Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ক্লেনন কিং: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় এবং চিরাচরিত সমস্যাগুলোর একটি হলো বর্ণবাদ। বর্তমান কালে, মানবাধিকার নিয়ে মানুষের সচেতনতা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি হবার পরও যুক্তরাষ্ট্র বর্ণবাদ মুক্ত হতে পারেনি। মাত্র অর্ধ শতাব্দীকাল পিছনে ফিরে তাকালেও সেখানকার বর্ণবাদের চরমতম রূপ দেখে বিস্মিত হতে হবে। এমনই এক বিস্ময়ের চিরন্তন উদাহরণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে গিয়েছিলেন ক্লেনন ওয়াশিংটন কিং, যা যুগে যুগে বর্ণবাদকে কটাক্ষ করে, বর্ণবাদীদের আত্মঅহমিকায় ঘা দেয়।

অক্সফোর্ডে ভর্তির জন্য এই ছবিটিই জমা দিয়েছিলেন ক্লেনন; Image Source: pinterest.com

১৯৫৮ সালের কথা। ক্লেনন কিংয়ের তখন ৩৭ বছর। কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়ালেখার পাট চুকিয়েছেন কম সুযোগ সুবিধার স্কুলে। উচ্চশিক্ষা অর্জন করেছেন কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান থেকেই। বারবার বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বয়সটাও তার বেড়ে গিয়েছিল অনেক। তবে বয়স তার মূল সমস্যা ছিল না, তার সমস্যা ছিল তার একরোখা মনোভাব। যা একবার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন, তা না করে ক্ষান্ত হন না তিনি।

তেমনি এক হঠকারী সিদ্ধান্ত ছিল অক্সফোর্ডের মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সিদ্ধান্ত। উল্লেখ্য, আমেরিকায় তখনো অধিকাংশ নামকরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কৃষ্ণাঙ্গদের পড়ালেখার সুযোগ ছিল না। তার উপর মিসিসিপি ছিল কট্টর শ্বেত শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের চারণভূমি। সেখানকার একমাত্র রাষ্ট্রীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো কৃষ্ণাঙ্গ পড়ালেখা করবে, এ ভাবনা কোনো কৃষ্ণাঙ্গের মনেও ভুলক্রমেও উঁকি দিত না। অথচ ক্লেনন কিং গোঁ ধরে বসলেন, তিনি সেখানেই ভর্তি হবেন।

পরিবার, বন্ধুবান্ধব আর পাড়া প্রতিবেশী, সকলের অনুরোধ উপেক্ষা করে ক্লেনন চলে গেলেন অক্সফোর্ডে। রেজিস্ট্রেশনের লাইনে দাঁড়ানো পর্যন্তও কোনো সমস্যায় পড়তে হলো না তাকে। সবাই যখন দীর্ঘ লাইনে একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিটির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিল। ক্লেনন তখন মনে মনে উৎফুল্ল বোধ করছিলেন এই ভেবে যে, তিনিই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বর্ণবাদের প্রথা ভাঙতে চলেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে! হঠাৎ একটি কর্কশ কণ্ঠ তাকে তার ভাবনার জগৎ থেকে টেনে বের করে আনলো। “আমাদের সাথে চলুন”, মাত্রই ঘোর ভাঙা ক্লেননকে এই একটি মাত্র বাক্য বলেই হ্যাঁচকা টানে লাইন থেকে বের করে প্রশাসনিক ভবনের দিকে নিয়ে চললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা।

মিসিসিপি, অক্সফোর্ড; Image Source: pinterest.com

প্রশাসনিক ভবনে পৌঁছুতে পৌঁছুতে অপ্রস্তুতভাব কেটে গেল ক্লেননের। এখন বরং তার কর্কশ হবার পালা। প্রশাসনিক ভবনে প্রধান রেজিস্ট্রার ক্লেননকে ভর্তির শেষ দিন আসবার জন্য বললেন। ক্লেনন জানালেন, তিনি তাদের কথা মেনে নেবেন কিন্তু এর পেছনে যুক্তি দেখানো চাই। স্বাভাবিকভাবেই প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কোনো সন্তোষজনক যুক্তি তুলে ধরতে ব্যর্থ হলেন।

স্পষ্ট হয়ে গেল যে, তাদের একমাত্র উদ্দেশ্যই হলো একজন কৃষ্ণাঙ্গের ভর্তি ঠেকানো। ক্লেনন ক্ষোভে গর্জন করতে করতে প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে গেলেন এবং পুনরায় লাইনে দাঁড়িয়ে গেলেন। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা এসে তাকে লাইন থেকে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করলে একদফা হাতাহাতিও হয়ে যায়। এরই মধ্যে প্রশাসন পুলিশে খবর দিয়ে ফেলেছে। পুলিশ এসে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ক্লেননকে!

গ্রেফতারেই ঘটনার সমাপ্তি হলে তা ক্লেননের জন্য ভালোই হতো। কিন্তু তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কী ঘটতে চলেছে। এই সামান্য ঘটনার জন্য তাকে আদালতে পর্যন্ত তোলা হলো। ক্লেনন নিজের জন্য কোনো উকিল রাখেননি এই ভেবে যে, এই সমান্য ঘটনার আত্মপক্ষ সমর্থন নিজেই করতে পারবেন। আদতে হলোও তাই। তিনি নিজেই হাতাহাতির ঘটনার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হন। তবে বিচারকের মাথায় তখন অন্য ভাবনা ঘুরছিল।

হাতাহাতির ঘটনা ক্ষমাযোগ্য অপরাধ, কিন্তু একজন কৃষ্ণাঙ্গ অক্সফোর্ডে ভর্তি হতে এলো কেমন করে, এটাই তাকে বেশি ভাবাচ্ছিল! তার রায়টা ছিল ঠিক এরকম, “ক্লেনন একজন কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে অক্সফোর্ডে পড়তে আসার সাহস করলো কীভাবে? নিশ্চয়ই তার মানসিক সমস্যা রয়েছে! তাকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হলো!”

সিবি কিং; Image Source: georgiaencyclopedia.org

উচ্চ শিক্ষার জন্য গিয়ে এরকম দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি হতে হবে, তা হয়তো কস্মিনকালেও ভাবেননি ক্লেনন। কিন্তু তার এই দুঃস্বপ্নই আরো হাজারো ক্লেননের দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে ওঠার রাস্তাটা দেখিয়ে দিয়েছিল। ক্লেননকে আদালত যখন মানসিক হাসপাতালে পাঠালেন, পুরো আমেরিকায় তখন মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে নিন্দার ঝড় বইছে। ক্লেননের ছোট ভাই সিবি কিং ছিলেন একজন বিখ্যাত আইনজীবী এবং অধিকার কর্মী। তার প্রচেষ্টায় ৪ মাসের মাথায় মুক্তি পান ক্লেনন। মুক্তি পেয়েই গভর্নরের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে বর্ণবাদ বিরোধী অধিকার কর্মীদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তার উক্তিটি ছিল এরকম-

আমি মিসিসিপিতে পড়তে চাই না যেহেতু তারাও আমাকে সেখানে চায় না। আমি মনে করি, গভর্নর কোলম্যানের আমার নিকট ক্ষমা চাওয়া উচিত। এমনকি, আমাকে (পুলিশের কাছ থেকে) ছাড়িয়ে আনতে আমার পরিবারের যে হয়রানি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত। তাদের আচরণে আমার মোহ ভেঙে গেছে।

১৯২০ সালের ১৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আলবানি শহরের কৃষ্ণাঙ্গ সমাজের সম্মানিত ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ক্লেনন ওয়াশিংটন কিং সিনিয়রের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তার জ্যেষ্ঠ সন্তান ক্লেনন ওয়াশিংটন কিং জুনিয়র, যিনি ক্লেনন কিং নামেই সমধিক পরিচিত। কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য সংরক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করার পাশাপাশি হায়ারোগ্লিফিক্সেও দক্ষতা অর্জন করেন তিনি।

পড়ালেখা শেষ করে মিসিসিপির ‘এ অ্যান্ড এম’ কলেজে ইতিহাসের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে তার চাকরি যায়। আফ্রো-আমেরিকানদের অধিকার বিষয়ক সংগঠন ‘এনএসিসিপি’র তীব্র সমালোচনা এবং বর্ণের ভিত্তিতে জাতিগতভাবে আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের রোষের মুখে পড়েন। ৬০০ শিক্ষার্থী একত্রে তার বহিষ্কারের জন্য আন্দোলন শুরু করলে তিনি বছর শেষে চাকরিচ্যুত হন।

NAACP; Image Source: cincinnati.com

অবশ্য চাকরি চলে যাওয়ায় ক্লেননের কোনো সমস্যাই হয়নি। চাকরি না গেলেও কিছুকাল পর তিনি নিজেই তা ছেড়ে দিতেন! এক স্থানে বেশি দিন থাকার অভ্যাস তার ছিল না। এই চাকরি ছাড়বার পরই তিনি মিসিসিপিতে ভর্তি হবার পণ করেছিলেন। মিসিসিপির সেই ঘটনা তাকে কিছুটা খ্যাতি এনে দিলে তিনি রাজনীতি করবার সিদ্ধান্ত নেন। অবশ্য, সেই ঘটনার পর শ্বেতাঙ্গরা তার উপর অমানুষিক নিপীড়ন চালিয়েছিল দাবি করে। তিনি কিউবা আর জ্যামাইকায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে যান এক বছরের জন্য। আর একবছর পর দেশে ফিরেই আবার আরেক হঠকারী সিদ্ধান্ত নেন।

সাদাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গিয়ে যেখানে পাগল বলে চিহ্নিত হতে হয়, সেখানে সাদাদের প্রেসিডেন্ট হবার মতো উচ্চাভিলাষী সিদ্ধান্ত নেওয়া কেবল ক্লেনন কিংয়ের পক্ষেই সম্ভব ছিল। ১৯৬০ সালে আফ্রো-আমেরিকান পার্টির হয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন ক্লেনন কিং। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রতিদ্বন্দ্বীতায় তার জয়ের কোনো বাস্তবসম্মত সম্ভাবনা ছিল না। ১২ জন্য প্রার্থীর মধ্যে তিনি ১১তম হয়েছিলেন ১,৪৮৫টি ভোট পেয়ে। নির্বাচনে এই ভরাডুবির হতাশার মাঝেই তার তৃতীয় স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি স্ত্রীকে না জানিয়ে তাদের ৬ সন্তানকে নিজের কাছে এনে লুকিয়ে রাখলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।

১৯৬০ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের তালিকা; Image Source: uselectionatlas.org

গ্রেফতারের একমাসের মাথায় ১ সপ্তাহের জামিনে মুক্তি পান এবং গোপনে দেশ ত্যাগ করেন ক্লেনন কিং। এরপর ৬ বছর ধরে দেশান্তরি হয়ে কানাডা, মেক্সিকো, ইউরোপ, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, লিবিয়া, ইথিওপিয়ায় ঘুরে বেড়ান। ১৯৬৬ সালে দেশে ফিরে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন এবং ৪ বছর জেল খাটেন ক্লেনন। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নির্বাচনী খেলায় মত্ত হয়ে ওঠেন তিনি, যদিও সাফল্য ছিল অশ্বডিম্বের মতো অলীক বস্তু।

পুরো ‘৭০-এর দশক জুড়ে জর্জিয়ার গভর্নর নির্বাচন থেকে শুরু করে একে একে জর্জিয়ার বিধানসভা নির্বাচন, প্রাদেশিক আইনসভা নির্বাচন, ডোয়ার্টি গ্রাম আদালত নির্বাচন, আলবানি পৌর কমিশনার নির্বাচন সহ মোট ১২টি নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিটিতে ব্যর্থ হন তিনি। উপরন্তু একবছরের নির্বাচনী নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েন ভোট কেনার চেষ্টার দায়ে। কেননা, তার নির্বাচনী প্রচারণার সবচেয়ে প্রধান বিজ্ঞাপনী শ্লোগান ছিল, “একটি ভোট দিন, ১০০ ডলার নিন!”

এই মানসিক হাসপাতালেই ৪ মাস কাটিয়েছিলেন ক্লেনন; Image Source: uselectionatlas.org

এই ১ বছরের নিষেধাজ্ঞা মেনে নিলে ঝামেলা সহজেই চুকে যেতো। কিন্তু সহজ পন্থা ক্লেননের পছন্দ ছিল কবে? তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে বসলেন। বেশ কয়েকবছর শুনানি চলবার পর তার নিষেধাজ্ঞা ১ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬ বছর করা হয়! রাজনীতিতে হঠাৎ ব্রাত্য হয়ে পড়লে তিনি ধর্মীয় রাস্তায় পা বাড়ান। ‘অল ফেইথ চার্চ’ নামক একটি চার্চ পরিচালনা শুরু করেন এবং নিজেই এর প্রধান ধর্মযাজকের দায়িত্ব নেন।

অবশ্য এর আগেই তিনি শ্বেতাঙ্গবাদীদের চার্চগুলোকে একত্রিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন। তাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, শতভাগ ব্যর্থতার পরও তিনি এতগুলো নির্বাচন কেন করেছিলেন এবং ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারো নির্বাচন করবেন কিনা, তিনি অবজ্ঞাভরে উত্তর দিয়েছিলেন, “ভোটের জন্য ক্লেনন নির্বাচন করে না। আমি নির্বাচন করছি কেবল নির্বাচনেরই জন্য, এটাকে খামখেয়ালীপনাও বলতে পারেন।”

ক্লেনন কিং (১৯২০-২০০০); Image Source: youtube.com

১৯৯৩ সালে আবার নির্বাচনী মাঠে ফেরেন ক্লেনন কিং। এবার ডেড কান্ট্রি কমিশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন তিনি। এই নির্বাচন তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চেয়ে অধিক পরিচিতি পায় কেবল তার প্রচারণার জন্য, কিংবা আরো নির্দিষ্ট করে বললে একটি বিখ্যাত উক্তির জন্য। ব্রাউনভিলের লিবার্টি সিটিতে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে তিনি এ উক্তিটি করেছিলেন। উক্তিটি অনুবাদ না করে তার মুখের ভাষায় উল্লেখ করছি। “You’ve been fucked by all the smart-asses. So, now, on Tues., March 16, 1993, vote for a crazy nigger.” অর্থাৎ, এতদিন আপনারা সাদারা আপনাদের শোষণ করেছে, তাই এখন এই মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ, ১৯৯৩ এ আমার মতো কৃষ্ণাঙ্গকে ভোট দিয়ে দেখুন। 

২০০০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ৭৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন ক্লেনন কিং। তার জীবন ছিল খামখেয়ালী আর রোমাঞ্চে ভরপুর। উঁচু নাক, গোল গোল দুটি চোখ, ভাঁজমুক্ত চেহারার সুঠামদেহী ক্লেনন কিং একজন চমৎকার ব্যক্তিত্ব ছিলেন। শহরের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ, প্রতাপশালী কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারের সন্তান হয়েও নিজেকে শ্বেতাঙ্গদের জগতে স্থাপন করবার অদম্য প্রয়াস আর একরোখা মনোভাব তাকে ইতিহাসে জায়গা করে দিয়েছে।

নিজের শহরে থাকলে সহজেই প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারতেন, এরকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, “আমি এখানে থাকলেও কৃষ্ণাঙ্গ, ওখানে (শ্বেতাঙ্গদের মাঝে) গেলেও কৃষ্ণাঙ্গ, তাহলে ওখানে কেন যাবো না?” তার এ ধরনের ঔদ্ধত্বপূর্ণ বাক্যই তো পরবর্তীকালে শিক্ষাঙ্গণে অন্তত বর্ণবাদের বাঁধ ভাঙতে সক্ষম হয়েছিল। ১৯৫৮ সালে তার মিসিসিপিতে ভর্তির সেই দুঃসাহসিক প্রয়াসের মাত্র ৪ বছর পরই সেখানে কৃষ্ণাঙ্গরা পড়ালেখার সুযোগ পায়। বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন কিংবা অধিকারের সংগ্রামে ক্লেনন কিংয়ের নাম এভাবেই ইতিহাসে চিরস্থায়ী স্থান পেয়েছে।

This article is written in Bangla language. It's about the first black man to compete in American presidential election, Clennon King Jr.
All necessary references are hyperlinked inside the article. 

 

Featured Image: theweeklychallenger.com

Related Articles