Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ঘরবন্দী শিশুদের মানসিক বিকাশ অব্যাহত রাখতে অভিভাবকদের করণীয়

করোনাভাইরাস সারাবিশ্বের মানুষের জীবনযাত্রায় অস্বাভাবিকভাবে বাধা সৃষ্টি করেছে। ব্যক্তিজীবনে বিভিন্নরকম ক্ষতি এবং বিষাদের জন্ম দিয়েছে এই মহামারি। ক্ষতি, দুঃখ এবং বিষাদ কারো কারো পক্ষে গ্রহণ করা খুবই কঠিন। আর শিশুদের মাঝে এটি কীভাবে প্রভাব ফেলছে তা একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বোঝা যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় দিনের অর্ধেক সময় অতিবাহিত করা শিশুরা এমন পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে যেমন বিষাদগ্রস্ত, তেমনই নেতিবাচক সংবাদগুলো তাদেরকে প্রভাবিত করছে প্রতিনিয়ত। মায়েরা হয়তো কখনোই ভাবেননি সন্তানদের নিয়ে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন।

চিকিৎসকদের মতে, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট উদ্বেগ, চাপ এবং অনিশ্চিয়তার মতো বিষয়গুলো নিয়ে শিশুদের ভাবতে বাধ্য করছে। সকল বয়সী শিশু ভিন্ন ভিন্ন পন্থায় এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছে। ধরুন, আপনার সন্তানের স্কুল বন্ধ হওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা কিংবা ছোটখাট পিকনিকে যোগ দিতে পারছে না। তাহলে নিশ্চিত থাকুন আপনার সন্তানের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সমর্থন, ভালোবাসা এবং পরিস্থিতি সামলে ওঠার মানসিক শক্তি প্রয়োজন। আর বৈশ্বিক মহামারিতে এমন পরিস্থিতিই সৃষ্টি হয়েছে গোটা বিশ্বে। ইউনিসেফ আশঙ্কা প্রকাশ করছে- করোনাভাইরাস তাণ্ডবে বিভিন্ন বয়সের শিশুরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর তাই বাবা-মাকে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়েও বেশি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

স্বাস্থ্য সচেতন শিশু; Image Source: UNICEF

করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন বয়সী শিশুর মানসিক বিকাশ যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য ইউনিসেফ কয়েকটি বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, বর্তমান পরিস্থিতে প্রত্যেক বাবা-মা দুটি চিন্তাই সবচেয়ে বেশি করছেন। একটি হলো ঠিক কবে নাগাদ করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) হাতে পাওয়া যাবে? আর তাদের দ্বিতীয় দুশ্চিন্তাটি হলো কবে তাদের সন্তানেরা স্কুলে ফিরতে পারবে!

অবশ্য এমন দুশ্চিন্তা হওয়ারই কথা। কিন্তু যতদিন পর্যন্ত এই দুটো প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া যাচ্ছে ততদিন যাতে শিশুদের মানসিক বিকাশ অব্যাহত থাকে সেই ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। তাই আজ আমরা ইউনিসেফের দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী এই বৈশ্বিক মহামারিতে ঘরবন্দী শিশুদের প্রতি বাবা-মায়ের দায়িত্বগুলো কী হতে পারে সেই সম্পর্কে আলোচনা করব।

সন্তানের করোনা উপসর্গ দেখলে যা করতে হবে

ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে আমাদের দেশে জ্বর, সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। এজন্য অবশ্য আমাদের জীবনযাত্রা অনেকাংশে দায়ী। অন্যদিকে, করোনাভাইরাসের উপসর্গ হিসেবে জ্বর, শুকনো কাশি এবং গলা ব্যথার কথা বার বার বলা হচ্ছে। এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার কথা বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও একই ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে- শিশুদের এমন লক্ষণ দেখা দিলে বাবা-মায়ের করণীয় কী? ইউনিসেফ এক্ষেত্রে কয়েকটি পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে।

Image Source: UNICEF

কয়েকটি দেশ ব্যতিত প্রায় সকল দেশেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা নিয়মিত বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতে অন্য সময়ের মতো শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে যেতে নিরুৎসাহিত করছে সংস্থাটি। কারণ, যদি শিশুটি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত না হয় তবে ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রোগীদের সংস্পর্শে গিয়ে নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। এই ধরনের সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে নিয়মিত সেবনীয় ঔষধ গ্রহণে কোনোপ্রকার সমস্যা নেই। আর যদি কোনো শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় তবে তাকেও যথাসম্ভব বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে ইউনিসেফ। সেক্ষেত্রে তাদের যুক্তিটিও যথাযথভাবে সমর্থনযোগ্য।

সংস্থাটি বলছে, শিশুদের ক্ষেত্রে শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কম হওয়ায় উপসর্গ অনুযায়ী ঔষধ প্রয়োগে সুফল পাওয়া যেতে পারে। বাড়ির প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে আক্রান্ত শিশুদের দূরে রাখতে হবে। আর যদি আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে শিশুটি পরিবারের অন্য কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যের সঙ্গে একই কক্ষে থেকে থাকেন, তবে তাদের দুজনকেই আলাদা ঘরে রাখতে হবে। আর উপসর্গ না থাকার পরেও অনেক বাবা-মা শুধুমাত্র দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য সন্তানের কোভিড-১৯ টেস্ট করাতে চান। ইউনিসেফ বলছে, উপসর্গ না থাকলে কোভিড-১৯ পরীক্ষা নয়, বরঞ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সন্তানকে ঘরে রাখতে হবে।

শান্ত এবং সক্রিয় থাকা

করোনাভাইরাস নিয়ে নেতিবাচক সংবাদগুলো শিশুদের মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই বাবা-মায়ের উচিত যথেষ্ট শান্ত থেকে এগুলোর মোকাবেলা করা। সেই সাথে ঘরবন্দী অবস্থায় শিশুরা যেসব কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সেগুলোতে কোনোপ্রকার বাধা সৃষ্টি না করা। যদি বাবা-মা ধৈর্যহারা হয়ে পড়েন, তবে শিশুরা ঘরের বাইরে যেতে চাইবে। আর স্কুলপড়ুয়া শিশুরা সবসময় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করে। ঘরের খেলাধুলা, পড়াশোনার মাঝে তাদেরকে বাধা দিলে স্বাভাবিকভাবেই তারা তখন বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে চাইবে।

বাবা-মায়ের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে শিশুরা; Image Source: Istock.com

শিশুদের করোনাভাইরাসের ব্যাপারে এমনভাবে প্ররোচিত করতে হবে যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারে। সন্তানদের সুরক্ষায় আরও একটি কাজ অভিভাবকেরা করতে পারেন। শিশুদের বুঝতে দিতে হবে যেকোনো সময় পরিবারের যেকোনো সদস্য এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। এবং এতে সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশির মতোই উপসর্গ দেখা দেয়। এতে করে শিশুরা কঠিন মনোভাবপূর্ণ হবে, সেই সাথে প্রাপ্তবয়স্কের মতো লড়াই করার মানসিক শক্তি অর্জন করবে।

প্রাপ্তবয়স্কদের উচিত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে শিশুদের মধ্যে যে ভীতি কাজ করে সেটিকে যথাযথ সম্মান দেয়া। ‘শিশু-কিশোর এবং যুবকদের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি তুলনামূলক কম’ এটি বলে শিশুদের নিশ্চিন্ত করতে হবে। তাদেরকে এটাও মনে করিয়ে দেয়া যেতে পারে, এমন কিছু কার্যক্রমের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে পুরোপরিবার নিরাপদ থাকতে পারে। যেমন: স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাত ধোয়া, হাত দিয়ে মুখমণ্ডলে স্পর্শ না করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।

Image Source: Istock.com

বাহ্যিকভাবে শিশুদের সুস্থ রাখতে আরও একটি কাজ করা যেতে পারে। আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি বয়স অনুসারে শিশুরা বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়। আর ঐ দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করলে দেখা যাবে কিছু শিশুকে পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিষয়ে বোঝালে তারা সচেতন হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখমণ্ডলে স্পর্শ না করা কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সামাজিক গুরুত্ব তাদের সামনে তুলে ধরা যেতে পারে। এতে করে দেখা যাবে খুব স্বল্পভাবে হলেও করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার উপায় এবং সামাজিক গুরুত্ব বুঝতে পারবে শিশুরা। এতে করে তাদের উপর মানসিক চাপ কিছুটা হলেও কমবে।

একটি রুটিনের মধ্য দিয়ে শিশুদের নিরাপদে রাখা

শিশুদের নিয়ম-নীতির মধ্য দিয়ে গড়ে তুলতে হয়। তবে অবশ্যই এটি হতে হবে তাদের সহ্য-ক্ষমতার মধ্যেই। আর তাই অভিভাবকদের উচিত শিশুদের জন্য একটি দৈনন্দিন রুটিন প্রস্তুত করা। এমন পরিস্থিতিতে ঘরবন্দী শিশুদের মানসিক বিকাশ অব্যাহত রাখার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। উক্ত দৈনন্দিন রুটিনে পড়াশোনার সময়, খেলাধুলার সময় এবং ফোনে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগের সময় নির্ধারণ করে দেবেন অভিভাবকরা। এই রুটিন এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে বাবা-মায়ের ইচ্ছা এবং শিশুর স্বাচ্ছন্দ্যবোধের বিষয়টি শিশুর এই ঘরবন্দী জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এতে করে বাবা-মা নিজের কাজে ব্যস্ত থেকেও বুঝতে পারবেন তার সন্তান এখন পড়াশোনা করছে নাকি খেলাধুলা করছে। এটি এমন একটি রুটিন হতে পারে যার মাধ্যমে সন্তান এবং অভিভাবক উভয়েই নিজের কার্যক্রম অনুধাবন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে শিশুদের বিশেষ কিছু কাজে ব্যস্ত রাখারও পরামর্শ দিচ্ছে ইউনিসেফ। ১০ বছরের অধিক বয়সী শিশুদের নিজের রুটিন নিজেই তৈরি করতে দেয়া উচিত বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এতে করে তারা নিজেরাই নিজেদের কাজ বেছে নিতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী সারাদিন ব্যস্ত থাকবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের এই স্বাধীনতা এই বয়সী শিশুদের মানসিক বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Image Source: inews.com

এক্ষেত্রে পরিবার এবং অভিভাবকগণ শুধুমাত্র তাদের কাজগুলোর উপর নজরদারি করতে পারবেন। আমাদের সমাজে প্রধানত ৩ ধরনের পরিবার দেখা যায়। কিছু পরিবার দিনের শুরুতেই নিয়মানুযায়ী কাজকর্ম শুরু করে। সেক্ষেত্রে শিশুদেরও পারিবারিক রীতিনীতিতে মানিয়ে নিতে সাহায্য করতে হবে। আবার এমন কিছু পরিবার রয়েছে যেখানে পরিবারের সদস্যরা সকালবেলা খুব দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন। অতঃপর তারা সকালের নাস্তা সেরে দৈনন্দিন কাজকর্ম শুরু করে। প্রথম এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা শিশুদের কাজের উপর সরাসরি নজর রাখতে পারেন। আরও একধরনের পরিবার রয়েছে যেখানে বাবা-মা উভয়েই দিনের পুরোটা সময় কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকেন। সেক্ষেত্রে শিশুরা রুটিন অনুযায়ী কাজ করছে কি না সেটি একজন গৃহকর্মী কিংবা পরিচর্যাকারী খেয়াল রাখতে পারে।

শিশুকে নিজের আবেগ বুঝতে দিতে হবে

মানসিক বিকাশের বয়সগুলোতে প্রায় বেশিরভাগ শিশুই নিজেকে বুঝতে পারেনা। এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। যারা নিজেদেরকে অল্প অল্প করে বুঝতে শুরু করে, কৈশরে তারা সকল ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকে এবং সফল হতে পারে। যাইহোক, করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। জাতিসংঘের মহাসচিব বিশ্বনেতাদের অনুরোধ করেছেন এই সংকট পুরোপুরি মোকাবেলা করার আগ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাতে বন্ধ রাখা হয়। এমন পরিস্থিতিতে শিশুরা যে শুধুমাত্র শিক্ষা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে তা কিন্তু নয়। একইসাথে কনসার্ট, আঙ্কন ক্লাস, খেলাধুলার মতো কাজগুলো তাদের দৈনন্দিন রুটিন থেকে বাদ পড়েছে।

মা এবং মেয়ে; Image Source: UNICEF

এটি নিঃসন্দেহে শিশুকিশোরদের জীবনের অন্যতম বড় ক্ষতি। কিন্তু শিশুদের বুঝতে হবে এই অভিজ্ঞতা জীবনের অন্য যেকোনো সময়ের, যে কোনো কাজের চেয়েও বড়। এমন পরিস্থিতিতে অধিংকাংশ শিশুকিশোর হতাশ হয়ে পড়ে। পিতামাতার উচিত সমর্থণ ও আশা দেখানো এবং স্বাভাবিক থাকার জন্য সন্তানদের অনুরোধ করা। এতে করে নিজের সন্তানকে অন্ততপক্ষে স্থায়ীভাবে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার কিনারা থেকে টেনে তুলতে পারবেন তারা। কারণ হতাশাজনক মুহূর্তে সমর্থণ এবং সহানুভূতিই জীবনকে এগিয়ে নিতে পারে।

তারা কী শুনছে সে সম্পর্কে অবগত হওয়া

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সংবাদপ্রচারে যেমন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়না তেমনি কোনো সংবাদ পেতে খুব বেশি সময়েরও প্রয়োজন পড়েনা। আর এই কারণেই করোনাভাইরাস সম্পর্কিত হাজারো মিথ্যা সংবাদ নিয়মিত ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সত্য সংবাদগুলোর মতো মিথ্যা সংবাদগুলোও শিশুদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই অভিভাবকদের উচিত করোনাভাইরাস নিয়ে প্রকাশিত কোন কোন সংবাদ সন্তানদের কাছে পৌঁছেছে সেটি খুঁজে বের করা। সেই সাথে এসব সংবাদ সম্পর্কে শিশুকিশোরদের মনোভাব কেমন সেটিও জানা উচিত।

পড়াশোনায় যখন বিরক্তি আসে; Image Source: Istock.com

যদি এমনটা হয়, তারা করোনাভাইরাস সম্পর্কিত মিথ্যা এবং বানোয়াট সংবাদ পড়ে সেটিকে বিশ্বাস করেছে তবে সত্য সংবাদটি শিশুদের সামনে তুলে ধরতে হবে। এতে করে তারা নিজেরাও হয়তো যাচাইবাচাই করবে এবং সত্যমিথ্যার পার্থক্য বুঝতে পারবে। আবার এমন কিছু প্রশ্ন তৈরি হতে পারে যেগুলোর উত্তর অভিভাবক কিংবা সন্তান কেউই দিতে পারেনি বা পারবেনা। সেক্ষেত্রে ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অফিশিয়াল ওয়েভসাইট অনুসরণ করা যেতে পারে। কারণ করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সকল সত্য সংবাদ তাদের মাধ্যমেই প্রচারিত হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যস্ত শিশুটি; Image Source: freepick.com

আজকাল অনেক দেশেই অনলাইন ক্লাস চালু রয়েছে। সেখানে নানারকম কটুক্তির স্বীকার হয় শিশুরা। একই ঘটনা ঘটতে পারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। মূলত এটি শিশুদের মানসিকভাবে খুবই হতাশ করে। কটুক্তি মোকাবেলায় সত্য তুলে ধরাই সঠিক পন্থা। আর এই কাজটি করার জন্য অবশ্যই শিশুকে সাহায্য করতে হবে। অন্যথায় শিশুরা বিচলিত হতে পারে যা এই সময় একেবারেই অযৌক্তিক। যেসব শিশু ইন্টারনেটের বাইরে করোনাভাইরাস চলাকালীন দৈনন্দিন রুটিন সাজায় তাদের জন্য বিশ্বস্ত পত্রিকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সত্য সংবাদ জেনে সেই অনুযায়ী চিন্তা করার সুযোগ পাবে শিশুরা।

নিজেদের আচরণে মনোযোগী হওয়া

সন্তানদের অভিভাবক এবং পরিবার প্রধান হিসেবে বাবা-মা প্রায় সময় দুশ্চিন্তায় থাকেন। এই দুশ্চিন্তা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। করোনাভাইরাসের কারণে মোটামুটি সবাই অর্থনৈতিকভাবে বড়সড় সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। কেউ বা সন্তানের নিরাপত্তার বিষয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করেন। সে যা-ই হোক, অভিভাবকদের উচিত নিজেদের দুশ্চিন্তা, ভয়ভীতি নিজেদের মধ্যেই লুকিয়ে রাখা। যথাসম্ভব সন্তানদের সঙ্গে দুশ্চিন্তার বিষয়ে আলাপ না করাই হবে সবচেয়ে ভালো উপায়। কারণ সন্তানরা জানার পর গভীরভাবে আবেগতাড়িত হতে পারে, যা বিপদ ডেকে আনবে।

দুশ্চিন্তায় মায়ের মাথায় হাত; Image Source: Istock.com

শিশুদের ধারণা, তাদের বাবা-মা সবসময় তাদের নিরাপত্তা, বাসস্থান এবং খাবারের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। অন্যভাবে তুলনা করলে সন্তানরা একটি গাড়ির যাত্রী এবং বাবা-মা সেটির চালক। সেক্ষেত্রে চালক যদি ভয়ভীতি এবং দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে গাড়ি চালায়, তবে যাত্রীকে নিরাপদে গন্তব্যে না-ও পৌঁছে দিতে পারে। তাই বলা যায়, যত রকম দুশ্চিন্তা কিংবা কঠিন সময় আসুক না কেন, শিশুকে তা বুঝতে দেয়া যাবে না। বাবা-মায়ের মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ দেখলে যেকোনো সন্তান ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে, যা তাদের মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়। আর এই বৈশ্বিক মহামারিতে মানসিকভাবে দুর্বল হওয়া যাবে না। সন্তান আগলে রাখবে বাবা-মাকে, আর বাবা-মায়ের মানসিক অবস্থা হতে হবে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়েও দৃঢ়।

This article written about children's who is at home because of coronavirus. Though all children deal with such emotions in different ways, if your child has been faced with school closures, cancelled events or separation from friends, they are going to need to feel loved and supported now more than ever. We talked about How you can help create a sense of normalcy at home while navigating the new (temporary) normal.

Featured Image Source: SANYASM/E+/GETTY IMAGES

Related Articles