Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

প্লাস্টিক সার্জারির আদ্যোপান্ত

প্লাস্টিক সার্জারি শব্দটি আমাদের বহুল পরিচিত। পত্রপত্রিকায় প্রায়ই শব্দটির সাথে সাক্ষাৎ ঘটে আমাদের। কিন্তু এর পরও মেডিকেল সায়েন্সের যতগুলো শাখা- প্রশাখা রয়েছে, তার মধ্যে প্লাস্টিক সার্জারি শাখাটি নিয়েই হয়তো সবচেয়ে বেশি ভুল ধারণা কাজ করে আমাদের মধ্যে। এখনো বেশির ভাগ মানুষ প্লাস্টিক সার্জারি এবং কসমেটিক সার্জারিকে গুলিয়ে ফেলেন। কিছু ক্ষেত্রে এই দুটি শাখার মধ্যে মিল থাকলেও এদের উদ্দেশ্য পুরোপুরি ভিন্ন। আবার অজ্ঞতাবশত অনেকেই মনে করেন, প্লাস্টিক সার্জারিতে আসলে আমদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য প্লাস্টিক উপকরণ ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন শারীরিক কাঁটা-ছেঁড়া, জন্মদাগ ইত্যাদি দূর করার জন্য! কিন্তু এসব ধারণার কোনোটিই সঠিক নয়।

তাছাড়া প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে শারীরিক সৌন্দর্য বর্ধনের নামে যেসব বিজ্ঞাপন দেয়া হয়, সেসবও মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর একটি বড় কারণ। অনেক বিজ্ঞাপনেই স্তন, নাক, চোখ ইত্যাদি অঙ্গের আকৃতি পরিবর্তনের মাধ্যমে শারীরিক সৌন্দর্য বর্ধনকে প্লাস্টিক সার্জারি নামে চালিয়ে দেয়া হয়। যদিও এসব আসলে কসমেটিক সার্জারির অন্তর্ভুক্ত।

প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে বিভ্রান্তি দূরীকরণের জন্য আজকের লেখায় চিকিৎসাশাস্ত্রের এই শাখাটি নিয়ে আলোচনা করা হলো।

‘প্লাস্টিক’ শব্দটি এসেছে একটি গ্রিক শব্দ ‘প্লাস্টিকোস’ থেকে, যা দ্বারা যেকোনো আকার বা আকৃতিতে রূপান্তরে সক্ষম কোনো কিছুকে বোঝায়। চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় প্লস্টিক সার্জারি হলো জন্মগত বা কোনো দুর্ঘটনায় বিকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে টিস্যু পুনর্গঠনের মাধ্যমে সারিয়ে তোলা। তাই প্লাস্টিক সার্জারিকে অনেক সময় পুনর্গঠনমূলক সার্জারিও বলা হয়ে থাকে।

শরীরের কোনো অঙ্গ আগুনে পুড়ে গেলে বা ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারনে কোনো স্তন কেটে ফেলা হলে পরবর্তীতে পুড়ে যাওয়া ত্বক বা কেটে ফেলা স্তন পুনর্গঠন করা হয় প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে।

প্লাস্টিক সার্জারি চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা; Image Source: verywellhealth.com

অগ্নিদগ্ধ রোগীর ক্ষেত্রে অনেক সময় পুড়ে যাওয়ার কারণে কাঁধ, হাত, পা ইত্যাদি অঙ্গের টিস্যু শক্ত হয়ে গিয়ে তাদের স্বাভাবিক সঞ্চালনে বাঁধার সৃষ্টি করে। ফলে রোগীর জন্য এসব অঙ্গ ব্যবহার করে কাজকর্ম করা অনেকটা সীমিত হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে একজন প্লাস্টিক সার্জন পুড়ে যাওয়া অঙ্গের শক্ত হয়ে যাওয়া টিস্যু অপসারণ করে সেখানে শরীরের অন্য কোনো অংশের সুস্থ টিস্যু প্রতিস্থাপন করে দেন। ফলে ঐ অঙ্গের স্বাভাবিকতা অনেকাংশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। 

স্তন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রেও একজন প্লাস্টিক সার্জন রোগীর শরীরের অন্য কোনো অংশ থেকে টিস্যু, ত্বক, ফ্যাট, পেশি ইত্যাদি নিয়ে স্তনের আকৃতি তৈরি করেন। পরবর্তীতে তা কেটে ফেলা স্তনের স্থানে প্রতিস্থাপন করে দেন এবং আশেপাশে রক্তনালীর সাথে নতুন গঠিত স্তনের সংযোগ স্থাপন করেন।

এছাড়াও ভেঙে যাওয়া নাক পুনর্গঠন, ঠোঁট কাটা রোগের প্রতিকার, চিবুকের আকৃতি পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই প্লাস্টিক সার্জারি আসলে নতুন কোনো বিদ্যা নয়। খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ অব্দের দিকেও ভারতীয় শল্য  চিকিৎসকেরা শরীরের একস্থানের সুস্থ ত্বক ক্ষতিগ্রস্থ কোনো অংশে প্রতিস্থাপনের কাজে পারদর্শী ছিলেন। অবশ্য ইউরোপে প্লাস্টিক সার্জারির প্রসার ঘটে অনেকটা ধীর গতিতে। অন্যদিকে প্রাচ্যের দেশগুলো প্লাস্টিক সার্জারিকে ইউরোপের চেয়ে অনেক দ্রুত গ্রহণ করেছিল। ইতিহাস ঘেঁটে প্রাচ্যের এসব দেশে পুনর্গঠনমূলক সার্জারি তথা প্লাস্টিক সার্জারির অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়।

ধারণা করা হয়, প্লাস্টিক সার্জারির শুরুটা হয়েছিল প্রাচীন ভারত থেকে; Image Source: NewsGram

ইউরোপীয়দের মধ্যে প্রথম যে ব্যক্তি প্লাস্টিক সার্জারির কথা উল্লেখ করেন তিনি হলেন অরেলিয়াস কর্নেলিয়াস সেলসাস, একজন রোমান চিকিৎসক। ৩০ খ্রিস্টাব্দের দিকে তিনি তার De RE Medica নামক বইতে প্লাস্টিক সার্জারির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে তিনি অস্বাভাবিক চোখের পাতার অবস্থান পরিবর্তন, জন্ম থেকেই কান, নাক, ঠোঁট ইত্যাদি অঙ্গের কাঁটা-ছেঁড়া দূরীকরণ, জোড়া লাগানো আঙুল পৃথকীকরণের মতো চিকিৎসাপদ্ধতি নিজের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান থেকে বর্ণনা করেছেন।

তবে সেলসাসের পর দীর্ঘ সময় ধরে ইউরোপে প্লাস্টিক সার্জারির তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। সেই সময় ইউরোপে জ্ঞানচর্চার অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয় ধর্মান্ধতা নামক অভিশাপ। বিশেষ করে রোমান সাম্রাজ্যের ছত্রচ্ছায়ায় বেড়ে ওঠা বিভিন্ন চার্চের জারি করা কঠোর সব বিধান বিজ্ঞানচর্চাকে থামিয়ে দিতে নেতিবাচক ভূমিকা রাখে। এই সময়ের মধ্যই পোপ তৃতীয় ইনোসেন্ট সকল ধরনের শল্য চিকিৎসাকে চার্চের আইন বহির্ভূত বলে ঘোষণা করেন। এর ফলে সেলসাস ইউরোপে প্লাস্টিক সার্জারির যে সূচনা করে গিয়েছিলেন তার বিকাশ অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যায়।

পোপ তৃতীয় ইনোসেন্ট, যিনি সকল ধরনের সার্জারি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন; Image Source: Ziwevel

পরবর্তীতে রেনেসাঁ যুগে ইউরোপে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতো প্লাস্টিক সার্জারিরও দ্রুত বিকাশ ঘটে। পনেরো শতকের দিকে একজন তুর্কী শল্য চিকিৎসক, সারাফেদ্দিন, তার Imperial Surgery নামক বইটিতে মুখমন্ডলের মধ্যে বিভিন্ন সার্জারি এবং চোখের পাতার অবস্থান পরিবর্তনগত সার্জারি (Eyelid surgery) নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও বইটিতে তিনি পুরুষদের স্ফীত স্তন (Gynecomastia) বিষয়ক সমস্যার সমাধান দেন, যা বর্তমানে সার্জারির মাধ্যমে স্তনের আকৃতি হ্রাস করার যে পদ্ধতি চালু আছে তার ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।

বিংশ শতাব্দীতে সংঘটিত দুটি বিশ্বযুদ্ধের সময় বিপুল সংখ্যক সৈনিক আহত হয়। তাদের ক্ষত সারিয়ে তুলতে নিয়োজিত ছিলেন ইউরোপের শ্রেষ্ঠ সব সার্জনেরা। সেসময় তাদের হাত ধরে প্লাস্টিক সার্জারি তথা পুনর্গঠনমূলক সার্জারি প্রবেশ করে নতুন এক যুগে। আরও নিখুঁত এবং দ্রুততার সাথে টিস্যু প্রতিস্থাপনের পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয় এই সময়ে। প্লাস্টিক সার্জারি শাখার সবচেয়ে দ্রুত অগ্রগতিও হয় বিংশ শতাব্দীতেই। বর্তমানেও চিকিৎসাশাস্ত্রের এই শাখার অগ্রগতি সমানভাবে বজায় রয়েছে।

প্লাস্টিক সার্জারি বিদ্যাটি এতটাই প্রাচীন যে, প্রথম কবে বা কার ওপর এই ধরনের সার্জারি চালানো হয়েছিল তা বলা মুশকিল। তবে আধুনিক যুগের প্রথম প্লাস্টিক সার্জারি সম্ভবত ঘটে ১৯১৬ সালে ২৫ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাবিক ওয়াল্টার ইউ-এর ওপর।

তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ওয়াল্টার ইউ নাবিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এইচএমএস ওয়ারস্পাইট নামক ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে গোলার আঘাতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। তার চোখের পাতা পুড়ে যায়। ফলে অন্ধ হতে বসেন ওয়াল্টার, কারণ সেসময় চোখের পাতা পুনঃস্থাপনের কোনো চিকিৎসা ছিল না।

ওয়াল্টার ইউ – সার্জারির আগে (বামে) এবং সার্জারি করার পরে (ডানে) ; Image Source: allthatsinteresting.com

তখন ওয়াল্টারের সাহায্যে এগিয়ে আসেন হ্যারল্ড গিলিস নামক একজন শল্য চিকিৎসক, যিনি বিশ্বব্যাপী আধুনিক প্লাস্টিক সার্জারির জনক হিসেবে সুপরিচিত। গিলিস, ওয়াল্টারের ওপর প্রথমবারের মতো Tubed Pedicle Flap নামক একটি পুনর্গঠমূলক সার্জারি চালান। এজন্য তিনি ওয়াল্টারের বুক থেকে কিছু পরিমাণ চামড়া নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ চোখের আশেপাশে যুক্ত করে দেন। তবে চামড়াটি বুক থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন না করে টিউবের মতো পেঁচিয়ে চোখের সাথে সংযোগ দেয়া হয়। বুকের সাথে যুক্ত থাকার ফলে চামড়ার মধ্যে রক্ত চলাচল ঠিক থাকে এবং টিউবের মত করে পেঁচানো থাকার কারণে সংক্রমণের সম্ভাবনাও কমে যায়। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্থ চোখের চারদিকে নতুন যুক্ত চামড়াটি ধীরে ধীরে সংযোজিত হয়ে যায় এবং ওয়াল্টার তার চোখের পাতা ফিরে পান। 

গত শতাব্দীতে সংঘটিত দুটি বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে শল্য চিকিৎসকেরা প্লাস্টিক সার্জারির দিগন্তে নতুন সম্ভাবনার আলো দেখতে পান। বিভিন্ন সৈনিকের কাঁটা-ছেঁড়া সারাতে গিয়ে তারা বুঝতে পারেন, এই ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি প্রয়োগ করে একজন মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকৃতিও পরিবর্তন করে দেয়া সম্ভব। ফলে একজনের জন্মগত চেহারা আমূল বদলে দেয়াও অসম্ভব নয়। এই সূত্র ধরেই পরবর্তীতে উদ্ভাবিত হয় কসমেটিক সার্জারি।

অনেকেই মনে করেন, প্লাস্টিক সার্জারি এবং কসমেটিক সার্জারি আসলে একই জিনিস। শুধুমাত্র ক্ষেত্রবিশেষে নাম পাল্টে যায়। কিন্তু এই ধারণাটি পুরোপুরি ভুল। কারণ প্লাস্টিক সার্জারি এবং কসমেটিক সার্জারির মধ্যে পদ্ধতিগত মিল থাকলেও তাদের উদ্দেশ্য অনেকটাই ভিন্ন।

কসমেটিক সার্জারি এবং প্লাস্টিক সার্জারি এক নয়; Image Source: Forbes

প্লাস্টিক সার্জারি একধরনের পুনর্গঠনমূলক চিকিৎসাপদ্ধতি, যেটি সাধারণত শরীরের কর্মক্ষম নয় এমন কোনো অংশের ওপর প্রয়োগ করা হয়। যেমন ধরুন, কারও হাত যদি আগুনে বাজেভাবে পুড়ে যায় তাহলে পুড়ে যাওয়া হাতের ত্বক বা ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যু পুরোপুরি অকেজো হয়ে যাবে। তখন সেই ক্ষতিগ্রস্থ ত্বক বা টিস্যু সরিয়ে সুস্থ ত্বক প্রতিস্থাপনের কাজটি করা হয় প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে।

তাছাড়া ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণে যদি কারও স্তন কেটে ফেলা হয়, তখন কেটে ফেলা স্তনের স্থলে নতুন করে স্তন পুনর্গঠন করা হয় প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে।

অন্যদিকে কসমেটিক সার্জারির মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা এবং এই ধরনের সার্জারি সাধারণত প্রয়োগ করা হয় শরীরের কর্মক্ষম কোনো অংশের ওপর।

যেমন ধরুন, কোনো এক ব্যক্তির নাক একটু বেশিই বড়। সে কারণে তাকে প্রতিনিয়ত বন্ধুমহলে হেনস্থার শিকার হতে হয়। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি একদিন সার্জারির মাধ্যমে তার নাকের আকৃতি কিছুটা ছোট করে নিলেন। যেহেতু তার নাক আগে থেকেই পুরোপুরি কর্মক্ষম ছিল এবং তিনি শুধুমাত্র বাহ্যিক আকৃতি পরিবর্তন করেছেন, তাই তার এই সার্জারিকে বলা হবে কসমেটিক সার্জারি

নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য আজকাল অনেক নারীই ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করে থাকেন। তাছাড়াও পেটের আকৃতি কমানো (Tummy tuck), মুখের ভাঁজ দূর করা (Laser surfacing), ভ্রূর অবস্থান পরিবর্তন করা (Brow lift), শরীর থেকে চর্বি দূর করা (Liposuction) ইত্যাদি কসমেটিক সার্জারির অন্তর্ভুক্ত।

ভ্রূ-উত্তোলনের আগে (বামে) ও পরে (ডানে); Image Source: escuderofacialplastics.com

যেকোনো সার্জারির মতো প্লাস্টিক সার্জারিরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এসবের মধ্যে সার্জারির স্থান ফুলে ওঠা (Swelling), সেখানে কালচে দাগ থেকে যাওয়া (Bruising), ব্যথা এবং অস্বস্তি অনুভূত হওয়া, চুলকানি দেখা দেয়া (Itching) এবং সার্জারির স্থান অনুভূতিহীন হয়ে যাওয়া (Numbness) অন্যতম। তাই শারীরিক কোনো সমস্যার জন্য যদি কেউ প্লাস্টিক সার্জারির মধ্য দিয়ে যেতে চান, তাহলে অবশ্যই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেয়া উচিত।

This article is in Bangla language. It is the detail description about plastic surgery. Please click on the hyperlinks to check the references. 

Featured Image: Allthatsinteresting.com

Related Articles