Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

সঞ্জীব চৌধুরী: ‘দলছুট’ এক গায়ক

বাংলাদেশের সঙ্গীতের ইতিহাসে ‘দলছুট’ এক গায়ক সঞ্জীব চৌধুরী। সঞ্জীব চৌধুরীর কথা বলতেই গেলে চলে আসে আরেকটি নাম- বাপ্পা মজুমদার। নব্বইয়ের শুরুর দিকে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে বেশ সময় কাটাতেন সঞ্জীব চৌধুরী। এটি তার জন্য আড্ডা ও গানের ভালো একটি জায়গা ছিলো। সেই দিনগুলোতেই তখনকার প্রখ্যাত গায়ক হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন বাপ্পা মজুমদারের। দু’জনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের ব্যান্ড সংস্কৃতি পেয়েছে ‘দলছুট’কে।

১৯৯৫ সালে ‘দলছুট’ ব্যান্ডটি গঠন করার আগেই বাপ্পা মজুমদার ও সঞ্জীব চৌধুরী একসাথে কাজ করেছিলেন। দলের বাইরেও তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিলো। দলছুটের প্রথম অ্যালবাম ছিলো ‘আহ’। এটি ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত হয়। এরপর ‘হৃদয়পুর’, ‘স্বপ্নবাজি’, ‘আকাশচুরি’, ‘জ্যোছনা বিহার’, ‘টুকরো কথা’, ‘আয় আমন্ত্রণ’ নামে আরো কয়েকটি অ্যালবাম বেরিয়েছে এই ব্যান্ড থেকে। এর মধ্যে ‘স্বপ্নবাজি’ ছিলো সঞ্জীব চৌধুরীর একক অ্যালবাম। ২০০৭ সালে প্রকাশিত ‘টুকরো কথা’ অ্যালবামটি সঞ্জীবের মৃত্যুর পর তার প্রতি শ্রদ্ধার্থে প্রকাশ পায়। এতে তার লেখা কবিতাগুলোর সংকলন ছিল। এছাড়া ‘আয় আমন্ত্রণ’ হচ্ছে ব্যান্ডটি ষষ্ঠ ও সর্বশেষ অ্যালবাম। ২০১০ সালের ২৫শে ডিসেম্বর সঞ্জীব চৌধুরীর ৪৭তম জন্মদিনে ‘সঞ্জীব উৎসব’ পালনের মধ্য দিয়ে এই অ্যালবামটি প্রকাশ পায়। এই অ্যালবামের ‘নতজানু’ নামে সর্বশেষ গানটি সঞ্জীব চৌধুরীর নিজের লেখা।

সঞ্জীব চৌধুরীর মধ্যে কাব্যপ্রতিভাও ফুটে উঠতো প্রায়ই। নিজেও কবিতা লিখতেন আবার আবৃত্তিতেও বেশ স্বচ্ছন্দ ছিলেন তিনি। শুধু কবিতাই নয়, বেশ কিছু ছোটগল্পও লিখেছিলেন তিনি। তার লেখা গল্পগ্রন্থ ‘রাশ প্রিন্ট’ আশির দশকে বাংলা একাডেমী কর্তৃক সেরা গল্পগ্রন্থ হিসেবে নির্বাচিত হয়। আহমদ ছফাও সঞ্জীব চৌধুরীর লেখনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। এমনিতে নাটকের স্ক্রিপ্টও লিখতেন সঞ্জীব চৌধুরী। এক্ষেত্রে যেন তিনি একজন সব্যসাচীই ছিলেন। ‘সুখের লাগিয়া’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ের অভিজ্ঞতাও জমা পড়ে তার অর্জনের ঝুলিতে।

এক সাম্যবাদী সমাজের আশায় তিনি ছিলেন উন্মুখ; source: Daily sun

১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে জন্ম তার, নয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি সপ্তম। পিতা গোপাল চৌধুরী এবং মাতা প্রভাষিণী চৌধুরী। তবে তাদের মূল বাড়ি সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার দশঘর গ্রামে। সেখানকার জমিদার শরৎ রায় চৌধুরী ছিলেন তার পিতামহ। ছাত্রজীবনে বেশ মেধাবী ছিলেন তিনি। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধার পরিচয় দিয়ে পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে কিছু কারণবশত তিনি সেই বিভাগ ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র ছিলেন সঞ্জীব চৌধুরী। সাংবাদিকতায় পড়ার দরুণ পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকে গ্রহণ করেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করে আশির দশকের শুরুর দিকে তিনি পেশাগতভাবে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হন। প্রথমেই দৈনিক উত্তরণে কাজ করা শুরু করেন তিনি। এরপর ‘ভোরের কাগজ’, ‘আজকের কাগজ’, ‘যায় যায় দিন’ প্রভৃতি দৈনিক পত্রিকায়ও কাজ করেছেন সঞ্জীব চৌধুরী। দৈনিক সংবাদপত্রগুলোতে ফিচার বিভাগ চালু করার ক্ষেত্রে সঞ্জীব চৌধুরী বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নব্বইয়ের দশকের আগে সকল সংবাদপত্র ভর্তি ছিলো শুধু সংবাদ আর সংবাদ। ভোরের কাগজে কাজ করার সময় সঞ্জীব চৌধুরী প্রথমবার ফিচার লেখা শুরু করেন। এবং তার এই পদক্ষেপে সংবাদপত্রের কাটতি নাটকীয়ভাবে বেড়ে যেতে থাকে।  ১৯৮৩ সালে একুশে বইমেলায় তিনি ‘মৈনাক’ নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন।

“আগুনের কথা বন্ধুকে বলি, দু’হাতে আগুন তারও…
কার মালা থেকে খসে পড়া ফুল, রক্তের চেয়ে গাঢ়?”

প্রেমের সাথে বিপ্লবের মেলবন্ধন সমরেশের কালবেলায় ঘটে, ঘটে সঞ্জীবের গানেও। ডানাভাঙা একটি শালিক তাই হৃদয়ের দাবি রেখেই যায়, গেয়েই যায় গানে গানে তার হাহাকার।

‘দলছুট’ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও গায়ক; source: youtube

ফরহাদ মজহারের কবিতা থেকে করা গানে সঞ্জীব চৌধুরীর কন্ঠের মোহময়তা আমাদের উপহার দিয়েছে এক ব্যর্থ গভীর প্রেমের গান, “এই নষ্ট শহরে… নাম না জানা যেকোনো মাস্তান”! এছাড়াও টোকন ঠাকুর, সাজ্জাদ শরিফ, জাফর আহমেদ রাশেদ ও কামরুজ্জামান কামুর কবিতাতেও সুরারোপ করে গান গেয়েছেন সঞ্জীব চৌধুরী। কবিতাপ্রেমী এই গায়ক জানতেন কী করে প্রিয় কবিতাগুলোকে রূপ দেয়া যায় প্রিয় গানে। তার গানের বেশিরভাগই ছিলো নিজের কবিতা থেকে করা। ২০১০ সালের একুশে বইমেলায় মোট ৪৫টি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘সঞ্জীব চৌধুরীর গানের কবিতা’।

সুগভীর পর্যবেক্ষণ থেকে তিনি তৈরি করতেন একেকটি গান। ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট দিনাজপুরে ইয়াসমিন নামে এক মেয়েকে একদল পুলিশ দ্বারা ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। তার স্মৃতিতে সঞ্জীব গেয়েছিলেন ‘আহ… ইয়াসমিন’ গানটি। এই গানের মাধ্যমে সঠিক বিচারের পক্ষে জনমনে জেগে ওঠে সচেতনতা। ‘আন্তর্জাতিক ভিক্ষা সংগীত’ এবং ‘চল বুবাইজান’- এগুলো তার করা প্যারোডি। এর মধ্য দিয়েও তিনি সমাজে মানুষের জন্য প্রেরণ করেছেন কিছু শক্তিশালী বার্তা।

বাপ্পা মজুমদারের সাথে ছিলো তার অন্যরকম এক হৃদ্যতা; source: saavn.com

ছাত্রাবস্থায় এবং পরবর্তীকালেও সঞ্জীব চৌধুরীর রাজনৈতিক বোধ অনেক গভীর ছিলো। স্কুলে থাকাকালীনই তিনি রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং এই সংযুক্তি আরো প্রবল হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন এবং তিনি এর সাংস্কৃতিক সম্পাদকও নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে তিনি একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক সংগঠনও গড়ে তোলেন। হাস্যোজ্জ্বল এই মানুষটির চিন্তাভাবনার গভীর‍তা ছিল, ছিল সবার সাথে একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রবণতা। খুব সহজেই মিশে যেতে পারতেন মানুষের সঙ্গে। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তার কলম ছুটে চলেছে তীক্ষ্ণ লেখনীতে, রাজপথ বহুবার আলোড়িত হয়েছে তার কন্ঠের কবিতা ও বক্তৃতায়।

অনন্য প্রতিভা ছিলো তার, গান লেখার এবং গাওয়ার। নব্বইয়ের হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। তাৎক্ষণিক গান লেখার পর তাতে তখনই সুর বসিয়ে তিনি রাজপথ কাঁপাতেন স্বৈরাচার পতনের গানে গানে। তার রাজনৈতিক সচেতনতা ও কন্ঠের মহিমা- এ দুয়ে মিলে যেন আন্দোলনের ভাষায় কথা বলতো সমন্বিত সুরে। ক্লান্তি তাকে থামায়নি সেদিন, শ্রান্তি তাকে করতে পারেনি কাবু। সুরের ঝঙ্কারে মেতে উঠেছেন ছাত্রবিপ্লবী এক গায়ক তরুণ সঞ্জীব চৌধুরী।

পেশার তাগিদে এবং নেশার প্রেষণায় তিনি বহু কাজই করেছেন, কিন্তু কখনোই সমঝোতা করেননি নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে। তিনি বিশ্বাস করতেন সাম্যবাদে, একদিন সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠিত হবে এই সমাজে- এ আশা ছিল তার। মানবতার ভোগান্তির কারণ হিসেবে বিদ্যমান সকল সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও ঔপনিবেশিকতাবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে কুন্ঠা বোধ করেননি তিনি।

শ্রেণীসচেতন এই সমাজে সঞ্জীব চৌধুরী এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি এক নিমেষেই নিজেকে শ্রেণীচ্যুত করে ফেলতে পারতেন। তিনি সব শ্রেণীর মানুষের সাথে কথা বলতে পারতেন, মিশতে পারতেন তাদের মতো করে। জমিদার বংশের ছেলে হয়েও তার মধ্যে ভুলেও কোনোদিন ফুটে ওঠেনি উঁচুশ্রেণী সম্পর্কে অনুকম্পা।

চলে যাবার আগেই যেন ফিরে না আসার প্রতিজ্ঞা! source: youtube

বাংলাদেশের লোকসংগীত, সুফীবাদ ও সুফী গানের প্রতি তার ছিলো এক অন্যরকম টান। তাদের যে সুরসাধনার জায়গা, সেটিকে তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। সাধনার সে স্তরে পৌঁছুতে হলে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে বলে তিনি মনে করতেন। সিলেটের মরমী গায়ক হাসন রাজার গান ছিলো সঞ্জীবের খুব প্রিয়। বাউল শাহ আবদুল করিমের ‘গাড়ি চলে না’ গানটি তার অনুমতি নিয়ে সঞ্জীব গেয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকেই সংগীত অনুরাগী ছিলেন তিনি। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের উভয় সংগীতের সাথেই ছিলো তার পরিচিতি। তার প্রিয় গায়কের তালিকায় ছিলেন বব ডিলান, পিংক ফ্লয়েড, অ্যাল স্টুয়ার্ট প্রমুখ। মরক্কো ও স্পেনের সংগীতও বাদ যায়নি তার তালিকা থেকে।

‘আমি তোমাকেই বলে দেবো’, ‘সাদা ময়লা রঙ্গিলা পালে’, ‘হাতের উপর হাতের পরশ’, ‘চোখটা এত পোড়ায় কেন’, ‘বায়োস্কোপ’, ‘তোমার ভাঁজ খোলো আনন্দ দেখাও’, ‘গাড়ি চলে না’, ‘নৌকা ভ্রমণ’, ‘হৃদয়ের দাবি’, ‘কোন মেস্তিরি বানাইয়াছে নাও’, ‘আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল চাঁদ’ সহ আরো বহু গান আজ জনপ্রিয় সঞ্জীব চৌধুরীর যাদুকরী কন্ঠের জন্য।

সঞ্জীবের গানে গানে ভেসে উঠতো এক স্বপ্নসন্ধানের অনুভূতি। তিনি স্বপ্নের পাখি ধরবার এক অভিলাষ ব্যক্ত করতেন এভাবেই

“আমি ঘুরিয়া ফিরিয়া সন্ধান করিয়া,
স্বপ্নের অই পাখি ধরতে চাই,
আমার স্বপ্নেরই কথা বলতে চাই
আমার অন্তরের কথা বলতে চাই”

সোডিয়াম বাতির নিচে মাঝরাতে গীটার হাতে কোনো তরুণ হয়তো হঠাৎ গেয়ে ওঠে, “আমি তোমাকেই বলে দেবো…আমি তোমাকেই বলে দেবো সেই ভুলে ভরা গল্প, কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়/ ছুঁয়ে কান্নার রং, ছুঁয়ে জ্যোছনার ছায়া”। প্রথম প্রেমের স্মৃতি ভুলতে চেয়েও মনে পড়ে যায় বায়োস্কোপের নেশা, সুরে সুরে মদিরতা বাড়ে, “তোমার বাড়ির রঙের মেলায় দেখেছিলাম বায়োস্কোপ, সেই ভাবনায় বয়স আমার বাড়ে না!”

একজন মানুষ তার নিজস্ব গন্ডি নিজে তৈরি করে। সঞ্জীব চৌধুরী তার সে গন্ডিকে বারবার ছাড়িয়ে গিয়েছেন। সাংবাদিক থেকে সহ-সম্পাদক, গীতিকার থেকে গায়ক, কাব্য থেকে গল্প, গল্প থেকে নাটক। অতঃপর রাজপথে বিপ্লব। যত দিক দিয়ে পেরেছেন তিনি শুধু কাজ করে গেছেন। সত্যিকার কর্মীব্যক্তি ছিলেন সঞ্জীব চৌধুরী। অনেকের কাছেই ৪৩ বছর বয়সটা খুব কম মনে হবে, কিন্তু সেই যে কথাটি- “মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়”, সঞ্জীব চৌধুরীর জন্য অনেক বেশি মানানসই। বাংলাদেশের বিপ্লবী তরুণসমাজের কণ্ঠে আজও বেঁচে আছেন তিনি, দলছুটের দলনেতা হয়ে আজও বেঁচে আছেন তিনি। সঞ্জীব চৌধুরী তার মেয়ের নাম দিয়েছিলেন কিংবদন্তী। একজন কিংবদন্তীর পিতা হয়ে আজও রয়ে গেছেন তিনি।

সপরিবারে সঞ্জীব চৌধুরী; source: Daily sun

২০০৭ সালের ১৮ নভেম্বর রাত ১২.১০ মিনিটে (১৯ নভেম্বর ধরা হয়) অ্যাপোলো হাসপাতালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যান সঞ্জীব চৌধুরী। তখন তার বয়স হয়েছিলো ৪৩ বছর। মৃত্যুর পর তার স্ত্রী আলেমা নাসরীন শিল্পী ও কন্যাসন্তান কিংবদন্তীর কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। তিনি সবসময়ই চাইতেন মানবকল্যাণে কাজে লাগতে, সংস্কারবোধের উপরে উঠে সঞ্জীব চৌধুরী একজন মানুষ হবার আশা রাখতেন এবং মানবতারই গান গাইতেন তার গীটারের তারে তারে। মৃত্যুর পরও বিজ্ঞান তথা চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রতি রেখে গেলেন শেষ অবদান- তার দেহটি। আজও ঢাকা মেডিকেল কলেজে তার কঙ্কালটি চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়ুয়া ছাত্রদের পড়ার কাজে লাগছে। কোনো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নয়, নয় কোনো শেষ সমাধি। তিনি বেছে নিয়েছিলেন মানবতার সোপানে তার দেহ ও প্রাণকে সমর্পণ করতে, এবং তা-ই করলেন। সঞ্জীব চৌধুরীর স্মৃতিতে তার প্রিয়জন, শ্রোতা ও অনুরাগীদের চোখ সমুদ্রের স্বাদ পায়,

চোখটা এতো পোড়ায় কেন…
ও পোড়া চোখ, সমুদ্রে যাও
সমুদ্র কি তোমার ছেলে
আদর দিয়ে চোখে মাখাও….?

ফিচার ইমেজ- youtube.com

Related Articles