Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তরুণ বিলিয়নিয়ারদের গল্প

উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ, পারিবারিক ব্যবসা এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার সুবাদে ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে তরুণ বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফোর্বসের তথ্যানুযায়ী, পৃথিবীর সবচেয়ে কমবয়সী বিলিয়নিয়ারের বয়স মাত্র ২২ বছর এবং তালিকায় দশম স্থানে থাকা ব্যক্তিটির বয়সও ৩১ বছর। এ বছরের প্রথমদিকে এমন খবর পাওয়া যাচ্ছিলো যে, কাইলি জেনার হচ্ছেন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ স্ব-প্রতিষ্ঠিত বিলিয়নিয়ার, যে স্থানটি পূর্বে ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গের দখলে ছিল, যা তিনি অর্জন করেছিলেন ২০০৬ সালে, যখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। অন্যদিকে, ৯০০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পদের মালিক জেনার সম্প্রতি ২১ বছরে পদার্পণ করেছেন।

ফোর্বসের ২০১৮ সালের শীর্ষ ধনীদের তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বে ৬৩ জন বিলিয়নিয়ার রয়েছেন, যাদের বয়স ৪০ এর নিচে এবং যাদের সর্বমোট সম্পদের মূল্য ২৬৫ বিলিয়ন ডলার। ফোর্বসের তালিকায় থাকা শীর্ষস্থানীয় বিলিয়নিয়ারদের অনেকেই তাদের পরিবারের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর উত্তরাধিকার বা উত্তরাধিকারিণী হিসেবে রয়েছেন। যেমন- আমরা এই তালিকায় সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে নরওয়ের একজন মেয়েকে দেখেছি, যে কি না সদ্য বিশের কোঠা পার হয়েছে এবং যিনি এখনও তার কোম্পানি পরিচালনার সাথে জড়িত নন। আবার এমন ব্যক্তিও রয়েছেন, যারা স্ব-উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন; যেমন- স্ন্যাপচ্যাটের প্রতিষ্ঠাতা ইভান স্পিগেল এবং ববি মারফি, যারা এই তালিকার অন্যতম স্ব-প্রতিষ্ঠিত বিলিয়নিয়ার, যারা প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ নিয়ে এই অবস্থানে রয়েছেন।

এছাড়াও এই তালিকায় বরাবরই বেশ কয়েকজন থাকেন, যারা তাদের পারবারিক ব্যবসা সামলাচ্ছেন অথবা কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যারা পারিবারিক ব্যবসার পাশাপাশি অন্য শিল্পে নিজেদের মতো করে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

আসুন একনজর চোখ বুলিয়ে নিই বর্তমান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনী  তরুণ-তরুণীদের তালিকায়। 

আলেকজান্দ্রা অ্যান্ডারসন ও ক্যাথেরিনা অ্যান্ডারসন

অসলো, নরওয়ে

আলেকজান্দ্রা অ্যান্ডারসান ও ক্যাথেরিনা অ্যান্ডারসন- নরওয়ের অধিবাসী এই দুই বোন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ দুই বিলিয়নিয়ার। তাদের বাবা জোহান এইচ অ্যান্ডারসন, যিনি নরওয়ের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্ড এবং অন্যতম বৃহৎ তামাক একটি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী। এর মধ্যে ফার্ডের বিভিন্ন বিনিয়োগ রয়েছে, যার মধ্যে আছে বেশ কিছু বৃহৎ বিনিয়োগ, নরডিক স্টক এক্সচেঞ্জে সক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ এবং প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগ। নরওয়েতে অ্যান্ডারসন পরিবারের ভালো নামডাক আছে।

আলেকজান্দ্রা অ্যান্ডারসন (বামে) ও ক্যাথেরিনা অ্যান্ডারসন (ডানে); Image Source: Business Insider

২০০৭ সালে জোহান অ্যান্ডারসন তার বিনিয়োগ কোম্পানীর ৪২.২ শতাংশ করে মালিকানা দুই মেয়ে আলেকজান্দ্রা ও ক্যাথেরিনাকে হস্তান্তর করেন। দুই বোনের কেউই প্রতিষ্ঠানের কোনো পদে না থাকলেও এই বিশাল সম্পদ তাদেরকে বিলিয়নিয়ারের তালিকায় তুলে আনে।

তাদের সম্পর্কে ব্যক্তিগত আরও কিছু তথ্য নিচে দেওয়া হলো।                            

আলেকজান্দ্রা অ্যান্ডারসন

বয়স: ২২ বছর

সম্পদের পরিমাণ: ১.৪ বিলিয়ন ডলার

১৯৯৬ সালে জন্ম নেওয়া আলেকজান্দ্রা অ্যান্ডারসন দুই বোনের মধ্যে কনিষ্ঠ বিধায় তিনিই হচ্ছেন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ার। বর্তমানে তিনি কোম্পানীর কোনো পদে সম্পৃক্ত নন, বরং প্রিয় ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা নিয়েই সারাটা সময় অতিবাহিত করেন। এটা শুধু তার শখই নয়, ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় তিনি  নরওয়ের তিনবারের চ্যাম্পিয়নও বটে!

ক্যাথেরিনা অ্যান্ডারসন

বয়স: ২৩ বছর

সম্পদের পরিমাণ: ১.৪ বিলিয়ন ডলার

আলেকজান্দ্রা থেকে এক বছরের বড় ক্যাথেরিনা অ্যান্ডারসন হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ ধনী ব্যক্তি, যিনি তার বোনের মতোই সম্পদের মালিক হয়েছেন তার বাবার প্রতিষ্ঠানের মালিকানা অর্জনের সুবাদে। ক্যাথেরিনাও কোম্পানীর কোনো পদে সম্পৃক্ত না হয়ে তার পড়াশোনা শেষ করছেন। তিনি বর্তমানে অ্যামস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের শিক্ষাজীবন চালিয়ে যাচ্ছেন।

কলিসন ভ্রাতৃদ্বয়

সিলিকন ভ্যালি, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র

দুই বোনের পর এবার সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় রয়েছেন দুই ভাই জন কলিসন এবং প্যাট্রিক কলিসন। এই আইরিশ ভ্রাতৃদ্বয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ‘স্ট্রাইপ’ নামক একটি প্রযুক্তি কোম্পানী প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালে তারা স্ট্রাইপ প্রতিষ্ঠা করেন, যখন তাদের বয়স সদ্য বিশ পার করেছে বা করবে। তাদের প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট পেমেন্ট গ্রহণের পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন এনেছে।

তাদের সফটওয়্যার ওয়েবসাইট ও অ্যাপসে যুক্ত হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারে। লিফট এবং ফেসবুকের মতো অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের কাছ থেকে এই সুবিধা নিচ্ছে। তবে সিলিকন ভ্যালির স্বর্ণের খনিতে পা দিয়েও এই সহোদরেরা আয়ারল্যান্ডের সেই ছোট শহর, সাথে নিজেদের নাড়ির টান ভুলে যাননি।

জন কলিসন (বামে) ও প্যাট্রিক কলিসন (ডানে); Image Source: Bloomberg

আমেরিকায় সফটওয়্যার কোম্পানী প্রতিষ্ঠা ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাজীবন শুরুর আগেই তারা ইবে-তে লেনদেন প্রক্রিয়া সহজতর করার জন্য কাজ করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে তারা সফলভাবে স্ট্রাইপ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৫ সালে এই কোম্পানির বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয় ৯.২ বিলিয়ন ডলার। সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, তাদের এই কোম্পানীর মূল্য প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। স্ট্রাইপের  আরো দুজন বড় বিনিয়োগকারী হচ্ছে এলন মাস্ক এবং পিটার থিয়েল।

স্ট্রাইপের বোর্ড মেম্বার মাইক মরটিজ ব্লুমবার্গকে বলেন, কলিসন সহোদরেরা অন্য প্রযুক্তি সম্রাটদের মধ্যে সর্বাধিক নম্র এবং গুণসম্পন্ন ব্যক্তি। তিনি বলেন, তাদের গল্পটি সত্যিই বিস্ময়কর, কীভাবে এই ভাইয়েরা ছোট একটি গ্রাম থেকে উঠে এসে ইন্টারনেট জগতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কোম্পানীর মালিক হয়ে উঠলেন।

আসুন তাদের সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য জেনে নিই।

জন কলিসন

বয়স: ২৮ বছর

সম্পদের পরিমাণ: ১.১ বিলিয়ন ডলার

১৯৯০ সালে আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা জন বর্তমানে পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ স্ব-প্রতিষ্ঠিত বিলিয়নিয়ার। তিনি একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন, যিনি সর্বাধিক নম্বর পেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এবং হার্ভার্ডে পড়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি হার্ভার্ডে পড়তে আসেন, আর আসার আগেই জন মিলিয়নিয়ার হয়ে গিয়েছিলেন তার অনলাইনে লেনদেন প্রক্রিয়া সহজতর করার সেবার জন্য। পরবর্তীতে জন হার্ভার্ডে পড়াশোনা শেষ না করেই তার ভাইকে নিয়ে সিলিকন ভ্যালিতে পাড়ি জমান এবং ২০১০ সালে তাদের স্বপ্নের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্ট্রাইপের সূচনা করেন। বয়স ২৬ এর কোঠায় আসতে না আসতে তিনি সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় স্থান করে নেন। 

প্যাট্রিক কলিসন

বয়স: ৩০ বছর

সম্পদের পরিমাণ: ১ বিলিয়ন ডলার

প্যাট্রিক, জনের বড় ভাই এবং স্ট্রাইপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক। তিনি তার ভাইয়ের মতোই দক্ষ, নম্র এবং কোম্পানীর সাফল্যের সমান অংশীদার। বর্তমানে লেনদেন প্রক্রিয়ার সেবাকে বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসার জন্য আরও কার্যকরী করতে তিনি নির্বাহী পরিচালকের পদে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। ভাইয়ের সমপরিমাণ সম্পদ নিয়ে তিনিও তরুণ বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় নাম লেখান।

গুস্তাভ মাগনার উইটজো

ভেরভা, নরওয়ে

বয়স: ২৫ বছর

সম্পদের পরিমাণ: ১.৯ বিলিয়ন ডলার

গুস্তাভ মাগনার উইটজো; Image Source: adressa.no

অ্যান্ডারসন বোনদের ন্যায় গুস্তাভ উইটজোরও ভাগ্য খুলে যায় যখন তার বাবা ২০১৩ সালে তাকে সালমার নামক মৎস্য চাষকারী প্রতিষ্ঠানের ৪৭ শতাংশের মালিকানা হস্তান্তর করেন। এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্যামন মাছ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যা তার বাবা গুস্তাভ মাগার সিনিয়র ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। সালমার নরওয়েতে স্যামন চাষের শিল্পায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে তিনি প্রতিষ্ঠানটির কোনো পদের সাথে সম্পৃক্ত নন, বরং রিয়েল এস্টেট ব্যবসা এবং অন্যান্য প্রযুক্তি স্টার্টআপের সাথে যুক্ত আছেন।

ইভান স্পিগেল

লস অ্যাঞ্জেলস, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্ত্ররাষ্ট্র

বয়স: ২৮ বছর

সম্পদের পরিমাণ: ৪.১ বিলিয়ন ডলার

ইভান স্পিগেল; Image Source: Inc.com

ইভান স্পিগেল স্ন্যাপ ইঙ্ক. এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক। এটি একটি ডিজিটাল ক্যামেরা কোম্পানী, যারা জনপ্রিয় ম্যাসেজিং সার্ভিস স্ন্যাপচ্যাট পরিচালনা করে। এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারকারীরা বন্ধুদের সাথে নিজেদের ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করতে পারেন, যা দেখার পরপরই স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যায়। স্পিগেল ও মারফির হাত ধরে ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা স্ন্যাপচ্যাট এখন প্রতিদিন প্রায় দশ কোটি মানুষ ব্যবহার করেন।

স্পিগেল স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোডাক্ট ডিজাইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং সেখানেই তিনি পরিচিত হন তার আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বন্ধু বিলিয়নিয়ার ববি মারফির সাথে। হোয়াটসঅ্যাপের মতো স্ন্যাপচ্যাটকেও ফেসবুকে কিনে নিতে চেয়েছিল, কিন্তু এই দুই প্রতিষ্ঠাতা তাতে রাজি হননি। শুরুর মাত্র দুই বছরের মাথায় ৫৩০ মিলিয়ন ডলারের স্টকের মালিক হওয়া এই কোম্পানির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার।

ববি মারফি

লস অ্যাঞ্জেলস, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্ত্ররাষ্ট্র

বয়স: ৩০ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ: ৪.২ বিলিয়ন ডলার

ববি মারফি; Image Source: The Hoover Cardinal

স্পিগেলের সাথে স্ন্যাপ ইঙ্ক. এর সাফল্যগাঁথার আরেকটি নাম হচ্ছে ববি মারফি, যিনি কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রতিষ্ঠানটিকে মার্কেটপ্লেসে নিয়ে আসতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্পিগেল থেকে বয়সে সামান্য বড় মারফি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত ও কম্পিউটেশনাল বিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করেছেন। ফোর্বসের তথ্যানুযায়ী, মারফির কাছে কোম্পানির ১১ শতাংশের মালিকানা রয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় চাকুরিরত বাবা ও ফিলিপিনো মায়ের ছেলে মারফি আমেরিকাতেই বেড়ে উঠেছেন ।

ওয়াং হান

সাংহাই, চীন

বয়স: ৩০ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ: ১.২ বিলিয়ন ডলার

ওয়াং হান; Image Source: CNBC.com

ওয়াং হান চীনের সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ার, যিনি ২০০৪ সালে তার বাবা ওয়াং জুনিয়াওয়ের মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে উত্তরাধিকার সূত্রে এই সম্পদ অর্জন করেছেন। এই সম্পদ এসেছে তার বাবার প্রতিষ্ঠা করা জুনিয়াও গ্রুপের মালিকানাধীন সম্পত্তি থেকে। এই গ্রুপ জুনিয়াও এয়ার এবং উক্সি কমার্শিয়াল ম্যানশন নামক একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী। হানের কাছে সাংহাইভিত্তিক বৃহৎ এই এয়ারলাইন কোম্পানিটির ২৭ শতাংশ এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরটির ১৪ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে। এছাড়াও বিপণন, শিক্ষা এবং খাদ্যদ্রব্য সম্পর্কিত ব্যবসার সাথেও তিনি জড়িত আছেন।  

ইভা মারিয়া ব্রাউন-লুয়েডিক

মেলাসাঙ্গেন, জার্মানি

বয়স: ৩১ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ: ২ বিলিয়ন ডলার

ইভা মারিয়া ব্রাউন-লুয়েডিক মেডিকেল সামগ্রী প্রস্তুতকারী বি. ব্রাউন মেলাসাঙ্গেন কোম্পানির ১২ শতাংশ শেয়ারের মালিক। তিনি লুডউইক থিয়োডর ব্রাউনের নিকটাত্মীয়। তার মা-ও এই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন। বিভিন্ন মেডিকেল প্রযুক্তি ও সার্জিক্যাল সামগ্রী প্রস্তুতকারী এই প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের পেছনে ইভা মারিয়ার অনেক অবদান রয়েছে।   

লুকাস ওয়াল্টন

উইওমিং, যুক্তরাষ্ট্র

বয়স: ৩২ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ: ১৫.৯ বিলিয়ন ডলার

লুকাস ওয়াল্টন; Image Soruce: indiatimes.com

লুকাস ওয়াল্টন হচ্ছেন ওয়ালমার্টের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়াল্টনের নাতি এবং ২০০৫ সালে বিমান দুর্ঘটানায় নিহত কোম্পানির প্রয়াত স্বত্ত্বাধিকারী জন ওয়াল্টনের পুত্র। বাবার মৃত্যুর পর তার সম্পদের বেশিরভাগের (বলা হয় এক-তৃতীয়াংশ) মালিক হন লুকাস। এছাড়াও ফার্স্ট সোলার এবং আরভেস্ট ব্যাংকেও তার মালিকানা রয়েছে। বিশ্বের তরুণ ধনীদের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক সম্পদের মালিক। শৈশবে লুকাসের ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং এরপর থেকে তিনি তার সময় ও সম্পদের বেশিরভাগ অংশ একজন দানশীল ব্যাক্তি হিসেবে পরিবেশের বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য ব্যয় করে যাচ্ছেন। 

জুলিও মারিও স্যান্টো ডমিংগো III

নিউইয়র্ক, যুক্ত্ররাষ্ট্র

বয়সঃ ৩০ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণঃ ১.৭ বিলিয়ন ডলার

৩য় জুলিও মারিও স্যান্টো ডমিংগো; Image Source: Time.com

নিউইয়র্কের পেশাগত ডিস্কো জকি জুলিও তার প্রয়াত দাদা থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ অর্জনের মধ্য দিয়ে বিলিয়নিয়ারদের কাতারে নাম লেখান। ফোর্বসের তথ্যমতে, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিয়ার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কলম্বিয়ান ব্রিওয়েরী ব্যাভারিয়ার প্রয়াত স্বত্ত্বাধিকারী ডমিংগো তার কোম্পানির এক-ষষ্ঠামংশের মালিকানা তার প্রত্যেক নাতি-নাতনির নামে করে যান। এছাড়াও প্রয়াত ডমিংগোর এস.এ.বি. মিলার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে মালিকানা ছিল, যেটি এবি ইনবেভ এর সাথে একত্রিত হলে জুলিও সেটির মালিকানায়ও অংশীদার হওয়ার সুযোগ পান।

জুলিও মারিও বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যকলায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ম্যানহাটনে একটি সঙ্গীত উৎসব আয়োজন বিষয়ক চুক্তি করতে গিয়ে খুনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন, যার জন্য এই তরুণ বিলিয়নারকে ৩৭.৮ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়।

উপরোক্ত তালিকার বেশিরভাগ ধনকুবের তরুণ-তরুণীই উত্তরাধিকার সূত্রে এসব সম্পদ পেয়েছেন। আবার কলিসন ভ্রাতৃদ্বয়ের মতো ব্যক্তিও আছেন, যারা স্ব-উদ্যোগে বিলিয়নিয়ার হতে পেরেছেন। তবে উত্তরাধিকারসূত্রেই হোক বা নিজ যোগ্যতায় হোক, কম বয়সে এত বিপুল সম্পদের মালিকানা তাদের দায়িত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে, এবং এ সম্পদ ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হলে অবশ্যই তাদেরকে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। অন্যথায়, এই প্রতিযোগিতার বাজারে পিছিয়ে পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

This article is in Bangla language. It discusses about the World's Top Youngest Billionaires in 2018. Necessary references have been hyperlinked.

Feature Image: Edited by Writer

Related Articles