Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ডাইনোসরের বিলুপ্তি থেকে হাইড্রোজেন বাবল চেম্বার: একজন আগাগোড়া সফল বিজ্ঞানীর গল্প

“আমি জীবাশ্মবিজ্ঞানীদের সম্পর্কে বাজে কথা বলতে চাই না, কারণ তারা খুব ভালো বিজ্ঞানী। তবে তাদের সাথে আমি ‘ডাকটিকিট সংগ্রহকারীদের বেশি মিল খুঁজে পাই!”

স্বভাবজাত ঝগড়াটে লুইস আলভারেজের ছিল নিজের উপর অগাধ বিশ্বাস। আর তাই নিজের তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণকারীদের একদমই সহ্য হতো না তার। এ কারণেই জীবাশ্মবিজ্ঞানীদের ব্যাপারে এমন উক্তি করেছিলেন তিনি, কারণ তার দেয়া গণবিলুপ্তির তত্ত্ব যে জীবাশ্মবিজ্ঞানীরা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। প্রায় সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া ‘ক্রিটেসিয়াস টারশিয়ারি এক্সটিংকশন’ বা কে-টি গণবিলুপ্তির কারণে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল ডাইনোসর। সেই গণবিলুপ্তি ঘটার পেছনে কারণ হিসেবে একটি বিশালাকায় উল্কাপাতকে দায়ী করেন আলভারেজ। তার এই গবেষণায় সবচেয়ে বড় সঙ্গী ছিলেন তারই ছেলে ওয়াল্টার।

লুইস আলভারেজ (১৯১১-১৯৮৮); ছবিঃ Youtube

“বাপকা বেটা, সেপাইকা ঘোড়া”-প্রবাদটি যথার্থ প্রমাণ করে আলভারেজের ছেলে ওয়াল্টারও তার বাবার মতোই খ্যাতিমান বিজ্ঞানী হন। তিনি একজন ভালো ভূতত্ত্ববিদও ছিলেন। ১৯৭৭ সালের দিকে ওয়াল্টার তার বাবাকে ভূপৃষ্ঠের কে-টি সীমানার সমস্যার কথা জানালেন। কে-টি সীমানা বলতে ভূপৃষ্ঠের একধরনের ধূসর রঙের কাদামাটির স্তরকে বোঝানো হয়, যা প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে গঠিত হয়েছিল। তবে সমস্যা যেখানে তা হচ্ছে এর বিস্তৃতি। ওয়াল্টার গবেষণা করে দেখতে পান, সারা বিশ্বেই কাদামাটির এই স্তরটি খুঁজে পাওয়া যায় এবং সর্বত্র এর বয়স একই। ব্যাপারটা আলভারেজের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি আরো একটি ব্যাপার এর সাথে যোগ করেন। পৃথিবীব্যাপী ডাইনোসরের যে ফসিল খুঁজে পাওয়া যায়, সেগুলো সর্বত্র এই কে-টি স্তরের নিচেই পাওয়া যায়। তার মানে এই স্তরটি পৃথিবীতে বড় কোনো দুর্যোগের ফলে একই সময়ে সৃষ্টি হয়েছিলে এবং পাশাপাশি ধ্বংস করেছিল ডাইনোসরের প্রজাতি।

তবে আধুনিক ভূতত্ত্ববিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, ভূপৃষ্ঠে কোনো স্তরের সৃষ্টি বা পরিবর্তন রাতারাতি হয় না, ধীরে ধীরে দীর্ঘ সময়ে হয়। এই ব্যাপারটিকে বলা হয় ‘ইউনিফর্মিটারিয়ানিজম’। এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে বাবা-ছেলে মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন, তারা এক সেন্টিমিটার পুরু কে-টি স্তর সৃষ্টি হতে কত সময় লাগে তা হিসাব করবেন। এই পরিমাপের জন্য আলভারেজ বেছে নিলেন ইরিডিয়াম। পৃথিবীর ভূত্বকে ইরিডিয়াম আসে মূলত উল্কাপাতের প্রভাবে। প্রাথমিকভাবে লুইস প্রতি বছর উল্কাপাত থেকে ভূত্বকে জমা হওয়া ইরিডিয়ামের পরিমাণ নির্ণয় করলেন। ইরিডিয়ামের এই গড় পরিমাণের সাথে কে-টি স্তরের ইরিডিয়ামের পরিমাণ তুলনা করলেই বেরিয়ে আসবে স্তরটি তৈরি হতে কত সময় লেগেছিল। আলভারেজ এবার কে-টি স্তরের কাদামাটির নমুনা পাঠিয়ে দিলেন বিখ্যাত পারমাণবিক রসায়নবিদ ফ্রাংক আসারোর নিকট। আসারো তার গবেষণাগারে পরীক্ষা করে যে তথ্য দিলেন, তাতে বিস্মিত হওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। আসারোর পরীক্ষা থেকে বেরিয়ে আসে যে কে-টি স্তরের ইরিডিয়ামের পরিমাণ সাধারণ গড় পরিমাণের চেয়ে কয়েকশগুণ বেশি! ব্যবধান এতো বেশি যে তা অস্বাভাবিকের পর্যায়ে পড়ে। ১৯৮০ সালে এসব প্রমাণাদিসহ আলভারেজ ও ওয়াল্টার তাদের গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, যেখানে তারা কে-টি এক্সটিংকশনের জন্য বিশালাকারের উল্কাপাতকে দায়ী করেন।

কে-টি স্তরের মাটি পরীক্ষা করছেন আলভারেজ ও তার ছেলে ওয়াল্টার; ছবিঃ nautil.us

আলভারেজের হিসাব অনুযায়ী দশ কিলোমিটার ব্যাসের দানবাকৃতির একটি উল্কা আঘাত হেনেছিল পৃথিবীতে ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে। উল্কাটি পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে আঘাত করে ২৫ কিলোমিটার/সেকেন্ড গতিতে! এই উল্কাপাতের ফলে যে মহাবিস্ফোরণ সৃষ্টি হয়, তার প্রভাবে পুরো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল অস্বাভাবিক পরিমাণ ধূলিকণা, পাথর ও বিষাক্ত গ্যাসে ভরে যায়। ধুলোবালির পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে সূর্যরশ্মিও বায়ুমণ্ডল ভেদ করে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছুতে পারে নি! সূর্যের আলোর অভাবে একদিকে গাছপালার সালোকসংশ্লেষণ বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে পৃথিবী হয়ে ওঠে অত্যন্ত শীতল। ফলে খাবার এবং তাপের অভাবে মারা যায় ডাইনোসর। আর এসব ধূলিকণা ধীরে ধীরে সমগ্র পৃথিবীতে কে-টি কাদামাটির স্তর সৃষ্টি করে।

উল্কাপাতের ফলে ডাইনোসরের বিলুপ্তি; ছবিঃ National Geographic

নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী লুইস আলভারেজ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রানসিসকোতে ১৯১১ সালের ১৩ জুন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাবা ক্লেমেন্ট আলভারেজ এবং মা হ্যারিয়েট স্মিথ, উভয়েই ছিলেন স্বনামধন্য চিকিৎসক। আলভারেজের শিক্ষাজীবন শুরু হয় সানফ্রানসিসকোর একটি পলিটেকনিক স্কুলে। মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেন মিনেসোটার রোচেস্টার স্কুলে। ১৯২৮ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে ভর্তি হন লুইস আলভারেজ। তবে দু’বছর পড়ালেখার পর দেখলেন রসায়নের চেয়ে পদার্থবিজ্ঞান তাকে অধিক টানছে। তাছাড়া রসায়নে তার ফলাফল ছিল খুবই খারাপ। তাই রসায়নের অধ্যায় সেখানেই শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলেন আলভারেজ।

এবার পদার্থবিজ্ঞানে পড়ালেখা শুরু করলেন আলভারেজ। ১৯৩২ সালে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে সম্মান ডিগ্রি লাভ করলেন। এর দু’বছর পর মাস্টার্স এবং এরও দু’বছর পর ১৯৩৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করলেন। এ সময় তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন আরেক নোবেল বিজয়ী পদার্থবিদ আর্থার কম্পটনকে। পদার্থবিজ্ঞানের প্রতি আলভারেজের উৎসাহ অনেকাংশে বৃদ্ধি পায় কম্পটনের সাহচর্যে। ১৯৩৩ সালে কম্পটন ও তার ছাত্র আলভারেজ একটি ফিজিক্যাল রিভিউ প্রকাশ করেন, যেখানে মহাজাগতিক রশ্মিগুলো ধনাত্মক চার্জে চার্জিত বলে দাবি করা হয়। এই গবেষণাটি বিজ্ঞানীমহলে ব্যাপক প্রশংসা লাভ করে। প্রবীণ বিজ্ঞানী কম্পটন এই গবেষণার কৃতিত্ব তার ছাত্র যুবক আলভারেজকেই দেন। আলভারেজের বিজ্ঞানী হয়ে ওঠার শুরু এখানেই।

কম্পটনের সাথে গবেষণা করছেন তরুণ আলভারেজ; ছবিঃ Wikipedia

লুইস আলভারেজের প্রথম বড় সাফল্য আসে ১৯৩৭ সালে কে-ইলেকট্রন ক্যাপচার প্রমাণ করার মাধ্যমে। এই কে-ইলেকট্রনের ব্যাপারটি তেজস্ক্রিয় মৌলের পরিবর্তন হওয়ার সাথে জড়িত। তেজস্ক্রিয় মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াস এর সবচেয়ে কাছের কক্ষপথের ইলেকট্রনকে গ্রহণ করে। নিউক্লিয়াসে ইলেকট্রনটি একটি প্রোটনের সাথে যুক্ত হয়ে একটি নতুন নিউট্রন এবং একটি নিউট্রিনো গঠন করে। নিউট্রিনোটি নিউক্লিয়াস থেকে নিক্ষিপ্ত হয় এবং কিছু শক্তি নির্গমন ঘটে। ফলে পরমাণুটিতে পূর্বের চেয়ে একটি প্রোটন কম এবং একটি নিউট্রন বেশি অবশিষ্ট থাকে এবং পরমাণুটি ভিন্ন মৌলের পরমাণুতে পরিণত হয়। এ ব্যাপারটি দীর্ঘদিন যাবত বিজ্ঞানীরা বলে আসলেও প্রমাণ করতে পারছিলেন না। আলভারেজই প্রথম এক্স-রে ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাপারটি প্রমাণ করেন। এরপর তিনি বেশ কিছুদিন সাইক্লট্রন নিয়ে গবেষণা করেন।

কে ইলেকট্রন ক্যাপচার প্রক্রিয়া; ছবিঃ Famous Scientists

শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সময় আলভারেজ বিমান চালনা শিখেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যখন গবেষণাকাজে পুরোপুরি নিবিষ্ট, তখনও তিনি মাঝে মাঝেই শখের বশে বিমান চালনা করতেন। বিমান চালাতে গিয়েই তিনি আরো নিখুঁত রাডারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন এবং তৈরি করেন ‘মাইক্রোওয়েভ ফেজড অ্যারে এন্টেনা’। এটি তখনকার সময়ে প্রচলিত রাডারের চেয়ে বহুগুণ সূক্ষ্ম সিগন্যাল দিতে সক্ষম হয়, বিশেষ করে খারাপ আবহাওয়ায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আলভারেজকে আমেরিকান সেনাবাহিনী জার্মানির পারমাণবিক বোমা তৈরির বিষয়টিকে নিশ্চিত করার পদ্ধতি আবিষ্কারের অনুরোধ জানায়। আলভারেজ দ্রুত সময়ে আমেরিকান বাহিনীকে জানালেন যে, জার্মানির উপর দিয়ে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করতে হবে যা তেজস্ক্রিয় গ্যাস এবং জেনন-১৩৩ এর অস্তিত্ব নির্ণয় করবে। এই জেনন-১৩৩ পারমাণবিক চুল্লি থেকে উৎপন্ন হয়। আলভারেজের কথামতো ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছিল এবং তেজস্ক্রিয় গ্যাসের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

১৯৪৪ সালে লুইস আলভারেজ ‘প্রোজেক্ট ম্যানহাটন’এ যোগ দিতে লস এঞ্জেলসে পৌঁছান। তিনি প্রথমে প্লুটোনিয়াম বোমার জন্য ইলেকট্রিক্যাল বিস্ফোরক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তিনি পারমাণবিক বিস্ফোরণে নির্গত শক্তির পরিমাণ নির্ণয়ের জন্যও একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন। জাপানে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের সময় পর্যবেক্ষক দলের সাথে আলভারেজও জাপান গিয়েছিলেন বোমার শক্তি নির্ণয়ের জন্য। যুদ্ধ শেষে তিনি বার্কলেতে ফিরে এসে শিক্ষকতায় পুরোপুরি নিবিষ্ট হন এবং গবেষণা শুরু করেন বিভিন্ন কণা নিয়ে।

প্রোজেক্ট ম্যানহাটনে কাজ করছেন আলভারেজ; ছবিঃ Famous Scientists

আলভারেজ যখন তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ করেন তখনো পদার্থবিজ্ঞানে মৌলিক কণিকা বলতে কেবল ইলেকট্রন আর প্রোটনের পরিচয় হয়েছে। অথচ তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হতে হতে চ্যাডউইকের নিউট্রন আবিষ্কার এবং এন্ডারসনের পজিট্রন আবিষ্কার কণা পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্র অনেক প্রশস্ত করে দেয়। বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম জনপ্রিয় বিষয় ছিল মৌলিক কণিকা নিয়ে গবেষণা। আলভারেজও এই গবেষণায় যোগ দেন। এসব কণিকা আবিষ্কার করা হতো ‘ক্লাউড চেম্বার’ নামক একপ্রকার যন্ত্রের সাহায্যে। এই পদ্ধতির উন্নত ভার্সন তৈরি করেন বিজ্ঞানী গ্লেসার। তিনি তরল ইথারে পূর্ণ ‘বাবল চেম্বার’ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এজন্য ১৯৬০ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন গ্লেসার।

আলভারেজ গ্লেসারের চেয়ে এক ধাপ উন্নত চিন্তা করলেন। তিনি বাবল চেম্বারে ইথারের পরিবর্তে তরল হাইড্রোজেন ব্যবহার করলেন। তরল হাইড্রোজেনের মধ্য দিয়ে একটি উচ্চশক্তির কণিকা গমন করলে হাইড্রোজেন ফুটতে শুরু করবে এই ভাবনা থেকেই তার এই কাজ। ১৯৫৪ সালে আলভারেজ বার্কলেতে নিজের গবেষণাগারে এরকম একটি হাইড্রোজেন বাবল চেম্বারের পরীক্ষা চালান। ১৯৫৮ সালে তিনি তার সহযোগীদের সাথে বড় পরিসরে হাইড্রোজেন বাবল চেম্বারের পরীক্ষা চালান যা সফল হয়। এজন্য ১৯৬৮ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন আলভারেজ। এর পরের বছরই তিনি পিরামিডের ভেতর লুকানো চেম্বার পরীক্ষা করতে মহাজাগতিক রশ্মি ব্যবহার করে এক্স-রের মতো ছবি তোলার একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। পদ্ধতিটি সাফল্য ও জনপ্রিয়তা, দুটোই পেয়েছিল।

হাইড্রোজেন বাবল চেম্বার; ছবিঃ flickr.com

লুইস আলভারেজ ১৯৮৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর অন্ননালীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর সময় তার উভয় স্ত্রী স্মিথউইক এবং জেনেট জীবিত ছিলেন। মৃত্যুর দু’বছর পরই ম্যাক্সিকোর চিকজুলুব জ্বালামুখ আবিষ্কৃত হলে ভূতত্ত্ববিদগণ তার গণবিলুপ্তি বিষয়ক উল্কাতত্ত্বের সাথে একমত হন। বর্তমানে সেই ঐতিহাসিক গণবিলুপ্তির জন্য উল্কাপাতই সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত।

ফিচার ইমেজ: Stuff You Missed in History Class

Related Articles