Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হেলেন কেলার: শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে জয়গান করা এক যোদ্ধা

“আমার দৃষ্টিদ্বয় তারা সরিয়ে নিল যেখানে যা হওয়া উচিত ছিল
কিন্তু আমি স্মরণ করি মিল্টনের স্বর্গখনি,
আমার শ্রবণদ্বয় তারা সরিয়ে নিল যেখানে যা হওয়া উচিত ছিল
বিটোফেন এসে মুছালো আমার চোখের পানি।”
-হেলেন কেলার

জীবন যার ভাষাহীন, প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ থেকে যিনি বঞ্চিত, এক কথায় শ্রবণহীন জীবন- এ ধরনের মানুষকে বিধাতার চরম অভিশাপ হিসেবেই মনে করেন অনেকে। কিন্তু এমনও একজন ছিলেন যিনি তা কখনোই বিশ্বাস করতেন না। এরকম অসহায়ত্বকে জয় করে পৃথিবীর ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন যে ব্যক্তি, তিনি আর কেউ নন- মানবতার পূজারী মহীয়সী নারী হেলেন কেলার। একাধারে তিনি ছিলেন সাহিত্যিক ও মানবতাবাদী। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বহু অন্ধ, বিকলাঙ্গ, পঙ্গু মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের উৎসাহিত করেছেন, তাদের মধ্যে জাগিয়েছেন বাঁচার অনুপ্রেরণা। কিন্তু জীবনের শুরুতে তিনি হয়ে পড়েছিলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও শ্রবণশক্তিহীন।

দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী হেলেন কেলার; Source: youtube.com

১৮৮০ সালের ২৭ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা তাসকাম্বিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হেলেন। পিতা আর্থার কেলার ছিলেন সামরিক বিভাগের একজন অফিসার। মা কেইট আডামসের ভালবাসা ও আদরে বেড়ে উঠা হেলেন শৈশবে ছিলেন ভীষণ চঞ্চল প্রকৃতির। কিন্তু তার এই চঞ্চলতা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। এক বছর সাত মাস বয়সে দুর্ভাগ্যজনক এক ঘটনা ঘটে তার জীবনে।

স্নান করানোর সময় মায়ের কোল থেকে হঠাৎ পড়ে যান শিশু হেলেন। সেই আঘাতে সাময়িক জ্ঞান হারানোর পর তা ফিরে এলেও তার মা লক্ষ্য করলেন তার আদরের সন্তানের দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তি একেবারেই লোপ পেয়েছে। নিরুপায় পিতামাতা তখন শরণাপন্ন হলেন ডাক্তারের নিকট। ডাক্তার অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানালেন তার এই শারীরিক বিপর্যয়ের কারণ হলো মস্তিষ্ক ও পাকস্থলীর আঘাত। আর এভাবে চিরদিনের জন্য শিশু হেলেনের জীবন থেকে হারিয়ে যায় তার কথা বলা, শোনা এবং দেখার শক্তি।

এর কিছুদিন পর আর্থারের সাথে দেখা হয় সে সময়ের ওয়াশিংটনের আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের। ইনিই হলেন যোগাযোগ প্রযুক্তির অগ্রদূত টেলিফোন আবিষ্কারক বেল। আর্থার পরামর্শ গ্রহণের জন্য তার কন্যাকে নিয়ে যান বেলের কাছে। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বেল জানালেন হেলেন আর কোনোদিন চোখে দেখতে এবং কানে শুনতে পারবে না। তবে গ্রাহাম বেল হেলেনের তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা দেখে আর্থারকে হেলেনের জন্য যথাযথ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে বলেন যাতে স্বাভাবিক জীবনের কাছাকাছি একটি সুন্দর জীবন ফিরে পেতে পারে হেলেন।

বেল বোস্টনের পার্কিনস ইনস্টিটিউশনে হেলেনকে ভর্তি করে দেয়ার জন্য বলেন। এই প্রতিষ্ঠানটির কাজ ছিল অন্ধদের শিক্ষাদান। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ডাক্তার হো। হেলেনের শিক্ষাগ্রহণের ভার তিনি নিজ হাতে তুলে নেন। তিনি হেলেনকে স্নেহ দিয়ে লেখাপড়া শেখাতে শুরু করেন। কিন্তু অকস্মাৎ ডাক্তার হো মারা গেলে হেলেনের পিতামাতা পুনরায় তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েন। তখন পার্কিনস ইনস্টিটিউশনের নতুন ডিরেক্টর পদে দায়িত্ব নেন মাইকেল এ্যাগানোস। তিনি হেলেনের সমস্ত কথা শুনলেন এবং অ্যানি সুলিভ্যান ম্যানসফিল্ড নামের এক শিক্ষয়িত্রীর হাতে হেলেনের জীবনকে আলোকিত করার দায়িত্ব দেন।

অ্যানিও ছোটবেলা থেকে চোখে কম দেখতে পেতেন। পার্কিনস ইনস্টিটিউশনের সহযোগিতায় তার চোখে দু’বার অপারেশন করা হয়। তারপর থেকে তিনি স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরে পান। অন্ধকার জীবনের যন্ত্রণা অনুভব থেকেই তিনি অন্ধদের জন্য কাজ করার সংকল্প নেন।

অ্যানি অন্ধ এই শিশুকে স্পর্শের মাধ্যমে জগত চেনাতে লাগলেন। আলোর ছোঁয়া এবং অন্ধকারের অনুভূতির তফাৎ বোঝালেন। কল চালিয়ে হাতের ওপর বয়ে যাওয়া তরলকে চেনালেন ‘জল’ বলে। অবাক হলো সেই শিশু। একে একে পরিচয় ঘটলো তার সাথে বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র, টেবিল, চেয়ার, বিছানা ইত্যাদির সঙ্গে। আস্তে আস্তে হেলেন অবিশ্বাস্য দ্রুততায় সব শিখে নিতে থাকেন। লুই ব্রেইল আবিষ্কৃত ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে হেলেন লেখাপড়া শিখতে শুরু করেন।

অ্যানি অন্ধ শিশু হেলেনকে স্পর্শের মাধ্যমে জগত চেনাতে লাগলেন; Source: Wikimedia Commons

‘ব্রেইল’ হলো সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে অন্ধরা আঙ্গুলের স্পর্শের সাহায্যে পড়াশুনা করতে পারে। এভাবে হেলেন ৩০টি শব্দ আয়ত্ব করে নেয়। কয়েক বছরেই হেলেন ইংরেজি, ল্যাটিন, গ্রীক, ফরাসি এবং জার্মান ভাষায় পারদর্শী হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে সে ব্রেইল টাইপ রাইটারে লিখতে শেখে। হেলেন এগারো বছর বয়সে এক বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে কথা বলার চর্চা করতে থাকে। ধীরে ধীরে চিকিৎসার মাধ্যমে তার বাকশক্তি অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

অ্যানি হেলেনের হাত ধরে পড়তেন আর হেলেন তার মধ্য দিয়ে ঐ বিষয়বস্তু আয়ত্ত করতেন; Source: Wikimedia Commons

বিশ বছর বয়সে হেলেন সাহিত্য, দর্শন, ধর্ম, ইতিহাসে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন, ভর্তি হন র‍্যাডক্লিফ কলেজে। কলেজে পড়াকালীন তিনি লিখেন তার প্রথম আত্মজীবনীমূলক রচনা ‘Optimism’। চার বছর পর তিনি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বি.এ. পাস করেন। কলেজে স্নাতক হবার পর তিনি লিখেন তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘The story of my life’, যেখানে তিনি তার জীবনের বিপর্যয়, লড়াই, অ্যানির কাছ থেকে শিক্ষালাভ, তার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালবাসার জীবনচিত্র তুলে ধরেন তার অপূর্ব লেখনীতে। আর এই রচনার মধ্য দিয়ে তিনি ব্যাপক খ্যাতিও অর্জন করেন। লোকের মুখে মুখে উচ্চারিত হতে থাকে তার নাম।

র‍্যাডক্লিফ কলেজ থেকে স্নাতক লাভের পর গাউন পরিহিতা হেলেন কেলার; Source: biography.com

জীবনের নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে হেলেন সাংবাদিক পেশায় তার কর্মজীবন শুরু করেন। সেসময় অ্যানি র‍্যাডিক্যাল পার্টির কর্মকর্তা মি. ম্যাকির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ভালোই চলছিল সবকিছু। কিন্তু রাজনৈতিক প্ররোচনায় অ্যানি ও হেলেনের লেখার নামে বিভিন্ন সমালোচনা ও কুৎসা রটতে থাকে। সে ঘটনার পর হেলেন ঠিক করলেন সাংবাদিকতা পেশা ছেড়ে দেবেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়া এবং তা থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে জীবনধারণ করবেন। রাজনৈতিক সমস্যার জেরে অ্যানির সংসারও ভেঙে গেল। অ্যানি ও হেলেন পুনরায় দুজন দুজনের ছায়াসঙ্গিনী হয়ে কাজ করা শুরু করেলেন। তারা বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মঞ্চে বক্তৃতার আয়োজন করতেন। দলে দলে লোক ভিড় করতে থাকে সেসব অনুষ্ঠানে। তার বক্তৃতায় সূক্ষ্মতা ও চিন্তার গভীরতা দেখে মুগ্ধ হন শ্রোতারা। কিছুদিনের মধ্যেই হেলেনের অসংখ্য অনুরাগী ভক্ত তৈরি হলো। দিন দিন ভক্তের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। প্রচন্ড রাজনীতি সচেতন ছিলেন তিনি। নারীদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে তিনি ছিলেন সোচ্চার। লিঙ্গগত বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানাতেন সবাইকে।

১৯০৪ সালে তোলা হেলেন কেলারের প্রতিকৃতি; Source: Wikimedia Commons

এই সময়ে আরেক নতুন বিপত্তি। দুর্ভাগ্যক্রমে অ্যানির দৃষ্টিশক্তি আস্তে আস্তে লোপ পেতে থাকে। কিছুদিনের মধ্যেই অ্যানি প্রায় অন্ধ হয়ে যান। হেলেনের উপর চাপ বেড়ে গেল। অ্যানি তাকে প্রচুর সাহায্য করতেন। কিন্তু এখন হেলেন একা একা কীভাবে সবকিছু সামলাবেন বুঝে উঠতে পারলেন না।

ফলে তিনি ডাক্তার গ্রাহাম বেলের সাহায্য চাইলেন। ডাক্তার বেল হেলেনকে নিজের কন্যার মতো স্নেহ করতেন। ডাক্তার বেলের নেশা ছিল দেশভ্রমণ। তিনি হেলেন ও অ্যানিকে সঙ্গে করে ইউরোপ গেলেন। এতে করে বিশ্বকে জানার আরেক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। হেলেনের প্রতিভার জন্য তিনি যখন যে দেশ ভ্রমণে গিয়েছেন সে দেশের মানুষই তাকে অকুণ্ঠ ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় সিক্ত করেছে। এভাবেই দেশ-বিদেশে বাড়তে থাকে তার অনেক অনুরাগী ভক্তের সংখ্যা। রাষ্ট্রনায়ক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই মুগ্ধ হতেন এই অসামান্য নারীর প্রতিভা দেখে।

হেলেন কেলারের সাথে ডাঃ আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল; Source: biography.com

এতকিছুর মাঝে একসময় হেলেন একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য একজন পরিচালকের কাছ থেকে প্রস্তাব পান। সিনেমাটির নাম ছিল ‘Deliverance’। বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অভিশপ্ত বিড়ম্বনাময় জীবনের বিষাদের ওপর নির্মিত এই চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন হেলেন।

হেলেন বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও সঙ্গীত উপভোগ করার এক আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল তার। স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে বেশি সঙ্গীত উপভোগ করতেন। বাদ্যযন্ত্রের ওপর হাত রেখেই বলতে পারতেন কী ধরনের সুর বাজছে। গায়ক-গায়িকার কণ্ঠে হাত দিয়ে অনায়াসে বলতে পারতেন কী সঙ্গীত গাইছে। তার এমনই আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল যে, বহুদিনের পরিচিত মানুষের সঙ্গে করমর্দন করে বলে দিতে পারতেন তার পরিচয়। দৃষ্টিহীন হয়েও তিনি নৌকা চালাতে, নদীতে সাঁতার কাটতে পারতেন, খেলতে পারতেন দাবা ও তাস। এমনকি সেলাই পর্যন্ত করতে পারতেন তিনি!

শিশুদের মাঝে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন হেলেন কেলার; Source: Lions 100 – Lions Clubs International

১৯২২ সালে ডাক্তার বেলের মৃত্যুর পর তারই শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী হেলেন বেলের প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। হেলেন এই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও পৃথিবীর বহু দেশের বিভিন্ন সংস্থার সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সভা-সমিতিতে বক্তৃতা দিয়ে যা অর্থ পাওয়া যেত তা দিয়ে বিভিন্ন দেশে পঞ্চাশটিরও বেশি অন্ধদের কল্যাণার্থে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন হেলেন। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সাহায্য পেয়ে হাজার হাজার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ শিক্ষালাভ করেছে। নিজেকে সফলভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

অন্ধ শিশুদেরকে নিয়ে কাজ করতে  প্রায়ই হেলেন অন্ধদের জন্য নির্মিত বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনে যেতেন; Source: biography.com

১৯৩৫ সালে হেলেনের শিক্ষয়িত্রী ও সহযোগী অ্যানি স্যুলিভ্যান মৃত্যুবরণ করেন। অ্যানির এই মৃত্যুকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না হেলেন। জীবনের চলার পথের সঙ্গীকে হারিয়ে তার প্রায় পাগল পাগল অবস্থা। এর মধ্যেই শুরু হয় বিশ্বযুদ্ধ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের অনুরোধে হেলেন কেলার বিভিন্ন হাসপাতালে যুদ্ধাহত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নাবিক ও সৈনিকদের দেখতে যেতেন এবং শান্তি ও আশার বাণী শোনাতেন। যুদ্ধ শেষ হলে বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশ্বব্যাপী এক আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন।

আমেরিকান লেখক এবং প্রভাষক হেলেন ক্যালারের প্রতিকৃতি; Source: Getty Images

রবীন্দ্রনাথের সাথে হেলেনের খুবই সুসম্পর্ক ছিল। হেলেনের সুখ্যাতি সম্পর্কেও রবীন্দ্রনাথ জ্ঞাত ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ হেলেনকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। নোবেল প্রাপ্তির পর আমেরিকার এক সম্মেলনে বক্তৃতা দেয়ার আমন্ত্রণ পান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেখোনেই তার পরিচয় হেলান কেলারের সাথে। হেলেন রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে শান্তিনিকেতনে যাওয়ার আমন্ত্রণ পান। তবে রবীন্ত্রনাথ ঠাকুরের জীবিত থাকা অবস্থায় হেলেন শান্তিনিকেতনে আসতে পারেননি। ১৯৫৫ সালে ভারতে আসেন হেলেন। সেই সময়েই দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয় হেলেনকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করে।

হেলেন কেলারের হাত ধরে আবৃত্তি করছেন রবীন্দ্রনাথ; Source: pinterest.com

 ১৯৫০ সালে হেলেনের পঞ্চাশ বছরের কর্মময় জীবনকে সম্মান জানাতে প্যারিসে এক বিরাট সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। তখন তার বয়স সত্তর বছর। ১৯৫৯ সালে হেলেন জাতিসংঘ কর্তৃক বিশেষ সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৬৮ সালের ১লা জুলাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ১১টি বই রচনা করেছেন তিনি। তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই হলো- The story of my life (1903), The world I live in (1908), Let us have faith (1904), Teacher Annie Sullivan (1955), The open door (1957)।

হেলেন কেলার এবং অ্যানি সুলিভ্যানের মর্মর মূর্তি; Source: Wikimedia Commons

 হেলেন কেলার এমনই এক নাম যা অন্ধ, বিকলাঙ্গ, প্রতিবন্ধী মানুষের কাছে এক আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। যুগে যুগে এই মহীয়সী নারীর রেখে যাওয়া দৃষ্টান্তই হোক সকলের পথচলার মন্ত্র। প্রচণ্ড ইচ্ছেশক্তি মানুষকে যে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, তার এক জ্বলন্ত উদারহণ হেলেন কেলার। শারীরিক সব অক্ষমতাকে প্রচন্ড মানসিক শক্তি দিয়ে জয় করে হেলেন হয়ে উঠেছিলেন একজন চিন্তাশীল-সৃষ্টিশীল মানুষ, যে মানুষটি সবসময় বলতেন,

“অন্ধত্ব নয়, অজ্ঞতা ও অনুভূতিহীনতাই দুনিয়ার একমাত্র দুর্ভেদ্য অন্ধকার।”

ফিচার ইমেজঃ bio.com

Related Articles