উনিশ শতকের প্রথমার্ধে, ১৮৩৩ সালে টেলিগ্রাফ আবিষ্কৃত হওয়ার পর যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। এই টেলিগ্রাফকে একটু ভিন্নভাবে ব্যবহার করার কথা চিন্তা করলেন জনৈক ভদ্রলোক। পল জুলিয়াস রয়টার নামের এই ব্যক্তি তার নিজের সংবাদ-সংস্থায় সংবাদ আদানপ্রদানের জন্য টেলিগ্রাফ লাইনের ব্যবহার করে তৎকালীন সাংবাদিকতার জগতে সূচিত করেছিলেন এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
সাংবাদিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো তাৎক্ষণিকতা। তাৎক্ষণিক সংবাদ সরবরাহের ক্ষেত্রে সেই সময় রয়টার এক প্রণিধানযোগ্য ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন। আজ ২১ জুলাই, বিশ্ববিখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর প্রতিষ্ঠাতা পল জুলিয়াস রয়টারের জন্মদিন। চলুন, জন্মদিনে ঘুরে আসা যাক এই কৃতিরই জীবনের অলিগলি থেকে।
প্রাথমিক জীবন
পল জুলিয়াস ব্যারন ফন রয়টারের জন্ম ১৮১৬ সালের ২১ জুলাই। জার্মানির ক্যাসেলে জন্ম নেওয়া রয়টার পারিবারিকসূত্রে ছিলেন ইহুদি ধর্মাবলম্বী। তার বাবা ছিলেন একজন ধর্মীয় আইনজ্ঞ বা র্যাবাই। মা-বাবা তার নাম দিয়েছিলেন ইজরায়েল বিয়ার জোসাফেত। কিন্তু একটা সময় লন্ডনে পাড়ি জমিয়ে, খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হয়ে রয়টার পাল্টে ফেলেন তার পরিবারপ্রদত্ত নামটি। এরপর একটা সময় নিজের যোগ্যতাবলে তার নামের সাথে জুড়ে যায় ব্যারন উপাধিও।
তরুণ বয়সে রয়টার তার চাচার ব্যাংকে কাজ করতেন। জার্মানির গটিঙ্গেনে সেই সময় তার সাথে পরিচয় হয় পদার্থবিদ কার্ল ফ্রেডরিক গাউসের। গাউস তখন তারের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংকেত প্রেরণ করার উপায় আবিষ্কারের চেষ্টা করছিলেন। ১৮৩৩ সালে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ আবিষ্কারের মাধ্যমে গাউসের প্রচেষ্টা বাস্তবতায় রূপ নেয়।
১৮৪৫ সালের ২৯ অক্টোবর যেদিন রয়টার প্রথম লন্ডনে পা রাখেন, তখন তার বয়স ২৯ বছর। ঐ সময় তিনি নিজেকে জোসেফ জোসাফেত বলে পরিচয় দিতেন। একই বছরের নভেম্বরের ১৬ তারিখ নিজের পারিবারিক ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন রয়টার। এক সপ্তাহের মাথায়, ২৩ নভেম্বর, ইডা মারিয়া এলিজাবেথ ক্লেমেনটাইন ম্যাগনাসের সাথেও বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
এই দম্পতির সাংসারিক জীবন খুব একটা মসৃণ ছিল না। অর্থনৈতিকভাবে খুব একটা স্বচ্ছল ছিলেন না তারা। ওদিকে না রয়টার কোথাও স্থির থাকতেন, না এই দম্পতির নিজস্ব কোনো বাড়ি ছিল। এসব টানাপোড়েন সত্ত্বেও শিক্ষিত, বুদ্ধিদীপ্তা ক্লেমেনটাইন তার স্বামীর কাজে যথেষ্ট সাহায্য করতেন। প্যারিসে থাকতে তিনি সংবাদ সংস্থার যাবতীয় কাজকারবার বুঝে নিয়েছিলেন। পল ও ইডা দম্পতির সন্তান হার্বার্ট তার বাবার অবসরের পর রয়টার্সের হাল ধরলেও ১৯১৫ সালে আত্মহত্যা করেন।
ব্যর্থতা দিয়ে শুরু
ইংল্যান্ডে গিয়ে বিয়ে করলেও সেখানেই থিতু হয়ে যাননি রয়টার। বার্লিনে ফিরে এসে ১৮৪৭ সালে রয়টার এন্ড স্টারগার্দ নামের একটি বই ও প্রকাশনা কোম্পানির অংশীদার হন তিনি।
সময়টা তখন উত্তাল, বিপ্লবের হাওয়া লেগেছে ইউরোপে। এই সময় রাজনৈতিক প্রচারপত্র ও পুস্তিকা প্রকাশ শুরু করেন রয়টার। কিন্তু ১৮৪৮-এর বিপ্লব ব্যর্থ হয়। জার্মান নেতৃত্বের চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে তাকে পাড়ি জমাতে হয় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে।
প্যারিসে গিয়ে প্রথমবারের মতো নিজের একটি সংবাদ-সংস্থা খুলে বসার চেষ্টা করেন তিনি। প্যারিসের পত্রপত্রিকা থেকে সংবাদ ও ব্যবসায়িক নিবন্ধ জার্মান ভাষায় অনুবাদ করে তার সারাংশ জার্মানিতে পাঠাতেন রয়টার। কিন্তু ফরাসি সরকারের কড়াকড়িতে অল্প কয়েকমাসেই সেই প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়ে।
নিজের ব্যর্থ সংবাদ-সংস্থা ছেড়ে রয়টার তখন চাল-লুই আভা নিউজ এজেন্সি-তে অনুবাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এই এজেন্সিটিই হচ্ছে আজকের আজান্স ফ্রান্স-প্রেস।
নতুন করে শুরু: রয়টার্সের উত্থান
আপাত-ব্যর্থ রয়টার তখনও একেবারে হাল ছেড়ে দেননি। ১৮৫০ সালে তিনি পুনরায় জার্মানিতে ফিরে আসেন। দ্বিতীয়বারের মতো নিজের সংবাদ-সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। আচেন থেকে ব্রাসেলসে কবুতরের মাধ্যমে সংবাদ আদানপ্রদান করতেন তিনি। এবারে ধরা দেয় চূড়ান্ত সফলতা, পথ চলা শুরু হয় রয়টার্স-এর।
১৮৫১ সালে লন্ডনে ফেরত যান রয়টার। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ-এর পাশে রয়টার্সের একটা শাখা অফিস খোলেন। প্রথমদিকে তার কাজের পরিধি ব্যবসায়িক টেলিগ্রাফ অবধি সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে দৈনিক সংবাদপত্রের প্রচলন বাড়তে থাকলে তিনি বেশকিছু প্রকাশককে তার সংস্থার সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে রাজি করান।
টেলিগ্রাফ লাইনের ব্যবহার
রয়টারের বয়স তখন ৩৩, বাস করছেন জার্মানির আচেনে। ডাচ ও বেলজিয়াম সীমান্তবর্তী শহরটির সাথে তখন বার্লিনের টেলিগ্রাফ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। দূরদর্শী রয়টার সেই টেলিগ্রাফ লাইন ব্যবহার করে সংবাদ প্রেরণের কাজ শুরু করলেন।
সেই সময় আর কোনো পত্রিকা বা সংবাদ সংস্থায় তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে টেলিগ্রাফের ব্যবহার শুরু হয়নি। দূরের সংবাদ সংগ্রহের জন্য তখন কয়েকদিন থেকে শুরু করে মাসও লেগে যেত। এদিকে রয়টার টেলিগ্রাফ লাইন ব্যবহার করে সেই কাজকে মাস থেকে মুহূর্তে নিয়ে এলেন।
কিন্তু একটি ছোট সমস্যা রয়ে গেল। আচেন থেকে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের মধ্যকার টেলিগ্রাফ লাইনটি নিরবচ্ছিন্ন ছিল না, মাঝখানে ছিল দীর্ঘ ৭৬ মাইলের একটি বিরতি। তাই ব্রাসেলস আর বার্লিনের মধ্যে তথ্য সরবরাহের জন্য টেলিগ্রাফ লাইন ব্যবহার করা গেলেও আচেন থেকে ব্রাসেলস অবধি অংশটুকুর ক্ষেত্রে টেলিগ্রাফের ওপর ভরসা করা যেতো না। এখানটাতেই রয়টার শুরু করলেন কবুতরের ব্যবহার।
তখন সাধারণত সংবাদ পাঠানোর জন্য ডাকবিভাগের বিশেষ রেলগাড়িই ব্যবহার করা হতো। কিন্তু রয়টারের ব্যবহৃত কবুতরগুলো ঐসব ট্রেন থেকেও অধিক দ্রুততায় সংবাদ সরবরাহ করতো। এই দুই ভিন্ন ও বুদ্ধিদীপ্ত উপায় ব্যবহার করে রয়টার প্যারিস স্টক এক্সচেঞ্জের হিসেবনিকেশের খবরাখবর সবার আগে পেয়ে যেতেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রয়টার্স তখন আর সব সংবাদসংস্থা থেকে এগিয়ে গিয়েছিল।
রয়টারের কবুতরের বহরে কবুতরের সংখ্যা ৪০টি থেকে ২০০-এর অধিকে উন্নীত হয়। ১৮৫১ সালে সম্পূর্ণ পথে টেলিগ্রাফ লাইন স্থাপিত হলে কবুতরের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।
১৮৫১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো ইংলিশ চ্যানেলের তলদেশ দিয়ে কালেই-ডোভার টেলিগ্রাফ ক্যাবল নামের সাবমেরিন টেলিগ্রাফ ক্যাবল ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সফলভাবে স্থাপন করা হয়। একই বছরের অক্টোবর মাসে রয়টার লন্ডনে ফিরে যান। দূরদর্শী রয়টার নতুন স্থাপিত এই অন্তঃসাগরীয় যোগাযোগ লাইনকে তার সংবাদ-সংস্থায় ব্যবহার করার পরিকল্পনা সাজান।
পরিকল্পনামাফিক, লন্ডনে নিজ সংস্থার জন্য 'সাবমেরিন টেলিগ্রাফ' অফিস স্থাপন করেন রয়টার। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ-এর সাথে এক চুক্তির মাধ্যমে তিনি প্যারিসের শেয়ার বাজারের খবরাখবর লন্ডনে এবং লন্ডনের শেয়ার বাজারের খবর প্যারিসের ব্যবসায়ীদের সাথে বিনিময় করা শুরু করেন। এই চুক্তির কল্যাণে দ্য টাইমস সহ অনেকগুলো ব্রিটিশ সংবাদপত্র রয়টার্সের সাথে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। রয়টার্সে এই পত্রিকাসমূহের সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে সংবাদসংস্থা হিসেবে রয়টার্সের যাত্রা পুরোদস্তুরভাবে শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক সাফল্য
ভিন্নধর্মী সংবাদ সরবরাহের জন্য খুব দ্রুতই রয়টারের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৫৯ সালে অস্ট্রো-ফ্রেঞ্চ পিডমন্টিজ যুদ্ধের প্রাক্কালে তৃতীয় নেপোলিয়নের এক ভাষণ ছাপিয়ে প্রথমবারের মতো বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন রয়টার। ব্রিটেনের সাংবাদিকতার বাজার ধরতে তিনি তার সংস্থার কাজের পরিধি ধীরে ধীরে বাড়িয়ে তোলেন। একের পর এক সাফল্যের দরুন রয়টার ব্রিটিশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের নজরে পড়েন। ১৮৬১ সালে তাকে রাণী ভিক্টোরিয়ার দরবারে পেশ করা হয়।
১৮৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের হত্যার ঘটনা রয়টার্স সবার আগে ইউরোপের জনগণের সামনে তুলে ধরে। ইউরোপ ও এর বাইরে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ সংবাদগুলো রয়টার্সে সবার আগে প্রকাশ পেতে থাকে।
১৮৬৬ সালে আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে ক্যাবল স্থাপিত হয়। সাবমেরিন ক্যাবলের দ্রুত বিস্তৃতি ঘটে এবং তার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে রয়টার্সও এর কার্যপরিধি বাড়ায়। ইউরোপের বাইরে এর প্রথম অফিস মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায় স্থাপিত হয়।
জার্মানি ও ফ্রান্সে সংবাদ পৌঁছানোর জন্য রয়টার উত্তর সাগরে তার নিজস্ব টেলিগ্রাফ লাইন স্থাপন করেন। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও রয়টার্স কার্যক্রম শুরু করে। ১৮৭২ সালে দূরপ্রাচ্যে ও ১৮৭৪ সালে দক্ষিণ আমেরিকায় রয়টার্সের সেবা বিস্তৃত হয়।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে রয়টার্স এর প্রতিদ্বন্দ্বী সংবাদসংস্থাগুলোর সাথে সমঝোতায় আবদ্ধ হয়। ১৮৭০ সালের ১৭ জানুয়ারি, ফ্রান্সের আভা', জার্মানির ভয়েফ ও রয়টার্সের মধ্যকার এক চুক্তির মাধ্যমে পুরো বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলকে এই তিনটি সংস্থার মাঝে ভাগ করা হয়। আভা' ও ভয়েফ-কে নিজ নিজ দেশ ছেড়ে দেওয়া ছাড়াও ইউরোপের কিছু অংশ ও দক্ষিণ আমেরিকার বিট দেওয়া হয়। এই তিনটি সংস্থা অনেক বছর ধরেই কার্যত বৈশ্বিক সাংবাদিকতার জগতে একচেটিয়া রাজত্ব করেছিল।
অবসর
১৮৬৫ সালে রয়টার্সকে রয়টার্স টেলিগ্রাম কোম্পানি নাম দিয়ে একটি লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়। এর প্রায় একযুগ পরে, ১৮৭৮ সালে রয়টার তার ছেলে হার্বার্টের হাতে কোম্পানির ভার তুলে দিয়ে, নিজে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। কিন্তু তাই বলে নিজের সংবাদ-সংস্থা থেকে পুরোপুরি নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেননি তিনি, কাজ করে গিয়েছিলেন অন্তরালে থেকেই।
১৮৫৭ সালের ১৭ মার্চ, রয়টার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভ করেন। ১৮৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জার্মানির স্যাক্স-কোবার্গ-গোথা'র ডিউক, পল রয়টারকে ব্যারন উপাধিতে ভূষিত করেন। এরপর থেকে তিনি পল জুলিয়াস ফন রয়টার বা পল জুলিয়াস দে রয়টার নামে পরিচিত হতে থাকেন। পরে ইংল্যান্ডেও তাকে ব্যারন উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ফ্রান্সের নিস শহরে তার নিজ বাড়ি 'ভিলা রয়টার'-এ ১৮৯৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন রয়টার। তাকে সমাহিত করা হয় লন্ডনের পারিবারিক সমাধিক্ষেত্রে।
১৮৮৩ সালে রয়টার একটি স্মারকলিপি লেখেন, যেটিতে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা রয়টার্সের সাংবাদিকদের জন্য তিনি দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। স্মারকলিপিটিতে রয়টার্স সাংবাদিকদের আহ্বান জানান:
প্রাণহানিকর অগ্নিদুর্ঘটনা, বিস্ফোরণ, বন্যা, রেল দুর্ঘটনা, বিধ্বংসী তুফান, ভূমিকম্প, জাহাজডুবি, যুদ্ধজাহাজ ও ডাকবাহী জাহাজের দুর্ঘটনা, ভয়ংকর দাঙ্গা, ধর্মঘট, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, আত্মহত্যা, চাঞ্চল্যকর ও নৃশংস হত্যাকান্ড-সহ যেকোনো ঘটনার ক্ষেত্রে আপনাদের অনুরোধ করা হচ্ছে যে, সবার প্রথমে অবিকৃত তথ্য এবং তার পরে যতদ্রুত সম্ভব, ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী একটি বর্ণনামূলক প্রতিবেদন যেন টেলিগ্রাম করে পাঠানো হয়।
শেষ রয়টারের মৃত্যু
রয়টার পরিবারের সর্বশেষ ব্যক্তি, মার্গারিত, ব্যারনেস দে রয়টার ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মারা যান। মার্গারিতের স্বামী অলিভার, চতুর্থ ব্যারন দে রয়টার ছিলেন পল রয়টারের নাতি। অলিভার মৃত্যুবরণ করেন ১৯৬৮ সালে। মার্গারিত ও অলিভার দম্পতির ঘরে কোনো সন্তানসন্ততি না থাকায়, মার্গারিতের মৃত্যুর পর রয়টার পরিবারের সাথে রয়টার্সের সবধরনের পার্থিব সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়।
রয়টারের একজন সাবেক মহাব্যবস্থাপক মাইকেল নেলসনের মতে,
মার্গারিতের সাথে সাথে নামটাও চলে গেল!
সেই রয়টার, এই রয়টার্স
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, আজান্স ফ্রান্স-প্রেস, ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি সংবাদ সংস্থার সাথে পাল্লা দিয়ে রয়টার্সের পথচলা এখনো অব্যাহত। দেশবিদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, রেডিও স্টেশন, কর্পোরেশন থেকে শুরু করে ব্লগার, সাংবাদিক সবাইকে অসংখ্য ছবি, ভিডিও, সংবাদ সরবরাহ করে চলেছে রয়টার্স। বিশ্বের বৃহত্তম মিডিয়া হাউজগুলো থেকে শুরু করে স্থানীয় সংবাদপত্র-সবাই এক বিশাল ইলেকট্রনিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে রয়টার্সের এই আধেয়গুলো ব্যবহার করছে। গত ২০০৮ সালে রয়টার্স কানাডিয়ান কোম্পানি থমসন গ্রুপের সাথে একীভূত হয়ে থমসন রয়টার্স নাম ধারণ করেছে।
পল রয়টার বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার একজন অন্যতম পথিকৃৎ। রয়টার যেমন প্রযুক্তিকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রথম সফলভাবে ব্যবহার করেছেন, তেমনিভাবে সংবাদ প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে একটি বৈশ্বিক মানদণ্ড স্থাপনেও তিনি প্রভূত ভূমিকা রেখেছেন।
This is a Bangla language article on Paul Julius Reuter, the founder of Reuters. Necessary raferences are hyperlinked within the article.
Featured Image: D.J.Z.