকার পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হবে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রতিরোধক আবিষ্কার হয়েছে। ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রত্যেককে সরকারি ল্যাবে এসে এক ধরনের থেরাপি গ্রহণ করতে হবে। সেই থেরাপি হবে এই হেলিওস। থেরাপি নেয়াকালীন এখানে মানুষের স্মৃতি বদলে দেয়া হবে। সরকার সম্পর্কিত অজস্র মিথ্যা তথ্য সবার স্মৃতিতে প্রবেশ করানো হবে, যেখানে সবাই জানবে রেড আর্মি গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় এসেছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে পৃথিবীকে তারাই রক্ষা করেছে এবং তারা সব সময় জনগণের কল্যাণে কাজ করে চলেছে। এভাবে স্মৃতিভ্রষ্ট মানুষগুলো আর সরকারবিরোধী কখনোই হবে না। তারা সব সময় সরকারের শাসন মাথা পেতে নিতে শিখবে। স্বৈরাচারী ক্ষমতালোভী শাসক গোষ্ঠী রেড আর্মি চাচ্ছে হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া রাজপ্রথা আবার ফিরিয়ে আনবে গোটা উপমহাদেশে। জানি আমার কথাগুলো তোমার কাছে পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। তুমি হয়তো অবাক হচ্ছ এই ভেবে যে এত কিছু আমি কী করে জানলাম? সেই কথায় আসছি একটু পরেই...”
এরিস কিছুই ভাবছে না। সে অপেক্ষায় আছে প্রজেক্ট এরিস সম্পর্কে জানার জন্য। সে জানতে চায় কীভাবে কেন তাকে সৃষ্টি করা হলো! সরকারের নির্দেশে বিদ্রোহী ব্যক্তিদের গোপনে খুন করার সময় বহুবার এই চিন্তাটা তার মাথায় এসেছে। কেন সে বেছে নিয়েছে একজন অ্যাসাসিনের জীবন?
“... সবশেষে আসি প্রজেক্ট এরিসের কথায়। এই প্রজেক্টের কাজ হল দক্ষ, শক্তিশালী ও নিষ্ঠুর কিছু অ্যাসাসিন তৈরি করা, যারা সরকারি নির্দেশে কোনোরূপ বাছবিচার ছাড়াই যে কোনো মানুষকে খুন করতে সক্ষম। প্রাচীন গ্রিক পুরাণের যুদ্ধের দেবতা এরিসের নামানুসারে এই প্রজেক্টের নামকরণ করা হয়েছে প্রজেক্ট এরিস। এই প্রজেক্টের একজন গিনিপিগ হচ্ছ তুমি—এরিস এক্স! আমি ও আমার কিছু সহবিজ্ঞানীকে এই প্রজেক্টে নিয়োগ দেয়া হয়। সরকারি নিয়োগের বিরুদ্ধে কথা বলার উপায় নেই, তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে আমরা যোগ দিয়েছিলাম এই প্রজেক্টে। আর এই প্রজেক্টের সংস্পর্শে এসে অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সাথে যোগাযোগ গড়ে ওঠে। সেখান থেকেই এই তিনটি প্রজেক্ট নিয়ে সরকারি ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া আমাদের সামনে দৃশ্যমান হয়।”
এরিস শরীরের ভার এক পা থেকে অন্য পায়ে চাপাচ্ছে। অস্থির লাগছে তার। বুঝতে পারছে যত দ্রুত সম্ভব এখান থেকে পালানো দরকার। সে ছাড়াও অন্য একটা হামলাকারী দল বিল্ডিং এর প্রত্যেকটি কোনা তন্নতন্ন করে খুঁজছে। এই ল্যাবের খোঁজ পেতে তাদের খুব বেশি সময় লাগবে না। ইতিমধ্যে হয়তো নিরাপত্তাকর্মীদের একটা ব্যাকআপ দলও এর খবর পেয়ে গেছে। কিন্তু অদৃশ্য কোনো এক সূত্র যেন তাকে আটকে রেখেছে!
বিজ্ঞানী এক নাগাড়ে বলে চলেছেন, “... প্রজেক্ট এরিসে প্রাথমিকভাবে আমাদেরকে তিনজন মানুষ দেয়া হলো যাদের নাম-পরিচয়-অতীত জীবন সম্পর্কে আমরা প্রায় কিছুই জানতাম না। ধারণা করতে পেরেছিলাম তোমরা রেড আর্মির সামরিক শাখার বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যোদ্ধা! তোমাদের সবার নির্দিষ্ট একটা কোডনেম দেয়া হলো—এরিস এক্স, এরিস ওয়াই এবং এরিস জেড। আমাদের ওপর নির্দেশ ছিল, তোমাদেরকে কঠিন পাথরের মতো করে গড়ে তুলতে হবে যেন কোনো ধরনের মানবিক অনুভূতি তোমাদের মাঝে কাজ না করে। এই প্রক্রিয়ায় যদি তোমাদের মৃত্যু হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই! আমরা নানারকম থেরাপি দিয়ে ধীরে ধীরে তোমাদের এমনভাবে গড়ে তুললাম যেন বাইরে থেকে দেখতে রক্তমাংসের মানুষ মনে হলেও ভেতরটা থাকে যন্ত্রের ন্যায় বিকারহীন। বিশাল ল্যাবের ভেতর প্রতিমুহূর্তে তোমাদের তিনজনকে ভয়ংকর সব অমানবিক ট্রেনিং প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। তবে এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া তোমাদের সবার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব হলো না। একটা সময় এরিস ওয়াই ও এরিস জেড মারা গেল, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তুমি উতরে গেলে, এরিস এক্স। তোমার বেঁচে যাওয়ার কারণটুকু অবশ্য একটু অদ্ভুত। বাকি দুজনের মতো তুমি পুরোপুরি শক্ত, বিকারহীন যন্ত্রের মত হয়ে যাওনি। তোমার ভেতরে খুব সঙ্গোপনে মানবিক অনুভূতিগুলো লুকিয়ে আছে, যা তোমাকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার খোরাক যুগিয়েছে...”।
এরিস এক্স আবিষ্কার করল তার বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। একটু অবাক হল সে। এমন তো সাধারণত হয় না তার!
“... আমাদেরকে বোঝানো হয়েছিল এই প্রজেক্টের উদ্দেশ্য অত্যন্ত মহান। দেশের বিরুদ্ধে যারা গোপনে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে তাদের নিধন করার জন্যই তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু অল্পদিনের মাঝেই আমরা বুঝতে পারলাম, সরকার তার নিজের অবস্থান অক্ষুন্ন রাখতে গোপনে তোমার দ্বারা ইউনাইটেড আর্থের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করছে তাদের সরিয়ে দিচ্ছে। তবে প্রজেক্ট এরিসের এখানেই শেষ নয়। আন্তর্জাতিক আইনে অনেক আগেই মানুষের ক্লোন তৈরি বন্ধ করে দেয়ার পরও আমাদের স্বৈরাচারী সরকার গোপনে এই কাজটি করে চলেছে। তুমি সারভাইভ করার পর তোমার ডিএনএ ক্লোন করে গোপন ল্যাবে তোমার মতো আরও সহস্র অ্যাসাসিন সৃষ্টি করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই তোমার মস্তিষ্ক ম্যাপিং করে তোমার সমস্ত স্মৃতি নিয়ে ঐ সকল ক্লোনদের জাগিয়ে তোলা হবে। সাথে ঢুকিয়ে দেয়া হবে কিছু বিশেষ নির্দেশ। শত শত অ্যাসাসিন জেগে ওঠার পর তোমার প্রয়োজন ফুরোবে। তখন তোমাকে মেরে ফেলা হবে। কারণ যতই ব্র্রেনওয়াশ করা হোক না কেন, তোমার মধ্যে এখনও একটা মানুষের মন আছে এরিস। যেকোনো সময় সেই মন বিদ্রোহ করে বসতে পারে, সরকার সেই ঝুঁকি নেবে না কিছুতেই...”
কোথাও একটা শব্দ শোনা গেল। সম্ভবত ইনডিপেন্ডেন্ট ফাইটারস গ্রুপের সদস্যরা পৌঁছে গেছে। আসার সময় চারজন নিরাপত্তাকর্মী আর দুটো কুকুরকে মেরে ফেলে এসেছে এরিস। এতক্ষণে হয়তো ব্যাকআপ নিরাপত্তাকর্মীদের খবর পাঠানো হয়েছে! তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে সমস্ত ভবন জুড়ে। এক্ষুনি পালাতে হবে, এক্ষুনি...
কিন্তু বিজ্ঞানী অ্যালেক্স থামছেন না, “...আরও একটা বিশেষ কাজ করেছে সরকার প্রজেক্ট এরিসের আড়ালে। তুমি হয়তো বিংশ শতাব্দীর সময়কার ভয়ংকর পারমাণবিক বোমা সম্পর্কে শুনেছ। সামান্য একটা বোমা গোটা শহর ধ্বংস করে দিতে সক্ষম ছিল। জলবায়ুগত পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ে সেগুলো ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া শেষে রেড আর্মি পারমাণবিক বোমার আদলে কিছু প্লুটোনিক মিসাইল তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। এই অস্ত্র হচ্ছে সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ক্ষমতার অধিকারী। পারমাণবিক বোমার মতো গোটা শহর উড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা হয়তো নেই। যেকোনো স্থাপনার ওপর টার্গেট লক করে মিসাইল ছুঁড়ে দেয়ার পর সেটি গন্তব্যে আঘাত করার পরমুহূর্তেই গোটা স্থাপনাকে একধরনের তেজস্ক্রিয়তা গ্রাস করে নেয়, মুহূর্তেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় সবকিছু। এই প্লুটোনিক মিসাইল আর মিসাইল লঞ্চারগুলো রাখা আছে প্রজেক্ট এরিসের ল্যাবের ঠিক নিচে একটা লুকনো গুদামের ভেতর।”
ব্যাপারটা এরিস নিজেও খেয়াল করেছে। প্রজেক্ট এরিসের ল্যাবের বেজমেন্টের নিচের অংশটা তার কাছে কেন যেন ফাঁপা মনে হতো। মনে হতো নিচে আরও একটা গোপন ফ্লোর আছে!
“... সরকারের এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রটি আমাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে ওঠার পর আমরা বিজ্ঞানীরা মিলে ঘটনার প্রতিবাদ করে চাকরি ছেড়ে দিলাম। সরকারের ভয় ছিল আমরা হয়তো এসব গোপন প্রজেক্ট সম্পর্কে বাইরের দুনিয়ার সামনে মুখ খুলব তাই গোপনে তোমাকে দিয়ে একে একে সব বিজ্ঞানীদের মেরে ফেলা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমার মৃত্যু হয়েছে। এতক্ষণ যা যা বললাম সব ছিল তোমার চোখের সামনে সম্পূর্ণ চিত্রটি তুলে ধরার প্রয়াস। এখন আমি তোমাকে বলতে চাই সম্ভাব্য এই বিপদ থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে কী করা প্রয়োজন। সরকারের এই কুটিল ষড়যন্ত্র ঠেকাতে একজন সাহসী পুরুষ প্রয়োজন এরিস। আমি জানি তুমিই সেই মানুষ। তোমাকে আমি সেভাবেই গড়ে তুলেছি। ধ্বংস করে দিতে হবে প্রজেক্ট হেডিস, হেলিওস আর প্রজেক্ট এরিস। কিন্তু এতেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। সরকারের পতনের জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা নিয়ে আমি একটা সুন্দর পরিকল্পনা করেছি। আমার ডেস্কের ঠিক নিচেই একটা ফলস ড্রয়ার আছে, তুমি ড্রয়ারটা খুললে একটা সিডি পাবে। এই সিডিতে সমস্ত প্ল্যান বর্ণনা করা হয়েছে। আশা করি তুমি সিডিটা দেখবে এবং নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে।”
এরিস এক্স দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগছে। এটা বিজ্ঞানী অ্যালেক্সের কোন চাল নয়তো? ফলস ড্রয়ার খুঁজতে গিয়ে হয়তো বিশেষ কোনো ফাঁদে আটকা পড়তে হবে তাকে!
“শেষ একটা কথা বলি এরিস।” বিজ্ঞানী অ্যালেক্স আরভিনের কণ্ঠ ভারী হয়ে আসছে। “তোমাকে যন্ত্রের মত গড়ে তুললেও আমি জানি তোমার ভেতর কোথাও একটা সভ্য মনের মানুষ বসে আছে। এই মানব জাতির আজ তোমার মতো একজন কান্ডারির খুব প্রয়োজন।”
যেমন হঠাৎ করে শুরু হয়েছিল ঠিক তেমনি হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেল প্রজেক্টর। সফেদ দেয়াল থেকে গায়েব হয়ে গেল বিজ্ঞানীর হাসি হাসি মুখ। দু’মিনিটের চেষ্টায় এরিস এক্স ড. অ্যালেক্সের ডেস্কের গোপন ড্রয়ারটি খুঁজে পেল। ড্রয়ার ধরে টান দিতেই সিডিটা নজরে এল। সিডি হাতে নিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল সে, এখান থেকে কীভাবে পালাবে সেই প্ল্যান চলছে মাথায়। কিন্তু পালানোর পর কোথায় যাবে সে? নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট হায়দার মালিকের ব্যক্তিগত সেক্রেটারি জেসমিনের কাছে গিয়ে তার এখন রিপোর্ট করতে হবে। কিন্তু তাহলে সে কী করবে এই সিডি দিয়ে? এত তীব্র সিদ্ধান্তহীনতায় আগে কখনো ভুগতে হয়নি তার!
করিডোর হয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে এল এরিস এক্স। বাইরে ছোট-খাটো একটা হামলা-পাল্টা হামলা হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। দেয়ালের গায়ে গুলি লাগার চিহ্ন। বাথরুমের সামনে কয়েকটা মৃতদেহ পড়ে আছে। একজন কাতরাচ্ছে, পায়ে গুলি লেগেছে। পোশাক আশাক দেখে মনে হচ্ছে ইনডিপেন্ডেন্ট ফাইটারস গ্রুপের সদস্য। চেহারাটা দেখে মঙ্গোলীয় গোত্রের দূরপ্রাচ্যের অধিবাসী মনে হচ্ছে। কিন্তু এর ইউনিফর্ম বাকিদের মতো নয়। সম্ভবত সে-ই দলটির লিডার। তার পায়ের কাছে পড়ে আছে আরও একজন সদস্য। গুলি লেগেছে তার গায়েও। লোকটার বুক থেকে রক্তের লহর বইছে। দুই হাতে একটা সাবমেশিনগান চেপে ধরে রীতিমতো হেঁচকি তুলছে। তার পেছনে সময় নষ্ট করল না এরিস। লিডারের হাত চেপে ধরে বলল, “আমার সাথে চল, আমি তোমাকে এখান থেকে বের করে নিয়ে যাব।”
এরিসকে দেখেই লিডার প্রথমে আহত সদস্যের মেশিনগান তুলে নিয়ে গুলি করতে উদ্যত হলো। এরিস চট করে সেটা কেড়ে নিল লিডারের কাছ থেকে। তারপর লিডারের হাত মুচড়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলল, “আমি তোমাকে সাহায্য করছি। আমি চাই তুমিও আমাকে সাহায্য কর! এই ভবন থেকে বেঁচে ফিরতে চাইলে এখন পরস্পরকে সাহায্য করা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।”
“কে তুমি?” লিডার প্রশ্ন করল।
“আমার পরিচয় তোমার জানার প্রয়োজন নেই।” এরিস এক্সের কণ্ঠ ভাবলেশহীন। “আর যদি কখনও জেনে ফেল, তোমাকে মেরে ফেলা ছাড়া আমার অন্যকোনো উপায় থাকবে না।”
নিরাপত্তা কর্মীদের আরেকটা দল এগিয়ে আসছে এদিকে। ইনডিপেন্ডেন্ট ফাইটারস গ্রুপের লিডার বুঝল এরিস এক্সকে বিশ্বাস করা না গেলেও এই মুহূর্তে সে-ই তার সবচে বড় সহায়। লিডার মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানাল। দুজনে এসে দাঁড়াল বাথরুমের দরজার পাশে। বাথরুমের বাইরে কয়জন নিরাপত্তা গার্ড দাঁড়িয়ে আছে বোঝা যাচ্ছে না, পাঁচ জনের কম তো নয়ই। এই দরজাই বাথরুম থেকে বের হবার একমাত্র পথ। এরিস এক্স তার বেল্টের পাউচ থেকে একটা ফ্ল্যাশব্যাং গ্রেনেড বের করল। পিন খুলে গ্রেনেডটা দরজার ওপাশে গড়িয়ে দিয়েই এরিস দুই হাতে লিডারের চোখ চেপে ধরল, নিজেও শক্ত করে চোখ বুজল। চাপা শব্দ করে বিস্ফোরিত হল ফ্ল্যাশব্যাং। যেন এক সাথে কয়েক লাখ মোমবাতি দপ করে জলে উঠল। তীব্র সাদা আলোর ঝলকানিতে সাময়িক অন্ধ হয়ে গেল নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা। বিদ্যুৎ বেগে বাথরুম থেকে বের হয়ে এল এরিস। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের কোনো ইচ্ছে ওর নেই, ওর কাজ হচ্ছে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কৌশলে খুন করা। একান্ত প্রয়োজন না হলে এলোপাথাড়ি মানুষ মারা তার পছন্দ নয়।
এরিস দ্রুত চিন্তা করছে। ফ্ল্যাশব্যাং গ্রেনেডের প্রচণ্ড আলোর ঝলকানিতে নিরাপত্তাকর্মীরা মিনিট পনেরোর জন্যে অচল হয়ে গেছে। কিন্তু গ্রেনেডের শব্দ অবশ্যই অন্যান্য ফ্লোর থেকে শোনা গেছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বাকিরা এখানে চলে আসবে। এরিস চট করে লিডারকে জাপটে ধরল। লোকটা ঠিকমতো হাঁটতে পারছে না। উরুতে গুলি লেগেছে। এরিসের কাঁধে ভর দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এগুচ্ছে। পেছনে রক্তের মোটাদাগ ফেলে আসছে ওরা। যে কেউ সহজেই ট্রেস করতে পারবে। তবে এখন আর অতকিছু চিন্তা করার সময় নেই।
পালানোর পথ ঠিক না করে এরিস কখনও শত্রুর গুহায় ঢোকে না। প্রজেক্ট এরিসের ল্যাবে প্রথম যে ইন্সট্রাকশন দেয়া হয়েছে তাকে, তা হলো—অলয়েজ হ্যভ অ্যান এস্কেপ প্ল্যান। চার তলার কার্নিশ থেকে এরিস একটা ফিশিং লাইন ঝুলিয়ে রেখে এসেছে কাছেই একটা খুচরা দ্রব্যের মার্কেট পর্যন্ত। মার্কেট থেকে বিশ গজ দূরে তার মাইক্রোবাসটা অপেক্ষা করছে। যত দ্রুত সম্ভব ভবন থেকে বেরিয়ে মার্কেটের দিকে সরে পড়তে হবে।
ব্যাকআপ গার্ডরা কাছে চলে এসেছে। পেছনে তাদের বুটের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। দৌড়ে করিডোরের শেষ প্রান্তে জানালার কাছে গিয়ে থামল এরিস। ইনডিপেন্ডেন্ট ফাইটারস-এর লিডার ইতিমধ্যে হাঁপাচ্ছে। জানালার বাইরে ফিশিং লাইনটা ঝুলছে। হাত বাড়িয়ে লাইনটা ধরে এরিস নিজের বেল্টের বাকলে আটকে নিল। তারপর লিডারকে বলল, “আমাকে কাভার দাও।”
লিডার পেছনে ফিরে এগিয়ে আসা নিরাপত্তা কর্মীদের দলটির দিকে গুলি বর্ষণ করল। ভারী মেশিনগানের গুলিতে দলের সদস্যরা চারদিকে ছিটকে পড়ল। সব কজন মরে যাওয়ার পরও লিডার বেশ কিছুক্ষণ ট্রিগারে আঙুল চেপে রাখল।
এরিস ততক্ষণে কাঁচ ভেঙে ফিশিং লাইন ধরে ঝুলে পড়ার একটা রাস্তা তৈরি করে নিয়েছে। সে তাগাদা দিল, “অযথা সময় নষ্ট করো না, আমার কাঁধে চড়ে বস।”
লিডার এর ভেতর তখন আর তেমন ইচ্ছেশক্তি অবশিষ্ট নেই। প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে দুর্বল হয়ে গেছে শরীর, মাথা কাজ করছে না তার। এরিসের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করল সে। এক হাতে ফিশিং লাইনটা জড়িয়ে ধরে জানালা দিয়ে লাফ দিল এরিস এক্স। স্যাঁত করে একটানে দুইজন নেমে এল মাটিতে।
ভবনের বাইরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পজিশন নিয়ে আছে বেশ কিছু গার্ড। অবশ্য অন্ধকারের সুযোগে তাদের চোখ বাঁচিয়ে গজ বিশেক দূরে দাড় করানো মাইক্রোবাসের কাছে পৌঁছে গেল ওরা। প্যসেঞ্জার সাইডের স্লাইড ডোর সরিয়ে লিডারকে সিটে বসাতে যাবে এরিস এমনি সময় পেছন একটা কণ্ঠ শোনা গেল, “হ্যান্ডস আপ। খবরদার কেউ এক চুল নড়বে না।”
এরিস এক্স ধীরে ধীরে পেছনে ফিরে তাকাল। পেছনে একা একজন নিরাপত্তা গার্ড তাদের দিকে পিস্তল তাক করে আছে। এরিস এক্স ঘাড় ফেরাতেই সে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে চিৎকার করে উঠল, “বললাম না কেউ নড়বে না। হাত মাথার ওপর, জলদি।”
এরিস বুঝতে পারল গার্ডটি নিজেও যথেষ্ট নার্ভাস। তার বয়স কম, সম্ভবত এই লাইনে নতুন। হয়তো এটাই ওর প্রথম শত্রুর সাথে সম্মুখ মোকাবেলা! গার্ড তার কাঁধের কাছে রেডিও খামচে ধরে বলল, “কলিং বেসক্যাম্প! ক.. কলিং বেসক্যাম্প! দিস ইজ গার্ড জিরো থ্রি নাইন আই...আই হ্যাভ দ্যা টার্গেট অন গান পয়েন্ট। রিকোয়েস্টিং ইমিডিয়েট ব্যাকআপ।” তাড়াহুড়া করতে গিয়ে ওর কথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
এই সময় ইনডিপেন্ডেন্ট ফাইটারস গ্রুপের লিডার ভুলটা করল। গার্ডটি তার রেডিও নিয়ে ব্যস্ত, সেই সুযোগে সে হাতের সাব মেশিনগান তাক করল ওর দিকে। গার্ডটি আর যাই হোক, বোকা নয়। চোখের কোনা দিয়ে সে লিডারের মুভমেন্ট দেখে ফেলল। যত নার্ভাসই হোক, একজন আহত মানুষের চেয়ে একজন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ভাড়াটে যোদ্ধার রিফ্লেক্স অনেক ভালো হওয়ারই কথা! গার্ড তার রেডিও ছেড়ে সাথে সাথে গুলি করল লিডারকে। অবশ্য এরিসের রিফ্লেক্সের কাছে এরা নস্যি। ঝাঁপিয়ে পড়ে বুলেট লাইন থেকে সরিয়ে দিল সে লিডারকে।
এর পরের মুহূর্তটি যেন হঠাৎ করে লম্বা হয়ে গেল, যেন স্বাভাবিক সময় ছেড়ে এক স্লো-মোশানের জগতে প্রবেশ করেছে এরিস এক্স। গার্ড আবার নিশানা তাক করেছে লিডারের দিকে। লিডারও মেশিন গান তাক করেছে গার্ডের দিকে। ট্রিগারে চেপে বসছে লিডারের আঙুল। এবার আর ভুল করবে না সে। তার হাতের সাব মেশিনগান স্থির তাকিয়ে আছে গার্ডের বুকে। ট্রিগার টেনে দিলে ওর মৃত্যু নিশ্চিত। মুহূর্তের মাঝে এরিস এক্স কোমর থেকে তার স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটা টেনে বের করল। তারপর গুলি করল গার্ডের পা লক্ষ্য করে। গুলি খেয়ে মাটিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ল সে। পর মুহূর্তে গুলি করল ইনডিপেন্ডেন্ট ফাইটারস-এর লিডার। কিন্তু তার ছোঁড়া গুলি ইঞ্চিখানেকের ব্যবধানে গার্ডের মাথার ওপর দিয়ে চলে গেল।
হাঁচড়ে-পাচড়ে ছোট্ট গাড়িটির ড্রাইভিং সিটে উঠে বসল এরিস এক্স। গুলির শব্দ সবার কানে পৌঁছে গেছে। ব্যাকআপ গার্ডরা সবাই ছুটে আসছে। এরিস ইগনিশনে চাবি ঢোকাল।
মৃদু কাশি দিয়ে চালু হয়ে গেল গাড়ির ইঞ্জিন। বুলেট গতিতে জায়গাটা ছেড়ে বের হয়ে গেল এরিসের বিশেষ গাড়ি।
হঠাৎ করে এরিসের মনে হল ড. আরভিনের ল্যাব থেকে আনা সিডিটার কথা। কোথায় রেখেছে সেটা? হারিয়ে ফেলেনি তো? অবশ্য পোশাকের ওপর হাত বোলাতেই আর্মার ভেস্টের নিচে বুক পকেটে সিডির অস্তিত্ব টের পেল সে। মনের ভুলে কখন যে সিডিটা এখানে রেখেছে তা টেরই পায়নি।
Episode-2, Chapter-1 of Incarnation, a science fiction thriller novel by Nazim Ud Daula.
Feature Image: gettyimages.com