Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

অবসর সময়টা কাটান স্মার্টভাবে

প্রায়ই অবসর সময়ে বসে আমরা ভাবি,“কী করা যায়?” করার মতো নির্দিষ্ট কিছু খুঁজে না পেয়ে দেখা যায় যে, শুয়ে-বসেই কেটে যায় অবসরটা। কিন্ত এই অবসর সময়টাকে যদি স্মার্টভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে মন্দ হয় না। চলুন দেখা যাক কীভাবে কাজে লাগাতে পারেন আপনার অবসরটাকে।

১। নতুন নতুন ভাষা শিখুন

পড়াশোনা আর চাকরির সুবাদে আমাদের প্রায় সবারই কম-বেশি ইংরেজি ভাষা জানা আছে। সেই সাথে আপনার যদি আরও কয়েকটি ভাষা জানা থাকে, তাহলে বিভিন্ন সময়ে আপনার কাজে লাগতে পারে আর সেই সাথে নিজের আত্মবিশ্বাসটাও বাড়বে অনেকখানি।

সেক্ষেত্রে যে ভাষাটি শিখতে চাচ্ছেন, সে ভাষার সাবটাইটেলসহ সিনেমা দেখলে ভাষাটি অনেক সহজেই আয়ত্বে আনতে পারবেন। এছাড়া ভাষা শেখার জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ রয়েছে; যেমন- মেম্‌রাইজ (memrise.com), ডুওলিঙ্গো (duolingo.com) এবং হ্যালোটক (hellotalk.com)।

নিজের পছন্দের অথবা প্রয়োজন হতে পারে এমন নতুন নতুন ভাষা শিখুন

২। ডকুমেন্টারি দেখুন

নতুন কিছু সম্পর্কে সহজেই এবং কম সময়ে জানার জন্য ডকুমেন্টারি দেখার তুলনা নেই। কারণ কোনো কিছু দেখে শেখার বা জানার অভিজ্ঞতাটাই অন্যরকম! ধরুন, আপনি ইস্তানবুল শহর সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আপনি ডকুমেন্টারি দেখে খুব সহজেই পরিষ্কার ধারণা পেয়ে যাবেন এবং এই দেখে জানতে পারা ও শেখা থেকেই ইস্তানবুল শহর সম্পর্কে আপনার ধারণাটা একেবারে মনে গেঁথে যাবে। আপনার ল্যাপটপ, ট্যাব অথবা মোবাইলে ডাউনলোড করে রাখলে জ্যামে অযথা বসে না থেকে ডকুমেন্টারিগুলো দেখতে পারবেন এবং সময়টাকে কাজে লাগাতে পারবেন।

পছন্দের কোনো বিষয় সম্পর্কে জানতে দেখে নিতে পারেন ডকুমেন্টারি

৩। লিস্টে রাখতে পারেন অডিও বুক

বইপ্রেমীদের জন্য দারুণ একটি জিনিস হলো এই অডিও বুক। একবার ভেবে দেখুন তো, আপনি যে বইটি পছন্দ করেন, তা যদি চোখ বন্ধ করে ঘুমাতে যাবার সময় শুনে নিতে পারেন, তাহলে কেমন হয়? হ্যাঁ, আপনার এই ইচ্ছাটি বাস্তবে আসলেই সম্ভব! আর আপনার এই ইচ্ছাটি পূরণ করবে অডিও বুক! নিশ্চয় জানতে চাচ্ছেন যে, কোথায় পাবেন এই অডিও বুকগুলো? তাহলে দেখে নিন অডিও বুকের কয়েকটি সাইটের লিংক:

  • openculture.com/freeaudiobooks
  • thoughtaudio.com
  • scribl.com/info/podiobooks-now-scribl
  • learnoutloud.com/Audio-Books
  • loyalbooks.com
  • storynory.com
  • digitalbook.io

অডিও বুক সাথে থাকলে চলাফেরায়ও উপভোগ করতে পারবেন আপনার প্রিয় বইটি

৪। বিভিন্ন ধরনের ইন্সট্রুমেন্ট বাজানো শিখুন

বক্তা হিসেবে টেড টকে গবেষক আনিতা কলিন্স বলেছেন, “গান শোনার সময় আপনার মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ সাড়া দেয় ও কাজ করা শুরু করে। কিন্তু আপনি যখন কোনো ইন্সট্রুমেন্ট বাজান, তখন আপনার পুরো শরীর মস্তিষ্কের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করে

তাই আপনি আপনার পছন্দের যেকোনো ইন্সট্রুমেন্ট বাজানো শিখে ফেলতে পারেন অবসরে। এতে করে যে আপনার সময়টাই শুধু ভালো কাটবে তা-ই নয়, বরং মস্তিষ্কও কাজ করবে ভিন্নভাবে! নির্দিষ্ট কোনো ইন্সট্রুমেন্ট নয়, শিখে নিতে পারেন যেকোনো ধরনের ইন্সট্রুমেন্ট। কোথাও কোর্স না করেও বাসায় বসে ইউটিউবে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখেও শিখে নিতে পারেন আপনার প্রিয় ইন্সট্রুমেন্ট বাজানোর পদ্ধতি!

ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে বা কোর্স করে শিখে ফেলুন যেকোনো ইন্সট্রুমেন্ট বাজানো

৫। মেডিটেশন করুন

মেডিটেশন বা ধ্যান করার শুধু একটি, দুটি নয় বরং অনেক সুবিধা রয়েছে। মেডিটেশন আপনার মনোযোগ বাড়াবে, উদ্বেগ কমাবে, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করবে। আপনি আরও সচেতন হবেন এবং ভেতর থেকে আপনি একটি অন্যরকম অনুভূতি পাবেন। কাজের চাপে অনেক সময় চিন্তা ভাবনাগুলো এলোমেলো হয়ে যায় যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য মেডিটেশন আপনার জন্য ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। আপনার ঘরের খোলা জায়গায় যেখানে আলো বাতাস আছে সেখানে, কোনো একটি রুমের কর্নারে এবং যেখানে লোকের চলাফেরা কম সেই জায়গাটি মেডিটেশনের জন্য বেছে নিন। মেডিটেশনের জন্য মনোযোগ ধরে রাখা খুব জরুরী। তাই আপনার ঘরের শান্ত জায়গাটিই বেছে নিন এর জন্য!

ঘরে বসেই ইউটিউবে অথবা বিভিন্ন সাইট; যেমন- meditationoasis.com, openyourheart.ws, onlinemeditation.org/ থেকে শিখতে পারেন এবং এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পারেন।

মেডিটেশন আপনার ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়াবে

৬। পার্সোনাল ডায়েরি লিখুন

স্কুল-কলেজে থাকতে অনেকেরই ডায়েরি লেখার অভ্যাসটা থাকে। কিন্তু আস্তে আস্তে কাজের চাপে আর ব্যস্ততায় হারিয়ে যায় এই শখটি। ডায়েরি লেখার বিষয়টি আপনাকে অনেকভাবে উপকৃত করবে। নিয়মিত ডায়েরি লিখলে আপনি সেখানে ‘টু ডু লিস্ট’ লিখতে পারবেন যা পরবর্তীতে আপনার কাজের স্মৃতি হয়ে থাকবে।

বিশেষ মুহূর্তগুলো সম্পর্কে লিখে তার কিছু ছবিও সাথে রাখতে পারবেন, আপনার সাফল্য ও ব্যর্থতার কথা লিখে রাখবেন যা পরবর্তীতে আপনার সেলফ্‌ ডেভেলপমেন্ট হিসেবে কাজ করবে। আর লেখালেখির অভ্যাসটা গড়ে উঠলে আপনার লেখার চর্চা ঝালাই হবে, লেখা ও বানানের ভুল সংশোধন করতে পারবেন এবং রাইটিং স্কিলও বাড়বে। এছাড়া পার্সোনাল ডায়েরি লেখার অভ্যাসটি আপনার থেরাপি হিসেবে কাজ করবে এবং আপনার মনও হালকা হবে।

নিয়মিত পার্সোনাল ডায়েরি লেখা আপনার ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করে

৭। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন

মোটা অংকের টাকা খরচ করে জিমে না যেয়ে হাঁটার অভ্যাস করুন। এতে করে আপনি শুধু ফিটনেসই পাবেন না, বরং এর চেয়েও বেশি কিছু পাবেন। হাঁটলে আপনার মন-মেজাজ ভালো থাকবে, আপনি সৃজনশীল হবেন, ব্ল্যাড সার্কুলেশন বাড়বে, শরীর সুস্থ থাকবে এবং যৌবনটাকেও ধরে রাখতে পারবেন। এছাড়া হাঁটলে আপনার মস্তিষ্ক সচল থাকে এবং ঘুম না হওয়ার সমস্যাটাও আর থাকে না। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন বাসার আশেপাশে কোনো পার্ক থাকলে সেখানে অথবা যেখানে আপনার ভালো লাগে সেখানে হাঁটার চেষ্টা করুন।

প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস করলে আপনার শরীর ও মন মানসিকতা ভালো হবে

৮। কাছাকাছি কোথাও ঘুরে আসুন

কম-বেশি আমরা সবাই জানি যে, ঘোরাঘুরি করলে মনটা শুধু ফ্রেশই হয় না, বরং জ্ঞানও বাড়ে। কিন্তু অলসতা আমাদের এই সুন্দর অভ্যাসটি থেকে দূরে রাখে অনেক সময়েই। সম্ভব হলেই বেরিয়ে পড়ুন আর ঘুরে আসুন আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বা ঐতিহাসিক জায়গা থেকে।  বাইরে কোথাও ঘুরে আসলে আপনার একঘেয়েমি কাটবে এবং জ্ঞানও বাড়বে

৯। ক্রাফটিং শিখুন এবং করুন

ক্রাফটিং শিখে আপনি নিজেই নিজের পছন্দের ডিজাইন অনুযায়ী পেন্সিল ব্যাগ, পেন স্ট্যান্ড, ফুলদানি সহ আরও অনেক কিছু বানাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ইউটিউবে বিভিন্ন চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করতে পারেন যেখানে নিয়মিত ক্রাফটিং-এর টিউটোরিয়াল আপলোড করা হয় অথবা যে বিষয়ে শিখতে চাচ্ছেন তা গুগলে সার্চ করলে হাতে-কলমে শেখার মতো অনেক লিংক পাবেন। নিজের পছন্দমতো জিনিস তৈরি করে ব্যবহার করার মজাই আলাদা

প্রিয় কয়েকটি জায়গার লিস্ট তৈরি করে রাখতে পারেন

১০। বাগান করুন

আপনার বাসার ছাদে অথবা ঘরের ভেতর ছোট ছোট টবে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগাতে পারেন। জানালার পাটাতনে, ড্রেসিং টেবিলে অথবা ঘরের বিভিন্ন কর্নারে ছোট ছোট টবে পাতাবাহার, বনসাই, মানিপ্ল্যান্ট ছাড়াও বিভিন্ন রকমের গাছ রাখতে পারেন। চারপাশে গাছপালা থাকলে আপনার মন যে শুধু প্রফুল্ল হবে তা-ই নয়, বরং এতে করে আপনি পরিবেশের অনেকটা কাছাকাছিও চলে যাবেন।

বাসায় বাগান করলে আপনার মনটাও ভালো লাগবে আর পরিবেশটাও সুন্দর থাকবে

এই সবকিছুর বাইরেও আপনার পছন্দসই যেকোনো কাজ আপনি করতে পারেন আপনার অবসরে। তাহলে আজ থেকে অবসর সময়টা আর অযথা নষ্ট না করে স্মার্টভাবে কাজে লাগানো শুরু করে দিন। বেছে নিন এবং চর্চা করুন আপনার পছন্দের বিষয়টি, হয়ে উঠুন আরো স্মার্ট!

তথ্যসূত্র

১। lingualift.com/blog/best-language-learning-apps/

২। digitaltrends.com/web/best-websites-for-free-audiobooks/2/

৩। bodyandsoul.com.au/mind-body/wellbeing/top-8-meditation-websites/news-story/ca9647579bee3f2a8d32a788ef1cfb42

৪। rd.com/health/fitness/walking-benefits-15-minutes/

Related Articles