দ্বিতীয় শতাব্দীর গ্রিসের প্যারগামন নামক এক গ্রামের গল্প। সেখানে গ্যালেন নামে ১৬ বছরের এক কিশোর বাস করতেন। তার স্বপ্ন বড় হয়ে দার্শনিক হবেন। গ্রিক সাম্রাজ্যে জন্ম হওয়া একজন কিশোরের দার্শনিক হওয়ার স্বপ্ন দেখা অসম্ভব কিছু নয়। প্ল্যাটো, সক্রেটিস, থ্যালিসের মতো ইতিহাস সেরা দার্শনিকের দেশে জন্ম নেওয়া গ্যালেনও ভেবেছিলেন তাদের মতো হবেন।
কিন্তু তার এই স্বপ্নে জল ঢেলে দিলেন তার পিতা নিকোন। তিনি দরাজ কণ্ঠে ঘোষণা দিলেন, সারাদিন চিন্তা-ভাবনা করে দর্শনের পেছনে সময় নষ্ট করা তিনি আর বরদাশত করবেন না। গ্যালেনকে তিনি একজন চিকিৎসক হিসেবে দেখতে চান, দার্শনিক নন। গ্যালেনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। কারণ, তার চিকিৎসাবিদ্যার উপর বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। সন্তানের হতাশ হওয়া চেহারার দিকে তাকিয়ে পিতা জানালেন এক অদ্ভুত স্বপ্নের কথা।
এর আগের রাতে পিতার স্বপ্নে এসে দেখা দেন স্বয়ং চিকিৎসার দেবতা এসক্লেপিয়াস। দেবতা নিজে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি যেন গ্যালেনকে চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তোলেন। সন্তানের স্বপ্নের কথা তিনি জানতেন। কিন্তু দেবতার নির্দেশের উপর কোনো আপোষ হতে পারে না। তাই পিতার সেই অদ্ভুত স্বপ্নের মাধ্যমে ধ্বংস হয়ে গেল গ্যালেনের স্বপ্ন। তিনি দর্শন ছেড়ে চিকিৎসাবিদ্যায় মন দেন। আর সেই স্বপ্নভঙ্গের মাধ্যমে শাপে বর হয়ে আমরা পেলাম ব্যবহারিক শারীরবিদ্যার জনক ‘গ্যালেন অব প্যারগামন’-কে, যার জ্ঞানের প্রতিপত্তির কাছে আধুনিক চিকিৎসকরাও নতি স্বীকার করতেন।
গ্যালেন অব প্যারগামন
ইতিহাসের পাতায় গ্যালেন দুটি নামে পরিচিত। তার জন্মভূমি প্যারগামনের সাথে মিলিয়ে তাকে ডাকা হয় গ্যালেন অব প্যারগামন। কিন্তু তার পারিবারিক নাম ছিল ক্লডিয়াস গ্যালেন। ১২৯ সালে গ্রিক সাম্রাজ্যে জন্ম নেন তিনি। বর্তমান পৃথিবীতে প্যারগামন তুরস্কের অধিনস্ত একটি শহর। তৎকালীন পৃথিবীতে প্যারগামন ছিল সংস্কৃতি ও জ্ঞান চর্চার আদর্শ স্থান। এখানকার অধিবাসীরা ছিলেন গ্রিক সাম্রাজ্যের অনুগত নাগরিক।
গ্যালেনের প্রতিবেশী পরিবারগুলো ছিল গ্রিসের সবচেয়ে অভিজাত সম্প্রদায়। এছাড়া প্যারগামনের বিশাল পাঠাগার তখন বিশ্ববিখ্যাত ছিল। গ্যালেন নিজেও অভিজাত শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। তার পিতা নিকোন ছিলেন রাজকীয় স্থপতি ও গণিতবিদ। এমন পরিবেশে জন্ম নেওয়া গ্যালেন স্বাভাবিকভাবে ছোট থেকে জ্ঞান চর্চার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন।
গ্যালেনের পিতা ছিলেন একজন প্রগতিশীল চিন্তাবিদ। তিনি তার সন্তানকে জ্যামিতি, দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, সাহিত্য ও পৌরনীতির মতো বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদান করেছিলেন। তিনি তার সন্তানকে স্বাধীনভাবে চিন্তাশক্তি কাজে লাগিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার শিক্ষাদান করেছিলেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, দেবতা এসক্লেপিয়াসের অদ্ভুত স্বপ্ন দেখার পর তিনি তার সন্তানের উপর চিকিৎসক হওয়ার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন, যা তার নিজের আদর্শের পরিপন্থী ছিল।
তবে গ্যালেন তার পিতার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে চিকিৎসাবিদ্যা অর্জন শুরু করেন। ২০ বছর বয়সে তিনি স্থানীয় এক মন্দিরের কবিরাজ হিসেবে নিযুক্ত হন। তবে মন্দিরের গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকতে পছন্দ করতেন না তিনি। ১৪৯ অব্দে পিতার মৃত্যুর পর তিনি প্যারগামন ত্যাগ করে বিদেশ ভ্রমণে বের হন। ভ্রমণকালে তিনি মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে অবস্থান করেন এবং বিভিন্ন চিকিৎসকের নিকট দীক্ষালাভ করেন। এভাবে ১২ বছর ধরে তিনি প্রাচীন চিকিৎসাবিদ্যায় জ্ঞানার্জন করেন। ১৫৭ অব্দে তিনি একজন দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে প্যারগামন ফেরত আসেন।
চিকিৎসকদের রাজা
প্যারগামন ফিরে এসে গ্যালেন স্থানীয় চিকিৎসকদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন। তিনি জনসম্মুখে একটি শূকর ধরে এনে এর দেহের বিভিন্ন স্নায়ু স্পর্শ করে একে বোবা বানিয়ে দেন। এরপর তিনি একটি বাঁদর ধরে এনে এর পেট বিদীর্ণ করে নাড়ি বের করে ফেলেন। এবার তিনি সকল উপস্থিত চিকিৎসকদের এই দুটো প্রাণীর চিকিৎসা করার আহ্বান করেন। সকল চিকিৎসক গ্যালেনের পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেন। এবার গ্যালেন নিজে দু’টো প্রাণীর চিকিৎসা করে এদের সুস্থ করে তোলেন। এই ঘটনার পর গ্যালেনের নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো। খ্যাতির জের ধরে তিনি তৎকালীন গ্ল্যাডিয়েটর যোদ্ধাদের প্রধান চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত হন।
তার প্রধান আগ্রহ ছিল মানব শারীরতত্ত্ব নিয়ে কাজ করা। কিন্তু ১৫০ অব্দে রোমান শাসকরা মানবদেহ ব্যবচ্ছেদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তাই গ্ল্যাডিয়েটরদের চিকিৎসা করার সময় গ্যালেন যতটুকু পারতেন, মানবদেহের রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করতেন। তার পুঁথিগুলোতে তিনি গ্ল্যাডিয়েটরদের দেহকে ‘জানালা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যে জানালা দিয়ে তিনি অপার রহস্য উন্মোচন শুরু করেছেন।
দ্বিতীয় শতাব্দীতেই গ্যালেন অনুধাবন করেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সুষম খাদ্যের সাথে মানবদেহের সুস্থতা জড়িত। তিনি অলৌকিক কুসংস্কার বাদ দিয়ে সর্বপ্রথম বৈজ্ঞানিক উপায়ে জখমের চিকিৎসা শুরু করেন। তার চার বছরের কর্মরত অবস্থায় যোদ্ধাদের মৃত্যুহার নাটকীয় হারে হ্রাস পায়। ভাবতে অবাক লাগে, সেই দ্বিতীয় শতাব্দীতে গ্যালেন মানব মস্তিষ্ক ও চোখের শল্য চিকিৎসা করতেন। লম্বা সুঁইয়ের সাহায্যে তিনি চোখের ছানিও চিকিৎসা করতেন।
রোমে পদার্পণ এবং পলায়ন
প্যারগামনে চার বছর থাকার পর ১৬২ অব্দে তিনি তৎকালীন ইউরোপের সর্বাধুনিক নগরী রোমে গমন করেন। সেখানে পৌঁছে তিনি স্থানীয় চিকিৎসকদের সাথে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। কিন্তু রোমের চিকিৎসকরা প্যারগামনের চিকিৎসকদের ন্যায় সাধারণ কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। অনেকেই সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তাই রোমে গ্যালেনের শুরুটা ঠিক মনমতো হয়নি। যদিও একদিকে দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল, কিন্তু তিনি অতি দ্রুত অন্যান্য চিকিৎসকদের চোখের কাঁটা হয়ে ওঠেন। এরূপ বৈরী পরিবেশে তিনি সাহসিকতার সাথে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে থাকেন।
ধীরে ধীরে তার রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। গ্যালেনের রোগীর তালিকায় একজন রাজকর্মী ছিলেন। ফ্ল্যাভিও বোতো নামক সেই রাজকর্মচারী তাকে রোমান সম্রাট মার্কাস অরেলিয়াসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এর মাধ্যমে গ্যালেনের ভাগ্য খুলে যায়। কয়েকদিনের মাথায় তিনি সম্রাটসহ, লুসিয়াস ভারাস কমান্ডাস, সেপ্টিমিয়াস সেভেরাস নামের মন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত হন।
ওদিকে তার সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে চিকিৎসকরা ষড়যন্ত্র শুরু করে। তাকে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। এ সময়ে রোমে এক মহামারি শুরু হয়। ইতিহাসবিদরা একে ‘গ্যালেন প্লেগ’ হিসেবে অভিহিত করেন কারণ তিনি প্রথম এই প্লেগের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার কিছুদিন পর তিনি রাতের আঁধারে রোম ত্যাগ করে প্যারগামন পালিয়ে যান।
দ্বিতীয় অধ্যায়
পরবর্তীতে সম্রাট নিজে চিঠি লিখে গ্যালেনকে রোমে ফিরে আসার নির্দেশ দেন। তাকে আকুলিয়া সেনানিবাসে চিকিৎসক হিসেবে প্রেরণ করা হয়। তার কাজ ছিল প্লেগ নির্মূল করে সৈনিকদের মনোবল অটুট রাখা। প্রায় তিন বছর পর ১৬৯ সালে তিনি আকুলিয়া থেকে রোমে ফেরত আসেন। রোমে তার দ্বিতীয় অধ্যায় ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ১৮০ সালে মার্কাস অরেলিয়াসের মৃত্যু পর্যন্ত রোমে অবস্থান করেন এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন।
তিনি বিভিন্ন প্রাণীর দেহ ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ সংবহনতন্ত্র নির্ণয় করার চেষ্টা করেন। গ্যালেনের গবেষণাগুলো প্রায় ২০ খণ্ডে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯১ সালে রোমের পাঠাগারে এক প্রলয়ংকারি অগ্নিকাণ্ডে অধিকাংশ পাণ্ডুলিপি ধ্বংস হয়ে যায়।
গ্যালেনের যত অবদান
গ্যালেন তার গবেষণা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানকে Methodus Medendi নামক সুবিশাল পাণ্ডুলিপিতে লিপিবদ্ধ করেছিলেন। আধুনিক যুগে এই পাণ্ডুলিপি সর্বমোট ১৪ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। গ্যালেনের নিকট মানুষ ছিল দেহ এবং আত্মার সমষ্টিগত স্বত্বা।
তিনি চিকিৎসাবিদ্যার পাশাপাশি শৌখিন দার্শনিক ছিলেন। ছোটবেলার বিসর্জন দেওয়া স্বপ্ন তিনি শেষের দিকে এসে পুনরায় দেখা শুরু করেন। তাই গ্যালেন চিকিৎসকের বাইরেও একজন দার্শনিক হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছেন। দর্শন আর চিকিৎসাবিদ্যার সংমিশ্রণের জন্য তিনি সুপরিচিত। হিপোক্রিটস কর্তৃক প্রবর্তিত চার তরল তত্ত্বের সাথে তিনি একাত্মতা প্রকাশ করেন। এই তত্ত্ব মতে, রক্ত, শ্লেষ্মা, হলুদ পিত্ত এবং কালো পিত্ত দ্বারা শরীরের সকল রোগ নিয়ন্ত্রিত হয়। তার এই তত্ত্ব আধুনিক বিজ্ঞানের নিকট বাতিল হয়ে গেলেও এর প্রভাব বিস্তৃত ছিল প্রায় ১৩০০ বছর পর্যন্ত।
মধ্যযুগের শেষ দিকে মুসলিম পণ্ডিতগণ গ্যালেনের পাণ্ডুলিপিগুলো আরবিতে অনুবাদ করা শুরু করেন। তার চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিশ্বাস করা চিকিৎসকদের গ্যালেনিস্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মানবদেহের রহস্য উদ্ঘাটনের উদ্দেশ্যে গ্যালেন হাজার হাজার প্রাণী ব্যবচ্ছেদ করে তুলনামূলক শারীরতত্ত্ব চর্চা করেছিলেন। তার ব্যবচ্ছেদবিদ্যা সম্পর্কিত প্রায় ৪০০ পাণ্ডুলিপি রয়েছে যেগুলো একত্র করলে ৭০টির বেশি বইয়ে আবদ্ধ করা যাবে। কথিত আছে, গ্যালেন যখনই কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতেন, তাকে দেবতা এসক্লেপিয়াস কোনো ইশারার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান বাতলে দিতেন।
গ্যালেনের যত ভুল
গ্যালেনিস্ট চিকিৎসকগণ ভাবতেন, গ্যালেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের সকল ক্ষেত্র নিয়ে সম্পূর্ণ গবেষণা করেছেন। তাই আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে যখন মানব ব্যবচ্ছেদ সম্ভব হয়, তখনও তারা গ্যালেনের তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করার কোনো প্রয়োজনবোধ করেননি। আমরা একটু আগে জেনেছি, গ্যালেন অন্যান্য প্রাণী ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ সম্পর্কে তুলনামূলক তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
স্বাভাবিকভাবে, অন্যান্য প্রাণীর সাথে মানুষের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের পার্থক্য থাকবে। তাই ধীরে ধীরে গ্যালেনের শারীরতত্ত্বে বিভিন্ন অসঙ্গতি ধরা পড়তে থাকে। কিন্তু আপনারা জেনে অবাক হবেন, প্রথম ভুল ধরা পড়ে গ্যালেনের মৃত্যুর প্রায় দেড় হাজার বছর পর। এর পূর্ব পর্যন্ত চিকিৎসাবিজ্ঞানে তার একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল।
তবে এর মানে এই নয় যে, কেউ এর পূর্বে গ্যালেনের কাজে অসঙ্গতি ধরতে পারেনি। বরং আরব ও পারস্যের গবেষকগণ বিষয়টি লক্ষ করলেও এই বিষয়ে কথা বলার সাহস পাননি। আর ওদিকে রোম সাম্রাজ্যের পতনের পর ইউরোপে অন্ধকার যুগের সূচনা হয়। যার ফলে গ্যালেনের কাজ নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি।
ষোড়শ শতাব্দীতে আন্দ্রে ভেসালিয়াস এবং উইলিয়াম হার্ভের মাধ্যমে গ্যালেনের প্রতিপত্তির পতন ঘটে। তারা মানবদেহে রক্ত সংবহন নিয়ে নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার করেন। এর মাধ্যমে গ্যালেনের অন্যান্য তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা শুরু হয় এবং ভুল ধরা পড়তে থাকে। তবে এত কিছুর পরেও গ্যালেনের সবচেয়ে বিতর্কিত চিকিৎসা পদ্ধতি ‘রক্তক্ষরণ চিকিৎসা’ ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ইউরোপে প্রচলিত ছিল। অথচ এই পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে মূত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা আরো দ্রুত মৃত্যুবরণ করতো বলে জানা যায়।
তবে এসব বর্ণনার মাধ্যমে গ্যালেনের কাজকে ছোট করে দেখা হচ্ছে না। আমাদের মাথায় রাখতে হবে, ক্লডিয়াস গ্যালেনের যুগে আজকের মতো কোনো প্রযুক্তি ছিল না। তার অসাধারণ চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে তিনি শূকর, বানরের দেহ ব্যবচ্ছেদ করে মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গের চিকিৎসা করার প্রচেষ্টা করেছেন। গ্যালেনের হাত ধরে আমাদের চিকিৎসাবিজ্ঞান সময়ের চেয়ে হাজার বছর এগিয়ে গিয়েছিল। এই অবদান কখনোই মুছে যাবে না।
এই আলোচিত চিকিৎসকের মৃত্যুসাল তারিখ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মাঝে দ্বন্দ্ব আছে। আনুমানিক ২০০ অব্দের দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন বলে ধারণা করা হয়। তবে আল কিফতির তারিখ আল হুকাম গ্রন্থে লেখা আছে, তিনি ২১৬ সালে সিসিলিতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি রোম থেকে সমুদ্রযাত্রায় এশিয়া মাইনর ভ্রমণের পথে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে বর্তমান ইতালির পালেরামোতে সমাধিস্ত করা হয়।
This is a Bangla article about Claudius Galen of Pergamon. He was the most feared, notorious physician in terms of his brevity to uptake different attempts to cure his patients.
References: All the references are hyperlinked.
Feature Image: Pixels