বর্তমান সময়ে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন আলোচনায় ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা ছাড়া আর যে সমস্যাটির কথা সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়, তা হলো ইনসিকিউরিটি বা নিরাপত্তাহীনতা। তবে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় ইনসিকিউরিটি মানে অনিশ্চয়তা বা উদ্বেগ এবং নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসের অভাব।
অর্থাৎ যখন কোনো ব্যক্তি নিজেকে নিয়ে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট না, বরং নিজের কোনো একটি খুঁত বা দুর্বলতা তাকে প্রতিনিয়ত মানসিকভাবে পীড়া দেয়, তখনই সে মানসিকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।
সাধারণত যারা আত্মবিশ্বাসী নয়, তারাই এতে বেশি ভোগে। একইভাবে, যারা নিজের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী, তাদের মধ্যে এটি অপেক্ষাকৃত কম দেখা যায়। তবে এমন কোনো মানুষই খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে সবধরনের নিরাপত্তাহীনতার উর্ধ্বে। এমনকি ব্যক্তি ও কর্মজীবনে যে মানুষটি খুবই সফল, যার আর নতুন করে পাওয়ার বা হারানোর কিছু নেই, সেই মানুষটিও কখনো কখনো এর শিকার হতে পারে।
এমন বিশেষ কিছু নিরাপত্তাহীনতা নিয়েই আজ আমরা আলোচনা করব, যেগুলো প্রায় প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কমবেশি দেখা যায়। এসব নিয়ে আলোচনার পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো এগুলোকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা। কেননা যেকোনো সমস্যা থেকে পরিত্রাণের প্রথম শর্তই হলো সমস্যাটিকে চিহ্নিত করা ও নিজে সেই সমস্যাকে স্বীকার করে নেয়া। যদি কেউ সমস্যা বুঝতে বা মানতেই না চায়, তাহলে তো সেটির সমাধানও অসম্ভব, তা-ই না?
তাহলে পাঠক, চলুন আর দেরি না করে জেনে নিই কোন নিরাপত্তাহীনতাগুলো আমাদের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনাচরণকে ব্যাহত করছে, আর কীভাবেই বা সেগুলো থেকে মুক্তিলাভ সম্ভব।
"আমি যথেষ্ট ভালো নই"
যেকোনো কাজ করার সময় আমাদের মনে অন্তত একবার না একবার এই প্রশ্নের উদয় হবেই, "আমি এই কাজের উপযুক্ত তো?" অর্থাৎ নিজের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানুষের চিরন্তন অভ্যাস। এমনকি যে মানুষটি নিজের কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে সফল, উদ্যমী ও ধারাবাহিক, তার কাঁধেও যখন কোনো দায়িত্ব অর্পণ করা হবে, সে খানিকক্ষণের জন্য দোলাচলে ভুগতে থাকবে, ভাবতে থাকবে, "আমি কি আসলেই এই কাজটি করার মতো যথেষ্ট ভালো?" একই অবস্থা দেখা যায় যেকোনো সম্পর্ক তৈরির পূর্বে, কিংবা সম্পর্ক চলাকালেও। একটি ছেলে হয়তো বেশ ভালো করেই জানে যে মেয়েটি তাকে পছন্দ করে, তবু তাকে ভালোবাসার প্রস্তাব দেয়ার আগে ছেলেটি বারবার ভাবতে থাকবে, "আমি কি ওর ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য?" তাছাড়া সম্পর্ক অনেকদূর গড়ানোর পরও যখন তাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মনোমালিন্য বা ঝগড়া হবে, তখন আবার ছেলেটির মনে সেই পুরনো প্রশ্ন ফিরে আসবে।
পরিত্রাণের উপায়
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে আগে আমাদের এ কথা মানতে হবে যে, 'যথেষ্ট ভালো' বলে কিছুর অস্তিত্বই নেই। এটি কেবলই একটি মানসিক অবস্থা। কোনো কাজ শুরুর আগেই একজন ব্যক্তির পক্ষে জানা সম্ভব না যে সে সেই কাজটির জন্য যথেষ্ট ভালো বা উপযুক্ত কি না। কিন্তু যখন অন্য কেউ সেই কাজটির জন্য তার উপর নির্ভর করবে বা তাকে বিশ্বাস করবে, তখন তাকেও অবশ্যই এটা মাথায় রাখতে হবে যে, সে-ই কাজটির জন্য সম্ভাব্য শ্রেষ্ঠ বলে, এবং তার উপর অন্যদের আস্থা রয়েছে বলেই তাকে কাজটি দেয়া হয়েছে। তাই এখন তার দায়িত্ব হলো, কাজটি যথাসম্ভব ভালো করে সম্পন্ন করা। তার বদলে নিজের উপযুক্ততা নিয়ে ভাবতে থাকলে কাজ একটুও এগোবে না, বরং পিছিয়ে পড়তে হবে। সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একই কথাই প্রযোজ্য। প্রত্যাখ্যানের ভয়ে পিছিয়ে আসলে কখনোই পছন্দের মানুষটিকে পাওয়া যাবে না। আর একবার সম্পর্ক পাকাপোক্ত হয়ে গেলে, তখন ফের নিজের উপযুক্ততা নিয়ে চিন্তা করা নিতান্তই অহেতুক। তখন বরং কর্তব্য হলো পারস্পরিক কথাবার্তা ও সমঝোতার মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব বিবাদ মিটিয়ে ফেলা। কারণ আপনি উপযুক্ত কি না, সেটি কেবল ভাবায় কোনো লাভ নেই। কাজে সেটি প্রমাণ করাই মুখ্য।
"আমার ভাগ্যে সবসময় ভুল মানুষ জোটে"
সম্পর্কে প্রতারিত হওয়ার পর এমন চিন্তা সবচেয়ে বেশি মাথায় আসে। একজন ব্যক্তি হয়তো কারো সাথে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিল। অনেক বিশ্বাস, আস্থা ও নির্ভরতা সেই বন্ধুত্বের সাথে জড়িয়ে ছিল। তাই হঠাৎ করেই যখন বিশ্বাসভাজন মানুষটির কাছ থেকে প্রতারণার শিকার হতে হয়, কিংবা সেই মানুষটি এমন কোনো কাজ করে বসে, যা তার কাছ থেকে কখনোই আশা করা যায়নি, তখন নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করা খুবই স্বাভাবিক। এবং এমন ঘটনার যদি বারবার পুনরাবৃত্তি হতে থাকে, তাহলে নিজের ভাগ্যের প্রতি আরো বেশি অবিশ্বাস চলে আসে। মনে হয় যে, সবসময়ই বুঝি ভাগ্য তার জন্য এমন কোনো ভুল মানুষকেই বরাদ্দ রাখবে।
পরিত্রাণের উপায়
সঠিক মানুষের সন্ধান পাওয়া আসলেই খুব বড় ভাগ্যের ব্যাপার। একজন মানুষ হয়তো খুবই ভালো, সবদিক থেকেই সে অতুলনীয়, কিন্তু তারপরও কিছু 'কিন্তু' থেকেই যায়। সেই মানুষটির সাথে যে আমাদের মনের মিল হবে, তা কখনোই আগে থেকে বলা সম্ভব না, যেহেতু প্রতিটি মানুষের মানসিকতাই একদম ভিন্ন। আর তাই, কারো কারো ক্ষেত্রে একবার, দু'বার কিংবা তারও বেশিবার সম্পর্কে প্রতারিত হওয়া বা ঠকে যাওয়ার মতো উদাহরণ থাকতেই পারে। কিন্তু একজন, দু'জন বা কয়েকজন মানুষ উপযুক্ত ছিল না বলে ঢালাওভাবে সব মানুষকেই একই রকম ভাবাটা ভুল। আপনার ভাগ্যে হয়তো এমন লেখা আছে যে পঞ্চমবারে সন্ধান পাওয়া মানুষটিই হবে আপনার আজীবনের সঙ্গী। কিন্তু আপনি যদি চারজনের কাছে প্রতারিত হওয়ার পর পঞ্চমজনকে পেয়েও ছেড়ে দেন, তাতে লোকসানটা আপনারই। তাই পূর্ব অভিজ্ঞতা যত খারাপই হোক না কেন, নতুন সম্ভাবনাকে কখনোই ঠেলে দূরে সরিয়ে দেয়া যাবে না।
"আমি হয়তো আবার আমার প্রিয়জনকে হারাব"
একবার যার প্রিয়জনকে হারানোর অভিজ্ঞতা আছে, কিংবা যে কাউকে বিশ্বাস করে ঠকেছে, তার মনের মধ্যে পরবর্তীতে সবসময় এই আশঙ্কার বীজ থেকেই যায়। আর এর ফলে তার বর্তমান সম্পর্কও বিষিয়ে যায়। একজন মানুষ হয়তো ইতিপূর্বে কাউকে মনপ্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করতো, ভাবতো সে কখনো তাকে ছেড়ে যাবে না। কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক, সে ছেড়ে চলে গেছে। স্বেচ্ছায় চলে যাওয়া হতে পারে, বাধ্য হয়ে চলে যাওয়া হতে পারে, এমনকি মৃত্যুর মাধ্যমে চিরবিদায়ও হতে পারে। কারণ যেটিই হোক না কেন, তার ফলে ওই মানুষটির মধ্যে একটি চিরস্থায়ী প্রভাব কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। এখন হয়তো সে আগের মানুষটির চেয়েও ভালো কারো সন্ধান পেয়েছে, যে আসলেই তাকে কখনো ছেড়ে যাবে না। কিন্তু তারপরও সে প্রতিনিয়ত চিন্তা করে চলেছে, "আবারো হয়তো আমার ভাগ্যে এমন কিছুই অপেক্ষা করছে। আবারো হয়তো আমাকে একা হয়ে যেতে হবে।"
পরিত্রাণের উপায়
কথায় আছে, ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়। তাই একবার প্রিয়জনকে হারানোর পর কেউ যদি অনেক বেশি সচেতন হয়ে যায়, সবসময় তার মনে পুনরায় প্রিয়জনকে হারানোর ভয় কাজ করতে থাকে, তাহলে তাকে দোষ দেয়া যায় না। কেননা যে হারায়, সে-ই বোঝে হারানোর কী দুঃসহ যন্ত্রণা। তবে প্রিয়জনকে হারানোর ভয়ে শঙ্কিত মানুষটিকে এ কথাও বুঝতে হবে যে, অতীতের কারণে বর্তমান ও ভবিষ্যতকে ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনো মানেই হয় না। অতীতে একজন মানুষ কী করেছে, তা চিন্তা করে সে যদি এখন বর্তমানে সাথে থাকা মানুষটিকে অবহেলা করে, কিংবা তার সাথে অস্বাভাবিক আচরণ করে, তাহলে সে নিজেকেও কষ্ট দিচ্ছে, ওই মানুষটিকে কষ্ট দিচ্ছে। আর তার চূড়ান্ত পরিণতি হলো কোনো এক পর্যায়ে সম্পর্কটির চূড়ান্ত সমাপ্তি। বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়ে যদি একই পরিণতি দ্বিতীয়বার বরণ করে নিতে হয়, এবং তার জন্য ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাগুলোও ভেঙে তছনছ হয়ে যায়, সেটি হবে সবচেয়ে ভয়াবহ। তাই অতীত নিয়ে পড়ে থেকে বর্তমান ও ভবিষ্যতকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না।
"আমার আসল রূপ চিনে ফেললে কেউ হয়তো আমাকে আর পছন্দ করবে না"
নিজের প্রকৃত মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যাওয়ার ভয় প্রতিটি মানুষকেই সারাজীবন ধরে তাড়া করে বেড়ায়। এই নিরাপত্তাহীনতা থেকে পালাবার কোনো পথই নেই। প্রতিটি মানুষ বাস্তবে নিজেকে যা দেখায়, তা হলো তার সম্ভাব্য শ্রেষ্ঠ সংস্করণ। কিন্তু তার মনের মধ্যেও অনেক কালিমা থাকতে পারে। একজন মানুষ হয়তো সামনাসামনি নিজেকে অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করছে, যার ফলে সবাই তাকে বাহবা দিচ্ছে, প্রশংসার বৃষ্টিতে ভেজাচ্ছে। অথচ সেই মানুষটির মনেই হয়তো অন্য কোনো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে, যা সবার সামনে বলা সম্ভব নয়, এবং যা জানলে অন্যরা তার সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করবে। এমনটা পৃথিবীর সকল মানুষের ক্ষেত্রেই সত্য। একজন মানুষের মনে যা থাকে, মুখে তার পুরোটা সে কখনোই বলে না। আর তাই তার মনের কথা কোনো দুর্বল মুহূর্তে প্রকাশ হয়ে যাবে, আর সবাই তাকে ভুল বুঝতে আরম্ভ করবে, এই আশঙ্কা সবার মধ্যেই বিরাজ করে।
পরিত্রাণের উপায়
হ্যাঁ, আমরা কেউই শতভাগ 'সাধু' নই। সবার সামনে আমাদের যা ভাবমূর্তি, তার থেকে আমাদের মনের ভেতরকার চেহারা অনেকটাই আলাদা। আর তাই সেই চেহারা ফাঁস হয়ে যাওয়া নিয়ে আমাদের ভয় একদমই অমূলক নয়। কিন্তু এখানে বিবেচ্য বিষয় হলো, সব মানুষের কাছেই কেন আমাদেরকে ভালো হতে হবে? একজন মানুষের পক্ষে কি সবার কাছে ভালো হিসেবে বিবেচিত হওয়া সম্ভব? সম্ভব না। যারা আমাদেরকে সত্যিকারের ভালোবাসে, তারা কিন্তু আমাদের মনের গহীনের কদর্য রূপটা দেখেও আমাদেরকে ছেড়ে যাবে না, আমাদের প্রতি তাদের ভালোবাসা কখনো কমবে না। আর আমাদেরকে যারা কখনোই মন থেকে ভালোবাসেনি, কেবল আমাদের বাহ্যিক চাকচিক্য দেখে আকর্ষিত হয়েছে, তারা আমাদের প্রকৃত রূপ দেখে দূরে সরে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। এবং এটি খুবই উপকারীও বটে। আমরা যদি সবসময় রাখঢাক না করে, ভালো সাজার চেষ্টা না চালিয়ে, পছন্দের মানুষদের সামনে নিজেদেরকে কিছুটা উন্মোচিত করি, তাহলেই বরং ভালো। এ থেকে যাচাই হয়ে যাবে, সেই মানুষগুলোও আসলেই আমাদেরকে ভালোবাসে কি না। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, আমাদের সম্ভাব্য শ্রেষ্ঠ সংস্করণ দেখে নয়, বরং সম্ভাব্য নিকৃষ্ট সংস্করণ দেখেও যারা আমাদের হাত ছেড়ে দেবে না, তারাই আমাদের প্রকৃত আপনজন।
"আমি এগুলো ভাবি, তাহলে আমি বোধহয় অনেক খারাপ"
আমরা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হতে পারি, কিন্তু তারপরও আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতাটা হলো, নিজের মনের উপর আমাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই আমাদের মনে অনেক সময়ই এমন অনেক চিন্তার উদ্রেক ঘটে, যেগুলো চিন্তা করা একদমই উচিত নয়। এমনকি অন্য কারো মুখে সেসব কথা শুনলে তাকেও আমরা খুব বাজে ভাবতাম, তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম। অথচ সেই চিন্তাগুলো আমাদের নিজেদের মনের কোণেই উঁকি দিয়ে যায়। শত চেষ্টা করলেও অনেক বাজে চিন্তা থেকে নিজেদের মনকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারি না। আর এর ফলে নিজেদের প্রতিই আমরা সন্দিহান হয়ে উঠি। আমরা ভাবতে থাকি, "আমি যে এসব আজেবাজে জিনিস চিন্তা করি, তাহলে আমি নিজেও তো মানুষ হিসেবে অনেক খারাপ।" এর চেয়ে কষ্টকর অনুভূতি বোধহয় পৃথিবীতে আর কিছুই হতে পারে না। আশেপাশের আর সব মানুষই আমাদেরকে খুব ভালো বলে ভাবলো, কিন্তু তাতেও কিছুই যায় আসে না, যদি আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে খারাপ মানুষ বলে ভাবি।
পরিত্রাণের উপায়
একটি কথা সবসময় আমাদের স্মরণে রাখতে হবে, খারাপ চিন্তা করা মানেই খারাপ মানুষ হয়ে যাওয়া নয়। মনের উপর যেহেতু কারো নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই খারাপ চিন্তা মাথায় আসতেই পারে। কিন্তু তাহলেই কেউ মানুষ হিসেবে খারাপ হয়ে যায় না। যদি আমরা নিজেরাই বুঝি যে চিন্তাটা খারাপ, এবং সেজন্য সেই চিন্তাটিকে বাস্তবায়িত করা থেকে বিরত থাকি, তার মানে সার্বিকভাবে নিজের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ আছে। আর তার মানেই হলো আমরা মানুষ হিসেবে খারাপ নই। খারাপ মানুষ আর ভালো মানুষের মূল পার্থক্য হলো উপলব্ধিতে। অধিকাংশ খারাপ মানুষই কিন্তু কোনো খারাপ কাজ করার সময় বুঝতে পারে না যে কাজটি খারাপ। পরবর্তীতে তার ভিতর অনুশোচনা হলেও, তখন সে মনে মনে কোনো একটি কার্যকারণ দাঁড় করিয়ে নিজের খারাপ কাজটিকে বৈধতা দিতে পারে। তখন আবার তার মন থেকে অনুশোচনার উপলব্ধিটা চলে যায়। কিন্তু অধিকাংশ ভালো মানুষের মনে শুরু থেকেই এই উপলব্ধিটা থাকে। তাই মাথায় খারাপ চিন্তা আসা মাত্রই তারা সেটিকে বাস্তবায়িত করে না, বরং বুঝতে পারে চিন্তাটি খারাপ। আর তাই তারা প্রকাশ্যে কোনো খারাপ কাজ করে না বা খারাপ কথা বলে না। আর কোনো মানুষ যদি এক মুহূর্তের ভুলে কোনো খারাপ কাজ করে বসে, তাহলেও কিন্তু সে রাতারাতি খারাপ মানুষ হয়ে যায় না। যদি সে পরবর্তীতে অপরাধবোধে ভোগে অথচ নিজের মনকে মানানোর জন্য কোনো কার্যকারণ তৈরি করে না, নিজের কাজকে বৈধতা দিতে যায় না, বরং নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে, তাহলে সে ভালো মানুষই থাকে।
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/
This article is in Bengali language. It is about the insecurities that everybody has. Necessary references have been hyperlinked inside.
Featured Image © WikiHow