Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আলকেমির কুসংস্কার থেকে রসায়নকে মুক্ত করেছিলেন যে বিজ্ঞানী

অটো ভন গুয়েরিকের আবিষ্কৃত ভ্যাকুয়াম পাম্পের ডিজাইন দেখে পুলকিত হলেন উদ্যমী যুবক রবার্ট বয়েল। তিনি ডিজাইনটি দেখালেন তার বন্ধু রবার্ট হুককে। হুক যথাসাধ্য চেষ্টা করে, গুয়েরিকের ডিজাইনে কিছু পরিবর্তন করে, ভ্যাকুয়াম পাম্পের সামান্য উন্নতি করলেন। এবার হুকের এই পাম্প দিয়েই বয়েল শুরু করলেন তার গবেষণা। বন্ধুর সহায়তায় তিনি বাতাস এবং শূন্যস্থানের ধর্ম নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেন। তারা একটি টেস্টটিউবের ভেতরে পারদ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ওজনের বাতাসের চাপের তারতম্য সৃষ্টি করেন। ক্রমাগত চাপ ওঠা-নামা করানো হলে দেখা যায় যে চাপের সাথে গ্যাসের আয়তনের সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক।

অটো ভ্যান গুয়েরিকের ভ্যাকুয়াম পাম্প; source: thinglink.com

রবার্ট বয়েল বিখ্যাত পদার্থবিদ গ্যালিলিও গ্যালিলিকে নিজের আদর্শ মনে করতেন। গ্যালিলিও পিথাগোরাসের মতোই বিশ্বাস করতেন যে, প্রকৃতির সবকিছুই গণিত (পিথাগোরাসের ভাষায় সংখ্যা) দ্বারা প্রকাশ করা সম্ভব। বয়েলও এই ব্যাপারটি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন। অবশেষে প্রমাণ পেলেন নিজের আবিষ্কৃত সূত্র দ্বারাই। রবার্ট বয়েল তার গবেষণার ফলাফল ১৬৬২ সালে প্রকাশ করেন। এর মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো বায়ুকে গণিতের আওতায় নিয়ে এসেছিল বিজ্ঞান। বয়েলের পরে, দ্বিতীয় গ্যাসের সূত্রটি, অর্থাৎ, চার্লসের সূত্র আবিষ্কৃত হয়েছিল আরো ১০০ বছরের অধিক সময় পর। এতেই বোঝা যায়, অন্যদের চেয়ে কতটা অগ্রসর ছিলেন তিনি। ‘বয়েলের সূত্র’ নামে বিখ্যাত সূত্রটি হচ্ছে-

“উষ্ণতা স্থির থাকলে, নির্দিষ্ট ভরের যেকোনো গ্যাসের আয়তন, ওই গ্যাসের চাপের সঙ্গে ব্যাস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়।”

বয়েলের সূত্রের গাণিতিক রূপ: নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন যদি V হয়, এবং চাপ P হয়, তাহলে বয়েলের সূত্রানুযায়ী P∝1/v বা PV=K, যখন উষ্ণতা স্থির থাকে। এখানে K হচ্ছে ধ্রুবক। স্থির উষ্ণতায় কোনো নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের চাপ যদি P1, P2, P3 ইত্যাদি হয় এবং আয়তন যথাক্রমে V1, V2, V3 ইত্যাদি হয়, তাহলে বয়েলের সূত্রানুযায়ী P1V1 = P2V2 = P3V3 = K (ধ্রুবক) ।

বয়েলের সূত্র; source: grc.nasa.gov

ভ্যাকুয়াম বা শূন্যস্থানের ধর্ম আবিষ্কারের জন্য বয়েল একটি ২৮ লিটার আয়তনের কাঁচের জার নিয়ে তার মধ্যে একটি বেল স্থাপন করলেন। জারের বাইরে থেকে একটি চুম্বক দ্বারা ভেতরের বেলটি বাজানো হলো। জারের ভেতরের বাতাস একটি পাম্প দ্বারা ধীরে ধীরে বের করা হলো। দেখা গেল যে, জারের বাতাস বের হওয়া শুরু হতেই বেলের শব্দ ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে আসছে। জারটি বাতাস মুক্ত হবার সাথে সাথে আর কোনো শব্দই শোনা গেল না। এই পরীক্ষা দ্বারা রবার্ট বয়েল আবিষ্কার করেন, শব্দ শূন্যস্থানে চলাচল করতে পারে না। অর্থাৎ শব্দ চলাচলের জন্য মাধ্যম প্রয়োজন। একইসাথে এটাও প্রমাণ হয়ে যায় যে, চৌম্বক বল শূন্যস্থানের মধ্যে দিয়ে গমন করতে পারে। অন্যথায় জারের ভেতরের বেলটি বাজতো না। বয়েলের এই আবিষ্কার ছিল এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। কেননা শূন্যস্থানের ভেতর দিয়ে বাহ্যিক বল চলাচল করতে পারে, এ ব্যাপারটিই মহাকাশে তড়িৎচুম্বক তরঙ্গ চলাচল করতে পারার ব্যাপারটি নিশ্চিত করে।

বয়েলের ভ্যাকুয়াম পাম্প; source: college.columbia.edu

পরীক্ষাটি দ্বারা বয়েল আরো একটি বিষয় প্রমাণ করে ফেলেছিলেন, যা তাৎক্ষণিকভাবে তিনি নিজেও জানতেন না। আর তা হচ্ছে, আলোরও চলাচলের জন্যও কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না। যদি হতো, তাহলে বায়ুমক্ত জারের ভেতরে বেলটি আর দেখা যেত না। তিনি আরো দেখান যে, বায়ুশূন্য জারের মধ্যে কোনো দহনও সম্ভব নয়। দহনের জন্যও বাতাসের প্রয়োজন। উল্লেখ্য, তখনো অক্সিজেন আবিষ্কারই হয়নি।

তখনকার সময়ে সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের শিশুদের শিক্ষাজীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল দীর্ঘ এক শিক্ষাভ্রমণ। রবার্ট বয়েলের জীবনে সেই ভ্রমণ এসেছিল ১২ বছর বয়সে। বড় ভাই ফ্রান্সিস এবং গৃহশিক্ষকের সাথে বয়েল ইউরোপ ভ্রমণে বের হন। যদিও অধিকাংশ শিক্ষামূলক ভ্রমণই গ্রীস আর ইটালি কেন্দ্রিক ছিল, বয়েল তার ভ্রমণের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে। ১৪ বছর বয়সে তিনি ইতালি ভ্রমণে গিয়ে পিসার সেই ভুবনখ্যাত হেলানো মিনার দর্শন করেন। এই মিনার দেখে তিনি গ্যালিলিওর যুগান্তকারী পড়ন্ত বস্তুর গতির সূত্র সম্বলিত পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হন। তখন ইতালিতে গ্যালিলিওর সকল গবেষণা পুস্তক নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু যে করেই হোক, বয়েলের সেগুলো চাই। তিনি সেগুলো সুইজারল্যান্ড থেকে চোরাই পথে নিয়ে এলেন!

রবার্ট বয়েল যখন ফ্লোরেন্স শহরে ভ্রমণে যান, তখন গ্যালিলিও তার জীবনের শেষ অধ্যায়ে ছিলেন। গৃহবন্দী গ্যালিলিওর সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন বয়েল, কিন্তু সম্ভব হয়নি। বয়েল ফ্লোরেন্সে থাকাকালীনই গ্যালিলিওর মৃত্যু হয়। গ্যালিলিওর মৃত্যুতে শোক করার সময়ই পাননি বয়েল, কারণ কিছুদিনের মধ্যেই তার বাবার মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছে। তবে শিক্ষাভ্রমণের ইতি টানেননি তিনি। ১৪ বছর বয়সে দেশ ত্যাগ করা বয়েল ১৬৪৪ সালে ১৭ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। বাবার রেখে যাওয়া অঢেল সম্পত্তির কল্যাণে তিনি তখন রীতিমত ধনী। তিনি লন্ডনে বড় বোন ক্যাথেরিনের সাথে কয়েক মাস বসবাস করেন। তখন ইংল্যান্ডে চলছিল গৃহযুদ্ধ। বয়েল তাই লন্ডন ছেড়ে স্টলব্রিজে চলে যান। কারণ যুদ্ধে জড়াবার কোনো ইচ্ছাই তার ছিল না।

রহস্যময় ফিলসফারস স্টোন; source: incantata.deviantart.com

“আমার মনে হয় ‘ফিলসফারস স্টোন’ আবিষ্কার আমার ভাগ্যে লেখা নেই! প্রথম পরীক্ষাতেই অনুত্তীর্ণ হলাম।” – রবার্ট বয়েল

অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ কিশোর রবার্ট বয়েল সর্বদা মনে করতেন, যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া অধিকাংশ মানুষই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে যায়। তিনি যুদ্ধ চলাকালীন নানা অনাচার দেখে ব্যথিত হয়ে, নীতি-নৈতিকতার উপর ‘অ্যারেটোলজি’ নামে একটি বই লিখে ফেলেন। বই লেখা শেষ করেই বয়েল বিজ্ঞান বিষয়ক পড়ালেখা এবং গবেষণায় মনোযোগী হন। ১৬৪৭ সালে তিনি নিজস্ব গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানের চেয়ে ‘অপ’বিজ্ঞানই বেশি চর্চা হয়! হ্যাঁ, তখনকার সময়ে আলকেমি বা অপরসায়ন (অতীন্দ্রিয়বাদী বিশ্বাস) বেশ জনপ্রিয় ছিল। রবার্ট বয়েলও প্রথমে আলকেমিতেই নিজের হাত ঝালাই করতে চেয়েছিলেন। তিনি ‘ফিলসফার’স স্টোন’ আবিষ্কার করতে চেয়েছিলেন। বলা বাহুল্য, তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন।

বয়েলের সময়টা ছিল অত্যন্ত কুসংস্কারাচ্ছন্ন। জ্ঞানের যুগ আর যৌক্তিক প্রমাণ কিংবা পজিটিভিজমের মতো ব্যাপারগুলো আসতে তখনো ঢের দেরি। সে সময়ের মানুষ ভূত-প্রেত কিংবা ডাইনীর অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো! বয়েল দেশে ফেরার পর, অর্থাৎ ১৬৪৪ সাল থেকে পরবর্তী তিন বছরে পুরো ইংল্যান্ডে তিনশর অধিক নারীকে ‘ডাইনী’ সন্দেহে হত্যা করা হয়! মানুষ সে সময়, ‘উইচ’ বা ডাইনীকে যেমন ভয় পেত, তেমন ভয় পেত ‘উইচফাইন্ডার’ বা ডাইনীনিধনকারীকে! আর ইংল্যান্ডের সবচেয়ে কুখ্যাত, স্বঘোষিত উইচফাইন্ডার ছিলেন জেনারেল ম্যাথু হপকিনস। হপকিনস অসংখ্য নারীকে ডাইনী হিসেবে হত্যা করে। এসবের মধ্য দিয়ে ইংল্যান্ড পৌঁছে যায় গোঁড়ামির চূড়ান্ত পর্যায়ে, যার একটি উদাহরণ হতে পারে চার্চ কর্তৃক বড়দিন উদযাপন নিষিদ্ধ করে দেয়া!

উইচফাইন্ডার জেনারেল ম্যাথু হপকিনস; source: birthmoviesdeath.com

সৌভাগ্যক্রমে, সকল কুসংস্কারকে মন থেকে ঝেরে ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন রবার্ট বয়েল। প্রথমে বিরক্ত হয়ে তিনি ইংল্যান্ড ছেড়ে আয়ারল্যান্ডে বাবার রেখে যাওয়া বাড়িতে গিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তিনি উপলব্ধি করতে পারলেন যে, বিজ্ঞানী হতে হলে তাকে ইংল্যান্ডেই ফিরতে হবে। ১৬৫৪ সালে বয়েল ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। কৈশোরেই বিপুল অর্থের মালিক হওয়ায় চাকরি আর জীবিকা নিয়ে তার কোনো চিন্তা ছিল না তার। অক্সফোর্ডেও তিনি নিজ অর্থে তৈরি করেন একটি গবেষণাগার। আর সে গবেষণাগারে সহযোগী হিসেবে পেয়েছিলেন সে সময়ের আরেক বিখ্যাত বিজ্ঞানীকে। বলুন তো তিনি কে? তিনি রবার্ট হুক।

সেই ঘোর কুসংস্কারাচ্ছন্ন সময়ে রবার্ট বয়েল যেন ত্রাণকর্তা হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তিনি দ্রুতই আলকেমি থেকে হাত গুঁটিয়ে নিয়েছিলেন এবং প্রকৃত সত্যের দিকে ঝুঁকেছিলেন। ১৬৬১ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘স্কেপটিক্যাল কিমিস্ট’, যেখানে তিনি রসায়নকে ভ্রান্ত কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে প্রকৃত কারণ খোঁজার জন্য তাগিদ দেন। তিনিও তার আদর্শ গ্যালিলিওর মতো অ্যারিস্টটলের গতিতত্ত্ব এবং এলিমেন্টস (মাটি, পানি, বায়ু, আগুন) প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি মৌলিক পদার্থকে সহজে ব্যাখ্যা করেন। তার মতে, যেসব পদার্থকে ভেঙে অন্য পদার্থ পাওয়া যায় না, সেগুলোই মৌলিক পদার্থ। আর একাধিক মৌলিক পদার্থ সংযুক্ত হয়েই নতুন পদার্থ তৈরি করে। মৌলিক পদার্থের এমন চমৎকার উদাহরণ দিলেও, তার কাছে পদার্থের মৌলিকতা প্রমাণের কোনো পদ্ধতি ছিল না। এ কারণেই তিনি সোনা, রূপা, সালফার প্রভৃতি মৌলকে যৌগিক পদার্থ মনে করতেন।

বয়েলের স্কেপটিক্যাল কিমিস্টের প্রচ্ছদ; source: commons.wikimedia.org

“যখন গবেষণায় আমরা উদ্দিষ্ট ফলাফল পাই না, এমনকি তখনো আমরা এমন কিছু পেয়েই যাই, যা গবেষণার দাবি রাখে, কিন্তু আমরা আগে ভাবতে পারিনি!” – রবার্ট বয়েল

১৬২৭ সালের ২৫ জানুয়ারি, আয়ারল্যান্ডের লিসমোর শহরের এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রবার্ট বয়েল। তার বাবা রিচার্ড বয়েল জন্মগতভাবে ব্রিটিশ হলেও আয়ারল্যান্ডে ব্যবসা করেই ধনী হন, এবং সেখানেই থেকে যান। অন্যদিকে বয়েলের মা, ক্যাথেরিন ফেনটনকে বিয়ে করেও বিশাল অঙ্কের সম্পত্তি লাভ করেন রিচার্ড। বয়েল ছিলেন রিচার্ড-ফেনটন দম্পতির ১৪তম সন্তান। এই বিশাল পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে যৌক্তিক, অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ করে তোলার লক্ষ্যে, রিচার্ড তার সব সন্তানকেই শৈশবের একটা নির্দিষ্ট সময় আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন দরিদ্র পরিবারে রেখেছেন! অন্য সকলের জন্য এটা কার্যকর হলেও বয়েলের জন্য তা ছিল কষ্টের। কেননা যখন তাকে পরিবারের বাইরে পাঠানো হয়, তখনো তিনি একেবারে শিশু এবং নিজের মাকেও চেনেন না। আর যখন তিনি পরিবারে ফিরে আসেন (প্রায় ৩ বছর বয়সে) ততদিনে তার মা পৃথিবীতে নেই!

বয়েলের যখন পাঁচ বছর, তখন তার বাবা পুরো পরিবার নিয়ে ইংল্যান্ডে চলে আসেন। বয়েলের গৃহশিক্ষা তখন চলছে পুরোদমে। ১২ বছর বয়সে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সম্মানজনক বেসরকারি স্কুল ইটনে। এরপরই চলে যান শিক্ষাভ্রমণে। কৈশোরেই বিপুল বৈভবের মালিক হলেও বয়েল ছিলেন অত্যন্ত মিতব্যয়ী। তিনি কেবল দুটি কাজেই অর্থ ব্যয় করতেন, একটি বিজ্ঞান ও তার গবেষণা, অন্যটি দান। ১৬৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন বিজ্ঞান সংঘ ‘রয়্যাল সোসাইটি’। বয়েল এই সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। ১৬৬৮ সালে বয়েল অক্সফোর্ড ছেড়ে লন্ডনে বড় বোন ক্যাথেরিনের কাছে চলে আসেন। পারিবারিক চাপ সত্ত্বেও বিয়ে না করার সিদ্ধান্তে তিনি অটল ছিলেন। ১৬৮০ সালে রয়্যাল সোসাইটি রবার্ট বয়েলকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে। কিন্তু এক অদ্ভুত কারণে বয়েল সে পদে যোগ দেন নি। কারণটি ছিল ধর্মীয়। প্রেসিডেন্ট পদে যোগ দিতে যে শপথবাক্য পাঠ করতে হতো, তা নাকি তার ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করতো!

রবার্ট বয়েল (১৬২৭-১৬৯১); source: thefamouspeople.com

১৬৯১ সালের ২৪ ডিসেম্বর, বয়েলের জীবনের সবচেয়ে বড় বন্ধু, তার বড় বোন ক্যাথেরিন মৃত্যুবরণ করেন। এর মাত্র এক সপ্তাহ পরেই, ৩১ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহান বিজ্ঞানী। তাকে ওয়েস্টমিনিস্টার চার্চইয়ার্ডে সমাহিত করা হয়েছিল। কিন্তু ১৭২১ সালে সেই চার্চইয়ার্ডের সংস্কার কাজ করার সময় চিরতরে হারিয়ে যায় বয়েলের সমাধি।

ফিচার ছবি: Famous People

Related Articles