Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ত্বকের তিল বা জড়ুল ক্যান্সারে রূপ নিচ্ছে না তো?

মেলানোসাইটিক নিভাস (Naevus) নামটি অপরিচিত মনে হচ্ছে কি? আমাদের ত্বকের ওপর আমরা যে কালো, বাদামী বা লালচে রংয়ের তিল বা জড়ুল ফুটে উঠতে দেখি, চিকিৎসাবিজ্ঞানে তারই নাম মেলানোসাইটিক নিভাস। কিন্তু পাঠক, জানলে অবাক হবেন, আমরা প্রায় প্রত্যেকেই বেশ কয়েকটি করে মেলানোসাইটিক নিভাস নিজের শরীরে বহন করে চলেছি!

এই সামান্য, নিরীহদর্শন তিল কিংবা জড়ুল আমাদের ব্যক্তিত্ব ও সৌন্দর্য প্রকাশে যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একজন মানুষের স্বতন্ত্র পরিচয় তুলে ধরে এটি। বারাক ওবামা, মেরিলিন মনরো, সিন্ডি ক্রফোর্ড, নাটালি পোর্টম্যান, জেনিফার লরেন্স, রবার্ট ডি নিরো, রাসেল ক্রো, মরগ্যান ফ্রিম্যান, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো থেকে শুরু করে আমাদের রেখা, সুচিত্রা সেন, সুজাতা, শর্মিলী আহমেদ, পারভীন সুলতানা দিতি- এমন অগণিত প্রথিতযশা ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন, যাদের চেহারায় থাকা নিভাস এক অনন্য বৈশিষ্ট্য হিসেবে তাদের ভাবমূর্তির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে।

সৌন্দর্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে মেলানোসাইটিক নিভাস; Source: disco90s.com

ত্বকের সৌন্দর্যবর্ধক এসব তিল বা জড়ুল প্রকৃতপক্ষে এক ধরনের বিনাইন টিউমার, অর্থাৎ এই টিউমার মারাত্মক নয়। অনেক সময় এদেরকে বিউটি স্পট বা সৌন্দর্য-তিলক বলা হয়ে থাকে। তবে শরীরে এদের আধিক্য দেখা দিলে বা তা দেখতে বিদঘুটে আকৃতির হলে, অনেক সময় প্রকৃতির এই উপহার কারো কারো জন্যে উপদ্রব হয়ে উঠতে পারে। তখন এগুলো দেখতে তো অস্বাভাবিক লাগেই, এমনকি বাইরের কোন উদ্দীপনার প্রভাবে এগুলো পরিবর্তিত হয়ে ত্বকের মেলানোমা নামক মারাত্মক ক্যান্সারেও রূপ নিতে পারে। আর তাই তিল বা জড়ুলের মেলানোমায় রূপান্তরিত হওয়ার লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধের বিষয়গুলো জানাতে আজকের এই আয়োজন।

সাধারণত, ত্বকের রঞ্জক পদার্থ মেলানিন উৎপন্নকারী কোষ মেলানোসাইট ত্বক জুড়ে সমানভাবে বিস্তৃত হয়ে ত্বকের রং তৈরি করে। তবে কোথাও কোথাও এরা গুচ্ছবদ্ধ হয়ে সংখ্যাবৃদ্ধি করার ফলে উৎপন্ন হয় মেলানোসাইটিক নিভাস। এগুলো চামড়ার সাথে সমতল বা উঁচু হয়েও থাকতে পারে, হতে পারে গোলাকৃতি বা ডিম্বাকৃতি, কোনো কোনোটিতে আবার লোম গজাতেও দেখা যায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে গড়ে দশ থেকে চল্লিশটি তিল থাকা স্বাভাবিক

মেলানোসাইটিক নিভাসের প্রকারভেদ

বিভিন্নভাবে মেলানোসাইটিক নিভাসের শ্রেণীবিন্যাস করা যায়, তবে প্রধানত এটি দুই ধরনের হতে পারে।

  • জন্মগত মেলানোসাইটিক নিভাস: এগুলোকে জন্মদাগও বলা চলে। পৃথিবীর শতকরা এক ভাগ মানুষ শরীরে এরকম নিভাস নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। গর্ভকালের পঞ্চম থেকে চব্বিশতম সপ্তাহের মধ্যে মেলানোসাইটের অস্বাভাবিক সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটলে এটি দেখা দেয়। এগুলো আকারে ছোট, বড় সবরকমেরই হতে পারে। তবে বিশালাকারের হলে সেটি মেলানোমায় রূপ নেওয়ার আশংকা থাকে। তাই শিশুর বয়স বাড়ার সাথে সাথে নিভাসের কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।

শিশুর মাথার তালুতে জন্মগত মেলানোসাইটিক নিভাস; Source: The Nevus Journey

  • কমন অ্যাকোয়ার্ড নিভাস: এগুলো মানুষ জন্মগতভাবে নিয়ে আসে না, জন্মের পর শরীরে তৈরি হয়। এ ধরণের নিভাস মেলানোমায় রূপান্তরিত হওয়ার আশংকা খুবই কম। তবে কারো শরীরে পঞ্চাশটিরও বেশি নিভাস থাকলে তার মেলানোমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

নিভাসের সম্ভাব্য পরিবর্তনসমূহ

মানবজীবনের প্রথম ত্রিশ বছরে, বিশেষত শৈশব ও বয়ঃসন্ধির সময়টাতেই শরীরে নিভাস তৈরি হয়। এরা সময়ের সাথে আকারে বড় হতে পারে, হরমোনের তারতম্যের সাথে গাঢ় রং ধারণ করতে পারে বা সংখ্যায় বাড়তে পারে, কখনও আবার রং হালকা হতে হতে চামড়ার সঙ্গে মিশে যেতেও পারে। এগুলো সবই মেলানোসাইটিক নিভাসের স্বাভাবিক পরিবর্তন। তবে কখনও কখনও এটি মেলানোমা নামক মারাত্মক ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। নিভাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন দেখে প্রাথমিক পর্যায়েই মেলানোমা সনাক্ত করা সম্ভব

যেসব পরিবর্তন দেখলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন, সেগুলো হচ্ছে-

(১) আকার বড় হতে থাকা: স্বাভাবিক মেলানোসাইটিক নিভাসের ব্যাস ৬ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। পেন্সিলের পেছনে যে ইরেজার থাকে, সেটির সঙ্গে এর আকারের তুলনা করা যেতে পারে। কোনো নিভাসের আকার ঐ ইরেজারের চেয়ে বড় হলে সেটির ব্যাপারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

(২) আকৃতির পরিবর্তন: তিল বা জড়ুল সাধারণত গোলাকৃতি বা ডিম্বাকৃতির হয়ে থাকে, অপরদিকে মেলানোমার এরকম নির্দিষ্ট কোনো আকৃতি থাকে না।

(৩) কিনারায় পরিবর্তন: কিনারা উঁচু, আঁকাবাকা, এবড়োখেবড়ো মনে হতে পারে বা আশেপাশের চামড়ার সাথে মিলিয়ে যেতে পারে।

(৪) রঙের পরিবর্তন দেখা দেওয়া: বিনাইন নিভাসের রং সাধারণত সবদিকে একই রকম থাকে। কিন্তু এটি মেলানোমায় রূপান্তরিত হতে শুরু করলে এর রঙের গাঢ়ত্বের পরিবর্তন দেখা দেয়।

(৫) অপ্রতিসাম্য দেখা দেওয়া: নিভাসের মাঝখান বরাবর যদি একটি রেখা কল্পনা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে এর এক অর্ধাংশের সঙ্গে অপর অর্ধাংশের মিল পাওয়া যাচ্ছে না।

(৬) আগে যে তিল সমতল ছিল, হঠাৎ সেটি উঁচু হয়ে ওঠা বা একটি পিণ্ডের মত মনে হওয়া। আগের চেয়ে শক্ত বলেও মনে হতে পারে।

(৭) চামড়ায় স্বাভাবিকভাবে যে ভাঁজ দেখা যায়, মেলানোমার উপরিভাগে সেই ভাঁজ থাকে না।

(৮) চুলকানো।

(৯) রক্তপাত হওয়া।

(১০) পূর্বে চামড়ার যে অংশে কোনো তিল ছিল না, সেখানে নতুন করে তিল দেখা দেওয়া এবং সেই তিলে উল্লেখিত এক বা একাধিক বিপদচিহ্ন দেখা দেওয়া।

মেলানোসাইটিক নিভাসের বিপদচিহ্নগুলো জেনে রাখলে এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ সহজ হয়; Source: livingitwell.net

কী কারণে মেলানোসাইটিক নিভাস মেলানোমায় পরিণত হয়?

সুনির্দিষ্টভাবে এর কোনো কারণ চিহ্নিত করা না গেলেও, যেসব কারণে মেলানোমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে সেগুলো সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যেমন-

  • অতিবেগুনি রশ্মির মাঝে অনেক বেশি সময় অবস্থান করা: সূর্যালোক কিংবা মানবসৃষ্ট বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মাধ্যমে মানুষ অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে আসতে পারে। এই রশ্মি চামড়ার কোষের ডিএনএ’র ক্ষতি করে, ফলে মেলানোমায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • বংশগত ইতিহাস: নিজের বা বংশের নিকটাত্মীয়দের কারো পূর্বে মেলানোমার ইতিহাস থাকলে এটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • ডিসপ্লাস্টিক মেলানোসাইটিক নিভাস: এগুলো মেলানোমায় পরিণত হওয়ার আশংকা সবচেয়ে বেশি। দেখতেও কিছুটা মেলানোমার মতোই হয়। সাধারণত হাত, পায়ের চেয়ে শরীরের মধ্যাংশে, মাথায় ও ঘাড়ে ডিসপ্লাস্টিক মেলানোসাইটিক নিভাস দেখা যায়। কারো শরীরে এ ধরনের নিভাস থাকলে তার অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।
  • শরীরে পঞ্চাশের অধিক সংখ্যক কমন মেলানোসাইটিক নিভাস বা অনেক বড় আকারের জন্মগত মেলানোসাইটিক নিভাসের উপস্থিতি।
  • ফর্সা গায়ের রং, নীল বা ধূসর চোখ, লালচে বা ব্লন্ড চুলের অধিকারীদের ত্বক সূর্যের আলোর প্রতি বেশি সংবেদনশীল হয়, তাই তাদের মেলানোমা হওয়ারও ঝুঁকি বেশি।
  • কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন বা বিষণ্নতার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ সেবনের ফলে সূর্যালোকে ত্বকের সংবেদনশীলতা বেড়ে যেতে পারে অথবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রা়স পেতে পারে। ফলে মেলানোমায় আক্রান্তের আশংকা দেখা দেয়।
  • ফ্যামিলিয়াল এটিপিক্যাল মাল্টিপল মোল-মেলানোমা সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মেলানোমার ঝুঁকি বেশি থাকে।

ডিসপ্লাস্টিক মেলানোসাইটিক নিভাসের উপস্থিতি মেলানোমার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়; Source: beautyzion.com

নিভাসের বিপজ্জনক পরিবর্তনগুলো কীভাবে সনাক্ত করবেন?

ঝুঁকিপূর্ণ পরিবর্তনগুলো প্রাথমিক অবস্থায় সনাক্ত করা গেলে মেলানোমাজনিত ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব। তাই বিপদচিহ্নগুলো চিনে নিয়ে নিয়মিত নিজে নিজে সেগুলো পরীক্ষা করা দরকার

নিম্নোক্ত উপায়ে নিজের শরীরে নিভাসের পরিবর্তন লক্ষ্য করুন-

» আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সারা শরীরের সামনের এবং পেছনের অংশ পর্যবেক্ষণ করুন।

» কনুই ভাঁজ করে হাত, বাহু এবং হাতের তালুর দুই পিঠ পরীক্ষা করুন।

» বসুন এবং পায়ের পাতা, বিশেষত পায়ের তলা, আঙুলের ফাঁকে লক্ষ্য করুন।

» এবার ছোট আরেকটি আয়নার সাহায্যে নিজের ঘাড়, মাথার তালু ও পেছনের অংশ, পিঠ ও পশ্চাদ্দেশ পরীক্ষা করুন।

» শরীরের যেসব অংশ সরাসরি সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসে, সেসব অংশ বিশেষ মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করুন।

শরীরের কোনো অংশের তিল কিংবা জড়ুলের মধ্যে বিপজ্জনক পরিবর্তন দেখতে পেলে দ্রুত একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। তিনি অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনবোধে বায়োপসি সহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর নির্দেশনা দিতে পারেন। পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসাপদ্ধতি বেছে নেওয়া হয়

মেলানোমার চতুর্থ ধাপ; Source: acsh.org

অনেক সময় চিকিৎসকগণ জন্মগত মেলানোসাইটিক নিভাসের অবস্থা যাচাই করে সেটির মেলানোমায় রূপান্তরিত হওয়া রোধ করতে আগেভাগেই অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিতে পারেন। আর তা সম্ভব না হলে রোগীকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখতে বলা হয়।

মেলানোমা প্রতিরোধে করণীয়

সাধারণ কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে মেলানোমা প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেমন-

» অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচাতে সঠিক নিয়ম মেনে সুরক্ষামূলক সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। শীতের মৌসুম বা মেঘলা দিনেও এটির ব্যবহার বাদ দেওয়া যাবে না।

» প্রখর রোদে বেরোতে হলে ত্বক যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন। মাথা ও চেহারার সুরক্ষায় সানগ্লাস, বড় কিনারাযুক্ত টুপি, স্কার্ফ এবং ছাতা ব্যবহার করতে পারেন।

রোদে বেরোতে হলে ত্বকের সুরক্ষার দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন; Source: fashioncentral.pk

» দিনের যে সময়টায় সূর্যের আলো তীব্র থাকে (সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত), সে সময় বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকুন। একান্তই যদি বেরোতে হয়, তাহলে যথাসম্ভব ছায়াঘেরা জায়গায় থাকতে চেষ্টা করুন।

» অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন।

» মেলানোমার বিপদচিহ্নগুলো চিনে নিন এবং নিয়মিত নিজের ত্বক নিজেই পরীক্ষা করুন। যে কোন বিপদচিহ্ন চোখে পড়লে দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

দ্রুততম সময়ে মেলানোমা সনাক্ত করা সম্ভব হলে শুধুমাত্র আক্রান্ত অংশের অস্ত্রোপচার করলেই আরোগ্যলাভ সম্ভব হয়। কিন্তু সনাক্ত করতে দেরি হলে বা চিকিৎসা নিতে কালক্ষেপণ করলে, পরিণামে লসিকা গ্রন্থিসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দেহের অন্যান্য অংশের চামড়া, ফুসফুস, যকৃত, মস্তিষ্ক, হাড় সহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে মেলানোমা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসাপদ্ধতি যেমন জটিল, সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়সাধ্য হয় পড়ে, তেমনি রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও কমে যায়। তাই মারাত্মক এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ভোগান্তি পোহানোর চেয়ে এর প্রতিরোধে সচেষ্ট হওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ফিচার ইমেজ: MyAnimeList

Related Articles