Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বলিভিয়ার প্রাণ-চাঞ্চল্যের বিশাল হ্রদ পুপু এখন মরুভূমির পথে

যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। হ্রদের অর্ধস্বচ্ছ নীল পানির বুকে হাজার হাজার ডিঙি নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে। ভরা মৌসুমে জলের বুকে হাজারো মাছের প্রাচুর্য জেলেদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। তখন রাত-দিনব্যাপী মাছ ধরার ধুম পড়ে যায়। সেই মাছ ধরে স্থানীয় বাজারে উপযুক্ত মূল্যে বিক্রি করে জেলেরা। মাছ বিক্রির টাকায় দুই বেলা খেয়েপড়ে দিন গুজরান করে তারা। সামান্য বিশ্রামের পর পুনরায় ঝাঁপিয়ে পড়ে বলিভিয়ার অন্যতম হ্রদ পুপুর বুকে।

দিনের আলো নিভে যাওয়ার পর জ্বলে ওঠে জেলেদের আলো। ডিঙি নৌকায় মিটিমিটি করে জ্বলতে থাকা প্রদীপের আলোয় তারা মাছ ধরে বেড়ায়। এক অদম্য সংগ্রামের মাঝে চিত্রায়িত হয় এক অপরূপ গাঁথা। তাদের শ্রমে সচল থাকে বলিভিয়ার মৎস্য অর্থনীতি। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। কিন্তু বিধাতার মনে তখন অন্য খেয়াল। কয়েক বছরের মাথায় পুরো দৃশ্যপট পাল্টে গেল। সমৃদ্ধশালী পুপু হ্রদের বুক থেকে এক এক করে সমস্ত ডিঙি নৌকা উধাও হয়ে গেল। দিনের কর্মচাঞ্চল্যের অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল। এমনকি হারিয়ে গেল সেই টলমলে অর্ধস্বচ্ছ নীল পানি। পুপুর জেলেরা ঘরের কোণায় জাল ফেলে অলস তাকিয়ে থাকে শুকিয়ে মরুভূমিতে রূপ নেয়া এককালের প্রাণবন্ত হ্রদের দিকে। সজল চোখে তাকিয়ে থাকা জেলেদের বুক থেকে বেরিয়ে আসে এক চাপা দীর্ঘশ্বাস। পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর প্রধান হ্রদগুলো। পুপু হ্রদও আছে এর মাঝে। ফলে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সমস্ত পৃথিবী।

পুপুর বুকে অলস ডিঙি নৌকা; Source: Juan Karita/AP

পুপু বৃত্তান্ত

বলিভিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম হ্রদ পুপু হ্রদকে স্থানীয়রা ডাকে লাগু পুপু নামে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২ হাজার ৯০ ফুট উঁচু এই হ্রদের অবস্থান বলিভিয়ার মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলে। প্রায় ৯৭৭ বর্গমাইল অঞ্চলজুড়ে অবস্থিত এই হ্রদের গভীরতা গড়ে প্রায় ৮-১০ ফুট। বিখ্যাত টিটিকাকা হ্রদে থেকে উদ্ভূত দেসাগুয়াদেরো নদীর পানি ছিল এই হ্রদের প্রধান পানির উৎস। অতিরিক্ত উচ্চতার দরূণ হ্রদের পানি দ্রুত শুকিয়ে যেত, যার খেসারত হিসেবে এর পূর্বে প্রায় দুই বার শুকিয়ে গিয়েছিল এই হ্রদটি। তবে অতীতে বার বার বিপর্যয়ের মুখে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এটি। একদম মৃতপ্রায় অবস্থান থেকে পুনরায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে এই হ্রদ।

এটি এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো খরার করাল গ্রাসে আচ্ছন্ন হয়েছে। হ্রদের স্থানীয়রা এবারও আশা হারাননি। তাদের মনে বিশ্বাস পুপু আবার ফিরে আসবে। কিন্তু তাদের আশায় জল ঢেলে দেন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ডার্ক হফম্যান। এই জার্মান বিজ্ঞানীর মতে“পুপুর বর্তমান অবস্থা আমাদের ভয়াবহ ভবিষ্যতের আগাম সতর্কবাণী।”

১৯৮৬ সালের পুপু হ্রদ আজ শুকিয়ে মরুভূমিপ্রায়; Source: USGS

বর্তমান অবস্থা

শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বের পুপু হ্রদ; Source: David Almeida

পুপু হ্রদ অঞ্চলের স্থানীয় অধিবাসী জুভেনাল গুতিয়েরেজ। শৈশবে বাবার সাথে পুপুর বুকে জাল ফেলে মাছ ধরতেন তিনি। এই হ্রদের প্রতি এক অদ্ভুত মায়া জন্মে গেছে তার ভেতরে। তাই বড় হয়ে মাছ ধরাকে আপন করে নেন। কিন্তু নতুন করে হ্রদ বিপর্যয় দেখা দিলে মাছ ধরাতে ইস্তফা দিতে হয়। ২৯ বছর বয়সী এই জেলে হ্রদের মায়া ত্যাগ করে শহরে এসে একটি মোটর গাড়ি কোম্পানীতে চাকরি নিয়েছেন। সম্প্রতি দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পুপু হ্রদ সম্পর্কে বলেন, “এখানে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। পুপুর শেষটুকু দেখার মতো শক্তি আমার নেই। তাই শহরে চলে আসি।” 

জুভেনাল একা নন। তার সাথে যোগ দিয়েছে শত শত পরিবার। নিজেদের সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে তারা সকলেই শহরমুখী হয়েছেন। গত তিন বছরে হ্রদ পার্শ্ববর্তী উন্তাবি গ্রামের প্রায় অর্ধেক মানুষ শহরের দিকে পাড়ি দিয়েছে। এর আগে ১৯৯০ সালে পুপুর বুকে বাষ্পীভবন শুরু হয়েছিল। সেবার অগভীর এ হ্রদের প্রায় ৯০ শতাংশ পানি শুকিয়ে যায়। তিনটি স্থানে জমে থাকা সামান্য জল ব্যতীত আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। কিন্তু অলৌকিকভাবে পুপু পুনরায় জেগে উঠে। এর ফলে নতুন করে পুপুর বুকে মানুষের জীবিক অন্বেষণ শুরু হয়।

প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে পুপুর বুক থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বাষ্পীভূত হয়ে যায়। ভরা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের ফলে পুনরায় হ্রদের বুকে পানি সঞ্চিত হয়। কিন্তু গত ২০১৫-১৬ বর্ষা মৌসুমে এর বিপরীত চিত্র দেখা যায়। টানা কয়েক মাস ধরে অব্যাহত খরার কবলে পড়ে এ হ্রদ। জার্মানীর বিজ্ঞানীদের পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, এ হ্রদে অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০১৩ সালে প্রায় ১৬১ বিলিয়ন লিটার পানি ঘাটতি রয়েছে। জেনে অবাক হবেন যে, বর্তমানে পুরো হ্রদের ধারণক্ষমতার মাত্র ২ শতাংশ পানি অবশিষ্ট রয়েছে!

এককালের প্রাণবন্ত হ্রদের আজ এই পরিণতি! Source: David Mercado/Reuters

বলিভিয়া সরকারের প্রচেষ্টায় হ্রদ অঞ্চলের প্রায় ৩,২৫০ জন শরণার্থীকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এর সামগ্রিক প্রভাব বলিভিয়ায় অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ব্যাহত করছে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে অরুরোর গভর্ণর ভিক্টর হুগো সানচেজ পুপু হ্রদকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। এ ঘোষণায় পুরো বিশ্বের পরিবেশবিদরা আশঙ্কিত হয়ে পড়েন। কারণ, পুপু হ্রদ বিপর্যয় কোনো চূড়ান্ত পরিণতি নয়, বরং মহাবিপর্যয়ের সূত্রপাত মাত্র।

কীভাবে শুকিয়ে গেল

পুপু হ্রদের পানি আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকলে বিশ্বের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন বলিভিয়া সরকারের নিকট জবাবদিহিতা চায়। সবার মনে একই প্রশ্ন, কীভাবে পুপুর মতো বিশাল একটি হ্রদ চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেল? এ প্রশ্নের জবাবে বলিভিয়া সরকার এক বিবৃতি প্রদান করেন। বিবৃতিতে এর পেছনে দায়ী এক দুর্ধর্ষ খলনায়কের নাম প্রকাশ করা হয়। আমেরিকা অঞ্চলের আবহাওয়ার সাথে সুপরিচিত এই খলনায়কের নাম এল নিনো‘!

নাম শুনে কোনো ওয়েস্টার্নের খলনায়কের ক্রুর হাসির শব্দ কল্পনায় প্রতিধ্বনিত হলেও বাস্তবে এল নিনো একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। আমেরিকা মহাদেশজুড়ে শীতকালের পর পরই জলাশয়বেষ্টিত বিষুবরেখা বরাবর অবস্থিত অঞ্চলসমূহে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে বিপুল পরিমাণ পানি বাষ্পীভূত হয়ে যায়। এই ঘটনাকে আবহাওয়াবিদগণ এল নিনো নামে ডাকেন। কয়েক মাস ব্যাপী খরার ফলে বিষুবরেখা বরাবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলসহ আমেরিকা মহাদেশের জলবায়ু, সমুদ্রে পানির পরিমাণ এবং সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্যের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। বিজ্ঞানীরাও এল নিনোকে পুপু হ্রদ বিপর্যয়ের প্রধান আসামী হিসেবে কাঠগড়ায় তুলছেন।

শিল্পায়নের খেসারত

পূর্বেও এল নিনোর কারণে পুপু হ্রদের পানি কমে গিয়েছিল। কিন্তু কখনই পুপুকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হয়নি। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, পুপু হ্রদ বিপর্যয়ের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা?

হুয়ানুনি নদীর বিষাক্ত বর্জ্য এসে পরিত্যক্ত হচ্ছে পুপুর বুকে; Source: Bolivian Thoughts in an Emerging World

ইভো মোরালেসের সরকার বরাবরই এ সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। কিন্তু নিউইয়র্কের ক্যারি ইনস্টিটিউটের পরিবেশবজ্ঞানী লিসা বোর বলছেন ভিন্ন কথা। পুপুর উপরে পরিচালিত এক জরিপে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। বলিভিয়া সরকার কর্তৃক হ্রদের পানি অব্যবস্থাপনাসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞ কর্তৃক প্রণীত নকশা অনুযায়ী টিটিকাকা হ্রদ (আরেকটি হ্রদ) থেকে বিপুল পরিমাণ পানি পাম্পের সাহায্যে দেসাগুয়াদেরো নদীতে প্রবাহ করার কথা। পুপু হ্রদের পানির প্রধান উৎস এই দেসাগুয়াদেরো নদী। তাই এই নদীর অতিরিক্ত পানি পুপু হ্রদ অঞ্চলে প্রবাহিত হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে, টিটিকাকা হ্রদের অতিরিক্ত পানি দেসাগুয়াদেরোতে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা দেখা দেয়। লিসা বোর জানান,

“টিটিকাকায় পানির কোনো অভাব নেই। কিন্তু পানি ব্যবস্থাপকরা নদীতে পানি দিতে আগ্রহী নন। তারা পুপুর প্রাপ্য পানিটুকু বিভিন্ন খনিসহ গুরুত্বপূর্ণ কলকারখানায় সরবরাহ করা শুরু করেন। যার ফলে গত কয়েক বছরে এল নিনোর কারণে হারানো পানি ফিরে পেতে ব্যর্থ হয় পুপু।”

পুপু হ্রদ অঞ্চলে খনি শিল্পের প্রসার ঘটলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে ধ্বংস হয়ে যায় মূল্যবান মৎস সম্পদ। প্রতিবছর গড়ে এক ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিখ্যাত সিরাকিউস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌগোলিক টম পেরো পুপু হ্রদের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হন। তার মতে, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন খনি থেকে পরিত্যক্ত বর্জ্য হুয়ানুনি নদীতে ফেলা হয়। হুয়ানুনি নদীর দূষিত হলদে পানি বিভিন্ন শাখানদী ঘুরে শেষপর্যন্ত পুপুর বুকে বিসর্জিত হচ্ছে। পুপুর পানি শুকিয়ে গেলেও রয়ে যাচ্ছে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। দ্য গার্ডিয়ানকে পাঠানো এক ই-মেইলের মাধ্যমে পেরো এর পেছনে বিভিন্ন পশ্চিমা পরাশক্তির শিল্পায়ন নীতিকেও দায়ী করেছেন।

মুনাফালোভী মানুষের করাল গ্রাসে বিপর্যস্ত পুপু; Source: Laurence Blair

হুমকির মুখে পুপুর জীববৈচিত্র্য

পুপু বিপর্যয়ে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে বলিভিয়ার মৎস শিল্পে; Source: David Mercado

হ্রদের পানি ছাড়াও পুপুর অন্যতম প্রধান সম্পদ ছিল এর জীববৈচিত্র্য। প্রায় ৩৪ প্রজাতির পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত থাকতো পুপুর পরিবেশ। স্থানীয় প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, পুপুর পানিতে চারটি বিরল প্রজাতির মাছ ছাড়াও বিভিন্ন লোনা পানির মাছ পাওয়া যেত। বিগত দশকে এর পানি কমতে থাকলে নতুন করে জরিপ চালানো হয়। ২০১৪ সালে হাজার হাজার মাছ মরে পুপুর পানিতে ভেসে উঠে। বিজ্ঞানীরা জানান, অতিরিক্ত পরিমাণে বিষাক্ত ক্যাডমিয়াম এবং সীসার উপস্থিতির কারণে পুপুর পানি মাছের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।

পরিবেশবদিরা বলিভিয়ার খনি শিল্পকে এর পেছনে দায়ী করলেও সরকারপক্ষ থেকে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কিছু হাস্যকর শিল্পনীতির অজুহাতে মুনাফালোভীর কবলে পড়ে পুপুর জীববৈচিত্র্য আজ মৃতপ্রায়। তাছাড়া পুপুর পানি হ্রাস পাওয়ার সাথে দ্রুত গতিতে কমে যাচ্ছে পাখির সংখ্যা। এটাই স্বাভাবিক। পাখির খাবার যদি না থাকে তাহলে পাখি বাঁচবে কীভাবে?

পুপুর শুষ্ক মাটিতে মৃত পাখির অবশেষ; Source: David Mercado

তবে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এসেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃত প্রায় ১৪০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। কিন্তু পরিবেশবিজ্ঞানীদের কণ্ঠে হতাশার বাণী। বিজ্ঞানী মিল্টন পেরেজের মতে, আমার মনে হয় না আমরা আর কখনো পুপুর হারানো জীবসম্পদকে পুনরুদ্ধার করতে পারবো। আমরা একে সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলেছি।”

আমাদের সুন্দর গ্রহ পৃথিবীর প্রায় চার ভাগের তিনভাগ পানি। পানির বুকে হাজারো জীববৈচিত্র্যের রঙিন উদ্দীপনায় ফুটে উঠে একটি সুন্দর বসবাসযোগ্য পৃথিবীর প্রতিচ্ছবি। কিন্তু মানুষের মুনাফালোভী মনোভাবের খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের পরিবেশকে। মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে ধ্বংস হচ্ছে নদী-নালা, খাল-বিল, হ্রদ, সাগরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উৎস।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ডমিনো ঘুঁটির দুষ্টচক্রে ধীরে ধীরে আমাদের সুন্দর পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। ফলে আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে চলে যাচ্ছে। শত শত সম্মেলনের মাধ্যমে গৃহীত হাজার হাজার নীতিমালাও পুপু রক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়। এর জন্য দরকার সঠিক বাস্তবায়ন। কিছু সংগঠনের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। নিজ নিজ অবস্থান থেকে পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। পুপু হ্রদ পৃথিবীর বুক থেকে বিদায় নিচ্ছে। বিজ্ঞানীরা পুপুর প্রত্যাবর্তনের সকল সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। পুপুর পথে হাঁটছে আরো কয়েকটি হ্রদ। কিন্তু এরা একেবারেই হারিয়ে যায়নি। আমাদের প্রচেষ্টাই এসব হ্রদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা রুখে দিতে পারি নতুন কোনো পুপু বিপর্যয়কে।

ফিচার ইমেজ: National Geographic

Related Articles