Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

শার্প অবজেক্টস: ছোট এক শহরের বাতাসে জটিল রহস্যের গন্ধ

আজ একটা ছোট শহরের গল্প শোনাতে এসেছি। শহরটি ছোট হলেও কী হবে, এই শহরের বাতাস, মাটি, প্রকৃতি ও বাসিন্দাদের জীবনের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে মিশে ছিল গভীর ও দুর্ভেদ্য রহস্যের বেড়াজাল। বহু বছর ধরে নিজেদের প্রচলিত ধ্যানধারণা ও রীতিনীতি প্রতিপালন করে আসা এই শহরের বাসিন্দাগুলো বাইরের দুনিয়া থেকে ছিল খাপছাড়া। শহরের প্রতিটি পরিবার একে অপরকে চিনলেও, তাদের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ ও যোগাযোগ বজায় থাকলেও, একজন বাসিন্দার কাছে অপর পক্ষের মানুষটা সবসময় অচেনাই থেকে গেছে।

এই শহরের মানুষ নিয়তিকে মেনে অবলীলায় জীবন কাটিয়ে দেয়। এই শহরে অপরাধ ও অসংলগ্ন কর্মকাণ্ড অহরহ হলেও সেগুলো শহরবাসীর জন্য এতটাই গা সওয়া হয়ে উঠেছিল যে যতক্ষণ না নিজের পরিবারের উপর কোনো ধরনের আঁচ আসতো, সবাই রঙ্গমঞ্চের দর্শকদের মতো তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু সব দেখেই যেত। এই শহরের মানুষ সবই বুঝতো, দেখতো, জানতো, কিন্তু জোর গলায় কিছু বলার মতো সৎ সাহস কারো ছিল না। তবে অন্যের পরিবারের ওপর নজরদারি ও অন্য মানুষের জীবন নিয়ে কানাঘুষায় তারা পিছপা হতো না। আর এই অদ্ভুত শহরের নামটি ছিল ‘উইন্ড গ্যাপ’। মিডওয়েস্টার্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের অন্তর্গত এক শহর।

উপরের অনুচ্ছেদটি পড়ার পর পাঠকের মনে নানা রকম কৌতূহল ও প্রশ্ন জন্ম নিচ্ছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাহলে এবার সেসবের জট খুলে সবকিছুকে পানির মতো স্বচ্ছ করে দেওয়ার সময় চলে এসেছে।

সিরিজের তিন প্রধান চরিত্র; Source: Variety

এ বছর যতগুলো মিনি সিরিজ রিলিজ হয়েছে, তার মধ্যে একদমই ভিন্ন ও শৈল্পিক ঘরানার কোনো সিরিজের নাম যদি বলতেই হয়, ‘শার্প অবজেক্টস’ এর নাম আসবে নিঃসন্দেহে। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘গন গার্ল’ এর কথা কি ভোলা যায়? এই সিনেমা দেখার পর খানিকটা সময়ের জন্য হলেও দর্শকদের মগজে অদ্ভুত চিন্তাভাবনা খেলা করেছিল। আর সেই সিনেমার প্লট যে ঔপন্যাসিকের মাথা থেকে এসেছিল, সেই একই ব্যক্তির আরও একটি ক্লাসি উপন্যাস হচ্ছে ‘শার্প অবজেক্টস’। আর সিরিজের প্লট এই উপন্যাস থেকেই সংকলিত। অত্যন্ত বুদ্ধিমতী ও সৃষ্টিশীল মস্তিষ্কের এই লেখিকার নাম গিলিয়ান ফ্লিন। তিনি একজন আমেরিকান লেখিকা, যিনি গন গার্ল, ডার্ক অবজেক্টস ও ডার্ক প্লেসেস এই তিনটি উপন্যাস লিখেই নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

ক্যামিলের হারিয়ে যাওয়া অতীতের সুখস্মৃতি; Source: Black Nerd Problems

লেখার শুরুতে ‘শার্প অবজেক্টস’ সিরিজের সারামর্মই খানিকটা তুলে ধরা হয়েছে। আমেরিকান লেখিকা ও নির্মাতা মার্টি নক্সন ১২ বছর আগে ফ্লিনের প্রথম বই হিসেবে প্রকাশিত ‘শার্প অবজেক্টস’কে বইয়ের পাতা থেকে টিভির পর্দায় রূপান্তরিত করার প্রকল্পে হাত দেন। সিরিজটি পরিচালনায় দায়িত্বভার জিন-মার্ক ভলের উপর অর্পিত হয়। এ বছরের ৮ জুলাই থেকে আমেরিকান টিভি চ্যানেল এইচ.বি.ও.-তে সিরিজটি প্রচারিত হতে শুরু করে। প্রায় দেড় মাসব্যাপী চলার পর এ মাসের ২৬ তারিখ ৮ম পর্ব প্রচারের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি টেনেছে সিরিজটি।

এবার তাহলে সিরিজের প্লট নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা হয়ে যাক। যেমনটা উপরে বলা হয়েছে, সিরিজের প্লট উইন্ড গ্যাপ শহরকে কেন্দ্র করে। সিরিজের মূল চরিত্র ক্যামিল প্রিকারের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে এই শহরে। এখানে তার পরিবার বেশ ধনাঢ্য ও সম্ভ্রান্ত পরিবার হিসেবে বহু বছর ধরে বাস করলেও সে সেন্ট লুইসে সাংবাদিক হিসেবে একটি পত্রিকা অফিসে কর্মরত রয়েছে।

ক্যামিল একজন মাদকাসক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভোগা ত্রিশোর্ধ্ব স্বাবলম্বী ও উচ্চশিক্ষিত নারী। তার অতীতের কোনো এক দুঃসহ স্মৃতি আজও তার পিছু দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে বেড়াচ্ছে। হতাশা, ভারাক্রান্ত মন ও মানসিক অশান্তি তার পাশে ছায়াসঙ্গীর মতো বিচরণ করে। কোনো রকম বেঁচে থাকার তাগিদে ও দিন অতিবাহিত করে যাওয়ার প্রয়োজনে সে সাংবাদিকের চাকরিটা করে দিন কাটাতো। তার অফিসের বস ক্যারি শুধু তার বসই ছিলেন না, স্থানীয় অভিভাবকের দায়িত্বেও ছিলেন। তাই অনেকদিন পর মাদকাসক্তদের নিরাময় কেন্দ্র থেকে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসার পর ক্যারি ক্যামিলকে তার নিজের শহর উইন্ড গ্যাপে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। তবে ঘুরে বেড়াতে অথবা পরিবারের সাথে সময় কাটাতে নয়, বরং সেই শহরে সদ্য ঘটে যাওয়া দুটি রহস্যজনক খুনের ঘটনাকে পত্রিকার পাতার জন্য তার লেখনী দ্বারা তুলে ধরার উদ্দেশ্যে পাঠান।

ক্যারির উদ্দেশ্য ছিল ক্যামিলকে নিজের ফেলে আসা স্মৃতিগুলোর সাথে আরও একবার মুখোমুখি করিয়ে দিয়ে অতীতের সকল জখমকে সারিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া। কিন্তু ক্যামিল শহরে পা রাখা মাত্রই তার ভেতরের জখম থেকে তীব্র ব্যথাসহ রক্তক্ষরণ হতে শুরু করলো। এখন কথা হচ্ছে, উইন্ড গ্যাপ শহরকে জুড়ে ক্যামিলের এত আতংক ও ঘৃণা কেন? আর নিজের আপনজন থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে কেন সে? আর সেই দুটো খুনের ঘটনার পেছনে লুকিয়ে থাকা সত্য তো আছেই। শুধুই কি এই দুটো খুন? নাকি উইন্ড গ্যাপের ইতিহাস আরও কোনো খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী? সেই গল্প না হয় পরে হবে।

এ কেমন মা-মেয়ের সম্পর্ক?; Source: The Lily

এবার সিরিজটির মূল চরিত্রগুলোকে নিয়ে একটু বিশ্লেষণ হয়ে যাক। সিরিজের গল্পটি মূলত নারীকেন্দ্রিক। ক্যামিল, তার মা ও ছোট বোন এমাকে ঘিরেই সিরিজের ঘটনা প্রবাহিত হয়েছে। এমনকি শহরে যে রহস্যময় খুনের ঘটনা ঘটেছিল তাতেও শিকার হিসেবে ছিল দুজন কিশোরী। ক্যামিলের অতীতের বেদনাদায়ক স্মৃতিতেও জড়িয়ে আছে একটি ছোট মেয়ে, তার ছোট বোন ম্যারিওন।

ক্যামিল চরিত্রে অভিনয় করেছেন হলিউডের এই সময়ের উল্লেখযোগ্য অভিনেত্রী অ্যামি অ্যাডামস। লিপ ইয়ার, আমেরিকান হাসল, নকটারনাল এনিম্যালস মুভিগুলো যারা দেখেছেন, তাদের জন্য অ্যামিকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। বাস্তব জীবনে চল্লিশোর্ধ্ব এই অভিনেত্রী দেখতে যেমন সুশ্রী ও আবেদনময়ী, অভিনয়ের দিক থেকে ঠিক তেমনি দক্ষ ও প্রাঞ্জল। আর এই সিরিজের ক্ষেত্রে তো যেন তার বিকল্প খুঁজে পাওয়াটাই দুষ্কর ছিল।

ক্যামিল চরিত্রটি ছিল একজন অতীতের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে যাওয়া বর্তমানে বসবাস করা নারীর। যে নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে পুরোপুরিভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল শুধুমাত্র তার কিশোর বয়সের একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ও প্রাণাধিক প্রিয় বোন ম্যারিওনকে অকালে হারানোর শোকে। এছাড়া ছোটকাল থেকে নিজের আপন মায়ের কাছ থেকে নিষ্ঠুর আচরণ পেয়ে তার মন পরিবারের উপর বিষিয়ে উঠেছিল।

ক্যামিল ছিল একাকিত্ব, বিষণ্ণতা ও সাহসিকতার প্রতীক। অন্যদিকে, অ্যাডোরা অর্থাৎ ক্যামিলের মায়ের চরিত্র নিয়ে বলতে হলে প্রথমেই বলতে হয়, পুরো সিরিজ জুড়ে তার হাবভাব ও মনস্তাত্ত্বিক দিকটা যেন অস্পষ্ট ছিল। তবে শেষের দুই পর্বে সব একে একে পরিষ্কার হয়ে উঠতে শুরু করে। প্রথম ছয়টি পর্বে অ্যাডোরাকে একজন অভিলাষী ও অহংকারী নারী হিসেবেই দেখা যাবে। এই চরিত্রটি কখনো উদার, কখনো কঠোর, কখনো সুখী ও কখনো দুঃখী রূপে দেখা যাবে। ম্যারিওনকে হারানোর ব্যথায় তার মাতৃত্বের একটি সত্ত্বা মরে গেলেও, এমার জন্য তার আরেকটি সত্ত্বা সর্বদা জাগ্রত ছিল। কিন্তু মাঝখান দিয়ে ক্যামিল ও তার মধ্যকার মা-মেয়ের সম্পর্ক ছিল জটিল ও লোক দেখানো। অ্যাডোরা চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্যাট্রিসিয়া ক্লার্কসন।

ক্যামিলের সৎ বোন এমা চরিত্রে অভিনয় করেছে এলিজা স্ক্যানলেন। এমা চরিত্রটি আট-দশটা উঠতি বয়সী মেয়ের মতোই অনেকটা। অত্যন্ত আদরে বড় হওয়া ও দারুণ মায়াবী চেহারার এমা শুধু পরিবারেই নয়, পুরো শহরেরই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এটুকু বয়সেই এমা দুটো সত্ত্বা নিয়ে বেঁচে থাকতে শিখে গিয়েছিল। একটি তার মায়ের বাধ্য, সুশীল ও শান্ত মেয়ে, যে কি না মায়ের ছায়ার বেড়ে উঠছিল। আর অন্যটি ছিল উড়নচণ্ডী, চঞ্চল ও অবাধ্য এক সত্ত্বা, যা কি না কোনো নিয়মনীতিতে নিজেকে বন্দি করে রাখার পক্ষপাতী ছিল না।

এই তিনটি চরিত্র ছাড়াও এমার বাবা অ্যালেন, উইন্ড গ্যাপের পুলিশ চিফ ম্যাট, ক্যানসাস সিটি থেকে হত্যা রহস্যের সমাধান করতে আগত ডিটেকটিভ রিচার্ড, সিরিজের গল্পে বিশেষ ভূমিকা রাখা জন কিন চরিত্রগুলোও বেশ উল্লেখযোগ্য।

ক্যামিল-এমা-ম্যারিওন, তারা তিন বোন; Source: Decider

‘শার্প অবজেক্টস’ সিরিজটির নাম এর গল্পের সাথে কতটা যুক্তিসংগত ও এই নাম রাখার পেছনের কারণটা না হয় দর্শকদের নিজ দায়িত্বে বুঝে নেওয়ার জন্য ছেড়ে দেওয়া যায়। তবে সিরিজটি কেন দেখা উচিত ও সিরিজটির কোন কোন দিকগুলো একজন সিরিজপ্রেমীর মনের ক্ষুধা মেটাতে পারে সেসব ব্যাপারে অল্প-স্বল্প তো গল্প করাই যায়।

প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো, ‘শার্প অবজেক্টস’ সিরিজটিকে আপনি গতানুগতিক ধারার সিরিজের সাথে তুলনা করলে ভুল করবেন। ইদানীং বেশ সাড়া জাগানো ক্রাইম-মিস্ট্রি জনরার সিরিজের কথা তুললে ‘দ্য সিনার’, ‘ক্যাসল রক’ অথবা ‘ওজার্ক’ এই তিনটি সিরিজের নাম আসবেই। এই তিনটি সিরিজের কাহিনী সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও তিনটিতেই রয়েছে রহস্যের ঘনঘটা ও অপরাধের উপস্থিতি। এছাড়া প্রথম দুটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের ক্যাটাগরিতেও পড়ে। এই দুটির সকল বৈশিষ্ট্য ‘শার্প অবজেক্টস’ সিরিজে থাকা সত্ত্বেও সিরিজটি একদম আলাদা গোছের বলে গণ্য করতেই হবে।

কেন? কারণ এই সিরিজটিতে ক্রাইম জনরা থেকেও সাইকোলজিক্যাল থ্রিলের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি চরিত্র একটু একটু করে দর্শকদের সামনে নিজেদেরকে ফুটিয়ে তোলার মধ্য দিয়ে সিরিজের কাহিনী সামনের দিকে এগিয়েছে। যারা কিছুটা ধীরগতিসম্পন্ন সিরিজ অথবা সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই সিরিজটা হতে পারে অপূর্ব এক সৃষ্টিকর্ম। তবে সিরিজটির প্রতিটি দৃশ্যপট এতটা প্রাসঙ্গিক ও ঘটনাপ্রবাহের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে না দেখলে অনেক তথ্যই মিস করে যেতে পারেন। এছাড়া সিরিজের অন্যতম এক বিশেষ দিক হচ্ছে এর সাউন্ডট্র্যাকগুলো। সিরিজের টাইটেল ট্র্যাক হিসেবে ১৯৫১ সালে ‘অ্যা প্লেস ইন দ্য সান’ মুভিতে ব্যবহৃত ফ্রেঞ্জ ওয়াক্সম্যানের ‘ড্যান্স অ্যান্ড অ্যাঞ্জেলা’ গানটির নতুন এক ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ‘লেড জ্যাপালিন’ নামের রক ব্যান্ডের গাওয়া চারটি মোহনীয় গান সিরিজকে আরও চমকপ্রদ করে তুলেছিল।

ক্যামিল-রিচার্ড, মায়া নাকি কৌতূহল?; Source: NPR

এবার সিরিজের আটটি পর্বের এক ঝলক দেখে আসা যাক।

প্রথম পর্ব- ‘ভ্যানিশ’: এই পর্বে উইন্ড গ্যাপে ক্যামিলের আগমন ঘটে। এই পর্বে মূলত ক্যামিলের চরিত্রের সাথে ও উইন্ড গ্যাপের সাথে দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর উইন্ড গ্যাপ থেকে হুট করে হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়া বালিকা দুটোর কথা তুলে ধরা হয়েছে।

দ্বিতীয় পর্ব- ‘ডার্ট’: এই পর্বের অন্যতম আকর্ষণ ‘উইমেন ইন হোয়াইট’। কে সে? ন্যাটালি ও অ্যানের হত্যার সাথে তার কী সম্পর্ক? ডিটেকটিভ রিচার্ডের সাথে ক্যামিলও জড়িয়ে যায় খুনের তদন্তের মারপ্যাঁচে।

তৃতীয় পর্ব- ‘ফিক্স’: এই পর্বে ফ্ল্যাশব্যাকের মাধ্যমে ক্যামিল নিরাময় কেন্দ্রে থাকার দিনগুলোর কথা ভাবতে থাকে। সেখানেও ম্যারিওনের মতো আরও একবার কাউকে অকালে হারিয়েছিল সে। এছাড়া উইন্ড গ্যামের আরও রহস্যের খোলাসা তো আছেই।

চতুর্থ পর্ব- ‘রাইপ’: এবার ফ্ল্যাশব্যাকের মাধ্যমে ক্যামিল কিশোর বয়সে ফিরে যায়। সেই সময়ে তাদের শহরের কিনারে অবস্থিত বনে একজন চিয়ারলিডারকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। কে ছিল সেই চিয়ারলিডার?

তাদের জীবনের গল্প ভিন্ন হলেও, কোথায় যেন অন্তর্মিল ছিল! Source: Collider

পঞ্চম পর্ব- ‘ক্লোজার’: এই পর্বে মা ও বোন এমার সামনে ক্যামিলের এক গোপন ও নির্মম সত্য ধরা পড়ে। এছাড়া ক্যামিলও নিজের মায়ের কাছ থেকে একটি নির্মম সত্য জানতে পারে যা যেকোনো সন্তানের জন্য দুর্বিষহই বলা যায়।

ষষ্ঠ পর্ব- ‘চেরি’: এই পর্বে ক্যামিল ও এমা একে অপরের সাথে গভীরভাবে মিশতে শুরু করে। এই প্রথমবারের মতো ক্যামিল এমার মধ্যে ম্যারিওনকে খুঁজে পেতে শুরু করে।

সপ্তম পর্ব- ‘ফলিং’: অনেকগুলো সত্যের উপর থেকে পর্দা সরতে শুরু করে এ পর্বে। সিরিজের মোড় পুরো ঘুরে দাঁড়ায় এ পর্বেই।

অষ্টম পর্ব- ‘মিল্ক’: “দুধ কলা দিয়ে কি তাহলে ক্যামিল সাপ পোষার চেষ্টা করছে?”

আর হ্যাঁ, প্রতিটি পর্বের নামকরণের পেছনের গল্পটাও কিন্তু অনেক তাৎপর্যপূর্ণ।

‘শার্প অবজেক্টস’ সিরিজটি এক বসায় টানা দেখে ফেলার মতো সিরিজ নাকি ঠিক বলা যাচ্ছে না। তবে একবার শুরু করলে যে ইতি টানা দায় সেটা নিঃসংকোচে বলা যায়। প্রতিটি পর্বের ব্যাপ্তিকাল প্রায় ৫৫-৬০ মিনিট করে। তাই বলা যায় মাত্র আট ঘন্টা সময় বের করতে পারলেই অসাধারণ এই সিরিজটি সহজেই উপভোগ করে নিতে পারবেন। সমালোচক ও দর্শকশ্রেণী উভয়ের কাছে নন্দিত এই সিরিজটি রটেন টমেটোসে ১০৩টি রিভিউয়ের ভিত্তিতে ৯৩% ও মেটাক্রিটিকে ৪০টি রিভিউয়ের ভিত্তিতে ৭৭% রেটিং লাভ করেছে।

ফিচার ইমেজ- tunefind.com

Related Articles