Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আপগ্রেড: অর্ধমানব নাকি দানবের গল্প?

হলিউড সাম্রাজ্যে সাই-ফাই ঘরানার (কল্পবিজ্ঞান) সিনেমার ভাণ্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ। ১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত স্ট্যানলি কুব্রিকের ‘২০০১: এ স্পেস অডিসি’ থেকে শুরু করে ২০০৯ সালের জেমস ক্যামেরনের মুভি ‘অ্যাভাটার’ অথবা ক্রিস্টোফার নোলানের নির্মিত ২০১০ সালের ‘ইন্সেপশন’, এসবের প্রত্যেকটাই একেকটি সাই-ফাই মাস্টারপিস। প্রতি বছরই অন্যান্য জনরার পাশাপাশি সাই-ফাই জনরা সিনেমাপ্রেমীদের জন্য নিত্যনতুন সব অভিনব প্লটের সিনেমা নিয়ে হাজির হয়।

আর শুধুই কি সিনেমা? এ যুগে টিভি অথবা ওয়েব সিরিজের ক্ষেত্রেও সাই-ফাই জনরার জনপ্রিয়তা একদম তুঙ্গে। ২০১৬ সালে প্রথম মৌসুম নিয়ে টিভি পর্দার সামনে আসা ‘ওয়েস্টওয়ার্ল্ড’ সিরিজটির কথাই চিন্তা করুন। ২০১৮ সালে এসেও দর্শকদের মন মাতিয়ে যাচ্ছে সায়েন্স ফিকশনের মন্ত্রমুগ্ধকর ছোঁয়ায়। আর দর্শকমহলও নতুনত্বের স্বাদ পাবার আশায় সায়েন্স ফিকশনভিত্তিক মুভিকে গোগ্রাসে গিলে থাকে।

আর সায়েন্স ফিকশনের জনপ্রিয়তার এই ধারাবাহিতা অব্যাহত রাখতে অন্যান্য সকল বছরের মতো এ বছরেও হলিউডে বেশ কিছু এই ঘরানার সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তবে এ বছরটাই যেহেতু সুপারহিরো মুভির রাজত্বের বছর, তাই হয়তো এই সাই-ফাই মুভিগুলোর নাম খানিকটা আড়ালেই রয়ে গেছে। তবুও উন্নত ধারার সৃষ্টিকর্ম কী আর চাপা পড়ে থাকে! আর এ কথারই সত্যতা প্রমাণ করে দেখিয়েছে এ বছরের অন্যতম আলোচিত সাই- ফাই, অ্যাকশন ঘরানার সিনেমা, ‘আপগ্রেড’।

আপগ্রেড সিনেমার পোস্টার; Image Source: teaser-trailer.com

সাই- ফাই ও অ্যাকশন ঘরানা ছাড়াও ‘বডি হরর’ নামক বিশেষ এক ঘরানার অন্তর্গত এই সিনেমাটি। সাধারণত অতিপ্রাকৃত শক্তি অথবা বিশেষ ধরনের কোনো ক্ষমতা সাধারণ কোনো মানুষের ভেতর যে দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তন এনে দেয় আর তার ফলে সে যে ভয়াবহ ও ধ্বংসাত্মক লীলাখেলায় মেতে ওঠে, এমন গল্পের উপর বানানো সিনেমা এই ‘বডি হরর’ জনরার অন্তর্ভুক্ত। আর এই তিন ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার সংমিশ্রণে তৈরি সিনেমা ‘আপগ্রেড’ নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই সিনেমার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন লি ওয়ানেল। হলিউডের বিখ্যাত হরর সিরিজ ‘স্য’ এর নাম তো শুনেছেন নিশ্চয়ই। এই মুভি সিরিজের স্রষ্টাদের একজন হলেন ওয়ালেন। সিরিজের প্রথম মুভি ‘স্য’ ছাড়াও ‘ডেড সাইলেন্স’, ‘ইনসিডিয়াস’, ‘ইনসিডিয়াস: চ্যাপ্টার টু’ এর মতো নামকরা হরর ফিল্মগুলোর চিত্রনাট্য লিখেছিলেন তিনি। এছাড়া ২০১৫ সালে ‘ইনসিডিয়াস: চ্যাপ্টার থ্রি’ পরিচালনার মধ্য দিয়ে পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার।

‘আপগ্রেড’ ছিল তার পরিচালিত দ্বিতীয় সিনেমা। এই সিনেমার গল্পকারও তিনি। এই সিনেমার নির্মাণের পেছনে যে সকল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা রয়েছে তার মধ্যে ‘ব্লুমহাউজ প্রোডাকশন’ উল্লেখযোগ্য। এই প্রোডাকশন থেকে এ বছরে অস্কারে মনোনয়নপ্রাপ্ত মুভি ‘গেট আউট’ ছাড়াও ‘স্প্লিট’, ‘সিনিস্টার’, ‘ইনসিডিয়াস’ এর মতো সিনেমাগুলো বের হয়েছে। তাই ‘আপগ্রেড’ সিনেমাটি নির্মাণের ঘোষণা দেওয়ার পরেই মোটামুটিভাবে ধরেই নেওয়া হয়েছিল যে, দারুণ কিছু একটা অপেক্ষা করছে সামনে।

লি ওয়ানেল, আপগ্রেড সিনেমার জনক; Source: Forbes

‘আপগ্রেড’ সিনেমাটির কাহিনী গড়ে উঠেছে এমন এক দুনিয়াকে ঘিরে, যেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনেক উচ্চ শিখরে পৌঁছে গেছে। যে পৃথিবীতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পদে পদে প্রযুক্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর এমন এক পৃথিবীর অন্যান্য কোটি কোটি বাসিন্দার মতো গ্রে-আশা দম্পতিও প্রযুক্তির এই স্বর্ণযুগে সুখে-শান্তিতে বসবাস করছিল।

গ্রে পেশায় ছিল একজন মেকানিক। সে নিজের বাড়ির গ্যারাজেই গাড়ি মেরামত ও পুরনো গাড়িকে নতুন রূপ দেওয়ার কাজ সেরে থাকতো। আর তার স্ত্রী আশা কোবাল্ট নামের প্রযুক্তিনির্ভর নামকরা এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো। মূলত, মানবজীবনকে কম্পিউটার নির্ভর করে তোলার নিমিত্তে নিত্যনতুন উপায় খুঁজে যাওয়াটাই ছিল তার কাজ।

আপাতদৃষ্টিতে, সাদাসিধে চালচলন ও সহজ-সরল ব্যক্তিত্বের গ্রে আর তার বুদ্ধিমতী ও আধুনিক মনমানসিকতাসম্পন্ন স্ত্রী আশা তাদের এই ছোট দুনিয়ার বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই দিন কাটাচ্ছিলো। কিন্তু এক রাতে গ্রে ও আশার জীবনের মোড় অন্যদিকে ঘুরে যায়। প্রতিদিনের মতোই সেদিন আশা অফিস থেকে ক্লান্ত হয়ে ফিরে এসে আবার কাজে বুঁদ হয়ে গেলে, গ্রের কাছে ব্যাপারটা ভালো লাগে না। তাই সে স্ত্রীর মনোযোগ ও সময় পাবার বাসনায় একটা জেদ ধরে বসে। জেদটা হলো, গ্রের সাথে আশাকে একটা ক্লায়েটের মেরামত করা গাড়ি ফিরিয়ে দিতে তার বাসায় যেতে হবে। আশা প্রথমে রাজি না হলেও স্বামীর মিষ্টি জেদের কাছে হেরে যায়। আর হয়তো, সেটাই ছিল আশার জীবনের সবথেকে বড় ভুল। 

গ্রে-আশা, সুখী দম্পতি; Source: descargarvideosdefb.com

কারণ কাজটা সেরে ক্লায়েটের বাসা থেকে নিজেদের বাসায় ফেরার পথে আকস্মিক দুর্ঘটনার শিকার হয় গ্রে ও আশা। আশার স্বচালিত গাড়ি হঠাৎ করে ব্রেক ফেল করে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হওয়াতে সবকিছু চোখের পলকে বদলে যায়। তবে ভাগ্যের জোরে আশা ও গ্রে দুর্ঘটনায় তেমন বড়সড় কোনো আঘাত পায় না। কিন্তু ওদের ভাগ্যে যে এর থেকে বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছিল, সেটা আর কে জানতো! তাই তো, দুর্ঘটনা পরপর তাদের উদ্ধার করার মতো লোকজনের আগমনের পরিবর্তে সেই সময় তাদের দিকে ধেয়ে আসে একদল দুর্বৃত্ত। তারা রাতের নির্জন রাস্তায় গ্রে ও আশাকে একা পেয়ে তাদের উপর হামলা করে বসে। তাদের উদ্দেশ্য বুঝে ওঠার আগেই তারা গ্রেকে মেরে আহত করার পাশাপাশি তার চোখের সামনেই আশার মাথায় গুলি করে। তারপর নিস্তেজ অবস্থায় দুজনকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। সেই মুহূর্তে এক বুক বেদনা ও অসহায়ত্ব নিয়ে ফ্যালফ্যাল নয়নে আশাকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না গ্রের।

সিনেমার কাহিনীর এতটুকু শুনলে অতি সাধারণ কাহিনীর উপর নির্মিত কোনো সিনেমা বলে অনেকেরই মনে হতে পারে। কিন্তু এমনটা ভাবলে বড্ড বড় ভুল করবেন। হয়ত বহু সিনেমাতেই এমন একটি সুখী পরিবারের ভাঙন ও স্ত্রী মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠা স্বামীকে দেখেছেন। কিন্তু এই সিনেমাতে কিছু ব্যাপার ও কাহিনীর টুইস্ট একেবারে ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়েছে। সেই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে হলে আপনাকে নিয়ে যেতে হবে সেই দুর্ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণ পূর্বের সময়ে।

মনে আছে, আশাকে নিয়ে গ্রে যে তার ক্লায়েটের বাসায় গিয়েছিল, সেই কথা উল্লেখ করা হয়েছে? এবার সেই দৃশ্য কী দেখানো হয়েছিল তার উপর দৃষ্টিপাত করা যাক। সেখানে পৌঁছার পর আশা জানতে পারে গ্রের ক্লায়েট সে যে কোম্পানিতে কাজ করে, সেটার প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি ‘ভেসেল’ এর মালিক অ্যারন কিন। তরুণ অ্যারন শুধু ভেসেলের মালিকই ছিল না, একজন বিখ্যাত প্রযুক্তিবিদও ছিল বটে। সেই রাতে অত্যন্ত বুদ্ধিসম্পন্ন ও চমকপ্রদ প্রযুক্তির আবিষ্কারক অ্যারন নিজের সদ্য আবিষ্কারটি গ্রে ও আশার সামনে উপস্থাপন করে।

এখনো জনসম্মুখে না আনা এই নতুন আবিষ্কারটি ছিল একটি চিপ। ‘স্টেম’ নামের এই চিপটি শুধুই একটি ব্যয়বহুল ও উর্বর মস্তিষ্কের চিন্তাধারারই ফসল ছিল, এমন নয়। স্টেম ছিল এমন এক কালজয়ী উদ্ভাবন, যেটি সমগ্র মানবজাতির জীবনে প্রযুক্তিকে নিয়ে যাবে অন্য এক উচ্চতায়। কিন্তু এই স্টেমের সিনেমার গল্পে ভূমিকা কী? সেই গল্পটা নাহয় নিজেই সিনেমা দেখে জেনে নেবেন। শুধু বলে রাখা ভালো, এই সিনেমাতে স্টেমের গুরুত্ব ঠিক ততটা, যতটা গল্পের মূল চরিত্র গ্রের। আবার অন্যভাবে চিন্তা করলে, হয়তো স্টেমকেই মূল চরিত্র হিসেবে ধরা যেতে পারে।

স্টেম; Source:Feelin’ Film

উপরের দুটি অনুচ্ছেদে মূলত সিনেমার গল্পের প্রথমাংশ তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমার আসল গল্পের সূচনা এরপরের অংশতেই হয়েছিল। সে গল্পের কাহিনী বিশ্লেষণটুকু না করলেও বলে রাখা ভালো, দারুণ কিছু রোমাঞ্চকর ঘটনাপ্রবাহ আছে সেখানে। গ্রে ও স্টেমের পরবর্তীতে একে অপরের সাথে ঘটনাক্রমে জড়িয়ে পড়া থেকে শুরু করে গ্রের ‘স্ত্রী হত্যার প্রতিশোধ’ নামক মিশনে স্টেমের সহযোগিতা সিনেমার গল্পে এনে দেবে অভূতপূর্ব এক মাত্রা। কারণ স্টেম কোনো সাধারণ চিপ অথবা জড় পর্দাথ নয়, সে ছিল মানুষের ন্যায় বুদ্ধিসম্পন্ন ও মানব নিয়ন্ত্রক এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি।

অনেক তো হলো সিনেমার কাহিনী নিয়ে আলোচনা। এবার সিনেমাটি তৈরির পেছনের মূল নীতিকথা ও তাৎপর্য সম্পর্কে একটু খোলাসা করা যাক।

অতিরিক্ত কোনোকিছুই ভালো নয়” বলে আমাদের সমাজে একটা কথা প্রচলিত আছে। ‘আপগ্রেড’ সিনেমাটি যেন বাস্তব জীবনে এ কথাটির মর্মকে হারে হারে প্রমাণ করতেই নির্মিত হয়েছে। বর্তমান যুগে প্রযুক্তির ব্যবহার ও আতিশায্য ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। এতে যে আমাদের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ও দৈনন্দিন জীবনে স্থিতিশীলতা এসেছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু উপরওয়ালার সৃষ্টি থেকেও মহৎ কিছু সৃষ্টি করার প্রয়াসটা কি দুঃসাহসিকতা নয়? মানব মস্তিষ্ক থেকে জন্ম নেওয়া কোনো উদ্ভাবন যদি মানব জাতির বিনাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, সেটা কি কখনো গ্রহণযোগ্য? এমন এক গল্পকেই এই সিনেমার মাধ্যমে দর্শকদের সামনে মেলে ধরতে চেয়েছেন লি ওয়ানেল।

গ্রে নাকি স্টেম, কে অপ্রতিরোধ্য? Source: The Verge

সিনেমাটির নাম ‘আপগ্রেড’ রাখার পেছনে যে যুক্তিসংগত কারণটি ধারণা করা যেতে পারে, সেটাও এবার পরিষ্কার করে দেয়া যাক। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর অ্যাপসের অহরহ আপডেট অথবা সংযোজনের সাথে পরিচিত। নতুন সংস্করণে সুযোগ সুবিধা ও নতুন নতুন চমকের আনাগোনা বেশি থাকে। আবার মেশিন অথবা যন্ত্রপাতিকে আপগ্রেড বা উন্নতকরণের সাহায্যে নতুনভাবে কার্যকরী হয়ে উঠতে দেখে থাকি। ঠিক তেমনি, এই সিনেমার ক্ষেত্রে একটি মানবদেহকে প্রযুক্তির সংস্পর্শে এনে কীভাবে ‘আপগ্রেড’ করা যেতে পারে ও তার ধারাবাহিকতায় ফলাফল শেষমেশ কী দাঁড়ায়, সেটারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

এবার সিনেমার অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে কথা বলা যাক। সত্যি কথা বলতে কি, এই সিনেমায় লোগান মার্শাল-গ্রিনকে ছাড়া আপনি অন্য কারো অভিনয় দেখার তেমন একটা সুযোগই পাবেন না। আর পাওয়ার কথাও না। কারণ সিনেমাটির প্রায় সবকটি দৃশ্যেই লোগানকে দেখা যাবে। বাকি চরিত্রগুলোকে অনেকটা গল্পের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়েছে বলা যায়। এমনকি গ্রের স্ত্রী আশা চরিত্রটিও শুধুমাত্র গল্পের মূলভাবকে সামনে এগিয়ে নিতে স্বল্পকালীন এক চরিত্র। অ্যারন চরিত্রকে যখন প্রথম দেখানো হবে, তখন কিছুটা রহস্যময় লাগলেও সেটাও একসময় সাদামাটা চরিত্র মনে হবে। তবে হ্যাঁ, সিনেমার পুরোটা সময় দর্শকদের দৃষ্টি গ্রের দিকে আটকে থাকতে বাধ্য। গ্রে কি নায়ক নাকি খলনায়ক? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর লোগানের অসাধারণ অভিনয়শৈলী উপভোগ করতে করতে একসময় খুঁজে পাবে দর্শকমহল।

গ্রেকে কোনো পরিকল্পনার কথা বলছিল অ্যারন; Source: isolatednation.com

‘আপগ্রেড’ সিনেমাটি দেখবেন কি না এ ব্যাপারে যারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন, তাদের শুধু বলবো, ১ ঘন্টা ৩৯ মিনিটের এই সিনেমাটি না দেখলে হয়তো কোনো ক্ষতি নেই, তবে দেখলে লাভই আছে বরং। ‘ব্ল্যাক মিরর’ সিরিজ যাদের পছন্দ তাদের এই মুভি ভালো না লেগে পারেই না। এই সিনেমাটিতে অনেক ছোট ছোট উপাদান একত্রে যোগ করে স্বয়ংসম্পূর্ণ এক গল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সিনেমার বিজিএম যেন গল্পের সাথেই মিল রেখে যান্ত্রিক ধারার রাখা হয়েছে। মারামারির পর্বগুলোর দৃশ্য ধারণে দারুণ পটুতা দেখিয়েছেন সিনেমাটোগ্রাফার স্টিফেন ডুসিও। সব মিলিয়ে, দারুণ প্লটের দারুণ প্রতিফলন বলা যায় ‘আপগ্রেড’ সিনেমাকে।

সিনেমাটির দ্বিতীয় পর্ব আসার খবর বেশ জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছে। হয়তো সেই সিনেমাতে আরও গভীরভাবে গল্পকে চিত্রায়ন করা হবে। ‘আপগ্রেড’ বক্স অফিসে খুব বেশি আয় না করলেও একদমই মুখ থুবড়ে পড়েনি। পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে বানানো সিনেমা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসা করে প্রায় তেরো মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে এনেছে। তবে সমালোচক ও দর্শক সমাজে ভালোই সাড়া ফেলেছে সিনেমাটি। বিখ্যাত সিনে সমালোচক রজার এবার্ট সিনেমাটিকে চারে তিন দিয়ে মোটামুটি ভালো মানের চলনসই বিনোদনধর্মী মুভি বলে গণ্য করেছেন। এছাড়া রটেন টমেটোস থেকে ১৪১টি ভোটের ভিত্তিতে ৮৭% ও মেটাক্রিটিকে ৩৩টি ভোটের ভিত্তিতে ৬৭% রেটিং পেয়েছে সিনেমাটি।

Related Articles