Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বাংলাদেশি রান্নার বিশ্বখ্যাত শেফরা

মাস্টারশেফ ইউএসএ-কানাডা-অস্ট্রেলিয়া, হেল’স কিচেন, নিদেনপক্ষে টিএলসি চ্যানেলে রান্নার অনুষ্ঠান দেখেন না, আমার চেনাজানা এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। সাদা অ্যাপ্রন, হাতে গ্লভস আর মাথায় টক ব্লশ বা শেফদের ঐতিহ্যবাহী টুপি পরিহিত বিদেশি শেফদের খাবার ঘরে বসে চেখে দেখা যাবে না জেনেও, গোগ্রাসে তাদের রন্ধনপ্রণালী গিলতে থাকি আমরা। বাংলাদেশের কুকিং শোগুলোকে সেই তুলনায় নেহাত নিরামিষ মনে হতে থাকে।

ভোজনবিলাসী হিসেবে বাঙালি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। শুধু খেতে নয়, খাওয়াতেও ভালোবাসি আমরা। তবু কেন জানি রান্নার বেলায় গর্ডন রামসে, জেমি অলিভার কিংবা উলফগ্যাং পাকের মতো উদাহরণ দেয়ার মতো কারো পরিচয় জানি না আমরা। অথচ আমাদের দেশেরই বেশ কয়েকজন শেফ বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করে চলেছেন দীর্ঘদিন ধরে। বাংলাদেশি রান্নায় পৃথিবী জুড়ে বিখ্যাত শেফদের গল্পই শোনা যাক আজকে। তাদের মধ্যে বেশ ক’জন বাঙালি না হলেও, এদেশীয় রান্না দিয়েই জুড়িয়েছেন ভোজন বিলাসী মানুষের মন।

আহমেদ হোসাইন

আমাদের দেশে ৯০ এর দশক পর্যন্ত রান্নাকে শুধুই নারীদের ঘরোয়া কাজ বলে বিবেচনা করা হতো। শেফ আহমেদ হোসাইন প্রথমবারের মতো এই ভ্রান্ত ধারণাটি দূর করতে নানা ধরনের কুকিং শোয়ের আয়োজন করেন। স্থানীয় পর্যায়ে তার রান্না ব্যাপক প্রশংসা পায় এবং ছেলেরাও শেফ হতে পারে- এই বিষয়টি আস্তে আস্তে মেনে নেয়ার একটি প্রবণতা তৈরি হয়।

রসনা বিলাসী আহমেদ হোসাইন বিশ্বের সেরা দশজন বাংলাদেশি শেফের মধ্যে প্রথম স্থানের অধিকারী। বাংলাদেশেও শেফ হিসেবে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এদেশের ঐতিহ্যবাহী সব খাবারকে টেলিভিশন কুকিং শোতে নিজস্ব স্টাইলে উপস্থাপন করে বাংলাদেশের রন্ধনশিল্পকে আন্তর্জাতিক প্রাঙ্গণে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আহমেদ হোসাইন।

শেফ আহমেদ হোসাইন। ছবিসূত্র: googleusercontent.com

আহমেদ হোসাইন উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা সম্পন্ন করে ঢাকায় এসে জাতীয় হোটেল ও পর্যটন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে আবাসন প্রশাসনের উপর একটি কোর্স করেন। ২০০৬ সালে তিনি ঢাকা রিজেন্সি হোটেলে কিচেন অর্গানাইজার হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং ৬ মাস পরেই প্রধান নির্বাহী শেফের দায়িত্ব হাতে তুলে নেন। ২০১০ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত এখানেই কাজ করে গেছেন শেফ আহমেদ হোসাইন। তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অসংখ্য তরুণ এই পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন। আহমেদ হোসাইনকে তাই এদেশের আধুনিক হসপিটালিটি বা আতিথেয়তা শিল্পের অগ্রদূত বলা হয়। বর্তমানে তিনি নানা ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, ট্যালেন্ট হান্ট এবং দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালার সাথে জড়িত আছেন।

হাজী ফখরুদ্দিন

ফখরুদ্দিনের বিরিয়ানি খাননি এমন ভোজনপ্রেমিক আদতে বিরল। ফখরুদ্দিনকে বাবুর্চি নামে তো আমরা সবাই চিনি, কিন্তু তিনি যে বিশ্বের সেরা দশজন বাংলাদেশি রন্ধনশিল্পীর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন, সে খবর ক’জন জানে?

১৯৬৬ সালে বাংলাদেশে চলে আসার পর থেকেই হাজী ফখরুদ্দিন অর্থনৈতিকভাবে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েন, অভাব অনটনে কোনোমতে কাটতে থাকে তার দিন। ভাগ্যের অন্বেষণে, জীবিকার তাগিদে তিনি খুঁজে বের করেন মুসলিম মিয়াকে, যিনি ছিলেন ভারতের নবাবদের খাস বাবুর্চি।

হাজী ফখরুদ্দিন (সর্ব ডানে)। ছবিসূত্র: fakruddin.com

মুসলিম মিয়ার কাছ থেকে রান্নার কলাকৌশল শেখেন ফখরুদ্দিন। খুব অল্প সময়ে রন্ধনশিল্পে নিজের সুপ্ত প্রতিভা, প্রাকৃতিক ক্ষমতা ও গভীর আগ্রহের সাথে পরিচিত হন তিনি। কর্মজীবনের শুরুতেই নম্রতা, ভদ্রতা, মিষ্টিভাষা এবং সুন্দর আচরণের জন্য সবার মন কাড়েন ফখরুদ্দিন। কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে ফেলেন তিনি। কিন্তু কখনোই বড়লোকি জীবনযাপন রীতি আকৃষ্ট করতে পারেনি তাকে। নিজের প্যাশন এবং রান্নার গোপন রহস্য ছেলেদের শিখিয়ে দিয়ে যান তিনি। এখনো ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও আরব আমিরাতে শাখা নিয়ে বীরদর্পে বাঙালি ভোজনরসিকদের মাঝে রাজত্ব করছে ফখরুদ্দিনের বিরিয়ানি। বাংলাদেশের সেরা দশ শেফের মধ্যে হাজী ফখরুদ্দিন বয়োজ্যেষ্ঠ।

টমি মিয়া

মোহাম্মদ আজমান মিয়া, যাকে আমরা সবাই টমি মিয়া নামেই চিনি, বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার এক ছোট্ট গ্রামে জন্মগ্রহণকারী একজন ব্রিটিশ সেলিব্রেটি শেফ। ব্রিটেনে তিনি কারি কিং নামেই সুপরিচিত। মাত্র ১০ বছর বয়সে ইংরেজির সীমিত জ্ঞান নিয়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান টমি মিয়া।

টমি মিয়া, camdenreview.com

খাবার এবং রান্নার ব্যাপারে আগ্রহ থাকায় তিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন ক্যাটারিং সার্ভিসে। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই নিজের ছোট একটি রেস্টুরেন্ট খুলে বসেন টমি মিয়া। ধীরে ধীরে নিজের দক্ষতায় ইংল্যান্ডে নাম করতে থাকেন তিনি। একজন সেলিব্রেটি শেফ হিসেবে বাংলাদেশে সবাই তাকে একনামে চেনে, পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে কয়েকটি কুকিং শোর আয়োজনও করেন। বাংলাদেশে টমি মিয়ার বাংলাদেশি, থাই, চাইনিজ এবং ইন্ডিয়ান যেকোনো খাবারের রেসিপি পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে একটি মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। মুরেফিল্ডে ‘রাজ হোটেল’ এবং ঢাকায় ‘দ্য হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট’ এর মালিক শেফ টমি মিয়া ২০০৪ সালে ‘রয়েল সোসাইটি অফ আর্টস’ এর একজন সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পান। ব্রিটেনের মাটিতে বাংলার নাম উজ্জ্বল করা এই শেফ বাংলাদেশের গর্ব।

সিদ্দিকা কবীর

ইনি আর কেউ নন, আমাদের সবার পরিচিত সিদ্দিকা কবীর। পুষ্টিবিদ, রান্নার বই লেখক এবং রন্ধনশিল্পী হিসেবে বিভিন্ন কুকিং শোয়ে এদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। সিদ্দিকা কবীর গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রান্নায় হাতেখড়ি হয় তার। তখনকার সময়ে পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরে বাইরে’ নামে একটি রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন তিনি।

সিদ্দিকা কবীর, একটি রান্নার অনুষ্ঠানে। ছবি: wallpaperpicturephotop.blogspot.com

‘রান্না খাদ্য পুষ্টি’ বইটি সিদ্দিকা কবীরকে ব্যাপক খ্যাতি এনে দেয়। এটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৮০ সালে তিনি আরেকটি বই রচনা করেন, যার নাম ‘খাদ্যপুষ্টি ও খাদ্যব্যবস্থা’। এটি স্নাতক পর্যায়ে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয়। ১৯৮৪ সালে কারি রান্নার উপরে একটি বই লেখেন তিনি। এছাড়া ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে ‘রসনা’ নামে একটি কলাম লেখা শুরু করেন তিনি, যা পরবর্তীতে ‘খাবার দাবারের কড়চা’ নামে প্রকাশিত হয়। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভিতে রান্নার একটি অনুষ্ঠানের সাথেও দীর্ঘদিন যাবত জড়িত ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে কালিনারি এবং মিডিয়া বিজনেসের পক্ষ থেকে তাকে ‘শেলটেক অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। ২০১২ সালের জানুয়ারির ৩১ তারিখে মৃত্যুবরণ করা এই রন্ধনশিল্পী বাংলাদেশের রন্ধনশিল্পে তার অবদানের জন্য সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন।

টনি খান

‘কালিনারি এক্সপার্ট’ খ্যাত টনি খান বাংলাদেশের অত্যন্ত নামকরা একজন শেফ এবং এই একজন সম্পর্কে আমরা কমবেশি প্রায় সবাই অবগত আছি। বিশ্বজুড়ে তার মিক্সড কুকিং খুবই সমাদৃত এবং এ কারণেই ১৯৯৮ সালে তিনি ‘বিশ্বের প্রধান ১০ শেফ’ এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ পাপুয়া নিউগিনিতে ‘বছরের সেরা কুলিনারি এক্সপার্ট’ এর খেতাবও অর্জন করেন তিনি।

টনি খান। ছবিসূত্র: thebangladeshtravel.com

টনি খান ১৯৮৯ সালে মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার নুনাওডাং-এ রেস্টুরেন্টে পূর্ণকালীন চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। তিনি বাংলাদেশ শেফ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তা ও প্রেসিডেন্ট। শেফ অ্যাসোসিয়েশন অফ পাকিস্তানেরও একজন সদস্য তিনি। সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন পাঁচ তারকা হোটেলে চাকরি করে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি বাংলাদেশে ফেরত আসেন এবং ‘রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে’ এক্সিকিউটিভ শেফ হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। ২০০৯ সালে তিনি ‘দ্য ওয়েস্টিন’ হোটেলে যোগদান করেন এবং বর্তমানে শ্রীমঙ্গলের ‘গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্টে’ কর্মরত আছেন। পাশাপাশি, ২০১৫ সাল থেকে তিনি নিজের কালিনারি ইন্সটিটিউটও প্রতিষ্ঠা করেন। হোটেল শিল্পে নবাগত শেফদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। রান্নার বিষয়ে টনি খানের দার্শনিকতা খুব জনপ্রিয়, তিনি কেবল স্বাদই নয় বরং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার প্রতি বেশি গুরুত্ব দেন।

মানিক মিয়া

মানিক মিয়াহ। ছবিসূত্র: thetoptenchefs.com

‘কিং অফ স্পাইস’ খ্যাত শেফ মানিক মিয়া বারবেজের ‘উইন্ডসর টিফিন ইটারি’র প্রধান কালিনারি বিশেষজ্ঞ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ক্যাটারারস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘কারি শেফ অফ দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতায় ফাইনালে অংশগ্রহণ করেন তিনি। যুক্তরাজ্যের নর্দাম্পটন কলেজ প্রাঙ্গণে ৩০ জন কালিনারি বিশেষজ্ঞের মধ্যে মাত্র ৪৫ মিনিটে একটি মার্ক ডিশ তৈরির প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। মানিক মিয়া একটি চিকেন ডিশ বেছে নেন। তিনি তৈরি করেন একটি ক্লাসিক্যাল কোরমা, দেশি খাস কোরমা, পুদিনার পোলাও, ভেজিটেবল সাইড ডিশ এবং ভেজিটেবল সালাদ। এই ডিশগুলো দিয়েই বাজিমাত করেন তিনি। বর্তমানে দেশের সেরা ১০ শেফের মধ্যে অন্যতম তিনি।

আসমত আলী (বৈসব)

আসমত আলী (বৈসব)। ছবিসূত্র: gandhimahal.com

আসমত আলী, যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘গান্ধী মহল রেস্টুরেন্টে’ যিনি ‘বৈসব’ নামে সুপরিচিত, ২০০৮ সাল থেকে খাদ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন। সিলেটে জন্মগ্রহণকারী এই শেফের জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় কাটে কাতারে, পরবর্তীতে ২০০১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে দেশের নাম উজ্জ্বল করে সেরা দশ শেফের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

ফিরোজ খান

শুভেচ্ছাসিক্ত ফিরোজ খান। ছবিসূত্র: khanfruitcarving.com

মিস্টার খান নামে অধিক পরিচিত ফিরোজ খান রিংউড শহরে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন। সেখানে তিনি কালিনারি বিশেষজ্ঞ ও পরবর্তীতে ৫ বছর শেফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর ফিরোজ খান তার নিজের রেস্টুরেন্ট ‘কারি গার্ডেন’ প্রতিষ্ঠা করেন। কারি গার্ডেনকে ‘একটি মজাদার, নিখুঁত ভারতীয় এবং বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট, ঐতিহ্যবাহী, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আলো-বাতাস সমৃদ্ধ, আরামপ্রদ, কম খরচে সহায়ক কর্মীদের দ্বারা পরিবেষ্টিত’ রেস্টুরেন্ট বলে আখ্যা দেন অনেকে। তার ‘খান ফ্রুট কার্ভিং’ সারা বিশ্বে বেশ নাম করেছে।

শেলি নুরুজ্জামান

শেলি নুরুজ্জামান। ছবিসূত্র: lesdameslondon.org

১৯৬০ সালে শেলির পরিবার ব্রিটেনে পাড়ি জমান। সেখানে বসেও বাংলাদেশি খাবারের প্রতি তার আগ্রহ ও ঝোঁক কাজ করে। এই ঝোঁকের বশেই শেলি মায়ের রান্নাঘরের চারপাশে ঘুরঘুর করতেন এবং খাবারের খুশবুর সাথে পরিচিত হতেন। ১৯৭০ সালে তার বাবা বাংলাদেশি খাবারের একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেন, যেখানে তিনি হরেক রকমের বাংলাদেশি খাবার দেখার এবং নিজে বানানোর সুযোগ পান। সেখানেই চলতে থাকে তার একের পর এক এক্সপেরিমেন্ট। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বাংলার সিগনেচার ডিশগুলো হুবুহু বানিয়ে ফেলেন এবং তার সাথে ব্রিটেনের ফ্লেভার মিশিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। বাংলাদেশি খাবারের রেসিপি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ব্যাং কারি‘র প্রতিষ্ঠাতা তিনি।

আসাদ লতিফ

আসাদ লতিফ। ছবিসূত্র: chefasad.com

ভোজনবিলাস বিশেষজ্ঞ আসাদ লতিফের জন্ম পাকিস্তানে হলেও, তার বেড়ে ওঠার গল্পটির সাথে মিশে রয়েছে বাংলাদেশ। মেট্রো ওয়ান চ্যানেলে ‘লাজ্জাত উইথ আসাদ’ শীর্ষক কুকিং শোটি তিনিই পরিচালনা করেন। নানা ধরনের খাবারকে মজাদার উপায়ে পরিবেশন করে দর্শককে কীভাবে টেলিভিশনের সামনে বসিয়ে রাখতে হয়, সে বিষয়ে তার দক্ষতা প্রশ্নাতীত। বাংলাদেশি খাবার রান্নায় বিশেষ পারদর্শিতার জন্য পাকিস্তানে থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের সেরা দশ শেফের তালিকায় স্থান পেয়েছেন তিনি। তিনি শুধু বাংলাদেশি খাবার রাঁধতেই জানেন না, প্রতিটি রান্নার পিছনের গল্প বলেও দর্শককে মাতিয়ে রাখেন।

কিরান জেথোয়া

বাংলাদেশের বাজারে কিরান জেথোয়া। © Kiran Jethwa

‘নির্ভীক শেফ’ হিসেবে খ্যাত কিরান জেথোয়া বাংলাদেশের সব অঞ্চলে ঘুরেছেন। রন্ধন শিল্পের জগতে ‘গ্যাস্ট্রোনট’ হিসেবে পরিচিত এই শেফের রয়েছে বাংলাদেশের রান্নার প্রতি গভীর ভালোবাসা। বিশেষত মাছ রান্নার জন্য প্রসিদ্ধ এ অঞ্চলের শেফদের কদর করেন তিনি। এদেশের রান্নায় দক্ষতার জন্য সেরা দশ বাংলাদেশি রান্নার শেফের তালিকায় এসেছে কিরান জেথোয়ার নাম।

বিদেশি শেফদের পাশাপাশি বাংলাদেশের রান্নার শেফদের প্রতিও আমাদের টান থাকা প্রয়োজন, দিনশেষে তারাই তো আমাদের সম্পদ।

Related Articles