Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ধনীদের পড়াশোনা দৌড় কতদূর?

প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের পরে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওঠার পর অনেককেই বলতে শোনা যায়, “আরে এত পড়াশোনা করে কী হবে! বিল গেটস তো বেশি শিক্ষিত না, গ্র্যাজুয়েশনই করেনি”। শুধু বিল গেটস নয়, এর সাথে ফেসবুকের মার্ক জাকারবার্গের কথাও অনেকেই বলে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পড়াশোনা না করেই তারা আজ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু ধনী ব্যক্তি তো শুধু এই দুজনই নয়, আরো রয়েছেন। তারাও কি গেটস বা জাকারবার্গের মতো মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে বড়লোক হয়েছেন? গেটস আর জাকারবার্গের শিক্ষা জীবনের রেকর্ডই বা কেমন ছিল? চলুন, দেখে নেয়া যাক, বিল গেটস, জাকারবার্গসহ অন্যান্য বিলিয়নিয়ারদের ছাত্রজীবনের কথা।

বিল গেটস

শীর্ষ ধনীদের কথা বলতে গেলে সবচেয়ে বেশি সময় বিল গেটসের নামই বেশি শোনা যায়। আমাদের দেশে বিল গেটসকে দেখা হয় ভার্সিটি ছেড়ে দিয়ে বড়লোক হওয়া এক নায়ক হিসেবে, অনেকটা আগেকার দিনের বাংলা সিনেমার নায়কের মতো। তার নামে প্রচলিত রয়েছে অসংখ্য মিথ্যা উক্তি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে তার বাবা ছিলেন গরীব কৃষক, যদিও বাস্তবে পুরো উল্টো। স্বনামধন্য আইনজীবীর ঘরে জন্ম নেয়া বিল গেটস ছোট থেকেই তার সমবয়সীদের থেকে অনেক সুবিধাই পেয়েছেন। ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি পড়াশোনা করেছেন প্রাইভেট স্কুলে। পরবর্তীতে তার বাবা-মা তাকে পাবলিক স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। দুই জায়গাতেই গেটস নিজের মেধার প্রমাণ দিয়ে যান। শুধু গণিত বা বিজ্ঞান নয়, বরং নাটক বা ছবি আঁকার মতো বিষয়গুলোতেও তিনি অসাধারণ ফলাফল করতেন।

বিল গেটস; Image Source: Wikimedia Commons

বিল গেটস কতটা ভালো ছাত্র ছিলেন তার প্রমাণ SAT এ ১৬০০ এর মধ্যে ১৫৯০ পাওয়া। আমেরিকায় হাই স্কুল (আমাদের দেশের কলেজ) পাশ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে SAT দিতে হয়, অনেকটা আমাদের দেশের ভর্তি পরীক্ষার মতো। অসাধারণ SAT স্কোর এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকায় তিনি ভর্তি হন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেটি কি না বিশ্বের সেরা ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি! হার্ভার্ডে গেটস পড়া শুরু করেছিলেন আইন নিয়ে, তবে প্রথম বর্ষে গণিত ও কম্পিউটার সায়েন্সের কোর্সগুলোই বেছে নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বছর তার কেটে যায় কম্পিউটার নিয়েই। ক্লাস, পড়াশোনা, এমনকি খাওয়া-ঘুম বাদ দিয়ে কম্পিউটার ল্যাবে কাজ করতেন ঘন্টার পর ঘন্টা। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রতিফলন পড়ে তার প্রথম বর্ষের ফলাফলে, কোনোমতে প্রথম বর্ষ পাশ করেন হাই স্কুলে ‘ন্যাশনাল মেরিট স্কলার’ পাওয়া বিল গেটস।

কম্পিউটারের প্রেমে মজে যাওয়া বিল গেটস অনেক কষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষ পার করেন। কিন্তু এরপর পরিবারের শত বাঁধা থাকার পরেও বন্ধু পল অ্যালেনকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘মাইক্রোসফট’। আর এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিতেও কার্পণ্য করেননি। বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে আইনের ছাত্র হয়ে ওঠেন প্রযুক্তি জগতের মহারথী। বিল গেটসের হার্ভার্ড ছেড়ে দেয়া নিয়ে যত ‘মোটিভেশনাল’ কথাবার্তা হয় তার অর্ধেকও যদি তার ছাত্রজীবন নিয়ে হত তাহলেই সেগুলো সত্যিকারের ‘মোটিভেশন’ হতো। পড়াশোনা ছাড়বার আগে বিল গেটস তার শিক্ষা জীবনে যথেষ্ট সফল ছিলেন। পড়াশোনা ছাড়বার সিদ্ধান্তটা নিয়েও যে ভুল করেননি সেটিও প্রমাণিত।

বিল গেটসের সহপাঠী স্টিভ বালমার কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়েননি। বরং টপার হিসেবে গ্রাজুয়েট হন এবং প্রায় ১৪ বছর বিল গেটসের মাইক্রোসফটের সিইও হিসেবে ছিলেন। বিল গেটস মাইক্রোসফটের শেয়ারের বড় অংশের মালিক হতে পারেন, তবে কোম্পানিটি কিন্তু গ্রাজুয়েট করা স্টিভই চালাতেন।

মার্ক জাকারবার্গ

বিল গেটসের পরেই ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গের উদাহরণ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। বিল গেটসের মতোই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিয়ে ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে তিনি কতটা মেধার অধিকারী তার প্রমাণ দেয়া শুরু করেন একেবারে ছোটবেলা থেকেই। নিউ ইয়র্কে এক স্বচ্ছল পরিবারে জন্ম নেয়া জাকারবার্গ ১৯৯০ সালের দিকে প্রোগ্রামিং করা শিখে যান। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি একটি ‘ইন্সট্যান্ট মেসেজিং’ এর প্রোগ্রাম তৈরি করে ফেলেন। এই প্রোগ্রামটি মার্কের ডেন্টিস্ট বাবা তার অফিসে ব্যবহার করতেন। ‘জাকনেট’ নামের এই প্রোগ্রামটি দিয়ে বাসার লোকজনও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতো, ঠিক এখনকার মেসেঞ্জারের মতোই, কিন্তু সেটি প্রায় আড়াই দশক আগে। বন্ধুদের সাথে কম্পিউটারের ছোট গেমসও তৈরি করেছিলেন সেই বয়সেই।

কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ দেখে মার্কের বাবা তার জন্য একজন প্রাইভেট কম্পিউটার প্রশিক্ষক রাখেন। পড়াশোনায় অত্যন্ত ভালো হবার কারণে পাবলিক স্কুল থেকে ফিলিপস এক্সেটার একাডেমিতে পড়তে যান। এই প্রতিষ্ঠানটি বেশ নামকরা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি ফেন্সিংয়েও নিজের প্রতিভা প্রমাণ করেন স্কুল দলের ক্যাপ্টেন হিসেবে নির্বাচিত হয়ে। হাই স্কুলে থাকা অবস্থাতেই ক্ল্যাসিক্যাল সাহিত্যের উপরে ডিপ্লোমাও করে ফেলেন। তবে তার প্রথম পছন্দ সব সময়ই ছিল কম্পিউটার। হাই স্কুলে থাকতেই তার প্রতিভা দেখে মাইক্রোসফটসহ তখনকার বেশ কিছু টেক কোম্পানি তাকে নিজেদের কোম্পানিতে যোগ দেবার সুযোগ দেয়। কিন্তু তিনি সবাইকেই নিরাশ করে ভর্তি হন হার্ভার্ডে। SAT পরীক্ষায় জাকারবার্গ ১৬০০ তে ১৬০০ পেয়েছিলেন বলে কথিত আছে।

মার্ক জাকারবার্গ; Image Source: icn.com Copyright: Getty Image

হার্ভার্ডে তিনি পড়াশোনা শুরু করেন সাইকোলজি ও কম্পিউটার সায়েন্সের উপর। ফেসবুক শুরু করার আগেই তিনি বেশ কয়েকটি প্রোগ্রাম তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। ফেসবুকের শুরু নিয়ে কিছু বিতর্ক থাকলেও সেই ফেসবুক দিয়েই উঠে এসেছেন আজকের জাকারবার্গ। ২০০৪ সালে ফেসবুকে সময় দেবার জন্য তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় ফেসবুকের অফিস চালু করেন। সাফল্যের দেখা পেতে কয়েক মাসের বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি জাকারবার্গকে। একসময় পড়াশোনা ছেড়ে দিলেও কিছুদিন আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের এই বিখ্যাত ছাত্রকে সম্মাননা ডিগ্রি দিয়েছে। সুতরাং চাইলেই এখন আর বলার উপায় নেই জাকারবার্গ গ্রাজুয়েশনই করেননি, তার কিন্তু সার্টিফিকেট আছে।

জেফ বেজোস

আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ফোর্বস ২০১৮ এর ধনীদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। ১৯৯৪ সালে সিয়াটলের এক গ্যারেজে আমাজন কোম্পানি খোলার আগে জেফ বেজোসের শিক্ষাজীবন ছিল যথেষ্ট উজ্জ্বল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে হাই স্কুলে (বাংলাদেশের কলেজ/ইন্টারমিডিয়েট সমপর্যায়) থাকতেই তার মেধার প্রমাণ দেয় ‘ন্যাশনাল মেরিট স্কলার” স্বীকৃতি। হাই স্কুল শেষে তিনি ভর্তি হন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে, যা বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন সফলভাবে।

তাহলে আর দশজন গ্র্যাজুয়েট থেকে বেজোস আলাদা হলেন কীভাবে? ইন্টেল কিংবা বেল ল্যাবের মতো জায়গায় চাকরির সুযোগ পেয়েও না গিয়ে। তিনি তার চাকরি জীবন শুরু করেন ফিটেল নামের একটি টেলিকমিউনিকেশন স্টার্টআপে। খুব দ্রুতই তিনি ফিটেলের কাস্টমার সার্ভিস বিভাগের পরিচালক পদে উন্নতি পেয়ে যান। এক বছর ফিটেলে থাকার পর ১৯৮৮ সালে যোগ দেন ব্যাঙ্কারস ট্রাস্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানে। দু’বছর পর বেজোস যোগ দেন ‘ডি. ই. শ অ্যান্ড কোং কোম্পানিতে’, যেটিও ছিল একটি নতুন কোম্পানি। মাত্র চার বছর কাজ করেও তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট হয়ে গিয়েছিলেন।

জেফ বেজোস; Image Source: icn.com Copyright: Getty Image

জেফ বেজোসের জীবনের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে ১৯৯৪ সালে, যখন তিনি আমাজন চালু করেন অনলাইনে বই কেনাবেচার জন্য। আমাজন চালুর সময় বেজোস তার বাবার কাছ থেকে তিন লক্ষ ডলার সাহায্য পেয়েছিলেন। শুরুটা বই দিয়ে হলে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অনলাইনে বিক্রির কথা শুরু থেকেই ছিল বেজোসের মাথায়। আমাজন নিরাশ করেনি বেজোসকে।

ওয়ারেন বাফেট

ইতিহাসের অন্যতম সেরা বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয় ওয়ারেন বাফেটকে। প্রায় ৮৪ বিলিয়ন ডলার সমমানের অর্থের মালিক ওয়ারেন জন্ম নেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান হাওয়ার্ড বাফেটের ঘরে। ওয়াশিংটন ডিসিতে থাকার সুবাদে বেশ ভালো স্কুলে পড়া সুযোগ হয়েছিল তার। পড়াশোনা করতে না চাইলেও ছোট থেকেই গণিত আর বিনিয়োগের প্রতি তার আকর্ষণ ছিল। এ কারণে অনেকেই ভাবতো বড় হয়ে ওয়ারেন সফল স্টকব্রোকার হবেন। স্কুলে পড়া অবস্থাতেই পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটখাট উদ্যোক্তা হিসেবেও কাজ করতেন। তার উদ্যোগগুলো সফল হওয়াতে হাই স্কুল শেষ করেই ব্যবসায় নামতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবার বাঁধার কারণে শেষপর্যন্ত তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়।

ওয়ারেন বাফেট; Image Source: Times.com

ওয়ারেন বাফেটের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু হয় ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার হোয়ারটন বিজনেস স্কুলে। এই বিজনেস স্কুল বিশ্বের সেরা বিজনেস স্কুলগুলোর একটি। প্রথম দুই বছর কোনোমতে পার করলেও তৃতীয় বছরে তিনি দাবী করা শুরু করেন তিনি তার প্রফেসরদের থেকে বেশি জানেন! তাই তিনি আর পড়াশোনা করবেন না। কিন্তু আবারো তার বাবার বাঁধা। ১৯৪৮ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে পরাজয়ের কারণে ওয়ারেনের বাবা ফিরে যান তাদের স্থায়ী নিবাস ওমাহাতে। সেই সাথে ওয়ারেন বাফেট ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া থেকে বদলি হয়ে যান ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাসকা-লিংকনে। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের বিভিন্ন কাজের পেছনে দিতেন। এককথায়, পূর্ণকালীন পড়াশোনার পাশাপাশি পূর্ণকালীন কাজও করতেন। এরপরেও মাত্র তিন বছরেই তিনি তার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন!

গ্র্যাজুয়েশন শেষে তিনি আবেদন করেন হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে। কিন্তু হার্ভার্ড খুব সম্ভবত তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ সিদ্ধান্তটি নেয় ওয়ারেনকে না করে, যার কারণ ছিল ‘কম বয়স’। হার্ভার্ডে প্রত্যাখাত হয়ে ওয়ারেন ভর্তি হন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তার সাথে পরিচয় হয় তার গুরু বেন গ্রাহামের সাথে। বেন গ্রাহামকে বলা হয় ‘ভ্যালু ইনভেস্টমেন্ট’ এর জনক। এই বিখ্যাত প্রফেসররের সাথে কাজ করতে গিয়ে ওয়ারেন বাফেট বিনিয়োগের বিভিন্ন দিক নতুন করে আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে বেন গ্রাহামের সাহচর্যই ওয়ারেন বাফেটকে পরিণত করে ইতিহাসের সেরা ধনীদের একজন হিসেবে।

কচ ভাতৃদ্বয়

কচ ইন্ডাস্ট্রিজের যাত্রা শুরু হয়েছিল ফ্রেড কচের হাত ধরে, যিনি ছিলেন মূলত একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বিশ্বের সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান এমআইটি থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করা ফ্রেড তেল পরিশোধনের একটি প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন, যা দিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কচ ইন্ডাস্ট্রিজের। তবে তিনি বিলিয়নিয়ার হতে না পারলেও তার ছেলেরা ঠিকই উঠে এসেছেন ফোর্বসের শীর্ষ ধনীদের তালিকায়। তার চার ছেলের মধ্যে দুই ছেলে চার্লস ও ডেভিড কচ বর্তমানে তাদের বাবার প্রতিষ্ঠা করা প্রতিষ্ঠানটিকে আরো সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন।

চার্লস কচ; Image Source: Times.com

চার্লস কচ তার গ্র্যাজুয়েশন করেন বাবার মতোই এমআইটি থেকেই, জেনারেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তবে তিনি সেখানেই থেমে থাকেননি। গ্র্যাজুয়েশনের পর এমআইটি থেকেই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করেন। ভাবছেন শেষ? আরো বাকি আছে, পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে তিনি এরপর সেই এমআইটি থেকেই মাস্টার্স করেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে! চার্লসের ছোট ভাই ডেভিডও কম যান না। বাবার মতোই কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন, সেই এমআইটি থেকেই। ভাইয়ের মতো তিনিও গ্র্যাজুয়েশন করেই থেমে থাকেননি, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়েই মাস্টার্স করেছেন এমআইটি থেকে! ধনীদের তালিকায় থাকা এই দুই ভাই সব থেকে বেশি শিক্ষিত এবং তারা তাদের পড়াশোনার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত কাজেই জড়িত। খুব সম্ভবত এ কারণেই খুব দ্রুত তারা যেকোনো সমস্যা সামলিয়ে উঠতে পারেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে কচ ইন্ডাস্ট্রিকে বিশ্বের ৬০টি দেশে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন!

ডেভিড কচ; Image Source: Times.com

এই আর্টিকেলে লেখা ধনীরা ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন ধনী রয়েছেন যারা বেশ উচ্চ শিক্ষিত। গুগলের প্রতিষ্ঠাতা লেরি পেইজ গুগলের আইডিয়া পান তার পিএইচডি থিসিসের কাজ করতে গিয়ে। গুগলের বর্তমান সিইও আইআইটি খড়গপুর থেকে মেটালার্জিতে গ্র্যাজুয়েশন করে ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্সে মাস্টার্সও করেছেন। পিএইচডিতে ভর্তি হলেও সেটি বাদ দিয়ে করেছেন এমবিএ। মাইক্রোসফটের বর্তমান সিইও সত্য নাদেলাও গ্র্যাজুয়েশন, মাস্টার্স এবং এমবিএ করা।

পড়াশোনার সাথে ধনী হবার কিংবা সফল হবার সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়া পরোক্ষভাবে অনেক সাহায্য করে। একটি ভালো প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ একজন মানুষকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিতে পারে, খুলে দিতে পারে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। ধনী ব্যক্তিদের আরেকটি সাধারণ গুণ হচ্ছে তারা সবাই প্রচুর বই পড়েন এবং অকাজে সময় নষ্ট করেন না। অথচ বই থেকে একশ হাত দূরে থাকা ফেসবুক আর ইউটিউবে সময় নষ্ট করা জেনারেশনকে আমরা অনুপ্রেরণা দেই বই পড়ুয়াদের ব্যর্থতা দিয়ে! কাউকে ‘মোটিভেট’ করতে হলে সেরাদের সাফল্য দিয়ে করাই ভালো, ব্যর্থতা কখনোই অনুপ্রেরণা হওয়া উচিৎ না।

ফিচার ইমেজ- times.com

Related Articles