Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হরিশংকরের ‘পৌরাণিক গল্প’: আর্য নয়, অনার্যরাই যেখানে দেবতুল্য

অতঃপর মন্দোদরী বললেন,

“যদি ঠিক বলে থাকি, তাহলে আমার এরকম বিশ্রী নাম কেন? বাল্মীকি ছিলেন আর্য, ঋষি। আর্য যখন কলম ধরেছেন, তার হাতে অনার্যদের সুশোভন নাম হবে কেন? আমার নামের কথা নাহয় বাদই দেন, বিভীষণের নামের মধ্যে নাহয় যথার্থতা আছে, কিন্তু কুম্ভকর্ণ বা শূর্পণখার নামের মধ্যে? এ শুধু নাম তো নয়, দেহগঠনেরও বিবরণ। অথচ দেখুন, নিজের প্রিয় চরিত্রগুলোর নাম দিলেন সুগ্রীব, রাম, দশরথ, সীতা, লক্ষণ!”

মন্দোদরী, যার নামের অর্থ দাঁড়ায় খারাপ জঠর। মানে তার পেটে যারা জন্মাবে, তারা সবাই মন্দ! নিজের নামের এই ব্যাখ্যা মন্দোদরী নিজেই দিয়েছেন। কিন্তু সেই মন্দোদরীই তো পেটে ধরেছিলেন ইন্দ্রজিতকে। মেঘনাদের আরেক নাম। তা-ও তার এমন নাম! সেই কারণেই তো মন্দোদরী বাল্মীকি নিয়ে ওই মন্তব্য করল।

হরিশংকর জলদাসের লেখা হিন্দুপুরাণের ১৩টি গল্প নিয়েই এই সংকলনগ্রন্থ ‘পৌরাণিক গল্প‘। এর প্রথম গল্প মন্দোদরীকে নিয়ে। গল্পের নাম ‘উচ্ছিষ্ট‘। কিন্তু কেন সে উচ্ছিষ্ট? লঙ্কাধিপতি রাবণের স্ত্রী সে। কিংবা তার কথায়, প্রধান মহিষী, যেহেতু রাবণ বহুভোগী। মন্দোদরী বলেন, “আমার অনেক পরিচয়। তার মধ্যে তিনটে বলি।” সে রাবণের স্ত্রী, আবার জ্ঞাতিদ্রোহী, কুলাঙ্গার বিভীষণের ভোগবস্তুতেও তাকে পরিণত হতে হয়েছে। ভদ্র করে সেই পরিচয়কে ঠাট্টার ছলে মন্দোদরী বললেন, “উচ্ছিষ্ট বউ।” তার আরেকটা পরিচয়ও তিনি উল্লেখ করেন- মহাবীর মেঘনাদের জননী। কিন্তু এসবের মাঝে তার নিজের পরিচয় কই? সেই প্রশ্নই শেষে ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। জিজ্ঞেস করেছেন সেই অপরিচিত শ্রোতাকে, যে শ্রোতা লেখকেরই চেতনা, “কোন পরিচয়টা আমার জন্য শ্লাঘার? বলতে পারেন?

এই প্রশ্নেই সমস্ত গল্পের সারসংক্ষেপ। এতেই আসল বক্তব্য। এই গল্পগুলো আসলে পুরাণনির্ভর কাহিনী শুধু নয়, পুরাণের চরিত্র ও নানা ঘটনাবলীর মাঝে দিয়ে বর্তমান সমাজের চালচিত্র। এই গল্পগুলোতে দেবজীবন আর মানবজীবন মিশেছে একসাথে। তেমনিই এই ‘উচ্ছিষ্ট’ গল্প। এর বক্তব্য তো নারীর পরিচয় নিয়ে। নারীর পরিচয় কী? তার কি নিজের কোনো পরিচয় থাকতে নেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে? নারী কি পৃথক কোনো সত্ত্বা নয়? সে কি শুধুই একদলা মাংস? মন্দোদরীর সব পরিচয় আছে, শুধু স্বীয় পরিচয় ছাড়া।

পুরাণ চরিত্র মন্দোদরী আর তার গল্পের মাঝ দিয়েই হরিশংকর জলদাস উপস্থাপন করেছেন এই প্রশ্নগুলোর, এই বক্তব্যের। তিনি সরাসরি বর্ণনায় চিত্রায়িত করেছেন, কীভাবে সেই পুরাণকাল থেকে এই কাল, নারী শুধুই রয়ে গেল পুরুষের সেবক আর উপভোগের বস্তু হয়ে। শুধু কি ছায়া হয়েই তার বসবাস? মন্দোদরীর শেষ প্রশ্নে ‘উচ্ছিষ্ট’ গল্পের শ্রোতা চরিত্রের মাথা নিচু করে চুপ থাকাতেই সকল উত্তর। বাস্তবতা।

লেখক হরিশংকর জলদাস; Image Source: Ekushey TV

সংকলনগ্রন্থের প্রথম এই গল্পে নারীপরিচিতি নিয়ে প্রশ্ন যেমন উঠে এসেছে, তেমনি আরেকটি বিষয় এই গল্পেই পরিষ্কার হয়েছে যে, এই বইয়ের গল্পগুলো কথা বলবে অধিকারবঞ্চিতদের নিয়ে। উপেক্ষিতদের নিয়ে। ঠিক যেন মাইকেল মধুসূদনের সেই ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার সুরে। আর্যদের বীরত্বগাঁথা নয়, তাদের কুটিলতা; হিংসার জীর্ণগাঁথা এই গ্রন্থ। এসব গল্পে দেবতাদের দয়া নয়, তাদের দুরাচারিতা আছে। অন্যদিকে, দানবের মাঝেই দেখা হয়েছে মহানুভবতা। পরের গল্প ‘অনার্য অর্জুন’-এই সেই সুর আরো তীব্রভাবে বেজে উঠেছে।

মহাভারতের অর্জুনের গল্প নয় এ, ব্রাক্ষ্মণদীর অর্জুন। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে স্বর্গলোকে তার দেখা হয় একলব্যের সাথে। একলব্য তো ভেবেছিল এ মহাভারতের অর্জুন, যার দুরভিসন্ধিতেই একলব্য হারিয়েছিল তার আঙুল। তার আর হয়ে ওঠা হয়নি ধনুর্ধর। একলব্যও যে এক অনার্য সন্তান। পুরাণের সেই ঘটনার সুতো ধরে ব্রাক্ষ্মণদীর অর্জুনের মর্মান্তিক ঘটনার সাথে সাযুজ্য ঘটিয়ে সমান্তরালে এগিয়ে যায় এই গল্প। সামনে আনে সমাজের অতি পরিচিত নরকের কীটদের গল্প। তাদের ক্ষমতালোভী থাবা। পচে যাওয়া এক সিস্টেমকে সামনে আনা হয়েছে, যে সিস্টেম চলে বিচারহীনতা দিয়ে। একটা বড় মনোলগ অংশের সারসংক্ষেপেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

“ঢাকায় বিধাতার কোনো হাত নেই। এখানে যা কিছু কর্ম-অপকর্ম হয়, সবই মানুষের হাত দিয়ে হয়। এখানে হন্তারক বাসচালক কোনো শাস্তি পায় না, খুনিরা ঘুরে বেড়ায় গায়ে হাওয়া লাগিয়ে, ঋণখেলাপীদের পাহাড় আরো বড় হতে থাকে।”

বিচার পায়নি একলব্য। বিচার পায়নি আজকের ব্রাক্ষ্মণদীর অর্জুন। একলব্যের সাথে হওয়া অন্যায় সবাই যেমন চুপ করে দেখেছেন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের মতো, তেমনি গরীবের সাথে হওয়া অন্যায়ের বেলায়ও সবাই চুপচাপ থাকেন তার জীবনটা সস্তা ধরে নিয়ে। শ্রেণীবঞ্চনা, বিচারহীনতা নিয়ে এই গল্পে হরিশংকর জলদাসের যে বক্তব্য, তাতে তিনি শেষ ঘুষি মেরেছেন, যখন একলব্যর মুখ দিয়ে বলিয়েছেন, “দরিদ্ররা যে অনার্য ব্যাধেরও অধম।

একলব্যকে নিয়ে হরিশংকর আলাদা একটি গোটা বই ও লিখেছেন; Image Source: Goodreads

বইয়ের তৃতীয় গল্প- ‘দেউলিয়া‘। দেবরাজ ইন্দ্রের স্বেচ্ছাচারিতা ও কামুকতাকে ঘিরে এই গল্প। স্বর্গের গৌরবর্ণা নারীদের ভোগ করতে করতে বিরক্ত হয়ে মর্ত্যের ব্যাধপল্লিতে একবার উপস্থিত হন ইন্দ্র। সেই গল্প থেকে ফের অহল্যার উঠোনে ফিরে যায় এই গল্প। ঋষি গৌতমের স্ত্রী অহল্যা আর ইন্দ্রের দেহতৃপ্তি ও গৌতমের অভিশাপ দেবার গল্প এটি। দেবরাজ ইন্দ্রের কামুকি স্বভাবের ঘটনা বর্ণনা ও সেটাকে কটাক্ষ করবার পাশাপাশি এই গল্পে মুখ্য হয়ে উঠেছে নারীর যৌনতার বিষয়টি। নারীর যৌন চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষাকে ঘিরেই এর মূল বক্তব্য।

পরের গল্প- ‘তুমি কে হে বাপু‘। ব্যাসদেব আর অদ্বৈত মল্লবর্মনের স্বর্গলোকে আলাপনের গল্প। আলাপনের মধ্য দিয়ে উপস্থাপিত হয়েছে শ্রেণীবৈষম্য আর জাতপ্রথার করুণ চিত্রের খন্ডায়ন। মেটান্যারেটিভের উপাদান আছে এই গল্পে। পরের ‘তিতাসপাড়ের উপাখ্যান‘ গল্পে যা সম্পূর্ণরূপেই ব্যবহৃত হয়েছে। ‘তুমি কে হে বাপু‘ গল্পের শেষ থেকেই ‘তিতাসপাড়ের উপাখ্যান‘ শুরু। গোটা সংকলনগ্রন্থের মাঝে সবচেয়ে তীর্যক আর সরাসরি বিদ্রুপ এই গল্পে পাওয়া যায়। অপরপিঠে, সেটার স্থুল দিক নিয়েও অবশ্য বলা যায়। দাসপ্রথা, শ্রেণীসংঘাত আর সংগ্রামের চিত্রে বিদ্রুপ গল্পকে করেছে আরো আকর্ষণীয়। কল্পনার আশ্রয় যে ভালোরকমই নিতে হয়েছে, তা-ও পরিষ্কার পাওয়া যায় এই গল্পে। দক্ষভাবেই লেখা হয়েছে কাল্পনিক বাস্তবতার এই গল্পটি। এবং অবশ্যই, আরো বেশ কিছু (এই বইয়ের)। 

বইয়ের ‘আজকের দ্রৌপদী‘ গল্পটি, পুরাণের দ্রৌপদীর কর্ণকে অপমান করে, পরবর্তীতে একসময় তাকে স্বামী হিসেবে পাবার যে একটা অদম্য বাসনা তার মনে জেগেছিল সেই ইতিবৃত্ত। তেমন একটা গল্প বর্তমান সময়েও সমান্তরালে চলেছে, পুরাণ আর বর্তমান এক ঝোলায় বেঁধে। মনের বহুরূপ আকাঙ্খা আর দ্বন্দ্বেরই রূপায়ন এই গল্প। পরের গল্প ‘যমুনাজলে বিবর সন্ধান‘ বইয়ের অন্যতম নিগূঢ় গল্পের একটি। কৈবর্তনারী মৎস্যগন্ধার (সত্যবতী) দেহের লোভে ঋষি পরাশরের কাছে আসার গল্প এটি। পুরাণের ঘটনার বর্ণনায় নৈপুণ্যের সাথেই যেখানে নারীর ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহার হবার দিক, যৌনরাজনীতি আর ক্ষমতা প্রয়োগের দিকগুলো সূক্ষ্মভাবে উঠে এসেছে। সেই সাথে বিদ্রুপ তো মিশে আছেই এর গদ্যের সরল বিভঙ্গে।

পরের গল্প ‘সহোদর‘ অর্জুনদের হাতে কর্ণের নিষ্ঠুর হত্যার বর্ণনা করে। বর্তমান সময়ের সাথে কোনো সমান্তরালে নয়, পুরোটাই পুরাণের গল্প। অনার্যের প্রতি অবিচারই যেখানে আরেকবার মূর্তমান হয়। পরের গল্প ‘একটি হাত, ডান হাত‘ একলব্যের সেই বীরত্ব আর অর্জুনের হিংসা ও কুমন্ত্রণার গল্প, যার আভাস ছিল ‘অনার্য অর্জুন‘ গল্পেও। এই গল্পে শুধুমাত্র পুরাণকথা। ‘অনার্য অর্জুন‘-এর মতো বর্তমানে ঘেঁষেনি। 

বইয়ের একটি স্থিরচিত্র; Image Courtesy: Mamunur Rashid Tanim

এরপরের গল্প ‘কুন্তির বস্ত্রহরণ‘, দ্রৌপদীর সেই বস্ত্রহরণের গল্পের সাথে বর্তমানের সমাজচিত্র। নারীর অবমূল্যায়ন, অপমানের গল্প তো সেই শুরু থেকেই। সেই চিত্রপট তো বয়ান করা হয়েছেই। সাথে ধর্মের নামে রাজনীতি, সংখ্যালঘু নির্যাতনের একদম সাম্প্রতিক এবং ভয়াবহ প্রাসঙ্গিক বাস্তবচিত্র এই গল্পে উপস্থাপিত হয়েছে। পরের ‘উপেক্ষিতা‘ গল্পটি বিভীষণের প্রথম স্ত্রী সরমার গল্প। সত্যিকার অর্থেই যে উপেক্ষিতা, যারও আছে গল্প। ‘ব্যর্থ কাম‘ গল্পটি অসততা আর অনুশোচনার গল্প। পুরাণ এখানে টোন হিসেবেই ব্যবহৃত হয়েছে।

বইয়ের শেষ গল্প ‘দূর দিগন্তে অন্ধকার’, সীতা মন্দোদরীসহ সকল নারীর গল্প। নিষ্ঠুর পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে সমবেত ধিক্কার। পুরুষের আইন যেন শুধু নারীকে ঘিরে। তেমনটাই সীতা বলে, “তোমরা পুরুষেরা সবাই নারী নির্যাতনকারী। নারী নির্যাতনের বেলায় তোমরা সবাই এককাট্টা।” হোক সে পুরাণ কিংবা বর্তমান। নারীর ইতিহাস সেই একই রকম অবদমন, অত্যাচার আর অশ্রুতে সিক্ত। সেই চিত্রই ক্ষোভ আর ঝাঁঝের সাথে বর্ণিত হয়েছে এই গল্পে। লেখক হরিশংকর জলদাস এই গল্পে পুরাণের চরিত্রগুলো নিয়ে এমন একটি ফিকশনাল ন্যারেটিভ সাজিয়েছেন, বাস্তবকে অমোঘ রেখে, যা শেষ লাইনে গিয়ে ডিস্টোপিয়ার অনুভূতি দেয়। নারীহীন একটা পৃথিবীর কথা ভাবতে বাধ্য করে। সেকারণেই নাম, ‘দূর দিগন্তে অন্ধকার‘।

বুকে ভর দিয়ে দিয়ে চলা একটি জীবন তার; Image Source: Channel I Online

হরিশংকর জলদাসের লেখা সবসময়ই সমাজে অচ্ছুৎ হিসেবে গণ্য হওয়া শোষিত, অধিকারবঞ্চিতদের নিয়ে। তিনি নিজেই যে সেই সমাজ থেকে উঠে আসা একজন। শ্রেণী, জাতের দ্বন্দ্ব দেখতে দেখতেই তো বড় হয়েছেন। এই সমাজ যাদের শিক্ষার সুযোগ দিতে চায় না, মনে করে যাদের কাজ উঁচু লোকের পায়ের তলায় পড়ে থেকে শ্রমভিক্ষা, সেরকম শ্রেণী থেকেই তৈরি হয়েছেন একজন ‘ব্যতিক্রমী’, হরিশংকর জলদাস। যেমনটা হয়েছিল অদ্বৈত মল্লবর্মণের ক্ষেত্রে। মল্লবর্মণকে তাই তো তিনি মানেন নিজের আদিপুরুষ হিসেবে। নিজেকে তিনি মল্লবর্মণেরই লোক বলেন, ঐ যে ‘তিস্তাপাড়ের উপাখ্যান‘-এ।

হরিশংকরের লেখা বরাবরই যেমন সমাজে নিচুশ্রেণী হিসেবে পরিগণিত লোকেদের নিয়ে, পুরাণের গল্প লেখার ক্ষেত্রেও তিনি বজায় রেখেছেন নিজের সেই স্টাইল। সেই বিষয় ও বক্তব্যসকল। আর্যপুরাণ নয়, অনার্যপুরাণ লিখেছেন। সাহসী আর দৃঢ় কন্ঠে পাল্টে দিয়েছেন পুরাণের চেনা পাঠ। পাঠককে মুখোমুখি করেছেন মুদ্রার অপর পিঠের। সুবিধাবঞ্চিতরা, বঞ্চিত বলেই তাদের ভিলেন বানানো সহজ। কারণ অর্থ আর ক্ষমতাই যে সবকিছুর নিয়ামক। সেই বঞ্চিতদের, শোষিতদের, বহিরাগতদের ‘হিরো’ বানানোর কঠিন কাজটাই হরিশংকর তার ১৩টি পুরাণগল্পে বিভিন্ন সময়ে করেছেন। এবার আনলেন একসাথে, এই সংকলনগ্রন্থে। গল্পগুলোর ক্রমধারা বেশ চমৎকার। একটা সংহতি মেনেছে।

কিছু গল্প মাঝে মাঝে পুরাণের একইরকম বর্ণনায় একটু ক্লেশ জাগিয়েছে। একঘেয়েমি জাগিয়েছে। তবে বিষয়ের বৈচিত্র‍্যে খুব শীঘ্রই আবার সেই গতি তুলতে পেরেছে। পুরাণের সাথে বর্তমান যখনই যে গল্পে যোগ হয়েছে, সেটা যারপরনাই কৌতূহলোদ্দীপক হয়ে উঠেছে। তার লেখার ভাষা বরাবরই সরল এবং সরাসরি। ওই ‘সরাসরি’ ভাবই আসলে তার ভাষাকে স্বতন্ত্র আর সাহসী করেছে। এই বইয়ের গল্পগুলোর কয়েকটিতে মাঝে মাঝে বর্ণনা একটু মেদবহুল হয়ে উঠেছিল। মনে হয়েছে, মেদ ঝরিয়ে বক্তব্য ঠিক রেখেই আরেকটু তীক্ষ্ম হতে পারত বর্ণনা, এক্সপোজিশনের ব্যবহার হতে পারতো আরেকটু নিয়ন্ত্রিত। তবে ভালো কথা হলো, সেটি স্বল্প সংখ্যক জায়গাতে। ধারাবাহিকভাবে থেকেছে, তেমন মোটেও না। গল্পগুলোর বক্তব্য, ভিন্ন দৃষ্টিকোণ, আর প্রাসঙ্গিকতাই এই সংকলনগ্রন্থকে ‘পাঠদরকারি’ করে তুলেছে।

This article is a review in analysis format, of the bengali book 'POURANIK GOLPO' (পৌরাণিক গল্প) by Harishankar Jaldas (হরিশংকর জলদাস)। He is one of the most prolific writers of BD, of this time, who wrote more than 19 Novels, around 80 or more short stories, many essay books, Auto biographies and also travel stories. He writes about the outcasted, depraved, Lower class people of this society. And this book also contains that style and those themes. This book is a compilation of the 13 Hindu Mythological stories he wrote. It's very distinctive and a 'must read book'.

Feature Image- Goodreads

Related Articles