নেটফ্লিক্সের দ্য স্পাই: কতটুকু বাস্তব? কতটুকু প্রপাগান্ডা?

এলি কোহেন ছিলেন ইসরায়েলের শ্রেষ্ঠ গুপ্তচরদের মধ্যে একজন। সিরিয়ান ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে সিরিয়ার উচ্চপদস্থ সামরিক কর্তাদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করা এ স্পাইকে ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিজয়ের অন্যতম কারিগর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

গত ৬ সেপ্টেম্বর স্ট্রিমিং সার্ভিস নেটফ্লিক্স এলি কোহেনের উপর The Spy (2019) নামে ছয় পর্বের একটি লিমিটেড সিরিজ মুক্তি দিয়েছে। ‘সত্য ঘটনা অবলম্বনে’ নির্মিত এই সিরিজটি অসাধারণ না হলেও মোটামুটি ভালোই প্রশংসা অর্জন করেছে, যদিও অধিকাংশ রিভিউতেই প্রশংসার মূল দাবিদার ছিলেন এলি কোহেন চরিত্রে অভিনয় করা ব্রিটিশ ইহুদী অভিনেতা সাশা ব্যারন কোহেন। কিন্তু অতি-নাটকীয় কিছু দৃশ্যের জন্য এবং একপেশে প্রচারণার জন্য একইসাথে সিরিজটি সমালোচনারও জন্ম দিয়েছে। চলুন জেনে নিই এলি কোহেনের জীবনী অবলম্বে এই সিরিজটির মূল কাহিনীটি কী, এবং সিরিজটি সেটিকে কীভাবে দেখিয়েছে।

দ্য স্পাইয়ের পোস্টার; Image Source: Netflix

এলি কোহেন ছিলেন ১৯২৪ সালে আলেক্সান্দ্রিয়ায় জন্মগ্রহণ করা একজন মিসরীয় ইহুদী। তবে তার বাবা মিসরে গিয়েছিলেন সিরিয়ার আলেপ্পো থেকে, সেই অর্থে তাকে সিরিয়ান বংশোদ্ভূত ইহুদীও বলা যায়। ছাত্রকালেই কোহেন ইহুদী গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে বেশ কিছু অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মিসর থেকে ১০,০০০ ইহুদীকে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিচালিত অপারেশন গোশেন এবং মিসরের সাথে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য পশ্চিমা স্থাপনাগুলোতে বোমা হামলা চালিয়ে মিসরীয়দের উপর দোষ চাপানোর উদ্দেশ্যে পরিচালিত অপারেশন সুজানা

এ সময় জায়নিস্ট কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে কোহেন একবার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে তাকে মিসর থেকে বহিষ্কার করা হলে তিনি ইসরায়েলে গিয়ে উঠেন এবং সেখানকার মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে একজন অ্যানালিস্ট হিসেবে যোগদান করেন। শুরুর দিকে তিনি নিজে থেকেই দু’বার মোসাদে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু তার মিসরে গ্রেপ্তার হওয়ার রেকর্ডের কারণে মোসাদ তাকে গ্রহণ করেনি।

সিরিয়াতে এলি কোহেন; Image Source: Getty Images

সিরিয়ার সাথে ইসরায়েলের সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে থাকায় ইসরায়েল সিরিয়ার অভ্যন্তরে এমন একজন স্পাই স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে, যে রাষ্ট্রীয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হবে এবং সিরিয়ার গোপন সংবাদ বা পরিকল্পনার কথা ইসরায়েলকে যথাসময়ে জানিয়ে দিতে পারবে। এ উদ্দেশ্যে ১৯৬০ সালে মোসাদ এলি কোহেনকে নিয়োগ করে। আরব ইহুদী হওয়ায় কোহেনের আরবি ভাষার উপর বেশ ভালো দক্ষতা ছিল। সেটাকে কাজে লাগিয়ে এবং ছয়মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে মোসাদ তাকে ধনী এক সিরিয়ান ব্যবসায়ীর পরিচয় প্রদান করে।

কোহেনের নতুন নাম হয় কামেল আমিন সাবেত। তার কভার সাজানো হয় এরকম যে, তিনি মূলত সিরিয়ান বংশোদ্ভূত লেবানীজ একজন ব্যবসায়ী, যিনি দীর্ঘদিন আর্জেন্টিনায় ব্যবসা করে এখন আবার সিরিয়াতে ফিরে যেতে চাইছেন যেন অস্থির রাজনীতির এই সময়ে দেশের জন্য কিছু করতে পারেন। কভার স্টোরি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য মোসাদ ১৯৬১ সালে তাকে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে প্রেরণ করে। সেখানে গিয়ে তিনি সমাজের উচ্চপদস্থ সিরিয়ানদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এবং এরপর ১৯৬২ সালে সিরিয়াতে ফিরে গিয়ে তাদের রেফারেন্স ব্যবহার করে সেখানকার ক্ষমতাসীনদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

সিরিজের একটি দৃশ্যে সিরিয়াতে এলি কোহেন; Image Source: Netflix

ধনী ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি প্রায়ই তার বাড়িতে বিশাল বিশাল পার্টির আয়োজন করতেন। সেখানে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ দেশের মন্ত্রীরাও উপস্থিত হতো। কোহেন তাদেরকে সুন্দরী নারী সরবরাহ করে এবং মদ খাইয়ে অর্ধচেতন করে তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য জেনে নিতেন। এছাড়াও তিনি ক্ষমতাসীনদেরকে বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে তাদেরকে ঋণের জালে আবদ্ধ করে তাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতেন এবং তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য জেনে নিতেন।

কোহেনের সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল, তিনি তার জেনারেল বন্ধুদের সাথে একবার গোলান মালভূমি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে ধূ-ধূ মরুভূমির তীব্র গরমে দাঁড়িয়ে থাকা সিরিয়ান সৈন্যদেরকে তিনি ‘বুদ্ধি’ দিয়েছিলেন, তাদের উচিত কিছু গাছ লাগিয়ে গাছের ছায়ায় বসে বসে বর্ডার পাহারা দেওয়া। সিরিয়ানরা তার পরামর্শ অনুযায়ী এবং তার সাহায্য নিয়ে সত্যি সত্যিই বর্ডার জুড়ে সারি সারি ইউক্যালিপ্টাস গাছ লাগিয়েছিল। সেই গাছগুলোই ছিল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধ সিরিয়ার পরাজয়ের অন্যতম কারণ। ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সরাসরি সেই গাছগুলো লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়ে সহজেই সিরিয়ান বাহিনীকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিল।

গোলান মালভূমিতে দুই সিরিয়ানের সাথে এলি কোহেন (মাঝে); Image Source: Netflix

এলি কোহেন ছিলেন অত্যন্ত দুঃসাহসী। তিনি অতিরিক্ত ঝুঁকি নিতে পছন্দ করতেন। এবং তার আত্মবিশ্বাসও ছিল প্রচণ্ড। এই আত্মবিশ্বাসের কারণেই তিনি শেষপর্যন্ত ধরা পড়েন। তিনি প্রায় প্রতিদিন মোর্স কোডের মাধ্যমে মোসাদের হেডকোয়ার্টারের সাথে যোগাযোগ করতেন। তার বাসাটি সিরিয়ান সেনা অধিদপ্তরের কাছেই অবস্থিত হওয়ায় তারা বুঝতে পারে, আশেপাশে কোথাও থেকে কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে সিগন্যাল পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার হয়ে যাওয়ার কারণেও তারা বুঝতে পারছিল, তাদের মধ্যে একজন স্পাই আছে।

সিরিয়ার সাথে সেসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো সম্পর্ক ছিল। ফলে সিরিয়ান সেনাবাহিনী সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউর উন্নততর প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সিগনাল ট্রেস করে এবং কোহেনকে হাতে নাতে গ্রেপ্তার করে। বিচার শেষে কোহেনের মৃত্যুদণ্ড হয়। ইসরায়েল কোহেনের ফাঁসি বাতিলের জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছিল। তারা পোপকে দিয়ে অনুরোধ করিয়েছিল, ফ্রান্সকে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করিয়েছিল। কিন্তু সিরিয়া সকল চাপকে অগ্রাহ্য করে কোহেনের ফাঁসি কার্যকর করে। ১৯৬৫ সালের ১৮ মে দামেস্কের মারজাহ স্কয়ারে জনসমক্ষে এলি কোহেনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। তার মৃতদেহ ছয় ঘন্টা পর্যন্ত প্রদর্শনীর জন্য রেখে দেওয়া হয়। বিশ্বের প্রভাবশালী গোয়েন্দাসংস্থা মোসাদের জন্য এটা ছিল চূড়ান্ত অপমান।

এলি কোহেনের ঝুলন্ত লাশ; Image Source: syrianhistory.com

নেটফ্লিক্সের দ্য স্পাই সিরিজের কাহিনী শুরু হয়েছে কোহেনের মোসাদে যোগ দেয়ার কিছুদিন আগে থেকে। সিরিজটি মূল কাহিনীটিকে মোটামুটি সঠিকভাবেই তুলে এনেছে। কিছু কিছু স্থানে এটি বেশ সাসপেন্সও তৈরি করতে পেরেছে। কিন্তু অতি নাটকীয়তা এবং ইসরায়েলিদের অতিরিক্ত দেশপ্রেম, সততা, ন্যায়ের পথে অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করায় অনেকক্ষেত্রেই এটি ক্লিশে হয়ে উঠেছে।

সিরিজে সিরিয়ান সেনাকর্মকর্তা এবং পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট হওয়া আমিন আল-হাফেজের সাথে এলি কোহেনের গভীর সম্পর্ক এবং কোহেনকে তার ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার বানানোর পরিকল্পনার কথা দেখানো হয়, যদিও এই দাবিগুলো পুরোপুরি প্রমাণিত না। আমিন আল-হাফেজ নিজে সাক্ষাৎকারে তার সাথে এলি কোহেনের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, আর্জেন্টিনায় তাদের পরিচয়ের যে দাবি ইসরায়েলিরা করে থাকে, সেটি সম্ভবই ছিল না। কারণ ঐ সময়ে তিনি আর্জেন্টিনায় ছিলেন না, ছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নে। তবে তিনি এটা স্বীকার করেন, এলি কোহেন সিরিয়াতে ক্ষমতাসীন অনেকের সাথেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছিল।

আমিন আল-হাফেজের দাবিকে যদিও পুরোপুরি বিশ্বাস করা যায় না, কিন্তু সিরিজে যেরকম তার অভ্যুত্থানের পেছনেও এলি কোহেনের অবদান দেখানো হয়েছে, সেটা নিশ্চিতভাবেই অতিরঞ্জিত। কেবলমাত্র ইসরায়েলি দাবি ছাড়া কোহেনের সাথে আমিনের এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দাবির পক্ষে অন্য কোনো ছবি, নথিপত্র বা অন্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। অনেকে অভিযোগ করেন, ইসরায়েল নিজেদের গোয়েন্দাদের চমৎকারিত্ব দাবি করার জন্যই এ ধরনের তথ্য প্রচার করে থাকে।

আদালতে এলি কোহেন (বামে); Image Source: Getty Images

সিরিজে নদীর পানির দিক পরিবর্তন করার কাজে সৌদি বিন লাদেন কনস্ট্রাকশন কোম্পানির সম্পৃক্ততা দেখানো হয়। এটা সত্য, ওসামা বিন লাদেনের বাবা মোহাম্মদ বিন লাদেনের প্রতিষ্ঠিত কনস্ট্রাকশন কোম্পানিটি সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। কাবা ঘর এবং আল-আকসা মসজিদ সংস্কারের কাজসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক বড় বড় নির্মাণকাজের সাথেই এই কোম্পানি জড়িত ছিল। আমিন আল-হাফেজের নদীর পানির দিক পরিবর্তন করার কাজেও বিন লাদেন কোম্পানী জড়িত ছিল। কিন্তু সিরিজে যেভাবে মোহাম্মদ বিন লাদেন এবং কিশোর ওসামা বিন লাদেনের সাথে এলি কোহেনের সাক্ষাৎ দেখানো হয়েছে, সেটা এই সিরিজের অতি নাটকীয়তার চরম একটি উদাহরণ

সিরিজটি আমেরিকান এবং ইউরোপিয়ানদের কাছে প্রশংসিত হলেও এটি দেখার সময় আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এখানে ঐতিহাসিক কোনো প্রেক্ষাপট না দেখিয়ে ইসরায়েলকে নায়ক এবং সিরিয়াকে খলনায়ক হিসেবে দেখানো হয়েছে। ইসরায়েলি সৈন্যদেরকে এবং মোসাদের স্পাইদেরকে এখানে মানুষের “জীবন বাঁচানোর” মহান কাজে নিযুক্ত দেখানো হয়েছে, যদিও সংকীর্ণ জায়নিজমের বাইরে নিরপেক্ষ দৃষ্টি থেকে দেখলে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ বিপরীত। যে নদীর পানির অধিকারকে সিরিজে ইসরায়েলের অধিকার হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, সেটিও মূলত ইসরায়েল কর্তৃক অবৈধভাবে দখলকৃত সিরিয়ার সম্পত্তি।

এক আরব কলামিস্টের টুইট; Image Source: Twitter

সিরিজে মোসাদের চরিত্রগুলোর মানবিকতা, সততাকেও মূলত ইসরায়েলি প্রপাগান্ডা হিসেবে দেখা যেতে পারে। এখানে এলি কোহেনকে অত্যন্ত সৎ চরিত্রের একজন এজেন্ট হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, যে তার স্ত্রীর সাথে পবিত্র সম্পর্কের কথা চিন্তা করে সিরিয়ান এক যুবতীর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত। ধনী ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশের জন্যই হোক, কিংবা অন্য কোনো কারণেই হোক, সিরিয়ায় অবস্থানকালে এলি কোহেনের অন্তত ১৭জন সুন্দরী প্রেমিকা ছিল।

দ্য স্পাই সিরিজে শুধু এলি কোহেনের বীরত্ব এবং সফলতা এবং বিপরীতে সিরিয়ানদের ব্যর্থতাই প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু সিরিয়ানদের হাতে ধরা পড়ার পর সিরিয়ানরা যে তার বাসা থেকে প্রায় ২০০ গোপন ম্যাসেজ উদ্ধার করেছিল এবং তাকে নির্যাতন করে তার মুখ থেকে সেই কোড করা মেসেজগুলোর মর্ম উদ্ধার করার পদ্ধতি জেনে নিয়েছিল, সেটিও সিরিজে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। খোদ ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজও দ্য স্পাই সিরিজটির কাহিনীকে আরবদের বিরুদ্ধে “একপেশে গল্প” বলে অভিযুক্ত করেছে। 

সিরিজের শুরুতে দেখানো ইসরায়েলের মানচিত্র; Image Source: Netflix

সিরিজের ইসরায়েলপন্থী প্রপাগান্ডার সবচেয়ে কদর্য উদাহরণটি হলো ওপেনিং ক্রেডিটের সময় দেখানো ইসরায়েলের মানচিত্রটি। সিরিজের কাহিনী ১৯৬০ থেকে ১৯৬৫ সালের সময়কার। ওপেনিং ক্রেডিটে যতগুলো ছবি এবং ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়, সেগুলোও সব এই সময়ের। কিন্তু সেখানে ইসরায়েলের যে মানচিত্রটি দেখানো হয়, সেটি পরিষ্কারভাবেই ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পরের অবৈধভাবে দখলকৃত অংশসহ বৃহত্তর ইসরায়েলের। ১৯৬৭ সালের আগের কাহিনীতেও এই মানচিত্র দেখিয়ে কি তারা এটাই প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে যে, এটাই সব সময়ের ইসরায়েলের মানচিত্র?

হলিউডের চলচ্চিত্রগুলোতে সিআইএ এজেন্টদের সাফল্য, দেশপ্রেম এবং মার্কিন সেনাদের বীরত্ব, মহত্ত ও উদারতা দেখে দর্শক অভ্যস্ত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নেটফ্লিক্স একের পর এক অনেকগুলো ইসরায়েলি সিনেমা এবং ওয়েব-সিরিজ নির্মাণের মধ্য দিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং মোসাদকেও এই “সৎ, মহান, বীর”দের তালিকায় যুক্ত করেছে। বিনোদনের জন্য এই সিনেমা এবং সিরিজগুলো দেখে আমরা আনন্দিত হতেই পারি, কিন্তু একইসাথে প্রকৃত ইতিহাস এবং গণমাধ্যমের অপপ্রচার সম্পর্কেও আমাদের ধারণা রাখা উচিত।

This article is about the true story behind the Netflix Limited Series, The Spy (2019) All the references are hyperlinked inside the text.

Featured Image: Netflix

Related Articles