Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ম্যাস ম্যাডনেসঃ পাগলামো নাকি অসুস্থতা?

সাল ২০০৬, ইন্ডিয়ার মুম্বাইতে ‘মাহিম’ নামক একটি নালা, যে নালাটি ইন্ডিয়ার সবচেয়ে দূষিত এক নালা, হাজার হাজার টন আবর্জনা এবং কলকারখানার বর্জ্য ফেলা হয় যেখানে, সেই নালার পানি ‘মিষ্টি পানি’ হয়ে গিয়েছে এমন গুঞ্জন ওঠে ঐ এলাকায়। প্রায় কয়েক ঘন্টার মধ্যে আবার গুজরাটে গুঞ্জন ওঠে তেথাল সমুদ্র সৈকতের নোনা পানিও মিষ্টি হয়ে গেছে। এর ফলে পানিবাহিত রোগ মহামারীতে রূপ নেবার মতো আশঙ্কা দেখা দেয়। ‘মহারাষ্ট্র দূষণ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর’ সবাইকে সেই পানি পান না করার জন্য সতর্ক করলেও অনেকেই সেই পানি বোতলে সংগ্রহ করে ফেলেছিলো। এই ঘটনার পরবর্তী দিন বেলা ২টার সময় যারা এ ঘটনাকে সত্য বলেছিলো, তারাই আবার বলেন পানি আগের মতো হয়ে গিয়েছে।

এই সেই মাহিম নালা যার পানি মিষ্টি হয়ে গিয়েছে শোনা গিয়েছিল ২০০৬ সালে। ছবিসূত্রঃ listverse

২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ফরিদপুরের সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের শিবপুরে দুইটি স্কুলে ১০৩ জন শিক্ষার্থী স্কুল চলাকালীন সময়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নেয়া হয়। প্রশাসন থেকে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয় এর কারণ জানতে। আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনো রোগ নির্ণয় করা যায় নি। জানা যায়, এক শিক্ষার্থীর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হয়। তার দেখাদেখি আরেকজন এবং এভাবে পুরো স্কুল ছড়িয়ে পড়ে।

উপরের ঘটনা দুটি ছিল ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের দুটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা এবং প্রায়ই এরূপ কিছু ঘটনার কথা শোনা যায়। আপাতদৃষ্টিতে ভয়ংকর মনে হলেও ততটা ভয়ংকর নয়, বরং এটি এমন এক ধরণের মানসিক রোগ যার সমাধান রয়েছে। এটাকে ম্যাস ম্যাডনেস বা ম্যাস হিস্টেরিয়া বা গণমনস্তাত্ত্বিক অসুস্থতা বলা হয়।

এই হিস্টেরিয়া আসলে কী?

গ্রিক শব্দ ‘হিস্টেরা’ বা ‘জরায়ু’ থেকে উৎপত্তি এই ‘হিস্টেরিয়া’ শব্দের। নারীদের ভিতর এ রোগ বেশি দেখা যায় বলে একসময় মনে করা হতো নারীর জরায়ুর কোনো অস্বাভাবিক অবস্থার কারণেই হিস্টেরিয়ার সৃষ্টি। পরবর্তীতে একে মানসিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বর্তমানে একে কনভার্সন ডিসঅর্ডার বলা হয়। আমরা সকলেই প্রতিনিয়ত নানা সামাজিক সমস্যা, প্রতিবন্ধকতা, ঝক্কি ঝামেলার মধ্য দিয়ে যাই, মানিয়ে নেই এর সাথে নিজেদেরকে। অনেকেই আবার ব্যর্থ হয়ে পড়েন এই মানিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে। ভেঙ্গে পড়েন এবং এক সময় এই মানসিক পীড়ার আধিক্য রূপ নেয় শারীরিক লক্ষ্যণের মাধ্যমে।

ছবিসূত্রঃ eyestrain

তাহলে ম্যাস হিস্টেরিয়া কী?

যখন অনেকের মাঝে একই সাথে, বিশেষত একে অন্যের দেখাদেখি হিস্টেরিয়াতে আক্রান্ত হয়, তখন তাকে ম্যাস হিস্টেরিয়া বলে। এই ম্যাস হিস্টেরিয়া হতে পারে কোনো শারীরিক অসুস্থতাকে ঘিরে বা কোনো অবর্ণনীয় ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সাধারণত কোনো ভয় বা গুজব থেকে এর সূত্রপাত। এর উপসর্গগুলোকে অনেকটাই পাগলামো মনে হতে পারে এবং সেখান থেকেই একে ম্যাস ম্যাডনেসও বলা হয়ে থাকে।

১৯৬০ সালে টরন্টোতে যাবার সময় কিশোরী এবং মহিলাদের অদ্ভুত আর্তনাদ, ম্যাস হিস্টেরিয়ার একটি উদাহরণ। ছবিসূত্রঃ howstuffworks.com

এর চিকিৎসা আছে কী?

সবার মাথায় এখন এমন প্রশ্ন আসাটা খুব স্বাভাবিক। এটি যেহেতু একটি মানসিক সমস্যা, সেহেতু এর চিকিৎসা ওষুধ দ্বারা স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা সম্ভব নয়, বরং প্রয়োজন সচেতনতার। আক্রান্তদের বোঝাতে হবে তারা কোনো রোগে আক্রান্ত নয় বা তারা যেমনটা ভাবছেন তেমনটা নয়। শুধু তা-ই নয়, তাদেরকে আলাদা করে ফেলার চেষ্টা করতে হবে যেন উপসর্গ অন্যদের মাঝে আর না ছড়ায়।

তবে হ্যাঁ, আক্রান্তদের সচেতন করার আগে নিজের অবস্থাটা বুঝে নিতে হবে। এমনটা যেন না হয় আক্রান্তদের বোঝাতে গিয়ে আপনিই উল্টে ম্যাস ম্যাডনেস এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়লেন।

ম্যাস ম্যাডনেসের যত উদাহরণ

এই ম্যাস হিস্টেরিয়ার দৃষ্টান্ত দিতে গেলে শেষ হবে না, কেননা আদিকাল থেকেই সারা বিশ্বে এরকম ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। তারপরেও কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা উল্লেখ করা যেতেই পারে।

ফ্রান্সে মিউ মিউ

মধ্যযুগের ঘটনা, ফ্রান্সের নান বা মঠবাসিনীদের অনেকেই পরিবারের চাপের মুখে সন্ন্যাসিনী হতে বাধ্য হতো। আর এর ফলে তারা অনেক বেশি মানসিক অশান্তিতে ভুগতেন। তো তাদের মধ্যে একজন হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে বিড়ালের মতো মিউ মিউ করা শুরু করলেন। তার দেখাদেখি অন্যান্য নানেরাও একইভাবে মিউ মিউ করতে থাকলেন। পরিস্থিতি এমন হয়ে পড়ে যে সকলকে অবাক করে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে সকল নান একত্রে মিউ মিউ করা শুরু করলেন। সকলে বিরক্ত হয়ে উঠেছিল তাদের এই মিউ মিউ শুনতে শুনতে। তাদের এই মিউ মিউ বন্ধ হয়েছিলো পুলিশের চাবুক মারার হুমকির পর।

মধ্যযুগের নান। ছবিসূত্রঃ pinterest.com

জার্মানিতে সঙ্গিনীকে কামড়ানো

পঞ্চদশ শতাব্দীতে জার্মানিতে এক সন্ন্যাসিনী নান তার সঙ্গিনীকে কামড়ানো শুরু করলেন। এই আচরণ রাতারাতি সম্পূর্ণ জার্মান, হল্যান্ড, এমনকি ইতালিতের নানদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে! সকলেই খুবই মারাত্মকভাবে জখমের শিকার হয়ে পড়ে এবং গুরুতর ইনফেকশনে জর্জরিত হয়ে পড়েন। ক্লান্তিতে তাদের এই কামড়ানো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়।

রোমান সাম্রাজ্যে সংক্রামক নাচ

১৫১৮ সালে স্ট্রেসবার্গে নৃত্য উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছিলো যা ইতিহাসের পাতায় ‘ড্যান্সিং প্লেগ’ নামে আখ্যায়িত। ফ্রাউ ট্রফেয়া নামক এক মহিলা জুলাই মাসের দুপুরের কড়া রোদ উপেক্ষা করে হঠাৎ স্ট্রেসবার্গের রাস্তায় নীরবে নাচতে শুরু করেন। প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে পড়ে, তার নাচ এক মুহূর্তের জন্যেও থামে না। ঠিক এই সময় অন্যান্য মানুষজনও তার সাথে নাচা শুরু করলো। অসংখ্য মানুষ খাওয়া, ঘুম, বিশ্রাম সব বাদ দিয়ে নাচতে শুরু করে। প্রায় এক মাস তাদের এই নৃত্যলীলা চলেছিল। এর ভয়াবহতাও মর্মান্তিক। নৃত্যরত অনেকেই হার্ট অ্যাটাকে, স্ট্রোকে বা অত্যন্ত ক্লান্তিতে মারা গিয়েছিল।

১৯১৮ সালের রোমান সাম্রাজ্যে সেই সংক্রামক নাচ। ছবিসূত্রঃ historicmysteries.com

হস্ত-কম্পন মহামারী

গ্রস টিঞ্জ, সিলেসিয়ার একটি রাজ্যে ১০ বছর বয়সী এক ডানহাতি মেয়ের লেখার সময় হাত কাঁপা শুরু করলো। এটি থেকে তার সম্পূর্ণ দেহ কাঁপতে থাকলো। ক্রমশই এই উপসর্গ আরো উনিশজন ছাত্রীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সুইজারল্যান্ডের ব্যাসেলে ঐ একই বছরে একই মহামারীতে বিশজন এবং এর প্রায় ১২ বছর পরে সাতাশজন শিক্ষার্থীকে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

বেলেভ্যুতে পা কাঁপাকাপি

১৯৩৯ সালের এক গবেষণায় পাওয়া যায় স্কুলের বার্ষিক নৃত্যানুষ্ঠানে একটি মেয়ের পা আপনা থেকেই কাঁপতে থাকে। তার এ সমস্যা প্রবল হতে থাকে এবং ক্রমশই তা মেয়েটির বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এ সমস্যায় মেয়েটি আক্রান্ত হবার পর প্রায় কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল।

উইলিয়াম বার্ড স্কুলে পা কাঁপা, হাত কাপার মহামারী। ছবিসূত্রঃ howstuffswork.com

২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে ভার্জিনিয়ায় উইলিয়াম বার্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও এরকম পা কাঁপা, হাত কাঁপা ইত্যাদি উপসর্গে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছিল।

তানজানিয়ায় হাসির মহামারী

৩০ জানুয়ারি, ১৯৬২, তানজানিয়ার কাশাশায় একটি মিশনারি বোর্ডিং স্কুলের মেয়েদের ভেতর হাসির মহামারী দেখা দেয়। এই হাসির শুরুটা হয়েছিলো তিনজন মেয়ে থেকে এবং রাতারাতি পুরো স্কুলে ছড়িয়ে পড়ে। স্কুলের ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯৫ জন আক্রান্ত হয় এতে যাদের বয়স ছিল ১২ থেকে ১৮ এর মধ্যে। এই উপসর্গ আক্রান্তদের মাঝে কয়েক ঘন্টা থেকে ১৬ দিন পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। উল্লেখ্য, কোনো শিক্ষক-শিক্ষিকা এতে আক্রান্ত হন নি। অবস্থা এতটাই বেগতিক হয়ে পড়েছিলো যে মার্চের ১৮ তারিখে স্কুলই বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তানজনিয়ায় হাসির মহামারী। ছবিসূত্রঃ 1.bp.blogspot.com

স্কুল বন্ধ হয়ে যাবার পর শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চলে যায়। তবে ঘটনার শেষ এখানেই নয়। এই মহামারী এরপর ছড়িয়ে পড়ে শাম্বা নামক এক গ্রামে, যেখানে আক্রান্ত মেয়েদের বেশিরভাগের বাসা ছিল। এপ্রিল এবং মে এই দুই মাসে ঐ গ্রামের প্রায় ২১৭ জন এই হাসির অ্যাটাকের শিকার হয়েছিল। ২১ মে কাশাশা স্কুল খোলা হয়, কিন্তু আবার জুন মাসেই বন্ধ হয়ে যায়। জুন মাসে এই মহামারী আরো বিস্তার লাভ করে রামাশেনে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ জন ছাত্রীর মধ্যে দেখা দেয়। এই মহামারী শুরুর পর থেকে প্রায় ১৮ মাস স্থায়ী ছিল।

পেনিস প্যানিক

ভাবুন তো কতটা অদ্ভুত ভাবনা হলে সারা বিশ্বে, বিশেষ করে আফ্রিকা এবং এশিয়া মহাদেশের ছেলেরা, হঠাৎ করেই বিশ্বাস করা শুরু করলো তাদের পুরুষাঙ্গ দিনে দিনে ছোট হয়ে যাচ্ছে এবং পুরোপুরি ভ্যানিশ হয়ে যাচ্ছে! এই ভাবনা থেকে তাদের ভিতরে ভয়ের সৃষ্টি হয় এবং তারা নানাভাবে এই ভ্যানিশ হওয়া থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে থাকেন। ১৯৬৭ সালে সিঙ্গাপুরে এই ম্যাস হিস্টেরিয়া খুবই ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল।

ম্যাটুনের পাগলা গ্যাস

৩১ আগস্ট ১৯৯৪, ইলিনয়ের ম্যাটুন নামক জায়গার এর দম্পতির কথা বলছি। কর্তা খুব সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠলেন। কিন্তু খুব দুর্বল অনুভব করতে লাগলেন তিনি, বমিও করলেন। এদিকে তার স্ত্রীও নড়াচড়াই করতে পারছিলেন না। তাদের ভাষ্যমতে তারা অদ্ভুত এক ধরনের গন্ধ পাচ্ছিলেন এবং ধারণা করে নেন ঘরে বিষাক্ত কোনো গ্যাসের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। এই ঘটনার দুই সপ্তাহ পর্যন্ত ম্যাটুনের বিশটিরও বেশি বাসায় একই রকমের দূষণের তথ্য পাওয়া যায়, যদিও প্রত্যেকের বর্ণনা ভিন্ন ভিন্ন ছিল। যখন এ ধরণের গ্যাস দূষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয় (আসলে কাউকেই দোষী সাব্যস্থ করা সম্ভব হয় নি) এবং ডাকনাম দেয়া হয় ‘ম্যাড গ্যাসার অব ম্যাটুন’, তখন গবেষণা করে একটিই ফলাফল পাওয়া যায়, তা হলো ভিক্টিমদের কল্পনা।

ম্যাটুনের পাগলা গ্যাস নিয়ে লেখা সেই সময়কার একটি পত্রিকার কলাম

রহস্যময়ী স্ল্যাশার

১৯৫৬ সালের ঘটনা। তাইওয়ানের তাইপেই-এর কাছাকাছি এক এলাকার মানুষজন এক রহস্যময়ী স্ল্যাশারের ভয়ে ভীত হয়ে পড়ে। সকলের ভাষ্যমতে, সেই পৈশাচিক চরিত্রটি তার অজান্তেই তার পাশ দিয়ে যাওয়া মানুষকে স্লাইস বা টুকরা টুকরা করে ফেলছে। শুধু তা-ই নয়, শোনা যেতে থাকে গরীব মহিলা এবং বাচ্চারা অনেকেই স্ল্যাশারের দ্বারা আঘাত পেয়েছে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো পুলিশ যখন অনুসন্ধান চালায়, তখন ভিক্টিমরাই বলেন আসলে কোনো স্ল্যাশার-ই নেই! বিভিন্নভাবে আঘাত পাবার ফলে তাদের শরীরে যে দাগ পড়েছিল, তারা সেগুলোকেই ‘স্ল্যাশ’ ভেবেছিল এবং রাতারাতি সকলেই তেমনটাই ভাবা শুরু করে।

Slasher এর ঘটনার পর পুলিশ সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে। ছবিসূত্রঃ howstuffswork.com

স্ট্রবেরি উয়িথ স্যুগার ভাইরাস

২০০৬ সালের মে মাস, পর্তুগিজ একটি স্কুলের প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারো শ্বাসকষ্ট, আবার কারো র‍্যাশের  সমস্যা। সবাই ভীত হয়ে পড়ে এই ভেবে যে, কোনো জীবনঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লো কী না। অনেক গবেষণার পর এক অদ্ভুত তথ্য বের হয়ে আসে। এই ইস্যু শুরু হবার কয়েকদিন আগে জনপ্রিয় টিন-সোপ অপেরার একটি এপিসোড ‘স্ট্রবেরি উয়িথ স্যুগার ভাইরাস’-এ রহস্যময় এক ভাইরাস সম্পর্কে দেখানো হয়। যেসব বাচ্চার র‍্যাশের বা অ্যালার্জির সমস্যা ছিল তারা ভাবতে থাকে তাদের ভিতরে সেই ভাইরাস ঢুকেছে, অন্যরা আবার পরীক্ষার ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধারণা করা হয় ঐ প্রোগ্রামের ফলাফলই হলো এই অসুস্থতা।

জনপ্রিয় টিন-সোপ অপেরার এক এপিসোড ‘স্ট্রবেরি উয়িথ স্যুগার ভাইরাস’ এ রহস্যময় এক ভাইরাস সম্পর্কে দেখানো হয়, যা বাচ্চাদের উপর প্রভাব ফেলে। ছবিসূত্রঃ archieve.fo ।

প্রতিরোধ ব্যবস্থা

এই ম্যাস ম্যাডনেস বা ম্যাস হিস্টেরিয়া বা কালেক্টিভ হিস্টেরিয়া বা গণমনস্তাত্তিক অসুস্থতা যা-ই বলুন না কেন, সচেতনতাই এর প্রথম এবং প্রধান প্রতিরোধের উপায়। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে যেহেতু এটি বেশি পরিলক্ষিত হয়, সেহেতু সচেতনতার শিক্ষাও স্কুল-কলেজেই দেওয়া প্রয়োজন। নিজেদের জীবনের দুঃখ, ঝঞ্ঝাটগুলোকে জমিয়ে না রেখে মুক্তমনের অনুশীলন করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা উচিত। দৈনিক কিছুটা সময় মেডিটেশনও করা যেতে পারে। পরিশেষে, অতিরঞ্জিত করে এসব খবর প্রকাশ না করে সচেতনতামূলক তথ্য প্রকাশ করাই হোক আমাদের মিডিয়াগুলোর মূল লক্ষ্য।

Related Articles