Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফিহা সমীকরণ: হুমায়ূন আহমেদের গল্পে ভবিষ্যতের ডিস্টোপিয়ান পৃথিবী

অতীত সম্পর্কে পণ্ডিতেরা বলেছেন, ‘গতস্য শোচনা নাস্তিঃ!’ অর্থাৎ, যা গত হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে চিন্তা করা নিরর্থক। আর বর্তমান? সে তো দেখতে দেখতেই অতীত হয়ে যাচ্ছে। এজন্য মানুষের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ নিপতিত হয় ভবিষ্যতের ওপর। কিন্তু সিংহভাগ মানুষ যেখানে নিজেদের ব্যক্তিগত ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে, কিছু বিশেষ শ্রেণির মানুষ (যেমন: বৈজ্ঞানিক বা সাহিত্যিক) সেখানে কল্পনা করেন পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে। শেষোক্ত দলে রয়েছেন আইজ্যাক আসিমভ থেকে শুরু করে ইউভাল নোয়াহ হারারির মতো সব ব্যক্তিত্ব। তাদের প্রত্যেকেই ভবিষ্যতের পৃথিবীকে নিজের মতো করে কল্পনা করেছেন এবং তাদের লেখালেখিতে সেই কল্পনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। বাংলাদেশের জনপ্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ কর্তৃক রচিত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ‘ফিহা সমীকরণ’ এরকমই এক ভবিষ্যতের পৃথিবীকে চিত্রায়িত করেছে।

ফিহা সমীকরণ বইটিতে ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে কল্পনা করা হয়েছে একটি ডিস্টোপিয়া (dystopia) হিসেবে। ভবিষ্যতের এই পৃথিবীতে মানবজাতি বিভক্ত হয়ে পড়েছে দুটি শত্রুভাবাপন্ন শ্রেণিতে। এদের মধ্যে একটি শ্রেণি হচ্ছে সাধারণ মানুষ আর অপর শ্রেণি হচ্ছে মেন্টালিস্ট। মেন্টালিস্টরা ভিনগ্রহ থেকে আসা কোনো ভয়ঙ্কর প্রাণি নয়, কিংবা অতি ক্ষমতাধর যন্ত্রমানবও নয়। তারা বাহ্যিক দিক থেকে সাধারণ মানুষের মতোই, কিন্তু জিনগতভাবে সাধারণ মানুষের চেয়ে পৃথক। মেন্টালিস্টরা টেলিপ্যাথির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের চিন্তা-চেতনা, ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ-দুঃখ, আবেগ-অনুভূতি সবই নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এই ক্ষমতাবলে তারা কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে সমগ্র পৃথিবীর ওপর। অর্থাৎ, মেন্টালিস্টরা পরিণত হয়েছে শাসকশ্রেণিতে, আর সাধারণ মানুষ শাসিত।

এই পৃথিবীতে সাধারণ মানুষের বসবাস করে ভূপৃষ্ঠে, আর মেন্টালিস্টরা বসবাস করে ভূগর্ভস্থ শহরে। মেন্টালিস্টরা সামরিক বাহিনী ও পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করে, এবং এর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। মেন্টালিস্টরা সাধারণ মানুষের জীবনের প্রতিটি দিক নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি সাধারণ মানুষদের বিয়ে করতে হলেও মেন্টালিস্টদের অনুমতি নিতে হয়। অবশ্য মেন্টালিস্টরা সবসময় মানুষের মন নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা করে না বলেই তাদের দাবি। 

কারো টেলিপ্যাথিক ক্ষমতা আছে কিনা, এটি পরীক্ষা করার জন্য ‘জেনার কার্ড’ ব্যবহার করা হয়। ‘ফিহা সমীকরণ’ গল্পের মেন্টালিস্টরা টেলিপ্যাথিক ক্ষমতার অধিকারী; Source: Wikimedia Commons

সাধারণ মানুষরা মেন্টালিস্টদের ব্যাপকভাবে ঘৃণা ও ভয় করে এবং সুযোগ পেলে তারাও মেন্টালিস্টদের ওপর আক্রমণ চালাতে দ্বিধা বোধ করে না। যেমন: একটি ঘটনায় দেখা যায়, উন্মত্ত জনতা একটি মেন্টালিস্ট মেয়ে ও তার শিশুসন্তানকে খুন করেছে। মানুষ ডাক্তাররা মেন্টালিস্ট রোগীদের ঘৃণার চোখে দেখে, এজন্য মেন্টালিস্টদের বাধ্য হয়ে চিকিৎসার জন্য রোবট ডাক্তারদের সহায়তা নিতে হয়।

মেন্টালিস্টরা শৃঙ্খলার সঙ্গেই বিশ্ব পরিচালনা করে, কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে তাদের শাসনব্যবস্থা খুবই অমানবিক হয়ে দাঁড়ায়। যেমন: বিজ্ঞান পল্লীতে টর্নেডো আঘাত হানার পূর্বাভাস পেয়ে তারা সেখানকার মানুষদের অপসারণের ব্যবস্থা করে, কিন্তু টহল পুলিশদের টর্নেডোর মধ্যেও দায়িত্বস্থল থেকে সরে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। ফলে ২৩ জন পুলিশ সদস্য টর্নেডোতে মারা যায়। অবশ্য ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী হলেও মেন্টালিস্টদের একটি বিরাট দুর্বলতা রয়েছে। এই দুর্বলতাটি হচ্ছে– তারা কোনো সৃজনশীল কাজ করতে অক্ষম। অর্থাৎ, তাদের মধ্যে কোনো বিজ্ঞানী, গবেষক বা চিকিৎসক নেই। এজন্য তারা সাধারণ মানুষের মধ্যে যারা গবেষণার সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে বিশেষভাবে সমাদর করে।

এরকমই একজন বিজ্ঞানী হলেন ফিহা। গল্পে তাকে বর্ণনা করা হয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ হিসেবে। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে মেন্টালিস্টরা ফিহার মন নিয়ন্ত্রণ করে না, ফলে তিনি স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারেন। ফিহাকে সাধারণ মানুষরা তো বটেই, মেন্টালিস্টরাও সমাদর করে। কিন্তু ফিহা মোটেই মেন্টালিস্টদের পছন্দ করেন না। অথচ ফিহা লালিতপালিত হয়েছেন একটি মেন্টালিস্ট পরিবারে, যারা তাকে দত্তক নিয়েছিল। কিন্তু ১২ বছর বয়সে ফিহা সেই পরিবার ছেড়ে আসেন এবং এরপর আর তাদের সঙ্গে কোনোপ্রকার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেননি।

জাপানে তৈরি রোবট ‘আসিমো’। ‘ফিহা সমীকরণ’ গল্পের পৃথিবীতে রোবোটিক্স বেশ উন্নত পর্যায়ে রয়েছে; Source: Wikimedia Commons

ফিহা থাকেন একটি বিরাট বাড়িতে, যেটির এক হাজার গজের মধ্যে কোনো মেন্টালিস্টের প্রবেশকে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সেখানে তিনটি রোবট ছাড়া তার আর কোনো সঙ্গী নেই। রোবট তিনটির মধ্যে একটি প্রহরী রোবট, একটি গৃহকর্মী রোবট আর একটি বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন পড়ুয়া রোবট, যাকে ফিহা নাম দিয়েছেন পাঠক। পাঠক বাচাল প্রকৃতির এবং সে ফিহার একটি জীবনী লেখার চেষ্টা করছে, কিন্তু গম্ভীর ও রাগী প্রকৃতির ফিহা অতিরিক্ত কথা বলা বিশেষ পছন্দ করেন না।

ফিহা একটি বিশেষ গবেষণায় ব্যস্ত। গবেষণার বিষয়বস্তু হচ্ছে ‘চতুর্মাত্রিক সময় সমীকরণ’। এই সমীকরণ সমাধান করার জন্য তিনি প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, কিন্তু সেটি সফল হচ্ছে না। অজ্ঞাত কোনো কারণে মেন্টালিস্টরা তার এই গবেষণায় বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং তাকে সহায়তা করছে। ফিহা সমীকরণটির সমাধান করার জন্য বারবার চেষ্টা করছেন, কিন্তু প্রতিবারই কোনো না কোনো কারণে সেটি স্থগিত রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। অবশ্য সমীকরণটির সমাধানের পর তার বা পৃথিবীর কী পরিণতি হতে যাচ্ছে, সেই বিষয়ে তার কোনো ধারণাই নেই।

এভাবে এগিয়ে চলেছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ‘ফিহা সমীকরণ’। হুমায়ূন আহমেদের প্রধান পরিচিতি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর লেখক হিসেবে নয়, কিন্তু সাহিত্যের এই শাখায় তিনি যে পারদর্শী, তার প্রমাণ এই বইয়ে ফুটে উঠেছে। কিছু কিছু বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী যেমন খুবই জটিল হয়, ফিহা সমীকরণ সেরকম জটিল কিছু নয়। সংক্ষিপ্ত এই গল্পে যে ধরনের বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলোকে উপস্থাপন করা হয়েছে, সবই সহজবোধ্য। কিংবা বলা যেতে পারে, হুমায়ূন আহমেদের লেখনীতে সেই বিষয়গুলো খুবই সহজবোধ্য ভঙ্গিতে উপস্থাপিত হয়েছে।

‘ফিহা সমীকরণ’ গল্পটির লেখক বিখ্যাত বাংলাদেশি সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ; Source: Wikimedia Commons

‘ফিহা সমীকরণে’ হুমায়ূন আহমেদ যে ধরনের ডিস্টোপিয়ার সৃষ্টি করেছেন, সেটি কিছু নৈতিক দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে সক্ষম। বিজ্ঞানী ফিহা গল্পটির কেন্দ্রীয় চরিত্র, কিন্তু তাকে নিখুঁত বা আদর্শ চরিত্র হিসেবে লেখক গঠন করেন নি। সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ধরনের দোষত্রুটি দেখা যায়, অতি প্রতিভাবান ফিহা তার ঊর্ধ্বে উঠতে পারেননি। নন–মেন্টালিস্ট হিসেবে অতি ক্ষমতাধর মেন্টালিস্টদের প্রতি তার আক্রোশ থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু তাই বলে নিজের পালক মেন্টালিস্ট পিতা-মাতার প্রতি তার যে আচরণ কিংবা উন্মত্ত জনতার হাতে একটি মেন্টালিস্ট মেয়ে ও তার শিশুসন্তানের হত্যার সংবাদ শুনেও তার মধ্যে যে নির্লিপ্ততা প্রত্যক্ষ করা যায়, তাতে ফিহার মানবিক বোধের সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বস্তুত বিজ্ঞানীরা ‘মানবিকতাশূন্য, রাগী, খামখেয়ালি এবং শীতল’ প্রকৃতির হয়ে থাকেন, এরকম যে ধারণাটি বহু মানুষের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে, গল্পের ফিহার চরিত্রটি তারই প্রতিফলন। কিন্তু গল্পটি যতই অগ্রসর হতে থাকে, ততই ফিহার চরিত্রে এক ধরনের ইতিবাচক বিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

ফিহা সমীকরণ কল্পনা করছে এমন এক ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে, যেখানে কৃত্রিমভাবে আনীত জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি নতুন মানব প্রজাতির সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের তীব্র দ্বান্দ্বিক সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতের পৃথিবী কেমন হবে সেটি নিশ্চিতভাবে অনুমান করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়, কিন্তু সুদূর ভবিষ্যতে যে আসলেই এরকম কিছু ঘটবে না, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা চলছে এবং মানুষের মধ্যে জিনগত পরিবর্তন এনে তাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলছে। ‘হিউম্যান এনহ্যান্সমেন্ট’ (Human enhancement) নামে পরিচিত এই প্রক্রিয়াটি এখন পর্যন্ত বিশেষ কোনো সাফল্যের মুখ দেখেছে বলে জানা যায় না, কিন্তু ভবিষ্যতে যে এই গবেষণা সফল হবে না, এটি নিশ্চিত করে বলা যায় না।

একটি স্বাভাবিক ইঁদুর (ডানে) এবং একটি জিনগতভাবে পরিবর্তিত ইঁদুর (ডানে); Source: Wikimedia Commons

সত্যিই যদি জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন আনা যায় এবং তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়, সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতের পৃথিবী কেমন হতে পারে, সেটি অনুমান করার জন্য বিজ্ঞানী বা গবেষক হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এই ধরনের গবেষণা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এজন্য যদি সত্যিই জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘অতিমানব’ (superhuman) তৈরি করা সম্ভব হয়, সেক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন হবে। স্বভাবতই বিশ্বের সম্পদশালীরা এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার লাভ করবে এবং অর্থবলে নিজেদের সন্তানদের ‘অতিমানব’ হিসেবে গড়ে তুলবে।

অর্থাৎ, যদি হিউম্যান এনহ্যান্সমেন্ট প্রক্রিয়া সাফল্য অর্জন করে এবং এটিকে সকল মানুষের জন্য সহজলভ্য করা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে বর্তমান বিশ্বে বিদ্যমান অসাম্য আরো স্থায়ী ও শক্তিশালী রূপ ধারণ করবে। এর ফলে ‘ফিহা সমীকরণ’ গল্পে পৃথিবী যেমন বিভাজিত, বাস্তবেও পৃথিবী সেরকমভাবে বিভাজিত হয়ে পড়বে। অবশ্য এগুলো সবই আন্দাজ মাত্র, কারণ হিউম্যান এনহ্যান্সমেন্ট প্রক্রিয়া ভবিষ্যতে সফল হবে কিনা, কিংবা হলেও সেক্ষেত্রে যাদের মধ্যে এই ধরনের পরিবর্তন আনা হবে তাদের ওপর বড় ধরনের কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা, সেগুলো অজানা।

ফিহা সমীকরণ গল্পটির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে মানুষের সঙ্গে রোবটের সম্পর্ক। বহু বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতেই রোবটরা মানুষের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছে, এই জাতীয় দৃশ্যকল্প তুলে ধরা হয়। কিন্তু ফিহা সমীকরণে এই ধরনের কোনো দৃশ্যকল্প নেই। ভবিষ্যতের পৃথিবীতে রোবটদেরকে সাধারণ মানুষ এবং মেন্টালিস্ট উভয়েরই অনুগত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সবচেয়ে কৌতূহলোদ্দীপক হচ্ছে ফিহার উদ্দেশ্যে ‘পাঠক’ নামক রোবটটির বক্তব্য, ‘আপনার রোবটরাও আপনাকে ভালোবাসে, কিন্তু যন্ত্রের ভালোবাসা মূল্যহীন।’ 

‘উরান–৯’ রোবোটিক যুদ্ধযান। সম্প্রতি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্বের প্রথম সামরিক রোবট ইউনিট প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে; Source: Wikimedia Commons 

এর মধ্য দিয়ে দেখানো হয়েছে, ভবিষ্যতের পৃথিবীতে রোবটদের চিন্তাশক্তি ও অনুভবক্ষমতা উভয়ই বৃদ্ধি পাবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে বর্তমান বিশ্ব যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে মানবিক অনুভবক্ষমতা সংক্রান্ত রোবট সৃষ্টি না হলেও অন্যান্য বিষয়ে অত্যন্ত ক্ষমতাধর রোবটের যে সৃষ্টি হবে, এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা এখন অনেকটাই নিশ্চিত। অবশ্য, ফিহা সমীকরণে যেমনটা দেখানো হয়েছে, বাস্তবে মানুষ ও রোবটের সম্পর্ক সেরকম হবে কিনা, সেটি অনিশ্চিত।

সামগ্রিকভাবে, ফিহা সমীকরণ একটি সংক্ষিপ্ত, সহজবোধ্য এবং চিত্তাকর্ষক বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। একদিকে যেমন এটি পাঠকদের (গল্পের পাঠক নামক রোবট নয়, সত্যিকারের পাঠক) বিনোদন দিতে পারে, অন্যদিকে তেমনি বিজ্ঞানমনস্ক পাঠকদের কিছু চিন্তার খোরাকও যোগান দিতে পারে। এখানেই গল্পটি লেখার ক্ষেত্রে লেখকের মূল সাফল্য।

বইয়ের নাম: ফিহা সমীকরণ
লেখকের নাম: হুমায়ূন আহমেদ
প্রকাশক: আফসার পাবলিশার্স
প্রকাশকাল: ২০১৮ (১৩তম সংস্করণ)

This is a Bengali review article about ''Fiha Shomikoron', a science fiction story written by Bangladeshi author Humayun Ahmed.

Source of the featured image: Goodreads

Related Articles