Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

সিনেমার আমেজ পাবার আগেই পড়ে ফেলুন চমৎকার সাতটি বই

বই পড়তে পড়তে আমরা অনেকেই সেটিকে সেলুলয়েডে চিন্তা করতে থাকি। কিন্তু বই সিনেমায় রূপান্তর হওয়ার আগেই সেটি শেষ করে, তারপর সিনেমা দেখে বন্ধুদের কাছে সেই বই আর সিনেমার পার্থক্য বোঝানোর চেয়ে ভালো অনুভূতি কি আর আছে? যেকোনো স্বীয়স্বীকৃত বইপোকার জন্য এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, ‘না’। আপনারা যাতে সেই অনুভূতি থেকে বঞ্চিত না হন, সেই লক্ষ্যেই আজকের লেখায় চমৎকার সাতটি বইয়ের কথা তুলে ধরা হলো, যেগুলো আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে সিনেমা হিসেবে মুক্তি পাবে।

১. অ্যা রিংকল ইন টাইম

প্রায় পাঁচ বছর হলো মেগ মারে বাবাকে ছাড়া থাকছে। তবে সে একা নয়। তার ছোট ভাই চার্লস তার এই সময়টায় সবচেয়ে আপনজন হিসেবে পাশে আছে। সেদিন বাবা একটা নতুন গ্রহের খোঁজ পেলেন। এরপর সেই যে বেরিয়ে গেলেন, আর ফিরে আসেননি। দীর্ঘ একটা সময় কেমন দেখতে দেখতে কেটে গেলো! হঠাৎ একদিন মেগের সাথে দেখা হয় অদ্ভুত তিন অভিযাত্রীর সাথে। তারপর সহপাঠী ক্যালভিনকে নিয়ে তাদের সাথে সে বের হয় সেই গ্রহের সন্ধানে।

অ্যা রিংকল ইন টাইম বইয়ের প্রচ্ছদ © Goodreads

উপরের কাহিনীটি মেডেলিন লেঙ্গেলের ‘অ্যা রিংকল ইন টাইম’ বইয়ে থেকে নেওয়া। বইয়ের এই কাহিনীর উপর ভিত্তি করে আগামী বছরের প্রথম দিকে মুক্তি পাচ্ছে একই নামের সিনেমা। এই সিনেমাটি আগামী বছরের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত সিনেমার মধ্যে অন্যতম। কেননা প্রায় একশ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই সিনেমাতে অভিনয় করছেন অপরাহ উইনফ্রে, ক্রিস পাইন, রিজ উইদারস্পুন ও জ্যাক গ্যালেফিনাকিসের মতো অভিনেতা।

বইটির গুডরিড রেটিং: ৪/৫

২. ফিফটি শেডস ফ্রিড

ব্রিটিশ উপন্যাসিক ই. এল. জেমসের লেখা ফিফটি শেডস ট্রিলজির সাথে পরিচিত আছেন অনেকেই। কেননা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের তালিকায় ‘অ্যা সং অফ আইস এন্ড ফায়ারের’ কয়েক ধাপ উপরে অবস্থান করছে এই সিরিজের প্রথম বই ‘ফিফটি শেডস অফ গ্রে’। তাছাড়া এই বইয়ের অবলম্বনে ২০১৫ সালে মুক্তি পেয়েছে একই নামের একটি সিনেমাও। সিনেমাটি সমালোচকদের কাছে খুব একটা প্রশংসা না পেলেও বক্স অফিসে ভালোই প্রভাব ফেলার কারণে এই বছরে মুক্তি পায় সিরিজের দ্বিতীয় বই নিয়ে সিনেমা ‘ফিফটি শেডস অফ ডার্কার’। তবে এবারও কপালে জোটেনি ইতিবাচক সমালোচনা।

ফিফটি শেডস ফ্রিড বইয়ের প্রচ্ছদ © Good Reads

কিন্তু তাতে দমে যাননি পরিচালক জেমস ফলি। আগামী বছর তিনি নিয়ে আসছেন ট্রিলজির শেষ বইয়ের উপর ভিত্তি করে নির্মিত সিনেমা ‘ফিফটি শেডস ফ্রিড’। এই বইয়ের গল্প সদ্য বিবাহিত আনেস্থেশিয়া ও ক্রিশ্চিয়ানের দাম্পত্য জীবনের জটিলতা নিয়ে।

বইটির গুডরিডস রেটিং: ৩.৯/৫

৩. মেইজ রানার: দ্য ডেথ কিওর

মার্কিন সাহিত্যিক জেমস ড্যাশনারের মেইজ রানার বই সিরিজ নিয়ে ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে দুটি সিনেমা। ২০১৪ সালে মুক্তি পায় ‘দ্য মেইজ রানার’ এবং পরের বছর ‘মেইজ রানার: দ্য স্কর্চ ট্রায়ালস’। প্রথমটি সমালোচকদের প্রশংসা পায়, পরের সিনেমাটি প্রথম দিন থেকেই বক্স অফিসে ভালো সাড়া পেলেও ব্যর্থ হয় সমালোচকদের মন জয় করে নিতে।

মেইজ রানার সিরিজের দ্য ডেথ কিওর বইয়ের প্রচ্ছদ © Goodreads

এবারে গ্ল্যাডারসদের যেতে হবে ‘দ্য লস্ট সিটি’তে; প্রাণঘাতী গোলকধাঁধা পেরিয়ে বাঁচিয়ে আনতে হবে তাদের বন্ধুদের।

বইটির গুডরিডস রেটিং: ৩.৮/৫

৪. দ্য ইনভিজিবল ম্যান

নিয়মিত যারা সিনেমা দেখেন, তাদের ইতোমধ্যে জানার কথা ইউনিভার্সাল ফিল্ম স্টুডিও ‘ইউনিভার্সাল মনস্টারস’ নামে নতুন এক সিনেমাটিক ইউনিভার্স শুরু করেছে। এ বছর ‘দ্য মামি’ নামের সিরিজের প্রথম সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, যেখানে দেখা মিলেছে ‘সোলজার অব ফরচুন’ নিক মর্টন ও ড. হেনরি জেকিলের।

জনি ডেপ ও ১৯৩৩ সালের ইনভিজবল ম্যান সিনেমার পোস্টার © Red Carpet Refs

এইচ. জি. ওয়েলসের লেখা ‘দ্য ইনভিজিবল ম্যান’ উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে একই নামে সিরিজের দ্বিতীয় সিনেমা ২০১৮ সালে মুক্তি পেতে যাচ্ছে এবং এতে মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন বিখ্যাত মার্কিন অভিনেতা জনি ডেপ। উপন্যাসটির কাহিনী মূলত জ্যাক গ্রিভিন নামের চিকিৎসককে নিয়ে। ড. গ্রিভিন ওষুধ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এমন এক ধরনের পোশন আবিস্কার করেন, যা পান করলে তিনি পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যেতে পারতেন।

বইটির গুডরিডস রেটিং: ৩.৮/৫

৫. দ্য ব্ল্যাক হ্যান্ড

এই বছরেরই এপ্রিল মাসে প্রকাশিত হয়েছে পুরস্কার বিজয়ী লেখক স্টিফেন টাল্টির ডিটেকটিভ থ্রিলারধর্মী বই ‘দ্য ব্ল্যাক হ্যান্ড’। লেখক তার বইয়ের কাহিনী সাজিয়েছেন বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে মাফিয়াদের উৎপত্তি ও ইতালিয়ান শার্লক হোমস পরিচিতি পাওয়া নিউ ইয়র্কের এক পুলিশ অফিসারের অভিযানের সত্য কাহিনী অবলম্বনে।

প্রচ্ছদ © Goodreads

বই বের হওয়ার পরপরই জানা গেছে, মার্কিন ফিল্ম স্টুডিও প্যারামাউন্ট পিকচারস এই গল্পের উপর ভিত্তি করে আগামী বছরই নির্মাণ করতে যাচ্ছে একটি সিনেমা। আর তাতে পুলিশ অফিসার জো পেট্রোসিনো চরিত্রে অভিনয় করবেন অস্কারজয়ী অভিনেতা লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিও।

বইটির গুডরিডস রেটিং: ৩.৮/৫

৬. দ্য গার্ল ইন দ্য স্পাইডার ওয়েব

অনেক জল্পনাকল্পনার পর আগামী বছর মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘দ্য মিলেনিয়াম’ সিরিজের চতুর্থ সিনেমা ‘দ্য গার্ল ইন দ্য স্পাইডার ওয়েব’। এবারে লিসাবেথ স্যান্ডারের চরিত্রে অভিনয় করছেন গোল্ডেন গ্লোব বিজয়ী অভিনেত্রী ক্লেয়ার ফয়। ডেভিড লগেরক্রান্তজের একই নামের বই ‘দ্য গার্ল ইন দ্য স্পাইডার ওয়েব’ এর উপর ভিত্তি করেই সাজানো হয়েছে সিনেমার প্লট। এবারে সে হ্যাক করতে নামবে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি।

দ্য গার্ল ইন দ্য স্পাইডার ওয়েব বইয়ের প্রচ্ছদ © Goodreads

বইপোকাদের কাছে জনপ্রিয় ‘দ্য মিলেনিয়াম’ সিরিজটির ২০০৫ থেকে শুরু করে পরপর তিন বছরে মুক্তি পেয়েছিল প্রথম তিনটি বই ‘দ্য গার্ল উইদ দ্য ড্রাগন ট্যাটু’, ‘দ্য গার্ল হু প্লেইড উইদ ফায়ার’ ও ‘দ্য গার্ল হু কিকড হর্নেস্ট’স নেস্ট’। প্রথমে দশটি বই লেখার কথা থাকলে এই তিনটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি লেখার পর প্রকাশের পূর্বেই লেখক স্টিগ লারসন মারা গেলেন। অনেকদিন এই সিরিজে হাত দেননি অন্য কোনো লেখক। শেষমেশ ২০১৩ সালে আরেক সুইডিশ লেখক ডেভিড লগেরক্রান্তজ রাজি হন স্টিগের অসম্পূর্ণ  সিরিজটি সম্পূর্ণ করতে। ২০১৫ সালে মুক্তি পায় তার লেখা সিরিজের চতুর্থ বই ‘দ্য গার্ল ইন দ্য স্পাইডার ওয়েব’ ও গত মাসে মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য গার্ল হু টেকস অ্যান আই ফর অ্যান আই’।

বইটির গুডরিডস রেটিং: ৩.৭/৫

৭. উইটনেস ফর প্রসিকিউশন

বিখ্যাত ক্রাইম নোভেলিস্ট আগাথা ক্রিস্টি ‘উইটনেস ফর প্রসিকিউশন’ নামের এই ছোট গল্প লিখেছিলেন সেই ১৯২৫ সালে। সেই গল্পে রহস্যময়ভাবে খুন হন এক ধনী বিধবা মহিলা। আর সেই মামলায় ফেঁসে যাওয়া নিরপরাধ একজন লোককে বাঁচাতে ডেকে আনা হয় তখনকার সবচেয়ে ঝানু উকিলকে।

৯৫৭ সালে মুক্তি পাওয়া উইটনেস ফর প্রসিকিউশন সিনেমার পোস্টার © United Artists

এই গল্পটির অবলম্বনে প্রথমবারের মতো বড় পর্দায় সিনেমা এসেছিল সেই ১৯৫৭ সালে। এরপর বহু বছর এই কাহিনী নিয়ে নির্মাণ হয়নি কোনো সিনেমা বা টেলিভিশন ড্রামা। শেষমেশ গেলো বছর বিবিসির কল্যাণে দু’পর্বের একটি টেলিভিশন ড্রামা টিভিতে প্রচারিত হয়। এবারে সেই গল্পে হাত দিয়েছেন অভিনেতা ও অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক বেন অ্যাফ্লেক। যতদূর জানা গেছে, তিনি নিজেই অভিনয় করবেন সেই উকিলের চরিত্রে।

বইটির গুডরিডস রেটিং: ৪.২/৫

ফিচার ইমেজ- Edited by Writer

Related Articles