Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মুগ্ধতার মিনিয়ন সিরিজ

সিলিন্ডার আকৃতির অদ্ভুত সব প্রাণী, অদ্ভুত তাদের চোখ, অদ্ভুত তাদের চুলের স্টাইল। পাকা কলা রঙের কলাপ্রেমী এই প্রাণীগুলো সমস্ত দুনিয়ায় বিখ্যাত। তাদের জনপ্রিয়তার ছাপ পড়েছে বাস্তব জীবনের অনেক ক্ষেত্রে। টি-শার্ট, ব্যাগ, পেন্সিল, জ্যামিতি বক্স, দেয়াল- কোথায় নেই এরা? ২০১০ সালে ডেসপিকেবল মি নামক এনিমেটেড মুভির মাধ্যমে তাদের যাত্রা শুরু হয়। দিন দিন তাদের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। মিনিয়ন এবং মিনিয়নদের মুভি নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা।

১. ডেসপিকেবল মি (২০১০)

মিনিয়নদের জগতটা একটু অদ্ভুত। এ জগতে যে যত বড় চুরি করতে পারবে, সে তত বেশি দামী। ভিলেন হিসেবে যে যত বেশি চাতুর্য আর সফলতার পরিচয় দেবে, সে তত বেশি সম্মানিত। সুকৌশলে যে যত নিখুঁতভাবে চুরি করতে পারবে, তাকে নিয়ে হবে তত মাতামাতি, খবর, টক শো প্রভৃতি। পুরো দুনিয়া জুড়ে সে হয়ে যাবে আইকনিক হিরো। এরকমই একজন ব্যক্তি হচ্ছে গ্রু (Gru), যিনি পুরো টাইম স্কয়ার চুরি করে নিয়ে এসেছিলেন! এ জগতের চুরি আবার আমাদের সমাজের অর্থ কিংবা সোনা-দানা চুরির মতো নয়। স্ট্যাচু অব লিবার্টি, আইফেল টাওয়ার, ল্যুভর মিউজিয়াম, এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, সাহারা মরুভূমি প্রভৃতি চুরি করাটা হচ্ছে চুরির স্ট্যান্ডার্ড।

ডেসপিকেবল মি (২০১০) এর পোস্টার। © Universal Pictures

এখন পর্যন্ত গ্রু-ই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভিলেন। কিন্তু একদিন কতিপয় ট্যুরিস্ট গিজার পিরামিডের ওখানে গিয়ে দেখে আস্ত পিরামিড গায়েব হয়ে গেছে। শুরু হয়ে গেল তোলপাড়, কে এত বড় হিরো যে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পিরামিড চুরি করে নিয়ে গেল? গ্রু এই কাজ করেনি। এটা এমন চমৎকার ও হিরোসুলভ চুরি যে, বিশ্বের সেরা সেরা সকল ভিলেনকে লজ্জায় ফেলে দেয়। এই চুরির কাছে তাদের আগের করা চুরি যেন কিছুই না। এমন অবস্থায় গ্রু তো বিমর্ষ। তার চেয়েও বড় কোনো ভিলেন পৃথিবীতে আছে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাই এমন কিছু করতে হবে যেন পুরো পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে যায়। সে এমন কিছু করে দেখাবে যা আগে কোনো ভিলেন করার জন্য কল্পনাও করেনি।

কিন্তু বিপ্লবী এই আইডিয়া গোপন থাকে না। ভিলেন চক্রের মাধ্যমে অন্য ভিলেনের কানে পৌঁছে যায়। অন্যরাও বাস্তবায়ন করতে চায় এই আইডিয়া। শুরু হয় ঘাত প্রতিঘাত।

পুরো সিনেমার সবটাই হিউমার দিয়ে পূর্ণ। হিউমারগুলোও ভালো মানের এবং এগুলো উপস্থাপিতও হয়েছে চমৎকারভাবে। সে কারণে সিনেমার কাহিনী যা-ই হোক না কেন, বেলাশেষে এটি হিউমার মুভি বা কমেডি মুভি হিসেবেই পরিচয় লাভ করবে। আর সিনেমার সবচেয়ে চমৎকার জিনিস হলো সিলিন্ডার আকৃতির হলুদ রঙের ‘মিনিয়ন’গুলো। মিনিয়নদের উপস্থিতিতে দর্শকরা খুবই পুলকিত হয়। মিনিয়নবাহিনী দর্শকদের কাছে এতটাই জনপ্রিয় হয় যে, পরবর্তীতে শুধুমাত্র তাদেরকে নিয়েই Minion (2015) নামে আলাদা একটি সিনেমা তৈরি করা হয়।

মিনিয়নদের দল। © Universal Pictures

২. ডেসপিকেবল মি টু (২০১৩)

সিরিজের প্রথম পর্বে দেখান হয়েছিল ভিলেনরাই পৃথিবীর সেরা এবং সেখানে নায়ক গ্রু এমন এক বস্তু চুরি করেছিল, যা পৃথিবীর ইতিহাসে কেউ কোনোদিন কল্পনাও করে দেখেনি। এর জন্য গ্রু হয়ে যায় পৃথিবীর ইতিহাসে সেরা ভিলেন। কিন্তু সিরিজের ২য় পর্বে দেখা যায় এন্টি ভিলেন লিগ (AVL) নামে একটি সরকারি সংস্থা আছে, যারা গোপনে সকল ভিলেনকে চোখে চোখে রাখে।

ডেসপিকেবল মি টু-এর পোস্টার। © Universal Pictures

বরফে ঢাকা জনমানবহীন উত্তর মেরুর একটি গোপন গবেষণাগারে একটি ওষুধ তৈরি করা হচ্ছিল। এই ওষুধ দেহে প্রবেশ করালে দেহের সকল কোষ পরিবর্তিত হয়ে তাকে অপ্রতিরোধ্য ভিলেনে পরিণত করে দেবে। যে-ই সামনে আসবে, তাকে ভেঙেচুরে তছনছ করে দিতে পারবে। এই ঘটনাকে বলা যায় ‘মিউটেশন’। মিউটেশন ঘটানোর জন্য বিশেষ এই ওষুধ বা সিরামটির নাম PX-41। এই সিরাম উপযুক্ত মানুষের হাতে থাকলে কোনো সমস্যা ছিল না। সমস্যা তখনই বাধে, যখন এটি পড়ে যায় কোনো অসৎ উদ্দেশ্য সাধনকারী ব্যক্তির হাতে। পর্বের শুরুতেই দেখা যায় U আকৃতির বিরাট এক চুম্বক দিয়ে আকাশ থেকে পুরো গবেষণাগারটিকেই উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তর মেরু থেকে।

ভিলেনের দুনিয়ায় কী অদ্ভুত অবস্থা! সিরামের নমুনা নিতে পারতো, পুরো পাত্রটি নিতে পারতো, এখানকার গবেষককে কিডন্যাপ করতে পারতো। কিন্তু তার কোনোটিই না করে, ভূমি থেকে উপড়ে পুরো গবেষণাগারটিকেই নিয়ে গেল!

বিশালাকার কৃত্রিম চুম্বক, যা দিয়ে অনায়াসে উঠিয়ে নেয়া যায় আস্ত একটি গবেষণাগার। © Universal Pictures

এখন তো এন্টি ভিলেন লিগ (AVL) পড়ে গেল চিন্তায়। অসৎ হাতে পড়ে এই সিরাম তো পুরো পৃথিবীকে জম্বি ওয়ার্ল্ডের মতো নরক বানিয়ে ফেলবে। একে তো থামানো দরকার। তারা ডাকলো সেরা ভিলেন গ্রু-কে। গ্রু তো নিজেই ভিলেন, এখানে কীভাবে সে সাহায্য করবে? হ্যাঁ করবে, ক্ষেত্রবিশেষে ভিলেনও একপ্রকার হিরো। “When the world needed a hero, they called a villain.”

প্রথম পর্বে কোনো নায়িকা ছিল না। সিরিজের এই পর্বেই দেখা দেয় নায়িকা লুসি। সে এন্টি ভিলেন লিগের একজন এজেন্ট।

বিশ্বসেরা ভিলেনকে হাতের ময়লার মতো কুপোকাত করে ফেলছে এজেন্ট লুসি। © Universal Pictures

প্রথম পর্বের তুলনায় এই পর্ব কম মনোহর হয়েছে। কাহিনীর চেয়ে হিউমারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বেশি। হিউমারের স্বার্থে অবশ্য এমন কিছু দৃশ্য দেখানো হয়েছে, যেগুলো না দিলেও তেমন ক্ষতি ছিল না। তবে প্রথম পর্বের মতো চমৎকার না হলেও, এই পর্বটিও দর্শকরা আনন্দের সাথেই গ্রহণ করেছে।

৩. মিনিয়নস (২০১৫)

ডেসপিকেবল মি সিরিজে বিদ্যমান মিনিয়ন বাহিনীগুলো শুরু থেকেই দর্শকের মন জয় করে নেয়। শুরুতে এই চরিত্রগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তৈরি করা হয়নি। গল্পে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা উপাদান বা লতাপাতা হিসেবে এদেরকে রাখা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় দর্শকের কাছে এদের আবেদন অনেক বেশি। তাই কর্তৃপক্ষ ভাবলো, শুধুমাত্র মিনিয়নদেরকে ফোকাস করে আলাদা একটি মুভি করা দরকার।

মিনিয়ন (২০১৫) এর পোস্টার। © Universal Pictures

তাদেরকে নিয়ে কী গল্প তৈরি করা যায়? স্পিন-অফ ধাঁচের কিছু একটা করা যেতে পারে। কোনো সিরিজের বিশেষ কোনো চরিত্র বা চরিত্রগুচ্ছকে নিয়ে আলাদা কোনো গল্প তৈরি হলে তাকে বলা যায় স্পিন অফ। এ ক্ষেত্রে মূল সিরিজের সাথে কোনো সংযোগ না-ও থাকতে পারে। শুধুমাত্র চরিত্রের জনপ্রিয়তায় আলাদা একটি ইউনিভার্স তৈরি হতে পারে। এরকম স্পিন অফের চমৎকার একটি উদাহরণ হচ্ছে ‘পেঙ্গুইনস অব মাদাগাস্কার (২০১৪)’ মুভিটি। এটি মাদাগাস্কার সিরিজের স্পিন অফ, এই সিরিজে পেঙ্গুইনদের জনপ্রিয়তা ও অসাধারণত্ব থেকে আলাদা স্পিন অফ মুভি তৈরি করা হয়।

তবে মিনিয়ন সিরিজের এই মুভিটি স্পিন অফ হয়নি। এখানে দেখানো হয়েছে মিনিয়নদের ইতিহাস। তারা কীভাবে পৃথিবীর আদি লাইফ ফর্ম থেকে নানা প্রতিকূলতা পার হয়ে বর্তমান অবস্থায় এসেছে, তার একটি সংক্ষিপ্ত গল্প। সে হিসেবে একে বলা যায় সিরিজের ‘প্রিক্যুয়েল’।

এই মুভি অনুসারে পৃথিবীতে প্রাণের আবির্ভাবের শুরুর দিকেই মিনিয়নদের অস্তিত্ব ছিল। প্রথম প্রাণ শুরু হয়েছিল সামুদ্রিক পরিবেশে, তারাও ছিল সমুদ্রে। যেখানেই প্রাণের বৈচিত্র্য সেখানেই প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রতিযোগিতা সেখানেই একজন আরেকজনকে মারা-কাটা-খাওয়া, যেখানেই মারা-কাটা-খাওয়া সেখানেই প্রাণের ভয়। মিনিয়নদেরও প্রাণ নিয়ে ভয়। ভয় থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে নিজে বেশি ক্ষমতাবান হওয়া কিংবা অন্য কোনো ক্ষমতাবানকে বশ করে তার আশ্রয়ে থাকা। নিজেরা নিজেরা ক্ষমতাবান হওয়া তো অনেক কঠিন কাজ, তাই মিনিয়নরা বেছে নিলো সেই শর্টকাট পদ্ধতি- অন্যের দাপট ব্যবহার করে নিজেরা টিকে থাকা।

প্রাণের শুরুতেই ছিল মিনিয়নের অস্তিত্ব। © Universal Pictures

ডেসপিকেবল মি সিরিজে দেখানো হয়েছিল ভিলেনরা সমাজের আইকনিক হিরো। তার মানে ঐ প্রাগৈতিহাসিক জগতটাও এর মতো। যে যত বড় ভিলেন, তার সম্মান তত বেশি।

তো মিনিয়নদের আবার অদ্ভুত শখ। সেরা ভিলেনের প্রতি মুগ্ধতা তাদের প্রতিটি ডিএনএ’র প্রতিটি এনজাইমের কোডে কোডে বিদ্যমান। যে ভিলেনের অধীনেই তারা থাকুক না কেন, এর চেয়ে বেশি ক্ষমতাবান কারো দেখা পেলে আগের ভিলেন ছেড়ে তারা চলে যায় নতুন ভিলেনের অধীনে। এই ভিলেনদেরকে তারা বলে ‘বস’। এভাবে সমুদ্রের দানব অতি দানব পার হয়ে ডাঙায় আসে তারা। ডাঙার হেন কোনো হিংস্র প্রাণী নেই, যাকে তারা ‘বস’ বানায়নি। এই তালিকায় ক্যামব্রিয়ান যুগের টিরানোসরাস রেক্স (T-rex) ডায়নোসরও আছে!

মিনিয়নরা বস হিসেবে গ্রহণ করেছে ভয়ংকর টি-রেক্স ডায়নোসরকে। © Universal Pictures

কিন্তু ঐ যে প্রতিযোগিতার দুনিয়া আর বিপদের দুনিয়া, ভিলেন হলেও তো সেখানে টিকে থাকতে হবে। ক্ষমতাবান ভিলেনগুলো একের পর এক দুর্ঘটনায় কিংবা প্রতিযোগিতায় মরে যেতে থাকে। ফলে সমগ্র মিনিয়ন জাতি ডিপ্রেশনে পড়ে যায়, হায় রে, তাদের কী হবে? তাদের অস্তিত্বের ভবিষ্যৎ কী? এভাবে দেখতে দেখতে লাখ লাখ বছর পার হয়ে চলে আসে আধুনিক যুগ। এই সময়টাতে বিশ্বের ইতিহাসের সেরা ভিলেন গ্রু মাত্র শিশুকাল পার করছে।

গ্রু যে সময় শিশুকাল পার করছিল, সে সময় ভিলেন হিসেবে রাজত্ব করছিল স্কার্লেট ওভারকিল নামে একজন নারী ভিলেন। পৃথিবীর সকল ভিলেন একত্রে তার সাথে লাগতে আসলে স্কার্লেটের বাম হাতের তুড়িতেই উড়ে যাবে সব। ভিলেন হিসেবে তার দুনিয়া কাঁপানো উক্তি “Doesn’t it feel so good to be bad?” আর লাগে কী? এরকম কাউকেই তো চায় মিনিয়নরা!

স্কার্লেট ওভারকিল। Source: We Heart It

এই মুভির শেষ পর্যায়ে গ্রু-এর সাথে দেখা হয় মিনিয়নদের। স্কার্লেটের বিপক্ষে গ্রু-র অতি সাহসিক কর্ম দেখে তো মিনিয়নের পুরো বাহিনী বাক্যহীন হয়ে যায়। এ তো দেখা যায় মহাবিশ্বের সেরা ভিলেন! স্কার্লেটের আশ্রয়ে থেকে আর কী হবে যেখানে স্বয়ং গ্রু আছে! এরপর থেকে মিনিয়নরা গ্রু-র সাথে কাজ করছে। গ্রু-ও মিনিয়নদেরকে উপযুক্তভাবে ব্যবহার করে নানা ধরনের ভিলেনসুলভ কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। এই পয়েন্ট থেকে ডেসপিকেবল মি সিরিজের মুভিগুলো আর মিনিয়ন (২০১৫) মুভি এক সূত্রে বাঁধা পড়ে যায়। মিনিয়ন মুভিকে সে কারণে বলা যায় ডেসপিকেবল মি সিরিজের প্রিক্যুয়েল।

শিশু বয়সে সিরিজের প্রধান চরিত্র গ্রু। © Universal Pictures

তবে মুভি হিসেবে যথেষ্ট ভালো হয়েছে মিনিয়নস, উপভোগ্য তো বটেই। এটি দেখার আগে এর পটভূমি জেনে নিলে এর মর্মার্থ গভীরভাবে উপলব্ধি করা যাবে, তাই এত কথার অবতারণা।

৪. ডেসপিকেবল মি থ্রি (২০১৭)

এর কাহিনী শুরু হয় ডেসপিকেবল মি টু (২০১৩) এর পর থেকে। ভিলেনগিরি ছেড়ে দিয়ে তিনজন পালক মেয়ে এবং স্ত্রীর সাথে সুখে দিন কাটাচ্ছে গ্রু। এন্টি ভিলেন লিগে (AVL) একটি চাকরিও জুটিয়ে নিয়েছে সে। স্বামী-স্ত্রী একসাথে মিলে অন্যান্য ক্ষতিকর ভিলেনদের প্রতিরোধ করার মিশনে নামে মাঝে মাঝে। স্বামী গ্রু এবং স্ত্রী লুসির একত্রিত কোড নাম দেওয়া যায় গ্রুসি (গ্রু + লুসি = গ্রুসি)।

এখানে ব্র্যাট নামে নতুন এক সুপারভিলেনের আগমন ঘটে। ছোটবেলায় সে হলিউডের একটি টিভিতে সুপারভিলেন হিসেবে অভিনয় করতো। সে ঐ চরিত্রের সাথে নিজেকে মিলিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু একসময় এই অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়, লোকজন ভুলে যেতে থাকে তাকে। এই ঘটনাকে অপমান হিসেবে গ্রহণ করে সে এবং প্ল্যান করতে থাকে একদিন টিভির সেই ভিলেন রূপ নেবে বাস্তবে। আর তখন প্রতিশোধ হিসেবে পুরো হলিউডকে ভূমি থেকে উপড়ে নিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে মহাশূন্যে। প্ল্যান অনুযায়ী সে কাজও করতে থাকে, এমন সব প্রযুক্তি সে তৈরি করে, যা দিয়ে এসব করা সম্ভব। এমন অবস্থায় তার সাহায্য দরকার গ্রু পরিবারের।

মারাত্মক অস্ত্র হাতে সুপারভিলেন ব্র্যাট। © Universal Pictures

সিরিজের সার্বিক দিক থেকে বিবেচনা করলে পর্ব হিসেবে এটি সবচেয়ে অনাকর্ষণীয় হয়েছে। এখানে সিরিজের অন্যতম আকর্ষণ মিনিয়নদের কোনো ভূমিকাই নেই। মিনিয়নদের কর্মকাণ্ড দেখানো হয়েছে, কিন্তু মুভির পুরো কাহিনীতে এক মিনিটের জন্যও মিনিয়নদের কোনো দরকার নেই। শুধু শুধুই যেন জোর করে তাদের রাখা হয়েছে। আগের পর্বগুলোতে ভিলেনসুলভ কর্মকাণ্ডের জন্য নানা ধরনের আবিস্কার উদ্ভাবন করতো ডক্টর নেফারিও নামে একজন বিজ্ঞানী। এই পর্বে তার কোনো উপস্থিতি নেই। তাকে রেখে দেয়া হয়েছে কার্বনাইজড করে। অতি-রসিকতার চেষ্টা মুভির বিভিন্ন অংশকে বলতে গেলে পানসে করে দিয়েছে।

ডেসপিকেবল মি থ্রি (২০১৩)-এর পোস্টার। © Universal Pictures

তবে মোটের উপর এই মুভিটিও না দেখে ফেলে দেবার মতো নয়। কারণ, এনিমেটেড মুভি কখনো খারাপ হয় না। এ ধরনের মুভিকে কোনো না কোনো একভাবে গ্রহণ করে নেয়া যায়, চরিত্রগুলোর অদ্ভুত সব কাজ ব্যস্ত জীবনে নির্ভেজাল আনন্দের খোরাক মিটিয়ে দেয়।

ফিচার ছবি- Pinterest 

Related Articles