Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ইতিহাসের দীর্ঘতম ১০টি তথ্যচিত্র

‘ডকুমেন্টারি ফিল্ম’ বা তথ্যচিত্রও একপ্রকার চলচ্চিত্রই। তবে সিনেমা বা চলচ্চিত্র বলতে সাধারণ অর্থে আমরা যা বুঝি, তার সাথে তথ্যচিত্রের মূল পার্থক্যের যায়গা হচ্ছে এর প্রামাণিকতা। তথ্যচিত্রে কোনো ফিকশন বা কল্পনার জায়গা নেই। তথ্যচিত্র তৈরির উদ্দেশ্যই হচ্ছে মূলত বাস্তবতা থেকে কিছু ইতিহাস সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা, যা বাণিজ্যিক নয়, শিক্ষামূলক কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণত তথ্যচিত্রের গড় দৈর্ঘ্য নির্দিষ্ট নয়। তথ্যের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী এর দৈর্ঘ্য কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েকশ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু কয়েক হাজার মিনিটের কথা কি শুনেছেন কখনো? ইতিহাসের দীর্ঘতম তথ্যচিত্রটি তো ৫ অঙ্কই ছুঁয়েছে! ইতিহাসের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্যের ১০ তথ্যচিত্রের সবগুলোরই ব্যাপ্তিকাল হাজার মিনিটের বেশি। চলুন জেনে নিই সেগুলো সম্পর্কে।

১০. সেনাটাকুনা: মাস্কস

পোকার্টাম্বো উৎসব; Image Source: scoopnest.com

পেরুর কাসকো অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে নয় হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি শহরের নাম পোকারটাম্বো। এ শহরে প্রতি বছর জুলাই মাসে ‘পোকারটাম্বো ফেস্টিভ্যাল’ নামক একটি ঐতিহ্যবাহী রঙিন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসব সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় এবং ঐতিহ্য সচেতন উৎসব, যেখানে উৎসব পালনকারীরা নিজেদের অতীত ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, পরম্পরা বিভিন্ন রকমের নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে তুলে ধরে। এই উৎসবের মূল আকর্ষণই হচ্ছে নানানরূপের প্রতীকী মুখোশ, যেগুলো অতীত, বর্তমানের কথা বলা ছাড়াও ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবায়। আর মুখোশ যারা তৈরি করে, তারাই মূলত উৎসবে নৃত্য পরিবেশন করে থাকে। স্প্যানিশ ভাষায় মুখোশের প্রতিশব্দ সেনাটাকুনা। এই তথ্যচিত্রটি পোকারটাম্বোর সেনাটাকুনা তথা মুখোশ প্রস্তুতকারী মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনধারণের গল্পই বলে। আর এই গল্প বলতে পরিচালক কার্লোস অ্যাগুয়ার সময় নিয়েছেন ২৯০০ মিনিট, অর্থাৎ ৪৮ ঘণ্টা!

৯. মাই ফাইট

স্টেফানি রামিরেজ; Image Source: https: twitter.com

৫৪ ঘণ্টা দীর্ঘ এই তথ্যচিত্রটি নির্মিত হয়েছে পা হারানো স্টেফানি রামিরেজের দুর্দান্ত লড়াইয়ের গল্প নিয়ে, যিনি একইসাথে লড়ে যাচ্ছেন ক্যান্সারের সাথে। মাত্র ২১ বছর বয়সেই ওস্টিওসারকোমায় একটি পা হারান স্টেফানি। ধরা পড়ে ক্যান্সারও। পরিবার পরিজন থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন তিনি, ছিল না কারো কাছে কোনোরূপ সাহায্যের প্রত্যাশা। এরকম দুর্দশায় পতিত হলে মনোবলে চিড় ধরাটাই ছিল স্বাভাবিক। অথচ স্টেফানি এক পা নিয়েই লড়ে চললেন ক্যান্সারে বিরুদ্ধে। চিকিৎসার অর্থের যোগানের জন্য কারো কাছে হাত না পেতে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে কাজে লেগে পড়লেন। ৪ বছর আগে পা হারানো স্টেফানি আজ অনেকের অনুপ্রেরণার উৎসে পরিণত হয়েছেন। আর তার এই অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠার পেছনের সংগ্রামী জীবনটাই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে চিরস্থায়ী করেছেন পরিচালক ডেনিয়েল মনটয়া।

৮. সিটি অব ইটারনাল স্প্রিং (২০১০)

সিটি অব ইটারনাল স্প্রিং সিনেমাটি অনলাইনে ছাড়া হয়নি। এর কোনো স্থিরচিত্রও অনলাইনে পাওয়া যায়নি; Image Source: imdb.com

আমেরিকার এক তরুণ ভদ্রলোক ছুটি কাটাতে পাড়ি জমান দক্ষিণ আমেরিকায়। বলিভিয়া থাকাকালীন দুর্ভাগ্যক্রমে ছুটি শেষ করে আর দেশে ফিরতে পারেননি। অর্থ ফুরিয়ে যাওয়া এবং অন্যন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চুরি যাওয়ায় দেশে ফেরার রাস্তা তার বন্ধ হয়ে যায়। উপায়ান্তর না দেখে ছোটবেলায় স্কুলে থাকতে শেখা নাচ ও অন্যান্য কসরত করার দক্ষতা কাজে লাগাতে শুরু করেন। বলিভিয়ার রাস্তাঘাটে নিজের কসরত প্রদর্শন করে অর্থ আয় করতে থাকেন, যা দিয়ে কোনোক্রমে দিনকাল চলে যায়। কিন্তু কিছুকাল যাবার পর বলিভিয়া তার ভালো লেগে গেল। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন, বলিভিয়া আর ছাড়বেন না! হ্যাঁ, শৈশবে শেখা যেসব দক্ষতা তাকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাঁচতে সাহায্য করেছে, সেসব দক্ষতা তিনি বলিভিয়ার শিশুদের শেখাতে শুরু করলেন। আর এরকমই এক নাটকীয় বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে পরিচালক কার্লো মিগনানো নির্মাণ করেছেন ৫৭ ঘণ্টা ৩০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এক বিশাল তথ্যচিত্র ‘সিটি অব ইটারনাল স্প্রিং’।

৭. নিউয়ে টিটেন (২০১৩)

সাশা পোলাক; Image Source: biosagenda.nl

৪ হাজার ৮০ মিনিটের এই সুদীর্ঘ তথ্যচিত্রটি পরিচালনা করেছেন ডাচ পরিচালক সাশা পোলাক, যিনি হেমেল, ব্রোয়ার আর জুরিখের মতো প্রশংসিত ডাচ সিনেমায় সহকারী পরিচালক ছিলেন। ‘নিউয়ে টিটেন’ এর বাংলা অর্থ ‘নতুন স্তনবৃন্ত’। নাম থেকে আন্দাজ করতে পারছেন নিশ্চয়ই যে তথ্যচিত্রটি স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত কিংবা ঝুঁকিতে থাকা কোনো এক নারীর সংগ্রামী জীবনের গল্প। আর সে নারী এই তথ্যচিত্রের পরিচালক পোলাক নিজেই। জন্মগতভাবেই পোলাকের দেহে ‘বিআরসিএ-১’ নামক একটি অনাকাঙ্ক্ষিত জিন রয়েছে, যেটির কারণে তার স্তন ক্যান্সার হবার ঝুঁকি অনেক বেশি। তাছাড়া দীর্ঘদিন থেকেই তিনি ভুগছিলেন নানান সমস্যায়। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করলে ডাক্তার তাকে স্তন কেটে ফেলার (স্তনবৃন্ত মূলত) পরামর্শ দেন। কিন্তু, পোলাকের তাতে সায় নেই। তিনি অনবরত চিকিৎসক পরিবর্তন করছেন এবং স্তন না কেটে সুস্থ হবার জন্য যত ঝক্কি পোহাতে হয়েছে, তিনি সব মেনে নিয়েছেন। আর তার সেসব অভিজ্ঞতাই উঠে এসেছে এ তথ্যচিত্র, যেগুলো কখনো অনুপ্রেরণাদায়ক, কখনো হতাশার, কখনো তিক্ত, কখনো মজাদার। ২০১৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ডাচ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এই তথ্যচিত্রের একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রদর্শিত হয়। ‘ভাইকিং ফিল্ম প্রোডাকশন’ এর প্রযোজনায় নির্মিত এই তথ্যচিত্রটি ‘গোল্ডেন কালফ’ প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছিল।

৬. দ্য কিউর অব ইনসমনিয়া (১৯৮৭)

আপনি কি নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন? তাহলে এই তথ্যচিত্রটি আপনার জন্য এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো। প্রথমত, আপনার বিনিদ্র সময় কেটে যাবে এটি দেখতে দেখতে। দ্বিতীয়ত, আপনি পেয়ে যাবেন অনিদ্রার ওষুধ। তাহলে আর দেরি কেন? পপকর্ন নিয়ে বসে পড়ুন ‘দ্য কিউর অব ইনসমনিয়া’ দেখতে। ঠিক তিনদিন ১৫ ঘণ্টা পর আপনি জেনে যাবেন অনিদ্রার সমাধান!

আ কিউর ফর ইনসমনিয়া বইটি ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত হয়; Image Source: biosagenda.nl

একটু আগে পাওয়া আশার গুড়ে এবার বালি পড়তে চলেছে। সিনেমাটি আপনার বিনিদ্র সময়ে সঙ্গ দেবে ঠিকই, তবে অনিদ্রার সমাধান দেবে না। এটি মূলত এল. ডি. গ্রোবানের ‘আ কিউর ফর ইনসমনিয়া’ নামক ৪ হাজার পৃষ্ঠার একটি কবিতার বইয়ের আবৃত্তি। তবে পরিচালক জন হেনরি টিমিস এর বিভিন্ন দৃশ্যে কবিতার কথার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন ছোট ছোট দৃশ্য যোগ করেছেন, যেগুলো মূলত যৌনতায় ভরপুর। ১৯৮৭ সালে প্রথম এবং শেষবারের মতো ‘শিকাগো আর্ট ইনস্টিটিউটে’ প্রদর্শিত হয়েছিল এই পরীক্ষামূলক তথ্যচিত্রটি।

৫. হাংগার (২০১৫)

হাংগার এর একটি পোস্টার; Image Source: imdb.com

ইতিহাসের পঞ্চম দীর্ঘতম তথ্যচিত্র ‘হাংগার’ এর দৈর্ঘ্য ১০০ ঘণ্টা! ইতালিয়ান পরিচালক লুকা পেজান্ত এই ছবিটি নির্মাণ করেছেন। ২০১৫ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়নি সিনেমাটি। বিশ্বজুড়ে খাদ্য সমস্যা এবং অসামঞ্জস্য রয়েছে। কোথাও খাদ্য অপচয় হচ্ছে, আর কোথাও খাদ্যাভাবে মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। এই বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করেই নানা তথ্য উপাত্ত, পর্যবেক্ষণ, তাত্ত্বিক ও গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নির্মিত হয়েছে এই তথ্যচিত্রটি।

৪. নারী (২০১৭)

‘নারী’ তথ্যচিত্রের একটি দৃশ্যে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন এক নারী; Image Source: thehindu.com

তেলেগু পরিচালক চাই ডিংগারির ‘নারী’ তথ্যচিত্রটি হাংগার থেকে মাত্র ১৭ মিনিট বড়। ডিংগারির এই তথ্যচিত্রটি মূলত ভারতীয় নারীদের জীবনযাত্রার ধরন তুলে ধরে। ভারতের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে শহুরে নারীর জীবন উঠে এসেছে এই সিনেমায়। কৃষিকাজ, শিক্ষকতা, গার্মেন্টস কর্মী, পরিবহন শ্রমিক, ইট ভাটার শ্রমিক, আয়া, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী সহ নানা পেশার ৪০ জন নারীর সাক্ষাৎকার রয়েছে তথ্যচিত্রটিতে। আছেন পতিতাবৃত্তির সাথে যুক্ত দুজন নারীও। এই নারীদের কাছে তাদের জীবন জীবিকা, নারী হবার জন্য সামাজিক বাধা বিপত্তি আর হয়রানির গল্প শোনা যাবে এই দীর্ঘ তথ্যচিত্রে।

৩. বেইজিং ২০০৩ (২০০৪)

‘বেইজিং ২০০৩’ এর পোস্টার; Image Source: imdb.com

চীনা পরিচালক আই ওয়েওয়ের ‘বেইজিং ২০০৩’ তথ্যচিত্রটি ১৫০ ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের। ছবিটি তিনি নির্মাণ করেছেন নিজ শহরের চেনাজানা অলিগলিতে। গাড়িতে করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর এই সিনেমায় পুরো বেইজিং শহরের প্রত্যেকটি রাস্তার আদ্যোপান্ত ফুটেজ রয়েছে। সব মিলিয়ে ২৪০০ কিলোমিটার রাস্তার ফুটেজ ধারণ করা হয়েছে মাত্র ১টি লেন্স ব্যবহার করে! ফলে পুরো সিনেমাতে একপ্রকার অদ্ভুত সামঞ্জস্য লক্ষ করা যায়। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, মধ্যরাত, রাতের শেষ প্রহর, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে চীনের এই মেগাসিটি। অবকাঠামোর মাঝে কখনো সূর্যালোকে কখনো রোডলাইটের নিয়ন আলোয় পথচারী, ঘরমুখো চাকরিজীবী, ভিক্ষুক, টোকাই, ফেরিওয়ালা, পুলিশ, প্রহরী, নানান রঙের বর্ণের মানুষের চালচলন, কথাবার্তা, কাজকর্ম, এক কথায় জীবনের গতিময়তাকে ক্যামেরাবন্দী করেছেন পরিচালক ওয়েওয়ে। ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমা নিয়ে লেখা হয়েছে একটি বইও।

২. মডার্ন টাইমস ফরেভার (২০১১)

স্টোরা এনসোর হেডকোয়ার্টার; Image Source: bene.com

ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীনতম একটি প্রতিষ্ঠান ‘স্টোরা এনসো’ কোম্পানির হেডকোয়ার্টার। এই কোম্পানি ‘লরেম ইপসাম’ নামক একটি পুরাতন ঐতিহ্যবাহী ডামি টেক্সট তৈরি করে। তবে ডামি টেক্সট এই তথ্যচিত্রের বিষয় নয়। মুক্তির সময় পৃথিবীর দীর্ঘতম সিনেমা হিসেবে রেকর্ড করা তথ্যচিত্র ‘মডার্ন টাইমস ফরেভার’ তৈরী হয়েছে কেবল হেলসিংকির স্টোরা এনসো কোম্পানির হেডকোয়ার্টারের চিত্র নিয়ে। সময়ের পালাবদলে এই সিনেমায় আধুনিকতা আর ভাবাদর্শকে প্রতীকরূপে ফুটিয়ে তুলেছে স্থাপত্যশৈলী। ২৪০ ঘণ্টা তথা ১০ দিন দীর্ঘ এই সিনেমায় কেবল এই ভবনটিকেই দেখানো হয়। আমাদের কাছে সিনেমাটি অসীম দীর্ঘ মনে হলেও আদতে সিনেমার গতি অনেক বেশি। কেননা, এই সিনেমার উপজীব্য হলো অনাগত ৫ হাজার বছরে এই ভবনটির ধীরে ধীরে ধ্বসে যাওয়ার কাল্পনিক চিত্রায়ন! অর্থাৎ, প্রতি একদিন সিনেমায় ৫০০ বছরের সমান! সময়ের আবর্তে কোনোকিছুই যে অক্ষত থাকে না, এই সিনেমাতে তা-ই দেখানোর চেষ্টা করেছে ফিনল্যান্ডের একটি চিত্রশিল্পীর দল সুপারফ্লেক্স। স্টোরা এনসোর ক্রমে ক্ষয় হয়ে যাওয়া তার কাছে মানবসভ্যতার বিলীন হয়ে যাওয়ার প্রতীক।

১. লজিস্টিকস (২০১২)

বর্তমান সময়ে পৃথিবী পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে গতিশীল। এখন প্রতিনিয়ত পৃথিবী বদলে যাচ্ছে, নতুন রূপ ধারণ করছে। আজ থেকে ১ মাস পর পৃথিবী কেমন হবে, তা কারো পক্ষে অনুমান করা সম্ভব নয়। তবে চোখ-কান খোলা রাখলে প্রতিনিয়ত চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী খুব বেশি অপ্রত্যাশিত মনে হয় না। পৃথিবীর বদলে যাওয়ায় যদি কিছুটা চমকে যেতে চান, তাহলে এক মাসের জন্য নিজেকে গৃহবন্দী করে রাখুন, বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন থাকুন। অথবা, লজিস্টিকস সিনেমাটি দেখুন! পাঠক, আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন যে লজিস্টিকস সিনেমাটি একটানা দেখার পর ঘরের বাইরে এসে আপনি পৃথিবীতে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে সমর্থ হবেন। কারণ, লজিস্টিকস সিনেমার দৈর্ঘ্য ৮৫৭ ঘণ্টা বা ৩৫ দিন ১৭ ঘন্টা বা ৫ সপ্তাহ!

লজিস্টিকস এর একটি দৃশ্য; Image Source: imdb.com

২০০৮ সালে এই তথ্যচিত্রটি নির্মাণের পরিকল্পনা মাথায় আসে এর পরিচালক ম্যাগনাসন এবং এন্ডারসনের। তারা ‘পিডোমিটার’ এর জীবনচক্র দেখানোর চিন্তাভাবনা করেন। পিডোমিটার হচ্ছে একপ্রকার ছোট বহনযোগ্য ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যা গতি, পদক্ষেপ পরিমাপ করতে পারে। যা-ই হোক, ২০০৯ সালের শেষ দিক থেকে সিনেমার জন্য চিত্রধারণ শুরু করেন ম্যাগনাসন এবং এন্ডারসন। তারা বিপরীতক্রমে সিনেমাটি শ্যুট করেন। অর্থাৎ, পিডোমিটারের ক্রেতা থেকে বিক্রয়কেন্দ্র হয়ে এর উৎপাদনের কারখানার দিকে গিয়েছে সিনেমার ধারা। ৩৫ দিন ধৈর্য (!) সহকারে সিনেমাটা দেখতে পারলে আপনি ভ্রমণ করে ফেলবেন সুইডেনের সবচেয়ে বিখ্যাত শহরগুলো, ইনজোন, গোথেনবার্গ, ব্রেমারহেভেন, রটার্ডাম, অ্যালজেসিয়ার্স, মালাগা ইত্যাদি। ইতিহাসের দীর্ঘতম তথ্যচিত্রটি শেষ হয় শেনঝেন শহরে পিডোমিটার তৈরির কারখানায় গিয়ে।

This article is written in Bangla language. It's about 10 of the lengthies documentary films in history.
For further information, check the hyperlinks inside the article.

Featured Image: aefreightlogistics.com

Related Articles