Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

জোডিয়াক কিলার: ফ্ল্যাশ লাইট হাতে ভয়ঙ্কর এক সিরিয়াল কিলার

জোডিয়াক, গত শতাব্দীর ৬০ থেকে ৭০ এর দশকে এ নামটিই নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে রেখেছিল। এই সময়কালে জোডিয়াকের দাবী অনুসারে, সে মোট ৩৭ জন, হ্যাঁ পাঠক ঠিকই পড়েছেন, মোট ৩৭ জন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছিল। যদিও সংবাদপত্র এবং তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই দাবীর মাঝে শুধু মাত্র ৭ জন ভিক্টিমের বিষয়ে একমত হতে পেরেছে। আজ আমরা এই ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলারের সিরিয়াল কিলিংয়ের গল্পগুলোই শুনতে যাচ্ছি। তার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৯৬৮ সালের ২০ ডিসেম্বর, লেক হারমান রোড, ক্যালিফোর্নিয়ায়।

২০ ডিসেম্বর, ১৯৬৮- লেক হারমান রোডের হত্যা

২০ ডিসেম্বর, ১৯৬৮। গোটা আমেরিকা জুড়েই ক্রিসমাসের আনন্দ শুরু হয়ে গেছে। এমনই এক সময়ে হাই স্কুলে পড়ুয়া দুই ছাত্র-ছাত্রী তাদের জীবনের প্রথম ডেটিংয়ে বের হয়েছে। ছেলেটির নাম ডেভিড আর্থার ফ্যারাডে আর মেয়েটি বেটি লু জেনসেন। তাদের কেউই তখনও কৈশোর পার করেনি। ছেলেটির বয়স ১৭ আর মেয়েটি পা রেখেছে ১৬-তে। সদ্যই তারা একে অপরের প্রেমে পড়েছে। তাদের পরিচয়ও খুব বেশি দিনের নয়। দুই সপ্তাহের কিছু আগে চার্চের এক অনুষ্ঠানে প্রথম দেখা তাদের। এরই মাঝে একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে এই জুটি। ডেভিড তার প্রেমিকার বাবা-মাকে কথা দিয়ে এসেছে যে, রাত ১১টার মাঝেই তাদের মেয়েকে সে বাসায় পৌঁছিয়ে দিবে। বাবা-মা’র কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেটি ডেভিডের, আরো স্পষ্ট করে বললে, ১৭ বছর বয়সী ডেভিডের মায়ের অফ হোয়াইট কালারের রাজকীয় রাম্বলার স্টেশন ওয়াগন কারে উঠে বসল।

হোগান হাই স্কুলে রাতে একটি ক্রিসমাস কনসার্ট হওয়ার কথা আছে। সেখানেই এই জুটি যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। কিন্তু হঠাৎই তারা তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ফেলে। এক বন্ধুর সাথে মিস্টার এড’স নামের এক লোকাল রেস্টুরেন্টে দেখা করতে যায় তারা। রাত ১০টা ১৫ মিনিটে সেই রেস্টুরেন্ট থেকে তারা চলে যায় লেক হারমান রোডের এক অতি পরিচিত লাভার’স লেনে, একান্তে কিছু সময় কাটাবে বলে। অনেক কপোত কপোতিই লেক হারমান রোডের লাভার’স লেন নামে পরিচিত এই নিরিবিলি জায়গাটিতে সময় কাটাতে এসে থাকে।

লেক হারমান রোডের লাভারস লেন; source: zodiackillerfacts.com

কিন্তু প্রেমিক প্রেমিকার একান্ত মুহূর্ত বাবা-মার বেঁধে দেওয়া সময় মানল না। রাত ১১টা ১০ বেজে গেলেও বাড়ি ফেরার কোনো লক্ষণ ছিল না তাদের মাঝে। অনেকেই তাদের ১১ টা ১০ মিনিট পর্যন্ত এই লাভারস লেনে সময় কাটাতে দেখেছেন। ১১টা ১০ এর কিছু পরে যখন জায়গাটা নিরিবিলি হয়ে গিয়েছিল, এক লোক এগিয়ে গেল ডেভিড আর বেটির অফ হোয়াইট গাড়িটির দিকে। অপ্রত্যাশিতভাবে বন্দুক দেখিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে আসতে ইশারা করল তাদের। বেটি গাড়ির দরজা খুলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পেছন দিক থেকে একে একে ৫ টা গুলি ঢুকে পড়ে তার শরীরে। গাড়ির দরজা থেকে ৩০ ফুট দূরে পড়ে রইল বেটির নিথর দেহটি। এরপর গাড়ির ভেতরে থাকা অবস্থাতেই .২২ ক্যালিবার সেমি অটোমেটিক পিস্তল দিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে ডেভিডের মাথায় একটি গুলি ঢুকিয়ে দেয় অপরিচিত লোকটি। ফলে রাত ১১টায় বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও, আর কখনোই ফেরা হল না এই যুগলের। শেষ হলো না বাবা-মায়ের অপেক্ষার প্রহর। তাদের জীবনের প্রথম ডেটই তাদের জীবনের শেষ ডেটে পরিণত হলো।

পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ ছিল এই হত্যাকাণ্ডটি ড্রাগ সম্পর্কিত কোনো ঘটনা থেকে হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু আরো তদন্তের ফলে জানা যায়, তারা কেউই এমন কিছুর সাথে জড়িত ছিল না। বেটি লু জেনসেনকে পছন্দ করে এমন একজন ছেলেকেও প্রাথমিকভাবে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাকেও খুব দ্রুতই সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। সে সময় পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করেনি যে, এই ঘটনাটি একটি সিরিয়াল কিলিংয়ের অংশ হতে পারে। কারণ, এই হত্যাকাণ্ডটিই ছিল সম্ভবত জোডিয়াক সিরিয়াল কিলিং সিরিজের প্রথম খুন।

জুলাই ৪, ১৯৬৯- ব্লু রক স্প্রিংস হত্যাকাণ্ড

জুলাই ৪, ১৯৬৯। রাত ১২টার কিছু আগে এক প্রেমিকযুগল তাদের গাড়িতে করে ভ্যালেহোর ব্লু রক স্প্রিংস পার্কে প্রবেশ করে এবং তাদের বাদামী রঙের করভেয়ার গাড়িটিকে পার্ক করে। মেয়েটির নাম ছিল ডারলিন ফেরিন (২২) এবং ছেলেটির নাম মাইকেল ম্যাজাউ (১৯)। গাড়িটি ছিল ডারলিন ফেরিনের। মূলত তারা পরকীয়া প্রেমিক যুগল ছিল। ফেরিনের স্বামী ছিল এক রেস্টুরেন্টের কুক। ফেরিন তার প্রেমিক ম্যাজাউকে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে তার বাড়ি থেকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়েছিল। তারা রাতের খাবার খেতে মিস্টার এড’স রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা চিন্তা করেছিল এবং সেই রাস্তাতেই যাচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তারা পার্কটিতে চলে আসে।

মাইকেল ম্যাজাউ এবং ডারলিন ফেরিন; source: zodiacciphers.com

এই যুগল যখন গাড়িটিতে বসে ছিল, তখন দ্বিতীয় একটি গাড়িকে তাদের গাড়ির পাশে পার্ক করা হয়। কিন্তু তৎক্ষণাৎ গাড়িটিকে আবারো সেখান থেকে নিয়ে চলে যাওয়া হয়। ১০ মিনিট পরে গাড়িটি আবার ফিরে আসে। অন্য গাড়িটির ড্রাইভার এবার গাড়ির হেডলাইট জ্বালানো অবস্থায় গাড়ির দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এসে ফেরিনের গাড়িটির প্যাসেঞ্জার ডোরের দিকে এগিয়ে গেল। হাতে তার নাইন এমএম লুগার আর বড় একটি ফ্ল্যাশ লাইট। ফেরিন এবং ম্যাজাউ মনে করেছিল, লোকটি একজন পুলিশ অফিসার। তারা তাদের পরিচয় লেখা আইডি কার্ড রেডি করে রেখেছিল। আগন্তুক গাড়ি থেকে বের হয়ে ম্যাজাউ এবং ফেরিনের চোখে ফ্ল্যাশ লাইট ধরল এবং সাথে সাথেই পাঁচটি বুলেট ছুটে আসল তাদের দিকে। গাড়ির ভেতরে পড়ে রইল রক্তেভেজা প্রেমিক যুগল!

ভিক্টিমদের শেভরোলেট করভেয়ার গাড়িটি; source: zodiacciphers.com

পেছনে ঘুরে হাঁটা দিল ফ্ল্যাশলাইট হাতের আগন্তুকটি। কিন্তু দেহে বুলেট নিয়ে গাড়ির ভেতরেই ম্যাজাউ ব্যাথায়, কষ্টে চিৎকার করে উঠলে সেই চিৎকারের আওয়াজ শুনে আবার ফিরে আসল লোকটি। প্রত্যেকের দেহে আরো দুটো করে বুলেট ঠুকে দিল। এবারই প্রথম ম্যাজাউ লোকটিকে এক নজর দেখার সুযোগ পেল।

পুলিশের কাছে খুনীর ফোন কল

এই ঘটনা ঘটার মোটামুটি ৪৫ মিনিট পরে ভ্যালেহো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের টেলিফোনটি সজোরে বেজে ওঠে। অপরিচিত এক লোক ব্লু রক স্প্রিংস পার্কে একটা হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে জানায় এবং নিজেকে সেই হত্যাকারী হিসেবে পরিচয় দেয়। হত্যায় ব্যবহৃত নাইন এম এম লুগারের কথাও সে একদম সঠিকভাবে উল্লেখ করে, যা পরবর্তীতে তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। ২০ ডিসেম্বর, ১৯৬৮-তে লেক হারমানে বেটি এবং ডেভিডকেও নিজেই খুন করেছে বলে দাবী করে ফোন কলের আগন্তুকটি।

তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পুলিশ ছুটে যায়। সেখানে ফেরিন এবং ম্যাজাউ দুজনই তখনও জীবিত ছিল। তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়া হলে ফেরিনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তবে আশ্চর্যজনকভাবে বুকে, মুখে, ঘাড়ে গুলি লাগার পরও বেঁচে যায় ম্যাজাউ, যিনি পরবর্তীতে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছিলেন।

পুলিশের তদন্ত

ফেরিনের স্বামী ডিনকে প্রাথমিকভাবে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্দেহ করা হয়েছিল। কিন্তু তাকে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, যখন এটি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, হত্যাকাণ্ডের সময় সে সিসারস রেসটুরেন্টে কুকের কাজ করছিল। ফেরিনের প্রথম স্বামী জেমস ফিলিপসকেও প্রাথমিকভাবে হালকা সন্দেহ করা হয়েছিল।

হত্যাকারী পুলিশ ডিপার্টমেন্টে যে ফোন কলটি করেছিল, তা ন্যান্সি স্লোয়ার নামে একজন ধরেছিলেন। কলটি পুলিশ স্টেশন থেকে কয়েক ব্লক দূরের এক ফোন বুথ থেকে করা হয়েছিল। ন্যান্সি স্লোয়ার, যিনি খুনীর ফোন কলটি ধরেছিলেন, তার কাছে খুনীর কণ্ঠ শুনে মনে হয়েছিল, সে একটি লিখিত কাগজ থেকে তার বক্তব্য পাঠ করে শোনাচ্ছে। খুনীর কণ্ঠ ছিল শীতল। সেই কণ্ঠ শুনে তার আরো মনে হয়েছিল, লোকটির বয়স অন্তত ৩০ বছর হবে।

ম্যাজাউ সুস্থ হয়ে উঠলে ডিটেকটিভ এড. রাস্ট তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। ম্যাজাউয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে, খুনী ছিল সাদা গায়ের রঙের এক পুরুষ। উচ্চতায় ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। গাটাগোট্টা, ৯০ কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজন হবে লোকটির। ছোট ছোট কোঁকড়ানো চুল। চুলের রঙ হালকা বাদামী। মুখমণ্ডল বেশ বড়। বয়স ২৬-৩০ এর মাঝামাঝি। ম্যাজাউ হত্যাকারীর গাড়িটি শুধুমাত্র একবার মোটামুটি ভালোভাবে দেখতে পেয়েছিল। গাড়িটির রং ছিল খুব হালকা ধরনের। গাড়িটির লাইসেন্স প্লেট ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটের ছিল, যা থেকে ধারণা করা যায়, খুনী ক্যালিফোর্নিয়ার স্থানীয়।

ফেরিনের পরিবারের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এটি জানার জন্য যে, ফেরিনের সাথে কারো শত্রুতা ছিল কিনা। তার বোন লিন্ডা পুলিশকে ফেরিনের তিনজন বেস্ট ফ্রেন্ডের নাম বলতে সমর্থ হয়। যার মাঝে একজনের নাম ছিল লি, যে তাকে মেক্সিকো থেকে বিভিন্ন উপহার নিয়ে এসে দিত।

২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জোডিয়াক সিনেমায় দেখানো মিস্টার এড’স রেসটুরেন্ট © Phoenix Pictures

লেক হারমান রোডের হত্যাকাণ্ড যেখানে ঘটেছিল, তার মাত্র ৪ মাইল দূরেই পরের খুনটি ঘটে। অর্থাৎ দুটি ঘটনা একই খুনীর ঘটানোর সম্ভাবনা অনেক বেশি ছিল। আরো আশ্চর্যজনক মিল হলো, ভিকটিমদের বয়স অনেক কম ছিল। তারা সবাই টিন-এজার বা সদ্য টিন-এজ পার করেছে এমন। উভয়ক্ষেত্রেই প্রেমিক-প্রেমিকা একসাথে আক্রান্ত হয়েছে এবং তারা গাড়ির স্টার্ট বন্ধ অবস্থায় গাড়ির মাঝে ছিল। আরো কাকতালীয় ব্যাপার হলো, উভয় যুগলই মৃত্যুর আগে মিস্টার এড’স রেস্টুরেন্টে গিয়েছিল বা সেই রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা চিন্তা করেছিল। অর্থাৎ তাদের গাড়ি সেই রেস্টুরেন্টের রাস্তা ব্যবহার করেছিল।

১ আগস্ট, ১৯৬৯- জোডিয়াকের প্রথম তিনটি চিঠি

ব্লু রক স্প্রিংসের ঘটনার ২৬ দিন পর; ১ আগস্ট,১৯৬৯। ভ্যালেহো টাইমস হেরাল্ড, সান ফ্র্যান্সিস্কো ক্রনিকল, দ্য সান ফ্রান্সিস্কো এক্সামিনার নামের তিনটি পত্রিকার অফিসেই একটি করে মোট ৩টি চিঠি যায়। ৩টি চিঠিতেই মোটামুটি একই কথা লেখা ছিল, যাতে লেক হারমান রোড এবং ব্লু রক স্প্রিংসের ঘটনার ক্রেডিট পত্র লেখক নিজের বলে দাবী করে এবং ঘটনার কিছু বিবরণ তুলে ধরে, যা পুলিশ ছাড়া আর কারো জানার কথা ছিল না। প্রত্যেকটি চিঠির সাথে একটি করে মোট ৩টি গোপন সংকেতে লেখা চিঠিও পাঠায় লেখক। যে তিনটি গোপন সংকেতে লেখা চিঠিতে মোট ৪০৮টি সিম্বল ব্যবহৃত হয়েছিল। এগুলোকে ক্রিপ্টোগ্রাম বলে। খুনী তার চিঠিতে দাবী করেছিল, এই তিনটি গোপন সংকেতে লেখা চিঠিতে তার পরিচয় দেওয়া আছে। চিঠির শেষে একটা বৃত্তের ভেতরে ক্রস আঁকানো একটি প্রতীক ছিল, যা খুনী তার সিগনেচার হিসেবে ব্যবহার করেছিল।

সান ফ্র্যান্সিস্কো ক্রনিকলে পাঠানো খুনীর চিঠিটি নিচে হুবুহু তুলে ধরা হলো-

Dear Editor

This is the murderer of the 2 teenagers last Christmass at Lake Herman + the girl on the 4th of July near the golf course in Vallejo. To prove I killed them I shall state some facts which only I + the police know.

Christmass

1 Brand name of ammo Super X

2 10 shots were fired

3 the boy was on his back with his feet to the car

4 the girl was on her right side feet to the west

4th July

1 girl was wearing patterned slacks

2 The boy was also shot in the knee.

3 Brand name of ammo was western

OVER

Here is part of a cipher the other 2 parts of this cipher are being mailed to the editors of the Vallejo Times + SF Exam iner. I want you to print this cipher on the front page of your paper. In this cipher is my idenity. If you do not print this cipher by the afternoon of Fry.1st of Aug 69, I will go on a kill ram- Page Fry. night. I will cruse around all weekend killing lone people in the night then move on to kill again, untill I end up with a dozen people over the weekend.

দ্য সান ফ্র্যান্সিস্কো ক্রোনিকলে পাঠানো খুনীর ১ম চিঠি; source: zodiackillerfacts.com

খুনী দাবী করেছিল, সকল চিঠি যাতে পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতায় ছাপা হয়, অন্যথায় সে কয়েক দিনের মাঝে আরো ১ ডজন মানুষকে হত্যা করবে।

খুনীর কথা অমান্য করে দ্য ক্রনিকল তাদের পাঠানো ক্রিপ্টোগ্রামটি তাদের পত্রিকার চতুর্থ পৃষ্ঠায় প্রকাশ করেছিল। তার পাশেই তারা এক সংবাদে ভ্যালেহো পুলিশ প্রধানের বক্তব্য উপস্থাপন করেছিল, যেখানে তিনি বলেছেন, “আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি যে চিঠিটি খুনীই লিখেছে।” তিনি খুনীকে আরো বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আরো একটি চিঠি তাদের কাছে লেখার অনুরোধ করেন।

একে একে তিনটি ক্রিপ্টোগ্রামই পত্রিকাগুলোতে প্রকাশ করা হয়। তবে খুনীর কথা অমান্য করে দেরিতে ক্রিপ্টোগ্রামগুলো ছাপানো বা প্রথম পৃষ্ঠায় না ছাপিয়ে ভেতরের পৃষ্ঠায় ছাপানোর পরও কোনরকম হত্যাকাণ্ড সেসময় ঘটেনি, যার ভয় চিঠির লেখকটি দেখিয়েছিল।

৫ দিন পর, ৭ আগস্ট ১৯৬৯; দ্য সান ফ্র্যান্সিস্কো এক্সামিনারে আরেকটি চিঠি আসে, যার প্রথম কয়েকটি শব্দ ছিল-

“ডিয়ার এডিটর, দিস ইজ দ্য জোডিয়াক স্পিকিং।” এটাই প্রথমবার যখন খুনী নিজেকে জোডিয়াক হিসেবে পরিচয় দিল। এর আগে কোথাও কখনও খুনী নিজেকে জোডিয়াক বলেনি। এই চিঠিটি মূলত লেখা হয়েছিল ভ্যালেহো পুলিশ চিফের খুনীর কাছে খুনের আরো বিশদ বর্ণনা চাওয়া সাপেক্ষে। এতে জোডিয়াক তার খুনগুলোর আরো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরে, যা সাধারণ জনগণের জানার কথা ছিল না। জোডিয়াক খুন হওয়া লোকদের কাপড়ের বিবরণ, তাদের দেহের অবস্থান এবং যে অস্ত্র দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে এসব বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য তার চিঠিতে উল্লেখ করেছিল, যে তথ্যগুলো সঠিক ছিল। তারপর সে হত্যাকাণ্ড বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় আসা ভুলভাল তথ্যের বিষয়েও কথা বলে। চিঠির শেষে সে জানায়, যদি তার দেওয়া আগের কোডগুলো পুলিশ ব্রেক করতে পারে, তাহলে তারা তাকে খুঁজে বের করতে পারবে।

তিনটি ভিন্ন ভিন্ন পত্রিকায় জোডিয়াকের পাঠানো কোডগুলো একসাথে; source: prophecyexperimentalzone.blogspot.com

৮ আগস্ট, ১৯৬৯- দ্য ফার্স্ট জোডিয়াক কোড ব্রেক

গোপন সংকেতে লেখা ক্রিপ্টোগ্রাম তিনটি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে ক্রিপ্টোগ্রাম বিষয়ে অভিজ্ঞ, পুলিশ, গোয়েন্দা, সাধারণ মানুষ সবাই এই কোড ব্রেক করতে উঠেপড়ে লেগে যায়। পুলিশ অসফল হয়ে নেভি ক্রিপ্টোগ্রাফারদের সেই কোড ব্রেক করার জন্য দায়িত্ব দেয়। এমনকি এফবিআইও সেই কোড ব্রেক করার চেষ্টা করে। কিন্তু সকলেই ব্যর্থ হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে একটি অখ্যাত হাই স্কুলের ইতিহাস ও অর্থনীতির শিক্ষক এবং তার স্ত্রী একসাথে বসে এই জটিল কোডটি ব্রেক করে ফেলেন। এই কোডটিতে মোট ৪০৮টি সিম্বল ছিল এবং একই ইংরেজী বর্ণকে কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন সংকেত দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছিল। যেমন- E অক্ষরটিকে একেকবার একেকভাবে মোট ৭টি সংকেত দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছিল।

যে দম্পতি কোডটি ব্রেক করেছিলেন, তাদের নাম ছিল ডোনাল্ড এবং বেটি হারডেন। তারা ক্যালিফোর্নিয়ার স্যালিনাসের অধিবাসী ছিলেন। তাদের এই কোড ব্রেক করতে সময় লেগেছিল মোট ২০ ঘণ্টা। যেহেতু খুনী খুন করার পর টেলিফোন করে পুলিশকে খুনের কথা জানিয়েছিল এবং পরে তিনটি পত্রিকা অফিসে খুনের ক্রেডিট দাবী করে ৩টি ভিন্ন ভিন্ন চিঠি পাঠিয়েছিল, তাই সেই দম্পতি ধরে নিয়েছিল খুনী বেশ আত্মঅহংকারী। আর আত্মঅহংকারী মানুষ সবসময় নিজের কথা বলে বেড়ায় বলে, দম্পতি সেই ক্রিপ্টোগ্রামের প্রথম অক্ষরকে ‘I’ হিসেবে ধরে নিলেন। এরপর গোটা ক্রিপ্টোগ্রামে যেখানেই সেই সিম্বল এসেছে সেটাকে ‘I’ দ্বারা পরিবর্তন করে ফেললেন। মজার বিষয় হলো, তাদের এই ধারণা সঠিক ছিল। ক্রিপ্টোগ্রামের প্রথম শব্দ ছিল I বা আমি।

এরপর বুদ্ধিমান দম্পতি মনে করলেন, খুনী অবশ্যই গোটা ম্যসেজে কয়েকবার ‘KILL’ শব্দটি ব্যবহার করবেই। এরপর তিনি KILL এর ‘I’ এর পরের সংকেতগুলো ‘L’ হতে পারে বলে ধরে নিলেন। আর একই সংকেত পর পর দুবার ব্যবহার হয়েছে কিনা (‘LL’) তা যাচাই করলেন। তারা দেখলেন, ‘I’ এর পর গোটা ক্রিপ্টোগ্রামে শুধুমাত্র ২ বার একই সংকেত পরপর ২ বার ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি সেটিকে ‘L’ ধরে নিয়ে সেই সঙ্কেতকে পুরো ক্রিপ্টোগ্রামে পরিবর্তন করে দিলেন। এবার ‘I’ সংকেতটির পরের ঘরেই বা এক ঘর পরেই ‘L’ এর সেই সংকেত আবার দেখা গেলে অন্য সংকেতটিও L হবে, কারণ, KILL এ আছে ডাবল ‘L’, আর যেসব জায়গায় ডাবল L পাওয়া যাবে তার আগের সংকেতটি ‘I’ হবে। আর ‘ILL’ এর আগের সংকেত অবশ্যই ‘K’ হবে ‘KILL’ শব্দটি পূরণের জন্য। এভাবে গোটা ক্রিপ্টোগ্রামে K, I ও L এর জন্য পাওয়া সংকেতগুলোর জায়গায় এই বর্ণগুলো বসানো হল। এছাড়াও KILL এর পরেই ING ব্যবহার করে KILLING বা ED ব্যবহার করে KILLED শব্দও থাকার সম্ভাবনা প্রবল ছিল, এবং আসলেই এই শব্দগুলো ছিল। এভাবেই অন্য শব্দগুলোর জন্য শূন্যস্থান পূরণ করে করে এবং কিছুটা অনুমানের মাধ্যমে এই বৃদ্ধ দম্পতি সাইফারটির অর্থ উদ্ধার করে ফেললেন।

কোন বর্ণকে কোন কোন প্রতীক দ্বারা কতবার প্রকাশ করা হয়েছিল তার তালিকা; source: zodiologists.com

তবে কখনও কখনও এই দম্পতি ভুল পথেও পরিচালিত হয়েছিলেন। ইংরেজি অক্ষর সবচেয়ে বেশিবার ব্যবহৃত হয় ‘E’, আর এই ক্রিপ্টোগ্রামে উল্টো ‘Q’ সবচেয়ে বেশিবার ব্যবহৃত হয়েছে। তাই তারা ধরেই নিয়েছিলেন, উল্টো ‘Q’ হচ্ছে ‘E’, তবে কিছুক্ষণের মাঝেই তারা তাদের ভুল বুঝতে পারেন। খুনী অতিরিক্ত চালাকি করে ‘E’ এর জন্য অন্য সকল বর্ণের চেয়ে বেশি সর্বোচ্চ ৭ আকৃতির প্রতীক ব্যবহার করেছিল।

সাইফারটি ডিকোড করার পর তার অর্থ দাঁড়ায়,

“I LIKE KILLING PEOPLE BECAUSE IT IS SO MUCH FUN IT IS MORE FUN THAN KILLING WILD GAME IN THE FORREST BECAUSE MAN IS THE MOST DANGEROUE ANAMAL OF ALL TO KILL SOMETHING GIVES ME THE MOST THRILLING EXPERENCE IT IS EVEN BETTER THAN GETTING YOUR ROCKS OFF WITH A GIRL THE BEST PART OF IT IS THAE WHEN I DIE I WILL BE REBORN IN PARADICE AND ALL THEI HAVE KILLED WILL BECOME MY SLAVES I WILL NOT GIVE YOU MY NAME BECAUSE YOU WILL TRY TO SLOI DOWN OR ATOP MY COLLECTIOG OF SLAVES FOR MY AFTERLIFE. EBEORIETEMETHHPITI”

জোডিয়াক যে ভুল বানানে সংকেত পাঠিয়েছিল, তা এখানে অবিকৃত রাখা হল।

যার মোটামুটি বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায়, সে মানুষকে খুন করত, কারণ খুন করা অনেক মজার। মানুষকে খুন করা, বনের পশু শিকার করার চেয়ে বেশি মজার। কারণ মানুষই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পশু। মরার পর খুনী স্বর্গে আবার জন্ম নেবে এবং সে যাদেরকে হত্যা করেছে তারা তার দাসে পরিণত হবে। সে তার পরিচয় বলবে না, কারণ পুলিশ স্বর্গের জন্য তার দাসের সংখ্যা বাড়ানোর যে কাজ সেটিকে ধীর গতির করে দেবে।

এর শেষ ১৮টি বর্ণ ‘EBEORIETEMETHHPIT’ অবশ্য এই পদ্ধতিতে সঠিক কোনো অর্থ প্রকাশ করে না এবং এই অংশটির অর্থ কী, তা এখনও বের করা যায়নি।

জোডিয়াকের ভাষ্যমতে, ৪০৮ সিম্বলের এই কোড ব্রেক করা গেলে তার পরিচয় প্রকাশ হয়ে পড়বে। কিন্তু কোড ব্রেক করার পরও তা পাওয়া গেল না। বরং জোডিয়াক এই ক্রিপ্টোগ্রামে ম্যাসেজ পাঠালো যে, সে তাদেরকে তার পরিচয় বলবে না। কারণ তাহলে পুলিশ তার কাজ ধীর গতির করে দেবে।

এই ক্রিপ্টোগ্রাম দেখে গোয়েন্দা ডগলাস এবং আরো এফবিআই এজেন্ট ধারণা করেছিলেন, জোডিয়াক কিলার একসময় নেভিতে কর্মরত ছিল, বা এখনও আছে। তার ভুলভাল, অস্বাভাবিক বানান এবং ব্যাকরণ দেখে তারা ধারণা করেছিল, জোডিয়াক কিলার সম্ভবত একজন ব্রিটিশ।

২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯- লেক বেরিয়েসার হত্যাকাণ্ড

২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯। প্যাসিফিক ইউনিয়ন কলেজের ছাত্র ব্রায়ান হার্টনেল এবং সেসেলিয়া শেপার্ড লেক বেরিয়েসার নিরিবিলি পরিবেশে পিকনিক করতে গিয়েছিল। এমন সময় বর্গাকার আকৃতির কালো মুখোশ (জল্লাদের মত) এবং মুখোশের ভেতরে কালো সানগ্লাস পরহিত এক লোক তাদের দিকে এগিয়ে আসল। তার বুকে কালো পোশাকের উপড়ে ৯ বর্গ ইঞ্চি জুড়ে একটা বৃত্তের ভেতরে ক্রস আঁকানো ছিল। তার হাতে ছিল একটি বন্দুক। সে হার্টনেল আর সেসেলিয়ার কাছে এসে তাদের সাথে কথা বলল, জানালো সে জেল থেকে পালিয়ে আসা এক কয়েদী। জেলের গার্ডকে একটু আগে হত্যা করার পর একটা গাড়ি চুরি করে পালিয়ে এসেছে সে। সে আরো জানায়, তার হার্টনেল আর সেসেলিয়ার গাড়িটি লাগবে, কারণ সে মেক্সিকো পালিয়ে যেতে চায়। সেসেলিয়াকে কিছু দড়ি ধরিয়ে দেয় লোকটি যাতে সে হার্টনেলকে সেই দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। তারপর লোকটি সেসেলিয়াকেও দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। সে হার্টনেলের বাঁধন পরীক্ষা করতে যেয়ে দেখে সেসেলিয়া তা বেশ ঢিলাঢালা করে বেঁধেছে।

২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জোডিয়াক সিনেমায় হার্টনেল আর সেসেলিয়ার উপর জোডিয়াকের আক্রমণের দৃশ্য © Phoenix Pictures

হার্টনেল ভেবেছিল এটি একটি ডাকাতির ঘটনা। কিন্তু লোকটি হঠাৎ একটি ছুরি বের করে এবং তাদের দুজনকেই পেছন দিক থেকে বারবার সেই ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। হার্টনেলকে ৬ বার এবং সেসেলিয়াকে ১০ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করার পর লোকটি ক্ষান্ত হয়। ছুরিটি ছিল ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা, যাতে কাঠের হাতল লাগানো ছিল। এরপর ৫০০ গজ দূরে রাখা হার্টনেলের গাড়ির কাছে দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায় খুনী। সেখানে গিয়ে গাড়ির দরজায় একটি বৃত্তের মাঝে ক্রস আঁকে সে, যা জোডিয়াকের সিম্বল। নিচে কালো একটি কলম দিয়ে সে গাড়ির দরজায় লেখে “Vallejo/12-20-68/7-4-69/Sept 27–69–6:30/by knife.”। ১ম ২টি তারিখ ছিল জোডিয়াকের আগের হত্যাকাণ্ডের তারিখগুলো, আর ২৭ সেপ্টেম্বর ছিল সেদিনের তারিখ।

ফেরিনের গাড়ির দরজায় জোডিয়াকের নিজ হাতের লেখা; source: theunredacted.com

রাত ৭টা ৪০ মিনিটে খুনী একটি পে টেলিফোন বুথ থেকে নাপা কাউন্টি শেরিফের অফিসে ফোন করে তার নতুন হত্যাকাণ্ডের কথা প্রকাশ করে। ফোনটি করা হয়েছিল শেরিফের অফিসের মাত্র কয়েক ব্লক দূর থেকে, কিন্তু হত্যাকাণ্ডের জায়গা থেকে ২৭ মাইল দূরে! পুলিশ যখন টেলিফোন করার জায়গা খুঁজে বের করে সেখানে পৌঁছায়, তখন দেখতে পায় টেলিফোনটি তখনও ঝুলে আছে।

জোডিয়াকের হত্যাস্থলে ভিকটিমদের চিৎকারে একজন মানুষ আর তার ছেলে তাদেরকে খুঁজে বের করে। তারা কিছুটা দূরে মাছ ধরছিল। যখন পুলিশ সেখানে পৌঁছায়, সেসেলিয়া শেপার্ড তখনও জীবিত এবং সচেতন ছিল। সে পুলিশকে ঘটনার পুরো বিবরণ দেয়। হার্টনেল আর সেসেলিয়াকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কুইন অভ দ্য ভ্যালি হসপিটালে ভর্তি করানো হয়। সেসেলিয়া কোমায় চলে যায় এবং আর কখনোই তার চেতনা ফিরে আসেনি। ২ দিন পর সে মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু হার্টনেল ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়।

পুলিশী তদন্ত

হার্টনেলের বর্ণনামতে, খুনীর উচ্চতা ছিল ৬ ফুটের মতো। গাট্টাগোট্টা শরীরের অধিকারী ছিল সে। ক্রাইম সিন থেকে একটি জুতার ছাপ উদ্ধার করা হয়, যেটিকে খুনীর পায়ের জুতা হিসেবে ধারণা করা হয়। এটি ১০.৫ উইং ওয়াকার জুতা ছিল। জুতার ছাপের গভীরতা থেকে গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন, লোকটির ওজন ৯৫ কেজির মত। সেসেলিয়ার বর্ণনামতে, লোকটির চুলের রঙ ছিল বাদামী এবং গায়ের রঙ ছিল সাদা, যা আগের বর্ণনার সাথে মিলে যায়।

এবারও আগের দু’বারের মতো এক নিরিবিলি জায়গায় এক যুগল জোডিয়াকের হামলার শিকার হল। জোডিয়াক আগেরবারের মতো ফোন করে তা পুলিশকে জানালো। এই প্রথম জোডিয়াক তার ভিকটিমদের সাথে কথা বলল। আর বন্দুকের বদলে ব্যবহার করল ছুরি। এই হামলায় আগের হামলাগুলোর সাথে আরেকটি অমিল হলো, আগের হামলাগুলোতে ভিকটিমরা ছিল গাড়ির ভেতরে আর এবার বাইরে।

জোডিয়াক সম্বন্ধে আমরা এতক্ষণ যা পড়লাম, তা থেকে তার সম্বন্ধে পাওয়া সকল তথ্য একসাথে করলে দাঁড়ায়-

১। গাড়ির নাম্বার প্লেট থেকে ধারণা করা যায় খুনী ক্যালিফোর্নিয়ারই কেউ।

২। বয়স ৩০ এর কাছাকাছি।

৩। পুরুষ।

৪। গায়ের রঙ সাদা।

৫। উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি-৬ ফুট।

৬। গাটাগোট্টা, ৯০-১০০ কেজি।

৭। ছোট ছোট কোঁকড়ানো চুল।

৮। চুলের রং হালকা বাদামী।

৯। মুখমণ্ডল বেশ বড়।

১০। ব্যবহৃত গাড়ি বেশ হালকা রং এর।

১১। ব্রিটিশ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

১২। নেভিতে কর্মরত ছিল বা আছে এমন একটি সম্ভাবনা রয়েছে।

১ম কিস্তির শেষ কথা

২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জোডিয়াক মুভির পোস্টার © Warner Bros. Pictures

মাত্র ১ বছরের মাঝে ৬ জন জোডিয়াকের হামলার শিকার হলো, যার চারজনকেই সে হত্যা করতে সমর্থ হয়েছিল। জোডিয়াকের ত্রাস নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় চলেছিল কমপক্ষে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত, মানে আরো ৫ বছর। এই ৫ বছরে আরো অনেকগুলো চিঠি, আরো তিনটি ক্রিপ্টোগ্রাফ জোডিয়াক পাঠিয়েছিল। জোডিয়াকের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছিল আরো অনেকে। জোডিয়াক কি শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছিল? তার পরবর্তী ক্রিপ্টোগ্রাফগুলো কি ডিকোড করা গিয়েছিল? কারা কারা সন্দেহভাজনদের তালিকায় সবচেয়ে উপরে ছিল? কেন? কার দিকে অভিযোগের তীর বেশি করে ছুটে যায়? এসব সম্বন্ধেই আমরা জানবো পরের কিস্তিগুলোতে। অপেক্ষায় থাকুন পাঠক, জোডিয়াকের পরের আক্রমণের ঘটনাগুলো জানার জন্য, তার পরের চিঠিগুলো পড়ার জন্য।

ফিচার ইমেজ- gallsource.com/zodiacrevisited.com

Related Articles