Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হ্যারি পটার সিরিজে লুকানো যত রহস্য

হ্যারি পটার চমৎকার এক ফ্যান্টাসির খোরাক, সে-কথা সকলেরই জানা। কাহিনী নির্মাণ, গল্পের গাঁথুনি, টুইস্ট, প্লট, ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট, সব মিলিয়ে সে যেন ফ্যান্টাসি জগতের প্রমিথিউস। হ্যারি পটার ফ্র‍্যাঞ্চাইজি তথা উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডের কাহিনীর পরতে পরতে জে. কে. রোলিং বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান, ঘটনা, ও চরিত্র খুবই সুনিপুণভাবে গেঁথে দিয়েছেন- যা সহজেই সাধারণ মানুষের চোখ এড়িয়ে যায়। এই লেখায় আলোচনা করা হবে এমনই কিছু জিনিস নিয়ে, যা দ্বারা বোঝা যাবে জে. কে. রোলিং কত সূক্ষ্ম ও দক্ষ হাতে উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডের খুঁটিনাটি সাজিয়েছেন। নিচে বর্ণিত কাহিনীগুলো কোনো হ্যারি পটার বিশ্লেষক বা ভক্তের কল্পনাপ্রসূত ফ্যান থিওরি নয়।

হগওয়ার্টস স্কুল অব উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ড্রি; Image Source : Alphacoders.

নেভিলকে ১০ পয়েন্ট উপহার

হগওয়ার্টসে বছর শেষে বিভিন্ন হিসাব কষে চার হাউজের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাম্বার অর্জনকারী হাউজকে ‘হাউজ কাপ’ দেওয়া হয়। এখানে অনেক শিক্ষার্থীর নিজ কৃতকর্মের নাম্বারও যোগ হয়। জাদু জগতের উপকার হচ্ছে, এমন কোনো কাজ করলে যোগ হয় পয়েন্ট, আবার হগওয়ার্টসের নিয়ম ভাঙলে ঋণাত্মক পয়েন্টও যোগ হয়।

হ্যারি পটারের প্রথম বর্ষে তার সহপাঠী নেভিল লংবটমকে ১০ পয়েন্ট উপহার দেন প্রধান শিক্ষক অ্যালবাস ডাম্বলডোর। বিষয়টি হয়তো অতি সাধারণ গোছের মনে হতে পারে, কারণ পয়েন্ট তো হ্যারি আর হারমায়োনিও পেয়েছিল। নেভিল পয়েন্ট অর্জন করলে সেটা আর এমন কী? কিন্তু এর পেছনে চমৎকার এক উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে। হ্যারি, রন, হারমায়োনি যখন হগওয়ার্টসের নিয়ম ভেঙে রাতের আঁধারে ফিলোসফার্স স্টোনের সন্ধানে বের হয়, তখন সঠিক পন্থা অনুসরণ করে নেভিল নিজের বন্ধুদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। সে চাচ্ছিল না তাদের কৃতকর্মের ফলে আবারও গ্রিফিন্ডরের পয়েন্ট কাটা পড়ুক।

নেভিল বাধা দিচ্ছে হ্যারি, রন, ও হারমায়োনিকে; Image Source : Warner Bros.

প্রিয় বন্ধুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যে কতটা কঠিন, তা হয়তো ডাম্বলডোরের চেয়ে আর কেউ ভালো জানে না। অতীতে বন্ধু গ্রিন্ডেলওয়াল্ডের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আওয়াজ না তুলে বড়সড় এক ভুল করেন অ্যালবাস ডাম্বলডোর। সঠিক সময়ে যদি গ্রিন্ডেলওয়াল্ডের মুখোমুখি হয়ে তাকে থামানো যেত, তবে সে পুরো ইউরোপে মাগল আর জাদুকর সমাজে এত আতঙ্ক ছড়াতে পারত না। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে গেলে যখন ডাম্বলডোর তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু গ্রিন্ডেলওয়াল্ডের বিপক্ষে দাঁড়ালেন, তখন তিনি বুঝতে পারলেন কাজটা কতটা দুঃসাধ্য। রণক্ষেত্রে নিজের একজন বন্ধুর বিপক্ষে যুদ্ধ করার চেয়ে দশ শত্রুর মোকাবিলা করা সহজ। আর সাহসের সেই উপাখ্যান যদি লেখে এগারো বছরের কোনো সহজ-সরল গোছের ছেলে, তাহলে অ্যালবাস ডাম্বলডোর সেটাকে প্রশংসার জোয়ারেই ভাসাবেন। এজন্যই তিনি নেভিলকে পূর্ণ দশ পয়েন্ট খুশি হয়ে দিয়েছিলেন।

অ্যালবাস ডাম্বলডোর (বামে) ও গ্রিন্ডেলওয়াল্ড; Image Source : Warner Bros.

লিলির প্রতি স্নেইপের ভালোবাসা

সেভেরাস স্নেইপ প্রথম ক্লাসেই হ্যারিকে যে প্রশ্নটা করেছিল সেটা হলো,

“Potter! What would I get if I added powdered root of asphodel to an infusion of wormwood?”

ভিক্টোরিয়াল ফ্লাওয়ার ল্যাঙ্গুয়েজ অনুসারে, Asphodel (মন্দার-পুষ্প) হলো একপ্রকারের লিলি ফুল, যার অন্য এক অর্থ, ‘My regrets follow you to the grave’ আর Wormwood মানে হলো ‘absence’, যা অন্যভাবে ‘তীব্র শোক-বিধুর অবস্থা’কে প্রতিফলিত করে। একসাথে করলে যার অর্থ দাঁড়ায়, ‘I bitterly regret Lily’s death’. (লিলির মৃত্যুতে আমি অত্যন্ত মর্মাহত)

Asphodel বা মন্দার-পুষ্পকে একসময় সাপের কামড়ের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। লিলিকে খুন করে লর্ড ভলডেমর্ট, যে কিনা স্লিদারিনের একজন বংশধর, এবং সর্প-ভাষী। তার সম্পর্ক সরাসরি সাপের সাথে।

Asphodel (মন্দার-পুষ্প); Image Source : Wikimedia Commons.

আবার পোশন মাস্টার স্নেইপের মতে, মন্দার-পুষ্পের মূলকে পাউডার বানিয়ে তা ওর্মউডের সাথে মিশিয়ে এক বিশেষ স্লিপিং পোশন বানানো যাবে, যা পান করলে মানুষ জীবিত থাকবে ঠিকই, কিন্তু মনের দিক থেকে হয়ে যাবে পুরোপুরি নিঃসাড়। সোজা বাংলায়, জীবিত থেকেও মৃত। এটা দ্বারা সেভেরাস স্নেইপ লিলির মৃত্যুর পর নিজের মনের অবস্থা বুঝিয়েছেন।

মৃত লিলিকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে স্নেইপ; Image Source : Warner Bros.

জাদুর ছড়ি ও তার কেন্দ্র

হ্যারি আর লর্ড ভলডেমর্টের নিয়তি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল তাদের ছড়ির মাধ্যমেই। উদাহরণ হিসেবে ভলডেমর্টের ছড়ির কথাই বলা যাক। টম রিডল এগারো বছর বয়সে (১৯৩৮ সালে) ডায়াগন অ্যালিতে অবস্থিত অলিভেন্ডারের ছড়ির দোকান থেকে নিজের জাদুর ছড়ি কিনেছিল। সেটা ছিল ইউ গাছের কাঠ দিয়ে বানানো, এবং এর কেন্দ্র ছিল ফিনিক্সের পালক দিয়ে তৈরি। ইউ গাছকে অমরত্বের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।
যা ছিল ভলডেমর্টের সারা জনমের ইচ্ছা, এবং অমরত্বের সন্ধানে সে অনেকখানি সফলও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই গাছকে ‘অশুভ’ হিসেবেও গণ্য করা হয়, কারণ গোরস্থানেই সচরাচর এর দেখা মিলে। হ্যারি পটার অ্যান্ড গবলেট অফ ফায়ারে ডার্ক লর্ডের পুনরুত্থান ঘটেছিল তাদের পারিবারিক গোরস্থান থেকেই। গাছটা দুর্ভাগ্য ডেকে আনে বিধায় ভলডেমর্ট অমরত্ব হাসিল করতে ব্যর্থ হয়েছিল।

ইউ ট্রি বেশিরভাগ পাওয়া যায় গোরস্থানে; Image Source : Floral Images/Alamy.

অপরদিকে হ্যারির ছড়ি ছিল হলি ট্রি দিয়ে বানানো। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এটি অশুভ শক্তি দূরীকরণে দারুণ কার্যকর। হ্যারি ভলডেমর্টকে ধ্বংসের মাধ্যমে পুরো দুনিয়াকে বাঁচিয়েছিল অকল্যাণের হাত থেকে। ছড়ির কেন্দ্রের কথা বললে, দুজনের ছড়ির কেন্দ্রই ছিল ফিনিক্সের পাখনা দিয়ে নির্মিত। উপকথায়, পুনরুত্থানের গল্পে ফিনিক্স পাখি বেশ জনপ্রিয়। সেদিকটাতে মিল রেখে, হ্যারি আর ভলডেমর্ট- দুজনেই মরে আবার বেঁচে গিয়েছিল।

প্রথমবার নিজের জাদুর ছড়ি হাতে হ্যারি পটার; Image Source : Warner Bros.

ঐতিহাসিক সত্যতা যাচাই

জে. কে. রোলিংয়ের উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডের ইতিহাস অনুযায়ী, ইউরোপ এবং ঔপনিবেশিক উত্তর আমেরিকায় মাগল কর্তৃক জাদুকর নিধন ১৪ শতক থেকে ১৮ শতক পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। জাদুবিদ্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হতো। তবে প্রকৃত জাদুকরদের মধ্যে অনেকেই যেমন ‘ওয়েনডেলিন দ্য উইয়ার্ড’, ‘ফ্লেম-ফ্রিজিং’ চার্ম ব্যবহার করে মৃত্যু থেকে বাঁচতে সক্ষম হয়েছিল। উইচ হান্টাররা যতই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকে, ব্রিটিশ জাদুকর পরিবারগুলো নিজেদের এবং তাদের পরিবারকে রক্ষা করার জন্য জাদুবিদ্যা ব্যবহার করে লুকিয়ে পড়তে শুরু করে। তবে উইচ হান্টাররা খুব কমই আসল জাদুকরদের ধরতে পেরেছিল। কারণ, জাদুকরেরা তখন জাদু শিক্ষার জন্য নিজেদের নিরাপদ প্রতিষ্ঠান হগওয়ার্টস, ইলভারমর্নি এসব জাদুর স্কুল প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছিল। ১৬৯২ এবং ১৬৯৩ সালে ঔপনিবেশিক ম্যাসাচুসেটসে ঘটে যায় জাদু জগতের সবচেয়ে কলঙ্কময় অধ্যায়- সালেম উইচ ট্রায়াল। যার ফলে, জাদুর গোপনীয়তার রক্ষার্থে আন্তর্জাতিক সংবিধির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়, ‘International Statute of Wizarding Secrecy’। জাদুকর সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে নিরাপত্তার জন্য গড্রিক হোলো, টিনওয়ার্থের গ্রাম, ওটারি সেন্ট ক্যাচপোল ইত্যাদি জায়গাতে সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করতে শুরু করে।

ডাইনি চিহ্নিতকরণের সভা; Image Source : Tompkins Matteson.

পৃথিবীর বাস্তব ইতিহাসেও উইচ হান্ট বা ডাইনি নিধনের ইতিহাস বেশ দগদগে হয়ে আছে। প্রাচীন মিশর ও ব্যবিলনে জাদুকর ও ডাইনীদের জন্য আলাদা আইন ছিল। মধ্যযুগে ইউরোপে ডাইনি নিধনের নামে যে বর্বরতা হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য। ৭৮৫ সালে চার্চ অব প্যাডেরবর্ন ডাকিনীবিদ্যা নিষিদ্ধ করে। ১৭ শতকে ডাইনি নিধন তুমুলভাবে শুরু হয়। খ্রিস্টান সমাজ ও সেক্যুলার প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করত ডাকিনীবিদ্যা নগ্ন নৃত্য ও মানুষের মাংস খাওয়ার সাথে জড়িত। তাদের উপাসনা হতো শয়তানী ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। ১৫০০ থেকে ১৬৬০ সাল পর্যন্ত ইউরোপে ডাইনি সন্দেহে প্রায় ৮০ হাজার জনকে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই ছিল নারী। জার্মানিতে মৃত্যুদণ্ডের হার ছিল সবচেয়ে বেশি, আর আয়ারল্যান্ডে ছিল সবচেয়ে কম। ইংল্যান্ডে সর্বশেষ ডাইনি শিকারের ঘটনা ঘটে ১৬৮২ সালে।

সালেম উইচ ট্রায়ালে কথিত ডাইনিদের বিরুদ্ধে কুখ্যাত বিচারের কথা বিশ্ববাসী আজও ভুলতে পারেনি। আমেরিকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের ম্যাসাচুসেটস প্রদেশের একটি গ্রাম সালেমে ১৬৯২ সালে ঘটে গিয়েছিল ইতিহাসের এক লজ্জাজনক ও বীভৎস ঘটনা। বিচারের নামে হয়েছিল কলঙ্কজনক প্রহসন। কিছু নিরপরাধ ও অসহায় নারীকে ‘ডাইনি’ অপবাদ দিয়ে সালেম গ্রামে এক নিষ্ঠুর বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছিল। সালেমের এই কাহিনী উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডেও উল্লেখ আছে। এছাড়াও অবাক করা বিষয় হলো, ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন’ মুভিতে হগওয়ার্টসের সিঁড়ির কাছে Anne Boleyn এর ঝোলানো একটা পোর্ট্রেট দেখা যায়। তিনি ছিলেন তৃতীয় হেনরির স্ত্রী, যাকে ডাইনি অপবাদের হত্যা করা হয়েছিল।

হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার স্টোন মুভিতে Anne Boleyn এর পোর্ট্রেট; Image Source : Warner Bros.

দুই দুনিয়ার আলকেমি

পরশপাথর বা ফিলোসফার্স স্টোনের কথা কে না জানে? পরশপাথরের জন্য ইতিহাস বিখ্যাত হয়ে আছেন ফ্রান্সের মধ্যযুগীয় অ্যালকেমিস্ট নিকোলাস ফ্লামেল। এই পরশপাথর নিয়েই হ্যারি পটার ফ্র‍্যাঞ্চাইজির প্রথম বই ও মুভি নির্মিত হয়, ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন’ নামে। এছাড়াও হ্যারি পটারের প্রিক্যুয়েল মুভি সিরিজ ‘ফ্যান্টাস্টিক বিস্টস’-এর ‘ক্রাইমস অভ গ্রিন্ডেলওয়াল্ড’ মুভিতে নিকোলাস ফ্লামেলের ক্যামিও ছিল খানিক সময়ের জন্য।

ফ্যান্টাস্টিক বিস্টস – দ্য ক্রাইমস অভ গ্রিন্ডেলওয়াল্ড সিনেমায় নিকোলাস ফ্লামেল; Image Source : Warner Bros.

মজার ব্যাপার হলো, বাস্তবেও নিকোলাস ফ্লামেল নামে একজন খ্যাতনামা আলকেমিস্টের অস্তিত্ব ছিল। ১৩৭৯ সালের দিকে ফরাসিদের মাঝে একটি ধারণা ছড়িয়ে পড়ে যে, নিকোলাস ফ্লামেল ট্রান্সমিউটেশন প্রক্রিয়ায় এক ধাতুকে অন্য ধাতুতে রূপান্তর করে ফেলেছিলেন। প্রথমবার নিকোলাস ও তার স্ত্রী প্রায় ০.২৩ কেজি পারদকে রূপোয় পরিণত করেন বলে অনুমান করা হয়। এর তিন বছর পর, ১৩৮২ সালে অন্য ধাতুকে পরিণত করেন নিখাদ সোনায়। এছাড়াও মানুষের ধারণা ছিল, তিনি অমরত্বের সুধা (Elixir of life), এবং পরশপাথর সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছেন, যা দ্বারা তিনি নিজের বয়স বৃদ্ধির চলমান প্রক্রিয়াকে পুরো ভেঙে দেন। জে. কে. রোলিং ইতিহাস থেকে ধার নিয়ে নিকোলাস ফ্লামেলকে অন্তর্ভুক্ত করলেন উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডে। জন্মসাল, জীবনবৃত্তান্ত সবই রাখলেন হুবহু ইতিহাসের সাথে মিল খাইয়ে। তবে, উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডে নিকোলাস ফ্লামেল ছিল অ্যালবাস ডাম্বলডোরের খুব ঘনিষ্ঠ একজন বন্ধু। ১৯৯২ সালে তার বয়স ছিল প্রায় ৬০০ বছরের কাছাকাছি। অ্যালবাস ডাম্বলডোরের চকলেট ফ্রগ কার্ডে ফ্লামেলের কথা উল্লেখ আছে।

আলকেমিস্ট নিকোলাস ফ্লামেল; Image Source : Psi Factor.

খরার বিড়ম্বনা

‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য অর্ডার অভ দ্য ফিনিক্স’ বই এবং মুভি দুটোরই শুরুর দিকের তথ্যানুযায়ী অনুযায়ী, তখন ইংল্যান্ডে প্রচুর গরম পড়েছে। খা খা রোদ্দুরে নিঃসাড় হয়ে আছে পার্কগুলো। অর্ডার অব দ্য ফিনিক্স হলো হ্যারি পটার ফ্র‍্যাঞ্চাইজির পঞ্চম বই, অর্থাৎ হ্যারি তখন হগওয়ার্টসে পঞ্চম বর্ষে অধ্যয়নরত। ক্যালেন্ডারের পাতায় তখন ১৯৯৫ সাল। ইন্টারনেট ঘাঁটলে দেখা যাবে, ১৯৯৫ সালে সত্যি সত্যি ইংল্যান্ডে খুব গরম পড়েছিল। ইতিহাসে যা ‘1995 British Isles heat wave’ নামে অধিক পরিচিত। জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত চলমান তীব্র এই গরম যুক্তরাজ্যের অনেক জায়গায় তাপমাত্রার পূর্বের রেকর্ড ভেঙে ফেলে। ক্যামব্রিজশায়ারে তাপমাত্রা উঠেছিল প্রায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। রোলিং আবহাওয়া ও জলবায়ুর এই সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ও গল্পে মিশিয়ে দিতে ভুলেননি।

১৯৯৫ সালে যুক্তরাজ্যে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল; Image Source : Warner Bros.

লুপিনের রেল যাত্রা

১৯৯৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর। গ্রীষ্মের ছুটি কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা তখন হগওয়ার্টস এক্সপ্রেসে চড়ে হগওয়ার্টসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে। হ্যারি, রন, হারমায়োনি একই কামরায় বসে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। তাদের পাশেই চাদর মুড়িয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন ডাকিনীবিদ্যা প্রতিরোধ বিষয়ক শিক্ষক রেমাস লুপিন। হগওয়ার্টসের শিক্ষকেরা সাধারণত ট্রেনে করে হগওয়ার্টসে পৌঁছান না। কিন্তু লুপিন সেদিন কেন হগওয়ার্টস এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করছিলেন? কেনই বা তিনি বিধ্বস্ত অবস্থায় শুয়ে ছিলেন?

রেমাস লুপিনের সাথে পাঠক ও দর্শকেরা প্রথম পরিচিত হয় ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য প্রিজনার অভ আজকাবান’ এ। প্রিজনার অভ আজকাবান হগওয়ার্টসে হ্যারির তৃতীয় বর্ষ অর্থাৎ ১৯৯৩ সাল নির্দেশ করে। রোলিং এই জায়গাতেও জাদু জগতের সাথে বাস্তব জগতকে অনুপম মিশ্রণে মিশিয়ে দিয়েছেন। চন্দ্র পঞ্জিকার হিসেবানুযায়ী, ১৯৯৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাত ২ টা ৩২-এ ছিল ভর পূর্ণিমা। ওই পূর্ণিমার রাতেই লুপিন ওয়্যারউলফে পরিণত হন। পূব-আকাশে ভোরের আলো ফোটার পর তিনি সকল শক্তি হারিয়ে একবারে বিধ্বস্ত অবস্থায় নুইয়ে পড়েন। বাকি জাদুকরদের মতো জাদুবলে হগসমিডে পৌঁছানোর মতো শক্তি তার শরীরে অবশিষ্ট ছিল না। সেজন্য তিনি মাধ্যম হিসেবে শিক্ষার্থীদের সাথে রেলভ্রমণকেই বেছে নিয়েছিলেন।

হগওয়ার্টস এক্সপ্রেসে ঘুমিয়ে আছেন রেমাস লুপিন; Image Source : Warner Bros.

চিরশত্রুতা যখন রক্তের সম্পর্কে

অবাক শোনালেও এটাই সত্য যে, হ্যারি পটার ও ভল্ডেমর্ট সম্পর্কে আত্মীয় হয়। সেজন্য ডেথলি হ্যালোস নিয়ে একটু আলোচনা করতে হবে। জাদুজগতে ডেথলি হ্যালোস হলো মূলত ‘দ্য রিজারেকশান স্টোন’ বা ‘পুনর্জন্মী পাথর’, অর্থাৎ ‘দ্য এল্ডার ওয়ান্ড’ বা ‘অপরাজেয় জাদুর ছড়ি’ এবং ‘দ্য ইনভিজিবিলিটি ক্লোক’ বা অদৃশ্য হওয়ার আলখাল্লা। মৃত্যু নিজে এই তিনটি মূল্যবান জিনিস উপহার দিয়েছিল ত্রয়োদশ শতাব্দীর দিকে বাস করা তিন ব্রিটিশ পিওর ব্লাড উইজার্ডকে। সম্পর্কে তারা ছিল আপন তিন ভাই- ক্যাডমাস পেভেরেল, ইগনোটাস পেভেরেল, এবং অ্যান্টিউচ পেভেরেল। ক্যাডমাসকে দেওয়া হয়েছিল পুনর্জন্মী পাথর, ইগনোটাসকে অদৃশ্য হওয়ার আলখাল্লা, এবং অ্যান্টিউচকে এল্ডার ওয়ান্ড।

ডেথলি হ্যালোস হাতে তিন ভাই; Image Source : Warner Bros.

এই তিন ভাইয়ের বরাতেই হ্যারি ও টম রিডলের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। হগওয়ার্টসের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন সালাজার স্লিদারিন ছিলেন ক্যাডমাস পেভেরালের বংশধর। সালাজার স্লিদারিনের বংশধরদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এক নারী জাদুকর ছিলেন গর্মলেইথ গন্ট। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা পিওর ব্লাড এই জাদুকর মৃত্যুবরণ করেন আমেরিকান জাদু বিদ্যালয় ইলভারমর্নি স্কুল অভ উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ড্রিতে, ১৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে। গর্মলেইথের বংশধর করভিনাস গন্ট, করভিনাস গন্ট থেকে মারভোলো গন্ট, মারভোলো গন্ট থেকে মেরোপি গন্ট, এবং মেরোপি গন্টের গর্ভের জন্ম নেন টম রিডল।

ওদিকে অদৃশ্য আলখাল্লার মালিকা ইগনোটাস পেভেরালের নাতনি ইয়োলানথে পেভেরেল বিয়ে করেন হার্ডউইন পটারকে। তাদের একজন বংশধর র‍্যালস্টন পটার থেকে হেনরি পটার, হেনরি পটারের ছেলে ফ্লিমন্ট পটার, ফ্লিমন্ট পটারের ছেলে জেমস পটার, জেমস পটারের ছেলে হ্যারি পটার- এভাবেই বংশধারা এগিয়ে গেছে। সেই হিসেবে টম রিডল ওরফে লর্ড ভল্ডেমর্ট এবং হ্যারি পটার দুঃসম্পর্কের আত্মীয়।

হ্যারি তার অদৃশ্য আলখাল্লা মূলত বংশানুক্রমিকভাবেই পেয়েছিল, আর পুনর্জন্মী পাথর গন্ট পরিবারের মাধ্যমে হাতে আসে টম রিডলের।

হ্যারি ও ভল্ডেমর্ট সম্পর্কে আত্মীয় হয়; Image Source : Warner Bros.

নাম, বৈশিষ্ট্য ও জন্মতারিখ

হ্যারি পটার ফ্র‍্যাঞ্চাইজিতে ফ্যামিলি ট্রি, উইজার্ড, উইচ, মাগল, এলভস, গবলিন, ম্যাজিক্যাল ক্রিচার- সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধ সহস্রের মতো চরিত্র বিদ্যমান। জে. কে. রোলিং প্রত্যেকটি চরিত্রের নাম রেখেছেন নির্দিষ্ট কোনো বৈশিষ্ট্যকে কেন্দ্র করে। যেমন- ব্ল্যাক পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নাম রাখা হয়েছিল নক্ষত্রের নামের সাথে মিল রেখে। উদাহরণস্বরূপ, Boötes the Herdsman নক্ষত্রপুঞ্জের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হলো ‘আর্কটারাস’, ব্ল্যাক পরিবারে আর্কটারাস নামে মোট তিনজন পিওর ব্লাড উইজার্ড রয়েছে। নক্ষত্রপুঞ্জ Orion-এ বেলাট্রিক্স নামে এক নক্ষত্র বিদ্যমান। এই তারার নামে মিল রেখে বেলাট্রিক্স লেস্ট্রেঞ্জ। অ্যান্ড্রোমিডা পরিচিত এক গ্যালাক্সির নাম। এর সাথে মিল রেখে এসেছে অ্যান্ড্রোমিডা ব্ল্যাকের নাম। হারমায়োনির নাম এসেছে গ্রিক পুরাণে বর্ণিত দেবদূত ‘হার্মিস’ থেকে, যে মূলত দেবতাদের সঙ্গে স্বর্গলোক ও মরণশীল মানুষদের সঙ্গে মর্ত্যলোক- দুদিকেই ঠাট কুলিয়ে চলতে পারে। ঠিক তেমনই, হারমায়োনিও ছিল মাগল ও জাদু জগতের মধ্যে এক অপার্থিব যোগসূত্র। রুবিয়াস হ্যাগ্রিডের নামের প্রথম অংশ ‘রুবিয়াস’ এসেছে লাতিন শব্দ ‘রুবিনিয়াস’ থেকে, যার অর্থ ‘লাল বর্ণ’। আর হ্যাগ্রিড অংশ এসেছে ‘হ্যাগ্রিডেন’ থেকে, যার অর্থ ‘চিন্তিত’। হ্যাগ্রিড সবসময় হ্যারির সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত থাকত। তাই রোলিং তার নাম ঠিক করেন ‘রুবিয়াস হ্যাগ্রিড’ হিসেবে।

গ্রিক দেবী অ্যাথেনাকে রোমানরা মিনারভা বলে ডাকত। যিনি ছিলেন সাহস, ন্যায়বিচার ও সমরকৌশলের দেবী। মিনারভা ম্যাকগোনাগলের নামের প্রথম অংশ এখান থেকেই নেওয়া হয়েছে। ম্যাকগোনাগল শব্দের উৎপত্তি কেল্টিক ভাষার শব্দ Conegal থেকে। অনুবাদ করলে যার অর্থ দাঁড়ায় দুঃসাহসীর সন্তান। তবে মিনারভার নামের পরের অংশ এখান থেকে নেয়া হয়নি। এই ম্যাকগোনাগল নামটি জে. কে. রোলিং নিয়েছেন স্কটিশ কবি উইলিয়াম টোপাজ ম্যাকগোনাগল থেকে। কবি হিসেবে যুক্তরাজ্যে কখনোই তিনি প্রতিভার স্বতঃস্ফূর্ত আলো ছড়াতে পারেননি। মিনারভা ম্যাকগোনাগল স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেছেন বলে তার নামও রাখা হয়ে এক স্কটিশ কবির নামানুসারেই। এভাবে প্রত্যেকটি জিনিসের নামকরণের পেছনে তাকে প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।

মিনারভা ম্যাকগোনাগল; Image Source : Warner Bros.

আর জাদুকরদের জন্মতারিখ দৈবচয়নে নির্বাচন করা হয়নি। প্রত্যেকের জন্মতারিখ তার রাশির বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী, কন্যারাশির (২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্বর) মানুষেরা বুদ্ধি ও যুক্তির নিরিখে সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করে। প্রিয় মানুষের জন্য অকাতরে ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন। এরা সবসময় অন্যের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে ভালোবাসেন। ভালো কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি পান। বৈশিষ্ট্যগুলো মিলে যায় হারমায়োনি (১৯ সেপ্টেম্বর) আর অ্যালবাস ডাম্বলডোরের (৩০ আগস্ট) সাথে। তুলা রাশির (২৪ সেপ্টেম্বর – ২৩ অক্টোবর) মানুষেরা পছন্দ করে সামঞ্জস্যতা ও শৃঙ্খলা। যোগাযোগমূলক কাজে এদের বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। অন্যায় এদের নীতিবিরুদ্ধ। এই স্বভাবগুলো মিলে যায় ৪ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করা মিনারভা ম্যাকগোনাগলের সাথে। মকর রাশির (২২ ডিসেম্বর – ২০ জানুয়ারি) মানুষেরা অধ্যবসায়ী, পরিশ্রমী, সহনশীল, হিসেবী ও স্বাধীনচেতা। দুদিকে তাল মিলিয়ে চলতে ওস্তাদ। জীবনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই তাদের সাফল্য আসে বলে জীবন সম্পর্কে তাদের দৃষ্টি অন্যদের চেয়ে আলাদা। বৈশিষ্ট্যগুলো মিলে যায় ৯ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া সেভেরাস স্নেইপের সাথে। এভাবে প্রত্যেকটি চরিত্রের জন্মদিন নির্ধারণ করা হয়েছে জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে।

রাশি অনুযায়ী নির্ধারিত হাউজ; Image Source : Suburban Witchery.

ভল্ডেমর্ট চরিত্রের অনুপ্রেরণা

লর্ড ভল্ডেমর্ট চরিত্রটি দাঁড় করানো হয়েছে অ্যাডলফ হিটলারের উপর ভিত্তি করে। দুজনের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য বিদ্যমান। যেমন, দুজনের শৈশবই কেটেছে একা একা। বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে দুজনেই জাতিবৈশিষ্ট্যবাদী, বর্ণবাদী। একজনের সমস্যা ছিল ইহুদিদের নিয়ে, অন্যজন সহ্য করতে পারত না মাডব্লাডদের। একজন হত্যা করে ইহুদিদের, আরেকজন হত্যা করে মাগল আর মাগলবর্নদের। একজন জাতিগত বিশুদ্ধতায় বিশ্বাসী ছিলেন বলে আর্যকে ‘বিশুদ্ধ জার্মান জাতি’ হিসেবে ঘোষণা করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। কেননা তার মতে, বিশ্বে আর্য জাতির মানুষদের রক্তই সবচেয়ে বেশি পবিত্র। আর জার্মান জাতি আর্যদের মতোই বিশুদ্ধ রক্তের বলে তিনি মনে করতেন। অনার্য জাতি তার কাছে নিতান্তই হেয় করার পাত্র ছিল। এমনকি বাকি সব বর্ণ ও জাতি তার নিকট অপবিত্র এবং শয়তানের থেকেও অধিক নিকৃষ্ট ছিল। একই প্রতিফলন দেখা যায় ভল্ডেমর্টের ব্লাড সুপ্রিমেসির ক্ষেত্রেও। ভল্ডেমর্ট পিওর ব্লাড উইজার্ড ও উইচদের খাঁটি জাদুকর মনে করত। তার মতে, পিওর ব্লাড ছাড়া অন্য কারও জাদু চর্চার অধিকার নেই।

দুজনেই তাদের দক্ষতা ও কৌশল দ্বারা সেনাদল গঠন করেছিল। একটির নাম ছিল নাৎসি, অপরটির নাম ডেথইটার। দু’দলের সেনারাই নিজেদের পুরোপুরি উৎসর্গ করে দিয়েছিল তাদের নেতার কাছে। একটির চিহ্ন ছিল স্বস্তিকা, অপরটির চিহ্ন ছিল ডার্ক মার্ক। দু’দলই গণহত্যা চালিয়েছে। যারা তাদের বিরুদ্ধে গিয়েছিল, তাদের পরিবারকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রাইম টাইমে, তাদের নাম মুখে উচ্চারণ করতেও মানুষ ভয় পেত। যেমন- লর্ড ভলডেমর্টকে ‘You-know-who’, ‘He-who-must-not-be-named’ বলে ডাকা হতো। দুজনই তাদের সময়ের সবচেয়ে বড় দুই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তারা যে পক্ষে ছিল, ঐ পক্ষই হেরেছে দুবার।

লর্ড ভলডেমর্ট ও তার দল ডেথইটার; Image Source : Warner Bros.

এখানেই শেষ নয়। নারসিসা ম্যালফয়, অ্যান্ড্রোমিডা টঙ্কস আর বেলাট্রিক্স লেস্ট্রেঞ্জের চরিত্রগুলো হিটলারের সহযোগী মিটফোর্ড সিস্টারস থেকে অনুপ্রাণিত। যেমনভাবে ইউনিটি মিটফোর্ড সম্পর্কে জড়িয়েছিল বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করা সেই অধিনায়কের সাথে, তেমন বেলাট্রিক্সও ভল্ডেমর্টের সাথে জড়িয়েছিল গভীর প্রণয়ে। দুজন নারীই তাদের নেতার অন্ধভক্ত ছিল। নারসিসা ম্যালফয় চরিত্রটি বানানো হয়েছে ডায়ানা মিটফোর্ড থেকে। তারা দুজনই ধনী ছিল। জেসিকার সাথে মিল পাওয়া যায় অ্যান্ড্রোমিডা টঙ্কসের। সেই বোন ইউনিটি মিটফোর্ডের প্রেমিককে সমর্থন করত না। যুবতী বয়সে সে ঘর ছেড়েছিল। অ্যান্ড্রোমিডার স্বামী এডওয়ার্ড টঙ্কসকে ডেথ ইটাররা যেভাবে মেরে ফেলেছিল, তেমনি জেসিকার কম্যুনিস্ট স্বামীকেও অত্যাচারের মাধ্যমে খুন করে নাৎসি বাহিনী।

Language: Bangla

Topic: Mysteries of the Harry Potter series

Referene: Hyperlinked inside the article.

Feature Image: Art Station.

Related Articles