Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বৈষ্ণিক উষ্ণায়ন এবং পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে ভিন্নধর্মী কিছু বই

বর্তমান যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর মধ্যে ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন’ বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও গ্রিনহাউস ইফেক্টের অবস্থান একদম প্রথমদিকে। নানা পরিবেশবিমুখ কর্মকাণ্ড এবং জীবনধারার ফলে ধীরে ধীরে আমাদের শীতল এবং সুন্দর পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঘটনাকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। দিন দিন আমাদের বায়ুমণ্ডলে সিএফসি, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন ইত্যাদি গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব গ্যাস ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত সূর্যের বিকিরণকে ধারণ করতে পারে। স্বাভাবিকভাবে, এই প্রতিফলিত বিকিরণ বায়ুমণ্ডল ত্যাগ করে মহাশূন্যে চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো এই প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে ঘিরে এক গ্যাসীয় চাদর সৃষ্টি করে যা এই বিকিরণকে পৃথিবী ত্যাগ করতে দেয় না। এর ফলে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঘটে।

গ্রিনহাউস গ্যাস দ্বারা সৃষ্ট চাদরে বাধা পড়ে বিকিরণ; Image Source: ABC 

এই ঘটনার ফলে আমাদের পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে। যেমন, দুই মেরুর বরফ গলে যেতে পারে, যা সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়িয়ে দেবে। এর ফলে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলো বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়বে। পৃথিবীর তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে। পৃথিবীর বড় বড় জলাশয়গুলো শুকিয়ে মরুভূমিতে রূপান্তরিত হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়া এবং জলবায়ুতে রাতারাতি পরিবর্তন সাধিত হবে। ঘটনাচক্রে বিভিন্ন মহামারীর সৃষ্টি হবে এবং পৃথিবী থেকে বেশ কয়েক প্রজাতির প্রাণীর বিলুপ্তি ঘটে যেতে পারে।

ইতিমধ্যে আমরা উপরের বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রায় সবগুলো ঘটার প্রমাণ পাওয়া শুরু করেছি। খুব দ্রুত বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে রুখে দিতে না পারলে হয়তো পুরো পৃথিবীর অস্তিত্ব লোপ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মতো বিশাল ঘটনার মোকাবেলা করতে হলে আমাদের আরো বেশি কিছু প্রয়োজন। আমাদের মূল সমস্যা অনুধাবন করতে হলে একে বিভিন্ন কোণ থেকে উপলব্ধি করতে হবে। প্রয়োজন বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির। আর তাহলে একদম গোড়া থেকে সমস্যার সমাধান করে দ্রুত এই বিপদ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব হবে। আমাদের আজকের আলোচনায় এই বৈষ্ণিক উষ্ণায়ন নিয়ে এমন কিছু বইয়ের কথা বলবো, যেখানে লেখকগণ এই ঘটনাকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছেন। বলতে গেলে, এই বইগুলোর মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে আপনার ধারণা বদলে যাবে।

This Changes Everything: Capitalism vs. the Climate by Naomi Klein

পৃথিবীর সবকিছুর মূলে রয়েছে অর্থনীতি- এমনটাই বিশ্বাস করেন বিশেষজ্ঞরা। এই ‘সবকিছু’-র ভেতর বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকেও অন্তর্ভূক্ত করেছে এমন বই হচ্ছে ‘দিস চেঞ্জেস এভ্রিথিং: ক্যাপিটালিজম ভার্সেস দ্য ক্লাইমেট’। নাওমি ক্লাইন তার এই কালজয়ী প্রবন্ধগ্রন্থে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন, কীভাবে পুঁজিবাদী নেতৃত্ব এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটছে এবং মুক্ত অর্থনীতি কীভাবে পরিবেশবাদী কর্মকাণ্ডের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দিস চেঞ্জেস এভ্রিথিং এর মোড়ক; Image Source: Penguin

Merchants of Doubt by Naomi Oreskes and Erik M. Conway

মার্চেন্টস অফ ডাউট পরিবেশ এবং বৈষ্ণিক উষ্ণায়ন নিয়ে লেখা অন্যতম শক্তিশালী বই। বইটিতে লেখক নাওমি ওরেস্কেস এবং এরিক কনওয়ে এই বিপর্যয়ের জন্য কতিপয় বিজ্ঞানীকে দায়ী করেছেন। তাদের মতে, কিছু প্রভাবশালী বিজ্ঞানীর খামখেয়ালিপনা এবং রাজনীতির ফলে প্রতিনিয়ত মানুষকে পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে ভুল প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। তারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের খাতিরে জোরপূর্বক সাধারণ মানুষ থেকে তথ্য গোপন করে রেখেছেন।

মার্চেণ্ট অফ ডাউট বইয়ের লেখিকা নাওমি (উপরে) এবং লেখক এরিক (নিচে); Image Souce: Adriana Grycuk

লেখকদের তেজস্বী লেখনী এবং নির্ভুল তথ্যপ্রমাণের কারণে বইটি আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে।

Six Degrees by Mark Lynas

দিন দিন পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম প্রধান প্রভাব এই তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় রকমের পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে। আর এই পরিবর্তনগুলোকে প্রতিটি ডিগ্রীতে লিপিবদ্ধ করে মার্ক লিনাস রচনা করেছেন তার বিখ্যাত বই ‘সিক্স ডিগ্রীস’। লেখক তার বইতে প্রতি এক ডিগ্রী তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে প্রবাল প্রাচীর ধ্বংস হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে মেরু অঞ্চলে বরফ গলে যাওয়া, এমনকি প্রাণিজগতের অন্তিম পরিণতি পর্যন্ত সবকিছু বেশ গুছিয়ে বর্ণনা করেছেন তার বইতে।

সিক্স ডিগ্রীস বইয়ের প্রচ্ছদ; Image Souce: eBay

এই বই সম্পর্কে পাঠক প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে লেখা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বই’। আর এমন প্রতিক্রিয়া হবেই না কেন, নিজের চোখের সামনে এমন সুন্দর পৃথিবীকে ধ্বংস হয়ে যেতে দেখবেন পাঠকরা মার্ক লিনাসের এই বইয়ের ভেতর।

The Great Derangement by Amitav Ghosh

বিখ্যাত বই সমালোচক ইস্টন স্মিথ জোর গলায় বলেছেন,

“যদি কেউ আমাকে অনুরোধ করে, তাকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে মাত্র একটি বইয়ের নাম বলতে হবে, তাহলে আমি চোখ বন্ধ করে বলবো অমিতাভ ঘোষের দ্য গ্রেট ডিরেঞ্জমেন্টের নাম।

ভারতবর্ষের অন্যতম প্রভাবশালী লেখক অমিতাভ ঘোষ ইতিমধ্যে বুকার পুরষ্কার মনোনয়ন, ফরাসি সাহিত্য পুরষ্কার, আনন্দ পুরষ্কার ইত্যাদি পদক পেয়ে  বিশ্বমহলে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে কল্পকাহিনী এবং প্রবন্ধ লিখে বারবার আলোচনায় উঠে এসেছেন।

অমিতাভ ঘোষের সাড়াজাগানো বই দ্য গ্রেট ডিরেঞ্জমেন্ট; Image Source: Gage Skidmore

দ্য গ্রেট ডিরেঞ্জমেন্ট এই লেখকের অন্যতম প্রভাবশালী বই হিসেবে পাঠকদের নিকট সমাদৃত হয়েছে। তার এই বইতে তিনি সাহিত্য, ইতিহাস এবং রাজনীতির ছায়া থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মের পরিবেশ সম্পর্কিত জ্ঞান এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবেলা ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কথা তুলে ধরেছেন। এছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কীভাবে বর্তমান প্রজন্মের বিকাশ, চিন্তাধারা এবং ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে, তা নিয়ে বিশদ এবং গঠনমূলক আলোকপাত করেন তিনি।

The Death and the Life of Great Lakes by Dan Egan

আমাদের পরিবেশের সবচেয়ে মূল্যবান উপাদান হচ্ছে পানি। পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ ঘটার পেছনে এই পানির প্রত্যক্ষ অবদান রয়েছে। পৃথিবীর পানির ভাগ্যের উপর নির্ভর করছে এখানে বসবাসরত লক্ষাধিক প্রজাতির প্রাণীর পরিণাম কী হবে। এই সত্যের উপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছে ‘দ্য ডেথ এণ্ড দ্য লাইফ অফ গ্রেট লেকস’ বইটি। পৃথিবীর বড় বড় হ্রদগুলো মোট পানির মজুদের প্রায় ২০% ধারণ করে আছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে এসব হ্রদের শুকিয়ে যাওয়া কিংবা পানি দূষিত হওয়ার সাথে কীভাবে পুরো পৃথিবীর প্রাণীজগতের ভাগ্য জড়িয়ে আছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে এই বইটিতে।

ড্যান ইগান ও তার বই; Image Source: The Daily Cardinal

The Sixth Extinction: An Unnatural History by Elizabeth Kolbert

প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে আমাদের পৃথিবীতে সর্বমোট পাঁচটি গণবিলুপ্তির ঘটনা ঘটেছে। গণবিলুপ্তি হচ্ছে এমন একটি ঘটনা, যখন পৃথিবীর কিছু সংখ্যক প্রধান প্রজাতির প্রাণী চিরতরে পৃথিবীর বুক থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এর ফলে পৃথিবীর জীববৈচিত্রে বড় রকমের পরিবর্তন ঘটেছিলো। তবে পাঁচটি গণবিলুপ্তিই শেষ নয়। লেখিকা এলিজাবেথ কোলবার্ট মনে করেন, খুব শীঘ্রই ষষ্ঠ গণবিলুপ্তি ঘটবে এবং এর পেছনে মূল খলনায়ক থাকবে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। আর গণবিলুপ্তির ফলে বিলুপ্ত কারা হবে, সেটা বোধহয় আর খোলাসা করে বলতে হচ্ছে না।

দ্য সিক্সথ এক্সটিংকশন; Image Source: The Book Merchant Jenkins

বৈজ্ঞানিক যুক্তি প্রমাণের বাইরেও বইটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এর সাবলীল ভাষার ব্যবহার এবং এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় বাতলে দেওয়ার জন্য। গতানুগতিক ব্যাখ্যার পরিবর্তে লেখিকা তার বইয়ে অভিনব উপায়ে ঘটনাগুলো বর্ণনা করেছেন যা আপনাকে নতুন কিছু জানাবে।

Eaarth: Making a Life on a Tough New Planet by Bill McKibben

বইয়ের নামকরণেই লেখক বুঝিয়ে দিলেন, তিনি আমাদের পৃথিবীর কথা বলছেন না। তার মতে, অতিরিক্ত ‘A’ যুক্ত এই Eaarth একটি নতুন গ্রহ, যা আমাদের পৃথিবী থেকেও বহু মাত্রায় রুক্ষ। এখানে জীবনযাপন করা অনেক কঠিন। আর এই কঠিন রুক্ষ নতুন গ্রহের মূল কারিগর আমরা নিজেরাই। বিল ম্যাককিবেন তার এই চমৎকার বইটিতে এই নতুন গ্রহ নিয়ে বেশ কিছু বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা করেছেন, যা খুবই বাস্তবসম্মত। বইটি পড়তে গিয়ে সবচেয়ে মজার অনুভূতি হচ্ছে, এক মুহূর্তের জন্য হলেও ভুলে বসবেন, আপনি পৃথিবী নিয়ে পড়ছেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত বুঝতে পারবেন, যে কঠিন গ্রহের কথা বলা হচ্ছে, সেটা আপনারই পৃথিবী।

Eaarth বইয়ের প্রচ্ছদ; Image Source: Black Inc. 

বইটি আমাদের জন্য অনেকটা সতর্কবার্তার মতো। মানুষ তার পৃথিবীর কথা ভুলে গিয়ে কতটা বিধ্বংসী হতে পারে, তার একটি বাস্তববাদী চিত্রাঙ্কন করা হয়েছে।

An Inconvenient Truth by Al Gore

আল গোরের নাম মনে আছে আপনাদের? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা রাজনীতিবিদ সেই আল গোরের কথাই বলছি। রাজনীতির শক্ত খেলোয়াড় এই ব্যক্তি একজন বড় মাপের পরিবেশবাদীও। তাই রাজনীতি থেকে ইস্তফা দিয়ে বর্তমানে পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন, তৈরি করছেন অসংখ্য গণসচেতনতামূলক ডকুমেন্টারি ও চলচ্চিত্র।

আল গোরের এন ইনকনভেনিয়েন্ট ট্রুথ; Image Source: Amazon

এন ইনকনভেনিয়েন্ট ট্রুথ মূলত একটি প্রামাণ্যচিত্রের নাম, যা আল গোর কর্তৃক পরিচালিত। প্রামাণ্যচিত্রের বাইরেও তার কিছু কথা বলার ছিল। সেই কথাগুলো বইয়ের মাঝে লিপিবদ্ধ করে একই নামে রচিত হয়েছে এই বইটি। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে সবচেয়ে তথ্যবহুল বই হিসেবে এই বইটি সমাদৃত হয়েছে। অসংখ্য তথ্য, উপাত্ত, লেখচিত্রের মাধ্যমে আল গোর এই বৈশ্বিক বিপর্যয়কে প্রাণবন্ত করে তুলেছেন। এই বইয়ের মাধ্যমে পাঠকরা এক তিক্ত সত্যের মুখোমুখি হবে, যা তার পরিবেশ নিয়ে চিন্তা-ভাবনায় বেশ বড় প্রভাব বিস্তার করবে।

প্রবন্ধমূলক এই বইগুলোর পড়ার মাধ্যমে পাঠক বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ভিন্ন আঙ্গিকে অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন। এর ফলে আরো গঠনমূলক পরিকল্পনার মাধ্যমে মূল সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করা সম্ভব হবে।

This is a Bangla article about some powerful books written on Global Warming. 

References: All the references are hyperlinked.

Feature Image: Association for Psychological Science

Related Articles