Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পার্থ প্রতিম মজুমদার: বিশ্বের বুকে নীরবে যিনি উজ্জ্বল করে চলেছেন বাংলাদেশের নাম!

নিঃশব্দ নিয়ে পৃথিবীর জ্ঞানী ব্যক্তিগণ বিভিন্ন উক্তি দিয়ে গেছেন। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট মার্টিন লুথার কিং থেকে শুরু করে গণিতবিদ পিথাগোরাস- সকলেই নিঃশব্দের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন এবং জীবনযাপনে এই নিঃশব্দের বিভিন্ন ব্যাখ্যা-ব্যবচ্ছেদ করার চেষ্টা করেছেন।

বিখ্যাত চীনা দার্শনিক লাও যু বলে গেছেন, সকল মহৎ শক্তির মুখ্য উৎস হচ্ছে নীরবতা।

পিথাগোরাস বলেছিলেন, অর্থহীন কথা বা শব্দের চাইতে নীরবতা ঢের ভাল।

নীরবতাও যে এত গুরুত্ব বহন করতে পারে আর অর্থবহ হয়ে উঠতে পারে, তার আরেক দৃষ্টান্ত মাইম। মুখে কোনো শব্দ না করে শুধুমাত্র দেহের ভাষায় যে শিল্পগুণ রয়েছে, তা মূকাভিনয়ের মাধ্যমেই উৎসারিত হয়ে আসছে যুগের পর যুগ। মূকাভিনয় শব্দটিকে ভাঙলে পাওয়া যায় মূক আর অভিনয়। অর্থাৎ নির্বাক অভিনয়। আর এই নির্বাক অভিনয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত একজন মূকাভিনেতা বাংলাদেশের পার্থ প্রতিম মজুমদার। গত চার দশকে যিনি তাঁর মূকাভিনয়, তথা নিঃশব্দ অভিনয়ের প্রতিভাকে পুঁজি করে চষে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত। কঠোর শ্রম আর অধ্যবসায় তাঁকে নিয়ে গেছে খ্যাতি এবং কিংবদন্তী মাইম আর্টিস্টের তালিকায়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি স্ত্রী ঝুমু মজুমদার এবং দুই ছেলে-মেয়ে দোয়েল এবং সুপ্রতিম মজুমদার সহ ফ্রান্সে বসবাস করেন। 

partha pratim family
স্ত্রী (ডান থেকে ২য়) এবং দুই সন্তানের সাথে পার্থ প্রতিম মজুমদার (সর্ব বামে); Source: পার্থ প্রতিম মজুমদারের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেয়া

দুরন্ত শৈশব

জগদ্বিখ্যাত এই মূকাভিনেতা নিঃশব্দে দৈহিক ভাষায় নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দর্শককে আনন্দ দিয়ে থাকলেও, শৈশবে তাঁর দুরন্তপনার কোনো কমতি ছিল না। ১৯৫৪ সালের ১৮ জানুয়ারি পাবনার কালাচাঁদপাড়ায় তখনকার ফটোসাংবাদিক হিমাংশু কুমার বিশ্বাস এবং সুশ্রীকা বিশ্বাস দম্পতির ঘরে জন্ম নেন তিনি। নাম রাখা হয়েছিল প্রেমাংশু কুমার বিশ্বাস, আর ডাক নাম ছিল ভীম! মহাভারতের মহা পরাক্রমশালী চরিত্র ভীমের নামে রাখা হয়েছিল তাঁর ডাকনাম। ফটোসাংবাদিক এবং বনমালী থিয়েটারের সদস্য বাবার ক্যামেরা-স্টুডিও-থিয়েটার, ভজন গায়িকা মায়ের হারমোনিয়ামের সাথে তাঁর বেড়ে ওঠা।

সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে জন্ম নেয়ায় ছোটবেলা থেকেই তিনি সংস্কৃতিমনা হয়ে বেড়ে উঠেছিলেন। প্রথম স্কুলে যাওয়ার ঘটনাটাও মজার। তখনকার সময়ে স্কুলে ভর্তি হলে স্কুল থেকে গুঁড়ো দুধ বা পাউডার মিল্কের একটি কৌটো উপহার পাওয়া যেত। এই গুঁড়ো দুধের লোভেই বড় ভাইয়ের পেছন পেছন পাবনা জুবিলি স্কুলে তাঁর প্রথম ভর্তি হওয়া।

partha pratim majumder childhood
পার্থ প্রতিম মজুমদারের ছোটবেলা। Source: fb/mimePartha

বাড়িতে চৈত্র সংক্রান্তি অনুষ্ঠানে হাজরা উপস্থাপন করা হতো, সেখান থেকেই অঙ্গভঙ্গি আর ইশারায় ভাবের আদান-প্রদানের প্রভাব পড়ে তাঁর উপর। বাড়িতে ভিক্ষুক এলে ভিক্ষুকের মতো অঙ্গভঙ্গি করে ভিক্ষুকের পিছু নিতেন। আর রাতে মশারির স্ট্যান্ডে মায়ের শাড়ি বেঁধে মঞ্চ তৈরি করে চলতো থিয়েটারগিরি। হাজরায় বা বনমালী থিয়েটারে যেসব নাটক বা পারফর্মেন্স দেখাতো, সেগুলো বাসায় এসে অনুকরণ করে দেখাতেন, এবং তাঁর অনুকরণ করার ক্ষমতা ছিল প্রবল।

ডাক্তার হতে কলকাতায় গিয়ে হয়ে গেলেন মূকাভিনেতা:

পাবনার জুবিলি স্কুলে পড়াশোনা, থিয়েটার খেলা আর মাঠে ঘাটে দুরন্তপনার দিনগুলো হঠাতই বদলে গেল। বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলেকে কলকাতায় পড়াশোনা করাবেন। পার্থ প্রতিম মজুমদারের কাকা সুধাংশু কুমার বিশ্বাস কলকাতায় থাকতেন। প্রাথমিক স্কুলের গন্ডি পার হবার পর তাই বাবার ইচ্ছেমতো কলকাতায় পড়াশোনা করে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবার লক্ষ্যে তার সাথে চলে গেলেন কলকাতায়।

কলকাতার পূর্ণ দাশ রোডের কাকার বাড়িতে উঠলেন তিনি। ড. শীতলপ্রসাদ ঘোষ উচ্চবিদ্যালয়ে ক্লাস সিক্সে ভর্তি করিয়ে দেয়া হলো তাঁকে। সেখানে থাকাকালীন একদিন পাশের বাড়ির এক লোককে তিনি দেখে বিস্মিত হয়ে গেলেন। লোকটা কোনো কথা না বলে অদ্ভুত নানান অঙ্গভঙ্গি করে হাঁটছেন, তা-ও আবার একই জায়গায়! হাঁটার ফলে তাঁর অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। আবার মুখ আঁকাবাঁকা করে কিম্ভুতকমাকার মুখভঙ্গি করছেন! এসব দেখে কিশোর পার্থ একদিন তাঁর কাকীকে জিজ্ঞাস করলেন, পাশের বাড়ির ঐ লোকটি পাগল কি না! এই কথা শুনে তাঁর কাকী হেসেই খুন! তারপর কাকীর মুখেই শুনলেন সেই অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি করে হাঁটা মানুষটির নাম যোগেশ দত্ত, বিখ্যাত মাইম আর্টিস্ট। মনের ভাব প্রকাশে তাঁর কোনো কথা বলা লাগে না, অঙ্গভঙ্গিই যথেষ্ট। এটিই একধরনের শিল্প।

jogesh dutta
পার্থ প্রতিম মজুমদারের মাইমের হাতেখড়ি যার কাছে- যোগেশ দত্ত; Source: Kolkatanews

এরপর থেকে তাঁকে মাইমের প্রতি ভাললাগা শুরু এবং যোগেশ দত্তের শিষ্যত্ব গ্রহণের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু যোগেশ দত্ত কিছুতেই তাঁকে মাইম শেখাতে রাজি হন না! তিনি তাঁকে বলেছিলেন ডাক্তার হতে। ডাক্তার হলে অনেক টাকা-পয়সা আয় করা যায়। কিন্তু তাঁর মনে মাইমের প্রতি যে ঝোঁক, তা রয়েই গেল। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নাছোড়বান্দা তিনি প্রতিদিন যোগেশ দত্তের সাথে দেখা করতেন। তাঁর একাগ্রতা দেখে শেষে একদিন জোগেশ দত্তই তাঁকে একস্থানে দাঁড়িয়ে হাঁটার কৌশল শিখিয়ে দেন। আর এভাবেই মূকাভিনয়ে পার্থ প্রতিম মজুমদারের হাতেখড়ি।

প্রেমাংশু কুমার থেকে পার্থ প্রতিম মজুমদার হবার গল্প

কলকাতায় কাকার বাসায় থেকে পড়াশোনা আর যোগেশ দত্তের কাছে মাইম শিখে বেশ ভালোই কাটছিল সময়। এমন সময় শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে কলকাতায় তখন তারা শরণার্থী। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ফিরলেন নিজ মাতৃভূমিতে। ততদিনে যোগেশ দত্তের কাছ থেকে মূকাভিনয়ের পাঠ নিয়ে ফেলেছেন বেশ অনেকটাই। মিউজিক কলেজের প্রতিষ্ঠাতা বারীন মজুমদার ছিলেন পার্থ প্রতিম মজুমদারের বাবার বন্ধু এবং দুঃসম্পর্কের আত্মীয়। বারীন মজুদারের মেয়ে ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে মারা গিয়েছিল বলে তিনি সুধাংশু কুমার বিশ্বাসের কাছে বলেছিলেন, প্রেমাংশুকে আমার কাছে দে, পেলে পুষে মানুষ করি। সেই থেকে প্রেমাংশু কুমার বিশ্বাস চলে গেলেন বারীন মজুমদারের কাছে। তাঁর নতুন নাম দেয়া হলো পার্থ প্রতিম মজুমদার। ভর্তি হলেন সেগুনবাগিচার মিউজিক কলেজে। নতুন নাম, গান আর মূকাভিনয়কে সঙ্গী করে  শুরু হলো তাঁর নতুন জীবন।

partha pratim as a singer
আশির দশকে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেছেন পার্থ প্রতিম মজুমদার। Source: fb/mimePartha

বিটিভি থেকে ডাক

মিউজিক কলেজে গান শেখার পাশাপাশি প্রচুর সময় দিতেন মূকাভিনয় শেখার জন্য। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘন্টা অনুশীলন করতেন। ১৯৭৫ সালে মূকাভিনয়ের অনুষ্ঠান করার জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ডাক পান। তৎকালীন বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রযোজক আলিমুজ্জামান খানের প্রস্তাবে তিনি বিটিভির রঙধনু অনুষ্ঠানে মূকাভিনয় উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ চিনলো নতুন এক শিল্প এবং শিল্পীকে। বিশ্ব মূকাভিনয়ের উজ্জ্বল এক নক্ষত্র পার্থ প্রতিম মজুমদার দেশবাসীকে দেখালেন মূকাভিনয়।

partha pratim stage perform
স্টেজে মূকাভিনয় পারফর্ম করছেন পার্থ প্রতিম মজুমদার। Source: fb/mimepartha

ফ্রান্স গমন এবং কিংবদন্তী মূকাভিনেতা হয়ে ওঠার কাহিনী

এর পরের পুরোটাই একজন বিশ্বখ্যাত মাইম আর্টিস্ট হয়ে ওঠার গল্প। বাংলাদেশ টেলিভশনে অনুষ্ঠান করার পর ঢাকাস্থ আলিয়স ফ্রঁসেজ থেকে ডাক এলো। ফ্রান্সে গিয়ে মূকাভিনয় করার প্রস্তাব দিলো তারা। কিন্তু মাঝে বিপত্তি- বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স জোগাড় হচ্ছিলো না কিছুতেই। অবশেষে আলী জাকের এবং আতাউর রহমানের সহযোগিতায় তা পাওয়া গেল। ১৯৮১ সালে পাড়ি জমালেন ফ্রান্সে। ফ্রান্সে গিয়ে তিনি বিশ্বখ্যাত মাইম আর্টিস্ট মার্শাল মারচুর গুরু এতিয়েন দ্যু ক্রর কাছে মাইমের তালিম নেয়া শুরু করেন। এতিয়েন দ্যুর কাছে তিনি কর্পোরাল মাইমের বিদ্যা গ্রহণ করেছিলেন।

partha and marshal
গুরু মার্শাল মারচুর সাথে পার্থ প্রতিম মজুমদার; Source: fb/mimePartha

ফ্রান্সের আরেক কিংবদন্তী মূকাভিনেতা মার্শাল মারচু ছিলেন বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় এবং শ্রেষ্ঠ মূকাভিনেতা। পৃথিবীজোড়া মানুষ তাঁকে চেনে। বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩০০ দিন মাইম উপস্থাপনের রেকর্ড রয়েছে তাঁর। পার্থ প্রতিম মজুমদার মার্শাল মারচুর কাছেও মূকাভিনয়ের শিক্ষা নিয়েছিলেন। মারচুর কাছে মূলত মাইমের পারফেকশন শিখেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে মার্শাল মারচুর দলেই তাঁর জায়গা হয়েছিল।

মারচুর দলের হয়ে প্রচুর ওরিয়েন্টাল মাইম করেছেন তিনি। অপরদিকে মারচুর গুরু এতিয়েন দ্যু ক্র পার্থ প্রতিম মজুমদারকে কর্পোরাল মাইমের শিক্ষা দেন। এতিয়েন এবং পার্থ প্রতিম দুজন মিলে মাইমো ড্রামার প্রচলন করেন। মাইম অর্থ ছোট গল্প, আর মাইমো ড্রামা (মাইম-উড-ড্রামা) হচ্ছে উপন্যাসের মতো। এতিয়েন দু এবং তিনি মিলে নানান দেশে ঘুরে ঘুরে মাইম উড ড্রামার প্রচলন করেছিলেন। মার্শাল মারচুর দলের সাথে তিনি যেখানেই শো করতে গিয়েছেন না কেন, প্রচারপত্রে দলের প্রতিটি সদস্যের পাশে তাঁর দেশের নাম লেখা থাকে। অর্থাৎ পার্থ প্রতিম মজুমদারের নামের পাশে লেখা থাকে বাংলাদেশ। এভাবেই বিশ্ববাসী জেনেছে মাইমের বিচারে শ্রেষ্ঠত্বের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় মাইম আর্টিস্ট একজন বাংলাদেশী। আর এভাবেই বিশ্বব্যাপী মাইমের জগতে ছড়িয়ে পড়েছে পার্থ প্রতিম মজুমদারের নাম।

partha pratim in bd
অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মুকাভিনয় করছেন পার্থ প্রতিম মজুমদার; Source: The Daily Star

ফরাসি এবং হলিউডে স্পিলবার্গের সিনেমায় পার্থ প্রতিম মজুমদার

ফরাসি টেলিভশন এবং সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন পার্থ প্রতিম মজুমদার। ‘ওয়ান ডলার কারি, জেনিস অ্যান্ড জন, ‘ফার্মাসি দ্য গার্ড, ‘দ্য মর দ্য বেলভিল, ‘ভাই ভাই নামক ফরাসী সিনেমা সহ সুইডেনের ‘হান্ড্রেড স্টেপ অব জার্নি’ ও নরওয়ের ‘ওয়ান থাউজেন্ড ওয়ান’ সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে স্টিভেন স্পিলবার্গ প্রযোজিত ‘দ্য হান্ড্রেড ফুট জার্নি’ নামক একটি হলিউড সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। বিজ্ঞাপনেও রয়েছে তাঁর পদচারণা। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, নাইকি, আইবিএম ও ম্যাকডোনাল্ডের মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানির পণ্যের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েও কাজ করছেন তিনি। কাজ করেছেন দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পনি গ্রামীনফোনের বিজ্ঞাপনে।

partha with film director
দ্য হান্ড্রেড ফুট জার্নি সিনেমার পরিচালক হ্যালস্ট্রমের সাথে পার্থ প্রতিম মজুমদার Source: fb/mimePartha

যত অর্জন এবং স্বীকৃতি 

এক মূকাভিনয়কে কেন্দ্র করে পার্থ প্রতিম মজুমদারের ঝুলিতে যত পুরষ্কার এবং সম্মাননা যোগ হয়েছে, তাতে করে তাঁকে আন্তর্জাতিকভাবে জীবন্ত কিংবদন্তী বলা যেতেই পারে। বাংলাদেশের একুশে পদক (২০১০) থেকে শুরু করে ফ্রান্সের নাইট উপাধি খ্যাত শেভলিয়র অ্যাওয়ার্ড জয় করে (২০১১) ফ্রান্সের সর্বোচ্চ খেতাব যুক্ত হয়েছে তাঁর মুকুটে। এর আগে ফ্রান্সের জাতীয় থিয়েটারের মলিয়ের এওয়ার্ড (১০০৯) অর্জন করেছেন তিনি। কলকাতার যোগেশ মাইম একাডেমি থেকে পেয়েছেন মাস্টার অফ মাইম উপাধি। এথেন্স, নিউ ইয়র্ক, ডেনমার্ক, সুইডেনসহ সারা বিশ্বে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে একক মূকাভিনেতা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করেছেন ১৯৮৮ সালে।

french knight partha
ফ্রেঞ্চ নাইট উপাধি হিসেবে বিখ্যাত লা মসিয়ের অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ফ্রেঞ্চ নাইটের সম্মাননা নিয়ে পার্থ প্রতিম মজুমদার (পাঞ্জাবি পরিহিত); Source: fb/mimePartha

প্রবাসে থেকেও মাতৃভূমির প্রতি টান কমেনি

দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ফ্রান্সে প্রবাসী হিসেবে জীবনযাপন এবং মাইমের চর্চা করছেন পার্থ প্রতিম মজুমদার। কিন্তু সুদূর প্রবাস থেকেও তিনি মাতৃভূমির প্রতি টান অনুভব করেন এবং প্রায়ই দেশে ছুটে আসেন। ১৯৮১ সালে ফ্রান্সে যাওয়ার আগে বাংলাদেশে তাঁর হাত ধরেই শুরু হয়েছিল মাইমের চর্চা। এখনো তাঁর হাতেই বেড়ে উঠছে মাইমের সম্ভাবনা এবং ব্যাপ্তি। ইউরোপের বিভিন্ন মাইম স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি ঢাকায় ও সারা দেশে মাইমের ওয়ার্কশপ করে থাকেন। মাইমের সাথে দেশীয় নৃত্য মুদ্রা ব্যবহার করে কন্টিনেন্টাল মাইমের চর্চাও তাঁর মাধ্যমেই শুরু। তিনি বাংলাদেশে মাইম ইন্সটিটিউট শুরু করার স্বপ্ন দেখেন

তিনি মনে করেন, বর্তমানে বাংলাদেশে চার দেয়ালের মাঝে ধুঁকতে থাকা শিশু-কিশোরদের চেতনা বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে মাইম। আর সেজন্যই তিনি বাংলদেশে মাইম ইন্সটিটিউট গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন,

যা কিছু শিখেছি তা যেন বিলিয়ে যেতে পারি

Related Articles