Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আরাল সাগর: প্রতিটি জলকণা হারিয়ে যে সাগর আজ বিস্তীর্ণ মরুভূমি

মন্টি মঙ্গল গ্রহের এক মেধাবী এলিয়েন। সেখানে এক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সে পিএইচ.ডি করছে। প্রথমে তাকে পিএইচ.ডির বিষয় নির্বাচন করার উদ্দেশ্যে পুরো সৌরজগত ঘুরে দেখার নির্দেশ দেয়া হয়। মন্টি একে একে সবগুলো গ্রহ ঘুরে দেখলো। ভ্রমণ শেষে ক্লান্ত মন্টি মঙ্গলগ্রহে ফিরে সিদ্ধান্ত নিলো, সে পৃথিবীর উপর পিএইচ.ডি করবে। কারণ অন্যান্য গ্রহে সে অনেক কিছু দেখেছে, কিন্তু পৃথিবীর পানির মতো অসাধারণ কিছু তার চোখে পড়েনি।

যেই ভাবা, সেই কাজ! সে শীঘ্রই খাতা কলম গুছিয়ে রওয়ানা হলো পৃথিবীর উদ্দেশ্যে। সেখানে অনেক বাছাইয়ের পর বড়সড় একটি সাগরের পাশে গোপন গবেষণাগার খুলে বসলো। শুরু হলো মন্টির পিএইচ.ডির জন্য গবেষণা। এভাবে প্রায় ১০ বছর ধরে গবেষণা চলার পর মন্টি ক্ষান্ত হলো। মনে মনে সে অনেক খুশি। এবার সরকারের পক্ষ থেকে গোল্ড মেডেল সে পাচ্ছেই।

মন্টি ফিরে আসলো বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু তার কপাল মন্দ। সেশন জটের এক ধাক্কায় তার গবেষণাপত্র যাচাইয়ের কাজ পিছিয়ে গেল প্রায় ৪০ বছর। মন্টি হতাশ হয়ে পড়লেও মনে মনে সান্ত্বনা নিলো, “তাও ভালো। Better late than never”। সুপারভাইজার স্যার মন্টির গবেষণার সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে তাকে নিয়ে পৃথিবীর দিকে যাত্রা শুরু করেন। মঙ্গল থেকে আসা মহাকাশযানটি মন্টির উল্লিখিত স্থানে এসে অবতরণ করে।

দরজা খুলে মন্টি বাইরে বেড়িয়ে আর্তনাদ করে উঠে। অপরদিকে সুপারভাইজারের চক্ষু চড়কগাছ। কোথায় মন্টির সাগর? কোথায় পৃথিবীর পানি? উল্টো মঙ্গলের চেয়েও ভয়াবহ এক মরুভূমির মাঝে দাঁড়িয়ে আছে তারা দুজন। সেখানে আবার এদিকে ওদিকে কয়েকটা মরা প্রাণীর হাড়ও পড়ে আছে। আকাশে পাখা মেলে উড়ছে কালো শকুন।

সুপারভাইজার মন্টির কান ধরে তাকে নিয়ে মঙ্গলগ্রহে ফিরে আসলেন। মন্টির ছাত্রত্ব বাতিল করে দেয়া হয়। অপমানে দুঃখে মন্টি আত্মহত্যা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।

উপরে উল্লিখিত করুণ ঘটনাটি কাল্পনিক হলেও তা ঘটার সম্ভাবনা একদম নেই তা কিন্তু বলা যায় না। পৃথিবীর বুক থেকে এভাবে হারিয়ে যেতে পারে বিশাল জলাধার। আর সে ঘটনার প্রমাণ হিসেবে উপরের গল্পের মতো করে পৃথিবীর ইতিহাসের আড়ালে চলে গেছে এক বৃহৎ হ্রদ, যার নাম আরাল সাগর।

৫০ বছরের মাথায় অন্যতম বৃহত্তম হ্রদ থেকে শুকনো মরুভূমিতে পরিণত হওয়া সেই আরাল সাগরকে ঘিরে আমাদের আজকের আলোচনা।

মানচিত্রে ভূতপূর্ব আরাল সাগর

আরাল সাগর মূলত একটি হ্রদের নাম। আরবদের নিকট এই হ্রদটি তার বিশালতার কারণে সাগর হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৬০ সালের দিকে আরাল সাগর পৃথিবীর বুকে ৪র্থ বৃহত্তম হ্রদ ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে আরাল সাগরের বয়স প্রায় ৫.৫ মিলিয়ন বছর। হ্রদের পানির উৎস হিসেবে দুটি নদীর সন্ধান পাওয়া যায়। উত্তর থেকে সির দরিয়া ও দক্ষিণ থেকে আমু দরিয়া নদী থেকে পানি এসে মিশতো আরালের বুকে। মাছ শিকারীদের নৌকার সমাগমে মুখর থাকতো আরাল সাগর।

মানচিত্রে আরাল সাগরের অবস্থান; source: worldatlas.com

আরাল সাগরের অবস্থান বর্তমান কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান এবং মধ্য এশিয়া বিস্তৃত। ৬৭ হাজার বর্গ কি.মি. আয়তনের হ্রদটি ১৯৯৬ সালের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৭০% শুকিয়ে গেছে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আরাল সাগরের শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্তমান পৃথিবীর জন্য এক অশনি বার্তা। এর শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে বিজ্ঞানীরা একমাত্র মানুষকে দায়ী করেছেন।

কীভাবে শুকিয়ে গেল আরাল সাগর?

আরাল সাগর তীরবর্তী এলাকার আবহাওয়া মোটেও বসবাসের জন্য উপযুক্ত ছিল না। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ১০০ মিলিমিটার, যা যেকোনো প্রাণীর বসবাসের জন্য প্রতিকূল। প্রতি লিটার পানিতে লবণের পরিমাণ ছিল গড়ে ১০ গ্রাম করে। হাতেগোনা কয়েক প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ বেঁচে থাকতো সেখানে। এদেরকে ঘিরে আরালের বুকে গড়ে উঠে ক্ষুদ্র মৎস্যশিল্প।

১৯৫০ সালে প্রাণবন্ত আরাল সাগর; source: O. Dosanov

কিন্তু এর শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে মূল খলনায়ক তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৬০ সালের কথা। ১৯১৮ সালে গড়ে তোলা সোভিয়েত তুলা শিল্প তখন সফলতার শীর্ষে আরোহণ করেছিলো। সোভিয়েত সরকার তাই বিশ্ব বাজার ধরে রাখতে তুলার উৎপাদন বৃদ্ধি করার প্রকল্প হাতে নেন।

সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সির দরিয়া এবং আমু দরিয়া, এই দুই নদীর পানিকে তুলা ক্ষেতে সেচের কাজে ব্যবহার করা হবে। দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্যে নদীর পানি টেনে এনে তুলা চাষ অঞ্চলে সেচ করা হয়। ফলে আরাল হ্রদের দিকে ধাবিত হওয়া পানির পরিমাণ কমে যায়। হ্রদের সাথে কোনো সাগরের সংযোগ না থাকায় আস্তে আস্তে পানির পরিমাণ কমে যায়। কিন্তু সোভিয়েত সরকার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করেননি।

পানির পরিমাণ কমে যেতে থাকায় হ্রদের পানিতে লবণের ঘনত্ব মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে যায়। ফলে জলজ প্রাণীদের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। আরাল সাগরের ধ্বংসের শুরুটা এখানেই।

ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় আরাল সাগর; source: BBC

লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে আবহাওয়ায় বড় রকমের পরিবর্তন ঘটে। ঝড়-তুফানের পরিমাণ বেড়ে যায় বহুগুণে। এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণাগারের রাসায়নিক বর্জ্য, বিষাক্ত কীটনাশক, শিল্প-কারখানার বর্জ্য আরাল সাগরের পানিতে নিষ্কাশন করা হতো। ১৯৬০ সালের বিশাল হ্রদের পানি দ্রুত শুকিয়ে যেতে থাকে। স্থানীয় অধিবাসীরা বিষয়টি লক্ষ্য করে। আরালের পানির উপর নির্ভরশীল অধিবাসীরা উপায় না দেখে অন্য প্রদেশে চলে যেতে থাকে।

১৯৯৭ সালের শুরুর দিকে করা জরিপ অনুযায়ী আরাল সাগরের প্রায় ৯০ শতাংশ পানি শুকিয়ে গেছে। অর্থাৎ এক সময়ের বিশাল আরাল সাগর সামান্য জলাশয়ে পরিণত হয়ে যায়।

আরাল সাগর বিপর্যয়ের প্রভাব

আরাল সাগর বিপর্যয়কে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ধরা হয়।

আরাল সাগর শুকিয়ে যাওয়ার কারণে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরাল সাগর এলাকার অধিবাসীরা। কারণ তাদের অধিকাংশ নাগরিকের আয়ের প্রধান উৎস ছিল এই হ্রদটি। তাই সাধারণ জনগণের আর্থ-সামাজিক কাঠামো ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে।

সাগরের পানি শুকিয়ে গেছে। কোনো এক সময় ডুবে যাওয়া দুটি জাহাজ দেখা যাচ্ছে; source: George Kourounis

পানি শুকিয়ে গেলেও লবণ থেকে যায়। বিপর্যয়ের কারণে পূর্বের আরাল সাগর উপকূলে ঘন লবণের স্তূপের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেখানকার মাটির গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। লবণাক্ত পরিবেশ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ফলে বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ মহামারী হিসেবে দেখা দেয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ৫০ বছরের মাথায় আরাল সাগরে লবণের ঘনত্ব বেড়ে লিটারপ্রতি গড়ে ১০০ গ্রাম হয়ে যায়।

১৯৯০ সালের দিকে আরাল সাগর এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। আরাল সাগরতীরে গড়ে উঠা মৎস্যশিল্পের চূড়ান্ত পতন ঘটে। পরিবেশবিদরা আরাল সাগরের পরিণতি দেখে চিন্তায় পড়ে যান। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের হুমকির সাথে লড়াই করতে থাকা মানবজাতির জন্য আরাল সাগর বিপর্যয় এক অপূরণীয় ক্ষতি।

এখানে এক সাগর ছিল, জানলো না তো কেউ!; source: Reuters

বান কি মুনের সফর

২০১০ সালে তৎকালীন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন মধ্য এশিয়া সফর করেন। সফরসূচির অংশ হিসেবে তিনি আরাল সাগর অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। তিনি আরাল সাগরের ভয়াবহ পরিণতি দেখে বিস্মিত হয়ে যান। তিনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। এদিকে ওদিকে ডুবে যাওয়া জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ব্যতীত অন্য কোনো চিহ্ন অবশিষ্ট নেই, যা আরাল সাগরের অস্তিত্ব প্রমাণ করে।

আরাল সাগর পরিদর্শন করছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন; source: AP

সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন, “আমি স্তব্ধ! আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। এটা আমার দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আঞ্চলিক নেতাদের আহ্বান করছি। আপনারা আলোচনায় বসুন। আরাল সাগরকে রক্ষা করুন”।

জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান থেকেই আঁচ করা যায় আরাল সাগর বিপর্যয় কতটা মারাত্মক।

এর সমাধান কী?

১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটলে আরাল সাগর নব্য রাষ্ট্র কাজাখস্তান এবং উজবেকিস্তানের অধীনে চলে আসে। কিন্তু সাগর বলতে আমরা যা বুঝি, তার কোনো অস্তিত্ব তখন নেই। মাত্র ১০ শতাংশ অঞ্চল জুড়ে পানি অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু আরাল সাগরের বিপর্যয়ের কারণে পুরো অঞ্চলের আবহাওয়ার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই দুই দেশের নেতারা একত্রিত হন।

ডুবে যাওয়া জলপথের জাহাজের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে মরুভূমির জাহাজ উট; source: AP

তারা বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হাতে নেন। লম্বা খাল খনন করে দক্ষিণে সাগর থেকে পানি আনার প্রচেষ্টা করা হয়। কিন্তু প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে কোটি কোটি ডলার লোকসান হয়। শেষ পর্যন্ত পুরো প্রকল্প বাতিল করে দেয়া হয়।

এরপর ২০০৩ সালে কাজাখস্তান সরকার ঘোষণা দেয়, বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পুনরায় নদীর পানি আরালের দিকে প্রবাহিত করা হবে। কিন্তু উজবেকিস্তানের সাথে প্রকল্পের বিভিন্ন ইস্যুতে একমত হতে না পারায় পুরো আরাল জুড়ে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প স্থগিত করা হয়।

তবে কাজাখ সরকার বসে না থেকে নিজস্ব অর্থায়নে কাজাখস্তান সীমানায় বাঁধ নির্মাণ শুরু করার নির্দেশ দেন। ২০০৫ সালের দিকে বাঁধ নির্মাণ শেষ হয়। বাঁধের কারণে কাজাখ অঞ্চলে আরাল সাগরের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়। হ্রদে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং উত্তর আরাল সাগরে মাছ চাষ শুরু হয়।

বাঁধ নির্মাণের ফলে আরালে ফের পানি চলাচল শুরু হয়; source: AP

কাজাখস্তানের সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে উজবেকিস্তানের বিজ্ঞানীরাও এগিয়ে আসেন। কিন্তু পানির অধিকার সংক্রান্ত আলোচনায় কেউই সমঝোতায় আসতে না পারায় এই প্রকল্প বেশিদূর এগোয়নি।

পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংক এই কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। কাজাখ সরকারকে ৬৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করা ছাড়াও প্রায় ৮৬ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প হাতে নেয় বিশ্বব্যাংক। ২০০৮ সালে দ্বিতীয় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পুনরায় উত্তর আরাল সাগরে পানি প্রবাহ শুরু হয়।

কাজাখস্তান বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানি পুনরায় আনতে সক্ষম হলেও, গবেষকদের মতে, আর কখনোই আরাল সাগরের পানি সম্পূর্ণরূপে ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে না। তাছাড়া প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো সমঝোতায় না পৌঁছুলে আরাল সাগরের বাকি অঞ্চলগুলোয় কাজ শুরু করা সম্ভব হবে না।

ভবিষ্যতের আতশকাঁচে আরাল সাগর

ইতিহাসবিদদের মতে, ৩য় বিশ্বযুদ্ধ হবে পানিকে ঘিরে। বর্তমানে পানি অতি মূল্যবান সম্পদ। পানিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বড় অর্থনৈতিক শিল্প। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মধ্য এশিয়া এবং ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বড় হ্রদগুলোর পানি বিপক্ষ রাষ্ট্রের নিশানায় পরিণত হবে। এক্ষেত্রে আরাল সাগরের পানি মধ্য এশিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে।

এছাড়াও উজবেকিস্তানের অসম্মতির কারণে এখনও অর্ধেক আরাল সাগরের পানি সঞ্চালনের কাজ শুরু করে সম্ভব হয়নি। তাই পুনরায় কাজাখ অঞ্চলে আরাল সাগর শুকিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেন বিজ্ঞানীরা।

কিন্তু আপাতত আশার বাণী হিসেবে বিশ্বব্যাংক এবং কাজাখস্তানের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে। ফলে পুনরায় আরাল সাগরে মৎস্যশিল্প গড়ে উঠেছে।

আরাল সাগর কি আবার ফিরে আসবে?; source: vice.com

আরাল সাগর বিপর্যয় বর্তমান পৃথিবীর কাছে ছুঁড়ে দেয়া একটি সতর্কবার্তা। স্বার্থপর মানুষের ভুল পদক্ষেপের ফলে পুরো একটি হ্রদ শুকিয়ে বিলীন হয়ে গেছে পৃথিবীর বুক থেকে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আরাল সাগরকে স্বল্প পরিসরে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও, পুরো প্রকল্পের জন্য ব্যয় হওয়া অর্থের পরিমাণ বিপুল। পানির অপর নাম জীবন। স্বার্থান্ধ সিদ্ধান্তের দরুন হয়তো এভাবেই সকল পানি শুকিয়ে যাবে।

ইংরেজি ভাষায় একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে- ‘Prevention is better than cure’। বিশ্বের বড় নেতারা একসাথে কাজ না করলে ধীরে ধীরে পুরো পৃথিবী ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমাদের উচিত পরিবেশবান্ধব প্রকল্প হাতে নিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে চলা। জাতিসংঘ, ইউনেস্কো, বিশ্বব্যাংক এই লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তারা তাদের লক্ষ্য অর্জনে সফল হবে, নাকি নতুন এক আরাল অপেক্ষা করছে অদূর ভবিষ্যতে, তা সময়ই আমাদের জানিয়ে দেবে।

ফিচার ইমেজঃ aboutkazakhstan.com

Related Articles