‘ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ’
অর্থ্যাৎ, অধ্যয়নই ছাত্রছাত্রীদের জন্য তপস্যা- এই প্রবাদটির সঙ্গে পরিচয় হয়তো অনেকেরই। তবে একবিংশ শতাব্দীর ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে শুধু অধ্যয়নই কেন, বাস্তবিক নানামুখী চ্যালেঞ্জ সামলে নিজেকে বেগবান রাখাটাও কম তপস্যার বিষয় নয়। এ যুগে 'যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে'! হোক ক্লাস, পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট অথবা ল্যাব, সেমিনার; সব সামলে নিজের জোগাড়যন্ত্রটাও নিজেকেই করে নিতে হয় অনেকসময়। বিশেষ করে প্রবাসী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কথাটা বেশ জোরালোভাবেই প্রযোজ্য।
কেমন হয় স্রোতের সাথে পাল্লা দিয়ে চলার এই দ্রুতগামিতা যদি দেখানো যায় হেঁশেলেও? সহজে অথচ কম খরচে বা পরিশ্রমেই বানিয়ে নেয়া যায় যুৎসই খাবার? সময়ের সাথে ছুটতে থাকা জীবনের সাথে মানানসই কিছু সহজ ও চটজলদি রেসিপিই থাকছে এই লেখায়।
ঝটপট এগ নুডলস
ইন্সট্যান্ট নুডলস এর নাম প্রায় সবাই জানে। চটপট তৈরি করে ফেলতে পারায় এর আবেদন সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মাঝেও জনপ্রিয়। তবে শুধু নুডলস কেক আর ‘টেস্টমেকার’ সহযোগে তৈরি সাদামাটা নুডলসকে হালকা সবজি ও ডিমের ছোঁয়ায় দিতে পারেন ভিন্নরকম স্বাদ:
কড়াই বা ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করুন।
- তাতে কাটা পেঁয়াজ, মটরশুঁটি, শিম, টমেটো কিংবা পছন্দমতো যে কোনো সবজি দিয়ে ভেজে নিন।
- এবার নুডলস কেকগুলো দিয়ে পরিমাণমতো পানি, টেস্টমেকার এবং একটি ডিম যোগ করুন।
- পানি শুকিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত রান্না করুন। সহজেই তৈরি হয়ে গেল এগ নুডলস!
আলু-মটর স্যান্ডউইচ
স্যান্ডউইচ এর জন্য সবসময়ই ফাস্টফুড শপ কিংবা রেস্টুরেন্ট এ যেতে হবে এমন তো কথা নেই! কেমন হয় যদি মাঝেমাঝে ঘরেই বানিয়ে নেওয়া যায় স্বাস্থ্যসম্মত কিন্তু উপাদেয় মচমচে স্যান্ডউইচ?
- এরজন্য আপনাকে প্রথমেই সেদ্ধ করে নিতে হবে আলু ও কিছু মটরশুঁটি।
- এবার আলুগুলোকে চেপে ভর্তা করে নিয়ে তাতে সেদ্ধ মটরশুঁটি ও নুন-মশলা মিশিয়ে পুর তৈরি করে নিন।
- ব্রেডের স্লাইসগুলিকে টোস্ট করে নিন। টোস্ট করা স্লাইসগুলির উপরে টমেটোকুচি দিয়ে তার ওপর আলু-মটরের পুর দিন। এরপর তা আরেকটি ব্রেডস্লাইস দিয়ে ঢেকে দিন।
- ওপরে পছন্দসই সস কিংবা চিজ দিয়ে পরিবেশন করুণ স্বাস্থ্যসম্মত স্যান্ডউইচ।
ভেন্ডি ফ্রাই
তাড়াহুড়োয় আছেন? চাই চটজলদি সবজির পদ? তাহলে বেছে নিতে পারেন ঢেঁড়স বা ভেন্ডি এবং তা ভেজে নিতে খুব একটা বেশি সময় খরচ হবে না আপনার।
- ঢেঁড়স ধুয়ে শুকিয়ে নিন। উভয় পার্শ্বের কিনারের অংশ কেটে ফেলে দিন।
- এরপর দু-ইঞ্চি লম্বা করে টুকরো করে নিন।
- কড়াইয়ে তেল গরম করে নিয়ে তাতে আস্ত জিরা ফোড়ন দিন। সেগুলি বাদামী বর্ণ ধারণ করলে তাতে পেঁয়াজকুচি যোগ করুন, হালকা সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- কাঁচামরিচ যোগ করে আধা মিনিট পর্যন্ত নাড়ুন।
- এবার তাতে ঢেঁড়স দিন। তারপর এতে লাল মরিচের গুঁড়া, ধনেগুঁড়া এবং হলুদগুঁড়া যোগ করুন।
- ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে লবণ এবং আমচুর (ঐচ্ছিক, টকমিষ্টি স্বাদ চাইলে) যোগ করুন।
- ভেন্ডি প্রায় রান্না হয়ে এলে আঁচ বাড়িয়ে আরো দু মিনিট রান্না করুন।
- এবার নামিয়ে ফেলুন, তৈরি হয়ে গেল ভেন্ডিভাজি।
এগ পোলাও
উপকরণ:
- বাসমতি কিংবা অন্য কোনো সুগন্ধি চাল- ২ কাপ
- ডিম- ২/৩টি
- ঘি/মাখন/তেল- ২ টেবিল চামচ
- ধনেপাতা- সাজানোর জন্য
- পেঁয়াজ- বড় পেঁয়াজের এক চতুর্থাংশ কুচি করে নেয়া
- কাঁচামরিচ- ৫টি চিরে নেয়া
- টমেটো- ছোট আকৃতির একটি (কেটে নেয়া)
- আদা-রসুনের পেস্ট- দেড় চা চামচ
- আস্ত গরম মসলা- ১টি তেজপাতা, ৩টি লবঙ্গ, ২ ইঞ্চি লম্বা একটি দারুচিনি, ১টি তারামৌরি
- লবণ- স্বাদমতো
- পানি- ৩ কাপ
প্রণালি
- প্যানে ঘি গরম করে তাতে আস্ত গরম মশলা ফোড়ন দিন।
- পেঁয়াজকুচি ভাজুন ও তাতে একে একে আদা-রসুনের পেস্ট, টমেটো, কাঁচামরিচ এবং লবণ যোগ করে ভাজুন।
- মিশ্রণে ডিম ভেঙ্গে দিন এবং ডিমটি কুচিকুচি হয়ে রান্না হয়ে যাবার আগ পর্যন্ত ভাজুন। হয়ে গেলে মিশ্রণে পানি যোগ করুন।
- পানি ফুটতে শুরু করলে আগে ভিজিয়ে রাখা চাল যোগ করুন এবং কম তাপে রান্না করুন। চাইলে, উক্ত মিশ্রণ, পানি ও লবণসহযোগে চালগুলিকে একসাথে রাইসকুকারে রান্না করে নিতে পারেন।
- হয়ে গেলে উপরে ধনেপাতা দিয়ে সাজিয়ে যে কোনো তরকারির সাথে পরিবেশন করুন। সহজেই তৈরি হয়ে গেল এগ পোলাও।
টিপস
ভাজার জন্য চুলোয় কড়াই চাপাবার সময়ই চাল ভিজিয়ে নিন, তাহলে রান্নার সময় চাল ভেঙে যাবে না।
পুষ্টি গুণাগুণ
কিলোক্যালরি- ৫২০
ফ্যাট- ১৪.৯ গ্রাম
স্যাচুরেটস- ৪.৪ গ্রাম
শর্করা- ৫২.৪ গ্রাম
সুগার- ১০.৫ গ্রাম
ফাইবার- ৪.৬ গ্রাম
প্রোটিন- ৪১.৮ গ্রাম
লবণ- ৫.৪ গ্রাম
মেল্ট-ইন-দ্য-মিডল মাডকেক
প্রস্তুতি: ৩ মিনিট
রান্নার সময়: ১ মিনিট
রান্নার ধরণ: সহজ
পরিবেশন: ১ জন
এই চকোলেট কেক মগে তৈরি করা হয়। কাজেই এতে বিভিন্ন পাত্র ব্যবহারের কোনো ঝঞ্ঝাট নেই, রান্না হতেও সময় নেয় মাত্র ৪৫ সেকেন্ড। এই কেকের কেন্দ্রভাগে থাকা তরল চকলেটের মজাদার স্তর একে ঝটপট তৈরি হওয়া খাবারগুলির মধ্যে অন্যতম করে তুলেছে।
উপকরণ
- তেল- ২ টেবিল চামচ
- ডিম- মাঝারি, ১টি
- ময়দা- ২ টেবিল চামচ
- লাইট ব্রাউন সুগার- ৩ টেবিল চামচ
- কোকো পাউডার- ১ টেবিল চামচ
- ভ্যানিলা এসেন্স- সামান্য
- ফুটন্ত পানি- ১ টেবিল চামচ
- নরম চকোলেট ট্রুফল- ১টি
- আইসক্রিম কিংবা ক্রিম- পরিবেশনের জন্য (ঐচ্ছিক)
প্রণালি
- চকোলেট ট্রুফল ব্যতীত অন্যান্য সকল উপকরণ, এক চিমটি লবণসহযোগে একটি বড় মগে (যেমন- ৩৫০ মিলি.) নিয়ে কাঁটাচামচ দিয়ে ফেটিয়ে মেশান।
- চকোলেট ট্রুফলটি খামিরের মাঝে চেপে ঢুকিয়ে দিন। এবার, মগটি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে হাই এ সেট করে ৪৫ সেকেন্ড বেক করুন।
- কেকের ন্যায় বহির্ভাগের অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রে থাকবে তরল গলিত অংশ। তাই, কেকটি গরম গরম পরিবেশন করুন পছন্দসই আইসক্রিম বা ক্রিম সহযোগে।
পুষ্টি গুণাগুণ
প্রতি পরিবেশনে রয়েছে:
কিলোক্যালরি- ৩৮৫
ফ্যাট- ৩৭ গ্রাম
স্যাচুরেটস- ১১ গ্রাম
শর্করা- ৯৬ গ্রাম
সুগার- ৬৩ গ্রাম
ফাইবার- ৩৭ গ্রাম
প্রোটিন- ১৫ গ্রাম
লবণ- ০.২ গ্রাম
স্টিয়ার-ফ্রাই চিকেন, রাইস অ্যান্ড পিজ
খুবই সাধারণ ও চটপট তৈরি হয়ে যাবার রেসিপি এটি। এটি শিখে নিলে অন্যান্য স্টিয়ার-ফ্রাই রেসিপিগুলিও অনায়াসে আয়ত্ত করা যাবে।
ফুলোফুলো রকমের ভাতের জন্য, আগেই ভাত রান্না করে নিন এবং সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে রাখুন। অর্থাৎ, আগের দিনের বেঁচে যাওয়া ভাত দিয়েও আপনি এটি বানিয়ে ফেলতে পারবেন। পরিবেশনের জন্য লাইট সয়াসস ও সুইট চিলিসসের ছোট বোতল যোগাড় করে রাখতে পারেন।
পরিবেশন: ২-৩ জন
উপকরণ
- চিকেন ব্রেস্ট- ২টা, ডাইস করে কেটে নেয়া
- পেঁয়াজকলি- ৩-৪টি, মিহিকুচি
- ফ্রোজেন মটরশুঁটি- ১০০ গ্রাম
- রান্না করে রাখা ভাত- ১৫০ গ্রাম
- ডিম- ২টি
- তেল- রান্নার জন্য
প্রণালি
- পাত্র অথবা রাইস কুকারে ভাত রান্না করে নিন এবং পুরোপুরি ঠাণ্ডা করুন।
- একটি ওক (Wok-চাইনিজ রান্নায় ব্যবহৃত গোল তলা বিশিষ্ট ফ্রাইপ্যান) কিংবা কড়াইয়ে এক টেবিল চামচ সানফ্লাওয়ার অয়েল কিংবা তিলের তেল দিয়ে তাতে ডাইস করা চিকেনগুলো দিয়ে ভাজুন।
- এবার তাতে পেঁয়াজকলি ও মটরশুঁটিগুলো দিয়ে রান্না করুন।
- এবার রান্না করে রাখা ভাত দিয়ে তা নাড়ার চামচ দিয়ে ভেঙে মেশান।
- সবকিছু গরম হয়ে উঠা পর্যন্ত নেড়ে নেড়ে রান্না করুন। এবার ডিম ভেঙে দিন। মেশাতে থাকুন যতোক্ষণ না ডিমগুলি পুরোপুরিভাবে রান্না হয়।
- লাইট সয়াসস ও সুইট চিলিসস সহযোগে পরিবেশন করুন।
হোমমেড পিৎজা
হুটহাট পিৎজা খেতে কার না ইচ্ছে করে? ইতালীয় ঘরানার এই খাবার যেমন জনপ্রিয় তেমনি মজাদার। ছাত্রদের মধ্যে যারা বাইরে পড়াশোনা করেন তাদের অনেকেই প্রায়শই পিৎজা খেয়ে থাকেন। বাইরে গিয়ে বা বাইরে থেকে আনিয়ে আপনি পিৎজা খেতেই পারেন, কিন্তু সবসময় তা করলে খরচের খাতাটা ভারী হবেই বৈকি। কাজেই ঘরেই একটু কম খরচে পিৎজার ঘরোয়া সংস্করণ বানিয়ে নিলে রসনাতৃপ্তির পাশাপাশি কিঞ্চিৎ অর্থসঞ্চয়ের ব্যবস্থাও হয়ে যাবে।
পরিবেশন- ১ জন
গড় খরচা: ৩.১০ ইউরো
উপকরণ
- সেল্ফ রেইজিং ফ্লাওয়ার- ১০০ গ্রাম (সেলফ রেইজিং ফ্লাওয়ারে ময়দার সাথে বেকিং পাউডার ও লবণ মেশানো থাকে। যদি শুধু ময়দা ব্যবহার করেন তবে তার সাথে সামান্য বেকিং পাউডার ও স্বাদমতো লবণ যোগ করে নিতে হবে)
- দুধ- ৬০ মি.লি.
- অলিভ অয়েল- ১ টেবিল চামচ
- কাটা টমেটো- ১ টিন
- মিক্সড হার্বস- পছন্দমতো
- পছন্দসই টপিং যেমন- পেপেরনি, চিকেন, বেল পেপার, পেঁয়াজ, মাশরুম, আনারস ইত্যাদি।
- গ্রেট করা চিজ
প্রণালি
- ওভেন প্রিহিট অথবা ফ্যান কিংবা গ্যাস মার্ক- এ সেট করুন যথাক্রমে ২০০° সেলসিয়াস, ১৮০° ফারেনহাইট, ৬ এ।
- টপিং প্রস্তুত করুন। মাংস, সবজি কেটে নিন, চিজ গ্রেট করে রাখুন।
- বড় মিক্সিং বোলে সেলফ রাইজিং ফ্লাওয়ার, দুধ এবং তেল মেশান। হাত দিয়ে মিশিয়ে খামির তৈরি করুন।
- বেলনচাকিতে হালকা ময়দা ছিটিয়ে তার ওপর খামিরটি রেখে বেলে গোল আকার দিন। খেয়াল রাখবেন খামিরের পুরুত্ব যেন ২.৫ মিলিমিটার এর কাছাকাছি হয়। এবার তেলব্রাশ করা বেকিং ট্রেতে গোল করা খামিরটি বসান।
- কাটা টমেটোগুলি খামিরের ওপরে দিন এবং খামিরটির কিনার বরাবর ছড়িয়ে দিন। ওপরে পছন্দসই মিক্সড হার্বস যোগ করুন।
- এবার যোগ করুন টপিং ও চিজ।
- টপ শেলফে ২০ মিনিট রান্না করুন।
- তৈরি হয়ে গেল ঘরোয়া পিৎজা।
সসি পাস্তা
পরিবেশন: ২ জন
উপকরণ
- অলিভ অয়েল- ১ চা চামচ
- কাটা টমেটো- ১ টিন
- রসুন- ২ কোয়া, মিহি কুচি করে নেয়া
- ভেজিটেবল স্টক- ১ টেবিল চামচ
- মিক্সড হার্বস- সামান্য
- সেদ্ধ করা পাস্তা
- চিজ (ঐচ্ছিক)
প্রণালি
ছোট একটি সসপ্যানে অলিভ অয়েল গরম করুন। এবার তাতে রসুন দিয়ে ৩০ সেকেন্ড ভাজুন। টমেটো কুচি, ভেজিটেবল স্টক ও মিক্সড হার্বস যোগ করুন। গরম হয়ে আসা পর্যন্ত রান্না করুন এবং এবার সেদ্ধ করা পাস্তাগুলি দিয়ে দিন। নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না পাস্তাগুলো পুরোপুরিভাবে সসে ঢেকে যায়। চাইলে কুচোনো চিজ যোগ করতে পারেন। গরম গরম সসি পাস্তা হয়ে গেল তৈরি!
অমলেট
অমলেটের মতোন সোজাসাপ্টা রেসিপি আর কটাই বা আছে? নিজস্ব পছন্দের ঢঙে বানিয়ে নিতে পারেন নানান রকম অমলেট।
- দুই টেবিল চামচ দুধ, কিছুটা লবণ-গোলমরিচ সহযোগে দুটো ডিম ফেটিয়ে নিন।
- ফ্রাইং প্যানে মাখন দিয়ে গলিয়ে তাতে ডিমের মিশ্রণ ঢেলে দিন। এক মিনিট পর হালকা নাড়ুন ও চুলার আঁচ কমিয়ে দিন।
- এবার ওপরে পছন্দসই উপকরণ যেমন- সসেজের টুকরো, মাশরুম প্রভৃতি যোগ করতে পারেন। এবার অমলেটটি তলা থেকে রান্না হয়ে আসার জন্য অপেক্ষা করুন।
- যদি চিজসহ খেতে চান ওপর থেকে চিজ ছড়িয়ে দিন এবং আরো ২-৩ মিনিট (অবস্থা বুঝে সময় কমবেশি হতে পারে) রান্না করুন।
- অর্ধেকটা উল্টে ভাঁজ করে পরিবেশন করুন।
ফ্রায়েড রাইস
উপকরণ
- চাল- দুই কাপ অথবা আগেরদিনের অবশিষ্ট রয়ে যাওয়া রান্না করে রাখা ভাত- ৪ কাপ
- মিক্সড ভেজিটেবল- ১ কাপ (পছন্দসই যে কোনো সবজি বেছে নিতে পারেন যেমন- পেঁয়াজ, গাজর, বিনস, মটরশুঁটি, পানিফল, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি, বরবটি, ক্যাপসিক্যাম, মাশরুম, সেলেরি, ভুট্টা, পলাণ্ডু, বেবিকর্ন প্রভৃতি)
- মাংস- ১ কাপ (পছন্দসই যে কোনোটি, যেমন- মুরগির বুকের মাংস ফালি, টার্কি, চিংড়িমাছ বা অন্য যে কোনো মাংস বা কয়েকরকম মাংসের মিশ্রণ)
- ডিম- ২ বা ৩টি
- রসুনকুচি- ১ টেবিল চামচ
- আদাকুচি- ১ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজকলি- এক আঁটি (৬-৮টি)
- সয়াসস- ২ টেবিল চামচ
- লবণ- স্বাদমতো
- টাটকা গোলমরিচ গুঁড়ো- ১ টেবিল চামচ
- তিলের তেল- ২ টেবিল চামচ। চাইলে অলিভ অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।
- চিকেন কিউব- ১ কিউব।
প্রণালি
- সকল সবজি সমান আকৃতিতে কেটে নিন। চাইলে ডাইস কিংবা জুলিয়ান কাট দিতে পারেন। একইভাবে মাংসও একই আকৃতিতে কেটে নিন।
- গত দিনের বেঁচে যাওয়া ভাত ফ্রিজ থেকে বের করে তা দিয়েই ফ্রায়েড রাইস তৈরি করতে পারেন। যদি তা না থাকে, ২ কাপ চাল ৩ কাপ পানিতে রান্না করে নিন। রান্না করা ভাত ট্রেতে ছড়িয়ে ঠাণ্ডা করে নিন, কেননা, যদি এটিকে গরম অবস্থায় ফ্রায়েড রাইস তৈরিতে ব্যবহার করা হয় তাহলে এটি ভাজার সময় ভেঙ্গে যাবে। যে কোনো সাধারণ চালের ভাত কিংবা বাসমতি যে কোনোটাই এক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।
- একটি ছোট বোলে ডিমগুলো ফেটিয়ে নিন। এবার প্যানে তেল গরম করে তাতে ডিম দিন। ভাজা শুরু হলে তা চামচের সাহায্যে খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলুন। ভাজা হয়ে গেলে তুলে রাখুন কুচিকুচি করে ভাজা ডিম।
- এবার, কুচোনো মাংসের টুকরোগুলিকে লবণ ও গোলমরিচযোগে মাখিয়ে নিন। প্যানে তেল গরম করে মাংসগুলো তাতে দিয়ে ভেজে নিন। মধ্যমউচ্চতাপে মাংসগুলিকে নেড়ে নেড়ে ভাজুন যতোক্ষণ না মাংস ভেতরে রান্না হচ্ছে। মাংস এবার তুলে রাখুন অথবা একপাশে সরিয়ে রাখুন যেন পাত্রের মাঝখানে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়।
- এবার সেই ফাঁকা অংশে সামান্য তেল দিয়ে গরম করে তাতে আদা-রসুনকুচি দিয়ে এক মিনিট ভাজুন। এখন সবজিগুলো দিয়ে দিন এবং কয়েক মিনিট রান্না করুন।
- এবার সয়াসস, লবণ এবং চিকেন কিউব (অথবা আজিনোমতো) যোগ করুন। নেড়ে নেড়ে মাংস ও সবজিগুলিকে একসাথে মিশিয়ে আরো এক মিনিট ভাজুন। এক্ষেত্রে, ডার্ক সয়াসস ব্যবহার করা হলে গাঢ় এবং লাইট সয়াসস ব্যবহার করলে হালকা রঙ পাওয়া যাবে।
- এবার রান্না করা ঠাণ্ডা করে রাখা ভাত যোগ করুন। এখন নেড়ে নেড়ে সব একত্রে মিশিয়ে ভাজতে থাকুন যতোক্ষন না সস দিয়ে পুরো ভাত, মাংস ও সবজি সমানভাবে ভালোমতো না মেখে যায়।
- নামানোর আগে কুচোনো ভাজাডিম ও স্প্রিং অনিয়ন যোগ করে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন।
টোড ইন দ্য হোল
শীতকালের জন্য বেশ মানানসই এই রেসিপিটি।
পরিবেশন: ৪ জন।
উপকরণ
- ময়দা- ১১৫ গ্রাম
- লবণ ও গোলমরিচ- স্বাদমতো
- দুধ- ২৮৫ মি.লি.
- ডিম- ৩টি
- তেল- সামান্য
- সসেজ- ৮টি
প্রণালি
- একটি মিক্সিং বোলে ১১৫ গ্রাম ময়দা নিন। এবার তাতে কিছু লবণ-গোলমরিচ যোগ করুন।
- ধীরে ধীরে তিনটি ডিম যোগ করুন ও আস্তে আস্তে বিট করুন। অল্প অল্প করে দুধ যোগ করে মেশান ও মসৃণ খামির তৈরি করুন।
- বেকিং টিনে সামান্য তেল দিয়ে তা ওভেনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় হিট করুন। এবার তাতে ৮টি সসেজ দিন এবং হালকা সোনালী হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
- এবার ওভেন থেকে টিনটি বের করে, আগে বানানো খামিরের মিশ্রণটি সসেজের উপরে ঢেলে পুনরায় ওভেনে দিন।
- মিশ্রণটি রান্না হয়ে ফুলে উঠলে এবং মচমচে ও সোনালীবর্ণ ধারণ করলে নামিয়ে নিন।
- সবজি অথবা অনিয়ন গ্রেভিসহ পরিবেশন করুন।
হোমমেড বার্গার
বার্গার খেতে কে না ভালোবাসে? আর তা যদি হয় সহজ উপায়ে ঘরে তৈরি? তাহলে দেখে নেয়া যাক ঘরে তৈরি বার্গারের রেসিপি:
উপকরণ
- পেঁয়াজ- ১টি, কুচি করে নেয়া
- গরুর মাংস- ৫০০ গ্রাম, মিহিকুচি করে নেয়া
- ডিম- ১টি
- বার্গার বান
প্রণালি
- একটি ছোট আকৃতির পেঁয়াজ কুচিয়ে নিন এবং ৫০০ গ্রাম গরুর মাংসের কিমা ও একটি ডিম সহযোগে মিশিয়ে নিন।
- মিশ্রণটিকে চারটি অংশে ভাগ করে গোল গোল বল তৈরি করুন এবং চেপে চ্যাপ্টা করে বার্গার-প্যাটি আকারে গড়ে নিন।
- এবার প্যাটিগুলিকে প্লেটে রেখে ঢেকে দিন এবং শক্ত হবার জন্য প্রায় আধা ঘণ্টা এভাবে ফ্রিজে রাখুন।
- বার্বিকিউ কিংবা গ্রিল মেশিন ব্যবহার করলে বার্গার-প্যাটিগুলিকে তাতে দিন এবং রান্না করুন প্রায় ১৫ মিনিট পর্যন্ত বা যতোক্ষণ পর্যন্ত না পুরোপুরিভাবে রান্না হচ্ছে। রান্নার মাঝে একবার উল্টে দিতে হবে।
- চুলায় করতে চাইলে ফ্রাইপ্যান কিংবা স্কিলেটে সামান্য তেল ছড়িয়ে দিন। মধ্যম থেকে উচ্চ তাপমাত্রায় নিয়ে তাতে প্যাটিগুলি দিয়ে দুপাশে ভেজে নিন পুরোটা রান্না হয়ে আসা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে, প্যাটিগুলি তৈরির সময়ে মাঝে হালকা চেপে মধ্যভাগে কিনারের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ঢালু করে নেয়া হলে ভাজা ভালোমতো হয়।
- চিজ যোগ করতে চাইলে একপাশ ভেজে উল্টে নেবার পর প্যাটির ওপর চিজ ছড়িয়ে দিন। চিজ সহজে না গলতে চাইলে ঢাকনা দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে দিন।
- বার্গার বান চাইলে তেল বা বাটারে টোস্ট করে নিতে পারেন।
- বান, প্যাটি ও পছন্দমতো টপিং সহযোগে পরিবেশন করুন সুস্বাদু হোমমেড বার্গার।
ফাজিতাস
পরিবেশন: ২ জন
উপকরণ
- পেঁয়াজ- ১টি মাঝারি
- লাল ক্যাপসিক্যাম- ১টি
- মুরগির বুকের মাংস- ২ টুকরা
- পাপরিকা পাউডার- ১ চা চামচ
- জিরেগুঁড়ো- ১ চা চামচ
- লবণ- স্বাদমতো
- গোলমরিচ- স্বাদমতো
- তেল- সামান্য
প্রণালি
- একটি পেঁয়াজ, লাল ক্যাপসিক্যাম এবং দুই টুকরো মুরগির বুকের মাংস পাতলা ও লম্বা লম্বা করে কেটে নিন। এবার একটি মিক্সিং বোলে এগুলো নিয়ে তাতে এক চা চামচ পাপরিকা পাউডার, এক চা চামচ জিরেগুঁড়ো (যদি থাকে), নুন-গোলমরিচ যোগ করুন ও সামান্য তেল ছিটিয়ে মেশান।
- সালসা বানানোর জন্য: কিছু টমেটো, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা কেটে নিয়ে তাতে লবণ ও গোলমরিচ যোগ করুন। এবার তাতে লেবু কিংবা লাইমের রস ও সামান্য তেল যোগ করে নেড়ে মেশান।
- এদিকে মুরগির মিশ্রণ কয়েক মিনিট ম্যারিনেট করে রাখার পর, আগে থেকে গরম করে রাখা প্যানে প্রায় দশ মিনিট রান্না করুন, যতোক্ষণ পর্যন্ত না মুরগির মাংস ভালোভাবে রান্না হয়।
- কিছু আটার টরটিয়া/রুটি মাইক্রোওয়েভে গরম করুন।
- এবার তাতে মুরগির মাংসের তৈরি পুর দিয়ে আপনার বাসায় বানানো সালসা, গ্রেট করা চেডার চিজ, সাওয়ার ক্রিম এবং গুয়াকামোল প্রভৃতি দিয়ে পরিবেশন করুন।
আনারদানা রায়তা
টকদই ফেটিয়ে নিন যতোক্ষণ না এতে একটি ক্রিমি ভাব আসে। অতঃপর এতে এক চিমটি লবণ ও কিছুটা লাল মরিচগুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এবার তাতে আনারের রস ও দানা যোগ করে মেশান। তৈরি হয়ে গেলো আনারদানা রায়তা!
এগলেস ফ্রুট কাস্টার্ড
ফ্রুট কাস্টার্ড এমন একটি মিষ্টি খাবার যা বহু বছর ধরে এই উপমহাদেশে প্রচলিত ও জনপ্রিয়। বাসা-বাড়ি এবং রেস্তোরাঁগুলোতে সহজেই এর দেখা মেলে। তৈরির প্রক্রিয়া সহজ এবং এটি বেশ উপাদেয়।
ভারী খাবারের পর ক্রিমি কাস্টার্ডের সাথে কাটা ফলের যুগলবন্দী কার কাছে উপভোগ্য নয়? এখানে যে কাস্টার্ডটির কথা বলা হচ্ছে তা যেকোনো দোকানে সহজলভ্য কাস্টার্ড পাউডার দিয়েই তৈরি করা হবে। বাজারে এই কাস্টার্ড পাউডার বিভিন্ন ফ্লেভারে পাওয়া যায় যেমন- স্ট্রবেরী, ভ্যানিলা, ম্যাংগো প্রভৃতি। ভেগান পাউডারগুলো কর্নস্টার্চ দিয়ে তৈরি এবং সম্পূর্ণ আমিষবিহীন (ডিমবিহীন)।
প্রস্তুতির সময়: ১৫ মিনিট
রান্নার সময়: ১০ মিনিট
পরিবেশন- ৬-৮ জন
উপকরণ
- ভ্যানিলা ফ্লেভার্ড কাস্টার্ড পাউডার- ২ টেবিল চামচ
- ঠাণ্ডা দুধ- সিকি কাপ
- দুধ- ৫০০ মি.লি. (প্রায় আড়াই কাপ)
- চিনি- সিকি কাপ অথবা প্রয়োজনমতো
- ফল- পছন্দসই ফল কয়েক রকমের, ৩ কাপ (কুচি করে নেয়া)
প্রণালি
- একটি মিক্সিং বোলে ২ টেবিল চামচ কাস্টার্ড পাউডার নিয়ে তাতে সিকি কাপ ঠাণ্ডা দুধ যোগ করুন এবং মেশাতে থাকুন যতোক্ষণ না মসৃণ পেস্ট তৈরি হয়।
- এবার, বাকী দুধটুকু (৫০০ মি.লি.) একটি সসপ্যানে নিয়ে জ্বাল দিন। ফুটতে শুরু করলে চিনি যোগ করুন।
- চুলোর আঁচ কমিয়ে ধীরে ধীরে কাস্টার্ডমিশ্রিত দুধের মিশ্রণটি যোগ করুন। যোগ করার সময় সসপ্যানের মিশ্রণটি অনবরত নাড়তে থাকুন যেন কোনোভাবেই জমাট না বেঁধে যায়।
- মৃদু আঁচে অনবরত ৩-৫ মিনিট নাড়তে নাড়তে রান্না করুন। কাস্টার্ড মিশ্রণটি ঘন হয়ে আসবে এবং এর কাঁচা ভাবটি চলে যাবে।
- চুলো নিভিয়ে দিন, একটু ঠাণ্ডা হলে ফ্রিজে ঢুকিয়ে ঠাণ্ডা করুন।
- এই ফাঁকে কিছু পছন্দসই ফল টুকরো করে নিন। ফল আপনার পছন্দমতো বেছে নিতে পারেন। আপেল, নাশপাতি, কলা, আনার, বাঙ্গি, আঙ্গুর, আম, স্ট্রবেরিসহ নানান ফল ব্যবহার করতে পারেন। সাথে চাইলে বাদামকুচিও যোগ করতে পারেন। সাথে টুকরো করা কেকও ব্যবহার করতে পারেন।
- পরিবেশনের সময় কাটা ফলগুলো নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রতিটি সার্ভিং বোলে নিন এবং উপরে ফ্রিজে রাখা কাস্টার্ডের মিশ্রণটি ছড়িয়ে দিন। এবার উপভোগ করুন ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা স্বাস্থ্যকর ফ্রুট কাস্টার্ড।
কুইক অ্যাণ্ড স্পাইসি নাসি গোরেং
প্রস্তুতি: ১০ মিনিট
রান্নার সময়: ১০ মিনিট
ধরণ: সহজ
পরিবেশন: ১ জন
উপকরণ
- ভেজিটেবল অয়েল- ২ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজকুচি- ছোট ১টি, মিহি করে কাটা
- রসুন- ২ কোয়া, থেঁতলে নেয়া
- গাজর- ১টি, গ্রেট করে নেয়া
- চাইনিজ অথবা স্যাভয় বাধাকপি- অর্ধেকটা, কুচি করে নেয়া
- ব্রাউন রাইস- ১৭৫ গ্রাম, রান্না করে নেয়া
- ফিশ সস- ১ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক)
- সয়াসস- ১ টেবিল চামচ
- ডিম- ১টি
- লবণ ও গোলমরিচ গুঁড়ো- স্বাদমতো
- হট চিলি সস- পরিবেশনের জন্য
প্রণালি
- প্যানে উচ্চতাপে তেল গরম করুন। তাতে পেঁয়াজ যোগ করে ৩-৪ মিনিট ভাজুন যতক্ষণ না নরম হয়ে হালকা বাদামী বর্ণ ধারণ করে। এবার রসুনকুচি দিয়ে ১ মিনিট নাড়ুন।
- গাজর এবং বাঁধাকপি যোগ করে নেড়ে ১-২ মিনিট রান্না করুন। রান্না করা ভাত যোগ করে নেড়ে মেশান যতক্ষণ না সেগুলি গরম হয়।
- এবার সয়াসস, ফিশসস এবং কিছু লবণ-গোলমরিচ ও পছন্দসই মশলা যোগ করুন।
- ভাতের মিশ্রণের মাঝখানে কুয়োর ন্যায় গর্ত করুন এবং তাতে একটি ডিম ভেঙ্গে দিন। ডিমের সাদা অংশ প্রায় শক্ত হয়ে আসা পর্যন্ত রান্না করুন।
- বড় বাটিতে রাইস পরিবেশন করুন, ওপরে ডিমটি দিন এবং চিলি সস ছিটিয়ে পরিবেশন করুন নাসি গোরেং।
বি.দ্র: সয়াসস ও ফিশসসে আগে থেকেই লবণ থাকায় লবণ যোগ করার সময় সাবধানী হতে হবে।
পুষ্টিগুণ
প্রতি পরিবেশনে রয়েছে:
কিলোক্যালরি: ৫৪০
ফ্যাট- ৩০ গ্রাম
স্যাচুরেটস- ৫ গ্রাম
শর্করা- ৪৭ গ্রাম
সুগার- ১১ গ্রাম
ফাইবার- ৯ গ্রাম
প্রোটিন- ১৭ গ্রাম
লবণ- ৬.৪ গ্রাম
ওটস স্যুপ
প্রতিদিনকার খাদ্যাভ্যাসে ওটসকে যুক্ত করার সহজতম উপায়গুলির একটি হলো ওটস স্যুপ। এটি বানানো সহজ, তৈরিতে উপাদানও লাগে যৎসামান্য এবং স্বাস্থ্যকরও বটে।
ওটস সাধারণত পরিজ আকারে পরিবেশিত হয়। হয় এতে তাজা ফল, ড্রাইফ্রুটস, মধু, চিনি, ব্রাউনসুগার প্রভৃতি সহযোগে মিষ্টতা যোগ করা হয়; নতুবা মশলার সংমিশ্রণে চটকদার স্বাদের ওটসও তৈরি করা হয়। এই রেসিপিটি মশলাদার ঘরানার যাতে পরিমিত মশলা ও সবজির মেলবন্ধন ঘটিয়ে তৈরি হয়েছে স্বাদের ভিন্নমাত্রা।
প্রস্তুতি: ৫ মিনিট
রান্নার সময়: ১০ মিনিট
পরিবেশন: ৪ জন
উপকরণ
- ওটস- ১ কাপ
- পেঁয়াজকুচি- ১টি পেঁয়াজের অর্ধেকটা
- কাঁচামরিচকুচি- ১টির
- রসুনকুচি- ১টি কোয়ার
- লবণ- স্বাদমতো
- গোলমরিচ গুঁড়া- এক চিমটি
- পানি- ১ কাপ
- দুধ- ১ কাপ
- তেল- ২ চা চামচ
- ধনেপাতা- সাজানোর জন্য
প্রণালি
- প্যানে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজকুচি, কাঁচামরিচকুচি এবং রসুনকুচি যোগ করে ভাজুন যতোক্ষণ না সেগুলো তেল ছাড়তে থাকে।
- এবার ওটসগুলো যোগ করুন এবং ২ মিনিট ভাজুন। এবার তাতে লবণ ও পানি যোগ করে ফোটান।
- এবার তাতে দুধ ও গোলমরিচগুঁড়া যোগ করে মেশান ও ফোটান।
- ঘন ও ক্রিমি ওটস স্যুপের উপর ধনেপাতা কিংবা পেঁয়াজকলি কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
- চাইলে ওটসে বিভিন্ন সবজির মিহিকুচি যেমন- গাজর বা মটরশুঁটি যোগ করতে পারেন।
- বেশি মশলাদার স্যুপ খেতে চাইলে এতে গরমমশলাগুঁড়া বা জিরেগুঁড়া যোগ করতে পারেন।
সারাদিনের ধকল শেষে তেমন কিছু করার শক্তি নেই? তবুও চিন্তা নেই। আগেরদিনের রান্না করা মুরগি বা অন্য কোনো মাংসের পদ দিয়েও খেতে পারেন ওটস। সেক্ষেত্রে:
- চুলায় পানি দিয়ে তাতে ওটস যোগ করে ফোটান।
- সেদ্ধ হয়ে জাউভাতের মতোন ঘনত্বে এলে চুলা থেকে নামান ও আগেরদিনের বেঁচে যাওয়া মাংসের তরকারি যোগ করে মেশান।
- এবার সামান্য লেবুর রস যোগ করলেই ফ্লেভারফুল কুইক ওটস রেডি!
কেদগিরি অমলেট
রান্নার সময়- ২৫ মিনিট
পরিবেশন- ২ জন
ধরন: সহজ
কেদগিরি একধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার যা ব্যাঞ্জনসম্বলিত রাইস, কুচি করা স্মোকড মাছ এবং শক্ত করে সেদ্ধ করা ডিমের সমন্বয়ে তৈরি হয়। তবে খাবারটির এই সংস্করণে আমরা সেদ্ধ ডিমের পরিবর্তে ডিমের ওমলেট ব্যবহার করেছি যেন কেদগিরিটি ওমলেট দিয়ে মুড়িয়ে পরিবেশন করা যায়।
উপকরণ
- স্মোকড মাছের ফিলেট- প্রায় ২৫০ গ্রাম
- দুধ- ৪০০ মি.লি.
- পেঁয়াজ- ১টি, ডাইস করে কাটা
- সানফ্লাওয়ার অয়েল
- হলুদগুঁড়ো- ১ চা চামচ
- মটরশুঁটি- ১০০ গ্রাম
- কোর্মা কারি পেস্ট- ২ টেবিল চামচ
- রান্না করা পোলাওয়ের চাল- আধা পাউচ
- ডিম- ৪টি
- চ্যাপ্টাকৃতি পার্সলেপাতা কুচি- ২ টেবিল চামচ
- লেবুর ফালি/আমের চাটনি/পাতাযুক্ত সবজি- পরিবেশনের জন্য
প্রণালি
- মাছের ফিলেটটিকে তার আকার সাপেক্ষে আঁটসাঁট একটি প্যানে নিন যেন এটি এতে যোগ করা দুধে ডুবে থাকে।
- দুধে ডোবা মাছটিকে এবার ঢাকনা বন্ধ করে জ্বাল দিন যতোক্ষণ না বলক আসে। যেইমাত্র দুধ ফুটতে শুরু করবে চুলার তাপ বন্ধ করে দিন এবং ঢাকনাবদ্ধ অবস্থাতেই মাছটিকে পাঁচ মিনিট রাখুন।
- অন্য একটি প্যানে এক টেবিল চামচ তেলে পেঁয়াজকুচি ভাজুন যতোক্ষণ না তা নরম হয়। এরপর তাতে হলুদগুঁড়ো যোগ করুন।
- এবার, মটরশুঁটি, কোর্মা পেস্ট, ভাত যোগ করে পাঁচ মিনিট রান্না করুন যতোক্ষণ পর্যন্ত না সেগুলি সঠিকভাবে গরম হয়।
- এদিকে দুধে ভেজনো মাছটি দুধ থেকে উঠিয়ে নিন এবং চামড়া ছাড়িয়ে ও কাঁটা বেছে মাছটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন। ভাতের মিশ্রণে মাছ যোগ করুন।
- একটি পাত্রে দুইটি ডিম ফেটে নিন, তাতে ১ টেবিল চামচ পার্সলে কুচি ও নুন-গোলমরিচ যোগ করুন।
- অন্য একটি প্যানে এক চা চামচ তেল গরম করে ফেটানো ডিম অল্প করে দিয়ে পাতলা অমলেট তৈরি করুন। ডিমটি শক্ত হয়ে এলে আগে বানানো কেদগিরী মিশ্রণটির অর্ধেকটা তার ওপরের একটি অংশে দিন।
- এবার ডিমটির বাকি অংশ ওপরে ভাঁজ করে গুটিয়ে দিয়ে মিশ্রণটি ঢেকে দিন। অবশিষ্ট ডিম ও কেদগিরি মিশ্রণ দিয়ে প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি করুন।
- আমের চাটনী, লেবুর ফালি এবং পাতালো সালাদ সহযোগে পরিবেশন করুন।
পুষ্টিগুণ
কিলোক্যালরি- ৬১৮
প্রোটিন- ৪৯.১ গ্রাম
স্যাচুরেটস- ৯.৩ গ্রাম
স্প্যাগেটি বোলনিজ
সস্তায় পাওয়া খাবার যদি আপনার পছন্দসই হয়, তাহলে এই খাবারটিকে বলতে পারেন সস্তা এবং সহজপ্রস্তুতযোগ্য খাবারের রাজা! এই খাবারটির সবচেয়ে ভালো দিকগুলির একটি হলো এটি টাটকা অবস্থায় যেমন খেতে ভালো লাগে, তেমনি এটিকে নিম্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করে পরে খেতেও মজাদার লাগে, এবং ততোদিনে সবরকম উপকরণগুলো যেন পরষ্পরের সাথে আরো মিলেমিশে জন্ম দেয় আরো তীব্র স্বাদের। কাজেই যারা ছাত্র এবং সপ্তাহান্তে পরবর্তী পুরো সপ্তাহের খাবার রেঁধে রাখতে হয় তাদের জন্য এই ইতালীয় খাবারটি একদম মানানসই। এটি রান্নার সময় তাই একবারে অনেকটা বেশি পরিমাণে রান্না করতে পারেন।
উপকরণ
- গরুর মাংস মিহিকিমা করা- ৫০০ গ্রাম
- পেঁয়াজ- মাঝারি একটি, কুচি করা
- মাশরুম- কুচি করা
- রসুনের কোয়া- একটি বা দুটি, থেঁতলে নেয়া
- টমেটো- ৪০০ গ্রাম, টুকরো করা
- বীফ স্টক- ১/৪ পাইন্ট (৪৭৩ মি.লি. বা ২ কাপ)
- তেল- প্রয়োজনমত
- লবণ- স্বাদমতো, সস রান্না ও পাস্তা সেদ্ধ করার জন্য।
- চিজ
প্রণালি
- প্যানে তেল গরম করে, তাতে পেঁয়াজকুচি দিয়ে ভাজুন। বাদামী হলে, তাতে ৫০০ গ্রাম মিহিকিমা করা গরুর মাংস দিন। এবার টুকরো করা মাশরুম যোগ করে তিন মিনিট রান্না করুন।
- এবার তাতে থেঁতো করে নেয়া রসুনের কোয়া এবং ৪০০ গ্রাম কাটা টমেটো যোগ করুন।
- বীফ স্টক যোগ করুন এবং পছন্দমতো বিভিন্ন মিক্সড হার্বস মেশান (ঐচ্ছিক)। স্বাদমতো লবণ যোগ করুন।
- সব মিশিয়ে ফোটান এবং এভাবে ১৫-২০ মিনিট রান্না করুন। পানি টেনে এলেই তৈরি বোলনিজ সস। পরিবেশনের আগে চিজ যোগ করতে ভুলবেন না।
- এই ফাঁকে, পানিতে লবণ দিন। তাতে স্প্যাগেটি কিংবা পছন্দসই যেকোনো পাস্তা সেদ্ধ করে নিয়ে পানি থেকে ছেঁকে নিন। এবার, স্প্যাগেটি সার্ভিং প্লেটে ঢেলে তার ওপর তৈরি হওয়া বোলনিজ সস ঢেলে পরিবেশন করুন।
- স্বাদকে আরো অনন্য করে তুলতে টপিং হিসেবে চিজ যোগ করতে পারেন।
জ্যাকেট পটেটো
- আলু ধুয়ে নিয়ে কাঁটা চামচ দিয়ে কেচে নিন।
- আলুর চারপাশে এবার সমানভাবে লবণ লাগান।
- ২২০℃ এ প্রি-হিট করা ওভেনে আলু দিয়ে এক ঘণ্টা কুক মোডে দিয়ে রান্না করুন যতোক্ষণ না আলুর খোসা মচমচে হয়।
- এবার মাঝ বরাবর কেটে তার মধ্যে পছন্দসই পুর দিয়ে পরিবেশন করুন। পুর হিসেবে পনির, বিনস, কোলস্ল, সাওয়ার ক্রিম, কটেজ চিজ প্রভৃতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডিমের কারী
যারাই বাড়ি থেকে দূরে থেকে পড়াশোনা করেন, তারাই জানেন ডিমের মাহাত্ম্য কতোখানি! ডিমের কারি যেমনি সহজ, তেমনি অনায়াসেই কম সময়ে তৈরি হয়ে যায়।
- ডিম সেদ্ধ করে রাখুন। চাকু কিংবা কাঁটা চামচ দিয়ে কেচে নিন।
- প্যানে ২ টেবিল চামচ তেল গরম করুন, তাতে পেঁয়াজকুচি দিয়ে ভেজে, আদা-রসুনবাটা যোগ করুন।
- কয়েক মিনিট ভেজে নিন যতোক্ষণ পর্যন্ত না পেঁয়াজ বাদামী বর্ণ ধারণ করে। পেঁয়াজ ভাজা ভাজা হয়ে এলে তাতে হলুদগুঁড়া, গরমমসলা গুঁড়া, ধনেগুঁড়া এবং লালমরিচ গুঁড়া যোগ করে ভালোভাবে নেড়ে মেশান।
- এবার তাতে টমেটো পিউরি, লবণ এবং সেদ্ধ করে রাখা ডিম যোগ করুন।
- কারিটি ১০-১৫ মিনিট ফোটান যতোক্ষণ না ডিমগুলির গায়ে ভালোমতন কারির প্রলেপ না লাগে।
- তৈরি হয়ে গেল চটপট এগ কারি।
আলু কুরকুরে
- একটি মিক্সিং বোলে আলুকুচি, পুদিনাপাতা, কাঁচামরিচ, জিরাগুঁড়া, লেবুর রস এবং লবণ নিয়ে একসাথে মাখুন।
মিশ্রণটিকে হাতে নিয়ে গোল গোল বলের মতো বানিয়ে রাখুন। - একটি আলাদা বোলে ময়দা নিন এবং সামান্য পানি যোগ করে ঘন মসৃণ পেস্ট বানিয়ে রাখুন।
- প্রতিটি আলুর বল ময়দার মিশ্রণে ডুবিয়ে চালের আটায় গড়িয়ে নিন যতোক্ষণ না চালের আটা দিয়ে বলগুলোর চারদিক সমানভাবে না ঢেকে যায়।
- একটি কড়াইয়ে তেল গরম করে নিন এবং অল্প অল্প পরিমাণে নিয়ে ডিপ-ফ্রাই করুন। সোনালী-বাদামী বর্ণ ধারণ করলে নামিয়ে নিন।
ম্যাংগো রাইস
উপকরণ
- বাসমতি চালের ভাত- ১ কাপ রান্না করা
- আম- ১ কাপ (গ্রেট করা)
- সরিষার বীজ- ১ চা চামচ
- মাষকলাই এর ডাল- ১ চা চামচ
- ছোলার ডাল- ১ চা চামচ
- আদাকুচি- সামান্য
- লাল মরিচ- ২টা
- কাঁচামরিচ- ২টা
- কারিপাতা
- ধনেপাতা
- হলুদগুঁড়ো- এক চিমটি
- লবণ- স্বাদমতো
- তেল- ২ টেবিল চামচ
প্রণালি
- একটি প্যানে তেল গরম করুন, এবার সরিষা ফোড়ন দিন। মাষকলাই ও ছোলার ডাল যোগ করুন।
- আদাকুচি, লাল মরিচ, কাঁচামরিচ, কারিপাতা এবং হলুদগুঁড়ো যোগ করুন।
- কুচোনো আম, লবণ যোগ করুন এবং আম নরম না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।
- রান্না করা ভাত যোগ করুন এবং নেড়ে ভালোভাবে মেশান।
- ধনেপাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ম্যাংগো রাইস।
- চাইলে রান্নার সময় আমের সাথে কিছুটা কোরানো নারকেল যোগ করে বানিয়ে ফেলতে পারেন কোকোনাট-ম্যাংগো রাইস।
ইজি আইসক্রিম
প্রস্তুতি: ৫ মিনিট
সময়: ৬-৮ ঘন্টা
পরিবেশন- ৪ জন
উপকরণ
- ফুল ফ্যাট ক্রিম বা হেভি হুইপিং ক্রিম- ২ কাপ (১৬ আউন্স বা প্রায় ৫০০ মি.লি.)
- সুইটেনড কনডেনসড মিল্ক- ৩/৪ কাপ (৮ আউন্স বা ২৩০ গ্রাম), আপনার কাঙ্ক্ষিত মিষ্টতাভেদে পরিমাণ পরিবর্তন করুন।
প্রণালি
- শুরুর পূর্বে, একটি বড় বোল, হুইপিং ব্লেড, ক্রিম এবং কনডেনসড মিল্কের ক্যান ফ্রিজে রাখুন। সকল সরঞ্জামাদি ও উপকরণ ঠাণ্ডা থাকলে হুইপ করার প্রক্রিয়াটি দ্রুততর গতিতে করা যায়। বিশেষ করে, উষ্ণ এলাকাগুলিতে।
- বোলে ক্রিম ঢেলে নিন।
- হ্যান্ড ব্লেন্ডার কিংবা স্ট্যান্ড মিক্সার বা বিটারে করে ক্রিম বিট করতে থাকুন যতক্ষণ না স্টিফ পিক (stiff peaks) দেখা যায়। হ্যান্ড বিটার দিয়ে করতে যাবেন না, কেননা হ্যান্ড বিটার দিয়ে বিট করা খুবই দুরূহ হবে।
- এবার সুইটেনড কনডেনসড মিল্ক যোগ করুন। পুরোপুরিভাবে মিশে যাবার আগ পর্যন্ত বিট করুন। মিশে গেলে একটি মসৃণ ও ক্রিমি মিশ্রণ পাবেন।
- ফ্রিজার সেফ পাত্রে মিশ্রণটি ঢালুন। সারারাত কিংবা ৬-৮ ঘণ্টা ফ্রিজ করুন। চকোলেট সস কিংবা ক্যারামেল সস সহযোগে আস্বাদন করুন মজাদার সফট আইসক্রিম।
ফ্লেভার্ড আইসক্রিম
উপরিউক্ত আইসক্রিমের রেসিপিটিতে যদি যোগ করতে চান পছন্দসই ফ্লেভারের জৌলুস তবে চেষ্টা করে দেখতে পারেন এভাবে:
- ভ্যানিলা আইসক্রিম: মূল আইসক্রিমটি বানানোর সময় তাতে ১ টেবিল চামচ ভালো মানের ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট যোগ করুন। এবার ফ্রিজারে জমালেই তৈরি!
- স্ট্রবেরি আইসক্রিম: ৮টি স্ট্রবেরি, আধা কাপ পানি ও ২ টেবিল চামচ চিনি দিয়ে স্ট্রবেরির পিউরি তৈরি করুন। ২ কাপ পূর্বে বানানো আইসক্রিম এর সাথে আধা কাপ স্ট্রবেরি পিউরি মিশিয়ে তারপর ফ্রিজ করুন।
- ম্যাংগো আইসক্রিম: বাজার থেকে কেনা ম্যাংগো পিউরি কিংবা একটি গোটা পাকা আম দিয়ে এটি তৈরি করতে পারেন। ২ কাপ মূল আইসক্রিম মিশ্রণটির সাথে সিকি কাপ ম্যাংগো পিউরি মেশান এবার সিকি কাপ পাকা আমের কুচি তাতে মেশান। ফ্রিজ করলেই তৈরি বাড়িতে বানানো মজাদার ম্যাংগো আইসক্রিম।
- ওরিও আইসক্রিম: প্রায় ৭-৮টি ওরিও কুকিজ ভেঙে গুঁড়ো করে ২ কাপ মূল আইসক্রিমের মিশ্রণের সাথে মেশাতে হবে। এবার ফ্রিজ করুন।
- মিন্ট চকোলেট চিপ আইসক্রিম: এক চা চামচ পেপারমিন্ট এক্সট্রাক্ট এবং এক কাপ চকোলেট চিপস মেশান ২ কাপ আইসক্রিমের মূল মিশ্রণের সাথে। চাইলে কয়েক ফোঁটা গ্রিন ফুড কালার যোগ করতে পারেন।
- এছাড়াও আপনার পছন্দসই ফল যেমন-অ্যাপ্রিকট, কাঁঠাল, ডুমুর, কিউই ইত্যাদি সহযোগে তৈরি করতে পারেন আপনার প্রিয় ফ্লেভারের ঘরোয়া স্বাদের আইসক্রিম।
পাস্তা পায়েসম
প্রস্তুতি: ৫ মিনিট
রান্নার সময়: ৩০ মিনিট
পরিবেশন: ৪
উপকরণ
- ছোট শেল পাস্তা অথবা ম্যাকারনি পাস্তা- ১ কাপ
- পানি- দেড় কাপ
- পূর্ণ ননীযুক্ত দুধ- ২ কাপ
- চিনি- আধা কাপ
- কেসারি পাওডার- এক চিমটি (ঐচ্ছিক)
- কিসমিস- ১০টি
- কাজুবাদাম অথবা আমন্ড- ১০টি, কেটে নেয়া
- ঘি/তেল- ২ টেবিল চামচ
প্রণালি
- একটি পাত্রে পানি গরম করে তাতে পাস্তাগুলো দিন। তলায় লেগে যাওয়া আটকাতে কিছুক্ষণ পরপর নাড়ুন।
- পাস্তা আধাসেদ্ধ হয়ে গেলে দুধ যোগ করুন এবং ফোটান। ক্রমাগত নাড়তে থাকুন।
- এবার চিনি ও কেসারি পাওডার যোগ করুন।
- পায়েস ঘন হয়ে এলে চুলা নিভিয়ে দিন।
- অন্যপাত্রে ঘি গরম করে তাতে কিসমিস এবং বাদামগুলো ভেজে নিন। ভাজা বাদাম-কিসমিস পায়েসের ওপরে দিন।
- তৈরি হয়ে গেল ম্যাকারনি পাস্তা পায়েস। গরম অবস্থায় কিংবা ফ্রিজে ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করতে পারেন।
টোটকা-কথন
- পায়েস খুব বেশি পরিমাণে ঘন করে ফেলবেন না। কেননা, পায়েসটি ঠাণ্ডা হলে এটির ঘনত্ব আরো বৃদ্ধি পাবে এবং তরল অংশ শুষে নেবে।
- যদি মনে করেন পায়েস মাত্রাতিরিক্ত ঘন হয়ে গেছে তাহলে দুধ ফুটিয়ে সেই গরম দুধ পায়েসে যোগ করুন, তা আবারও তরল হয়ে যাবে।
- ভিন্নতার ছোঁয়া চাইলে চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করতে পারেন। গুড় গলিয়ে সিরাপ তৈরি করে তা যোগ করতে পারেন।
- ক্রিমি ঘনতর স্বাদ পেতে চাইলে ৪-৬ চামচ কনডেনসড মিল্ক যোগ করতে পারেন।
- সারারাত ফ্রিজে ঠাণ্ডা করে পরদিন ‘পাস্তা পুডিং’ হিসেবে পরিবেশন করতে পারেন এই পায়েস।
- শেল বা ম্যাকারনি পাস্তার পরিবর্তে অন্যান্য আকৃতির পাস্তাও ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে পাস্তার পরিবর্তে ঘিয়ে ভাজা সেমাই দিয়েও চমৎকার মিষ্টান্ন তৈরি করতে পারেন।
হট কোকো/ হট চকোলেট
হট চকোলেট চকোলেট, দুধ ও চিনিযোগে তৈরি একটি চমৎকার সমৃদ্ধ পানীয়। বিভিন্ন কফিশপে এটির আবেদন বেশ তুঙ্গে। এতে থাকা চকোলেট হতে পারে নানান রকম- পছন্দভেদে সেমিসুইট, বিটারসুইট কিংবা ডার্ক। তবে যদি ঘরে বানানোর জন্য হাতের কাছে চকোলেট না থাকে তবে হতাশ হবেন না, দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাবার ব্যবস্থা আছে অবশ্যই!
প্রথাগত হট চকোলেট থেকে অনেকটা লঘু পানীয় হিসেবে একে তৈরি করা যায় কোকো পাউডার, দুধ ও চিনির সংমিশ্রণে। একে বলা হয় হট কোকো এবং এতে ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে। যদিও আমেরিকায়, হট কোকো ও হট চকোলেট দুটি নামেরই সমার্থক অর্থে চল আছে।
কোকোর স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও আছে। কোকোতে আছে উচ্চমাত্রার এন্টি-অক্সিডেন্ট ও ক্যান্সার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য, হজমে সহায়তা আর মন ভালো রাখতেও কোকো সহায়ক। কফিশপগুলোতে চকোলেট দেয়া যে হট চকোলেট পাওয়া যায় তাতে অধিকমাত্রায় চিনি ও ফ্যাট থাকে যা এটিকে কম স্বাস্থ্যসম্মত করে তোলে। কিন্তু বাড়িতে বানানোর সময় আপনার হাতে এতে কতোটুকু চিনি ও ফ্যাট থাকবে তা নিয়ন্ত্রণের সুযোগ থাকছে। যতোটুকু চিনি না হলেই নয় ততোটুকু এবং লো-ফ্যাট মিল্ক দিয়ে ঘরে স্বাস্থ্যকর হট কোকো আপনি তৈরি করতেই পারেন! ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা দিনে গরম গরম এই পানীয়ের স্বাদ নিজে উপভোগ করার পাশাপাশি হঠাৎ আগত অতিথিদেরও চটপট তৈরি করে পরিবেশন করতে পারেন।
চলুন দেখে নেয়া যাক কীভাবে তৈরি করতে হবে এই পানীয়টি:
প্রস্তুতি- ৫ মিনিট
রান্নার সময়- ২ মিনিট
পরিবেশন- ১ জন
উপকরণ
- দুধ- ১ কাপ
- কোকো পাউডার (আনসুইটেনড)- দেড় টেবিল চামচ
- চিনি- ১-২ চা চামচ
- ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট- ২ ফোঁটা
প্রণালি
- কোকো পাউডার, চিনি এবং ১-২ টেবিল চামচ দুধ একটি কাপে নিন ও মেশান যতোক্ষন না পুরোপুরিভাবে মিশে যায়।
- মিশ্রণটি সসপ্যানে নিন এবং বাকী দুধটুকু যোগ করুন।
- প্যানটি চুলায় রেখে জ্বাল দিন। গরম হয়ে গেলে, ফুটে ওঠার পূর্বমুহূর্তে ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট যোগ করে নামিয়ে ফেলুন।
- পানীয়টি ফেনাযুক্ত করতে শেকার বা ব্লেন্ডার ব্যবহার করুন। চাইলে প্রথাগত পুরনো পদ্ধতিতে দুইটি গ্লাসের একটি থেকে আরেকটিতে ক্রমাগত ঢেলেও এটি ফেনাযুক্ত করতে পারেন।
- কাপে ঢেলে ফেলুন। মার্শম্যালো, ক্রিম অথবা গ্রেট করা চকোলেট উপরে দিয়ে পরিবেশন করুন। শীতল দিনে গরম কোকোর সাথে কুকিজ বেশ জমে যায় কিন্তু!
এ তো গেল হালকা চালের তরল চকোলেট আস্বাদন। এতে সবসময় মন নাও ভরতে পারে। মাঝেসাঝে আসল হট চকোলেটের স্বাদ চাই? তাহলে অনুসরণ করে ফেলুন নিচের ক্রিমি ও ঘন হট চকোলেটের রেসিপিটি:
- কোকো পাউডার (ডাচ প্রসেসড হলে ভালো) – ৩ টেবিল চামচ এবং পরিবেশনের জন্য আরো কিছুটা
- ফুল-ফ্যাট মিল্ক- ৩ কাপ
- সেমিসুইট চকোলেট- ৬ আউন্স, কুচিকুচি করে নেয়া
- চিনি- ৩ টেবিল চামচ
- লাইটলি সুইটেনড হুইপড ক্রিম- পরিবেশনের জন্য
প্রণালি
- মাঝারি আকৃতির সসপ্যানে পৌনে এক কাপ পানি নিয়ে মাঝারি আঁচে ফোটান। এবার তাতে তিন টেবিল চামচ কোকো পাউডার দিয়ে মেশান যতোক্ষণ পর্যন্ত কোনো দলা অবশিষ্ট না থাকে।
- দুধ যোগ করে আবার জ্বাল দিয়ে ফোটান।
- চকোলেট ও চিনি যোগ করে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন এবং প্রায় পাঁচ মিনিট রান্না করুন যতোক্ষণ পর্যন্ত না মিশ্রণটি মসৃণ ও ক্রিমি হয় এবং চকোলেট গলে যায়।
- হট চকোলেট মগে ঢেলে উপরে হুইপড ক্রিম দিয়ে তার ওপর কোকো পাউডার ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।
পছন্দসই খাবারগুলির আবেদন তো কখনওই ফুরোবার নয়। রেস্তোরাঁর মতো জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও ঘরোয়া আয়োজনে এভাবে রসনার তৃপ্তি হতেই পারে। ব্যস্ততার ত্রাস বা আর্থিক চাপ কোনোটিতেই যেন বাধাগ্রস্ত না হয় প্রিয় ও মুখরোচক খাবারের যোগান।
রান্নাবান্না সম্বন্ধে আরো জানতে পড়তে পারেন বই। অনলাইনে কিনতে চাইলে ক্লিক করতে পারেন নিচের লিংকে
https://rb.gy/ctcgeq
https://rb.gy/iwqsjn
https://rb.gy/uq47nj
Featured Image: realfood.tesco.com
References: The sources are hyperlinked in the article
Description: This is a Bangla article about some student-friendly food recipes.