Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

নিনজা: একদল নিঃশব্দ আততায়ীর ইতিকথা

লোহার একধরনের হুক ব্যবহার করে দেওয়াল টপকিয়ে চুপিচুপি শত্রু শিবিরে ঢুকে গেল একদল ছায়া। কালো পোশাকধারী,মুখ ঢেকে রাখা একদল আততায়ী। অভিমুখে দৌড়ে যাওয়ার সময় থলি থেকে বের করে তাঁরা আকৃতির ধারালো ব্লেডগুলো ছুঁড়ে মারছে। ক্ষিপ্র তাদের গতি। বিশেষ আকৃতির ধারালো তলোয়ার দিয়ে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে সামনে অবস্থানরত শত্রুপক্ষের সদস্যদের। সে এক রক্তারক্তি কাণ্ড।

নিজেদের লক্ষ্য পূরণের সাথে সাথেই হঠাৎ এক ধরনের বিস্ফোরক ফাটিয়ে হাওয়ায় উধাও হয়ে গেল তারা। আর আপনি বড় বড় চোখ করে টিভির পর্দায় ঘটে যাওয়া পুরো চিত্রটি দেখার পর বহু বারের মতো মনে মনে আবারো শপথ করে নিলেন, তাদের মতোই আপনাকে হতে হবে, আপনাকে নিনজা হতেই হবে!

কল্পকাহিনীর কালো পোশাকে ছদ্মবেশী নিনজা আততায়ী

কিন্তু এতশত কল্প কাহিনীর ভিড়ে আপনি কতটুকু জানেন সত্যিকারের নিনজাদের সম্পর্কে? চলুন দেখি কল্পনার ভিড়ে জড়ো হওয়া নিনজাদের সত্যিকারের রূপ এবং ইতিহাস।

নিনজা কী এবং কারা?

নিনজা শব্দটা চৈনিক শব্দ নিনশা থেকে এসেছে। জাপানে যাদেরকে শিনোবি হিসেবেই জানে। শিনোবি বলতে বোঝায় ঐসকল ব্যক্তিকে যারা গোপন শিল্পে দক্ষ, যাদের শারীরিক এবং মানসিক সহ্য ক্ষমতা বেশি, কিংবা নিঃশব্দে ছিনিয়ে নেওয়ার শিল্পে দক্ষ।

সাধারণভাবে নিনজা হচ্ছে প্রাচীন জাপানের একদল গুপ্ত ঘাতক। সেসময় জাপানে সামন্ত প্রভুদের নির্দেশে অগতানুগতিক যুদ্ধবিগ্রহ পরিচালনা করা, গুপ্তচরবৃত্তি, নাশকতা, শত্রুদলের ভিতরে অনুপ্রবেশ, গুপ্তহত্যার মতো হিংসাত্মক কাজগুলো তাদের দ্বারা সংগঠিত হতো। সেই সময়কার শক্তিশালী সামুরাই যোদ্ধারা ছিল সম্মানিত এবং তারা নিজেদের জাহির করে বেড়াতো। কিন্তু নিনজারা ছিল তার বিপরীত। তারা ছিল নিচু সমাজের এবং নিজেদের গোপন রাখার ব্যাপারে ছিল সর্বদা সচেতন।

শুরুর ইতিহাস

নিনজাদের শুরুটা কোথা থেকে তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেনি। সত্যিকারের ইতিহাসের চেয়ে এদের সম্পর্কে লোকগল্পই বেশি। সম্ভবত নিজেদের ছদ্মবেশ, কর্মকাণ্ড, গুপ্ত কার্যক্রম সম্পর্কে সবাইকে ধোঁয়াশাচ্ছন্ন রাখার জন্যই তারা নিজেদের ইতিহাস নিয়ে কোনো কিছু প্রকাশ করেনি। তবে প্রায় সব ইতিহাসবিদ একটি জায়গায় এসে উপনীত হয়েছেন যে, নিনজারা কৃষক শ্রেণীর নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্য। তাই অনেকের ধারণা তাদের আর্থিক, সামাজিক অবস্থান নিচু হওয়ার কারণে তাদের নিয়ে রচিত কোনো ইতিহাস নেই। অনেকের দাবি, জাপানের নিনজারা প্রাচীন চীনের থেকে অনুপ্রাণিত। জাপানের উত্তর-পূর্বে চীন। আর বরাবরের মতোই চীন নানাভাবে জাপানকে প্রভাবিত করে থাকে।

একজন প্রাচীন সামুরাই যোদ্ধা

তাদের শুরুর ইতিহাস সঠিকভাবে কেউ না বলতে পারলেও অনেকের মতে নিনজাদের কার্যক্রম জাপানে শুরু হয় দ্বাদশ থেকে পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। তবে বেশ ভালোভাবে আবির্ভূত হয় সেনগকু (Sengoku) সময়কালে, চতুর্দশ শতাব্দীর শেষে এবং পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। ঐ সময়টাকে নিনজাদের স্বর্ণযুগ বলা হয়। ইগা কোগাদের হাত ধরে নিনজারা তখন সবচাইতে আলোচিত প্রসঙ্গ। নিনজাদের নিয়ে সেই সময় থেকেই বিভিন্ন লোকগল্পের প্রচার শুরু হয়। হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়া, পানিতে হাঁটা, নিজেদের অবিকল প্রতিরূপ তৈরি, অন্য কোনো মানুষ কিংবা প্রাণীর বেশ নিতে পারার বর্ণনা সহ বিভিন্ন ধরনের গল্প রটতে থাকে তাদের নিয়ে।

ইগা এবং কোগা বংশ

পঞ্চদশ থেকে সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত টিকে থাকা সেনগকু (Sengoku) সময়কাল ছিল বিদ্বেষে ভরা। নিজেদের সাম্রাজ্যকে বড় করার জন্য বংশের প্রধানরা জড়িত ছিল নানান রকম যুদ্ধবিগ্রহ, নাশকতা এবং গুপ্তহত্যায়। শক্তিশালী সামুরাইরা নিজেদের সুস্পষ্ট কোড বুশিডো মেনে সম্মানের সাথে সরাসরি সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও গুপ্ত কার্যক্রমগুলো পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হতো ভাড়াটে সৈনিকদের, যারা খুব সহজেই সকলের চোখে ধুলা দিয়ে কার্য হাসিল করার কাজে দক্ষ ছিল। আর সেজন্য উপযুক্ত ছিল নিনজারা। প্রত্যেকটা সাম্রাজ্যে সামুরাইদের পাশাপাশি অল্প সংখ্যক নিনজা সৈনিক থাকলেও দ্বিতীয় পক্ষ হিসেবে কার্যসিদ্ধির জন্য সবচাইতে ভালো পছন্দ ছিল ইগা এবং কোগা বংশের নিনজারা। তারা ছিল পুরোপুরি পেশাদার, সামন্ততান্ত্রিক প্রভুদের প্রিয় পছন্দ।

পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ভূমি, যেখানে ইগা সম্প্রদায় লোকজনেরা ব্যবহার করতো

শুরুতে বিচ্ছিন্ন থাকা নিনজারা ইগা এবং কোগা বংশের কল্যাণে একত্রিত হয়। এরা ছিল পেশাদার, নিজেদের কাজে দক্ষ। নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে বেঁধে রাখার মাধ্যমে নিজেদের তৈরি করার মধ্যে দিয়ে হয়ে উঠেছিল আরো বেশি দক্ষ। যদিও কার্যসিদ্ধির জন্য এরা কোনো নিয়ম কানুন অনুসরণ করতো না। এরা স্বতন্ত্র এবং দলীয়ভাবে কাজ করতো। কাজ হাসিল করার ব্যাপারে ছিল বেপরোয়া এবং নৃশংস। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে গুপ্তচরবৃত্তি, নাশকতার মতো কাজগুলোতে ছিল সিদ্ধহস্ত। প্রয়োজনে প্রভাবশালী সামন্ত প্রভুদের গুপ্তহত্যাও করতো তারা। আর এই গুপ্তহত্যার চেষ্টাই এদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।

১৪৮০ থেকে ১৫৮০ সাল পর্যন্ত নিজেদের বেশ ভালভাবে জাহির করলেও বিখ্যাত সামুরাই নেতা ওদা নাবুনাগার হাতে ইগা কোগারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ধারণা করা হয় ইগা এবং কোগা বংশের নিনজারা নাবুনাগাকে গুপ্তহত্যার চেষ্টা করেছিল। তবে ইগা এবং কোগা সম্প্রদায়ের নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগে এরা এতোই প্রসিদ্ধ ছিল যে, তাদের কর্মকাণ্ডের কথা এখনো প্রচলিত মিথগুলোতে বেশ ভালোভাবেই আলোকিত হয়ে রয়েছে। এর জন্য অবশ্য নাবুনাগার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কিছু নিনজার কৃতিত্ব ছিল।

নিনজাদের কার্যক্রম

নিনজাদের কার্যক্রম নিয়ে অসংখ্য লোককথা প্রচলিত রয়েছে। সবগুলোতেই তাদের অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে। বিশেষ করে কমিক সিরিজ, এনিম, সিনেমার দৌলতে তার পরিমাণ আরো বেড়ে গেছে। অতিরঞ্জনের প্রভাব এতো বেশি যে, নিনজা শব্দটা কানে ঢুকলেই আমাদের মনে পর্দায় ভেসে উঠে একদল কালো কিংবা ডার্ক নেভি ব্লু কাপর পরিহিত মানুষদের। যারা রাতের অন্ধকারে নিজেদের অসাধারণ ফ্লেক্সিবেলিটি মাধ্যমে নিঃশব্দে টপকাচ্ছে বিশাল দেয়াল। ধারালো অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে অতর্কিত আক্রমণ করছে টার্গেটকে। অনেকে এদেরকে সুপার হিউম্যানের পর্যায়ে উঠিয়ে দিয়েছে। অনেকে মনে করে এদের সুপার ন্যাচারাল শক্তি রয়েছে।

জনপ্রিয় টিভি সিরিজ নিনজা টার্টলের নিনজা যোদ্ধারা

বাস্তবিক পক্ষে নিনজাদের কার্যক্রম অনেকটা বর্তমানের সিক্রেট সার্ভিসগুলোর মতোই ছিল। গুপ্তচরবৃত্তি, শত্রুর ভিড়ে মিশে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য হাতানো, দাঙ্গা-হাঙ্গামার তৈরির মাধ্যমে একটি দলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী আরেকটি দলকে উস্কে দেওয়া। প্রয়োজনে অপহরণ, গুপ্তহত্যা, রিমান্ডে নিয়ে কারো কাছ থেকে তথ্য সংরক্ষণও করতো তারা। মূলত এসবই ছিল নিনজাদের মূল কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত। তবে এসব করতে গিয়ে নিনজারা এমন সব পদ্ধতি অবলম্বন করতো যা ছিল ব্যতিক্রম এবং অবশ্যই প্রশংসনীয়।

নিনজারা সবচাইতে বেশি দক্ষ ছিল গুপ্তচরবৃত্তিতে। কোনো সম্প্রদায়ের ব্যাপারে তথ্য একত্রিত করা, বাড়ি-ঘরের নকশা সংগ্রহ, যুদ্ধকালীন সময়ে শত্রু পক্ষের কৌশল জেনে অপর পক্ষকে জানানো- এসবের জন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হতো। সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হতো। আর সেটাই নিনজারা বেশ দক্ষতার সাথে করতো। এ ব্যাপারে ইতিহাসবিদ নচি কাগামি বলেন,Concerning ninja, they were said to be from Iga and Kōga, and went freely into enemy castles in secret. They observed hidden things, and were taken as being friends.

পরবর্তীতে বাকফু সাম্রাজ্য টিকে থাকা ইগা বংশের নিনজাদের গুপ্তচরবৃত্তির দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে একটি গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিল। তারা মূলত রাজদরবার এবং পাশাপাশি অবস্থিত দায়মু রাজবংশের কর্মকান্ডগুলোকে পর্যবেক্ষণ করতো। আপনি শুনলে অবাক হবেন, বর্তমানেও নিনজা গুপ্তচরেরা বিভিন্ন সিক্রেট সার্ভিসের আন্ডারে কাজ করে যাচ্ছে।

নিনজাদের প্রশিক্ষণ

নিনজারা যেসব কৌশল অবলম্বন করে নিজেদের প্রশিক্ষিত করে তুলে বর্তমানে সবগুলোকে একত্রে নিনজুৎসু (Ninjutsu) বলা হয়। যদিও আধুনিককালে মার্শাল আর্ট হিসেবে যেসব নিনজা কৌশলগুলো অবলম্বন করা হয় সেগুলো বেশ বিতর্কিত।

জাপানের সামরিক ইতিহাস  নিয়ে গবেষণাকারী ইতিহাসবিদ স্টিফেন ট্রানবুলের মতে, নিনজারা সামুরাইদের মতোই শিশুকাল থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে। তবে এদের বেড়ে ওঠাটা জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। অল্প বয়সেই নিনজারা বিষ, বিস্ফোরকের মতো মারাত্মক সব জিনিস বানানো শিখে ফেলে। এর সাথে তারা শেখে ডাক্তারিও। তারা ‘লি নাওমাসা’ নামক এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল, যা খুব সহজেই ক্ষত স্থান থেকে রক্ত ঝরা বন্ধ করে দিত।

প্রাচীন পুথিতে আঁকা নিনজাদের কৌশল

শারীরিক এবং মানসিক প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে নিনজাদের যেতে হতো। কেননা দীর্ঘ পথ দৌড়ানো, পাহাড় পর্বত আরোহণ, নিঃশব্দে হেঁটে চলা এবং অনেক সময় ধরে সাঁতার কাটার জন্য শারীরিক এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। এরপর তারা হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট, অস্ত্রের ব্যবহারের কৌশল রপ্ত করে। সাথে সাথে রপ্ত করে ছদ্মবেশের বিভিন্ন কৌশল, কেননা গুপ্তচরবৃত্তিতে এটাই নিনজাদের সবচাইতে বেশি সাহায্য করতো। এসব কৌশলই নিনজুৎসু বলে পরিচিত। ‘তগাকুরেরিউ’কে নিনজুৎসুর প্রাচীনতম নথিবদ্ধ ফর্ম হিসেবে ধরা হয়।

ছদ্মবেশের কৌশল

তাদের টিকে থাকার মূলে যেহেতু ছদ্মবেশ ছিল, সেহেতু এ কাজে বেশ ভালো কিছু কৌশল অবলম্বন করতো। বর্তমানে নিনজাদের যেমন দেখানো হয়, আসলে তারা তেমন ছিল না। কারণ এভাবে কালো পোশাক গায়ে জড়িয়ে রাখলে যে কারো চোখে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই নিনজারা সবচাইতে বেশি ব্যবহার করতো সাধারণ কৃষক এবং বুদ্ধু ভিক্ষুকদের ছদ্মবেশ।

একজন কামুসো বুদ্ধ ভিক্ষুক। এ ধরনের সাধারণ ছদ্মবেশই নিনজারা নিতো।

তাদের সাধারণ এই পোশাক দেখে কেউ সন্দেহ করতো না। এতে করে খুব সহজেই ওরা শত্রু শিবিরে পদচারণা করতে পারতো। তবে বিখ্যাত কিছু ছদ্মবেশের কৌশল ছিল, যা তাদের পুরোপুরি অদৃশ্য করে রাখতো এবং শত্রু শিবির থেকে হঠাৎ পালিয়ে যেতে সাহায্য করতো। এমন কিছু বিখ্যাত কৌশল হচ্ছে,

১) কাতন নো জুৎসু বা ফায়ার টেকনিক। আগুন লাগিয়ে দিয়ে গার্ডদের বিভ্রান্ত করার কৌশল।

২) মুকতুন নো জুৎসু বা উড টেকনিক। এটি অবলম্বন করে গাছে উঠে ছদ্মবেশ ধারণ করতো।

৩) দুতুন নো জুৎসু  বা স্টোন টেকনিক। বলের মতো গুটিসুটি মেরে বসে থাকা। এতে করে সহজে কেউ তাদের দেখত না।

৪) সুইতুন নো জুৎসু বা আর্থ টেকনিক। আগাছা লতাপাতা পেঁচিয়ে পানি দিয়ে হেটে যাওয়ার কৌশল।

নিনজাদের অস্ত্রশস্ত্র

আমরা সবচাইতে বেশি কৌতূহল হয়ে থাকি নিনজাদের অস্ত্রগুলোর প্রতি। যুদ্ধের ময়দানে ছদ্মবেশ, কৌশল, চতুরতার সাথে সাথে অস্ত্রশস্ত্রেরও বেশ প্রয়োজন। তবে নিনজারা যেহেতু নিজেদের ছদ্মবেশের আড়ালে রাখতো তাই তাদের অস্ত্রগুলোর মধ্যেও এর ছাপ পরে। যেমন, ‘কুসারিগামা’র কথাই ধরা যাক। দেখতে সাধারণ শিকলের সাথে আটকে থাকা সামান্য কাস্তে। কৃষক হিসেবে ছদ্মবেশের বেলায় বেশ কাজে দেয়। কেউ সন্দেহ করবে না এর ব্যাপারে।

কুসারিগামা

ছোট এবং বেশ কার্যকর হিসেবে রয়েছে বু-শুরিকেন এবং শুরিকেন। এ দুটি আমাদের কাছে বেশ পরিচিত। ফু দিয়ে দূর থেকে টার্গেটের শরীরে বিষ ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য যে ছোট অস্ত্রটি ব্যবহার করা হয় তাকে বু-শুরিকেন বা ডার্ট বলে। আর তাঁরার আকৃতির ব্লেডের মত দেখতে জিনিসটি শুরিকেন।

বু-শুরিকেন

কাগিনাওয়া, আশিকু ব্যবহার হয় দেয়াল টপকানোর জন্য। টেককো-কাগি হচ্ছে এক ধরনের লোহার হাতের থাবা, যা দিয়ে পাহাড় টপকানো কিংবা শত্রুকে আক্রমণ করা হয়। আর সবচাইতে বিখ্যাত অস্ত্রটি হচ্ছে ‘কাতানা’। বেশ ধারালো লোহার ব্লেড বা তলোয়ার। এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে ছিগরিকি, মানকিরি সহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে।

কাতানা

‘নিনজা অ্যাটাক’ এর লেখক ম্যাট অল্টের মতে, নিনজাদের কার্যক্রম জাপানের মধ্যে হলেও সারা পৃথিবীতে এদের প্রভাব রয়েছে। এমনকি একুশ শতকে এসেও নিনজারা টিকে আছে নিজেদের সেই আদি রূপেই। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ছদ্মবেশের ধরণ, অস্ত্র ব্যবহার পাল্টালেও ইগা কোগা বংশের মতো এখনো নিনজারা লালিত হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য।

 

This article is in Bangla language. It's an article about a famous silent assassin group named Ninja.

Featured Image: dumielauxepices.net

Source of Information

1. thoughtco.com/history-of-the-ninja-195811

2. tofugu.com/japan/ninja-history/

3. goo.gl/bO13mN

4. kotaku.com/all-you-know-about-ninja-is-probably-wrong-5932403

Related Articles