Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

চাঁদ: ভিন্ন সংস্কৃতিতে ধার্মিকের অস্তিত্ব চেতনা

জোছনা রাতে হওয়া বা না হওয়া প্রেমের জন্য মন আনচান করেনি; এমন প্রেমিক নেই। এমন কবি নেই, যে চাঁদকে নিয়ে আনন্দ বা বিরহের দু-চারটি ছন্দ জন্ম দেয়নি। অবশ্য উভয়ের চোখেই চাঁদের সৌন্দর্যটাই মুখ্য দিন শেষে। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিশ্বাসীদের চিন্তা এগিয়ে গেছে আরো কয়েক ধাপ। চাঁদের হ্রাস কিংবা বৃদ্ধি, পূর্ণতা কিংবা বিলুপ্তি- সবটাকেই অনুভব করেছে অস্তিত্বের গভীরতম উপলব্ধি দিয়ে। কারণ, মানুষকেও উত্থান-পতন, জন্ম-মৃত্যুর ভেতর দিয়ে যেতে হয়।

মানুষের অস্তিত্ব-চেতনায় বার বার রহস্য হয়ে উঠেছে চাঁদ; Image Source: Photographer’s Choice/Getty Images

চাঁদের সবচেয়ে গভীর সম্পর্ক সময়ের সাথে। প্রায় প্রতিটি সংস্কৃতিই চান্দ্রমাস দিয়ে শুরু করেছে বছর গণনা। শুধু সময় না; চাঁদ যেন অস্তিত্বশীল সবকিছুর পরিমাপক। এই যে চিরন্তন জন্ম এবং মৃত্যুর ছন্দময় আবর্তন, তা তাৎপর্যহীন থাকেনি। ধার্মিকের চোখে গোটা মহাজগত প্রতীক দ্বারা পরিপূর্ণ। চাঁদ তাতে দিয়েছে নতুন মাত্রা। তাই আস্তে আস্তে নিয়েছে বিশেষ উপাস্যের আসন।

সত্তা

চাঁদের ক্ষমতা গবেষণায় প্রকাশ পায় না। ধীরে ধীরে স্বজ্ঞার ভেতর দিয়ে বিকাশ লাভ করে। আদিম সমাজে তার জন্য বহু রূপক ব্যবহৃত হয়েছে। চাঁদ হঠাৎ উদিত হয়ে হঠাৎ অস্তমিত হয়। অন্যদিকে শামুক তার শিং বের করে আবার ভেতরে টেনে নেয়। ফলে অনেক সংস্কৃতিতে শামুক পরিণত হয়েছে চাঁদের প্রতিনিধি। উদাহরণ স্বরূপ অ্যাজটেক সংস্কৃতিতে চন্দ্রদেবতা টেকসিসটেকাটল উপস্থাপিত হতো শামুকে আবৃত হিসেবে। একই চিন্তায় ভালুককে ভাবা হয়েছে মানুষের আদিপুরুষ। কারণ তা এক ঋতুতে দৃশ্যমান থাকে; অন্য ঋতুতে বেখবর।

চাঁদকে বর্ণনা করার সময় কুণ্ডলি কিংবা এমন কোনো প্রতীক ব্যবহার করা হতো যাতে তার ক্ষমতা সম্পর্কে টের পাওয়া যায়। আবহাওয়ার উপর চাঁদের প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস। তাছাড়া চাঁদ দৃশ্যমান অন্য সকল কিছুর চেয়ে কোমল। উজ্জ্বলতার ভিত্তিতে সূর্যের অবস্থান সর্বাগ্রে হলেও চাঁদের অবস্থানে ভিন্ন মাত্রা আছে। এখানেই উঠে আসে সেমিটিক দেবতা সিন এবং গ্রিসের দেবী হেকেটের ধারণা।

পানি ও প্লাবন

বৃষ্টি আর জোয়ারের সময় পানির ছন্দময়তা প্রকাশিত হয়। ভারতীয় বিশ্বাস মতে, চাঁদ পানিতে ভাসমান। বৃষ্টির পানি আসে মূলত চাঁদ থেকেই। আর্দভিসুর অনাহিতা প্রাচীন পারসিক পানির দেবী; অথচ চাঁদের সাথে তার গভীর যোগাযোগ। সেমিটিক চন্দ্রদেবতা সিন পানিকে শাসন করেন। আসলে সকল চন্দ্রদেবতার সাথেই কোনো না কোনোভাবে পানি জড়িত। দক্ষিণ আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানদের মধ্যে চন্দ্রদেবতা একইসাথে পানির দেবতা হিসাবে গণ্য। ব্রাজিলে চন্দ্রদেবতার কন্যা পরিচিত ‘মাদার অব ওয়াটার’ নামে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের মাউরি এবং এস্কিমোরা আবিষ্কার করেছিল চাঁদের সাথে জোয়ারের সম্পর্ক।

হেকেট একই সাথে জাদু এবং চন্দ্রের দেবী; Image Source: learnreligions.com

বন্যার অর্থ চাঁদের মৃত্যু। আরো স্পষ্ট করে বললে, দৃশ্যমান সমস্ত কিছুর পরিসমাপ্তি। নতুন চাঁদের আগমন মানে নতুন পৃথিবী ও নতুন মানবজাতির সূচনা। অস্ট্রেলিয়ার কুরনাই আদিবাসীদের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। একদিন পানিতে নামলো ‘ডাক’ নামের এক অতিকায় ব্যাঙ। অন্যান্য প্রাণী ব্যাঙটিকে হাসাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও সফল হয় এক সাপ- ‘ইল’। হাসতে হাসতে ব্যাঙ পানিতে গড়াগড়ি খায়; আর তখন থেকেই শুরু প্লাবনের। ব্যাঙ এখানে চন্দ্র সত্তা। চাঁদে ব্যাঙ দেখা নিয়ে বহু উপকথা বিদ্যমান। আর বৃষ্টির সাথে ব্যাঙের সম্পর্ক প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না।

অস্ট্রেলিয়ার উপকথা অনুসারে, একবার চাঁদ মানুষকে বিশেষ প্রকারের চামড়া পরিধান করতে বলে। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে মানুষ। ক্রোধান্বিত চাঁদ তুমুল বৃষ্টি আর বন্যায় প্লাবিত করে দেয় পুরো অঞ্চল। মেক্সিকান বিশ্বাসে দুর্যোগের কারণে দায়ী করা হয় চাঁদের রাগ ও প্রতিশোধস্পৃহাকে, যার পেছনে ছিল মানুষের ঔদ্ধত্য, অজ্ঞতা আর পাপ।

কত রূপ

প্রাচীন পারসিক লেখায় গাছের জন্ম ও বৃদ্ধির সাথে চাঁদ সম্পর্কিত। পলিনেশিয়া এবং মেলানেশিয়ার মনে করা হয় ঘাস চাঁদে জন্মায়। ফরাসি কৃষকেরা এখন অব্দি নতুন চাঁদের সময় গাছ লাগায় এবং চাঁদের ক্ষয়কালে ছাটাই করে। গাছপালার সাথে চাঁদের সম্পর্ক এতটাই বিস্তৃত যে, অনেক উর্বরতার দেবী একইসাথে চন্দ্র সত্তা। মিশরীয় পুরাণে হ্যাথোর এবং পারসিক আনাইতিস তাদের মধ্যে প্রধান। ব্যবিলনের চন্দ্রদেবতা সিন ঘাস সৃষ্টি করেছেন। গ্রিসের ডায়োনিসাস একই সাথে চাঁদ ও গাছের দেবতা। মিশরের ওসিরিসের হাতে আছে চাঁদ, পানি আর কৃষির ক্ষমতা।

ওসিরিসের হাতে একই সাথে চন্দ্র, পানি আর কৃষির ক্ষমতা; Image Source: ancient-origins.net

চন্দ্র-পানি-লতা প্যাটার্নের সব থেকে সফল নজির দেখা যায় স্বর্গীয় পানীয় ভারতীয় সোম এবং পারসিক হাওমাতে। এই অমৃত পান করতে পারেন শুধু দেবতারা। অমরত্ব প্রদান করে অমৃত। চাঁদ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেও যেমন অমর। অমৃত ঠিক সেভাবেই নশ্বরতাকে দূর করে। নতুন চাঁদের জন্য পিগমিদের মধ্যে পালিত হয় উৎসব। চাঁদ সেখানে সমস্ত সৃষ্টির মা।

ইতিহাসে চাঁদকে আদি মাতা মনে করার সংস্কৃতি পুরাতন। প্রাচীন চীনে কানসু এবং ইয়াং কাউ সংস্কৃতিতে চাঁদ আর উর্বরতাকে সমার্থক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এস্কিমো আদিবাসী সংস্কৃতিতে কুমারী মেয়েরা বিশেষ দিনে চাঁদের দিকে তাকায় না গর্ভবতী হয়ে যাবার ভয়ে। নারীর রজঃচক্রের প্রমাণ দিয়ে চাঁদের সাথে সম্পর্ককে আরো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা হয় অনেক সংস্কৃতিতে।

যেহেতু খোলস বদলের সেই প্রক্রিয়া সাপের মধ্যেও দৃশ্যমান; সেহেতু চন্দ্র সত্তা হিসেবে সাপ বিশেষায়িত হয়ে উঠেছে। অস্ট্রেলিয়ার উরাবুন্না জাতিগোষ্ঠীর মানুষ নিজেদের সাপের বংশধর বলে বিশ্বাস করে। জাতকের বর্ণনানুসারে, সাপ উর্বরতা দান করে। ভারতীয় বিশ্বাসের বড় একটা অংশে এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই সাপ আধিপত্য পেয়েছে। ভূমধ্যসাগরকেন্দ্রিক সভ্যতার দেবদেবীদের চিত্রিত করা হয় হাতে সাপ ধরা অবস্থায়। আর্তেমিস, হেকেট এবং পার্সেফোনি তার প্রমাণ। চাঁদ, উর্বরতা, নারী এবং সাপ যেন একটি আরেকটির সাথে যুক্ত। একই বিষয়ের নানা রূপে উপস্থাপন।

মৃত্যু এবং নয়া জন্ম

মানুষ মৃত্যুকে জীবনের সমাপ্তি হিসেবে ভাবেনি। ভেবেছে অন্য ধরনের জীবন। চাঁদের জন্ম ও মৃত্যুর চক্র মানুষের মধ্যে এই বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে যে, মানুষ মৃত্যুর পরে হয় চাঁদে যায়; নাহয় পাতালে। সেখানে চলতে থাকে পুনর্জন্মের প্রস্তুতি। এজন্যই অনেক চন্দ্র উপাস্য একইসাথে মৃত্যুর সাথে সম্পর্কিত। এই কারণেই পলিনেশিয়ার অনেক সংস্কৃতি চন্দ্রকে মৃত্যুপুরী হিসেবে উপস্থাপন করে।

মৃত্যুর পরে চাঁদের দিকে যাত্রার প্রসঙ্গটা ভারত, ইরান এবং গ্রীসে একটি বিশেষ অবস্থান নিয়ে আছে। ভারতীয়দের কাছে পিতৃযানে করে আত্মা গিয়ে চাঁদে থামে। অপেক্ষা করে পুনর্জন্মের। কারণ তারা তখনও দুনিয়াবি শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়নি। অন্যদিকে মোক্ষপ্রাপ্তরা পুনর্জন্মের শিকল ভেঙে যাত্রা করে দেবযানে। পারসিক বিশ্বাসে মৃত্যুর পর আত্মা চিম্বত সাঁকো পার হয়ে আকাশে যাত্রা করে। ভালো আত্মাগুলো প্রথমে চাঁদে এবং পরে সূর্যের দিকে যায়। সবচেয়ে সৎ আত্মা উপনীত হয় সৃষ্টিকর্তা আহুরা মাজদার সামনে। গ্রিক বিশ্বাসে মৃতের আত্মা যায় ইলিসিয়ান ময়দানে। অর্থাৎ চাঁদ প্রতিনিধিত্ব করছে কখনো মৃতের আবাস, কখনো আত্মাকে গ্রহণকারী, আবার কখনো পুনঃসৃষ্টিকারী হিসেবে।

মৃত্যুর পরে চিম্বত সাঁকো পার হয়ে আকাশে যায় আত্মা; Image Source; heritageinstitute.com

ধর্মে প্রবেশের সময় ব্যক্তির পুরাতন সত্তার মৃত্যু এবং নতুন সত্তার জন্ম ঘটে। যেন অন্ধকারের বুক ভেদ করে উঠে আসলো নতুন চাঁদ। উত্তর-পূর্ব সাইবেরিয়ায় গিলয়াক, টোঙ্গা এবং লিঙ্গিতদের মধ্যে এই সময়কে উদযাপন করা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার আদি অধিবাসীরা ভালুক বলি দেয়। নবাগত শিশুর মতো পোশাকবিহীন অবস্থা থেকে পোশাক পরিধান করে। পালিত হয় উৎসব।

তাৎপর্য

চাঁদ ‍সৃষ্টিজগতের স্পন্দন। প্রতীকায়িত করে জীবনীশক্তি, জন্ম এবং পুনরুত্থানকে। দুনিয়ার যেকোনো বস্তুতে কাছাকাছি গুণের সমাবেশ থাকলে তা কম-বেশি চাঁদেরই প্রতিনিধিত্ব করেছে বিশ্বাসীদের সামনে। এভাবেই দুনিয়ায় থাকা সাপ কিংবা শামুক বিশেষ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়। পানি, নারী কিংবা উর্বরতা উপস্থাপিত হয় দ্বিতীয় কেন্দ্র হিসেবে। আদি ভারতীয়দের চিত্রচর্চায় সাপ আর পানির সম্পর্ক খুব সাধারণ। মেক্সিকান বৃষ্টির দেবতাকে উপস্থাপন করা হয় দুটি সাপকে পেঁচানো অবস্থায়। সাপ কিংবা পানি সেখানে শুধুই সাপ কিংবা পানি না; খোদ চন্দ্র।

চাঁদের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা অনবরত ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে ‘হয়ে ওঠা’। ব্যক্তি সত্তা এবং গোত্রীয় চেতনাকে এই অবিরাম ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ফলে জীবন বিভাজিত হয়েছে দিন, পক্ষ, মাস কিংবা বছরে; আর তা চাঁদের সময়কে প্রামাণ্য গণ্য করেই। চাঁদের নিচে এমন কিছুই নেই; যা চিরন্তন। যা-ই হোক, সংক্ষেপে চাঁদের উপাসনায় পুরাণের তাৎপর্যকে নিম্নোক্ত শ্রেণীতে আনা যায়।

১) উর্বরতা – পানি, গাছ, নারী কিংবা পৌরাণিক পূর্বপুরুষ।
২) পুনর্জন্ম – সাপ কিংবা অন্যান্য প্রাণী, মহাপ্লাবনের পর জীবিত ব্যক্তি, ধর্মে দীক্ষা।
৩) নিয়তি – সময়, বিভিন্ন পরিমাপ, জাল, ভবিষ্যতের ধারণা।
৪) পরিবর্তন – পূর্ণতা বনাম শূন্যতা, আলো বনাম অন্ধকার, আকাশ বনাম পাতাল।

চাঁদের এই বিবর্তন যেন ব্যক্তি অস্তিত্বের উত্থান পতনেরই মূর্তরূপ; Image Source: astronomy.com

অবশেষ

বিশ্বজগতকে ভাবা যায় অনেকগুলো সূত্রের সমষ্টি। একটির সাথে আরেকটি যুক্ত। উপকথা আর ধর্মীয় আচারগুলোর পেছনে সেই সত্য নিহিত। সামগ্রিককে ছাড়া অংশ বোঝা অসম্ভব। অনুরূপ অংশের ভেতরেই থাকে সামগ্রিকের বীজ। যেমন- নারী মুক্তার মালা পরিধান করলে সেখানে মিলিত হয় পানির শক্তি, চাঁদ (শামুক চাঁদের প্রতীক), উর্বরতা এবং সৌন্দর্যের ধারণা। প্রতীক নিজের সীমাবদ্ধতাকে ছাপিয়ে নির্দেশ করে অসীমের দিকে। সবকিছু সংযুক্ত হয়ে তৈরি করে ‘সামগ্রিক সত্তা’। চাঁদের আদৃত হওয়ার পেছনে কথাটা আরো বেশি করে সত্য।

আদিম মানুষ চন্দ্রের দিকে তাকিয়ে নিজেকেই দেখেছে। প্রথম যখন জগতকে অনুভব করতে শিখলো; চাঁদ তার সামনে হাজির করেছে নশ্বরতার মধ্য দিয়ে অবিনশ্বরতার চেতনা। আমরা প্রত্যেকেই যেন একটা চাঁদ। দুনিয়ার আটপৌরে পরিবেশে দাঁড়িয়ে কখনও ক্ষয়ে যাই; কখনও প্রবল আত্মবিশ্বাসে বর্ধিত হই। কখনও তীব্র আলো নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি সকলের কপালের ওপর; কখনও নিখোঁজ হয়ে যাই নিঃসীম অন্ধকারে।

This Bengali article is about Moon worship in different cultures. From the dawn of civilization, lunar deities played a major role in human understanding about his own existence and religious belief. 

References:

1) Patterns in Comparative Religion, Mircea Eliade, Translated by Rosemary Sheed, Sheed and Ward, New York, 1958, Pages: 154-187

2) A History of Religious Ideas, Vol-1, Mircea Eliade, Translated by Willard R. Trask, The University of Chicago Press, 1978, Page- 290 

3) Image and Symbols, Studies in Religious Symbolism, Mircea Eliade, Translated by Philip Mairet, Sheed and Ward, New York, 1952, Pages:125-148

Featured Image: hdwallpaperspulse.com/

Related Articles