Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

গেম অব থ্রোন্স: যেভাবে এগন টারগেরিয়ান সেভেন কিংডম জয় করেছিল

গেম অব থ্রোন্সের ঘটনাবলী যেখানে শুরু হয় অর্থাৎ রবার্ট ব্যারাথিয়নের শাসনামলের প্রায় চারশ বছর আগের কথা। এসোস মহাদেশের বিশাল অংশ জুড়ে ভ্যালেরিয়ান নামের এক সভ্যতার বসবাস ছিল। সামরিক, সাংস্কৃতিক, জাদুকরী বিদ্যা- এমন কিছু নেই যেখানে তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ছিল না। তাদের রাজধানীর নাম ছিল ‘ভ্যালেরিয়া’। এখানে বাস ছিল প্রচন্ড ক্ষমতাশালী লর্ডদের- যারা শাসন করত পুরো সভ্যতাটি। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সভ্যতাটি শাসন করার পেছনে তাদের এই প্রবল ক্ষমতার প্রধান উৎস ছিল ড্রাগন। জাদুবিদ্যা বা যেকোনোভাবেই হোক তারা পৃথিবীর সবচেয়ে ম্যাজিক্যাল প্রাণীকে পোষ মানিয়েছিল।

এরকমই একজন ড্রাগনলর্ড ছিলেন এইনার টারগেরিয়ান। ক্ষমতার বিচারে ভ্যালেরিয়ায় তার পরিবার তালিকার বেশ নিচেই থাকবে। একরাতে তার মেয়ে ডেইনিস স্বপ্নে দেখল, ভ্যালেরিয়া আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। লর্ড এইনার এই স্বপ্নকে তার পরিবারের জন্য এক সংকেত হিসেবে ধরে নিয়ে ভ্যালেরিয়া ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। কিছুকাল পরেই তার পরিবার, সম্পত্তি, ড্রাগন এবং দাসদাসীদের নিয়ে ভ্যালেরিয়ার পশ্চিমে ড্রাগনস্টোন নামের দ্বীপে স্থানান্তর হলেন।

বারো বছর পর সত্যিই ভ্যালেরিয়ান সভ্যতার উপর ধ্বংস নেমে এলো। পাহাড়গুলো ভেঙে জ্বলন্ত লাভা নেমে এলো ভ্যালেরিয়ানদের উপর। নদী এবং হ্রদের পানি ফুটতে লাগল। আগুনের ফোয়ারা বের হলো মাটির নিচ থেকে এবং সবকিছু ভস্মীভূত করে গেল। এতই উত্তপ্ত এবং উঁচুতে উঠেছিল সেই ফোয়ারা যে, ড্রাগনও রক্ষা পেল না। এই প্রচন্ড ধ্বংসযজ্ঞকে ইতিহাস ‘ডুম অব ভ্যালেরিয়া’ বলে থাকে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইতিহাসের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ নগরীটিই ইতিহাসে পরিণত হল। এই ঘটনার পর একমাত্র ড্রাগনলর্ড হিসেবে টারগেরিয়ানরাই জীবিত ছিল।

এরপর অনেক বছর পার হলো। এর মধ্যে যারাই টারগেরিয়ান লর্ড হয়েছে সবাই-ই নিজেদের মৃত অতীত নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলত। কিন্তু এগন ভিন্ন ছিল। ‘ডুম অব ভ্যালেরিয়া’র প্রায় একশ বছর পর সে-ই টারগেরিয়ান লর্ড হয়েছিল। তার পূর্বপুরুষদের মতো সে পূর্বে তাকিয়ে ধ্বংসস্তূপের মাঝে আফসোস খুঁজে বেড়ায়নি। বরং তার নজর ছিল পশ্চিমের মহাদেশ ওয়েস্টেরসের দিকে।

এগন পশ্চিমে ওয়েস্টেরসের দিকে তাকাত আর সম্ভাবনা খুঁজে পেত। শস্যে ভরা উর্বর অঞ্চল, খনিভরা স্বর্ণ, পরাক্রমশালী সামরিক বাহিনী- কিন্তু তাদেরকে শাসন করার জন্যে আকাশে ছিল না কোনো ড্রাগন। এগন সেই শাসকরুপী ড্রাগন হওয়ার সংকল্প করল। সে তার বোনদের সাথে ড্রাগনে চড়ে ওয়েস্টেরসের উপর দিয়ে বেশ কয়েকবার ঘুরে এসে মহাদেশটির ভৌগোলিক অবস্থা বুঝে নিয়েছিল। এরপর ড্রাগনস্টোনে তার নিজস্ব চেম্বারে ওয়েস্টেরসের মানচিত্র অনুসরণ করে এক বিশাল টেবিল বানানো হল। ওয়েস্টেরসের সাতটি রাজ্য তখন সাতটি ভিন্ন পরিবার বা হাউজ থেকে শাসন করা হত। রাজ্যগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো ছিল না। বেশিরভাগ সময়েই তাদের মধ্যে যুদ্ধ চলত।

স্টর্মল্যান্ড শাসন করত হাউজ ডুরানডন। অহংকার ভরে তারা নিজেদের নাম দিয়েছিল ‘কিংস অব স্টর্মস’। রিভারল্যান্ড শাসন করত আয়রন আইল্যান্ডের হাউজ হোয়ার। উত্তরের শীতার্ত অঞ্চলগুলো শাসন করত স্টার্ক পরিবার। ওয়েস্টেরসের সবচেয়ে ধনী পরিবার ছিল হাউজ ল্যানিস্টার। তাদের অধীকৃত ওয়েস্টারল্যান্ডে সোনার খনিগুলো ছিল তাদের বিত্তের উৎস। দ্বিতীয় সবচেয়ে ধনী পরিবার ছিল হাউজ গার্ডেনার। তারা রিচ অঞ্চল শাসন করত। হাউজ অ্যারিন শাসন করত ভেইলের পাহাড়ি অঞ্চলগুলো। তাদের প্রাসাদও ছিল পাহাড়ের উপরে। ‘ব্লাডি গেট’ নামের প্রবেশপথ ছাড়া এই নগরীতে প্রবেশ করা অসম্ভব। হাউজ মারটেল অধিকার করেছিল ডর্ন। এর বেশিরভাগ অঞ্চলই মরুভূমি দ্বারা আবিষ্ট।

ওয়েস্টেরসের সাত রাজ্য; Image Source: Quora

যুদ্ধের প্রস্তুতি

ভ্যালেরিয়া থেকে যে পাঁচটি ড্রাগন টারগেরিয়ানদের সাথে এসেছিল এগনের সময় পর্যন্ত তাদের মধ্যে একটিই জীবিত ছিল, ব্যালেরিয়ন দ্য ব্ল্যাক ড্রেড। এই ব্যালেরিয়নই ছিল এগনের যুদ্ধের বাহন। ড্রাগনস্টোনে জন্ম নেওয়া দুটি ড্রাগন ভ্যাগার ও মিরাক্সিস ছিল এগনের দুই বোন যথাক্রমে ভিসেনিয়া এবং রেইনিসের বাহন। প্রসঙ্গক্রমে, ভ্যালেরিয়ানদের নিজেদের ভাই-বোনের মধ্যে বিয়ে করার রীতি ছিল। তাই বলাবাহুল্য, ভিসেনিয়া ও রেইনিস একইসাথে এগনের স্ত্রীও ছিল।

এগন তার মিত্রপক্ষদের নিজ নিজ সৈন্যবাহিনী নিয়ে প্রস্তুত হওয়ার বার্তা পাঠাল। ড্রাগনস্টোনে তাদের সাথে এগন ও তার বোনদের যুদ্ধের কৌশল সংক্রান্ত দীর্ঘ আলোচনা ও পরামর্শ হলো। সেই পরামর্শ অনুযায়ীই সেভেন কিংডমের সব লর্ডদের কাছে চিঠি পাঠানো হলো। সবগুলো চিঠিতে একই বার্তা ছিল: এই দিন থেকে ওয়েস্টেরসে শুধুমাত্র একজনই রাজা থাকবে আর সে হচ্ছে এগন টারগেরিয়ান। যারা এগনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে মাথা নোয়াবে তাদের পরিবারের নাম, সম্পদ এবং লর্ড পদবী বজায় থাকবে। অন্যথায়, তাদের পরিবারের নাম মুছে ফেলা হবে।

ব্ল্যাকওয়াটার নদীর মুখ; Image Source: heavy.com

ব্ল্যাকওয়াটার নদী যেখানে এসে সাগরের সাথে মিলিত হয়েছে এগন সেখানে তার সেনাবাহিনী নিয়ে এসে নামল। প্রাথমিকভাবে এখানে ‘এগনফোর্ট’ নামের একটি কাঠের দুর্গ গড়ে তোলা হল। ওয়েস্টেরসের প্রথা মেনে হাউজ টারগেরিয়ানের ব্যানার উত্তোলন করা হলো: একটি তিন মাথার লাল ড্রাগন কালো ভূমির উপর তার আগুনের নিঃশ্বাস ফেলছে।

ভিসেনিয়া এগনের মাথায় রুবিখচিত ভ্যালেরিয়ান স্টিলের মুকুট পরিয়ে দেয় এবং উপস্থিত লর্ডরা তাকে অভিনন্দন জানায়। এগন তার প্রথমদিকের এই বিশ্বস্ত লর্ডদের সমাবেশকে একসাথে নাম দেয় ‘স্মল কাউন্সিল’ আর তার ছোটবেলার বন্ধু ওরিস ব্যারাথিয়নকে ঘোষণা দেয় নিজের ‘হ্যান্ড’ হিসেবে। এরপরে এগনের সৈন্যদল তিনভাগ হয়ে তিনটি রাজ্যে প্রবেশ করে।

হ্যারেনহাল পতন

হাউজ হোয়ারের অধীকৃত রাজ্য বিস্তৃত ছিল আয়রন আইল্যান্ড থেকে ট্রাইডেন্ট পর্যন্ত। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে আয়রন আইল্যান্ডের লোকেরা রিভারল্যান্ডে ছিনতাই করে বিশাল সম্পত্তি অর্জন করে। অন্যায়ভাবে অধিকার করা এই সম্পত্তি দিয়েই তাদের রাজা হ্যারেন গডস আই হ্রদের তীরে হ্যারেনহাল প্রাসাদ নির্মাণ করেছিল। পাথর দিয়ে নির্মিত ওয়েস্টেরসের সবচেয়ে দুর্ভেদ্য এই প্রাসাদ ছিল রাজা হ্যারেনের অহংকারের বস্তু।

এগনের সৈন্যরা গডস আই লেকের তীরে এসে দুবার আক্রমণের শিকার হয়। রাজা হ্যারেনের সামরিক শক্তি সংখ্যার বিচারে এগিয়ে থাকলেও ড্রাগনের বিরুদ্ধে তার কোনো প্রতিরোধ ছিল না। তাই এগনের শিবিরে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হলেও যুদ্ধে শেষমেশ টারগেরিয়ানরাই জেতে। এই যুদ্ধের পরে রিভারল্যান্ডের লর্ডরা এডমায়েন টালির নেতৃত্বে টারগেরিয়ান দলে যোগ দেয়। যদিও হাউজ হোয়ার তিন প্রজন্ম ধরে রিভারল্যান্ড শাসন করে আসছিল, তাদের অত্যাচার আর শোষণের কারণে তারা কোনো রিভারলর্ডেরই আনুগত্য অর্জন করতে পারেনি।

যুদ্ধে হারার পর রাজা হ্যারেন তার দুর্ভেদ্য প্রাসাদে আশ্রয় নিল। এগন শেষবারের মতো তাকে আত্মসমর্পণের সুযোগ দিল। কিন্তু হ্যারেন দম্ভভরে উত্তর দিল,

– আমার প্রাসাদের বাইরে কী রয়েছে তা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। এই প্রাসাদের দেয়াল অনেক পুরু এবং শক্তিশালী।

– ড্রাগনরা উড়তে পারে।

– (অবজ্ঞাভরে) কিন্তু পাথর আগুনে পোড়ে না।

– যখন সূর্য ডুবে যাবে তোমার পরিবারের চিহ্নও সেই সাথে মুছে যাবে।

সেই রাতে সূর্য ডুবে যাওয়ার পর থেকে হ্যারেনের সৈন্যরা প্রতিটি টাওয়ার পাহারা দেওয়া শুরু করল। ড্রাগনের ভয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তারা আকাশের দিকে নজর রেখেছিল। আকাশে চাঁদ উঠল ঠিকই, কিন্তু কোনো ড্রাগন দেখা গেল না। অনেকে তাই ভাবতে শুরু করল, এগন হয়তো মিথ্যা হুমকি দিয়েছে।

কিন্তু এগন মিথ্যা হুমকি দেয় না। সে তার ড্রাগন ব্যালেরিয়নকে নিয়ে আকাশে অনেক উপরে উঠেছিল। মেঘ ভেদ করে এতই উপরে উঠেছিল যে হ্যারেনহালকে পিঁপড়ার প্রাসাদের মতো মনে হচ্ছিল। এরপর শুরু হলো তার অবতরণ। হ্যারেনহালের পাঁচটি টাওয়ার এগনের সামনে হাতের পাঁচ আঙ্গুলের মতো করে ধরা দিল। ব্যালেরিয়ন সেই আঙুলগুলোয় তার আগুনের নিঃশ্বাস বর্ষণ করা শুরু করল। টাওয়ারের প্রহরীরা পুড়ে ছাই হয়ে গেল।

রাজা হ্যারেনের ধারণা ভুল ছিল না, পাথরে আগুন জ্বলতে পারে না। কিন্তু ড্রাগনের আগুনে পুরো পাথুরে প্রাসাদ অগ্নিদগ্ধ চুলার মতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। রাজা হ্যারেন আর তার ছেলেরা এই তাপে সিদ্ধ হয়ে মারা গেল। সেই রাতে প্রাসাদের বাইরে দাঁড়ানো রিভারলর্ডরা দেখেছিল, হ্যারেনহালের পাঁচটি টাওয়ার অন্ধকারের মধ্যে প্রচন্ড তাপে লাল রং ধারণ করেছে এবং মোমের মতো বেঁকে গলছে।

ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া হ্যারেনহাল প্রাসাদ; Image Source: wallpapersafari.com

পরদিন সকালে এগন এডমায়েন টালিকে ট্রাইডেন্টের প্রধান লর্ড হিসেবে ঘোষণা দেয়। অন্যান্য রিভারলর্ডরা তা সানন্দে মেনে নেয়।

স্টর্মল্যান্ডের যুদ্ধ

এগনের সৈন্যবাহিনীর সবচেয়ে বড় অংশটি ওরিস ব্যারাথিয়নের নেতৃত্বে স্টর্মল্যান্ড আক্রমণ করতে গিয়েছিল। সাথে ছিল রানী রেইনিস এবং তার ড্রাগন মিরাক্সিস। স্টর্মল্যান্ডের রাজা ছিল আর্গিলাক। তার প্রাসাদ ‘স্টর্মস এন্ড’ও একটি দুর্ভেদ্য দুর্গ ছিল। কিন্তু হ্যারেনহালের পতনের খবর শোনার পর আর্গিলাক বুঝতে পেরেছিল, প্রাসাদ তাকে ড্রাগন থেকে রক্ষা করতে পারবে না।

আর্গিলাকের সৈন্যবাহিনী ওরিসের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ছিল। তাই সে-ই আক্রমণ করার জন্যে মনস্থির করল এবং নিজের বাহিনীকে প্রস্তুত করল। রানী রেইনিস এবং তার ড্রাগনের কল্যাণে ওরিস ব্যারাথিয়ন তা জানতে পেরেছিল। এক বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে সে তার সৈন্যদের নিয়ে পাহাড়ের উপর ঘাঁটি গাড়লো।

দুই সেনাবাহিনী কাছাকাছি হতেই হঠাৎ করে বাতাসের গতি বেড়ে গেল এবং ঝড় শুরু হলো। যে ঝড়টি এই যুদ্ধের নামকরণ করে দিল ‘দ্য লাস্ট স্টর্ম’। আর্গিলাকের লর্ডরা তাকে ঝড় শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু তার অভিজ্ঞ চোখ দেখতে পেয়েছিল ঝড়ের দিক টারগেরিয়ান শিবিরের প্রতিকূলে। আর্গিলাক এই সুযোগটি নিতে চাইল।

আর্গিলাক আক্রমণ করলো। তার নাইটরা শত্রুপক্ষকে হামলা করতে উদ্যত হয়ে তিনবার ব্যর্থ হলো। কারণ ছিল পাহাড়গুলো বেশ খাড়া এবং বৃষ্টিতে ভিজে মাটিও বেশ পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল। তাই ঘোড়া নিয়ে নাইটরা সুবিধা করতে পারছিল না। আর্গিলাক তখন তার কৌশল পরিবর্তন করল। বর্শাধারী সৈনিকদের পায়ে হেঁটে পাহাড়ের উপরে আক্রমণের জন্যে পাঠাল। বৃষ্টির প্রচন্ড গতি ওরিসের সৈন্যদের মুখে এসে পড়ায় তারা সামনের কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না। যখন দেখতে পেল ততক্ষণে বেশ দেরি হয়ে গেছে। স্টর্মকিংয়ের বাহিনী এভাবে একের পর এক পাহাড় শত্রুমুক্ত করতে লাগল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধল যখন টারগেরিয়ান ঘাঁঁটির একেবারে মাঝের পাহাড়টিতে তারা আক্রমণ করতে গেল। এই পাহাড়েই ছিল রেইনিস এবং তার ড্রাগন মিরাক্সিস। পাহাড়ের উপরে প্রতিরক্ষা লাইন ভেঙে যখন আর্গিলাকের সৈন্যরা ড্রাগনের সামনে পড়ল, হঠাৎ আগুনের আক্রমণে তারা দিশেহারা হয়ে গেল। এই বিশৃংখলায় পড়ে আর্গিলাক নিজেও তার ঘোড়া হারাল।

স্টর্মস এন্ড প্রাসাদ; Image Source: airfreshener.club

ওরিস ব্যারাথিয়ন যখন সেখানে পৌঁছাল, দেখতে পেল যে আর্গিলাক একাই প্রায় আধডজন সৈন্যের সাথে লড়ছে। ওরিস নিজের ঘোড়া থেকে নামল যুদ্ধে সমতা ফেরানোর জন্যে এবং আর্গিলাককে শেষবারের মতো আত্মসমর্পণ করতে অনুরোধ করল। উত্তরে আর্গিলাক অভিশাপ দিল তাকে। এর মধ্যে ঝড় আরো ঘনীভূত হতে লাগল এবং এই তীব্র ঝড়ের মধ্যে দুই প্রচন্ড যোদ্ধা জীবন এবং রাজ্যের জন্যে লড়তে লাগল। শেষে আর্গিলাক মারা গেল, হাতে নিজের প্রিয় তরবারি নিয়েই। তার লর্ড আর নাইটরা তরবারি ফেলে পালাল।

ওরিস তার সামরিক শিবির নিয়ে স্টর্মস এন্ড প্রাসাদ দখল করতে গেল। কিন্তু আবিষ্কার করল যে, আর্গিলাকের মেয়ে নিজেকে ‘স্টর্ম কুইন’ ঘোষণা দিয়ে প্রাসাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত করে রেখেছে। ওরিসকে অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না। রাত নেমে এলে দেখা গেল আর্গিলাকের লোকেরা তার মতো সাহসী ছিল না। সেই রাতেই তারা নিজেদের নতুন স্টর্ম কুইনকে শিকলবন্দী করে ওরিসের হাতে সোপর্দ করে দিল।

ওরিস নির্দয় হলো না। আর্গিলাকের মেয়েকে শিকলমুক্ত করে সে নিজের চাদর দিয়ে তাকে আবৃত করল। আর্গিলাকের সাহস এবং বীরত্বকে সম্মান দেখিয়ে ওরিস ব্যারাথিয়ন হাউজ ডুরানডনের প্রতীক নিজের করে নিল। সেই থেকে হাউজ ব্যারাথিয়নের ব্যানারে মুকুটযুক্ত হরিণ দেখা গেল, স্টর্মস এন্ড হলো তাদের প্রাসাদ। আর্গিলাকের মেয়ে ওরিসের স্ত্রী হয়ে নিজের ঘরে ফিরে গিয়েছিল।

দ্য ফিল্ড অব ফায়ার

এগনকে প্রতিহত করতে হাউজ ল্যানিস্টার আর হাউজ গার্ডেনার নিজেদের শত্রুতা ভুলে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একত্রিত হয়েছিল। ল্যানিস্টারদের রাজা ছিল লোরেন ল্যানিস্টার আর মার্ন ছিল গার্ডেনারদের রাজা। ওয়েস্টেরসের দুই ধনী রাজ্যের সামরিক শক্তি যখন একত্রিত হল, এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক শিবিরে পরিণত হয়েছিল। পাঁচ হাজারেরও বেশি নাইটসমৃদ্ধ সেই শিবিরে সৈন্যসংখ্যা ছিল পঞ্চান্ন হাজার। রাজা মার্ন গর্বভরে এই সংযুক্ত সামরিক শক্তির নাম দিয়েছিল ‘আয়রন ফিস্ট’।

রাজা মার্ন যা ভুলে গিয়েছিল তা হলো এগনের সামরিক বাহিনী আয়রন ফিস্টের তুলনায় নগণ্য হলেও তার ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে কোনো সৈন্য বা নাইটের বাহিনী ছিল না। তার আসল ক্ষমতার উৎস ছিল ড্রাগন। এই দুই রাজা কখনো ড্রাগন দেখেনি, ড্রাগনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা তো অনেক পরের ব্যাপার। প্রায় হাজার বছর ধরে দুই পরিবার নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল এবং বিজয় সবসময়েই বড় বাহিনীর পক্ষে গিয়েছে। এগনের শিবিরের তুলনায় পাঁচগুণ বড় এই বাহিনী হয়তো একটি ড্রাগনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিতেও যেতে পারত, কিন্তু এগন এসেছিল তিনটি ড্রাগন নিয়ে।

রাজারা যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে একটি সমতল ভূমি বেছে নিল এই ভেবে যে, এটা তাদের অশ্বারোহী নাইট আর তীরন্দাজদের যথেষ্ট সুবিধা দেবে। কিন্তু তারা যেটা খেয়াল করেনি তা হচ্ছে প্রচুর ঘাস এবং গম গাছ এই ভূমি আবৃত করে রেখেছিল এবং অনেকদিনের অনাবৃষ্টিতে তা আগুনের জ্বালানি হিসেবে উপযুক্ত হয়েছিল।

যুদ্ধ শুরু হলে আয়রন ফিস্টের নাইটরা টারগেরিয়ান শিবিরের প্রতিরক্ষা ভেঙে ঢুকে পড়তে কোনো সময়ই নিল না। এত দ্রুতই তা ঘটেছিল যে এগন তার ড্রাগন নিয়ে সেখানে পৌঁছাতেই পারেনি। কিন্তু এরপরেই এগন আর তার বোনেরা ড্রাগন নিয়ে আক্রমণে গেল। তারা আয়রন ফিস্টের চারপাশের সব শুকনো ঘাসে আগুন লাগিয়ে দিল। আগুন দিয়ে ঘিরে ফেলায় সৈন্যরা সামনে এগোতে পারছিল না, নিজেদেরকেও রক্ষা করতে পারছিল না। তাদের শিবিরে তীব্র বিশৃংখলা দেখা দিল। পরে ধোঁয়া যখন ঘন হয়ে গেল তারা আর কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না।

কাব্যিকভাবে এই যুদ্ধের নামকরণ হল ‘দ্য ফিল্ড অব ফায়ার’। চার হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল এই অগ্নিদগ্ধ মাঠে পুড়ে। হাউজ গার্ডেনারের কোনো সদস্যই বেঁচে ফিরতে পারেনি। আর দশ হাজারেরও বেশি মানুষ আগুনে পুড়ে মারাত্মক জখম হয়।

দ্য ফিল্ড অব ফায়ার যুদ্ধ; Image Source: got.reactor.cc

অপরদিকে এগনের শিবির সৈন্য হারালো একশজনেরও কম। রানী ভিসেনিয়ার কাঁধে তীর লাগলেও তা গুরুতর কিছুই ছিল না। পরদিন লোরেন ল্যানিস্টার আত্মসমর্পণ করল। এবং এগন তার কথা রেখে ল্যানিস্টারদের লর্ড পদবী বহাল রেখেছিল। লোরেন ল্যানিস্টারকে পশ্চিমের ওয়ার্ডেন ঘোষণা করা হলো।

অন্যদিকে, হাউজ গার্ডেনারের প্রাসাদ হাইগার্ডেনের গোমস্তা হারল্যান টাইরেল এগনের কাছে প্রাসাদটি সমর্পণ করে এগনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করল। পুরষ্কারস্বরূপ এগন তাকে হাইগার্ডেনের লর্ড এবং দক্ষিণাঞ্চলের ওয়ার্ডেন ঘোষণা করল।

দ্য নর্থের আত্মসমর্পণ

টরহেন স্টার্ক তার সকল মিত্রবাহিনী এবং সামরিক শক্তি নিয়ে এগনকে মোকাবেলা করতে দক্ষিণে রওনা হয়েছিল। ত্রিশ হাজার সৈন্য নিয়ে উত্তরের রাজা যখন ট্রাইডেন্টে হাজির হলো, নদীর অপরপাশে এগনের সদ্য জয় করা রাজ্যগুলোর মিলিত সামরিক শক্তি দেখতে পেল যেটা স্টার্ক বাহিনীর চেয়ে বড় ছিল এবং তাদের সাথে ছিল তিনটি ড্রাগন।

সেই রাতে উত্তরাঞ্চলের লর্ডরা পরামর্শ করতে বসল। কেউ ফলাফল মেনে নিয়ে যুদ্ধে যাওয়ার তাড়না দিল। কেউ বলল উত্তরে ঢোকার প্রবেশপথের দুর্গ মোয়েট কেইলিনে প্রতিরক্ষা বসানোর জন্যে, যেটাকে ভেদ করে দক্ষিণদিক থেকে কখনও কোনো আক্রমণ উত্তরে প্রবেশ করতে পারেনি। একজন আবার অতিরিক্ত বিপজ্জনক পরামর্শ দিল রাতের আঁধারে গিয়ে অ্যামবুশ করার জন্য। তাহলে হয়তো অতর্কিত আক্রমণে ড্রাগনগুলোকে মেরে ফেলার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকে।

টরহেন স্টার্ক সব শুনল এবং পরদিন সকালে ট্রাইডেন্ট অতিক্রম করে নিজের পরিবারের প্রাচীন মুকুটটি এগনের পায়ে সোপর্দ করল। এগনও তাকে অসম্মানিত করেনি। সে টরহেন স্টার্ককে উইন্টারফেলের লর্ড এবং উত্তরের ওয়ার্ডেন ঘোষণা করল। এই কারণেই ইতিহাসে টরহেন স্টার্কের নাম দেওয়া হয় ‘দ্য কিং হু নেল্ট’। কিন্তু এই আত্মসমর্পণের মাধ্যমে উত্তরের লোকজন কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই ঘরে ফিরতে পেরেছিল।

টরহেন স্টার্কের আনুগত্য প্রকাশ; Image Source: deviantart.com

ভেইল জয়

হাউজ অ্যারিন ওয়েস্টেরসের অন্যতম প্রাচীন পরিবার ছিল। এগনকে আটকাতে তারা নিজেদের একমাত্র পাহাড়ি প্রবেশপথ ব্লাডি গেট বন্ধ করে দিয়ে ভেইল রাজ্য সিল করে দিয়েছিল। রানী শ্যারা তার বালকপুত্র রাজা রোনেলকে নিয়ে তাদের দুর্ভেদ্য প্রাসাদ ঈরীতে আশ্রয় নিল। মেঘের উপরের এই প্রাসাদ থেকে অনেক নিচের ওয়েস্টেরস এবং তার চলমান সমস্যাগুলোকে অনেক দূরের এবং ক্ষীণ মনে হয়। কিন্তু পাহাড়ের চূড়ায় মেঘের সীমানা পার হয়েও রানী শ্যারা ড্রাগন থেকে রেহাই পেল না।

পাহাড়ের উপরে অবস্থিত সুউচ্চ ঈরী; Image Source: gameofthrones.fandom.com

একদিন রানী শ্যারা প্রাসাদের বাইরের চত্বরে বের হয়ে দেখতে পেল তার ছেলে স্বয়ং ভিসেনিয়া টারগেরিয়ানের কোলে বসে রয়েছে। সাথে রয়েছে ড্রাগন ভ্যাগার। শ্যারাকে দেখে রাজা রোনেল আবদার করল সে ভিসেনিয়ার সাথে ড্রাগনে চড়তে চায়। অল্পবয়স্ক রোনেল বুঝতেও পারেনি ভিসেনিয়া তাকে বন্দি করে রেখেছে।

ভিসেনিয়া শ্যারাকে দেখে হাসল। জবাবে শ্যারাকেও ভদ্রতার হাসি দিতে হল। নিজের ছেলেকে শত্রুর হাতে দেখে শ্যারা আর কোনো উপায় খুঁজে পেল না। হাউজ অ্যারিনের প্রাচীন ফ্যালকন মুকুটটি এনে ভিসেনিয়ার কাছে সমর্পণ করল। এরপরেই রোনেল ভিসেনিয়ার সাথে ভ্যাগারের পিঠে চড়ে আকাশে উড়াল দিল। ড্রাগনে চড়ার মূল্যস্বরূপ তাকে নিজের রাজ্য ও রাজা পদবী হারাতে হল। বালক রাজার কাছে হয়তো এটাকে ন্যায্য লেনদেন মনে হয়েছিল।

ওল্ডটাউনে রাজ্যভিষেক

ওয়েস্টেরসের সবগুলো মাথা এগনের কাছে নত হলেও এর হৃদয়টি তখনো মুক্ত ছিল। এগন তাই এবার রওনা দিল ওল্ডটাউনে। সেভেন কিংডমের পবিত্র ধর্ম ‘দ্য ফেইথ অব দ্য সেভেন’ এর কেন্দ্রস্থল ছিল এই পবিত্র শহরেই।

এগন ওয়েস্টেরসে যখন পা রেখেছিল হাই সেপটন নিজেকে সেপ্টের মধ্যে বন্দি রেখে তার ঈশ্বরের সাতটি সত্তার জন্যে সাতদিন, সাতরাত উপবাসে ছিল। ঈশ্বর তার সাথে কথা বলেনি, কিন্তু তার বাস্তবিক বুদ্ধিমত্তা ঠিকই জাগ্রত হয়েছিল। হাই সেপটন বুঝতে পেরেছিল, ওল্ডটাউন যদি যুদ্ধ করতে যায় পুরো শহরটিই আগুনে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে। এগন বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী কাউকেই রেহাই দেবে না। তাই হাই সেপটনের নির্দেশে ওল্ডটাউনের দরজা এগনের জন্য খোলা রাখা হলো।

ওল্ডটাউনের পবিত্র শহর; Image Source: books.openedition.org

হাই সেপটন এগনকে শহরে প্রবেশের সময় অভিবাদন জানিয়েছিল। এখানেই এগনের রাজ্য অভিষেক হয়। স্বয়ং হাই সেপটন তার মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দিয়ে সেভেন কিংডমের রাজা হিসেবে ঘোষণা দেয়।

Aegon of House Targaryen, First of His Name, King of the Andals and the First Men, Lord of the Seven Kingdoms and Protector of the Realm

বেশিরভাগ মানুষই ভেবেছিল এগন রাজা হিসেবে ওল্ডটাউনেই অবস্থান নেবে। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণিত করে সে চলে যায় ওয়েস্টেরসের যেখানে প্রথম তার পা পড়েছিল, ব্ল্যাকওয়াটার নদীর মুখে সেই ছোট শহরে। স্থানীয়রা ততদিনে এই জায়গাকে ‘কিংস ল্যান্ডিং’ বলে নামাঙ্কিত করেছিল। কাঠের তৈরি বাড়ি, নোংরা কাদামাখা রাস্তার শহরটি দেখতে মোটেও রাজধানীর মতো ছিল না। কিন্তু এগন যখন এটাকে নিজের কোর্ট বানালো, কাঠগুলো পরিণত হলো পাথরে। নোংরা কাদা চিরদিনের মতো চাপা পড়ে গেল রেড কিপ প্রাসাদের নিচে।

এগনের বিজয়ের পরের কিংস ল্যান্ডিং; Image Source: cntraveler.com

এগন তার পরাজিত শত্রুদের তরবারি সংগ্রহ করে কিংস ল্যান্ডিংয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিল। তখনও কেউ বুঝতে পারেনি এগন এতগুলো তরবারি দিয়ে কী করবে। ওল্ডটাউন থেকে ফিরে এই তরবারিগুলো ড্রাগনের আগুনে পুড়িয়ে বানানো হল সেভেন কিংডমের রাজার সিংহাসন, ওয়েস্টেরসের সবচেয়ে ক্ষমতাবানের মসনদ ‘আয়রন থ্রোন’। এই মসনদ একইসাথে এগনের এই প্রচন্ড বিজয়কেও প্রতীকায়িত করে।

বইয়ে বর্ণিত আয়রন থ্রোন; airfreshener.club

ডর্নের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ

ভিসেনিয়া যখন ঈরীতে গিয়ে ভেইল জয় করে এসেছিল, রেইনিস তখন গিয়েছিল ডর্নে। হাউজ মারটেলের প্রাসাদে রাজকন্যা মেরিয়ার সাথে সে সাক্ষাৎ করেছিল। মেরিয়া বলেছিল, ডর্নের মানুষেরা টারগেরিয়ানদের শাসন চায় না। টারগেরিয়ানদের ড্রাগনরা যত ইচ্ছা মানুষ পোড়াতে পারে, কিন্তু হাউজ মারটেল কখনো আত্মসমর্পণ করবে না। রেইনিস তখনই অশীতিপর এই রাজকন্যাকে পুড়িয়ে ফেলতে পারত। কিন্তু সে এগনকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিয়ে ডর্ন থেকে চলে এসেছিল।

এগনের রাজ্যভিষেকের পরে তিন টারগেরিয়ানই নিজেদের ড্রাগন নিয়ে ডর্ন জয় করতে গিয়েছিল। কিন্তু ডর্নে এসে তারা সম্পূর্ণ নগরীকে জনশূন্য অবস্থায় পেল। মারটেলরা বুঝতে পেরেছিল, ড্রাগনরা যুদ্ধে প্রায় অদম্য। তাই তারা কোনো ঝুঁকি নেয়নি। কিন্তু আত্মসমর্পণও করেনি।

হাউজ মারটেল নিজেদের প্রতীকের কথা অনুসরণ করেই এগনের কাছে মাথা নোয়ায়নি; Image Source: pictuka.pw

এগন নিজের অনুগত লর্ডদের হাতে ডর্নের দায়িত্ব দিয়ে কিংস ল্যান্ডিংয়ে ফেরার পরেই ডর্নের সৈন্যরা বের হলো। এগনের অনুগত লর্ডদের থেকে নিজেদের শহর ছিনিয়ে নিল তারা। এই ঘটনার পর রেইনিস নিজের ড্রাগন মিরাক্সিসের পিঠে করে মেরিয়া মারটেলকে একাই মোকাবেলা করতে যায়। কিন্তু ডর্ন এবার জনশূন্য ছিল না। বরঞ্চ দেখা গেল, মেরিয়ার কথা অনুযায়ী আগুনে পুড়েও তারা আত্মসমর্পণ করল না। উল্টো, যুদ্ধের মধ্যে নিক্ষেপিত এক বর্শা এসে মিরাক্সিসের চোখে ঢুকে পড়ে এবং এখানেই মিরাক্সিস ও রেইনিসের সমাপ্তি ঘটে।

প্রতিশোধ হিসেবে এগন এবং ভিসেনিয়া ডর্নের প্রতিটি প্রাসাদে আগুনের তান্ডবলীলা চালায়। কিন্তু এরপরেও ডর্নের লোকেরা হাউজ মারটেলের প্রতি অনুগত রইল। রেইনিসের শোক এবং যুদ্ধে ক্লান্ত এগন যখন কিংস ল্যান্ডিংয়ে ফিরল, তার নিজের রাজধানীতেই কয়েকজন গুপ্তঘাতক তাকে হত্যা করার চেষ্টা করল। সৌভাগ্যবশত ভিসেনিয়ার জন্য সে প্রাণে বেঁচে যায়। এরপরে সেভেন কিংডমের সবচেয়ে পরাক্রমশালী সাতজন নাইটকে নিয়োগ দেওয়া হলো রাজা এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যে। এই নাইটের দলের নাম দেওয়া হলো ‘কিংসগার্ড’।

ডর্নেই মৃত্যু ঘটে রানী রেইনিস এবং তার ড্রাগন মিরাক্সিসের; Image Source: thegolfclub.info

বৃদ্ধা মেরিয়া যখন মারা গেল তার ছেলে নাইমর মারটেল মিরাক্সিসের কঙ্কাল পাঠিয়ে এগনের সাথে সন্ধি করতে চাইল। যুদ্ধে ক্লান্ত এগন সন্ধি মেনে নিলেও ডর্ন তখনও টারগেরিয়ানদের অধীকৃত হয়নি। প্রায় দেড়শ বছর ধরে চলা অনেকগুলো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর রাজকন্যা ডেনেরিস টারগেরিয়ানের সাথে রাজপুত্র মেরন মারটেলের বিয়ের মাধ্যমে অবশেষে ডর্নে শান্তি ফিরে এসেছিল।

The article is a fictional history of Aegon's Conquest of the Seven Kingdoms in the world of Ice and Fire, the brainchild of George R. R. Martin. 

More Reference:

Book: Fire and Blood by George R. R. Martin

Featured Image: deviantart.com

Related Articles