Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

দ্য কেইভ: মানবতা মুখ থুবড়ে পড়েছে যেখানে!

– হেনা, ভয় পেয়ো না। কানে হাত দিয়ে রাখো। তাহলে দেখবে, বোমার শব্দ আর শুনতে পাচ্ছো না। এদিকে এসো, তোমার চোখ মুছে দিই।
আচ্ছা হেনা, তোমার বাবা কোথায় ?
– বাবা তো এখানে আর নেই।
– তবে কোথায়?
– বাবা তো মারা গেছে। বাবার গাড়িতে বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল।

সামনে দাঁড়ানো ডাক্তার স্তম্ভিত হয়ে পড়লেন, ছোট্ট শিশুর মুখে এই কথা শুনে। কত অকপটে বাচ্চা মেয়েটি তার বাবার মৃত্যুর কথা বলে দিল। তার চেহারায় কোনো ভাবলেশ নেই। বাস্তবজ্ঞান জন্মাবার মতো বয়স এখনো তার হয়নি। অথচ বাস্তবতা কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তার সবটাই সে এ বয়সে দেখে নিয়েছে। চোখ খুলে বাইরের জগতটা সে প্রথমবার যখন দেখেছে, হয়তো আকাশটাকে কালো ধোঁয়ায় বিষিয়ে উঠতে দেখেছে। পাগলের মতো ছুটে বেড়াতে দেখেছে, তার চারপাশের মানুষগুলোকে। তাই হয়তো এসকল কিছু স্বাভাবিক আর রোজকার ঘটনা তার কাছে।

পাশেরজনের আর্তচিৎকার, গোটা ভূমিতে কম্পন জাগানো বিস্ফোরণের সেই ভয়ানক শব্দে সে কেঁদে ওঠে। তার ভয় করে। কিন্তু, তার ভয়টাকে দূর করে বুকে জড়িয়ে নেওয়ার মতো কেউ আর সাথে নেই। পরক্ষণে নিজেই চোখ মুছে নিয়ে শান্ত হয়। মৃত্যুকূপের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শিশুটি। হায়েনার দল সমস্বরে চেঁচিয়ে আরো কাছাকাছি আসছে তাজা প্রাণের লোভে। ধ্বংসস্তুপে ভিত্তি গেড়ে অটল দাঁড়িয়ে বিজয়োল্লাস করবে তারা। হায়েনাদের কাছে আবার মানবতা কী? ওদের কাছ থেকে মানবতা কেউ কীভাবে আশা করতে পারে ?

শুধুমাত্র এই একটি দৃশ্যেই (শুরুতে উল্লিখিত সংলাপগুলোর দৃশ্যটি) রূঢ় বাস্তবতার সাক্ষী হয় না দর্শক। ‘দ্য কেইভ’ তার গোটা রানটাইমে প্রতিটি দৃশ্যে, প্রতিটি মুহূর্তেই বাস্তবতার নির্মমতা আঁচ করতে পারার দিকে ঠেলে দিয়েছে দর্শককে। প্রারম্ভিক দৃশ্যটির কথাই বলা যাক, ক্রেইন শটে নগরীর ভবনগুলোর ছাদ দেখা যেতে থাকে। ‘ডিপ ফোকাস’-এ দূরবর্তী এক সুউচ্চ পাহাড় দেখা যায়। পরক্ষণেই বিরতিহীনভাবে একটির পর একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়ে ঢেকে দেয় দূরবর্তী পাহাড়ের অস্তিত্বকে। ক্যামেরা টিল্ট করে নেমে আসতে থাকে ভূমিতে এবং এতক্ষণে দর্শক দেখতে পায়, ছাদ দেখা যাওয়া প্রতিটি ভবন, এখন শুধুই ধ্বংসাবশেষ। সবক’টি ভবন ধ্বসে পড়েছে রীতিমতো। দাঁড়িয়ে আছে যে ক’টি, সে-ক’টির ছাদ আর ভাঙা পিলারই শুধু আছে। কেন এই ধ্বংসযজ্ঞ? কোথায় ঘটছে এই ধ্বংসযজ্ঞ? ঘটছে সিরিয়ায়। সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধের নারকীয়তাকে তুলে ধরে এই ডকুমেন্টারি।

২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া এই গৃহযুদ্ধে সিরীয় সরকার এবং রাশিয়ান মিত্রপক্ষ সিরিয়ার নাগরিকদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে প্রথমবার ‘রাসায়নিক যুদ্ধ’ শুরু করেছিল। হাজারো প্রাণ তো ঝরেছেই, প্রতিটি সড়কও রূপান্তরিত হয়েছে যুদ্ধের ময়দানে। লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছে পাশের দেশগুলোতে। কিন্তু সিরিয়ার ‘আল ঘুউতা’ শহরের উত্তরে বন্দী হয়ে পড়েছে ৪ লক্ষ মানুষ। যুদ্ধে আহত হয়ে বাঁচা-মরার মাঝখানটায় লড়ে যাচ্ছে। এবং ‘দ্য কেইভ’ ডকুমেন্টারির মূল ঘটনা বয়ান করা হয় এই আল ঘুউতা থেকে।

রাশিয়ান যুদ্ধবিমান হতে একের পর এক বোমার নিক্ষেপণ গোটা শহরকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে এই লাখ মানুষগুলো আশ্রয় নিয়েছে মাটির নিচ দিয়ে চলে যাওয়া এক সুবিস্তৃত গুহায়। অনেক অনেক সুড়ঙ্গ সংযুক্ত হয়েছে এখানে। আর নিরীহ মানুষগুলো আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে এই গুহাকে।

গুহার একটি টানেলে দাঁড়িয়ে আছেন ডাক্তার আমানি; Image Source: Hecat Studio Website

মাটির ওপরে হাসপাতালগুলো সব গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বোমা মেরে। তাই বেশ ক’জন ডাক্তারের একটি দল এই গুহায় তাদের যতটুকু মেডিকেল সুবিধা/উপাদান বেঁচেকুটে আছে, তার সবটুকু নিয়ে এসে আহত মানুষগুলোকে নতুন আশায় বাঁচিয়ে রাখার সর্বোচ্চটা করে যাচ্ছেন। গুহাটাকেই হাসপাতাল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তারা। আর এই গোটা মহৎ উদ্যোগ ও দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন ‘ডাক্তার আমানি’ (স্বভাবতই যিনি ডকুমেন্টারির কেন্দ্রীয় চরিত্র)।

সহকারী ডাক্তারদের পুরোপুরি নিয়োজিত মনোভাব সাথে নিয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছেন এই নারী। কিন্তু কতদূর? মাঝেমাঝে হাঁপিয়ে ওঠেন নিজেই। আশা রাখতে রাখতে ধৈর্য্যের বাঁধ একসময় ভেঙে যায়। তাও আঁকড়ে ধরে আছেন। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, সুযোগ- কিছুই হাতের কাছে নেই। সবকিছুর সঙ্কট। সরবরাহের গতিও নেই। প্রাথমিক চিকিৎসায় আর কতদূর, কতটুকু? হঠাৎ নিজের কাছে নিজে পরাজিত হয়ে কাঁদো কাঁদো অবস্থায় আমানি ফরিয়াদের সুরে প্রশ্ন তোলেন, “ঈশ্বর কি আসলেই কিছু দেখছেন?”

সহকারী ডাক্তারদের মুখ দেখে, রোগীদের যন্ত্রণায় ফুঁপিয়ে ওঠার শব্দ শুনে আবার স্থির করেন নিজেকে। অপারেশনের কক্ষে রোগীর দেহকে অবশ করার সময়ে রোগীকে উৎফুল্ল রাখতে নিজের আইফোনটায় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীত ছেড়ে দেন আমানি। বাকি ডাক্তারদের বলেন,

“শিশুদের কথা ভেবে হলেও মুখটায় শুকনো হাসি ধরে রাখো সবাই। এইটুকু অন্তত করতে পারি আমরা।”

কিন্তু শুকনো হাসির স্থায়িত্বকালও দীর্ঘ হলো না। দিন যতই গড়াচ্ছে, হতাহতের সংখ্যা তত বাড়ছে। কোনো সরবরাহ আসছে না। এমন অবস্থায় ক্ষত অবস্থানটাকে অবশ করে কতক্ষণ আর ব্যথা ভুলিয়ে বাঁচিয়ে রাখার আশা দেখাবে ডাক্তার আমানি আর তার দল ? কিন্তু, চোখের সামনে ঝরে যেতে দিতেও পারছে না। এ অমানবিকতার শিক্ষা তো এই পেশা দেয় না।

এই একুশ শতকে মানবতার চরম অবমাননা ও বিপর্যয়ের অন্যতম বড় উদাহরণ, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ। এবং বিগত কয়েকবছরের ডকু-সিনেমার জগত’টা দেখতে গেলে দেখা যাবে, ডকু-ফিল্মমেকাররা সিরিয়ায় চলমান মানবতা সঙ্কটের বিষয়টিকে বেশ আমলে নিয়ে কাজ করছেন। এমনকি এই ডকুমেন্টারির পরিচালক ফেরাস ফায়াদ তার পূর্বের ‘লাস্ট ম্যান ইন আলেপ্পো’ ডকুমেন্টারিটিতেও সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে মিলিটারিদের মৃত্যুথাবা হতে সাধারণ জনগণকে রক্ষায় ‘হোয়াইট হেলমেটস’ নামক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের একান্ত সংগ্রামের চিত্র ধারণ করেছেন।

আর এবার তো তিনি দর্শককে সোজা মাটির নিচের এক জগতে নিয়ে গিয়েছেন নতুন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি দাঁড় করাতে। দুঃসহ সে অভিজ্ঞতা। অবর্ণনীয়, অকল্পনীয়। মাটির নিচের সেই জগতের বাতাসে মিশে আছে মৃত্যুর বিশ্রী গন্ধ আর বাঁচার তীব্র আকুতি।
তবে, শুধু বিদগ্ধ বাস্তবতাকেই ধারণ করেনি ‘দ্য কেইভ’, গভীরে গিয়েছে সিরিয়ার সমাজব্যবস্থায় নারীর অবস্থান এবং বৈষম্যের মতো জটিল বিষয়েরও। সিরিয়ায় নারীর অবস্থান কেমন, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যেই পরিচালক ‘ফেরাস ফায়াদ’ সুস্পষ্ট তুলে এনেছেন। দৃশ্যটিতে দেখা যায়, একজন রোগীর স্বামী, রোগী অর্থাৎ স্ত্রীর জন্য ওষুধ নিতে এসে ডাক্তার আমানিকে দেখে মন্তব্য করে,

“এসব কাজ নারীদের জন্য নয়, উপযুক্ত নয় নারীরা। ঘরের বাইরে এভাবে এসব কাজে নারীদের জড়ানো উচিত নয়।”

এবং উক্ত মন্তব্যে ডাক্তার আমানির ভেতরে যে রাগ আর দুঃখ জন্মায়, তা পরের আরেকটি দৃশ্যেই আমানির এক দীর্ঘ মনোলগে প্রকাশ পায়। দীর্ঘ মনোলগের একটি অংশে আমানি বলেন-

“তারা নারীদের প্রতি এত বিদ্বেষ পোষণ করে কে ? নারীর ঘরের বাইরে কাজ করাটা তাদের পৌরুষবোধে আঘাত করে? তারা ধর্মের দোহাই দেয়। সত্যিকার অর্থে, ধর্মকে ততটুকুই তারা জানতে চায়, যতটুকু জেনে ‘ব্যবহার’ করতে পারবে।”

এই দু’টি দৃশ্যই, সিরিয়ায় লিঙ্গবৈষম্য কতখানি প্রকট এবং নারী সেখানে কতখানি অবদমিত, সে বিষয়ের দলিল হয়ে উঠে। এবং সে বিষয়ের বিরুদ্ধে ‘প্রতিবাদী’ হয়ে উঠতে ডাক্তার আমানির বেশ কয়েকজন নারীকে এই গোটা কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়েই ‘আমানি’কে সিরিয়ায় নারী অধিকার অর্জনে মূর্ত প্রতীক এবং হাসপাতালের এই কর্মকাণ্ডের পেছনে মেরুদণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন পরিচালক।

ধধংসস্তুপের দিকে নিষ্পলক চেয়ে থাকা ডাক্তার আমানি; Image Source:  Hecat Studio Website

পরিচালক ‘ফেরাস ফায়াদ’ ডকুমেন্টারি ফিল্ম মেকিংয়ের সবক’টি টেকনিক যে ঢালাওভাবে দ্য কেইভে ব্যবহার করেছেন, তা নয় কিন্তু। দর্শকের মাঝে একটা ‘রিয়েল-টাইম’ অভিজ্ঞতা জাগাতে কোনো সাক্ষাতকারের ফুটেজ তিনি এই গোটা ডকুমেন্টারিতে যোগ করেননি। ভয়েসওভার ন্যারেশানের ব্যবহার করেছেন খুবই সূক্ষ্ম উপায়ে। তবে হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরা শটের যথোপযুক্ত ব্যবহার আছে, ভুরি ভুরি শট আছে। দর্শকের মাঝে যে অনুভূতির সঞ্চার করতে তিনি এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন, তা সফল হয়েছে। শক্তিশালী সব দৃশ্য তৈরি করেছেন তিনি।

নৃশংসতা, হতাশায় ভরা এত যন্ত্রণাদায়ক সব দৃশ্য যে, শান্ত আর অবিচলিত হৃদয় নিয়ে পর্দার সামনে বসে থাকাটা কষ্টসাধ্য। কিন্তু উঠতে গেলেও, উঠতে পারা যায় না। এই ডকুমেন্টারি যে বিষয়-বস্তু কেন্দ্রিক, তাতে একজন ‘মানুষ’ হিসেবে কর্ণপাত করাটা অতীব জরুরি। এই ডকুমেন্টারি দেখাটাও তাই খুবই খুবই প্রয়োজনীয়। এই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ‘গুরুত্বপূর্ণ’, দ্য কেইভ। হ্যাঁ, এই ডকুমেন্টারি দেখতে গিয়ে হয়তো দর্শকের চোখ জ্বালা করবে, হাঁসফাঁস করতে থাকবে, দম আটকে আসার অনুভূতি হবে- অস্বাভাবিক নয় তেমনটা। (ফেরাস ফায়াদ এই অবস্থার মুখোমুখিই করতে চেয়েছিলেন দর্শককে।)

কিন্তু, তারপরও দেখে যেতে হবে। জানতে হবে এবং দেখতে হবে, সিরিয়ার মাটিতে কতটা শোচনীয়ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে মানবতা।

হৃদয় উষ্ণ করার মতো ও খানিক স্বস্তি জাগানোর মতো কিছু মুহূর্তও দ্য কেইভে আছে। সব ডাক্তাররা মিলে আমানির জন্মদিন উদযাপন করার দৃশ্যের মতো কিছু টুকরো দৃশ্য আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। অভিযোগ জানানো যেতে পারে দৃশ্যগুলো নিয়ে, কিন্তু সে অভিযোগ খুব একটা যৌক্তিক হবে না। কারণ, এই কয়েকটি দৃশ্যের অত্যন্ত দরকার ছিল। গলার কাছে আটকে যাওয়া দমটাকে সচল হতে দিতেও অন্তত এই দৃশ্যগুলোর প্রয়োজন ছিল। তবে পরিচালক ফায়াদ, খুব যে আনন্দঘন আবহের উপস্থিতি এসব দৃশ্যে দেখিয়েছেন তেমনও নয়। ‘আনন্দ’ নির্মেঘ দূরত্বেই ছিল এই গুহায়।

তাই শ্বাস-প্রশ্বাসে স্বাভাবিকতা এনে দেওয়া দৃশ্যগুলোতেও ধরা দেয়, কর্মরত ডাক্তারদের তাদের পরিবারের কথা ভেবে বিমর্ষ, উদাস হয়ে পড়া। কিন্তু পরক্ষণেই মাথা থেকে সেসব ঝেড়ে ফেলে আহতের কান্নার আওয়াজ লক্ষ করে ছুটে যেতে দেখা যায় তাদের। এই দৃশ্যগুলোতেই চরিত্রদেরকে অত্যন্ত মানবিক করে তুলেছেন পরিচালক।

সহকর্মী ডাক্তারদের সাথে আমানির জন্মদিন পালনের ক্ষণিকের আনন্দঘন সেই দৃশ্যটি; Image Source: Hecat Studio Website

কিন্তু শেষ অঙ্কে, আহতের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার কাছে এতক্ষণের নির্মমতা যেন কিছুই না। বিপর্যয়ের সর্বোচ্চটা যেন তখনো করছে অপেক্ষা। ছেলের লাশকে জাপটে ধরে বিলাপ করতে করতে মায়ের “কেন আমার হৃদয় ভাঙলি?” সংলাপের সেই দৃশ্য থেকে রাসায়নিক যুদ্ধের ভয়াবহতা গোটা আল ঘুউতায় ছড়িয়ে পড়ার দৃশ্যগুলো রীতিমতো জীবন্ত নরকের মাঝ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যায় দর্শককে।

হাহাকার, শুধুই হাহাকার।

ব্যাকগ্রাউন্ডে অর্কেস্ট্রার সুর তখন উত্তেজনার পারদ বৃদ্ধির সাথে সাথে হৃদয়কে বিদীর্ণ করে তোলে। ছটফট করতে করতে মারা যাওয়া মানুষগুলোকে দেখে ডাক্তার আমানির মতো, দর্শকও অসহায় বোধ করে। কারোরই আর কিছু করার নেই। সবটুকু চেষ্টা করা হয়ে গেছে। অশ্রুসিক্ত চোখে চুপচাপ চলে যেতে যেতে ক্ষীণ কণ্ঠে আমানি বলে উঠেন, এই শাসনের পতন ঘটলে আবারো তিনি ফিরে আসবেন। কিন্তু পরক্ষণেই আলতোভাবে মাথা দুলিয়ে তেমন দিন আদৌ আসবে কি না, সেই শঙ্কাও প্রকাশ করেন আমানি।

সিরিয়ায় এ চিত্র রোজকার, এ হাহাকার রোজকার, এ সঙ্কট রোজকার; Image Source: Hecat Studio Website

সত্য হলো, আজো আসেনি। আদৌ আসবে কখনো? নাকি কল্পকথার ন্যায় ‘আশা’র কথা বলেই ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, দেখে যেতে হবে ? ‘দ্য কেইভ’ দেখার পর তাই ভগ্নহৃদয়, দীর্ঘশ্বাস আর অপরিমেয় নিরাশা নিয়েই চেয়ার ছেড়ে উঠতে হয়।

This article is a review of the hard hitting documentary film THE CAVE, released in 2019. It selected as one of the best documentary feature in Oscars 2020.

Featured image: Hecat Studio website. 

Related Articles