Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন: বহুমুখী প্রতিভাধর ফার্স্ট আমেরিকানের কথা

একজন ব্যক্তির পক্ষে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো একটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হওয়া সম্ভব। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কিছু মানুষের আগমন ঘটেছে যারা বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তাদের সংখ্যা নিতান্তই কম। এমনই একজন মানুষ ছিলেন বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। তিনি কী ছিলেন- এ প্রশ্ন না করে বরং তিনি কী ছিলেন না, এই প্রশ্ন করাটাই তার জন্য উপযুক্ত! তিনি একাধারে লেখক, গবেষক, দার্শনিক, উদ্ভাবক, বিজ্ঞানী, মুদ্রাকর, ব্যবসায়ী, কূটনীতিক, প্রকাশক, রাজনীতিবিদ হিসেবে বিখ্যাত হয়ে আছেন।

আমেরিকার জাতির পিতাদের অন্যতম একজন বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। তিনি আমেরিকার সংবিধান রচয়িতাদেরও একজন ছিলেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি ব্রিটেন থেকে আমেরিকার স্বাধীনতা অর্জনের মূল চারটি ডকুমেন্টেই স্বাক্ষর করেন; আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (১৭৭৬), ফ্রান্সের সাথে মৈত্রীচুক্তি (১৭৭৮), প্যারিস চুক্তি (১৭৮৩) এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান (১৭৮৭)।

বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের চিত্রকর্ম; Image source: David Martin (1737-1797).Pennsylvania Academy of the Fine Arts, Philadelphia

এই বহুমুখী প্রতিভার ব্যক্তিত্বের জন্ম ১৭০৬ সালের ১৭ জানুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরে। তিনি একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা জশিয়াহ একটি সাবান তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন তার বাবা জশিয়াহ ফ্রাঙ্কলিনের ১৭ জন সন্তানের মধ্যে ১৫ তম ছিলেন। ফ্রাঙ্কলিনের মা আবিয়াহ ফলগার ছিলেন তার পিতার দ্বিতীয় স্ত্রী। বেঞ্জামিনের পিতা অতি কষ্টে বিরাট এই সংসার চালাতেন। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন মাত্র দুই বছর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করেছিলেন।

যখন তার আট বছর বয়স তখন তার বাবা তাকে একটি গ্রামার স্কুলে ভর্তি করে দিলেন। কিন্তু দুই বছর পর যখন তার বয়স দশ তখন অর্থের অভাবে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন বন্ধ হয়ে যায়। পিতা জশিয়াহ বেঞ্জামিনকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে তার সাবান তৈরির কারখানায় ঢুকিয়ে দিলেন ।

স্কুল জীবন থেকেই বেঞ্জামিন নাবিক হতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার বাবা চাইতেন না বেঞ্জামিন নাবিক হোক। কারণ, তার বড় পুত্র সমুদ্রে গিয়ে আর ফেরেনি। সাবানের কারখানায় বেঞ্জামিনের মন নেই দেখে তার পিতা অন্য কোনো কাজে দেওয়ার কথা ভাবেন। বোস্টন শহরে বেঞ্জামিনের বড় ভাইয়ের একটি ছাপাখানা ছিল। বেঞ্জামিনকে সেই ছাপাখানায় দেওয়ার কথা ভাবলেন তার পিতা। তখন তিনি বারো বছরের কিশোর।

কয়েক বছর ভাইয়ের সাথে ছাপাখানায় কাজ করার পর যখন তার বয়স সতের, বেঞ্জামিন ঠিক করলেন ফিলাডেলফিয়া শহরে গিয়ে স্বাধীনভাবে ছাপাখানার ব্যবসা শুরু করবেন। বেঞ্জামিন নিউইয়র্ক ঘুরে ফিলাডেলফিয়া এসে পৌঁছলেন। ফিলাডেলফিয়া শহরে তিনি একটি ছাপাখানা স্থাপন করেন। এই সময় তিনি প্রচুর পড়াশোনা করতেন। প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা খুব বেশি না হলেও বিভিন্ন বিষয়ের বইয়ের প্রতি তার ব্যাপক আগ্রহ ছিল। মাঝে মাঝে সমস্ত রাত কেটে যেত বই পড়তে পড়তে। 

১৭২৪ সালে ইংল্যান্ডে যাওয়ার সুযোগ হলো। লন্ডনেও একটি বড় ছাপাখানায় কাজ পেলেন। দুই বছর তিনি লন্ডনে ছিলেন। এরপর ১৭২৬ সালে লন্ডন থেকে ফিলাডেলফিয়ায় ফিরে এলেন। অল্পদিনের মধ্যেই গড়ে তুললেন এক বিরাট ছাপাখানা। কঠোর পরিশ্রম আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধির ফলে অল্পদিনের মধ্যেই ব্যবসায় সফলতা পান। প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে শুরু করলেন।

বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের স্ত্রী ডিবোরাহ রিড; Image source: Geni.com

লন্ডন যাওয়ার পূর্বে ফিলাডেলফিয়া শহরে মিস রিডের সঙ্গে দেখা হয়েছিল বেঞ্জামিনের। অল্পদিনেই দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এই বন্ধুত্ব প্রেমে পরিণত হতে বেশি দিন লাগেনি ।

বেঞ্জামিন লন্ডনে থাকাকালীন মিস রিডকে তিনি ফিলাডেলফিয়ায় ফিরবেন না বলে চিঠি লিখেন। এ সময় মিস রিড তার মায়ের ইচ্ছায় জন রজার্স নামে একজন ব্রিটিশ পুরুষকে বিয়ে করেন। কিন্তু কিছুদিন পর রিড জানতে পারেন ইংল্যান্ডেও রজার্সের একজন স্ত্রী রয়েছে। এই সংবাদ পেয়ে রিড রজার্সের সাথে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। কিছুদিন পর বেঞ্জামিন ফিলাডেলফিয়ায় ফিরে আসেন। সেই সময় রিডের সাথে বেঞ্জামিনের পুনরায় দেখা হয়। আবারও দুজনের মধ্যে প্রেম হয়। উভয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সেই সময়ের পেনসিলভানিয়ার আইনে স্বামীর মৃত্যুর আগে পুনরায় বিয়ে করা নিষিদ্ধ ছিল। তাই বেঞ্জামিনের সাথে রিডের বিবাহ বৈধ ছিল না।

১৭২৭ সালে রজার্স ব্রিটিশ ওয়েস্ট ইন্ডিজে চলে যান। সেখানে একটি যুদ্ধে রজার্সের মৃত্যু হয়। কিন্তু রজার্সের মৃত্যুর কোনো প্রমাণ না থাকায় বেঞ্জামিনকে বিয়ে করা অবৈধ ছিল। তাই ১৭৩০ সালে তারা তাদের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের উপস্থিতিতে অনানুষ্ঠানিক বিয়ে করে একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এই মিলন উভয়ের জীবনে সুখ আর শান্তি এনে দিয়েছিল। ১৭৭৪ সালে মৃত্যু পর্যন্ত রিড বেঞ্জামিনের সঙ্গী ছিলেন।

বেঞ্জামিন ক্রমেই ধনী ও খ্যাতিমান ব্যক্তি হিসেবে ফিলাডেলফিয়া শহরে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ক্রমশ সমাজ সংস্কারমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে থাকেন। ১৭৩০ সাল থেকে শুরু করে ফিলাডেলফিয়া শহরে তিনি অনেক সামাজিক সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সময় তিনি ফিলাডেলফিয়ায় জুন্টো নামের একটি সংস্থা স্থাপন করেন। সংস্থাটির উদ্দেশ্য ছিল সমাজের উন্নতিতে পারষ্পরিক সহযোগিতা করা। এই সংস্থার মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সমাজ সংস্কারমূলক কাজকর্ম পরিচালনা করতেন।

সে সময় দেশে উপযুক্ত গ্রন্থাগারের অভাব ছিল। অধিকাংশ মানুষই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বই কিনে পড়ার মতো সামর্থ্যবান ছিল না। সেই সময় আমেরিকায় বই সহজলভ্য ছিল না । ১৭৩১ সালে তিনি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি স্থাপন করলেন। আমেরিকায় এইরকম লাইব্রেরি এই প্রথম। অল্পদিনেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে এই লাইব্রেরি। এর জনপ্রিয়তা দেখে আরও অনেক ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি গড়ে ওঠে। একসময় তিনি স্থাপন করলেন আমেরিকার প্রথম বীমা কোম্পানি, এর কাজ ছিল আগুনে পুড়ে যাওয়া সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
১৭৩২ সালে তিনি পুওর রিচার্ডস আলামানাক নামে একটি ধারাবাহিকের প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করেন। ধারাবাহিকটি আবহাওয়ার পূর্বাভাস, জোতির্বিদ্যার বিভিন্ন তথ্য, কবিতা ইত্যাদি প্রকাশ করত। এটি অল্পদিনেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

২ মে ১৭৫৪ সালের পেনসিলভানিয়া গেজেট পত্রিকার একটি পৃষ্ঠা; Image source: ebay.com

সে সময় ফিলাডেলফিয়া শহর থেকে ‘পেনসিলভানিয়া গেজেট’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হতো। ১৭২৯ সালে তার প্রাক্তন বসের থেকে সেই পত্রিকাটি কিনে নিলেন। বেঞ্জামিনের অধীনে পত্রিকাটি তৎকালীন উপনিবেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকায় পরিণত হয়। বেঞ্জামিনও নিয়মিত লেখালেখি করতেন পত্রিকাটিতে।

বেঞ্জামিনের চিন্তাভাবনা যে কতটা বিশাল ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় হাসপাতাল তৈরির কাজে। একজন ডাক্তার না হয়েও তিনি হাসপাতাল তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন। তখন আমেরিকায় খুব কম হাসপাতাল ছিল, যা ছিল তাও অনেক ব্যয়বহুল ছিল। ১৭৫১ সালে ডাক্তার টমাস বন্ডের সহায়তায় গড়ে তুললেন, যা আমেরিকার প্রথম হাসপাতালগুলোর একটি। এর পেনসিলভানিয়া হাসপাতাল। এখনো সেই হাসপাতালটির অস্তিত্ব রয়েছে। বর্তমানে এটি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অংশ।

১৭৪৯ সালে বেঞ্জামিন ফিলাডেলফিয়া একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। এই একাডেমিই পরবর্তীতে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। এটি ছিল তৎকালীন আমেরিকার গুটিকয়েক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। বর্তমান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রাঙ্কলিনের একটি স্ট্যাচু; Image source: time.com

বিজ্ঞানের জগতেও ফ্রাঙ্কলিনের পদচারণা ছিল। বিজ্ঞানে ফ্রাঙ্কলিনের অবদান অনস্বীকার্য। ১৭৪০ সালে উদ্ভাবক হিসেবে তিনি প্রথম উদ্ভাবন করেন খোলা উনুন (open stove)। সেই সময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল উনুনটি। কম জ্বালানি ব্যবহার করে অধিক তাপ পাওয়া যেত এই উনুনে।

তিনিই প্রথম বাইফোকাল লেন্সের ব্যবহার শুরু করেন। তিনিই প্রথম দোলন-চেয়ারের ব্যবহার করেন। এছাড়া ফ্লেক্সিবল ক্যাথিটাল, আমেরিকান পেনির উদ্ভাবকও তিনি।

বিদ্যুৎ শক্তির প্রতি তার ব্যাপক আগ্রহ ছিল। একদিন ঘুড়ি ওড়ানোর সময় আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো দেখে প্রথম অনুভব করলেন আকাশের বিদ্যুৎ একধরনের ইলেক্ট্রিসিটি। মানুষ ভাবতো বিদ্যুৎ চমকানো দেবরাজ জিউসের হাতের অস্ত্রের কারসাজি। দেবরাজ যখন ক্ষুব্ধ হন তখন এই অস্ত্রের ব্যবহার করেন! ফ্রাঙ্কলিন সেই ভ্রান্ত ধারণাকে চিরদিনের জন্য মুছে দিলেন। তার এই গবেষণা প্রথম পেশ করেন লন্ডনের রয়েল সোসাইটিতে। তারপর থেকেই বিজ্ঞানী হিসেবে তার খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

তার বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ইউরোপের বিজ্ঞানী মহলে ব্যাপক সাড়া জাগায়। ইংল্যান্ডের রয়েল সোসাইটি তাকে তাদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করল। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সম্মানসূচক ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৭৫১ সালে পেনসিলভানিয়া এসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক পদ অলংকৃত করেছেন। তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার সুবাদে তিনি আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যের তরফে প্রতিনিধি হিসেবে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন। এদিকে আমেরিকার অধিবাসীদের মধ্যে ক্রমেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে থাকে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দিল।

জন এডামস, টমাস জেফারসন ও আরো কয়েকজনকে নিয়ে শুরু করলেন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করার কাজ। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে যে কয়েকজন স্বাক্ষর করেছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। কলোনিগুলোকে একত্রিত করার ব্যাপারে অক্লান্ত পরিশ্রম আর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি ফার্স্ট আমেরিকান উপাধি অর্জন করেছিলেন। ইতিমধ্যে শুরু হলো আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ। বেঞ্জামিন স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করতে শুরু করলেন। তাকে আমেরিকার প্রতিনিধি হিসেবে ফ্রান্সে পাঠানো হলো। ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করে এই যুদ্ধে ফ্রান্সের নীতিগত সমর্থন, অর্থনৈতিক সমর্থন, অস্ত্র ও সৈন্য সংগ্রহ করতে সমর্থ হলেন।

আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র; Image source: Library of Congress, Washington, D.C. (digital file no. 3g09904u)

অবশেষে আমেরিকা স্বাধীন হলো। এবার দেশের উন্নয়নের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। স্বাধীনতার পর তিনি পেনসিলভেনিয়া রাজ্যের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন। এবার নতুন সংবিধান রচনার প্রয়োজন দেখা দিল। তিনি আরো কয়েকজনের সহায়তায় আমেরিকার সংবিধান প্রণয়ন করেন। এই সংবিধানই আধুনিক গণতন্ত্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল।

ফ্রাঙ্কলিন কখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হননি। তবে তিনি আট জন প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের একজন হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন । ফ্রাঙ্কলিনের সম্মানার্থে তার ছবি যুক্ত ১০০ মার্কিন ডলারের মুদ্রা ছাপা হয়েছে। 

এক সময় তিনি নিগ্রো দাসদের দুরবস্থা দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন। দাসপ্রথা বিলোপের চেষ্টা চালিয়ে যান। তিনি সর্বদা দাসদের সাথে ভালো ব্যবহার করতেন। দাসদের মুক্তির ব্যাপারে তিনি যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন পরবর্তীতে আব্রাহাম লিঙ্কন তা সমাপ্ত করেন।

এই মহান মানুষটি ১৭৯০ সালের ১৭ এপ্রিল পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় নিজের কন্যা সারাহ বাচের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪। মৃত্যুর সময় তিনি গেটেঁবাতে ভুগছিলেন।

জ্ঞানের প্রায় সকল শাখায় অসংখ্য রচনার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর। এমন এক ব্যক্তি যিনি কখনও স্কুল শেষ করেননি, তবে প্রচুর পড়াশোনা এবং অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তার জীবনকে নিয়ে গিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়। ফ্রাঙ্কলিন আমেরিকান জীবনের এমন দিকগুলোকে আলোকিত করেছিলেন, যার কারণে এখনও তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়।

This Bengali article is about Benjamin Franklin. He was an American polymath and one of the Founding Fathers of the United States.

Feature Image: Medium

Related Articles