Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

গুটেনবার্গের ছাপাখানা, ছাপাখানার গুটেনবার্গ

১৭ শতকের শেষভাগে এসে বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার এবং এর কিছুকাল পরে জেমস ওয়াটের আরও উন্নত মডেলের বাষ্পীয় ইঞ্জিন নির্মাণ, শিল্প বিপ্লবের সূচনা এনে দেয় আর বদলে যায় পৃথিবীটা। পৃথিবীতে আধুনিক সভ্যতার সূচনার পেছনে এই অধ্যায়টিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অভিহিত করা হয়। কিন্তু পৃথিবীতে আধুনিক সভ্যতার প্রকৃত বিপ্লব ঘটে এর বহু আগেই। ১৫ শতকের মধ্যভাগে জোহানেস গুটেনবার্গের ছাপাখানা আবিষ্কার মুদ্রণ ব্যবস্থায় বিপ্লব আনে। আর এই বিপ্লব পৃথিবীতে রেনেসাঁর সূত্রপাত করে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারণ তো এখান থেকেই শুরু। মুদ্রণযন্ত্র সহজলভ্য হওয়ায় বই ছাপাও সুলভ এবং সহজ হয়ে ওঠে। আর তখন থেকে পৃথিবীর ইতিহাস আরো সহজে ছাপার অক্ষরে বইয়ের পাতায় স্থান পেতে শুরু করে। অথচ যার হাত ধরে এই ছাপাখানা আবিষ্কার, তার জন্মের ইতিহাসই সঠিকভাবে ছাপা হয়নি!

জোহান গুটেনবার্গ (১৪০০-১৪৬৮ খ্রিস্টাব্দ); Image Source: tjed-mothers.com

১৪০০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন, যে তারিখটিকে বইয়ের পাতায় গুটেনবার্গের জন্মসাল হিসেবে লেখা হয়, তা কিন্তু তার প্রকৃত জন্মসাল নয়। জার্মানির মাইনজ শহরে ১৩৯৪ থেকে ১৪০৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনো এক সময় জন্মগ্রহণ করেছেন এই মহান উদ্ভাবক। ১৮৯০ সালের দিকে মাইনজ শহর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল ঘেঁটে, তার একটি প্রতীকী জন্মসাল নির্ধারণ করে দেন, যা বিশ্বব্যাপী প্রচলিত হয়। যা-ই হোক, গুটেনবার্গের বাবা ফ্রায়েল জেনসফ্লেইখ খুব সম্ভবত একজন স্বর্ণকার ছিলেন, যিনি একইসাথে কাপড়ের ব্যবসা করতেন এবং রাজকীয় টাকশালে কাজ করতেন। বাবার কাছে বংশপরম্পরায় স্বর্ণকারের কাজ শিখেছিলেন গুটেনবার্গ। তার মা এলসে উইরিখ সম্ভবত ফ্রায়েলের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন।

জোহানেস গুটেনবার্গের নামের সাথে ‘গুটেনবার্গ’ শব্দটি সম্ভবত তার বাড়ির নাম থেকেই যুক্ত হয়। তখন জার্মানিতে বংশগত ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বাড়ির নামই হতো বাড়ির পুরুষের পদবি। গুটেনবার্গদের বাড়ির নাম ছিল ‘জু গুটেনবার্গ’। গুটেনবার্গের শৈশব সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানা যায় না। ইতিহাসের বিভিন্ন উৎসে তার শিক্ষাজীবনের যে সকল বর্ণনা পাওয়া যায়, সেগুলোর মধ্যে কোনো সামঞ্জস্য নেই। খুব সম্ভবত আরফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন তিনি। এরপর স্ট্র্যাসবুর্গ শহরে গিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। কিন্তু ঠিক কী কারণে শহর পরিবর্তন করেছিলেন তা জানা যায় না। ১৪৩৪ সালে তারই লেখা একটি চিঠি থেকে জানা যায় যে, তার স্ট্র্যাসবুর্গ শহরে কয়েকবছর স্বর্ণকারের কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে । মূল্যবান পাথর কাঁটা এবং সেগুলো পালিশ করার কাজও করেন কিছুকাল। তবে এসব কাজ তিনি কোথায়, কীভাবে শিখেছিলেন তা জানা যায় না।

জার্মানির স্ট্র্যাসবুর্গ শহর; Image Source: independent.co.uk

‘আভেন্টুর উন্ড খুনস্ট’ (জার্মান) যার অর্থ ‘উদ্যম এবং শিল্প’। সক্রিয় ছাপাখানা আবিষ্কার নিয়ে নিজের গবেষণার এই নামই দিয়েছিলেন গুটেনবার্গ, যা মানুষের মনে যথেষ্ট রহস্যের সৃষ্টি করে। অবশ্য তার ইচ্ছাই ছিল ব্যাপারটা রহস্যাবৃত করে কিছুটা অতিরঞ্জিত করা! তবে এর একটা পটভূমি তো আছেই। ১৪৩৯ খ্রিস্টাব্দে গুটেনবার্গ গিয়েছিলেন স্ট্র্যাসবুর্গের আচেন শহরে। এখানে প্রতিবছর হাজারো মানুষ তীর্থযাত্রায় আসতো বিভিন্ন পবিত্র স্থান ভ্রমণ করতে। এ ভ্রমণকারীদের মধ্যে একটি কুসংস্কার প্রচলিত ছিল। তা হচ্ছে এই যে, আয়নায় তীর্থস্থানের পবিত্র বস্তুসমূহের আলো প্রতিফলিত করে কোনো বাক্স সদৃশ কিছুর মধ্যে ফেলে তা পবিত্রতা এবং আধ্যাত্মিক শক্তিতে পরিপূর্ণ করা যায় এবং বহন করে বাড়ি নিয়ে আসা যায়! এই বিশ্বাস থেকে তারা কপালে আয়না লাগিয়ে রাখতো। তাই তীর্থযাত্রার সময় হলেই প্রতিবছর আচেনে আয়নার চাহিদা বেড়ে যেত ব্যাপকভাবে। তাই আয়না বিক্রয় করে কিছু মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে আচেনে চলে আসেন গুটেনবার্গ। এক ধনী বিনিয়োগকারীর অর্থে ব্যাপক পরিমাণে আয়না প্রস্তুত করেন। 

দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই বছর আচেনে এক নজিরবিহীন বন্যা হয় এবং প্লেগ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। পোপ আগামী এক বছরের জন্য আচেনে সকল ধরনের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেন। ফলে গুটেনবার্গের তৈরি আয়না থেকে যায় অবিক্রিত। এই আয়নার উপর যে বিশাল অঙ্কের অর্থলগ্নি করা হয়েছে তা কীভাবে শোধ করবেন সেই চিন্তায় বিভোর গুটেনবার্গ বই ছেপে আয় করার ফন্দি আঁটেন। কীভাবে সহজে বই ছেপে অধিক মুনাফা অর্জন করা যাবে, এই ভাবনা থেকেই ‘আভেন্টুর উন্ড খুনস্ট’ নামক রহস্যময় গবেষণা নিয়ে হাজির হন তিনি, যা মুদ্রণব্যবস্থাকে করে তুলবে একেবারে সহজ সুলভ। এর পরবর্তী সময়ের ঘটনাবলী খুবই ধোঁয়াশাপূর্ণ। ১৪৪০ সালেই তিনি তার সক্রিয় ছাপা অক্ষরের ধারণা দিয়েছিলেন এটা নিশ্চিত। তবে সে বছরই তিনি তা আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন কিনা তা নিয়ে আছে সংশয়। উপরন্তু পরবর্তী বেশ কয়েক বছরের জন্য তিনি যেন ইতিহাস থেকে গা ঢাকা দেন! ১৪৪৮ সালে হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়া গুটেনবার্গ আবার ইতিহাসের পাতায় ফিরে আসেন। ধার-দেনা করে কাজ শুরু করেন তামার হরফ প্রস্তুতি নিয়ে।

গুটেনবার্গের আভেন্টুর উন্ড খুনস্ট; Image Source: Booklooker.de

আফসোসের ব্যাপার হলো, ইতিহাসের এমন বৈপ্লবিক অধ্যায়ের সূচনাটা ঠিক কীভাবে হয়েছিল তার সঠিক বর্ণনাটা আমাদের কাছে নেই। গুটেনবার্গ কীভাবে, কোন সূত্র ধরে তার আবিষ্কারটি সম্পন্ন করেন তা আমাদের পক্ষে নিশ্চিতভাবে জানা সম্ভব হয় না। সম্ভবত ১৪৫০ খ্রিস্টাব্দে তার সক্রিয় ছাপাখানা কাজ করতে শুরু করে, যেখানে প্রথম ছাপা হয়েছিল একটি জার্মান কবিতা। তবে তার এ সকল কাজ পুরোটাই ছিল ধার-দেনার উপর ভিত্তি করে। নিজের ছাপাখানাকে জনপ্রিয় করতে তিনি আরো বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিলেন এবং ল্যাটিন গ্রামার ও বাইবেল ছাপার কাজ হাতে নেন। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে বাইবেলের ৪২টি আয়াত নিয়ে ছোট্ট একটি সংস্করণের ১৮০ কপি ছাপান গুটেনবার্গ, যা ইতিহাসে ‘গুটেনবার্গ বাইবেল’ বলে পরিচিত হয়ে আছে। এই বাইবেল প্রকাশ তার জন্য দুর্ভাগ্য এবং সৌভাগ্য দুটোই এনে দেয়। সৌভাগ্য হচ্ছে তার ছাপাখানার দেশব্যাপী সুনাম এবং পরিচিতি। কিন্তু ব্যবসায়িক সাফল্যের ছিটেফোঁটাও ছিল না এর মাঝে।

“ঐ বিস্ময়কর ব্যক্তির সম্বন্ধে শোনা সব কথাই সত্য। আমি তার লিপিটি পড়েছি যা বেশ পরিচ্ছন্ন এবং সহজপাঠ্য ছিল। আপনি অনায়াসে এবং অবশ্যই চশমা ছাড়াই সেটি পড়তে পারবেন!”- গুটেনবার্গ বাইবেল সম্বন্ধে কার্ডিনাল কার্ভাহালকে লেখা পোপ দ্বিতীয় পায়াসের চিঠি।

গুটেনবার্গের মুদ্রণযন্ত্র; Image Source: themuseumofhistory.weebly.com

গুটেনবার্গ তার ছাপাখানার জন্য বড় অংকের অর্থ ধার নিয়েছিলেন শহরের সবচেয়ে ধনী ঋণদাতা ফাস্ট শফারের কাছ থেকে। ফাস্টকে নিজের ছাপাখানার অংশীদারও করেছিলেন। কিন্তু নিঃস্বার্থ গুটেনবার্গ কখনো ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করেননি যে, ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য ‘নিজের ঢোল নিজে পেটানো’র প্রয়োজন আছে! বইয়ের উপর নিজের নাম এবং নিজের ছাপাখানার নাম উল্লেখ না করা ছিল তার চরম ভুল সিদ্ধান্ত। ১৪৫৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দেউলিয়া হয়ে যান তিনি। তার ঋণের পরিমাণ ২০ হাজার গিল্ডার ছাড়িয়ে যায়। “ঋণের টাকা ব্যবসায়ে না বিনিয়োগ করে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যয় করার” অভিযোগে ফাস্ট শফার তার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন। আদালত স্ট্র্যাসবুর্গে গুটেনবার্গের ছাপাখানাটির পুরো মালিকানাই ফাস্টকে দিয়ে দেয় এবং সাথে দেয়া হয় তখনো পর্যন্ত ছাপা হওয়া সকল বাইবেলের কপির অর্ধেক। এ রায়ের পরদিনই ছাপাখানা নিজ নামে চালাতে শুরু করেন ফাস্ট এবং ছাপা বইয়ে সদম্ভে নিজের নাম প্রচার করতে থাকেন, যেখানে গুটেনবার্গের অবদানের কোনো উল্লেখই ছিল না!

বিষণ্ণ, বিধ্বস্ত, হতাশ গুটেনবার্গ আদালতের রায় শ্রদ্ধার সাথেই মেনে নেন। নিজের তৈরি প্রথম ছাপাখানা ছেড়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ছোট করে আরেকটি ছাপাখানা চালু করেন। তার দ্বিতীয় ছাপাখানাটি মেইনজ শহরের এক ভয়াবহ দাঙ্গায় ধ্বংস হয়। ভাগ্যের সহায়তা না পেয়ে, নিজ শহর ছেড়ে এটভিল শহরে চলে যান প্রৌঢ় গুটেনবার্গ। ছাপাখানার প্রতি ভালোবাসা আর ছাপা বইয়ের কালির গন্ধ সর্বদা তার মনকে আচ্ছন্ন করে রাখতো। তাই এটভিলেও স্বল্প পরিসরে পুনর্বার ছাপাখানা চালু করেন তিনি। এ পর্যন্ত ইতিহাস পড়ার পর মনে হতে পারে গুটেনবার্গ ছিলেন নিকোলা টেসলা কিংবা জোহান মেন্ডেলের মতো দুর্ভাগা। কিন্তু ইতিহাস তার সাথে এতটা অবিচার করেনি।

কংগ্রেস লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত গুটেনবার্গ বাইবেল; Image Source: loc.gov

মেইনজ শহরের দাঙ্গা কঠোর হস্তে দমন করেন তখনকার আর্চবিশপ ভন নাসাউ। শহরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পরই তিনি গুটেনবার্গ সম্বন্ধে জানতে পারেন। ছাপাখানার প্রকৃত আবিষ্কারকের এমন দুর্ভাগা পরিণতিতে ব্যথিত হন নাসাউ। তার চেষ্টায় গুটেনবার্গকে প্রাপ্য সম্মান এবং স্বীকৃতি প্রদান করে মেইনজ শহর কর্তৃপক্ষ। আদালত থেকে তাকে ‘হফম্যান’ বা ‘জেন্টেলম্যান অব দ্য কোর্ট’ উপাধি দেয়া হয়। তার জন্য মাসিক ভাতা চালু করা হয়। তার খাদ্যসামগ্রী এবং পানীয়ের উপর করমুক্তি ঘোষণা করা হয়। তিনি তাই ফিরে গিয়েছিলেন মেইনজ শহরে। কিন্তু এই সুখ বেশিদিন ভোগ করতে পারেননি গুটেনবার্গ। ১৪৬৮ খ্রিস্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাকে মেইনজ শহরের ফ্রানসিস্কান চার্চে সমাহিত করা হয়। পর্বর্তীকালে এই চার্চটি ধ্বংস করা হলে তার সমাধি হারিয়ে যায়। তার মৃত্যুর ঠিক ১০০ বছর পর প্রথমবারের মতো তার একটি ছবি আঁকা হয় যা নিশ্চিতভাবেই তার প্রকৃত ছবি নয়।

গুটেনবার্গ সক্রিয় হরফ ব্যবহার করে কীভাবে বই ছাপাতেন তা রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে। প্রথমদিকে ইতিহাসবিদগণ মনে করতেন, গুটেনবার্গ ধাতব পাঞ্চ এবং ম্যাট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। কিন্তু তার ছাপানো বাইবেলের সংরক্ষিত ৪৮টি কপি পরীক্ষা করে দেখা গেছে লেখার হরফের আকার আকৃতিতে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে, যা ম্যাট্রিক্স পদ্ধতির মুদ্রণে থাকার কথা নয়। তবে এটা নিশ্চিত যে, তিনি নিজের তৈরি ব্লক প্রিন্টিং ব্যবস্থার সাথে স্প্রিং প্রিন্টিং ব্যবস্থার সমন্বয় ঘটিয়ে সক্রিয় হরফের মুদ্রণযন্ত্র তৈরি করেন। এই ছাপাখানা পরিচালনা এত জটিল এবং সময়সাপেক্ষ ছিল যে গুটেনবার্গ ও ফাস্টের প্রথম ছাপাখানায় ২৫ জন কর্মচারী ৩০ মিনিট কাজ করে কেবল এক পৃষ্ঠা ছাপাতে পারতো!

গুটেনবার্গের ছাপাখানা; Image Source: webdo.tn

গুটেনবার্গের ছাপাখানায় এক পৃষ্ঠা ছাপা হতে আধা ঘন্টা সময় হয়তো লেগে যেত। কিন্তু সেটাই ছিল হস্তনির্ভর ব্লক প্রিন্টিংয়ের চেয়ে অনেক দ্রুত। তার এই আবিষ্কারের পূর্বে প্রতিটি বইয়ের পেছনে ব্যয় হতো ব্যাপক শ্রম এবং সময়। যে কারণে বইয়ের দাম ছিল অত্যন্ত বেশি, যে ব্যয় কেবল ধনীক শ্রেণীর লোকজনই বহন করতে পারতো। তাই জ্ঞানের বিকাশ কেবল সম্ভ্রান্ত শ্রেণীর মাঝেই আবদ্ধ ছিল। কিন্তু গুটেনবার্গের ছাপাখানা বই ছাপানো সহজ করে দেয়, যা জ্ঞান বিকাশে বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে, মুদ্রণের গতি বেড়ে যাওয়ায় ইউরোপীয় দেশগুলোতে সংবাদ পৌঁছতে শুরু করে আগের চেয়ে অনেক দ্রুত সময়ে। বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণাগুলোও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে দেশের সীমানার বাইরে।

গুটেনবার্গের এই অবদানের প্রতি সম্মান জানাতেই তো মার্শাল ম্যাকলুহান তার ছাপা সংস্কৃতি আর জ্ঞানের বিকাশ নিয়ে লেখা বইয়ের নাম দেন ‘গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি: দ্য মেকিং অব আ টাইপোগ্রাফিক ম্যান’। ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব গুটেনবার্গকে মনে রাখতে নাসা একটি গ্রহাণুর নাম দিয়েছে ‘৭৭৭ গুটেমবার্গা’। শেষ করবো তার অবদান সম্পর্কে ভুবনখ্যাত মার্কিন লেখক মার্ক টোয়েনের একটি উক্তি দিয়ে।

“পৃথিবীটা আজ ভালো-মন্দ যেমনই হোক, তা গুটেনবার্গের কাছে ঋণী!”- মার্ক টোয়েন

ফিচার ছবি: discovery-zone.com

Related Articles