Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

অল দ্য লাইটস উই ক্যান নট সি: বিশ্বযুদ্ধের মোড়কে ফুটে উঠা অসাধারণ মানবিক উপন্যাস

লোকমুখে কথিত আছে, একবার সমুদ্র দেবতাকে তার প্রেমিকা ভালোবাসার স্মারক হিসেবে একটি হীরা উপহার দিয়েছিলো। নীল রঙের দেখতে সেই হীরা দেখে সমুদ্র দেবতা অভিভূত হয়ে গেলেন। দেখতে চমৎকার সেই হীরা দেবতার অন্দর মহলের অসাধারণ অলংকার হিসেবে ঠাঁই পাবে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু, সেই অসাধারণ হীরার এক অপয়া দিক ছিল। সেই অপয়া হীরা খুব বেশিদিন দেবতার অন্দর মহলে রক্ষিত রইলো না। এক অভিসারী রাজকুমারের আগ্রাসনে সেটি চুরি হয়ে গেলো। এই চুরির ঘটনায় সমুদ্র দেবতার প্রেয়সী দেবী রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। কত বড় স্পর্ধা! তার দেওয়া উপহার চুরি করার সাহস কার? তিনি সরাসরি সেই হীরাকে অভিশাপ দিয়ে দিলেন।

হীরাটি ছিল নীল রঙের; Image Source: Forbidden Planet

সেই দেবীর অভিশাপ মতে, এই হীরা যার হাতে যাবে, সে অমরত্বের স্বাদ লাভ করবে। ভাবতে পারেন, এ কী ধরনের অভিশাপ! অমরত্ব কি অভিশাপ হতে পারে নাকি? অবশ্যই হতে পারে। কারণ, হীরা হয়তো তার অধিকারীকে অমরত্ব দান করবে, কিন্তু সেই অমর ব্যক্তিটি একে একে তার আপনজন সবাইকে হারাতে থাকবে। আপনজন বিয়োগের অসহনীয় যন্ত্রণা এবং শোক নিয়ে সে ব্যক্তি অনন্তকাল বেঁচে থাকবে। আর একটু একটু করে তিলে তিলে ধ্বংস হতে থাকবে। এই অভিশপ্ত হীরার নাম ‘Sea of Flames’ যারা কৌতূহলবশত জানতে চাইছেন, এই হীরা এখন কার দখলে আছে, তাদের বলছি, এই হীরার কোনো অস্তিত্ব আমাদের বাস্তব পৃথিবীতে নেই। তবে এর অস্তিত্ব রয়েছে ‘অল দ্য লাইটস উই ক্যান নট সি’ নামক এক অসাধারণ উপন্যাসের আয়তাকার গণ্ডিতে, পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা জুড়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত এই উপন্যাসের মূল তিন চরিত্র সেই অভিশপ্ত হীরার মাধ্যমে পরস্পরের সাথে এক পরোক্ষ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছেন। গৌণ বিষয় হিসেবে উপস্থিত এই হীরা তার এই লোকগাথার মাধ্যমে মুখ্য চরিত্রদের এক মানবিক আখ্যানে জড়িয়ে রেখেছে।

অ্যান্থনি ডোয়ার

অল দ্য লাইটস উই ক্যান নট সি উপন্যাসের রচয়িতা অ্যান্থনি ডোয়ারের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ওহায়ো প্রদেশের ক্লিভল্যান্ড অঞ্চলে। ছোটগল্প, উপন্যাস এবং প্রবন্ধ রচনায় সিদ্ধহস্ত এই লেখক ইতিমধ্যে দ্য শেল কালেক্টর, মেমরি ওয়াল, ফোর সিজনস ইন রোম, গ্রেস ইত্যাদি গ্রন্থের জন্য পাঠক সমাজ ও সমালোচকদের নিকট খ্যাতি অর্জন করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার লেখক জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘অল দ্য লাইটস উই ক্যান নট সি’ উপন্যাসটি। তিনি তার সাহিত্যকর্মের জন্য পুলিৎজার সাহিত্য পুরস্কার, অ্যাণ্ড্রু কার্নেগি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।

লেখক অ্যান্থনি ডোয়ার; Image Source: Goodreads

তার ছোটগল্পগুলো প্রায় ৪০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ছোটগল্পে অসাধারণ রচনাশৈলীর জয় তাকে বার্নেস এণ্ড নোবেল ডিস্কোভার পুরস্কার, রোম পুরস্কার, ইয়াং লায়ন পুরস্কারের সম্মানিত করা হয়েছে। ২০১০ সালে তাকে ছোটগল্পের জগতে সর্বোচ্চ সম্মানজনক ফোর ওহিওয়ানা বুক অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। সরল গল্প বলার মাধ্যমে মানবিক গাথা বর্ণনার জন্য তার রচনাগুলো পাঠক সমাদৃত।

উপন্যাস পরিচিতি

অল দ্য লাইটস উই ক্যান নট সি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে পুঁজি করে রচিত একটি ঐতিহাসিক ঘরানার উপন্যাস। মারি-লঁর নামক এক ফরাসি অন্ধ বালিকা, ওয়ার্নার ফেনিং নামক এক জার্মান বালক এই উপন্যাসের মূল চরিত্র। প্রকাশনার পর পরই নিউ ইয়র্ক বেস্ট সেলার তালিকার শীর্ষে উঠে আসা এই উপন্যাসটির কাহিনী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ পরিবেশে বেঁচে থাকার তাগিদে মূল দুই চরিত্রের যাত্রা এবং সী অফ ফ্লেমস নামক এক অভিশপ্ত হীরার আকর্ষণে উন্মাদ এক জার্মান সেনা কর্মকর্তার অভিসার নিয়ে গড়ে উঠেছে।

গল্পের শুরু হয় অন্ধ বালিকা মারি-লঁরকে নিয়ে, ছবিটি প্রতীকী; Image Source: Elove69

এবার ছোট পরিসরে উপন্যাসের কাহিনী বলা যাক। ঘটনার শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী ইউরোপে। যুদ্ধ শুরু হতে বেশি দেরি নেই। সেই ইউরোপের ফ্রান্সের লঁ ব্ল্যাঙ্ক পরিবারের গল্প দিয়ে শুরু হয় কাহিনী। লঁ ব্ল্যাঙ্ক পরিবারের অন্ধ বালিকা মারি-লঁর আর তার বাবা প্যারিসের বিখ্যাত ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরের নিকট বসবাস করেন। মারি-লঁরের বাবা আবার সেই জাদুঘরের ‘মাস্টার-লকার’ হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি জাদুঘরের হাজার হাজার চাবির তত্ত্বাবধান করেন। বালিকা মারি লঁর মাত্র ৬ বছর বয়সে তার দৃষ্টিশক্তি হারায়। এত কম বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলা যে কারো জন্য চলাফেরা করা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। কিন্তু মারি-লঁরের বাবা তার মেয়েকে স্বনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তিনি তার বাসস্থানের নিকটস্থ এলাকার একটি মিনিয়েচার সংস্করণ তৈরি করে মেয়েকে তার পরিবেশ এবং এলাকা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেন। তিনি সংখ্যা গুণে গুণে মারি-লঁরকে পথে হেঁটে হেঁটে বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানোর প্রশিক্ষণ দেন। এভাবে ভালোই কেটে যাচ্ছিলো তাদের দিনগুলো। মারি-লঁর ব্রেইলের মাধ্যমে পড়াশোনার কাজও চালিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু তার ১২ বছর বয়সের সময় প্যারিসে হানা দেয় নাৎসি বাহিনী। আর সাথে সাথে শুরু হয় তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। তারা প্যারিস ত্যাগ করে সেইন্ট মালো অঞ্চলে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।

ওয়ার্নারের প্রতীকী চিত্রাঙ্কন; Image Source: Bookshelf Stories

উপন্যাসের দ্বিতীয় প্রধান চরিত্র ওয়ার্নারের গল্প শুরু হয়। ওয়ার্নার এবং তার ছোট বোন জাটা মা বাবা হারিয়ে বেড়ে উঠছে জার্মানির জোলভারেন শহরের এক এতিমখানায়। ওয়ার্নার কৈশোর থেকেই যন্ত্র প্রকৌশলের প্রতি আগ্রহী ছিল। তখন থেকে সে ছোটখাট যন্ত্র মেরামত করতে পারতো। এতিমখানার ভাঙা রেডিও মেরামতের পর সে আর তার বোন জাটা একত্রে মিলে দূর থেকে ভেসে আসা এক অজানা ফরাসি ব্যক্তির বিজ্ঞান লেকচার শুনতো। এছাড়া সে ছাত্র হিসেবে দারুণ মেধাবী ছিল। তার মেধার স্বীকৃতিরস্বরূপ তাকে জার্মান মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে গড়ে তোলা হিটলারের একাডেমীতে ভর্তির সুযোগ করে দেয়া হয়। তুখোড় সম্ভাবনাময় ওয়ার্নারের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তার শিক্ষক তাকে অতিরিক্ত সময় বিজ্ঞানচর্চা করার সুযোগ করে দেন। ওয়ার্নার যখন তার সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভাবছিলো, ঠিক তখন তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। তাকে বিশেষ বার্তায় জানানো হয়, ওয়ার্নারকে শিক্ষাজীবন ত্যাগ করে জার্মান নাৎসি বাহিনীর কারিগরি বিভাগে কাজ করতে হবে। যুদ্ধক্ষেত্রের বিভিন্ন ঘটনা ওয়ার্নারকে নিয়ে যায় ফ্রান্সের নগরী সেইন্ট মালোতে, যেখানে ইতোমধ্যে অবস্থান করছে মারি-লঁর।

এই সেই সেইন্ট মালো শহর; Image Source: Scribner

আলোচনার শুরু থেকে যারা আছেন, তারা এখন প্রশ্ন করতে পারেন, এতকিছুর মাঝে সেই সী অফ ফ্লেমস হীরার কাহিনী কোথায়? তাদের জন্য বলছি, সী অফ ফ্লেমস যুদ্ধের পূর্বে প্যারিসের ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরের সুরক্ষিত কুঠুরিতে সংরক্ষিত ছিল। নাৎসিদের প্যারিস আগ্রাসনের পর মারি-লঁরের বাবা সেই মূল্যবান হীরাটি তার সাথে নিয়ে রওয়ানা দেন সেইন্ট মালো শহরে। আর এদিকে জার্মান মুলুক থেকে এই হীরার সন্ধানে বেরিয়েছেন সার্জেন্ট মেজর ফন রুমপেল। হিটলারের নির্দেশে একদল সেনা কর্মকর্তা ইউরোপের বিভিন্ন মূল্যবান রত্ন-সামগ্রী এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন জার্মানিতে পাচার করার মিশনে নেমেছিলেন। ফন রুমপেল ছিলেন এই দলের একজন। তার সী অফ ফ্লেমস অনুসন্ধান শুরু হয় প্যারিসের সেই জাদুঘরের প্রাঙ্গন থেকে। তারপর বিভিন্ন কৌশল খাটিয়ে সে ধীরে ধীরে পৌঁছে যেতে থাকে সেইন্ট মালো শহরের দিকে। কিন্তু কীভাবে সে সেইন্ট মালোর সন্ধান পায়, সেটা আর না-ই বা বলি। বইয়ের পাতা থেকেই নাহয় তা জেনে নিবেন।

নাৎসি বাহিনীর ফ্রান্স দখল অভিযান; Image Source: IWM

এভাবে মারি-লঁর, ফন রুমপেল এবং ওয়ার্নারের গল্প তিনটি ভিন্ন অঞ্চল থেকে শুরু হলেও তারা একসময় একে অপরের সাথে মুখোমুখি হয়। ছোট ছোট অধ্যায়ে সমান্তরাল ধারায় বর্ণিত এই তিনজনের গল্প তখন উপন্যাসের পূর্ণাঙ্গতা প্রদান করে। 

উপন্যাসের বিশেষত্ব

উপন্যাসের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ছিল এর বর্ণনা। কাহিনী বর্ণনার ক্ষেত্রে লেখক সময়ের চাকাকে নিজস্ব লেখনী দ্বারা একবার এগিয়ে নিয়েছেন, আবার প্রয়োজনমতো ফিরে এসেছেন উপন্যাসের বর্তমানে। প্রতিটি চরিত্রের বর্ণনায় লেখক বেশ বিশদ গল্প রচনা করতে সক্ষম হয়েছেন। পাঠকের কল্পনা জগতে সেই বর্ণনা এক জ্বলজ্যান্ত চরিত্রে রূপান্তরিত হয়ে বিচরণ করবে একদম শেষ পাতা পর্যন্ত। নাহ! একটু ভুল হয়ে গেলো। শেষ পাতায় থেমে যায় না চরিত্রের বিচরণ। পাঠক এতটাই চরিত্রের মাঝে ঢুঁকে পড়বেন যে গল্প শেষ হয়ে গেলেও মনে হবে আজকের পৃথিবীতেও মারি-লঁর, ওয়ার্নার, ফন রুমপেলরা বেঁচে আছে। তারা একে অপরের সাথে বারবার মুখোমুখি হচ্ছে। এভাবে আমরণ চলমান থাকবে উপন্যাসের আখ্যান।

উপন্যাসের চরিত্রগুলো পাঠকদের নিকট জীবন্ত হয়ে উঠবে; Image Source: The Pulse

ঐতিহাসিক উপন্যাসের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, ঘটনার সমাপ্তির সাথে সেই কাল্পনিক চরিত্রগুলোর যবনিকাপাত ঘটে। কিন্তু এখানে দেখবেন ব্যতিক্রম চিত্র। ১৯৪৫ এ বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর লেখক সেই চরিত্রগুলো একবিংশ শতাব্দীর দুনিয়া পর্যন্ত টেনে নিয়ে এসেছেন। এর ফলে চরিত্রগুলো আর কাল্পনিক থাকে না, হয়ে উঠে জীবন্ত মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন হয়ে উঠে চলমান জীবনের পথে নিছক সরাইখানা। 

প্রকাশনা এবং প্রতিক্রিয়া

২০১৪ সালের ৬ মার্চ প্রকাশিত হয় উপন্যাসটি। প্রকাশনার সপ্তাহ থেকে শুরু করে টানা ১৩৪ সপ্তাহ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে নিউ ইয়র্ক বেস্ট সেলার তালিকার শীর্ষে ছিল বইটি। সে বছর প্রকাশিত সেরা দশ বইয়ের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পায় বইটি। ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী বইটির প্রায় ৪০ লক্ষাধিক কপি বিশ্বজুড়ে বিক্রিত হয়েছে। পাঠকদের নিকট সমাদৃত হয়েই থেমে থাকেনি এই গ্রন্থের যাত্রা। সমালোচকদের নিকট ব্যাপক প্রশংসিত হয় এটি। প্রখ্যাত সমালোচক উইলিয়াম ভলমান লেখকের লেখনীর প্রশংসা করেন এবং তাকে মারি-লঁরের মতো অসাধারণ চরিত্র উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। তবে দ্য গার্ডিয়ানের সমালোচকগণ মারি-লঁরের চেয়ে ওয়ার্নার ফেনিংয়ের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়েছেন। ওয়ার্নারের স্কুল জীবন নিয়ে রচিত অধ্যায়গুলো সমালোচক কারম্যান ক্যালিলের হৃদয় স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছে।

চল্লিশ লক্ষাধিক কপি বিক্রি হয়েছে বইটি; Image Source: Literary Hub

তবে প্রশংসার বাইরে তারা উপন্যাসটির ছোটখাট ভুল নিয়েও সমালোচনা করেছেন। অনেকেই লেখকের নাৎসি নিয়ে গতানুগতিক লেখা পছন্দ করেননি। আবার অনেকের মতে উপন্যাসটি অহেতুক দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। কিন্তু লেখকের এই ক্ষুদ্র ত্রুটি অগ্রাহ্য করলে উপন্যাসটি অসাধারণ হয়েছে তা সকলে মেনে নিয়েছেন। এই উপন্যাসটি পুলিৎজার সাহিত্য পুরস্কার, অডি পুরস্কার, ডেয়টন সাহিত্য পুরস্কার, অস্ট্রেলীয় বই শিল্প পুরস্কার, ইডাহো পুরস্কার, জাতীয় গ্রন্থ পুরস্কারসহ প্রভৃতি পুরস্কার অর্জন করেছে। তবে এসব পদক, সম্মাননার বাইরে উপন্যাসটির সবচেয়ে বড় অর্জন হয়তো পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পাঠকদের ভালোবাসা।

পুলিৎজারের মঞ্চে অ্যান্থনি ডোয়ার; Image Source: Pulitzer

কবে আসছে রূপালি পর্দায়

বইপ্রেমীরা সাধারণত তাদের প্রিয় বইয়ের কোনো রূপালি পর্দা সংস্করণ দেখতে চান না। এর প্রধান কারণ, প্রায়ই দেখা যায় সিনেমা বা নাটকে বইয়ের কাহিনীর মিল নেই। সেটা ছোট হোক বা বড়, পাঠকদের বিরক্ত করার জন্য যথেষ্ট কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া অনেক সময় বইয়ের গল্পকে সিনেমায় সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হন পরিচালক। কিন্তু তারপরেও প্রিয় বইয়ের সিনেমা বা নাটক সংস্করণ বের হতে দেখলে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেন। আজকাল বেস্ট সেলার বইগুলো অহরহ রূপালি পর্দায় রূপান্তরিত হচ্ছে। তা দেখে আগে থেকেই আঁচ করা যাচ্ছিলো, অল দ্য লাইটস উই ক্যান নট সি’র রূপালি সংস্করণ খুব শীঘ্রই আসছে।

নেটফ্লিক্স নিয়ে আসছে ওয়েব সিরিজ; Image Source: Netflix

এবছর মার্চের দিকে জানা যায়, টুয়েন্টি-ওয়ান ল্যাপস নামক এক প্রতিষ্ঠানের প্রযোজনায় নেটফ্লিক্সের মাধ্যমে টেলিভিশন পর্দায় চিত্রায়িত হবে উপন্যাসটি। এর প্রকাশনা সাল, তারিখ কিছুই এখনো জানানো হয়নি। তবে টুয়েন্টি-ওয়ান ল্যাপসের উপর ভরসা রাখা যায়। তারা ইতোমধ্যে স্ট্রেঞ্জার থিংস নামক এক ব্লকবাস্টার ওয়েব সিরিজ উপহার দিয়েছেন। আশা করি, তারা এই উপন্যাসটির যথার্থ রূপান্তর করতে পারবেন।

একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা উপন্যাস এটি; Image Source: Scribner

অল দ্য লাইটস উই ক্যান নট সি একবিংশ শতাব্দীতে রচিত অন্যতম সেরা উপন্যাস। আমাদের পৃথিবীতে যেখানে একদিকে বেড়ে চলেছে ঘৃণা, লোভ, জিঘাংসা, সেখানে অল দ্য লাইটস উই ক্যান নট সি মানবতার অসাধারণ বাণী নিয়ে হাজির হয়েছে। বইপ্রেমী যারা এখনও উপন্যাসটির স্বাদ আস্বাদন করতে পারেন নি, তারা আর দেরি করবেন না। বইটি হাতে নিয়ে তারা ধরা দিন এক অসাধারণ আখ্যানের ফাঁদে। সেই সাথে বইয়ের মানবিক দিক মলাটের সীমানা ভেদ করে ছড়িয়ে যাক আমাদের অন্ধকার পৃথিবীতে, ছিনিয়ে আনুক বহুল আকাঙ্ক্ষিত আলোকবর্তিকা। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পড়ুন এই বইগুলো

১) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
২) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে গল্প সংকলন

This is a Bangla book review of the novel All the Lights We Cannot See by Anthony Doerr. The context of this novel is WWII, but the writer described a very touchy story which surprassed everything.

References: All the references are hyperlinked.

Feature Image: Scribner.

Related Articles