Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ক্রিস্টোফার লেঙ্গেন: ১৯৫ আইকিউধারী এক বিস্ময় মানবের কথা

আলবার্ট আইনস্টাইনের আইকিউ (IQ) কত ছিল? যেহেতু তিনি কোনো আইকিউ পরীক্ষার সম্মুখীন হননি, তাই সেটা সঠিকভাবে উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তার জীবন পর্যালোচনার মাধ্যমে অনুমান করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আইকিউ আনুমানিক ১৬২ এর মতো ছিল। বাস্তবে ১৬০ এর অধিক আইকিউ-এর অধিকারী হওয়া চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। জটিল জটিল প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে বুদ্ধি খাটিয়ে সঠিক উত্তর বের করে আনতে গেলে রীতিমতো মাথার ঘাম ছুটে যায়। কিন্তু এর মানে এই নয় আইনস্টাইনের সমান আইকিউ কারো নেই। বরং অনেকেই ১৬০ এর অধিক নাম্বার পেয়েছেন এই পরীক্ষা থেকে। কিন্তু আজ এমন একজনের কথা বলবো, যার আইকিউ ১৬০ নয়, ১৭০ নয়, একেবারে ১৯০ এর অধিক ছিল। অনেকের মতে, তার আইকিউ হয়তো ২০০ এর বেশি হবে।

IQ হচ্ছে একজন মানুষের বুদ্ধিমত্তার মাপকাঠি; Image Source: James D Watson

ভাবছেন বাড়িয়ে বলছি? মোটেই নয়। তবে আমার আপনার মতো অনেকেই এ কথা বিশ্বাস করতে পারেনি। তাই সেই উচ্চ আইকিউ অধিকারীর জন্য এক বিশেষ আইকিউ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হলো, যেটা শুধুমাত্র ১৭০+ আইকিউ অধিকারীদের জন্য প্রযোজ্য। অথচ সেই অতি জটিল ‘সুপার আইকিউ’ পরীক্ষাতেও তিনি বেশ হেসেখেলে পার হয়ে গেলেন। সেখানে তিনি মাত্র একটি প্রশ্ন বাদে সবগুলোর উত্তর সঠিকভাবে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার না পারা প্রশ্নটি ছিল- “ Teeth is to hen as nest is to_____?” পাঠকরা নিশ্চয় ভাবছেন এর উত্তর কী হতে পারে। তবে এর উত্তর জেনে নেওয়ার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই উচ্চ আইকিউধারী মানুষ সম্পর্কে, যার নাম ক্রিস্টোফার লেঙ্গেন।

ক্রিসের শৈশব

১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন বিস্ময় বালক ক্রিস্টোফার লেঙ্গেন। দুর্ভাগ্যক্রমে তার শৈশব অন্যান্য দশটি শিশুর মতো স্বাভাবিক ছিল না। কারণ, তার জন্মের পর পরই বাবা নিখোঁজ হয়ে যান। চার সন্তান নিয়ে মন্টানা শহরে বেশ কষ্টে সংসার চালাতে থাকেন মা। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? তাই সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মা পুনরায় বিয়ে করেন। পরিবারের নতুন কর্তা আসার পর সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে উল্টো আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেলো। কারণ, সৎ বাবা জ্যাক ছিলেন বদমেজাজি। তাই ছোটখাট ভুলের জন্য সন্তানদের বেদম প্রহার করতেন তিনি। এরকম এক বৈরী পরিবেশে বড় হতে থাকেন ক্রিস।

শিশু ক্রিসের ছবি; Image Source: Wikimedia Commons

একসময় তাকে স্কুলে ভর্তি করানোর সময় হয়ে যায়। তার মা সামান্য চিন্তিত হয়ে পড়েন। কারণ, ক্রিস অন্যান্য বাচ্চাদের মতো ছিলেন না। তিনি খুব চটপটে স্বভাবের এবং অনেক বেশি বুদ্ধিমান ছিলেন। তিনি জন্মের মাত্র এক বছরের মাথায় খুব সুন্দর করে কথা বলা শিখে যান। চার বছরের মাথায় শিশু ক্রিস বই ধরে ধরে পড়তে পারতেন। বড় ভাইদের সাথে বিভিন্ন জটিল প্রশ্ন করে সময় কাটাতেন তিনি। যদি তিনি স্কুলের বাচ্চাদের সাথেও এসব করেন, তাহলে হয়তো তার সাথে কেউ বন্ধু হতে চাইবে না। শেষপর্যন্ত মায়ের ধারণাই সঠিক হলো। ক্রিস এতটাই স্মার্ট ছিলেন যে, তাকে শেষপর্যন্ত দুই-তিন ক্লাস উপরে ভর্তি করানো হলো।

ক্রিস লেঙ্গেন; Image Source: John Learn

বিস্ময়কর এক বালক

SAT পরীক্ষা কেন্দ্রের শেষ মাথায় বসে এক বালক বেশ আয়েশ করে ঘুমোচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে তার পরীক্ষা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। পরিদর্শক উত্তরপত্র জমা নেওয়ার সময় ভাবলেন, হয়তো পড়াশোনার প্রতি মন নেই। তাই এত দায়সারাভাবে পরীক্ষা দিয়েছে। কতই বা আর পাবে? কিন্তু যখন ফলাফল বের হলো, তখন সবার চক্ষু চরকগাছ। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পরীক্ষা দেয়া ক্রিস লেঙ্গেন নামক ছেলেটি সেবারের পরীক্ষায় শতভাগ নাম্বার পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। অবশ্য যারা তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতো, তারা একটু কম অবাক হয়েছিলো। যেমন ধরা যাক তার ভাইয়ের কথা। বড় ভাই মার্ক লেঙ্গেনের চোখে ক্রিস ছিলেন সাক্ষাৎ জিনিয়াস। তিনি বলেন,

সন্ধ্যায় দেখতাম ক্রিস এক ঘণ্টা গণিত করলো। এরপর সে বসলো ফরাসি ভাষা নিয়ে। এরপরের এক ঘণ্টা সে রুশ ভাষা নিয়ে পড়ে থাকলো। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে দেখলাম ও দর্শন শাস্ত্রের বই পড়ছে। এভাবে প্রতিদিন একই নিয়ম অনুসরণ করে বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করতো। সিলেবাসের বাইরে গিয়ে পড়ছে বলে কখনো কখনো পড়া ধরতাম। ও সব প্রশ্নের উত্তর ঠিক ঠিক দিতে পারতো।

SAT পরীক্ষায় শতভাগ নম্বর পেলেন ক্রিস; Image Source: Columbia Daily Spectator

আরেক ভাই জেফের মতে,

শুনতে অবাক লাগলেও একটা সত্যি ঘটনা বলি। ক্রিস ১৪ বছর বয়সে কাগজ পেলেই ছবি আঁকতো। সে ছবিগুলো দেখতে হুবহু ক্যামেরায় তোলা ফটোর মতো দেখাতো। ১৫ বছর বয়সে ও বিখ্যাত গিটারিস্ট জিমি হেণ্ডরিক্সের মতো গিটার বাজাতে পারতো। আর ও প্রায়ই স্কুল কামাই দিতো। মুখে শুধু একটাই অভিযোগ, স্কুলের শিক্ষকগণ তাকে নতুন কিছুই শেখাতে পারছেন না। প্রথম প্রথম হাসতাম। কিন্তু একবার ও পুরো সেমিস্টারের সকল বিষয়ের সিলেবাস মাত্র দু’দিনের মাথায় শেষ করে আমাকে বোঝাচ্ছিলো। তখন বুঝলাম, ক্রিস আর যা-ই হোক, ফাঁকিবাজ নয়।

ক্রিস এতটাই মেধাবী ছিলেন যে, যদি কোনো বিদেশি ভাষার কোর্সে তাকে কোনোকিছু না পড়ে পরীক্ষা দিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং পরিদর্শক আসার পূর্বের তিন মিনিটের বিরতিতে তাকে বই ধরিয়ে শুধু চোখ বুলানোর সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে সেটি তার পরীক্ষা পাশের জন্য যথেষ্ট হবে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার বই ঘেঁটে জটিল গণিত সমাধান করা শুরু করেন। এত কম বয়সে তিনি Principia Mathematica সম্পূর্ণ পড়ে শেষ করতে সক্ষম হন। স্কুলের গণ্ডি পেড়িয়ে তিনি রিড কলেজ এবং মন্টানা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। আর্থিক অসঙ্গতি তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ালে তিনি বেশিদূর এগোতে পারেননি। কিন্তু ক্রিসের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গুরুত্ব খুব কম ছিল। তাই তিনি স্বাধীনভাবে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যান।

১৬ বছর বয়সে প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা শেষ করেন ক্রিস; Image Source: Cambridge Printing Press

আইকিউ একশ পঁচানব্বই

সবাই জানতো ক্রিস একজন অতি বুদ্ধিমান মানুষ। কিন্তু তার বুদ্ধি কতটুকু, সেটা জানার জন্য একটি মাপকাঠির প্রয়োজন। পৃথিবীজুড়ে এমন বহু বুদ্ধিমান বিস্ময় বালকের নাম শোনা যায়। তাদের তুলনায় ক্রিসের অবস্থান কোথায়, সেটি জানার জন্য প্রয়োজন ক্রিসের আইকিউ কতো তা জানা। কিন্তু একজন মানুষের আইকিউ কতো হলে তাকে বুদ্ধিমান ধরা যায়? মানুষের গড় আইকিউ প্রায় ১০০। যদি কেউ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়, তাহলে তার ক্ষেত্রে আইকিউ দাঁড়ায় মাত্র ৬৫। ১৫০-১৬০ এর দিকের আইকিউধারীদের সাধারণত জিনিয়াস হিসেবে গণ্য করা হয়।

রাতারাতি সেলিব্রিটি বনে গেলেন তিনি; Image Source: Lucis Phillipines 

ক্রিস লেঙ্গেনও আইকিউ পরীক্ষা দিতে বসে গেলেন। পরীক্ষা শেষে তার আইকিউ স্কোর দেখা গেলো ১৯৫! যেটি মানুষের গড় আইকিউ’র তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এই উচ্চ আইকিউধারীর নাম খুব দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো। স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে অংশ নিলেন তিনি। এমনকি পপুলার সায়েন্স, দ্য টাইমস, নিউসডে’র মতো স্বনামধন্য পত্রিকায় তাকে নিয়ে ফিচার করা হলো। তবে সবচেয়ে বেশি লাভ হলো ক্রিসের। তিনি বিভিন্ন কুইজ এবং বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক রিয়্যালিটি শো’র মধ্যমণি হয়ে উঠলেন। একবার ‘1 vs 100’ নামক এক শোতে তার বিরুদ্ধে একশজন সাধারণ মানুষের প্রতিযোগিতা হয়েছিলো।

ঝরে পড়তে আসেননি

প্রতিবছর শত শত বিস্ময় বালকের জন্ম হয় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে। খুব কম বয়সে জটিল বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব এবং গণিতের সমাধান করে তারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। কিন্তু এদের মধ্যে ক’জন পরবর্তী জীবনে এই সাফল্য ধরে রাখতে পেরেছে? সংখ্যাটা বেশ কম হবে। অধিকাংশ বিস্ময় বালক বিস্ময়করভাবে কালের অতল গহ্বরে হারিয়ে যায়। কিন্তু ক্রিস লেঙ্গেন এদের দলভুক্ত নন। তিনি সেলিব্রিটি হওয়ার পরেও তার মেধার সদ্ব্যবহার করতে ভুলে যাননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা সমাপ্ত করতে না পারার কারণে তার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিল না। তাই প্রাথমিকভাবে তিনি কিছুটা বাধার সম্মুখীন হন। এখানে ওখানে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করে শুরুর দিকে বেশ কয়েকটি বছর কাটিয়ে দেন তিনি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ক্রিস বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব নিয়ে চিন্তাভাবনা করতেন। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে তিনি নিজস্ব তত্ত্ব দাঁড়া করানোর চেষ্টা করতে থাকেন। এমনকি রিয়্যালিটি শো’র চাপের মাঝেও তার এই চিন্তাধারা অব্যাহত ছিল।

CTMU তত্ত্বের মাধ্যমে তিনি বিজ্ঞান এবং যুক্তিবিদ্যার মাঝে সেতুবন্ধন স্থাপন করার চেষ্টা করেছেন; Image Source: Youtube

১৯৯৯ সালে তিনি ‘মেগা ফাউণ্ডেশন’ নামে একটি অলাভজনক দাতব্য সংস্থা স্থাপন করেন। এই সংস্থা স্থাপনের মূল লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অন্যান্য জিনিয়াসদের খুঁজে বের করা এবং পর্যাপ্ত সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে তার শিক্ষাজীবন সুন্দর করা। হয়তো নিজের শিক্ষাজীবনের দিকে তাকিয়ে তিনি চেয়েছিলেন এমন পরিণতি যেন আর কারো না হয়। এছাড়া তিনি সার্বজনীন তত্ত্ব নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে তার নিজস্ব CTMU (Cognitive-Theoretical Model of Universe) তত্ত্ব প্রদান করেছেন। এই তত্ত্বের মাধ্যমে তিনি বিজ্ঞান এবং যুক্তিবিদ্যার মাঝে সেতুবন্ধন স্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। দর্শন, ধর্ম, নীতি, বিজ্ঞান ইত্যাদিকে তিনি একসূত্রে বাঁধার চেষ্টা করেছেন, তা-ও গণিতের মাধ্যমে। তার মতে, মহাবিশ্ব নিয়ে ধর্মীয় সৃষ্টিতত্ত্ব এবং ডারউইনের বিবর্তনবাদ, দুটোই সত্য। কিন্তু বিজ্ঞানীরা তার তত্ত্ব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ ক্রিসকে এই তত্ত্ব নিয়ে আরো কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। অনেকে এটিকে স্রেফ মনোযোগ আকর্ষণের ফাঁদ হিসেবে দেখছেন। কিন্তু ক্রিস এসব কানে নেননি। তার মতে, এই তত্ত্বই বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের অধরা ‘Theory of Everything’ হিসেবে গণ্য হবে। বিতর্কিত এই তত্ত্ব নিয়ে এখনও বিজ্ঞানীদের মাঝে আলোচনা চলছে। তবে এক তত্ত্ব দিয়ে থেমে যাননি ক্রিস। তিনি সম্প্রতি ‘An Introduction to Mathematical Metaphysics’ নামে একটি নতুন প্রবন্ধ রচনা করেন যা কসমস এণ্ড হিস্ট্রি জার্নালে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ছাপা হয়।

একাই একশ

অসম্ভব প্রতিভাবান ক্রিস্টোফার লেঙ্গেনকে একবার একশ মানুষের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছিলো। সেখানে তিনি তার বুদ্ধির অন্য আরেকটি দিক প্রকাশ করেন, যেটি নিয়ে কথা না বললে ক্রিসের জীবনী অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। ২০০৮ সালে 1 vs 100 রিয়্যালিটি শো’র পঞ্চম বর্ষে আমন্ত্রিত হন সর্বোচ্চ আইকিউধারী ক্রিস্টোফার লেঙ্গেন। অনুষ্ঠানে ক্রিসের বিপরীতে একশজন সাধারণ মানুষ ঠিক করা হয় যাদের আইকিউ গড় মানুষের কাছাকাছি হবে। একদিকে ক্রিস একা এবং অন্যদিকে একশজন সাধারণ মানুষের দল। অনুষ্ঠানের নিয়ম হচ্ছে, উপস্থাপক একের পর এক বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিবেন এবং যে দল এই প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে সবার আগে দিতে পারবে, তাদের দলে পয়েন্ট যোগ হবে। প্রতিটি পয়েন্টের সাথে আসবে ডলার। যদি ক্রিসকে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা একবার হারাতে পারে, সেক্ষেত্রে সে যত ডলার আয় করেছে, তার পুরোটা হারাবেন। ক্রিস যতই বুদ্ধিমান হোক না কেন, একশজনের বিরুদ্ধে পেরে ওঠা সহজ হবে না। উপস্থাপক বব সেগেট অনুষ্ঠান শুরুর আগে মজা করে ক্রিসকে প্রশ্ন করলেন, “কী মনে হচ্ছে? আপনি পারবেন একশ জনের সাথে?” ক্রিস সামান্য হেসে উত্তর দিয়েছিলেন, “সামান্য অসুবিধায় পড়তে পারি, কিন্তু শেষমেশ আমিই জিতবো।” 

ঘণ্টা বাজার সাথে সাথে উপস্থাপক একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়তে থাকলেন। ক্রিস অনায়াসে সেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে থাকেন। তিনি একবারের জন্যও মাথা চুলকাননি কিংবা চিন্তা করে এক সেকেণ্ড নষ্ট করেননি। অবিশ্বাস্যভাবে ক্রিস প্রশ্ন শেষ হওয়ার সাথে সাথে ঝটপট উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলেন। ওদিকে একশজন মানুষ বোকার মতো ক্রিসের কীর্তি দেখছিলো। এভাবে হয়তো তিনি একদম শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু তিনি সেটা করলেন না। ততক্ষণে তিনি প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার উপার্জন করে ফেলেছেন। তিনি মনে মনে তার হেরে যাওয়ার সম্ভাবনার হিসাব নিকাশ করছিলেন। অনুষ্ঠানের আগের পর্বগুলো দেখে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, একপর্যায়ে তাকে হারিয়ে দেওয়া হতে পারে। তাই তার উচিত এখানে থেমে যাওয়া। এরপর তিনি দু’হাত উঁচু করে বলে উঠলেন, “থামুন, থামুন। আমি এখানেই থামতে চাচ্ছি। সবাইকে ধন্যবাদ।” উপস্থাপক বব সেগেট ক্রিসের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। ক্রিস শুধু সবজান্তাই নন, হিসেবীও বটে।

ক্রিস ছিলেন অসম্ভব বুদ্ধিমান একজন মানুষ; Image Source: Twitter

দর্শকদের করতালির মধ্য দিয়ে সেদিনের পর্ব সমাপ্তি হলো। কিন্তু আমরা চাই ক্রিস যেন শেষ না হয়ে যান। অসম্ভব বুদ্ধিমান ক্রিস তার গবেষণা এবং চিন্তার কাজ চালিয়ে যান। আমাদের উপহার দিন নতুন নতুন সব তত্ত্ব। ও, হ্যাঁ, সুপার আইকিউ পরীক্ষায় ক্রিসের না পারা প্রশ্নের উত্তর হবে ‘Mare’ !

This is a Bangla article about Christopher Langan. He has an IQ of 195. He is an american celebrity who regularly competes in reality quiz shows. He is also a thinker and researcher. He is considered as one of the smartest men on planet.

Reference: Outliers: The story of success by Malcom Gladwell, Penguin group, 2008 edition. Page no: 69-73.

& necessary references are hyperlinked. 

Feature Image: Twitter (Edited by Author) 

Related Articles