Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বইমেলায় বিজ্ঞানের চমৎকার বইগুলো

একটা সময় ছিল বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বিষয়ক বই তেমন একটা হতো না। এখনও যে খুব ভালোভাবে হচ্ছে তা-ও বলা যাবে না। তবে খুব ভালোভাবে না হলেও বিজ্ঞান বিষয়ক বইয়ের পরিস্থিতি আগের চেয়ে বেশ ভালো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিজ্ঞান বিষয়ক বই প্রকাশিত হচ্ছে। সেসব বইয়ের মাঝে কোনো কোনোটি বেশ ভালোও হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে সেসবের মাঝে কোনো কোনোটি বিশ্বমানেরও হচ্ছে।

প্রতি বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে সামনে রেখে বই প্রকাশিত হয়। উপন্যাস, কবিতা, গল্প, ইতিহাস, প্রবন্ধ ইত্যাদি বইয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞানের বইও প্রকাশিত হয়। বরাবরের মতো এবার ২০১৮ সালেও বেশ কিছু বিজ্ঞানের বই প্রকাশিত হয়েছে। সেসবের মাঝে উল্লেখযোগ্য কিছু বই সম্বন্ধে এখানে আলোচনা করা হলো।

১. তোমাদের জন্য বিজ্ঞান

লেখক: ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী

প্রকাশক: অনুপম প্রকাশনী

প্রচ্ছদ: নাসিম আহমেদ

অনেকদিন ধরে বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখি করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী। প্রতি বছরই তিনি পরিণত পাঠকদের জন্য বিজ্ঞানের বই লিখছেন। পরিণতদের তুলনায় ছোটদের জন্য লেখালেখি কমই করেছেন বলা যায়। এবার ছোটদের জন্য আনন্দের খবর। তোমাদের জন্য বিজ্ঞান বইটি লেখা হয়েছে ছোটদেরকে উদ্দেশ্য করে। তবে ছোটদেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা হলেও এটি সব বয়সের পাঠকের জন্যই উপযুক্ত।

বিজ্ঞান কী, কাকে নিয়ে, কাদেরকে নিয়ে, কীভাবে, এবং অবশ্যই বিজ্ঞান কী নয়– এসব এই বইয়ে সহজ ভাষায় আলোচনা করা হয়েছে। বিজ্ঞানের বই কীভাবে পড়বে, কীভাবে বুঝবে বইটি ভালো কিনা, বিজ্ঞান প্রজেক্ট কীভাবে করবে, বিজ্ঞানে গণিত কতটা দরকার, পরিমাপ কতটা প্রয়োজনীয়, বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের দরকারটাই বা কী- এসবের দিকে আলোকপাত করা হয়েছে বইয়ে।

২. গ্যালিলেও

লেখক: ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী

প্রকাশক: বাতিঘর প্রকাশনা

প্রচ্ছদ: সব্যসাচী হাজরা

এটি কিশোর উপযোগী জীবনী। আলোচনা করা হয়েছে পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের বরপুত্র গ্যালিলেও গ্যালিলিকে নিয়ে। বইটি সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎকৌশলের ছাত্র সাকিব মুস্তাভী বলেন

দূরবীনের আবিষ্কার, পড়ন্ত বস্তুর গতির তিনটি সূত্র, পেন্ডুলাম, পিসার হেলানো মিনার, চার্চের রোষানল- গ্যালিলেও নামটা শোনার সাথে সাথে শব্দগুলো আমাদের মাথায় খেলে যায়। আমরা কেন যেন গ্যালিলেওকে দূরবীনে চোখ রেখে চার্চের রক্তচক্ষুতে কারারুদ্ধ কিংবা পিসার হেলানো মিনারের উপরই সর্বদা দেখতে পাই। পরীক্ষণভিত্তিক পদার্থবিজ্ঞানের জনকের জীবনীকে আমরা অতি সারল্যকরণ করে ফেলেছি। আমাদের চেনা গ্যালিলেওর বাইরেও যে আরেকজন অধ্যবসায়ী মানুষ গ্যালিলেও আছেন তাকে আমরা কজনই বা চিনি? সাধারণ এক মেডিকেল ছাত্র থেকে অসাধারণ এক পদার্থবিজ্ঞানী হওয়ার রাস্তাটা মোটেও সুগম্য ছিল না। সে পথের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আগে যে খুব বেশি লেখা হয়েছে এমনটাও নয়। শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ড. ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী চির চেনা গ্যালিলেওর সেই অচেনা দিকগুলো নিয়েই লিখেছেন এই বইটিতে।

৩. মেঘনাদ সাহা: বিপ্লবী পদার্থবিজ্ঞানী

লেখক: প্রদীপ দেব

প্রকাশক: মীরা প্রকাশনী

প্রচ্ছদ: নাসিম আহমেদ

বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীদের নিয়ে বিশেষ করে উপমহাদেশের বিজ্ঞানীদের নিয়ে খুব চমৎকার ভাষায় এবং চমৎকার শৈলীতে জীবনী লিখেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক প্রদীপ দেব। আইনস্টাইনের কাল, কোয়ান্টাম ভালোবাসা, রেডিয়াম ভালোবাসা সহ আরো বেশ কতগুলো বই লিখেছেন তিনি। অন্যান্য বছরের মতো এবারও প্রকাশিত হচ্ছে তার বই। উপমহাদেশের বিপ্লবী পদার্থবিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার জীবন নিয়ে এই বইটি। মেঘনাদ সাহা সম্পর্কে কেন সকলেরই জানা উচিত তা অনুধাবন করা যাবে বইটির ভূমিকার শুরুর দিকের কয়েকটি বাক্যের মাধ্যমেই।

আধুনিক জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি গড়ে উঠেছে যে কজন মানুষের মৌলিক তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে, অধ্যাপক মেঘনাদ সাহা তাদের অন্যতম। ১৯২০ সালে সালে মেঘনাদ সাহার তাপীয় আয়ননের সমীকরণ প্রকাশিত হবার পর থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানে যত গবেষণা হয়েছে তাদের প্রায় সবগুলোই সাহার সমীকরণ দ্বারা প্রভাবিত।

৪. বুধ: যে গ্রহে একদিন সমান দুই বছর

লেখক: প্রদীপ দেব

প্রকাশক: মীরা প্রকাশনী

প্রচ্ছদ: নাসিম আহমেদ

এটিও প্রদীপ দেবের বই। সৌরজগতের গ্রহ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বস্তুদের নিয়ে কিশোর উপযোগী করে প্রতি বছরই একটি করে বই লিখছেন। সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ নিয়ে আগের বছরগুলোতে আলাদা আলাদা বই প্রকাশিত হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় এবার প্রকাশিত হলো বুধ গ্রহ নিয়ে বই

৫. কৃষ্ণগহ্বর

লেখক: আবদুল গাফফার রনি

প্রকাশক: অন্বেষা প্রকাশন

প্রচ্ছদ: আনোয়ার হোসাইন খোন্দকার

অনেকদিন ধরে বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখি করছেন আবদুল গাফফার রনি। বিজ্ঞানের কঠিন বিষয়গুলোকে সহজ ভাষায় গল্পের ছলে পাঠকের কাছে তুলে ধরতে তিনি সিদ্ধহস্ত। এর আগে থিওরি অব রিলেটিভিটি: বিশেষ ও সাধারণ আপেক্ষিকতার সহজ পাঠ, কোয়ান্টাম ফিজিক্স ও মহাকর্ষ তরঙ্গ লিখে বিজ্ঞান পাড়ায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন। এবার কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে বড় কালেবরে বই লিখে আবারো নিজের জাত চেনালেন।

৬. প্যারাডক্স অব ফিজিক্স

লেখক: আবদুল গাফফার রনি

প্রকাশক: তাম্রলিপি প্রকাশনী

প্রচ্ছদ: মনিরুল ইসলাম

পদার্থবিজ্ঞানের স্ববিরোধী কিছু তাত্ত্বিক জটিলতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এতে। এর সূচিপত্র তথা বিভিন্ন অধ্যায়ের শিরোনামগুলো দেখলেই বোঝা যাবে এর আলোচ্য বিষয় কী। এতে আলোচিত হয়েছে অ্যাকিলিসের কচ্ছপ সমস্যা, গ্যালিলিয়ান প্যারাডক্স, নিউটনীয় প্যারাডক্স, ল্যাপলাসের দৈত্য, আলোর বিভ্রান্তি, আলোর ভর, অদৃশ্য মানব প্যারাডক্স, টুইন প্যারাডক্স, কাকতাল কতকাল, গ্রান্ডফাদার প্যারাডক্স, উচ্চমাত্রার আশ্চর্য জগত, শ্রোডিঞ্জারের বিড়াল, বাটার-ফ্লাই ইফেক্ট, এলিভেটর প্যারাডক্স, মহাবিশ্বের অন্যরকম গণিত ইত্যাদি বিষয়।

৭. আধুনিক পদার্থবিদ্যার গল্প

লেখক: আবদুল গাফফার রনি

প্রকাশক: বিশ্বসাহিত্য ভবন

প্রচ্ছদ: আবদুল গাফফার রনি

এটিও আবদুল গাফফার রনির বই। এটি নিয়ে এই মেলাতে মোট তিনটি বিজ্ঞান বিষয়ক বই প্রকাশ করলেন তিনি। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান তথা সামগ্রিক পদার্থবিজ্ঞানের কিছু চমকপ্রদ বিষয় নিয়ে সাজানো হয়েছে এই বইয়ের বিষয়বস্তু।

৮. পদার্থবিদ্যার সাতকাহন

লেখক: কার্লো রোভেলি

অনুবাদ: আবুল বাসার

প্রকাশক: তাম্রলিপি প্রকাশনী

প্রচ্ছদ: মনিরুল ইসলাম

জনপ্রিয় বিজ্ঞান সাময়িকী বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার। প্রকৃতি পরিচয় প্রকাশনী থেকে আইজ্যাক আসিমভের বেশ কয়েকটি বইয়ের অনুবাদ প্রকাশ করেছেন আগে। অনুবাদ বেশ ঝরঝরে। পড়ে আরাম পাওয়া যায়। আগের বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারো অনুবাদ করলেন একটি বই। ইতালীয় তাত্ত্বিক পদার্থবিদ কার্লো রোভেলির সেভেন ব্রিফ লেসন বইটির অনুবাদ করেছেন পদার্থবিদ্যার সাতকাহন শিরোনামে। এ বইয়ে তথ্য আর তত্ত্বকথার গভীর অনুসন্ধান যেমন করা হয়েছে, তেমনি উঠে এসেছে কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া বিজ্ঞানের অনেক অজানা ইতিহাসও।

৯. আচরণগত স্নায়ুবিজ্ঞান

লেখক: আশরাফ মাহমুদ

প্রকাশক: আদর্শ প্রকাশন

নিউরোসায়েন্স তথা স্নায়ুবিজ্ঞানের তথ্যবহুল একটি বই। বইয়ের লেখক আশরাফ মাহমুদ কানাডায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষণা করছেন অনেকদিন ধরে। বইটির পেছনে লেখক সময় দিয়েছেন অনেক। অনেকটা একাডেমিক ধাঁচে লেখা বইটিতে আলোচিত হয়েছে- কীভাবে মানব মস্তিষ্ক মানুষের বিভিন্ন আচরণের জন্ম দেয়, মস্তিষ্ক কীভাবে সেসব আচরণকে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রণ করে; কীভাবে মানব মস্তিষ্ক গঠিত হয়, মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের কাজ কী, কোন অংশের কী ক্ষতিসাধনে কীরূপ ব্যাধি কিংবা সমস্যার জন্ম হতে পারে ইত্যাদি বিষয়।

কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান, স্নায়ুবিজ্ঞান, ডাক্তারি, ওষুধবিজ্ঞান, নিউরোলোজি ইত্যাদির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক রেফারেন্স বই হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন এ বইটি।

১০. মহাকর্ষ

লেখক: তৌহিদুর রহমান উদয়

প্রকাশক: অন্বেষা প্রকাশন

প্রচ্ছদ: তৌহিদুর রহমান উদয়

শুধুমাত্র মহাকর্ষ নিয়ে বড় কালেবরে পূর্ণাঙ্গ একটি বই। বইটি সম্বন্ধে লেখক তৌহিদুর রহমান উদয় বলছেন-

কেপলার, গ্যালিলিও, নিউটন ও আইনস্টাইনের সূত্র বা তত্ত্বগুলো নিয়ে তাত্ত্বিক আলোচনা রয়েছে বইটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে। চারটি অধ্যায়ে বিভক্ত এই বইটির মূল অংশ এটিই। মহাকর্ষের একেবারে মূল খুঁজতে গেলে হয়তো কেপলার পর্যন্ত গিয়ে সন্তুষ্ট থাকাটা ঠিক হবে না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে আরও পেছনের দিকে যেতে হবে। আর পেছনে ফিরে আমরা যতটুকু জানতে পারব সেটুকু নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রথম অধ্যায়টি। তৃতীয় অধ্যায়টি মূলত মহাকর্ষের প্রয়োগসংক্রান্ত, ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয় অধ্যায়ের পরেই যেটা আসা উচিত।

…সবার শেষে চতুর্থ অধ্যায়ে সম্পূর্ণ বইটির সমীকরণবিহীন একটি সারসংক্ষেপ আলোচনা দেওয়া হয়েছে যেন পাঠক মহাকর্ষের মূল বিষয় ও ইতিহাস অতি সহজে ও অল্প সময়ে অনুধাবন করতে পারে। মহাকর্ষের প্রকৃতি বুঝতে ও সাধারণ জ্ঞান লাভে এ অংশটির গুরুত্ব অপরিসীম।

১১. কণা কোয়ান্টাম পরিচিতি

লেখক: তৌহিদুর রহমান উদয়

প্রকাশক: তাম্রলিপি প্রকাশনী

প্রচ্ছদ: তৌহিদুর রহমান উদয়

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম একটি বিপ্লব হলো কোয়ান্টাম তত্ত্ব। এ তত্ত্ব পদার্থবিজ্ঞানে সম্পূর্ণ নতুন যুগের সূচনা করে দেয়। পরমাণু তথা কণা জগতের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য কোয়ান্টাম তত্ত্বের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া গতি নেই। আর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দিয়েই যেহেতু সমগ্র মহাবিশ্ব গঠিত তাই কোয়ান্টাম তত্ত্ব সামগ্রিক মহাবিশ্ব নিয়ে আলোচনাতেও প্রয়োজনীয়। এই কোয়ান্টাম তত্ত্বের মৌলিক আলোচনা, পর্যায়ক্রমিক ইতিহাস, যৌক্তিক বিতর্ক, প্রায়োগিক দিক, কণা পদার্থবিদ্যার খুঁটিনাটি ইত্যাদি অনেক বিষয় আলোচিত হয়েছে বইটিতে।

১২. শূন্য মহাশূন্য বলি যারে

লেখক: জাহাঙ্গীর সুর

প্রকাশক: দেশ পাবলিকেশন্স

প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত

বিজ্ঞানপ্রেমী জাহাঙ্গীর সুর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিতভাবে বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখি করে যাচ্ছেন। বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকার নেয়া তার শখ। মহাকাশ নিয়েও আছে তার ব্যাপক আগ্রহ। এ বিষয়ে লেখালেখিও করেছেন সময়ে সময়ে। তার মহাকাশ বিষয়ক নির্বাচিত কিছু লেখার সমাহার এই বই।

১৩. জাদুকরী বিজ্ঞান

লেখক: তাহরিমা তাহসিন লিমা

প্রকাশক: অন্বেষা প্রকাশন

প্রচ্ছদ: আবদুল গাফফার রনি

অনেকদিন ধরে বিজ্ঞান বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত আছেন তাহরিমা তাহসিন লিমা। বই হিসেবে এবারই তার প্রথম প্রকাশনা। বিজ্ঞানের কিছু মজার বিষয় নিয়ে লিখেছেন তার প্রথম বই জাদুকরী বিজ্ঞান। প্রথম বই প্রকাশিত হওয়াতে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি।

১৪. ফোটন বিজ্ঞান সংকলন

সম্পাদক: ইমতিয়াজ আহমেদ

প্রকাশক: ছায়াবীথি প্রকাশনী

অনলাইনে বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখির চমৎকার একটি প্লাটফর্ম হলো বিজ্ঞান পত্রিকা। কয়েক বছর ধরে সেখানে চমৎকার সব বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। সেসব লেখার মাঝে বাছাইকৃত সেরা লেখাগুলো নিয়ে বিষয়ভিত্তিকভাবে সাজানো হয়েছে ফোটন বিজ্ঞান সংকলন। এবার ২০১৮ সালে মোট চারটি বিষয়ের সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। এগুলো হলো দৈনন্দিন বিজ্ঞান, মহাবিশ্ব, পদার্থবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান।

প্রচ্ছদ: উইপোকা ল্যাব

দৈনন্দিন বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় হলো- বাস্তবতা কী? টিকা, এক ̄স্বর্গীয় আশীর্বাদ, ফুটবল খেলায় বিজ্ঞান, সমস্যা যখন প্রযুক্তি-আসক্তি, চোখের সামনে উড়তে থাকা ̄স্বচ্ছ জিনিস গুলো আসলে কী? পৃথিবীর গতি আমরা অনুভব করি না কেন? ̄স্মার্ট হবার ওষুধ, ঘণ্টা এবং মিনিট কেন ষাট ভাগে বিভক্ত? এক বৈজ্ঞানিক ভালোবাসার উপাখ্যান, কেমন করে আমাদের দেহের ক্ষত সেরে ওঠে? একটি মস্তিষ্কের ভ্রমণকাহিনী, নেপোলিয়নের মৃত্যুরহস্য।

প্রচ্ছদ: উইপোকা ল্যাব

পদার্থবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় হলো- আইনস্টাইনের অনুমিত মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত হলো শতবর্ষ পরে, রংধনু কেন ধনুকের মতো বাঁকানো? এন্টিম্যাটারের খোঁজে, পার্টিকেল ফিজিক্সের কিছু এপেন্ডিক্স : সোজা বাংলায় কিছু জিনিস জানা, মহাকর্ষ: একটু ফিরে দেখা, খালি হাতে ইট ভাঙ্গার পদার্থবিদ্যা, বিজ্ঞানের আলোক ভ্রমণ: আল হাজেন থেকে আইনস্টাইন, আইনস্টাইন কি তবে আলোর গতির ব্যাপারে ভুল ছিলেন? ১৮-ই আগস্ট: হিলিয়ামের ঐতিহাসিক আবিষ্কার, পদার্থের অদ্ভুত কোয়ান্টাম দশা আবিষ্কৃত, অধরাই থেকে যাবে ডার্ক পার্টিকেল, স্থান কেন ত্রিমাত্রিক, দৈনন্দিন জীবনেও জড়িয়ে আছে আপেক্ষিকতা, চুম্বকের ভেতরের কথা, স্মার্টফোনের টাচস্ত্রিন কীভাবে কাজ করে?

প্রচ্ছদ: উইপোকা ল্যাব

জীববিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়- খনিজ-খাদ্য: প্রাণ যেভাবে পৃথিবীকে বদলালো, একের ভেতরে অপরের বাস: এন্ডোসিম্বায়োসিস, মানুষের পৈশাচিক মস্তিষ্ক, মাইটোকন্ড্রিয়ার একাল সেকাল, প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন: উদ্ভিদ কেন রোদে পুড়ে যায় না? প্রিয়নের গল্প, সময়ের ঘোড়ায় চেপে মানবজাতির শেকড়ের সন্ধানে, ভিটামিন পিল সেবনে সাবধান, এপিজেনেটিক্স: কিছু সংক্ষিপ্ত ধারণা, ভাইরাসই হবে ক্যান্সারের প্রতিরোধক, মৃত্যুর সৌন্দর্য ও অমরত্বের জটিলতা, পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই তিন সন্তানের এক জননীর গল্প।

প্রচ্ছদ: উইপোকা ল্যাব

মহাবিশ্বের আলোচ্য বিষয় হলো- স্পেস এলিভেটর : বাস্তবতা থেকে কতদূর? পাদ্রি ইভান্সের বিশ্ব, সৌরমডেলের ক্রম পরিবর্তন, ডার্ক ম্যাটারের সহজ পরিচিতি, রহস্যময় ব্ল্যাক হোল, ভয়েজারের চল্লিশ বছর, মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তার খোঁজে অ্যারেসিবো বার্তা, অর্ধেক ম্যাগমার সমুদ্র, অর্ধেক চিরস্থায়ী রাত, ব্ল্যাক হোলের প্রথম ছবি, প্লুটো আর গ্রহ নয় কেন? মহাবিশ্বের ব্যর্থ নক্ষত্র, গ্রহাণু বন্দিকরণের ঝুঁকি এবং এর প্রয়োজনীয়তা, নক্ষত্রের ইতিকথা, মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় বস্তু কোনটি? কৃষ্ণ গহ্বরের নাম শুনেছেন, শ্বেত গহ্বরের নাম কি শুনেছেন?

১৫. মহাবিশ্বের সীমানা

লেখক: আবদুল্যাহ আদিল মাহমুদ

প্রকাশক: অন্বেষা প্রকাশন

গত বছর স্টিফেন হকিংয়ের বই আ ব্রিফার হিস্ট্রি অব টাইম অনুবাদ করে পাঠকদের কাছে স্থান করে নিয়েছেন আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ। এবারও তিনি হাজির হয়েছেন মহাকাশ বিষয়ক বই নিয়ে।

বিজ্ঞান এগিয়ে যাক, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান সমৃদ্ধ হোক। বিজ্ঞান বিষয়ক বই প্রকাশের ধারা অব্যাহত থাকুক। বিজ্ঞান বিষয়ক প্রকাশনার মান এবং পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক। তবেই না দেশটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে এবং তৈরি হবে বিজ্ঞানমনস্ক একটি সমাজ।

ফিচার ছবি- লেখক কর্তৃক সমন্বয়কৃত

Related Articles