Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পিট সিগার: যার গান হয়ে উঠতো প্রতিবাদের ভাষা

As I went walking that ribbon of highway
I saw above me that endless skyway
I saw below me that golden valley
This land was made for you and me

This land is your land and this land is my land
From California to the New York Island
From the redwood forest to the Gulf Stream waters
This land was made for you and me

– পিট সিগার

বিশ শতকের এক প্রতিবাদী চরিত্র পিট সিগার। গানই ছিল তার প্রতিবাদের ভাষা। আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন শোষকের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রীয় অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে। সারা জীবন শাসিতের পক্ষে দাঁড়ানো এই মানবতাবাদী মানুষটি পল্লীর মেঠো সুরকে সঙ্গী করে ঘুরে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে, আর তার গানের ভাষাকে আপামর মানুষের প্রাণের সঙ্গীত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

পরিবারই ছিল সঙ্গীতের দীক্ষাগুরু

সমাজ সংস্কারক এই গুণী শিল্পী ১৯১৯ সালের ৩ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন শহরের এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই পিট সুরের আবহেই বেড়ে ওঠেন। বাবা চার্লস সিগার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গীত শেখাতেন, আর মা কনস্ট্যান্ট সিগার একজন দক্ষ বেহালাবাদক ছিলেন। তিনি জুয়েলিয়ার্ড স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের বেহালা বাজানো শেখাতেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে পিট ছিলেন সবার ছোট। তার বড় ভাই মাইক ছিলেন নিউ লস্ট সিটি র‌্যাম্বলারস গানের দলের সদস্য, আর বোন পেগি ছিলেন একজন লোকসঙ্গীত শিল্পী। 

বাবার কোলে শিশু পিট সিগার; Image Source:wikimedia commons

শৈশব থেকেই পিট সিগার বেশ প্রতিভাধর ছিলেন, পড়াশোনায় ছিলেন বেশ মনোযোগী। পরিবারের সবচেয়ে মেধাবী এই ছাত্র অ্যভন ওল্ড ফার্মসে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৩৬ সালে বৃত্তি পেয়ে ভর্তি হন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু দুই বছর পর পড়াশোনার গন্ডির মধ্যে নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলেন না। মার্কিন সমাজে তখন তরুণদের মধ্যে হিপি হওয়ার খুব প্রবণতা। পিটও সেই জোয়ারে গা ভাসালেন। হিপিদের সাথে ছন্নছাড়া জীবনে মেতে উঠলেন। পড়াশোনা শিকেয় উঠলো। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলেন না। ফলে স্কলারশিপ হারান। পিট পড়াশোনার ইতি টানেন এখানেই।

গানের হাতেখড়ি

শৈশবে পিটের গানের প্রতি তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না। কোনো স্বরলিপি অনুসরণ করে গানের তালিম নেননি। সঙ্গীত পরিবারের একজন উত্তরসূরী হিসেবে ছোটবেলা থেকেই পারিবারিক পরিমন্ডলে নানা বাদ্যযন্ত্রের হাতেখড়ি হয় তার। পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে শৈশবে প্রতিদিন নিয়ম করে বাবা-মা আর ভাই-বোনের সাথে তার সঙ্গীতের পাঠ নিতে হতো।

সঙ্গীতশিল্পী পিট সিগার; Image Source: CBS via Getty Images

পরিবারে বাবা, ভাই আর বোনের লোকসঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ দেখে ছোটবেলা থেকে পিটেরও লোকসঙ্গীতের উপর আগ্রহ জন্মায়। এভাবে শৈশব থেকে কৈশোর পার করলেন। কিন্তু সঙ্গীতের প্রতি তার আবেগ জন্মালো আরও বেশ কিছু সময় পর।

ব্যাঞ্জোর প্রেমে পড়া

একটু বড় হতেই পিট কখনো বাবা, আবার কখনো ভাই মাইকের সাথে আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এই ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে তারা পল্লীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা লোকসঙ্গীতের কথা ও গানের সুর সংগ্রহ করতেন, আবার কখনো তারা নিজেরাই স্থানীয় কোনো গানের প্রোগ্রামে অংশ নিতেন।  

ব্যাঞ্জোর জাদুকর পিট সিগার; Image Source: George Pickow/Getty Images

যখন পিটের বয়স ১৬ বছর, তখন এক গ্রীষ্মের দিনে বাবার সাথে তিনি ঘুরতে যান নর্থ ক্যারোলিনার অ্যাশভিলের একটি লোকজ মেলায়। সেই মেলায় বিভিন্ন রকম বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনী চলছিল। হঠাৎই পিটের চোখ এক অন্য ধরনের বাদ্যযন্ত্রের উপর আটকে যায়।

সেই প্রথম পিট সিগার ব্যাঞ্জোর প্রেমে পড়লেন। এই যন্ত্রটি মার্কিন লোকসঙ্গীতের সাথে ঐতিহ্যগতভাবে যুক্ত ছিল। এই পাঁচ তারের ব্যাঞ্জোই পরবর্তীকালে হয়ে উঠলো তার গানের সুরে ভেসে বেড়ানোর প্রধান হাতিয়ার। আর এই ব্যাঞ্জোকে সঙ্গী করে সঙ্গীতের প্রতি পিটের নতুন করে আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে।  

গানের সাথে পথ চলা

১৯৪০ সালে পিট সিগার প্রথম গান লেখা নিয়ে মনোযোগী হন। এই সময়ে মিলার্ড ল্যাম্পেল এবং লি হেইসের সাথে যুক্ত হয়ে ‘অ্যালম্যান্যাক সিঙ্গারস’ নামে প্রথম লোকসঙ্গীতে একটি দল তৈরি করেন। তাদের প্রথমদিকের তৈরি গান ‘The Talking Union Blues’ শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এরপর  ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে তাদের  শান্তিবাদী গান ‘The Balled of October 16’ আমেরিকার সমাজে গানের এক নতুন ভাষা তৈরি করে।  

অ্যালম্যান্যাক সিঙ্গারস দলের সদস্যরা; Image Source: Michael Ochs Archives/Getty Images

১৯৪২ সালে এই গানের দলটি লোকসঙ্গীতের কিছু গান রেকর্ড করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু এ সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় সবকিছু থমকে যায়। সামরিক এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে মার্কিন সব তরুণের মতো ব্যান্ডের সব সদস্যকেই আমেরিকার সৈন্যদলে যোগ দিতে হয়। সামরিক প্রশিক্ষণও নিতে হয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পিট ‘সিঙ্গ আউট’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব নেন। লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি একক সঙ্গীতের অনুষ্ঠান করতে শুরু করেন।

 ১৯৪৯ সালে নিউ ইয়র্কের গ্রিনউইচ গ্রামের এক স্কুলে পিট সঙ্গীতের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে অ্যালম্যান্যাক দলটি আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয়। এবার দলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘দ্য ওয়েভার্স’। এ দলে নতুন করে যুক্ত হলেন লি হেইস, রনি গিলবার্ট, ফ্রেড হেলম্যান প্রমুখ।

পিট সিগার সম্পাদিত লোকসঙ্গীতের ম্যাগাজিন ‘সিঙ্গ আউট’; Image Source: gvshp.org

এই বছরেই পুরনো লোকসঙ্গীতের সংকলন নিয়ে তাদের বেশ কয়েকটি গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ‘On Top of Old Smokey’, ‘Goodnight, Irene’, ‘Follow the Drinking Gourd’, ‘Dusty Old Dust’, ‘Michael Row the Boat Ashore’, ‘It Takes a Worried Man’, `Wimoweh’ গানগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এই ব্যান্ড দলের সদস্যদের লেখা ও সুরে গাওয়া বেশ কয়েকটি মৌলিক গান সেসময় বেশ সমাদৃত হয়। তার মধ্যে ‘If I Had a Hammer’  এবং ‘Kisses Sweeter Than Wine’ উল্লেখযোগ্য।

১৯৫৩ সালের দিকে পিট বাম ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠেন। তাদের সমর্থনে নানা প্রতিবাদে নিজেকে এবং তার দলকে সম্পৃক্ত করায় তারা মার্কিন সরকারের বিরাগভাজন হয় পড়ে। সরকার থেকে এই গানের দলকে বাম দলগুলোর একটি শাখা হিসেবে চিহ্নিত করতে থাকে। তখন ওয়েভার্সকে কোথাও গান করার অনুমতি দেয়া হতো না। ফলে দলের কার্যক্রম থমকে যায়। 

পিট সিগারের একক অ্যালবাম ‘আমেরিকান ব্যালাডস’; Image Source: last.fm

দুই বছর পর আবার তারা একসাথে মঞ্চে গান পরিবেশন করতে শুরু করেন। কার্নেগীতে তাদের একটি শো’র সব টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। ১৯৫৫ সালে পিট ‘সিং আউট’ ম্যাগাজিনে ‘Where Have All the Flowers Gone?’ নামের একটি কবিতা প্রকাশ করেন। পরে জো হিকারসন এই কবিতাটিকে গানে রূপান্তরিত করেন। এই গানটি প্রথম কোনো বড় ধরনের যুদ্ধবিরোধী গান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

পিট সিগারের জনপ্রিয় গানগুলো নিয়ে প্রকাশিত গানের অ্যালবাম ‘Where Have All the Flowers Gone?’; Image Source: discogs.com

ষাটের দশক পিট সিগারের উত্থানের সময়। এই সময় তিনি এককভাবে মঞ্চে গান করতে শুরু করেন। তখন তার গাওয়া ‘Where Have All the Flowers Gone?’ এবং  ‘Turn, Turn, Turn’ প্রভৃতি গান ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ষাট থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত তার বেশ কয়েকটি গানের অ্যালবাম বেশ প্রশংসিত হয়। তার অ্যালবামে গাওয়া গানগুলোর মধ্যে ‘God Bless The Grass’, ‘Dangerous Songs!’, ‘The Incomplete Folksinger’, ‘Traditional Christmas Carols’, ‘Folk Songs for Young People’ and ‘American Industrial Ballads’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

হারিয়ে যাওয়া লোকসঙ্গীতকে তুলে এনেছেন বিশ্বসঙ্গীত দরবারে

প্রথাবিরোধী গান করেই শুধু পিট সিগার কিংবদন্তী হননি। লোকসঙ্গীতের প্রতি তার ভালবাসাই তাকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। শুধু নিজে গান লিখে আর তাতে সুর দিয়ে শ্রোতাদের মাঝে গান গেয়েই ক্ষান্ত ছিলেন না, আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলের পুরনো হারিয়ে যাওয়া লোকগান পুনরুদ্ধারে তার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। 

২০ মে ২০০৩ সালে নিউ ইয়র্কের এক কলেজের মঞ্চে পিট সিগারের অনবদ্য পরিবেশনা; Image Source: Chris Hondros/Getty Images

লোকসঙ্গীতের প্রতি ভালবাসা তাকে লোকসঙ্গীতের উৎস খুঁজতে উৎসাহিত করে। প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ অ্যালান লোমেক্সকে সঙ্গী করে লোকসঙ্গীতের কথা ও সুর সংগ্রহ করতে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিমে ক্লান্তিহীনভাবে ঘুরে বেরিয়েছেন। এ যাত্রাকালে তিনি অনেক হারিয়ে যাওয়া স্থানীয় প্রাচীন গান, লুলাবাই, লোকগান এবং ব্যালাড সংগ্রহ করেন। পরবর্তীকালে পিট সিগার, লোমেক্স এবং সঙ্গীতশিল্পী রিঙহামকে সাথে নিয়ে প্রাচীন ও প্রচলিত লোকসংগীত সংরক্ষণের এক উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং People’s Music Library নামে একটি আর্কাইভ প্রতিষ্ঠা করেন।

গান যখন হয়ে ওঠে প্রতিবাদের ভাষা

১৯৪০ থেকে ১৯৫০ এর আমেরিকার শ্রমিক আন্দোলন, সামাজিক অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে পিটের গানের কথা ও সুরে। ১৯৬০ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী র‌্যালি, ১৯৭০ সালে যুদ্ধবিরোধী ও পরিবেশ সংক্রান্ত ক্যাম্পেইনেও তার গান রেখেছে অগ্রণী ভূমিকা।

পিট সিগার তার গানের মাধ্যমে আমেরিকার নানা সামাজিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন; Image Source: Michael Ochs Archives/Getty Images

ষাটের দশকের স্নায়ুযুদ্ধের সময় মার্কিন প্রশাসন কমিউনিজম জুজুতে সর্বদা তটস্থ থাকতো। সে সময় পিট সিগারের গাওয়া প্রতিবাদী গণসঙ্গীতকে সরকার খুব একটা ভাল চোখে কখনোই দেখেনি। এর মধ্যে পিট নিউ ইয়র্কে দুগ্ধজাত শিল্পের কর্মীদের ধর্মঘটে অংশ নিয়ে বামপন্থী রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।

 ‘উই শ্যাল ওভারকাম’ গানটিকে গির্জার ডায়াসের বাইরে সাধারণ মানুষের প্রাণের সঙ্গীত হিসেবে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন পিট সিগার; Image Source: Toronto Star

১৯৬১ সালে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়। তাকে আন-আমেরিকান অ্যাক্টিভিটিস কমিটিতে ডাকা হয়। কিন্তু পিট সিগারের রাজনৈতিক বিশ্বাস, ধর্মীয় দর্শন এবং চিন্তা-ধারণাকে কিছুতেই বাগে আনতে সক্ষম হয়নি প্রশাসন। বরং পিট দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলেছিলেন, একজন মার্কিন নাগরিক হিসেবে তার বিশ্বাস ও রাজনৈতিক চেতনার উপর কারও হস্তক্ষেপ মোটেই কাম্য নয়।

যুদ্ধবিরোধী ও সামাজিক আন্দোলনের মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন পিট সিগার 

ষাটের দশেকের আমেরিকাজুড়ে চলা ‘সিভিল রাইটস আন্দোলনে’র অন্যতম পুরোধা ছিলেন পিট সিগার। মার্কিন সরকারের জনবিদ্বেষী, হঠকারী নীতি এবং রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে, এমনকি ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা সরকার প্রধান ভূমিকা নেয়ায় মার্কিন জনগণ খুব একটা ভালভাবে নেয়নি। মুক্তিপাগল মানুষের প্রতিনিধি পিট সিগার বরাবরই যুদ্ধবিরোধী ছিলেন।

১৯৬৩ সালে মিসিসিপিতে ছাত্রদের এক অহিংস আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে যোগ দেন পিট সিগার; Image Source: Adger Cowans/Getty Images

ভিয়েতনামের যুদ্ধে বিপর্যস্ত আমেরিকার জনগণকে প্রতিবাদের ভাষা চিনতে শিখান পিট। যুদ্ধের বিপক্ষে মানুষকে সচেতন করতে তাই মঞ্চকেই বেছে নিলেন তিনি। ম্যানহাটনের স্কুলের বারান্দায়, নিউ ইয়র্কের পথ চলতি ব্যস্ত রাস্তার ধারে, সর্বত্রই তার ব্যতিক্রমী সুর ঝড় তুলতে শুরু করে। শুরু হলো তার বারুদের বিরুদ্ধে ব্যাঞ্জোর মূর্ছনা, অশান্তির বিরুদ্ধে ভালোবাসার স্লোগান। ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী তার এক অসাধারণ গানের কথাগুলো এমন-

If you love your Uncle Sam
Bring them home, bring them home
Support our boys in Vietnam
Bring them home, bring them home

If an army invaded this land of mine
Bring them home, bring them home
You’d find me out on the firing line
Bring them home, bring them home.”

– পিট সিগার

পিট সিগারের এই ভূমিকায় মার্কিন প্রশাসন ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে। কারাবন্দী করা হলো তাকে। তারপরও থামানো যায়নি। জেল থেকে মুক্তি পেয়েই গাইলেন তার অনবদ্য গান ‘হোয়ার হ্যাভ অল দ্য ফ্লাওয়ার্স গন’।

স্ত্রী তোশি সিগারের সাথে পিট সিগার ; Image Source: Bennett Raglin/WireImage

যেকোনো যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনে সব সময় সোচ্চার ছিলেন পিট সিগার। ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে ইরাকের যুদ্ধ, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ আন্দোলন, ওয়াল স্ট্রিট দখল অভিযান থেকে হাডসন নদী বাঁচাও আন্দোলন- সব জায়গায় শান্তিকামী, অহিংস জনতা তার গানে আশ্রয় খুঁজে নিয়েছে, পেয়েছে প্রতিবাদের নতুন স্লোগান। 

থামলেন ব্যাঞ্জোর  জাদুকর

২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি ৯৪ বছর বয়সে থামলো ব্যাঞ্জোর জাদু। জীবনে পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা। ১৯৫৪ সালে পান ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ আর্টস’ এবং ‘কেনেডি সেন্টার অ্যাওয়ার্ড’। ১৯৯৬ সালে সঙ্গীতে তার অসাধারণ ভূমিকার জন্য রক এন্ড রোল এর ‘হল অফ ফেম’ এ তাকে নির্বাচিত করা হয়। সেই বছরেই তিনি হার্ভার্ড আর্টস মেডেল অর্জন করেন। ১৯৯৭ সালে পিট ‘Best traditional folk music album’ বিভাগে গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। কিন্তু সবচেয়ে বড় পুরষ্কার অসংখ্য মানুষের ভালবাসা সারা জীবন ভর পেয়েছেন। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ নিপীড়িত মানুষের পক্ষে আজীবন লড়াই করে গেছেন এই নির্ভীক শিল্পী।

গানের মাধ্যমে বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের পক্ষে সংগ্রাম করে গেছেন এই নির্ভীক শিল্পী; Image Source: Ebet Robets/Redferns

নিজের গানকে তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন আপামর মানুষের কণ্ঠে। আজীবন সাধারণ মানুষের জন্য গান গেয়েছেন যে শিল্পী, মার্কিন লোকসঙ্গীত যার ছোঁয়ায় নবজীবন পেল সেই পিট সিগার এই বিশ্বকে দেখিয়ে দিলেন সঙ্গীতের এক অসাধারণ ক্ষমতা। গান শুধু মানুষকে আত্মিক শান্তিই দেয় না, শ্রোতাকে ভাবতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গানও যে এক মাধ্যম হতে পারে তাই তুলে ধরেছিলেন এই সঙ্গীতশিল্পী।  

Where have all the flowers gone, long time passing?
Where have all the flowers gone, long time ago?
Where have all the flowers gone?
Young girls have picked them everyone
Oh, when will they ever learn?
Oh, when will they ever learn?

This is a bengali article. This is story about the biography of Pete Seeger, was one of the most greatest folk singers of the 20th century. He was not only a singer but also a songwriter, labor activist, naturalist and peace advocate. All the sources are hyperlinked into the article.

Photo Credit: CBS Photo Archive/Getty Images

Related Articles