Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ: চাই সচেতনতা এবং সতর্কতা

ইদানীং পত্রপত্রিকায় মাঝে মাঝেই আসছে বাচ্চাদের একধরনের অসুখের খবর। অনেকে চিকেন পক্স বলে মনে করলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন- এই রোগের নাম হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (এইচএফএমডি)। সংক্রামক এই রোগ ঠেকাতে কিছু কিছু স্কুল ইতোমধ্যে বাচ্চাদের জ্বর, ফুসকুড়ি ইত্যাদি হলে তাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের প্রধান জানিয়েছেন, এইচএফএমডি-র প্রকোপ হঠাৎ করেই বাড়তির দিকে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই রোগে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই, কারণ সাধারণত সপ্তাহখানেকের মধ্যে আপনা আপনি অসুখটি সেরে যায়।  

স্কুলপড়ুয়া অনেক ছাত্রছাত্রীর মধ্যে হঠাৎ করে এইচএফএমডি ছড়িয়ে পড়ছে © JAAGO Foundation

এইচএফএমডি কী

কক্সস্যাকিভাইরাস; Image source: Wikimedia Commons

 

এটি মূলত একটি ভাইরসাবাহিত ব্যাধি, যা মূলত কক্সস্যাকিভাইরাস (coxsackievirus ) নামে একটি গোত্রের ভাইরাস দ্বারা হয়ে থাকে। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক- সবারই হতে পারে। তবে সাধারণত দশ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। প্রাকৃতিকভাবে প্রতি দু-তিন বছর পর পর এই রোগ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তখন একইসাথে অনেক শিশু আক্রান্ত হয়।

পাঁচ বছরের নিচে বাচ্চাদের জ্বর হবার অন্যতম কারণ এইচএফএমডি। শিশুদের সবচেয়ে বেশি হওয়া সংক্রামক রোগের তালিকাতেও এর স্থান উপরের দিকে। আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শ থেকে দ্রুত তার আশেপাশে ছড়িয়ে যায় রোগের ভাইরাস।  

উপসর্গসমূহ

বাচ্চার ফুসকুড়ি নিয়েই সাধারণত বাবা-মায়েরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তবে এইচএফএমডি-র প্রাথমিক লক্ষণ ভিন্ন। মূলত গলা ব্যথা, উচ্চমাত্রার জ্বর, খেতে অনীহা ইত্যাদি দেখা যায় শিশুর মধ্যে। হাত-পায়ে ফুসকুড়ি, মুখে ঘা এসব হয় আরো কয়েকদিন পর। এখান থেকেই আসলে এইচএফএমডি নামের আবির্ভাব।

মুখে ঘায়ের কারণে খেতে কষ্ট হতে পারে রোগীর। ফুসকুড়ি ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরের অন্যান্য অংশেও। যাদের বয়স পাঁচ বছরের কম, তাদের ক্ষেত্রে উপসর্গের প্রকোপ বেশি হতে পারে।

হাত-পায়ে ফুসকুড়ি, মুখে ঘা ইত্যাদি রোগের প্রধান লক্ষণ; Image source: caribbean.loopnews.co

চিকিৎসা

কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই এই রোগের। মূল চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল দেয়া যেতে পারে, তবে কোন ধরনের (সিরাপ, ট্যাবলেট, সাপোজিটরি) এবং কতটুকু দিতে হবে সেটা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেয়াই ভালো। মুখে ঘা থাকলে বাচ্চাকে তরল বা নরম খাবার দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ফলের রস বা এসিডিক কোনো পানীয় না দেয়াই ভালো।

জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল দেয়া যেতে পারে; Image source: dailymail.co.uk

বাচ্চার যাতে পানিশূন্যতা না হয় সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে, কারণ মুখে ঘা হলে অনেক সময় তারা পানিও খেতে চায় না। আতঙ্কিত হবার কিছু নেই, কারণ ৭-১০ দিন পর রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে, অবশ্য ফুসকুড়ি সম্পূর্ণ মিলিয়ে যেতে হয়তো আরো কয়েকদিন লাগতে পারে।  

যেহেতু সংক্রামক রোগ, তাই বাইরে গেলে রোগীর থেকে সহপাঠী, খেলার সাথী এদের দেহেও ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই আক্রান্তদের আলাদা করে রাখতে হবে। শিশুকে অবশ্যই বাসায় রাখতে হবে। স্কুলপড়ুয়া হলে যতদিন সুস্থ না হয়ে উঠছে, ততদিন ছুটি নিয়ে রাখা জরুরি। আরেকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার- বাসায় গর্ভবতী নারী থাকলে তাকে অবশ্যই রোগীর থেকে দূরে রাখতে হবে, কারণ গর্ভাবস্থায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে নানা জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা দরকার। বিশেষ করে বাচ্চার বয়স ছয় মাসের কম হলে। দশদিন পরেও যদি অবস্থার উন্নতি না হয়, যদি শিশু নির্জীব হয়ে পড়ে এবং সাড়া না দেয়, বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি ভিন্ন কোনো কারণে কম থাকে, উপসর্গের প্রকোপ যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে ইত্যাদি কারণে।

প্রতিরোধ

কিছু নিয়ম মেনে চললে এই রোগের ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব। কোভিড আমাদের হাত ধোয়ার ব্যাপারে সচেতন করেছে। এই অভ্যাস ধরে রাখতে হবে, এবং সন্তানদেরও নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কারের অভ্যাস করাতে হবে। একইভাবে স্যানিটাইজার, ডিসইনফেক্টেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে। ঘর পরিচ্ছন্ন রাখা এবং রোগীর সংস্পর্শ থেকে দূরত্ব বজায় রাখাও গুরুত্বপুর্ণ।   

রোগ নিয়ে সচেতনতা ও সতর্কতার বিকল্প নেই; Image source: pathwaypeds.com

এইচএফএমডি প্রাণঘাতী কোনো ব্যাধি নয়। তবে স্বাভাবিকভাবেই সন্তানের কষ্টে বাবা-মা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েন। তাদের খুব বেশি চিন্তিত হবার কিছু নেই, কারণ আমাদের দেশে কয়েক বছর পর পর এই রোগের প্রাদুর্ভাব স্বাভাবিক ব্যাপার। রোগীকে বাসায় রেখে উপযুক্ত সেবা দেয়াই যথেষ্ট। তবে কখন দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে সেটাও মাথায় রাখা দরকার।

This is a Bengali language article about the Hand, Foot and Mouth Disease. The article describes what is it, how it manifests and what can we do to manage it. Necessary references are hyperlinked and also mentioned below.

References:

  1. Hossain Khan, M.A., Anwar, K.S., Muraduzzaman, A.K., Hossain Mollah, M.A., Akhter-Ul-Alam, S.M., Munisul Islam, K., Hoque, S.A., Nazrul Islam, M., & Ali, M.A. (2018). Emerging Hand Foot Mouth Disease in Bangladeshi Children- First Report of Rapid Appraisal on Pocket Outbreak: Clinico-epidemiological Perspective Implicating Public Health Emergency. F1000Research, 7.
  2. Guerra AM, Orille E, Waseem M. (2022). Hand Foot And Mouth Disease. StatPearls Publishing.
  3. National Health Services. Hand, foot and mouth disease.
  4. Centers for Disease Control and Prevention. Symptoms and Diagnosis of Hand, Foot, and Mouth Disease.
  5. American Academy of Dermatology. HAND-FOOT-AND-MOUTH DISEASE: TIPS FOR PREVENTING.

Related Articles