প্রশস্ত আটলান্টিকের বুকে অস্ত যাওয়া সূর্যটা ইউরোপের অভিযাত্রিকদের হাতছানি দিতো। গোধূলির রাঙা সূর্যটা যেন ভেংচি কেটে আহ্বান জানাতো সেই বিশাল জলরাশি পাড়ি দিয়ে দিগন্তকে জয় করার। আর সেদিকে তাকিয়ে স্বপ্নালু অভিযাত্রিকরা সঙ্কল্প করতো একদিন এই সাগর পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর শেষটুকু দেখে আসার। সেই সঙ্কল্প পূরণের প্রত্যয়ে যুগে যুগে শত শত অভিযাত্রিক জীবন বাজি রেখে আটলান্টিকে তরী ভাসিয়েছেন। কিন্তু নিষ্ঠুর সাগরের আক্রোশের নিকট পরাজিত হয়ে নিজেদের প্রাণ সঁপে দিতে হয়েছে জলের বুকে। তাদের ব্যর্থতা দেখে তবু ক্ষান্ত হয়নি তারা। সলিল সমাধিস্ত অগ্রজদের অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে তারা এগিয়ে যায়। একসময় হাজার বছরের অধরা আটলান্টিক নতি স্বীকার করে। ইউরোপীয়রা প্রথমবারের মতো আবিষ্কার করে আটলান্টিকের ওপাড়ে লুকিয়ে থাকা নতুন মহাদেশ ‘আমেরিকা’-কে। আমেরিকা আবিষ্কারের গল্প বলতে গেলে আমাদের কলম্বাস, আমেরিগো, পলিনেশিয়ান এবং সাইবেরিয়ান অভিযাত্রিকদের নাম নিতে হয়। তবে এদের মধ্যে কে সর্বপ্রথম আমেরিকা আবিষ্কার করেছেন, তা এক ঐতিহাসিক বিতর্কে রূপান্তরিত হয়েছে।
আমেরিকার প্রথম আবিষ্কর্তার বিতর্কে এসব ব্যক্তির বাইরে একজন ভাইকিং অভিযাত্রিকের নাম শোনা যায়। জানা যায়, কলম্বাসের আমেরিকা যাত্রার অর্ধসহস্র বছর আগেই তিনি পাড়ি জমিয়েছেন সেই নতুন মহাদেশের বুকে। আবিষ্কার করেছেন ইতিহাসখ্যাত ভূখণ্ড ‘ভিনল্যান্ড’। তাই অনেকের মতে, তিনিই প্রথম আমেরিকা আবিষ্কার করেন। আর এই আমেরিকার আবিষ্কারক ভাইকিং অভিযাত্রিকের নাম হচ্ছে লেইফ এরিকসন।
জন্ম ও শৈশব
জুলিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী লেইফ এরিকসনের জন্ম হয় ৯৬০ খ্রিস্টাব্দে আইসল্যান্ডের একটি গ্রামে। বিখ্যাত ভাইকিং অভিযাত্রী এবং যোদ্ধা এরিক দ্য রেড এর তিন সন্তানের মধ্যে ২য় ছিলেন তিনি। ভাইকিং রীতি অনুযায়ী, ৮ বছর বয়সে একজন ‘পুরুষ’-এ পরিণত হওয়ার জন্য তাকে পরিবার থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়। কিশোর লেইফের সঙ্গী হিসেবে যোগদান করে থাইরকার নামক এক জার্মান। পিতা এরিক দ্য রেড এই জার্মানকে এক যুদ্ধে বন্দী হিসেবে আইসল্যান্ডে আনয়ন করেছিলেন। নানান কাজে পটু থাইরকারের প্রতি মুগ্ধ হয়ে এরিক তাকে দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে মুক্তভাবে বসবাস করার অনুমতি দিয়েছিলেন। লেইফের কৈশোর থেকে যুবকে পরিণত হওয়ার কঠিন অধ্যায়টুকু থাইরকারের সান্নিধ্যে কাটে। থাইরকার তাকে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে শিক্ষাদান করেন। লেইফ খুব অল্প সময়ের মধ্যে সব কাজ শিখে ফেলেন। তার শেখার আগ্রহ দেখে থাইরকার তাকে অক্ষরজ্ঞান দান করেন। রুশ, সেল্টিক ভাষায় দক্ষতা অর্জন ছাড়াও, উদ্ভিদ, অস্ত্র এবং বাণিজ্য বিদ্যায় পারদর্শী হয়ে উঠেন তিনি।
অবসর সময়ে কিশোর লেইফ সৈকতের বালিতে বন্ধুদের সাথে বসে দূর সাগরে ভেসে চলা জাহাজের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। হয়তো তখন থেকে তিনি সাগরে জাহাজ ভাসিয়ে বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকেন। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে দীক্ষালাভের পর লেইফ এরিকসন একজন পুরুষ হিসেবে নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন। কিন্তু এই সুখকর মুহূর্ত তার জীবনে দীর্ঘস্থায়ী হলো না। গৃহে তার জন্য তখন অপেক্ষা করছিলো আরেক বিপদ।
গ্রিনল্যান্ডে নির্বাসন
স্থানীয় এক বণিকের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন লেইফের পিতা এরিক দ্য রেড। একদিন সেই বিবাদ হাতাহাতি পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। ক্রোধের বশবর্তী হয়ে তিনি বাজারে সকলের সামনে সেই বণিককে হত্যা করে বসেন। হত্যার অভিযোগ মাথায় নিয়ে তাকে ভাইকিং কাউন্সিলের সামনে দাঁড়া করানো হয়। প্রথা অনুযায়ী এরিক দ্য রেডকে সপরিবারে তিন বছরের জন্য আইসল্যান্ড থেকে নির্বাসনে পাঠানো হয়। এ কারণে পিতার সাথে লেইফ এরিকসনও আইসল্যান্ড ত্যাগ করেন। কিন্তু আইসল্যান্ডের বাইরে নরওয়ে ছাড়া তাদের যাওয়ার কোনো স্থান ছিল না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এরিক দ্য রেড ইতোপূর্বে নরওয়ে থেকেও নির্বাসিত হয়েছিলেন। উপায় না দেখে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জাহাজে করে পশ্চিম দিকে রওনা দেন। পূর্বে ভাইকিং অঞ্চলে পশ্চিমের রহস্যময় ভূমি নিয়ে নানান গুঁজব প্রচলিত ছিল। সেই গুঁজবকে পুঁজি করে সেদিন এরিক দ্য রেড জাহাজের পাল তুলেছিলেন।
বেশ কিছুদিন সাগরে ভেসে চলার পর তারা পশ্চিমে এক নতুন ভূখণ্ডের সন্ধান পান। আর এই নতুন ভূখণ্ডই বর্তমানে গ্রিনল্যান্ড হিসেবে পরিচিত। গ্রিনল্যান্ডে নোঙর ফেলেন এরিক। এভাবে নতুন ভূমিতে শুরু হয় তাদের নির্বাসন জীবন। এ সময়ে পিতার কাছ থেকে জাহাজ চালনা এবং আবহাওয়া নিয়ে বিশদ জ্ঞান অর্জন করেন লেইফ, যা তার নিজের অভিযানের সময়ে দারুণ কাজে দিয়েছিল।
পশ্চিমের গুপ্ত মহাদেশ
তিন বছরের নির্বাসন শেষে আইসল্যান্ডে ফিরে যান লেইফ এরিকসন এবং এরিক দ্য রেড। সেখানে তারা নতুন দ্বীপের কথা সবাইকে জানিয়ে দেন। অনেকে নতুন জীবনের আশায় আইসল্যান্ড ত্যাগ করে তাদের সাথে গ্রিনল্যান্ডে পাড়ি জমায়। এখানে ভাইকিংদের নতুন জনবসতি গড়ে ওঠে। গড়ে উঠে নগর, গ্রাম, বন্দর। গ্রিনল্যান্ডের বন্দর থেকে জাহাজে করে ভিনদেশে পাড়ি জমাতে থাকেন অভিযাত্রিকরা। এদিকে গ্রিনল্যান্ডের মাটিতে বড় হতে থাকেন লেইফ এরিকসন। অস্ত্র পরিচালনা এবং শিকারে পারদর্শী হয়ে উঠেন তিনি। বিশেষ করে, মেরু ভালুক শিকারে লেইফের জুড়ি ছিল না। গ্রিনল্যান্ডের নতুন সমাজে আদর্শ পুরুষ হিসেবে গড়ে উঠতে থাকেন তিনি।
তার বয়স যখন ১৭, তখন তিনি বিয়ার্নি হারগেলফসন নামক এক অভিযাত্রিকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। বিয়ার্নির কাছে তিনি তার সাগর অভিযানের নানা গল্প শুনেছিলেন। একদিন বিয়ার্নির কাছে তিনি জানতে পারেন এক অজানা ভূমির কথা। মেঘে ঢাকা আকাশে ধ্রুবতারা হারিয়ে ফেলার কারণে ভুল পথে জাহাজ ভাসিয়ে দিয়েছিলেন বিয়ার্নিরা। আর এই ভুল পথে পাড়ি দিয়েই তারা একদিন আবিষ্কার করেন সবুজ গাছগাছালিতে আচ্ছাদিত এক নতুন মহাদেশ। তবে বিয়ার্নিরা সেই মহাদেশের বুকে পদার্পণ করেননি। রসদ স্বল্পতার কারণে তারা দ্রুত গ্রিনল্যান্ড ফিরে এসেছেন। পশ্চিমের এই অজানা মহাদেশের গল্প শুনে লেইফ আর বসে থাকতে পারলেন না। তিনি মনে মনে নিজের অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করতে থাকেন।
নরওয়ে ভ্রমণ
বিয়ার্নির ঘটনা জানার প্রায় ৭ বছর পর লেইফের জীবনে প্রথম স্বাধীনভাবে সাগর পাড়ি দেওয়ার সুযোগ আসে। নরওয়ের তৎকালীন রাজা ওলাফকে উপঢৌকন দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাকে নরওয়ে পাড়ি জমাতে হয়েছিল। ইতিহাসবিদদের মতে, আনুমানিক ১০০০ অব্দে লেইফ নরওয়ের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। কিন্তু তার অভিযাত্রিক জীবনের হাতেখড়িতেই বিপত্তি ঘটলো। বাতাসের গতি কম থাকায় আইসল্যান্ড পৌঁছাতে তাদের ৫ দিন লেগে যায়, যেখানে বাকিদের মাত্র ২ দিন লাগতো। এখান থেকে নরওয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে তারা। কিন্তু পথ ভুল হওয়ায় নরওয়ে থেকে আরও দক্ষিণের হেব্রাইডিস দ্বীপপুঞ্জে গিয়ে পৌঁছায় লেইফের তরী। সাগরের আবহাওয়া সুবিধাজনক না থাকায় এখানেই ১ মাস আটকা পড়ে যান তিনি। এ সময়ে হেব্রাইডিসের সর্দারের কন্যা থরগুনার প্রেমে পড়েন তিনি।
একসময় সাগরের ঝড় থেমে গেলে নরওয়ের উদ্দেশ্যে পুনরায় পাল তুলে লেইফের জাহাজ। বিদায়কালে থরগুনা লেইফকে জানান যে তিনি সন্তানসম্ভবা। পরবর্তীতে থরগুনা থরগিলস নামক এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। নরওয়ে পৌঁছানোর পর রাজা ওলাফের আতিথেয়তায় বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন লেইফ। ওলাফের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে দিনগুলো বেশ যাচ্ছিল তার। রাজা ওলাফ নিজে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তিনি লেইফের সাথে ভাইকিং ধর্মের অসারতা নিয়ে আলোচনা করতেন। লেইফ এরিকসন ওলাফের ধর্মে মুগ্ধ হয়ে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। শুধু তাই নয়, তিনি নরওয়ে ত্যাগ করার পূর্বে একজন ধর্মযাজককে সাথে নিয়ে যান। গ্রিনল্যান্ডে খ্রিস্টধর্মের গোড়াপত্তন এভাবেই হয়েছিল।
ভিনল্যান্ডের খোঁজে
লেইফ এরিকসনের ভিনল্যান্ড যাত্রা নিয়ে উপকথায় দুই রকম বক্তব্য দেখা যায়। একপক্ষের দাবি, গ্রিনল্যান্ডে ফেরত আসার সময়ে পথ হারিয়ে তিনি আমেরিকায় চলে যান। দ্বিতীয়পক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, বিয়ার্নির কাছ থেকেই লেইফ ভিনল্যান্ডের সন্ধান পান এবং নিজ উদ্যোগে আমেরিকা যান। মূলত, দ্বিতীয়পক্ষের দিকেই বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ রায় দিয়েছেন। নরওয়ে থেকে ফিরে আসার পর লেইফ এরিকসনের মাথায় সেই গুপ্ত মহাদেশে যাওয়ার নেশা চেপে বসে। তিনি বিয়ার্নির কাছ থেকে যাত্রাপথের নির্দেশিকা নিয়ে বাল্যকালের গুরু থাইরকার এবং একদল নাবিকসহ যাত্রা শুরু করেন পশ্চিমের ভূখণ্ডের সন্ধানে। প্রথমে তারা এক পাথুরে দ্বীপে গিয়ে নোঙর ফেলেন। কিন্তু এই দ্বীপ ছিল বিয়ার্নির বর্ণনার সম্পূর্ণ বিপরীত। লেইফ এই দ্বীপের নাম দেন হেলেল্যান্ড। ইতিহাসবিদদের মতে, এটি সম্ভবত বাফিন দ্বীপ ছিল। এরপর তারা আরও দক্ষিণে বালুকাময় একটি দ্বীপে গিয়ে পৌঁছান। এটি ছিল বর্তমান কানাডার পূর্ব সৈকতের একটি অঞ্চল। লেইফ এই অঞ্চলের নাম দেন উডল্যান্ড (মার্কল্যান্ড)।
এরপর লেইফ তার দল নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে যাত্রা করেন এবং একটি সবুজ দ্বীপ আবিষ্কার করেন। কথিত আছে, সাগরের লোনা আবহাওয়া এবং রুক্ষ দ্বীপের পাথুরে সম্ভাষণে বিরক্ত লেইফের কাছে নতুন দ্বীপের ঘাসের উপর বিন্দু বিন্দু জমে থাকা শিশির যেন মধুর স্ফটিকের মতো লাগছিল। তাছাড়া দ্বীপের অদূরে মূল ভূখণ্ডে প্রচুর গাছপালা ছিল। প্রাণী বিচরণের জন্য ছিল বিশাল তৃণভূমি। আবহাওয়া ছিল সহনীয়। তাই দ্রুত এই নতুন ভূখণ্ডের প্রেমে পড়ে যান তিনি। এখানেই আস্তানা গড়ার সিদ্ধান্ত নেন লেইফ। গাছপালা কেটে নাবিকরা অস্থায়ী কুটির নির্মাণের মাধ্যমে আমেরিকার বুকে প্রথম ইউরোপীয়দের আবাসন গড়ে তোলেন।
বসতি নির্মাণ শেষে থাইরকার নতুন মহাদেশ ঘুরে ফিরে দেখতে বের হন। একদিন পর তিনি ফিরে এসে লেইফকে সুসংবাদ দেন। তিনি কিছু দূরে তাজা আঙুরের সন্ধান পেয়েছেন। এই সংবাদে নাবিকরা উল্লাস করে ওঠে। ইতিহাসবিদরা বলেন, আঙুর বা ‘ভিন’ থেকেই মূলত এই অঞ্চলের নাম দেওয়া হয়েছিল ভিনল্যান্ড। তারা আঙুর সরবরাহ করে পুরো শীত মৌসুম ভিনল্যান্ডে অবস্থান করেছিলেন। এখানের শীতকাল গ্রিনল্যান্ডের চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন ছিল। শীতে ঘাসের উপর বরফ জমেনি। এমনকি এখানে দিন-রাতের সময়কাল ছিল প্রায় সমান। যেখানে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দ্বীপগুলো মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থান করায় দিন বা রাত অতিরিক্ত দীর্ঘ হতো। শীত শেষে গ্রিনল্যান্ডে ফিরে যান লেইফ এরিকসন। সেখানে গিয়ে জানিয়ে দেন তার আবিষ্কৃত নতুন সবুজ ভূমির কথা।
গ্রিনল্যান্ডে শেষ জীবন
আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, গ্রিনল্যান্ডে ফিরে আসার পর হাতেগোনা কয়েকজন বাদে আর কেউই ভিনল্যান্ডে গিয়ে বসতি স্থাপন করতে আগ্রহী হয়নি। এমনকি লেইফ এরিকসন নিজেও আর সেখানে ফিরে যাননি। লেইফ এরিকসনের বোন সেই হাতেগোনা কয়েকজনের মধ্যে ছিলেন। তবে কথিত আছে, স্থানীয়দের হাতে মারা পড়েন তিনি। এদিকে গ্রিনল্যান্ডে খ্রিস্টান লেইফকে স্বাগতম জানাননি পিতা এরিক। লেইফের সান্নিধ্যে এসে তার মা খ্রিস্টান হয়ে যান। মা-ছেলে মিলে গ্রিনল্যান্ডে নির্মাণ করেন প্রথম গীর্জা। কয়েক বছর পর পিতা এরিক মারা গেলে গ্রিনল্যান্ডের সর্দার বনে যান লেইফ। ততদিনে, তার হেব্রাইডিয়ান পুত্র থরগিলস গ্রিনল্যান্ডে এসে বসতি স্থাপন করেন। লেইফের আরেক পুত্র ছিল থরকেল লেইফসন।
১০২৫ সালে ভাইকিংদের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অভিযাত্রিক লেইফ এরিকসন মৃত্যুবরণ করেন। এর মাধ্যমে ভাইকিংদের পশ্চিমা অভিযানের অবসান ঘটে। লেইফ এরিকসন যখন ভিনল্যান্ডের সংবাদ প্রচার করছিলেন, তখন পুরো ইউরোপ ধর্মরক্ষার ক্রুসেডে মত্ত ছিল। তাই ধারণা করা হয়, ক্রুসেডের উত্তেজনায় ভিনল্যান্ড আবিষ্কার অনেকটাই অন্ধকারে থেকে যায়। নর্স পুরাণ এবং উপকথায় লেইফের সেই অভিযানের গল্পগুলো সংরক্ষিত রয়েছে। ১৯শ শতাব্দীতে লেইফ এরিকসনকে ‘আমেরিকার প্রথম ইউরোপীয় আবিষ্কারক’ হিসেবে স্বীকৃত প্রদান করে নর্ডিক আমেরিকানরা। লেইফের অভিযানের কাহিনী গবেষণা করে ১৯৬০ সালে ল’আঁস আঁ মিদো নামক একটি অঞ্চলকে সম্ভাব্য ভিনল্যান্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তবে এর পেছনে শক্ত প্রমাণ দেওয়া এখনও সম্ভব হয়নি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ অক্টোবর এই মহান অভিযাত্রিকের কথা স্মরণ করে ‘লেইফ এরিকসন দিবস’ উদযাপন করা হয়।
This is a Bangla article about Leif Erikson. He was the first European to land on the continent of America. He reached there 500 years before Colombus.
References: All the references are hyperlinked.
Feature Image: Hans Dahl