Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মিসর-ইসরায়েল গোপন সম্পর্ক: মিসরের হয়ে সিনাই উপদ্বীপে বিমান হামলা করছে ইসরায়েল

  • গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে মিসরীয় সীমান্তে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস, আইসিস, আইসিল নামেও পরিচিত) উপর বিমান হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।
  • এ পর্যন্ত চিহ্নবিহীন ইসরায়েলি ড্রোন, হেলিকপ্টার এবং যুদ্ধবিমান মিসরের সিনাই উপদ্বীপে ১০০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে।
  • প্রতিটি আক্রমণই করা হয়েছে মিসরের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিসির অনুমতিক্রমে বা তার অনুরোধের প্রেক্ষিতে।
  • গতকাল শনিবার মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিসি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইসরায়েলের সাথে মিসরের গোপন সম্পর্ক গড়ে উঠতে থাকে। আরো কয়েকটি আরব রাষ্ট্রের মতো ইসরায়েল এবং মিসরের সাধারণ শত্রু আইএস, ইরান এবং রাজনৈতিক ইসলামিক দলগুলোকে মোকাবেলার জন্য দেশ দুটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরস্পরকে সহযোগিতা করতে শুরু করে। এ সহযোগিতার সবচেয়ে নাটকীয় রূপ প্রকাশ পায় মিসরের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিনাই উপদ্বীপে। অবশ্য মিসর প্রকাশ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান অব্যাহত রাখে।

মিসরের সিনাই উপদ্বীপ মূল ভূখন্ড থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন এবং বিরল জনবসতিপূর্ণ হওয়ায় তার উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ খুবই দুর্বল। এলাকাটির কিছু অংশে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গী সংগঠন আইএসের উপস্থিতি আছে, যারা এ পর্যন্ত মিসরীয় সেনাবাহিনীর কয়েকশো সদস্যকে হত্যা করেছে। ২০১৫ সালে তারা সিনাই উপদ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে এবং একটি রাশিয়ান বিমান ভূপাতিত করে ২২৪ যাত্রীকে হত্যা করে।

২০১৫ সালে বিধ্বস্ত রাশিয়ান প্লেনের সামনে মিসরীয় সেনা সদস্যরা; Source: Maxim Grigoryev/AFP/Getty Images

জঙ্গীদেরকে দমনে ব্যর্থ হয়ে প্রেসিডেন্ট সিসি ইসরায়েলের সাহায্য কামনা করেন এবং ইসরায়েল মিসরের পক্ষ হয়ে সিনাই অঞ্চলে বিমান হামলা শুরু করে। এর ফলে মিসরের পক্ষে নিজেদের সৈন্যদের হতাহতের পরিমাণ কমানো সম্ভব হয়, আর ইসরায়েলের পক্ষে নিজেদের সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। উল্লেখ্য, আইএসের মিসরীয় শাখাটির পূর্বনাম ছিল আনসার বাইত আল-মাক্বদেস, যারা ২০১১২০১২ সালে একাধিকবার মিসর সীমান্ত থেকে ইসরায়েলের উপর হামলা করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে মোহাম্মদ মুরসিকে উৎখাত করে জেনারেল সিসি ক্ষমতা দখল করলে তারা সিসির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধকে অগ্রাধিকার দেয়।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের নীতি নির্ধারণের সঙ্গে জড়িত সাতজন প্রাক্তন ও বর্তমান মার্কিন এবং ব্রিটিশ সামরিক কর্মকর্তা ইসরায়েলের সাথে মিসরের এ গোপন সামরিক সম্পর্কের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে তারা মনে করেন, এতে সাময়িকভাবে মিসর ইসরায়েলকে ব্যবহার করে এ অঞ্চলের উপর নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে সক্ষম হলেও দীর্ঘমেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য তা ক্ষতিকর হবে। কারণ এর ফলে ইসরায়েলের মধ্যে এ আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়ে যাবে যে, মিসর নিজের সীমানার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যও ইসরায়েলের উপর নির্ভরশীল।

২০১৩ সালে সিনাইয়ে জঙ্গীদের হাতে নিহতে ২৫ সেনা কর্মকর্তার লাশ দাফনের জন্য নেওয়া হচ্ছে; Source: Khaled Desouki/AFP/Getty Images

উল্লেখ্য, ইসরায়েলের সাথে মিসরের সম্পর্কের অভিযোগ এটাই প্রথম না। এর আগে গত জানুয়ারিতে নিউইয়র্ক টাইমসের একই প্রতিবেদক ভিন্ন একটি প্রতিবেদনে মিসরের গোয়েন্দা বাহিনীর এক কর্মকর্তার গোপন অডিও ফাঁসের সংবাদ দিয়েছিলেন। ঐ অডিও রেকর্ড থেকে জানা যায়, মিসর সরকার প্রকাশ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান দেখালেও এর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা গোপনে বিভিন্ন টিভি উপস্থাপকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন, যেন তারা জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মেনে নেওয়ার ব্যাপারে জনগণকে প্রভাবিত করেন।

ফিচার ইমেজ- Maxim Grigoryev/AFP/Getty Images

Related Articles