Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

গাদ্দাফি-সারকোজি রহস্যময় সম্পর্ক: সারকোজির পরিহাসমূলক পরিণতির কারণ কী?

গত ১৯ মার্চ হঠাৎ করেই ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিকে আটক করে পুলিশ। দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও লিবিয়াসহ কয়েকটি দেশে ভ্রমণ, গাদ্দাফি পরিবারের সদস্য এবং লিবিয়ার সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎসহ বেশ কিছু ব্যাপারে তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রচারণার কাজে তিনি সাবেক লিবীয় নেতা মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফির কাছ থেকে ৫০ মিলিয়ন ইউরো গ্রহণ করেছিলেন।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে উত্তর দিচ্ছেন সারকোজি; Source: Gonzalo Fuentes/ REUTERS

ব্যাপারটিকে অনেকেই অদৃষ্টের পরিহাস হিসাবে দেখছেন। কারণ, গাদ্দাফির সাহায্য নিয়ে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধে লিবিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর বিমান হামলাসহ বিভিন্ন আগ্রাসনমূলক পদক্ষেপের পেছনে সবচেয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করেছিলেন সারকোজি। আবার গাদ্দাফির মৃত্যুর পর তার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগেই সারকোজির জীবন নরকে পরিণত হচ্ছে। অনেকে এটাকে কবর থেকে গাদ্দাফির প্রতিশোধ হিসেবেও অভিহিত করছেন।

কিন্তু কী আছে এ সংবাদের পেছনে? ঠিক কী অভিযোগ সারকোজির বিরুদ্ধে? আসলেই কি তিনি গাদ্দাফির টাকা নিয়েছিলেন? কেনই বা গাদ্দাফি সারকোজিকে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছিলেন? আর কেনই বা সারকোজি প্রতারণা করেছিলেন তার উপকার করা গাদ্দাফির বিরুদ্ধে? সেসব নিয়েই আমাদের আজকের বিশ্লেষণ।

কী অভিযোগ সারকোজির বিরুদ্ধে?

২০১১ সালের ১৯ মার্চ ফ্রান্সের বিমান হামলায় ধ্বংস হওয়া লিবিয়ার ট্যাংক; Source: Wikimedia Commons

সারকোজির বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, তিনি ২০০৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় গাদ্দাফির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম অভিযোগ করেন গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম। ২০১১ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি আরব বসন্তের ধারাবাহিকতায় লিবিয়াতে গাদ্দাফি বিরোধী বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পরপরই সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগকারী সেনা সদস্যরা বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দিয়ে খুব দ্রুত লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

প্রাথমিক ধাক্কা সামলে মার্চের শুরুর দিকে গাদ্দাফির সেনাবাহিনী যখন পাল্টা অভিযান চালিয়ে একের পর এক শহর পুনরুদ্ধার করতে থাকে, তখন আন্তর্জাতিক বিশ্বে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের ব্যাপারে আলোচনা উঠতে থাকে। গাদ্দাফি যদি বিদ্রোহীদের প্রধান ঘাঁটি বেনগাজি দখল করে ফেলেন তাহলে বিদ্রোহীদের উপর গণহত্যা চালাতে পারেন, এরকম আশঙ্কা ব্যক্ত করে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে ‘নো ফ্লাই জোন’ কার্যকর করার প্রস্তাব উঠতে থাকে।

এরকম পরিস্থিতে বিদ্রোহীদের পক্ষে সবচেয়ে জোরালো ভূমিকা নেন ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি। মার্চের ১০ তারিখে তিনি সর্বপ্রথম বিদ্রোহীদের নবগঠিত প্রতিনিধি দল ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল, এনটিসিকে লিবিয়ার বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেন। পরবর্তীতে ফ্রান্সের উদ্যোগেই জাতিসংঘে লিবিয়ার বিরুদ্ধে নো ফ্লাই জোন কার্যকর করার প্রস্তাব এবং বেসামরিক জনগণকে রক্ষায় যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে পাশ হওয়ার আগেই ফ্রান্সের যুদ্ধবিমান বেনগাজির দিকে অগ্রসরমান লিবিয়ান সেনাবাহিনীর উপর হামলা শুরু করে।

এরকম পরিস্থিতিতে মার্চের ১৬ তারিখে গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম ইউরো নিউজের সাথে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, লিবিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সারকোজির উচিত লিবিয়া থেকে নেওয়া টাকাগুলো ফেরত দেওয়া। সাইফ দাবি করেন, তারা ২০০৭ সালে সারকোজির নির্বাচনে অর্থায়ন করেছিলেন যেন তিনি তার জনগণের সেবা করতে পারেন। কিন্তু সেই সারকোজিই এখন তাদেরকে হতাশ করছেন। সাইফ আরো জানান, তাদের কাছে সকল প্রমাণ আছে এবং তারা সেগুলো প্রকাশ করার জন্য প্রস্তুত আছেন।

কী সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে সারকোজির বিরুদ্ধে?

২০১১ সালের ২০ অক্টোবর গাদ্দাফির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে লিবিয়াতে গাদ্দাফির দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটে। ডিসেম্বর মাসে তার ছেলে সাইফ ছদ্মবেশে সীমান্ত দিয়ে নাইজারে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্রোহীদের হাতে আটক হন। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে লিবিয়ার পক্ষ থেকে সারকোজির বিরুদ্ধে নতুন কোনো তথ্য প্রমাণ পেশ করার সুযোগ গাদ্দাফি প্রশাসন পায়নি। কিন্তু ২০১২ সালের এপ্রিলে অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট মিডিয়াপার্ট একটি ডকুমেন্ট প্রকাশ করে। ঐ ডকুমেন্ট অনুযায়ী, উচ্চপদস্থ এক সাবেক লিবিয়ান কর্মকর্তা সারকোজির নির্বাচনী প্রচারণার জন্য অন্তত ৫ মিলিয়ন ইউরো প্রদানের অনুমতি দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।

২০১৩ সালে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে সারকোজির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। ২০১৬ সালের নভেম্বরে ফরাসী-লেবানিজ ব্যবসায়ী জিয়াদ তাকিউদ্দিন মিডিয়াপার্টকে জানান, ২০০৬-২০০৭ সালে তিনি নিজে গাদ্দাফির ভগ্নীপতি এবং গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান আব্দুল্লাহ সেনুসির কাছ থেকে স্যুটকেস ভর্তি টাকা গ্রহণ করে সারকোজি এবং তার চিফ অফ স্টাফ ক্লগিয়ান্ট (Claude Guéant) এর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তার দাবি অনুযায়ী, তিনি তিনবারে ২০০ এবং ৫০০ ইউরোর নোটে সর্বমোট ৫ মিলিয়ন ইউরো হস্তান্তর করেছিলেন। এছাড়াও পরবর্তীতে ফরাসি দৈনিক লে মন্ড (Le Monde) লিবিয়ার সভেরিন ওয়েলথ ফান্ডের প্রধান বশির সালেহ’র বরাত দিয়েও সারকোজিকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফি; Source: Evening Standard

সারকোজি অবশ্য বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, লিবিয়াতে বিমান হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য লিবিয়ানরা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। ক্লগিয়ান্টও দাবি করেন, তিনি জীবনে কখনো ‘লিবিয়ার একটি পয়সাও’ দেখেননি। কিন্তু ২০০৮ সালে ক্লগিয়ান্টের অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ লাখ ইউরো ট্রান্সফারের ঘটনায় এ বছরের শুরুতে ফরাসি পুলিশ তার বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে। ক্লগিয়ান্ট অবশ্য দাবি করেছেন, এ অর্থ তিনি পেয়েছেন দুটো মূল্যবান চিত্রকর্ম বিক্রয় করে।

কী হতে পারে এ তদন্তের ফলাফল?

পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় সারকোজি; Source: AP

সারকোজির বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে দুর্নীতি এবং নির্বাচনী প্রচারণায় অবৈধ অর্থয়নের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ২০১৩ সালে প্রথম তদন্ত শুরু হলেও এতদিন পরে অভিযোগ গঠন থেকে বোঝা যায়, তদন্ত কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর ব্যাপারে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন। আপিল করার জন্য সারকোজি ছয় মাস সময় পাবেন। সেক্ষেত্রে বিচারকদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আসলেই সারকোজির বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়ার মতো প্রমাণ আছে কিনা।

সারকোজির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার শাসনামলও বিতর্কের মুখে পড়তে পারে। অবৈধ অর্থায়নের কারণে তার নির্বাচিত হওয়া যদি বিতর্কের মুখে পড়ে, তাহলে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে তার অভিযান এবং ইংল্যান্ডকে সে অভিযানে জড়িয়ে পড়তে প্ররোচিত করার ঘটনাগুলোর বৈধতাও নতুন করে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে

গাদ্দাফি কেন সারকোজিকে অর্থায়ন করেছিলেন?

পুলিশী হেফাজত থেকে ছেড়ে দেওয়ার সময় সারকোজি; Source: Benoit Tessier/ Reuters

গাদ্দাফি তার শাসনামলের প্রথম কয়েক দশক পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন গেরিলা, স্বাধীনতাকামী, বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সন্ত্রাসী সংগঠনকে অর্থায়ন করার অভিযোগ আছে। ১৯৮৮ সালে লকারবির আকাশে মার্কিন প্যান অ্যাম ফ্লাইট ১০৩ এবং ১৯৮৯ সালে ফরাসি ইউটিএ ফ্লাইট ৭৭২ ধ্বংস করার জন্যও গাদ্দাফিকে দায়ী করা হয়।

গাদ্দাফি দীর্ঘদিন পর্যন্ত তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও জাতিসংঘের অবরোধের কারণে লিবিয়ার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকায় পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সকে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হন। ৯/১১ পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান এবং ইরাক আক্রমণের পর থেকে গাদ্দাফি ধীরে ধীরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন পশ্চিমা রাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে শুরু করেন।

২০০৪ সালে গাদ্দাফি ইউটিএ ফ্লাইটে নিহত প্রতি ব্যক্তির জন্য ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে মোট ২৭০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে সম্মত হন। কিন্তু এরপরও যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে এ সংক্রান্ত একটি মামলা চলমান ছিল। ২০০৫ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলাস সারকোজি লিবিয়া ভ্রমণ করেছিলেন। মিডিয়াপার্টের নথি অনুযায়ী সে ভ্রমণের সময়েই গাদ্দাফির সাথে সারকোজির অর্থ লেনদেনের ব্যাপারে আলাপ হয়েছিল। ধারণা করা হয়, গাদ্দাফি সারকোজিকে টাকা দেওয়ার বিনিময়ে নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন যে, সারকোজি ক্ষমতায় আসলে ইউটিএ ফ্লাইট সংক্রান্ত সকল মামলা গুটিয়ে নেওয়া হবে।

সারকোজি কেন গাদ্দাফির সাথে প্রতারণা করেছিলেন?

২০০৭ সালে ত্রিপলীতে গাদ্দাফির সাথে সারকোজি; Source: Reuters

আনুষ্ঠানিকভাবে ফ্রান্স, আমেরিকা, ব্রিটেন সবাই দাবি করে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এবং গাদ্দাফির হাত থেকে বেসামরিক জনগণকে রক্ষার জন্যই তারা লিবিয়াতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তাদের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে অনেক বিশ্লেষকেরই ভিন্নমত আছে। ফ্রান্স কেন লিবিয়াতে আক্রমণের ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল, সে ব্যাপারেও আছে বিভিন্ন বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক আমলে লিবিয়া ইতালির দখলে থাকলেও উত্তর আফ্রিকা এবং সাহেল অঞ্চলের অধিকাংশ রাষ্ট্রই ছিল ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানেও সেসব দেশে ফ্রান্সের স্বার্থ অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় বেশি। মালি, নাইজার, তিউনিসিয়া সহ ফ্রান্সের স্বার্থ আছে, এমন রাষ্ট্রগুলোর পাশেই গাদ্দাফির মতো স্বাধীনচেতা এবং খামখেয়ালি নেতার অস্তিত্বকে ফ্রান্স সবসময়ই হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে। অনেকেই মনে করেন, সে কারণেই সুযোগ পাওয়ামাত্রই অতীত বন্ধুত্ব ভুলে গাদ্দাফিকে সরিয়ে দেওয়াই ফ্রান্স নিজের স্বার্থের জন্য উপযুক্ত মনে করেছে।

আরেকটি কারণও বিবেচনা করা হয়। ২০১১ সালে সারকোজির জনসমর্থন ছিল খুবই কম। সে সময় নিজেকে শক্তিশালী নেতা হিসেবে প্রমাণ করার একটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা সারকোজির জন্য খুবই জরুরি ছিল। লিবিয়াতে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সারকোজির সামনে ঠিক সেই সুযোগই এনে দিয়েছিল।

২০০৭ সালে প্যারিসে গাদ্দাফির সাথে সারকোজি; Source: Jacky Naegelen/ Reuters

কোনো কোনো বিশ্লেষক অবশ্য দাবি করেন, সারকোজি গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন গাদ্দাফির কাছ থেকে নেওয়া অর্থের তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য। কিন্তু এই কারণটি খুব বেশি যৌক্তিক বলে মনে হয় না। কারণ, যতদিন গাদ্দাফি সারকোজির মিত্র ছিলেন, ততদিনই তার অর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্য গোপন ছিল। গাদ্দাফির বিরোধিতা করামাত্রই গোপন তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে।

তবে কারণ যা-ই হোক, নিঃসন্দেহে বলা যায় লিবিয়ার উপর আক্রমণ সারকোজির জন্য ভালো কোনো ফলাফল বয়ে আনেনি। ২০১২ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলেছে। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী তার দুর্নীতির কথা আবারও আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো কারাবাসও করতে হতে পারে এক সময়ের শক্তিমান এ প্রেসিডেন্টকে।

Related Articles