২০১৮ সালে বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত ছবি কোনটি? যেহেতু একই বছর তিন খান, শাহরুখ-সালমান-আমির তিনজনেরই ছবি মুক্তি পেয়েছে, তাই যে কেউ ধরে নিতেই পারেন এই তিনজনের কোনো একজনের ছবি নিয়েই সাধারণ দর্শক সবচেয়ে বেশি আলোচনায় মেতে থেকেছে। কিন্তু না, বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। খানদের কারও ছবি নয়, ২০১৮ সালে সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে ডাকসাইটে চলচ্চিত্রবোদ্ধা, সকলেই যে ছবিটিকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথা বলেছে, সেটি হলো শ্রীরাম রাঘবনের ব্ল্যাক কমেডি ক্রাইম থ্রিলার আন্ধাধুন, যেখানে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আয়ুষ্মান খুরানা।
এই ছবি দেখার পর সকলের মনেই প্রশ্ন, আকাশ কি আদৌ অন্ধ ছিল না? নাকি অন্ধ ছিল, পরে কোনো একসময়ে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিল? যদি তা-ই হয়, তাহলে কখন? এমন অসংখ্য প্রশ্ন মাথায় এমনভাবে ঘুরপাক খেতে শুরু করে যে, অনেকেরই রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। অনেককে তো অনলাইনে বিশাল বিশাল তত্ত্ব নিয়ে হাজির হতেও দেখা যায়। আর এই সবকিছুর মাধ্যমে দুটি শব্দ এমনকি অতি সাধারণ, আটপৌরে দর্শকের কাছেও অতি পরিচিত হয়ে যায়। শব্দ দুটি হলো: ওপেন এন্ডিং।
আন্ধাধুন ছবির ওপেন এন্ডিং দেখে অনেকেই নাক সিঁটকে বলতে থাকে, এ আর এমন কী! ইনসেপশন, শাটার আইল্যান্ডের মতো হলিউডের ছবিতে এমন ওপেন এন্ডিং তো হরহামেশাই দেখা যায়। আবার অনেককেই বলতে শোনা যায়, ইশ, বলিউডে যদি এমন ওপেন এন্ডিং ছবি আরও বেশি বেশি হতো!
এই দুই দলের মানুষের কথা থেকেই বেশ বোঝা যায়, বলিউডে যে এর আগেও ওপেন এন্ডিং ছবি হয়েছে, সেটা তাদের ধারণাতেই ছিল না। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, ওপেন এন্ডিং ছবি আসলেই বলিউডে আগেও অনেক হয়েছে। এবং সেগুলোর কোনো কোনোটা হয়ত আন্ধাধুনের চেয়ে ভালোও ছিল, শুধু সেগুলো নিয়ে তেমন একটা আলোচনা হয়নি, এটুকুই যা তফাৎ।
এখন আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেব বলিউড থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত তেমনই কিছু ওপেন এন্ডিং ছবির সাথে; যেগুলোর সমাপ্তি পরিষ্কারভাবে দেখাননি পরিচালকরা, বরং শেষে কী হতে পারে, কিংবা কী কারণে কী হয়েছে, সেগুলো নিজেদের মতো করে ভেবে নেয়ার দায়ভার তারা দর্শকের ঘাড়েই চাপিয়ে দিয়েছেন।
দ্য লাঞ্চবক্স
২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া, রিতেশ বাত্রা পরিচালিত এই ছবিটির অন্যতম প্রযোজক অনুরাগ কাশ্যপ। এছাড়াও ছিলেন করণ জোহর, সিদ্ধার্থ রয় কাপুররাও। এটুকুতেও যাদের মন ভরলো না, পর্দায় ইরফান খান অভিনয় করেছেন শুনে তারাও নির্ঘাত নড়েচড়ে বসবেন। একটি অতিথি চরিত্রে আছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীও। এছাড়াও অপর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিমরাত কৌর। ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি মিডিয়াম ছবির আগে এটিই ছিল ইরফান খানের সবচেয়ে বেশি আয় করা ছবি।
এ ছবিতে ইরফান খান থাকেন একজন বিপত্নীক চাকরিজীবী। গৃহবধূ নিমরাত তার স্বামীর দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে, অফিসে তার জন্য পাঠানো লাঞ্চবক্সের ভেতর ঢুকিয়ে দেয় রোমান্টিক চিঠি। কিন্তু ভুলক্রমে সেই লাঞ্চবক্স চলে যায় ইরফানের কাছে। শুরু হয় ইরফান-নিমরাতের নিয়মিত চিঠি চালাচালি। চোখের দেখা না দেখেও, চিঠির মাধ্যমেই নিজেদের আবেগ-অনুভূতি, সুখ-দুঃখ পরস্পরের সাথে ভাগ করে নিতে থাকে তারা। কিন্তু শুধু চিঠি চালাচালি করে আর ক'দিন? সম্পর্ককে পরবর্তীতে ধাপে নিয়ে যেতে তো এবার তাদের দেখা হওয়া জরুরি। সেই দেখা কি শেষ পর্যন্ত হবে? ছবিটি দেখার পর এ সিদ্ধান্তে আসতে হবে আপনার নিজেকেই।
নো স্মোকিং
আগের ছবিটিতে অনুরাগ কাশ্যপ তো কেবল প্রযোজক হিসেবেই ছিলেন, আর এটিতে তিনি নিজেই গল্পকার, নিজেই চিত্রনাট্যকার, এবং সবচেয়ে বড় কথা, তিনি নিজেই পরিচালক। আর মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জন আব্রাহাম। তবে অনুরাগ-জনের জুটি বক্স অফিসে আগুন ধরাতে পারেনি একেবারেই। সত্যি কথা বলতে, ধোঁয়াটুকুও হয়তো বের হয়নি। ২৩ কোটি রুপি দিয়ে বানানো ছবিটি আয় করেছে তিন কোটি রুপি।
ছবির শুরুতে দেখা যায় জনের ঘুম ভাঙছে একটি পুরনো জরাজীর্ণ বাড়িতে। স্ত্রীর কাছ থেকে সে কল পায়। স্ত্রী জানতে চায়, কোথায় আছে সে। কিন্তু তার কোনো ধারণাই নেই এ কোথায় এসে পড়েছে। সে শুধু এটুকু জানে, একটা সিগারেট ধরানো এই মুহূর্তে খুবই দরকার তার জন্য। তাই সিগারেট খুঁজতে পুরো বাড়িময় ঘুরে বেড়াতে শুরু করে সে। এবং দুর্ঘটনাক্রমে এমন একটি ঘরের দরজা খুলে ফেলে, যে ঘর ভরা শুধু রাশিয়ান সৈন্য। সেই সৈন্যদের মধ্যে একজন তার পিছু ধাওয়া করে, এবং তার দিকে গুলি ছোঁড়ে। পায়ে গুলি লাগে তার। কিন্তু বরফের মাঝখানেই একটি বাথটাব খুঁজে পায় সে। উপায় না দেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটির মধ্যেই।
কিছুক্ষণ বাদে সেই বাথটাবের মধ্যেই সে আবারও জেগে ওঠে। তখন জানা যায় তার নাম 'কে', এবং সে খুবই ধনাঢ্য একজন ব্যবসায়ী। খুবই আত্মবিশ্বাসী, উদ্ধত ও আত্মপ্রেমী স্বভাব তার। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, সে একজন চেইন স্মোকার। তার পরিবার ও বন্ধু সবাই তার হাতেপায়ে ধরে ধূমপান ছাড়ার জন্য। কিন্তু কোনো লাভ হয় না। তার এক বন্ধু ও এক ডাক্তার মিলে তার জন্য একটি সংশোধন কেন্দ্রে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ঠিক করে, যেটি নাকি অবশ্যই তার বদভ্যাস ছাড়িয়ে দেবে। একপর্যায়ে যখন তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায় এই অত্যধিক ধূমপানের কারণে, তখন সে রাজি হয় ওই সংশোধন কেন্দ্রে যেতে।
এরপর? কী হয় সেখানে? কীভাবেই বা এক আজব দুনিয়ায় এসে পড়ে সে? এসব প্রশ্নের উত্তর আপনি পাবেন কি না জানি না, তবে যতই এগোতে থাকবেন, আপনার মাথা ততই 'আউলাতে' থাকবে। ১২৮ মিনিটের ছবি পুরোটা যদি আপনি এক বসায় দেখে উঠতে পারেন, এবং আপনার মাথা বনবন করতে শুরু না করে, এবং ছবিটি দেখামাত্রই আপনি বুঝে যান কী থেকে কী হয়েছে, জেনে রাখবেন, আপনি আসলে মানুষ না, আপনি সত্যিকারের ড্রাগন!
চলচ্চিত্রে যারা পরাবাস্তবতার স্বাদ পেতে চান, তাদের জন্য একেবারে যথাযথ একটি ছবি এটি। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার, সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল ছবিটি। ২০০৭ সালে ছবিটি যখন মুক্তি পেল, সাধারণ দর্শক তো একে গ্রহণ করেইনি, এমনকি তখনকার সমালোচকরাও রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছিল ছবিটিকে। বিমূর্ত, দার্শনিক ও পরাবাস্তব এই ছবিটি অবশ্য পরবর্তীতে ধীরে ধীরে প্রশংসা পেতে শুরু করে। অনেকের মতেই, মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মতো সব ধরনের উপাদানই উপস্থিত এই ছবিতে। ২০০৭ সালের পরিবর্তে ২০১৯ সালে মুক্তি পেলে হয়তো বা ছবিটিকে বক্স অফিসে সর্বনাশা পরিণাম ভোগ করতে হতো না।
দেব ডি
দানে দানে তিন দান বোধহয় একেই বলে! আরও একটি ছবি অনুরাগ কাশ্যপের। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মূল 'দেবদাস' পড়ে অনেকের কাছেই নিছক রোমান্টিক-ট্র্যাজেডি মনে হতে পারে। কিন্তু অনুরাগ সেটা থেকেই বের করে এনেছেন ব্ল্যাক কমেডি! ২০০৯ সালের এই ছবিতে অভিনয় করেছেন অভয় দেওল (দেবদাস), মাহি গিল (পারো) ও কল্কি কোয়েচলিন (চন্দ্রমুখী)।
তিনটি আলাদা চরিত্রের তিন আলাদা দৃষ্টিকোণের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে ছবির কাহিনী। একদিকে মাহি খুবই আদর্শবাদী, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ধ্যান-ধারণার মেয়ে, যে পাগলের মতো ভালোবাসে অভয়কে। অথচ অভয় তার ভালোবাসাকে 'টেকেন ফর গ্র্যান্টেড' হিসেবে নেয়। কিন্তু সেই অভয়ই মারাত্মক রকমের নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে মাহির বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর। এমন সময় সে আশ্রয় খোঁজে কল্কির কাছে, যার নিজের জীবনেও আছে এক করুণ কাহিনী। বয়স্ক প্রেমিকের সাথে শরীরী ভালোবাসার সূত্র ধরে তার এমএমএস স্ক্যান্ডাল বের হলে, লজ্জায় আত্মহত্যা করে তার বাবা। অর্থাভাবে বেশ্যাবৃত্তিতে নামতে হয় তাকে।
শরৎচন্দ্রের অমর সৃষ্টিকে অনুরাগ একেবারে বর্তমান প্রেক্ষাপটের সাথে মিলিয়ে উপস্থাপন করেছেন, এবং কাহিনীকে নিজের মতো করে পরিবর্তনেও করেছেন স্বাধীনতার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার। আর তাই এই কাহিনীর মূল সুর শরৎচন্দ্রের থেকে ধার করা হলেও, শেষ পর্যন্ত এটি অনুরাগের স্বতন্ত্র ছবিই হয়ে উঠেছে। এবং তার নিজের মতো করে বদলে নেয়া কাহিনীতে প্রধান তিন চরিত্রের কী পরিণতি হবে, তা ভাবতে মাথা খরচ করতে হবে আপনাকেও।
মাসান
আগের তিনটি ছবির সাথে যোগসূত্র ছিল অনুরাগ কাশ্যপের। চাইলে এই ছবিটির সাথেও তার সম্পৃক্ততা আরোপ করা যায়। কারণ এই ছবির পরিচালক হলেন নীরাজ ঘাওয়ান, যিনি ইতিপূর্বে গ্যাংস অব ওয়াসিপুর ও আগলি ছবিতে অনুরাগের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন! আর সরাসরি নিজের পরিচালনায় প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন তিনি। ২০১৫ সালের কান ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রদর্শিত হয় ছবিটি। দুটি পুরস্কার জিতেও নেয়। এছাড়া ভারতের সমালোচকেরাও প্রশংসায় ভাসায় ইন্দো-ফরাসি যৌথ প্রযোজনার এই ছবিটিকে।
ছবিটিতে দুটি পৃথক কাহিনী রয়েছে। একটি কাহিনীতে দেখা যায় রিচা চাড্ডা তার কলেজের বন্ধু সৌরভ চৌধুরী একটি হোটেলে চেক-ইন করেছে। যখন তারা রুমে গিয়ে যৌনক্রিয়া করছে, তখন হোটেলের এক স্টাফ এসে তাদের বাধা দেয়। তার সন্দেহ, ওরা দুজন 'অশ্লীল কাজে' লিপ্ত ছিল। এক পুলিশ ইন্সপেক্টর এসে মোবাইলে স্বল্পবসনা রিচার ভিডিও রেকর্ড করে। এরপর সে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে রিচা ও তার বাবাকে। বিশাল অংকের টাকা দিতে হবে তাকে, নয়তো সে ফাঁস করে দেবে রিচার ভিডিও। টাকা জোগাড় করতে জুয়া খেলতে শুরু করে রিচার বাবা। এদিকে চাকরি নেয় রিচা। কিন্তু বেশিদিন এক কাজে টিকতে পারে না সে। বিবাহ-বহির্ভূত যৌনকর্মের দুঃসহ স্মৃতি তাড়া করে বেড়াতে থাকে তাকে। লোকলজ্জার ভয়ে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তার জীবন। সৌরভকেও প্রচণ্ড মিস করতে থাকে সে।
অপর কাহিনীতে দেখা মেলে ভিকি কৌশালের। বেনারসের অচ্ছুৎ ডোম সম্প্রদায়ে তার জন্ম। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তাকেও গঙ্গার ঘাটে ডোমের কাজ শুরু করতে হয়। একদিন তার দেখা হয় শ্বেতা ত্রিপাঠির সাথে। প্রেমে পড়ে যায় সে। শ্বেতা উচ্চবর্ণের মেয়ে। তারপরও ভিকির সাথে মিশতে শুরু করে সে, এবং একপর্যায়ে সে-ও ভালোবেসে ফেলে ভিকিকে। কিন্তু দুজনেরই মনে ভয়, তাদের সম্পর্ক কেউ মেনে নেবে না। জাতপাতের পার্থক্য সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তবু বিয়ের পরিকল্পনা করে তারা। কিন্তু তার আগে পরিবারের সাথে তীর্থযাত্রায় যায় শ্বেতা। একদিন ভিকি যখন ঘাটে কাজ করছিল, তখন সে একটি মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনার কথা শুনতে পায়, যেখানে বাসের সব যাত্রীই মারা গেছে। মৃতদের মাঝে একজনের হাতের আঙুলে আংটি দেখে আঁতকে ওঠে সে। মৃতের মুখ দেখার পর তার আশঙ্কাই সত্যি হয়।
আপাতদৃষ্টিতে খুবই সহজ-সরল মনে হলেও, এই ছবির শেষাংশেই এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যার ফলে আপনার মনে দীর্ঘক্ষণ রয়ে যাবে এ ছবি দেখার রেশ। এবং এক্ষেত্রেও আপনাকে নিজেকেই ভেবে নিতে হবে, শেষ পর্যন্ত কী হয় ছবির চরিত্রদের ভাগ্যে।
ওয়েটিং
২০১৬ সালে ভারতে মুক্তি পায় ছবিটি। আগের চারটি ছবিতেই অনুরাগ কাশ্যপ থাকলেও, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এতে তিনি নেই। তারপরও এই ছবিটির সাথে মাসানের একটি সংযোগ আমরা খুঁজে পাই, সেটি হলো: দুটি ছবির প্রযোজকই দৃশ্যম ফিল্মস! তবে সে যা-ই হোক, এই ছবির পরিচালক ছিলেন অনু মেনন, আর প্রধান দুই ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নাসিরুদ্দিন শাহ ও কল্কি কোয়েচলিন।
এই ছবিতে দেখা যায় নাসিরুদ্দিন শাহ একটি হাসপাতালে এসে উপস্থিত হন তার কোমায় থাকা স্ত্রীকে দেখতে। পেশায় নাসির একজন মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক। অপরদিকে ওই একই হাসপাতালেই ছুটে আসে কল্কি, তার স্বামীর সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হওয়ার খবর পেয়ে। নাসিরকে ডাক্তার ভেবে ভুল করে কল্কি। নাসির তাকে নিজের স্ত্রীর ব্যাপারে জানান। কল্কিও নিজের অবস্থার কথা খুলে বলে। দুজন মানুষ নিজেদের মধ্যে মিল খুঁজে পায়, এবং খুব সহজেই একে অপরকে অনুভব করতে পারে। পরে কিছু ভুল বোঝাবুঝি তাদের সম্পর্ককে আরও গাঢ় করে তোলে। নাসিরের সান্নিধ্যে থেকে কল্কি ক্রমশ মানসিক শক্তি ফিরে পেতে থাকে।
কিন্তু শেষে কী হবে, সেটি পুরোটাই নির্ভর করছে আপনার নিজের কল্পনাশক্তির উপর। ছবির দুই চরিত্র যেমন শুরু থেকেই তাদের প্রিয়জনের সুস্থতার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে, কিন্তু তাদের অপেক্ষা আর ফুরোতেই চায় না, তেমনই ছবি শেষ হয়ে গেলেও দর্শক হিসেবে আপনাকে অপেক্ষায় থাকতে হবে সকল হিসেব মেলানোর জন্য। পরিচালক নিজে থেকে সেই হিসেব মিলিয়ে দেখাননি, তাই আপনাকেই সেই দায়িত্বটুকু পালন করতে হবে।
শেষ কথা
এমন নয় যে বলিউডে কেবল এই ছবিগুলোতেই দেখা গেছে ওপেন এন্ডিং ক্লাইম্যাক্স। এগুলোর বাইরেও অনেকগুলো ছবিতেই এমন ক্লাইম্যাক্স দেখা গেছে। সেগুলোর মধ্যে উড়তা পাঞ্জাব, ধোবি ঘাট, বাদলাপুর, পিকু, উড়ান, তালভার, কোর্ট, ১৫ পার্ক এভিনিউ ছবিগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাই কেউ যদি ভেবে থাকেন কেবল আন্ধাধুনেই ওপেন এন্ডিং ছিল, তাহলে বলতেই হবে তার বলিউড বিষয়ক অভিজ্ঞতা নিতান্তই নগণ্য। অভিজ্ঞতার ঝুলিকে সমৃদ্ধ করতে এখনই উপরিউক্ত ছবিগুলো দেখে ফেলা প্রয়োজন তার।
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/
This Bangla article is about the best open-ending movies made in Bollywood. References are hyperlinked inside the article.
Featured Image © NDTV