Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

করোনাকালে সুস্থ থাকুক পরিবারের বয়স্ক সদস্যরাও

করোনাভাইরাস ডিজিজ বা কোভিড-১৯ নিয়মিতভাবেই নিজের বৈশিষ্ট্য বদলাচ্ছে। আর সেই সাথে আরো বেশি ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে ভাইরাসটি। প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। আর এই আক্রান্তের সংখ্যার মধ্যে বড় একটা জায়গা জুড়ে আছে প্রতিটি দেশের বয়স্ক নাগরিকেরা।

পরিবারের বয়স্ক সদস্যটির পাশে থাকুন; Image Source: time.com

বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীর একটু একটু করে দুর্বল হয়ে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে। শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল থাকায় লকডাউনের এই সময়টায় আমাদের পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা তাই বাকিদের তুলনায় বাড়তি ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো পরিবারের বয়স্ক সদস্যটির কাছে নেই। কিন্তু ভালোবাসার প্রিয় মানুষগুলো আরো অনেক দিন আমাদের সাথে, মাথার উপরে ছায়া হয়ে থাকুক, সেটা কে না চায়! তাই আপনার পরিবারের বয়স্ক সদস্যকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে বর্তমান মহামারিকালীন পরিস্থিতিতে নিম্নোক্ত কৌশলগুলো মেনে চলুন।

১) সুস্থ থাকুন

আপনার মাধ্যমে খুব সহজেই বাসার বয়স্ক সদস্যটির কাছে ভাইরাস চলে আসতে পারে। তিনি হয়তো বাইরে বের হচ্ছেন না। তবে আপনি তো বেরোচ্ছেন! আর তাই বয়স্ক মানুষটিসহ পরিবারের বাকি সবাইকে সুস্থ রাখতে নিজেকে সুস্থ রাখুন সবার আগে। বাইরে বের হওয়ার সময় যথাযথ নিয়মাবলী মেনে নিরাপদে চলাচল করুন। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত করুন। এতে করে আপনি যেমন সুস্থ থাকবেন, তেমনি সুস্থ থাকবে বাকিরাও।

২) যোগাযোগ রাখুন সবসময়

হয়তো পরিবারের অনেক বয়স্ক সদস্যই এখন আপনার পাশে নেই। কিন্তু তারপরও আপনাকে দেখতে বা সবার সাথে কথা বলতে তার তো ইচ্ছে হয়। এই ইচ্ছেটুকু পূরণ করা বর্তমানে কোনো ব্যাপারই না। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করুন। ভিডিও বা অডিও কলে যোগাযোগ রাখুন পরিবারের সবার সাথে, সবসময়। একজন বয়স্ক মানুষ একাকী অনুভব করতেই পারেন। আর এই একাকিত্ব থেকেই জন্ম নেয় মানসিক ও শারীরিক নানা সমস্যার। তাই নিয়মিত পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের সাথে কথা বলুন, তাদের খোঁজ নিন।

নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন; Image Source: inquirer.com

৩) সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে উৎসাহ দিন

অনেক পরিবারের বয়স্ক সদস্যরাই গ্রামে বা একা আছেন। সেক্ষেত্রে যতটা সম্ভব তাকে সাবধান করুন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে উৎসাহ দিন। একজন মানুষ বাইরে বের হতে চাইবেন, চারপাশের দোকানে যেতে চাইবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এতে করে তার শরীরের যে সমস্যাগুলো হতে পারে সেই সম্পর্কে তাকে জানান। বাড়িতে যারা বাজার, কাগজ ইত্যাদি দিতে আসছেন, তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করুন। তবে সেটাও নিরাপত্তা মেনে।

৪) ব্যস্ততার ক্ষেত্র তৈরি করুন

একজন মানুষের ঘরের ভেতরে অনেকটা সময় কাটাতে ভালো না-ই লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিবারের বয়স্ক সদস্যটির জন্য কাজের নতুন ক্ষেত্র তৈরি করুন। হতে পারে সেটা বারান্দায় একটা বাগান তৈরি করা কিংবা কুশিকাঁটার কাজ করা। এতে করে মানুষটি ব্যস্ত থাকবে, আনন্দে থাকবে। তার সময় খুব সহজেই কেটে যাবে।

৫) পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কথা বলুন

করোনাভাইরাসের হাত থেকে সহজেই দূরে থাকার একটি উপায় হলো পরিচ্ছন্ন থাকা। প্রিয় মানুষটিকে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে বলুন। বাইরের কারো সাথে কথা বলার সময় মাস্ক ব্যবহার করতে এবং বাইরে গেলে ফিরে এসে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে এবং প্রয়োজনে ভালোভাবে গোসল করতে পরামর্শ দিন।

৬) সংক্রমণকে প্রতিরোধ করুন

ঘরের বয়স্ক মানুষটি কোন কোন উপায়ে ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেন তা নির্ধারণ করুন। এরপর একে একে সেই উপায়গুলোকে কমিয়ে আনুন। যদি ঘরের বাইরে না গিয়েও প্রাত্যহিক কাজকর্ম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয় তাহলে সেটাই নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন।

৭) টেলিমেডিসিনের ব্যবস্থা রাখুন

বয়স্ক একজন মানুষের শারীরিক নানাবিধ সমস্যায় ভুগতে পারেন। আর সেজন্য অবশ্যই তার প্রয়োজন নিয়মিত একজন চিকিৎসকের। মহামারির এই সময়ে যেহেতু বাইরে যাওয়াটা নিরাপদ নয়, তাই টেলিমেডিসিনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করুন। চিকিৎসক বাসায় এসে নিরাপত্তামূলক সব পদ্ধতি মেনে যদি থেরাপি বা চিকিৎসা দিতে রাজি হন তাহলে সেটারও ব্যবস্থা করুন।

জরুরি সময়ের জন্য কয়েক ধাপে ব্যবস্থা রাখুন; Image Source: statnews.com

৮) জরুরি মোবাইল নম্বর রাখুন

আপনি যদি প্রিয় মানুষটির কাছে না থাকেন সেক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে তার সাথে দেখা করতে যাবে বা দ্রুত সাহায্য করতে পারবে এমন মানুষের মোবাইল নম্বর রাখুন। শারীরিক কোনো অসুস্থতা বা সমস্যায় ব্যবহারের জন্য জরুরি মোবাইল নম্বর বয়স্ক সদস্যের হাতের কাছেই রাখুন।

৯) পরিকল্পনা শুরু করুন আগেভাগেই

ভবিষ্যতে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিবারের সবার সাথে বসে আগেই সেই সংক্রান্ত সম্ভাবনাগুলো খতিয়ে দেখুন ও পরিকল্পনা করুন। পরিবারের বয়স্ক সদস্যটি যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে তার সাথে কে থাকবেন, হাসপাতালে কে যাবেন, কে পরিবারের বাকিদের দেখভাল করবেন- এই সবগুলো দায়িত্ব ভাগ করে দিন। বড় কিংবা ছোট- পরিবারের সব সদস্যকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে বলুন। এতে করে প্রয়োজনের সময় ঘাবড়ে না গিয়ে সবাই পরিকল্পনানুসারে কাজ করতে পারবেন।

প্রিয় মানুষকে আগলে রাখুন; Image Source: webmd.com

আপনার ভালোবাসাই পারে বছরের পর বছর ধরে পুরো পরিবারকে আগলে রাখা সদস্যটিকে সুস্থ রাখতে। শুধু মানসিকভাবে ভালো না বোধ করার কারণেও পরিবারের প্রিয় মানুষটির শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই এই জরুরি সময়ে মানসিক ও শারীরিক- দুভাবেই তার সুস্থতা নিশ্চিত করুন। তাকে হাসি-খুশি রাখুন। হয়তো আমরা নিজেরাও বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েছি। তবে সেই হতাশা যেন প্রিয় মানুষটিকে না ছুঁয়ে যায়। পরিবারের সবচাইতে বয়স্ক সদস্যটিকে ভালবাসুন, আগলে রাখুন সবসময়।

This article is written on the fact that how we can keep our elder family member's health safe during COVID-19.

Feature Image: nytimes.com

Related Articles